তিক্ত বুকের বাঁ পাশ পর্ব ১২

তিক্ত বুকের বাঁ পাশ পর্ব ১২
ফিজা সিদ্দিকী

লাইব্রেরীর কর্ণারের এক চেয়ারে বসে আছে তোহা। মূলত রুহেলের জন্য অপেক্ষা করছে সে। লাইব্রেরী রুমে খুব বেশি মানুষ না থাকলেও কমও নেই। যারা আছে সবাই নিজেদের কাজে ব্যাস্ত। এমতাবস্থায় রুহেল তোহার পাশের চেয়ার টেনে বসে। পিনপতন নীরবতার মাঝে চেয়ার টানার শব্দও যেনো ভয়ংকর ঠেকলো সবার কাছে।

অনেকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালোও বটে। রুহেল ভাবলেশহীন। তোহা পাশে তাকিয়ে হালকা হাসলো। রুহেল একবার তাকায় লাইব্রেরী রুমের চারিদিকে। হাতে গোনা অল্প কিছু ছেলে মেয়ে। তাও সবাই জুনিয়র। টেবিলে হালকা শব্দ করে কিছু একটা ইশারা করতেই রুম খালি করে বেরিয়ে যায় সবাই। স্বভাবতই সিনিয়রদের বেশ মান্য করে চলে জুনিয়ররা। কারন এক্সামের সময় সাজেশন হোক বা টিপস, সবকিছুই সিনিয়রদের থেকে খুব সহজেই পাওয়া যায়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“কী হলো, সবাইকে চলে যেতে বললেন কেনো?”
তোহার কথা শুনে চেয়ার কিছুটা কাছে টেনে খানিকটা ঝুঁকে পড়ে রুহেল টেবিলের উপর। দুইহাত ভাঁজ করে রাখে টেবিলে। আজকাল বেশ ক্লান্ত সে। ফাইনাল ইয়ারের এক্সাম কয়েকমাস পরেই। সারা বছর বইয়ে মুখ গুঁজে থাকার স্টুডেন্ট রুহেল নয়। আবার একেবারে টেনেটুনে পাশ করার মতোও নয়। এক্সামের কয়েকমাস আগে শুরু হয় তার পড়াশোনা। একেবারে যাকে বলে নাওয়া খাওয়া ভুলে বইয়ে মুখ গোঁজা। কিন্তু এই রীতি খন্ডাচ্ছে কিছুদিন যাবৎ। দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুহেল। অতঃপর তোহার চোখে চোখ রেখে বলে ওঠে,

“লাইব্রেরীর নীরবতার মাঝে কথা বলায় ডিস্টার্ব হতো ওদের। সেই সাথে অস্বস্তিতে পড়তে তুমিও।”
“ওহ আচ্ছা।”
“ভয় করছে আমাকে?”
“একদমই নাহ।”
“তাহলে তো বেশ।”
“হুম।”
“ভালোবাসবে আমাকে?”

কিছুক্ষণ নিরবতা কাটিয়ে রুদ্ধশ্বাসে বলে ওঠে রুহেল। চমকায় তোহা। যদিও রুহেলের আচরণে খানিকটা আভাস তার হয়েছিলো। তবে এভাবে সরাসরি বলবে, সে আশা করেনি। তোহাকে চুপ থাকতে দেখে ঠোঁট কামড়ে ধরে রুহেল। অতঃপর আবারো বলে ওঠে,
“আমাকে ভালোবাসার বিনিময়ে কি চাইবে তুমি?”
“বিশ কোটি টাকা।”
ঠোঁট কামড়ে হাসে রুহেল। তোহা যে মজা করছে সে বেশ বুঝতে পারছে।
“আর?”

“আপনার সব সম্পত্তি আমার নামে লিখে দেবেন।”
“আচ্ছা। তারপর?”
“এই এই আপনি কি পাগল নাকি? যা বলছি সব হ্যা করে যাচ্ছেন।”
“ধরে নাও পাগল কারোর প্রেমে। এতটাই পাগল যে তাকে পেতে আমার সর্বস্ব বিলিয়ে দিতেও রাজি। আর সে তো মাত্র আমার সম্পত্তি চেয়েছে।”
“পাগল নাকি? আমি মজা করেছি।”

“আমার সবচেয়ে বড়ো সম্পত্তি তো আমি নিজেই, যদি সেটাই দিয়ে দিয়!”
চোখ টিপ দেয় রুহেল। লাজুক হাসে তোহা।
“ভালোবাসবে না আমাকে?”
“নাহ”
“মেরে দেবো”
“তাই দিন।”
“মারবো। তবে আমার প্রেমে ডুবিয়ে। একেবারে ডুবিয়ে রাখবো ভালোবাসায়।”
“আমি বাসবো না।”

“আমি ভালোবাসবো, কোনো সমস্যা? আমার তোমাকে লাগবে তোহা। ভীষণভাবে প্রয়োজন তোমাকে।”
“দুইদিন পর যদি ভালোবাসা নাই হয়ে যায়!”
“এই জনমে তা কমার নয়। বরং বাড়তে থাকবে সময়ের সাথে। ভালোবাসা না কমার গ্যারান্টি যদি আমি নিয়, তুমি কি আমার হবে?”
“হবো।”

খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায় রুহেল। অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে টেনে নেয় তোহার বাম হাত। আবেগাপ্লুত হয়ে ঠোঁট ছোঁয়ায় হাতের উল্টোপিঠে। নব্য অনুভূতির জোয়ারে ভেসে যায় তোহা। বন্ধ করে ফেলে চোখ। আচমকা কিছু একটার শব্দে চমকে ওঠে তোহা। রুহেলের হাতের মুঠোয় রাখা হাত টেনে নেয় জোরপূর্বক। শব্দের উৎসর খোঁজে সামনে তাকাতেই চোখে পড়ে রনককে। অনুভূতিশূন্য চোখে তাকিয়ে আছে সে।

হাতের মাঝে রাখা বই সশব্দে নিচে পড়ে লুটোপুটি খাচ্ছে। থতমত খেয়ে যায় তোহা। এই মূহুর্তে ঠিক কি রিয়েক্ট করা উচিৎ তার জানা নেই। কিছু বলার আগেই সেখান হয়ে চলে যায় রনক। একবারও পিছু ফিরে তাকায় না।
কেবিনের মাঝে পায়চারি করছে রনক। তোহার বলা শেষ শব্দটা যেনো ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে তাকে। অশান্ত লাগছে নিজেকে। কেনো এমন হচ্ছে জানা নেই তার। তবে কষ্ট হচ্ছে ভীষণভাবে। তোহাকে অন্য কারোর সাথে মেনে নিতে পারছেনা।

সময়টা সন্ধ্যা আর রাত্রির মিলনকাল। গোধূলি মিটেছে বেশ অনেকটা সময় পেরিয়েছে। আবার একেবারে গভীর রাত্রিও নয়। অর্ধচন্দ্রাকার চাঁদের জোৎস্নার আলোয় খানিকটা আলোকিত প্রকৃতি। রাফিদ মাত্র অফিস থেকে ফিরে ওয়াশরুমে ঢুকেছে। বেশ অনেকটা ক্লান্ত লাগছে তাকে। নম্রমিতা কিচেন থেকে লেবুর সরবত বানিয়ে এনে সাইড টেবিলে রাখে। এরপর ব্যাগ থেকে রাফিদের ল্যাপটপ বের করে নিয়ে বসে খাটে। ল্যাপটপে মাস্টার্সের কিছু নোটস রেডি করতে হবে। যদিও ক্লাস শুরু হতে দেরী আছে। তাও মাঝে অনেকটা গ্যাপ পড়ে যাওয়ায় সেগুলো নিয়ে বসতে চায় নম্রমিতা। যতদ্রুত সম্ভব মা আর বোনকে ওই বাড়ি থেকে বের করে আনতে হবে তাকে। চাচার দয়ায় বাঁচতে দেবেনা তাদের।

ল্যাপটপ অন করতেই চোখে মুখে বিষন্নতা ছেয়ে যায় নম্রমিতার। সেদিনের ফোনের পিকটা ল্যাপটপেও সেট করা। বুকের মাঝে চিনচিন ব্যথা অনুভূত হয়। মিথ্যে মনে হয় এই কয়দিনের ভালোবাসার সংসার। হুট করেই রাফিদের বদলে যাওয়া, প্রতিশোধের বদলে হুট করেই তাকে কাছে টেনে নেওয়া, এসবই কেমন যেনো ঘোলাটে লাগে তার কাছে। আদৌ কি চলছে রাফিদের মনে তার জানা নেই। সত্যিই কি সে এই সম্পর্কটা নতুন করে একটা সুযোগ দিয়েছে!

নাকি সামনে বড়ো কিছু অপেক্ষা করছে তার জন্য! খুব বড়ো ধরনের এক ঝটকা! কন্ঠনালী খা খা করে ওঠে নম্রমিতার। এগুলো ভাবলেই বাকরুদ্ধ লাগছে। রাফিদকে পাওয়ার আশা যখন একেবারেই জলাঞ্জলি দিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসেছিলো, তখনও মেনে নিয়েছিলো ভাগ্যের লীলাখেলা। যখন জানতে পেরেছিল, বাবার জন্য আজ তারা একে অপরকে এতটা ভালবাসার পরেও আলাদা জীবনে, সেদিনও কষ্ট হলেও মেনে নিয়েছিলো সে।

মেনে নিয়েছিল আদিলের সমস্ত অত্যাচার। মানিয়ে নিয়েছিলো প্রতিনিয়ত দগ্ধ হয়ে জ্বলতে থাকা ঘা গুলো। সাহসী, তেজিয়ান মেয়েটাও অনেক সময় মুখ বুঁজে সহ্য করেছে শ্বশুরবাড়ির মানসিক সেই সাথে শারীরিক অত্যাচারগুলো। গিলেছে তাদের দেওয়া অসহনীয় নির্যাতন। কিন্তু এখন সে আর পারবেনা। ভাগ্যের ফেরে রাফিদ যে আর কখনো তার হবে, এ কথা কল্পনাতেও আসেনি তার। তবুও বাস্তবে এসেছে। এসেছে তার স্বপ্নের পুরুষ, ভালোবাসার পুরুষ হৃদ আঙিনায় ভালোবাসার মুঠোফুল হাতে। তবে কি আদৌ তা মুঠোফুল নাকি তার ভ্রম! ফুলের বদলে কাঁটা হয়ে বিঁধবেনা তো তার জীবনে!

ওয়াশরুম থেকে টাওয়াল পেঁচিয়ে বের হয়েছে রাফিদ। নম্রমিতাকে থম মেরে বেডের উপর বসে থাকতে দেখে ভ্রু জোড়া হালকা কুঁচকে ফেলে। অতঃপর ক্লান্ত শরীরটা মেলে ধরে বেডে। মাথা এলিয়ে দেয় নম্রমিতার কোলে। আচমকা ভাবনার মাঝে চমকে ওঠে নম্রমিতা। রাফিদকে কোলে মাথা রাখতে দেখে চোখ ফিরিয়ে তাকায় তার দিকে। অতঃপর চোখ বড়ো বড়ো করে ফেলে।

“ইশ! কি অবস্হায় শুয়ে আছো তুমি?”
“কেনো খারাপ কি আছে এতে?”
“এভাবে টাওয়াল পেঁচিয়ে রুমে আসে নাকি কেউ!”
“আবরার চৌধুরী রাফিদ আসে। তাও তার বউয়ের সামনে। হট হয়ে যাচ্ছ নাকি আমার বডি দেখে?”
“ছিঃ! কীসব ভাষা।”
“ওরে আমার ভালো ভাষার অধিকারিণী। আসো একটা চুমু দিয়।”
“ইশ! যা তা একেবারে।”

ক্যাম্পাসের পিছনের দিকের বাগানে বসে আছে রুহেল। পাশে নির্বিকারচিত্তে বসে আছে তোহা। একহাতে ঘাস ছিঁড়ে দূরে ছুড়ে ফেলছে সে। রুহেল আনমনা হয়ে দেখছে সে দৃশ্য। মেয়েটাকে যে সে ভীষণ ভালোবাসে এমনটা নয়। তবে ভালো লাগে। কিছুদিন যাবৎ তোহার কথা ভাবতে ভাবতে যাচ্ছেতাই অবস্থা হয়ে গিয়েছিল তার। মূলত তোহার করা ইগনোর সে মেনে নিতে পারেনি। কলেজের বাকি মেয়েদের মতোই যদি তোহাও তার সাথে কথা বলার আগ্রহ দেখতো, তবে তার মস্তিষ্ক জুড়ে ঘুরতোনা তোহা নামের মেয়েটা।

পড়াশোনায় কোনোভাবেই মনোযোগ বসাতে না পেরে অগত্যা ছুটে আসে তোহার কাছে। প্রেম নিবেদনের মাধ্যমে তাকে নিজের করে নেয়। মূলত নিজের মানসিক অশান্তির জন্যই সে তোহাকে চেয়েছে।
তোহা আনমনা হয়ে ভাবছে রনকের কথা। সেদিনের পর থেকে রনক আর তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেনি। বরং কিছুটা এড়িয়ে চলেছে। রাগ হয় তোহার। ঘাসগুলো এমনভাবে মুঠোয় ধরছে যেনো সেগুলো ঘাস নয় স্বয়ং রনকের মাথার চুল। নিজের ভাবনায় চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায় তার। এসব কি ভাবছে সে! একজনের সাথে সম্পর্কে থেকে অন্য কারোর কথা ভাবছে! সবচেয়ে বড়ো কথা রনক তার শিক্ষক। শিক্ষক আর ছাত্রীর রিলেশন ব্যাপারটা বরাবরই অপছন্দের তালিকায় তার।

“কার কথা ভাবছো এত?”
রুহেলের কণ্ঠ শুনে চিন্তার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে তোহা। মাথা রাখে রুহেলের কাঁধে। অতঃপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে মৃদু হাসে।
“তুমি আছো তো পাশে। নতুন করে আবার কার কথা ভাববো?”
“পাশে যে আছি, তাকাচ্ছ কই আমার দিকে?”

হাসে তোহা। রুহেলের প্রতিটা কথা মুগ্ধ করার মতোই। একেবারে আবেগের পসরা সাজিয়ে কথা বলে যেনো। কি যেনো এক মায়া! টানে তোহার কিশোরী মনকে ভীষণভাবে। বয়ঃসন্ধিকালের এই বয়সটাই এমন। যেখানে বিবেকের চেয়ে আবেগ বেশি। ভালোবাসার চেয়ে ভালোলাগাময় কথার মূল্য বেশি। এই সময়ে মনে হয় যেনো আকাশের চাঁদও তার হাতে এনে দিতে প্রস্তুত তার প্রেমীক পুরুষ। এই মানুষটাই তার বর্তমান ভবিষ্যৎ সব। একমুহুর্তও বাঁচবেনা এই মানুষটাকে ছাড়া। জীবনের সবচেয়ে বড়ো বড়ো ভুল কাজগুলোও হয় এই বয়সেই। যার জন্য পস্তাতে হয় সারাটা জীবন। কখনও আবেগের তাড়নায় মন তো কখনও শরীর বিলিয়ে। যার দাম একজনমে দেওয়া দায়। কিছু আবেগঘন মুহূর্তের তাড়নায় ভুলতে বসে পরিবার এমনকি নিজের সম্মানের কথা।

“তোহা জানিস! রনক স্যার ট্রান্সফার নিচ্ছেন।”
প্রীতির কথায় ধুক পুক শব্দে বাড়তে থাকে তোহার হৃদস্পন্দন। নাহ, সে ভুল শুনেছে। রনক কলেজ ছেড়ে যেতে পারেনা। রনককে আর দেখতে পাবেনা ভাবলেই বুকে চিনচিন ব্যথা অনুভূত হচ্ছে তার। সে তো রুহেলকে ভালোবাসে। তবে কেনো রনকের চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেনা। শুধুই কি অল্পকিছুদিনের বন্ধুত্বের টানে নাকি অন্যকিছু!

রনকের কেবিনের সামনে দাড়িয়ে আছে তোহা। অল্পকিছুদিনের ব্যবধানে ভেতরে যাওয়ার সাহস কুলাতে পারছেনা সে। কই আগে তো এমন হতনা! কি সাবলীলায় চলে যেতো এই কেবিনে। তবে আজ কেনো এতো ভয় হচ্ছে! তবে কি সেদিন লাইব্রেরীতে রুহেলের সাথে দেখে ফেলেছিল তাকে, তাই এ দশা! কলেজে সে একা তো প্রেম করেনা! প্রায় প্রতিটা ছেলে মেয়েই প্রেম করে। তবে সে কেনোই বা এত ভয় পাচ্ছে। বুকে ফুঁক দিয়ে একবুক সাহস নিয়ে ভেতরে ঢোকে তোহা।
“স্যার আসবো?”

পরিচিত কণ্ঠস্বর শুনে চমকায় রনক। চোখ তুলে তাকালেও যেনো বিশ্বাস হচ্ছেনা তার। তবুও যথারীতি নিজেকে স্বাভাবিক রেখে তোহাকে ভেতরে আসার অনুমতি দেয় সে।
“কিছু বলবেন?”
“কেমন আছেন?”

“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনিও নিশ্চয়ই বেশ ভালো আছেন, মিস. তোহা। তো কিছু কাজ ছিল নাকি?”
“নাহ। আসলে শুনলাম আপনি নাকি ট্রান্সফার নিচ্ছেন। তাই”
“ওহ আচ্ছা। বুঝেছি। বিদায় জানাতে এসেছেন বুঝি!”
বুকে কষ্ট চেপে জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করে রনক। সে ইচ্ছে করেই এই কলেজ ছাড়ছে। প্রতিনিয়ত তোহাকে এভাবে অন্য কারোর সাথে দেখা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা। পুড়ছে ভেতরে ভেতরে ভীষণভাবে।

“আপনার কি কিছু হয়েছে? কেমন যেনো অসুস্থ লাগছে। কই আগে তো এমন লাগতোনা!”
“হ্যা নতুন এক রোগ ধরা পড়েছে আজকাল। বিষাদের স্বাদে ভরপুর সে রোগ। সুধা ভেবে গরল পান করা এক অসুখের সুখ সে রোগে।”

“এটা আবার কেমন রোগ? এর কোনো ওষুধ নেই?”
“পার্মানেন্ট ঠিক হওয়ার কোনো ওষুধ জানা নেই। তবে সম্ভবত দূরত্ব খানিকটা কমাবে এ বিষাদের স্বাদ। অন্তত দমবন্ধকর অনুভুতি থেকে তো রেহাই দেবে!”
“না গেলে হয়না?”

ভ্রু কুঁচকে তাকায় রনক। তোহাও খানিকটা ইতস্তত বোধ করছে এ কথার পিঠে।
“আমার উপর রাগ করে আছেন স্যার?”
“হাসালে তোহা। আমি কেনো রাগ করবো! উপরন্তু বোধহয় রাগটা তোমার আছে, আমার উপর।”
“রাগ ছিলো। তবে এখন নেই।”
“আচ্ছা”

তিক্ত বুকের বাঁ পাশ পর্ব ১১

“আপনার সাথে কি আর কখনও যোগাযোগ হবেনা?”
“হয়তো নাহ।”
“ওহ”
ভালোবাসা, এক নামে রূপ ভিন্ন। কারো মনে নতুন উদ্যমে স্বপ্ন তো কারোর ছিন্নভিন্ন তিক্ত বুক। আবার কারো কাছে নিছকই এক খেলনা বস্তু। যা প্রয়োজনে সাজানো যায় রংতুলিতে আবার প্রয়োজন ফুরালে ভেঙে ছারখার করতেও বাঁধেনা।

তিক্ত বুকের বাঁ পাশ পর্ব ১৩