তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব ৮

তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব ৮
মুন্নি আক্তার প্রিয়া

সকালে ভোরে ঘুম থেকে উঠেছে রায়ান।
জগিং করার জন্য বের হচ্ছিল। তখন রোমিওর ঘরের দিকে তার চোখ যায়। এতদিন সে ঘরটা লক্ষ্যই করেনি। বরং ভীষণ বিরক্ত ছিল রোমিওর ওপর। কিন্তু হঠাৎ এখন বাড়িতে ফিরে ওকে না দেখলে কেমন জানি খারাপ লাগে! রায়ান হাঁটু মুড়ে রোমিওর ঘরের সামনে বসেছে। ছোট্ট একটা ফাঁকা জানালাও বানিয়ে দিয়েছে দাদু লোক দিয়ে, যাতে করে আলো-বাতাস ঢোকে। সেই জানালা দিয়ে রায়ান উঁকি দিতেই রোমিও হুট করে জানালার সামনে মুখ বাড়াল। ওর হঠাৎ সামনে আসায় রায়ান ভয় পেয়ে গেছে। পরক্ষণেই ভ্রুজোড়া কুঞ্চন করে বলল,

“যাবি আমার সাথে?”
রোমিও লেজ নাড়িয়ে সায় দিল। রায়ান দরজা খুলে ওকে বের করে সাথে নিয়ে গেল জগিং-এ। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটা উন্মুক্ত পার্ক আছে। অনেকেই এখানে সকালে,বিকেলে, সন্ধ্যায় হাঁটতে আসে। বাচ্চারা ফুটবল নিয়ে খেলতে আসে। রায়ান যখন পার্কে দৌঁড়াচ্ছিল, রোমিও-ও ওর সাথে সাথে দৌঁড়াচ্ছিল। রোমিওকে দেখে মনে হচ্ছিল ও ভীষণ আনন্দ পাচ্ছে এভাবে দৌঁড়াতে। রায়ান ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল। কয়েকজন বেশ কৌতুহল নিয়ে ওদের দেখছিল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

জগিং শেষ করে আসার সময় চায়ের জন্য টঙ দোকানে বসল রায়ান। সে চা পান করছিল এবং রোমিওকে রুটি কিনে দিয়েছে। খাবার পেয়ে রোমিও ভীষণ খুশি। লেজ নাড়িয়ে কয়েকবার রায়ানের পায়ের কাছে চক্কর দিয়েছে, যেমনটা ও অনুর সাথে করে। রোমিওর এমন দুষ্টুমি দেখে রায়ান হেসে ফেলল। বেঞ্চে বসে ছিল সে। এবার একটু ঝুঁকে রোমিওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
“হয়েছে, হয়েছে থাম এখন। খা চুপচাপ। আর শোন, আমার সাথে যে এসেছিস কাউকে বলবি না। অনুকেও না। মনে থাকবে?”
রোমিও কী বুঝল কে জানে! সে লেজ নাড়াল।

সকালে আটটার দিকে অনুর ঘুম ভেঙেছে। ঘুম জড়ানো অবস্থায় পাশের টেডিবিয়ারটাকে আবেশে জড়িয়ে ধরল সে। হঠাৎ করে মনে হলো, সে বিছানায় এলো কী করে? চমকে লাফিয়ে উঠল সে। বিছানায় বসেই টেবিলের দিকে তাকাল। দৌঁড়ে গেল কাছে। ডায়ারিটা বন্ধ অবস্থায় আছে। কীভাবে কী হলো? সে হাতের দিকে তাকাল। এখনো রায়ান ভাইয়ের নামটি লেখা আছে। ভয়ে ঘাম ছুটে যাচ্ছে অনুর। কে তাকে বিছানায় নিয়ে শুইয়ে দিয়েছে? তার যতটুকু মনে পড়ে, সে নিজে বিছানায় আসেনি। ডায়ারি লিখতে লিখতেই বোধ হয় ঘুমিয়ে গিয়েছিল। মাথায় হাত দিয়ে অনু চেয়ারে বসে পড়েছে। যে-ই তাকে বিছানায় আনুক না কেন সে নিশ্চয়ই ডায়ারির লেখাগুলোও পড়েছে? হায় আল্লাহ্! এখন কী হবে? আর কে-ই বা সেই ব্যক্তি?
অনু খুব চিন্তিত চিত্তে রুম থেকে বেরিয়ে নিচে নামল। লিলি খালা উঠানে থাকা গাছগুলোতে পানি দিচ্ছিলেন। অনু খুব আশা নিয়ে কাছে এগিয়ে গেল। জিজ্ঞেস করল,

“লিলি খালা, কাল রাতে কি তুমি আমার রুমে গিয়েছিলে?”
“না তো! ক্যান?”
“তাহলে কে গিয়েছিল বলতে পারবে?”
“আমি কেমনে কমু? আমি তো রাতের খাওনের পরই ঘুমাইয়া যাই। ক্যান কী হইছে?”
অনু মন খারাপ করে বলল,
“কিছু না।”
“কিছু হারাইছে নাকি?”
“না।”

বলে উদাস হয়ে অনু রোমিওর ঘরের দিকে তাকাল। দরজা খোলা দেখে দৌঁড়ে এগিয়ে গেল সে। ঘরটা ফাঁকা। রোমিও কারো রুমে গিয়েছে নাকি আবার? তাহলে আজ অনুর শেষ দিন হবে এই বাড়িতে নিশ্চিত! একটার পর একটা টেনশন অনুকে পেয়ে বসেছে! অনু ভীতকণ্ঠে লিলি খালার কাছে জানতে চাইল,
“লিলি খালা, রোমিওর ঘরের দরজা তুমি খুলেছ?”
“না। আমি ঘুম থেইকা উইঠাই দেখছি দরজা খোলা।”
অনুর মনে হচ্ছে তার দেহ থেকে প্রাণটা এবার বেরিয়ে যাচ্ছে বুঝি! বের হলো কীভাবে রোমিও? কার ঘরেই বা গেল! প্রতিটা ঘর তন্নতন্ন করে খুঁজল অনুসহ বাকি সবাই। এবার অনুর সন্দেহ হচ্ছে। নিশ্চয়ই কেউ রোমিওকে ফেলে দিয়ে এসেছে। উঠানে বসে অনু এবার হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল আর বলতে লাগল,

“তোমরা সবাই মিলে আমার রোমিওকে ফেলে দিয়েছ তাই না?”
দাদা এগিয়ে এসে অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“না দাদুভাই, কেউ তোমার রোমিওকে ফেলে দেয়নি।”
“তাহলে দরজা খোলা কেন? নিশ্চয়ই বাড়ির কেউ করেছে এই কাজ।”
অনুর সাথে এবার রোমিওর শোকে ইয়ামিন, জান্নাত, জামিলাও কাঁদতে শুরু করেছে। কারণ অনুর পর ওরা-ই রোমিওকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতো আর আগলে রাখত। ওদের কান্না দেখে বাড়ির সবার ভীষণ খারাপ লাগছে। আবার রোমিওর জন্য মায়াও লাগছে। সত্যি বলতে রোমিও একজন সদস্য হয়ে গিয়েছিল বাড়ির। কিন্তু এই কাজটা কে করবে? কে রোমিওকে ফেলে দেবে?

হঠাৎ অনুর মাথায় এলো, সবার রুমে রোমিওকে যখন খু্জতে গিয়েছিল তখন রায়ান ভাই তার রুমে ছিল না। এখনো বাড়িতে নেই। তার মানে সে-ই রোমিওকে ফেলে দিতে গেছে! এত কীসের রাগ তার অনুর প্রতি? অভিমানে, রাগে অনুর কান্না ভারী হতে থাকে। মেয়েকে এভাবে কাঁদতে দেখে আলমগীর চৌধুরীর বুকে ব্যথা হচ্ছে। তিনি মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
“আমার জানবাচ্চা, কেঁদো না তুমি। তোমাকে আমি আরেকটা কুকুরের বাচ্চা এনে দেবো।”
অনু কাঁদতে কাঁদতে বলল,
“না, না, না। আমার অন্য কুকুরের বাচ্চা লাগবে না। আমার রোমিওকেই লাগবে। তুমি রায়ান ভাইকে এক্ষুনী ফোন করো। সে-ই আমার রোমিওকে ফেলে দিতে গিয়েছে।”
আয়ান বলল,

“রায়ান ভাইয়া কেন রোমিওকে ফেলতে যাবে আজব!”
অনু এবার রেগে গিয়ে বলল,
“কারণ সে আমার রোমিওকে সহ্য করতে পারে না। সবাই বাসায় আছে। সে নেই। রোমিওর ঘরের দরজাও খোলা। তাহলে কে ফেলবে ওকে রায়ান ভাই ছাড়া?”
রমিজ চৌধুরী খুব বিরক্ত হলেন ছেলের ওপর। তিনিও অনুকে শান্ত করতে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“তুই কান্না করিস না। রায়ান বাসায় আসুক। যেখানে ফেলে আসবে রোমিওকে, ওখান থেকেই ওর নিয়ে আসতে হবে। তুই শান্ত হ, মা।”
অনু হেঁচকি তুলে কাঁদছে। রোমিও আর নেই এই বাসায় সে মানতেই পারছে না।
রোমিওকে নিয়ে বাড়িতে এসেছে রায়ান। ভেতরে গিয়ে দেখে অনু উঠানে বসে কাঁদছে। ইতি তখন চিৎকার করে বলল,

“অনু আপা, ঐতো রোমিও!”
অনু কান্না থামিয়ে দরজার দিকে তাকাল। রোমিও দৌঁড়ে এসে অনুর কোলে উঠেছে। অনু এখনো কাঁদছে। এবার সে কাঁদছে খুশিতে।
ঘটনা কী ঘটেছে রায়ান জানে না। তাই এগিয়ে এসে জানতে চাইল,
“কী হয়েছে?”
জবাবে ইতি বলল,
“আপু ভেবেছে, আপনি মনে হয় রোমিও-কে ফেলে দিতে নিয়ে গিয়েছেন।”
“আমি রোমিওকে ফেলতে নিয়ে গেছি কে বলল?” রায়ানের কণ্ঠে বিস্ময়ের আভাষ।
দাদু ঝামেলা এড়িয়ে যেতে বললেন,
“আমি বলেছি। আমি দেখেছি, তুই ওকে দরজা খুলে নিয়ে গেছিস।”
রায়ান বিরক্ত হয়ে বলল,
“এর মানে কি আমি ওকে ফেলে দিতে নিয়ে গেছি? অদ্ভুত!”
এরপর অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,

“সকাল সকাল তোর ম’রা কান্না বন্ধ কর। কুকুরের জন্য একদম জান বেরিয়ে যায়!”
অনু কিছু বলল না। কান্না থামিয়ে চুপ করে বসে আছে সে। রায়ান নিজের ঘরে চলে যাওয়ার পর বাড়ির সবাই অনুকে বুঝিয়ে ঠান্ডা করল। সবাই এখন এটাও বুঝতে পেরেছে যে, রোমিও এখন অনুর জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। তাই রোমিও-কে বাড়ি থেকে তাড়ানো তো দূরে থাক; তারা সবাই রোমিওর প্রতি যত্নবান হতে লাগল।
রোমিওকে আদর করে খেতে দিয়ে অনু রুমে গেল রেডি হওয়ার জন্য। মনে মনে অনুতপ্তও হলো, শুধু শুধু রায়ান ভাইকে ভুল বুঝেছে বলে। ভাগ্যিস দাদু দোষটা নিজের ঘাড়ে নিয়ে নিয়েছিল! নয়তো সত্যিটা যদি রায়ান ভাই জানত, তাহলে একটা টর্নেডো তো এই মুহূর্তে হয়েই যেত!

অনু গোসল করে কালো একটা কামিজ পড়েছে। সালোয়ার আর ওড়না সাদা রঙের।বাম হাতে ঘড়ি, কানে সাদা এক জোড়া ছোট্ট কানের দুল। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিয়েছে। চুলগুলো আঁচড়ানোর সময় হঠাৎ আবার মনে পড়ে গেল, কে এসেছিল ঘরে! যে-ই আসুক না কেন, সে যে অনুর মনের খবর ইতোমধ্যে জেনে গিয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। শুধু ভয় একটাই, বাড়িতে না আবার সবার কাছে বলে দেয়!
“তোমার সাজা অহনো শেষ হয় নাই? তাড়াতাড়ি আহো। সবাই খাওন নিয়া বইসা আছে।”
লিলি খালার ডাকে অনু তাড়াহুড়ো করে নিচে নামল। রায়ান ভাই সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট পরেছে আজ। দুজনের ড্রেস কালারই আজ মিলে গেছে। মনে মনে খুশিই হলো অনু। তবে মুখে আজ হাসি নেই তার। খুব স্বাভাবিক এবং গম্ভীর থাকার চেষ্টা করছে। গম্ভীর হয়ে সবার উদ্দেশে বলল,

“আজকে কেউ একটু আমাকে ক্যাম্পাসে দিয়ে আসো।”
আয়ান বলল,
“আজ তো আমার ক্লাস নেই। রিয়াদ ভাইয়া ঢাকায় পাঠাচ্ছে আমাকে দরকারি কাজে। নয়তো তোকে দিয়ে আসতাম।”
রিয়াদ বলল,
“আমার আর তমালের জরুরী কাজ আছে রে। ইমার্জেন্সী যেতে হবে। ১০টার মধ্যে মিটিং-এ থাকতে হবে। তোকে গাড়ি ঠিক করে দেবো?”
রায়ান কাঁটাচামচ দিয়ে সালাদ খেতে খেতে বলল,
“আমি দিয়ে আসব।”
অনু যেন নিজের কানটাকেই বিশ্বাস করতে পারছিল না! সত্যিই রায়ান ভাই তাকে পৌঁছে দিয়ে আসবে? তাও আবার যেচে নিজের ইচ্ছায়! আজ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি হচ্ছে। অনুর এত আনন্দ হচ্ছিল যে, ইচ্ছে করছিল। চেঁচিয়ে বলতে, ‘আপনি খুব ভালো, রায়ান ভাই।’ কিন্তু সে এমন কিছুই বলল না। মুখ ভার করেই বলল,
“আচ্ছা।”

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যে যার স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি এবং কাজে চলে গিয়েছে। বাড়ির গাড়িটা আয়ান নিয়ে গেছে ঢাকায়। অফিসের গাড়ি নিয়ে গেছে রিয়াদ এবং তমাল। রায়ান ও অনুকে বাইকে করেই যেতে হবে। অনু রুমে এসে আরেকবার ঘুরে ঘুরে নিজেকে দেখছিল। নিচ থেকে লিলি খালার ডাক শুনে দৌঁড়ে ব্যাগ নিয়ে নিচে নামল। রোমিও ওর জন্য অপেক্ষা করছিল উঠানে। অনু রোমিওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

“আজ তোকে সাথে যেতে হবে না, বাচ্চা। আজ আমি রায়ান ভাইয়ের সাথে যাব। তুই বাড়িতেই থাক কেমন?”
রোমিও লেজ নাড়িয়ে সায় জানাল। অনু দৌঁড়ে গেল বাড়ির বাইরে। রায়ান বাইকে উঠে বসে আছে। চোখে কালো সানগ্লাস পরেছে আবার। সাদা শার্ট, সানগ্লাস; কী যে সুন্দর লাগছে রায়ান ভাইকে!
রায়ান বিরক্ত মেশানো দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অনুর দিকে। অনুকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওর বিচরণ এখন অন্য কোনো জগতে। মিটিমিটি হাসছেও আবার। রায়ান ভাই ধমক দিয়ে বলল,
“সঙের মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? লেইট হচ্ছে না?”
অনু হুঁশে এসে বলল,

“ওহ, হ্যাঁ!”
অনু বাইকে উঠে বসল। ভয়ে ভয়ে রায়ানের কাঁধে হাত রাখল। রায়ান ভাই কিছুই বলেনি। আকাশে মেঘ করেছে দেখে রায়ান ভাই ভীষণ বিরক্ত হয়ে বলল,
“বৃষ্টি আসবে মনে হচ্ছে!”
“আসুক।”
“আসুক মানে?”
“মানে বৃষ্টি আসলে আর কী করার?”
মুখের কথা মুখেই রইল দুজনের। সঙ্গে সঙ্গে টুপটাপ বৃষ্টি পড়া শুরু করেছে। বৃষ্টির তোড়জোড় ধীরে ধীরে বাড়ছে। রায়ান ভাই বিরক্ত হয়ে অস্ফুটভাবে বলল,
“ধ্যাত!”
এরপর বাইকটা এক সাইড করে থামিয়ে বলল,

“নাম।”
“নামব কেন? ক্যাম্পাসে যাব না?”
“কীভাবে যাবি? বৃষ্টিতে ভিজে? বৃষ্টি কমুক। তারপর দিয়ে আসব।”
অনু বাইক থেকে নামল। রায়ান ভাই বলল,
“রাস্তা পার হতে হবে।”
ঐপাশে যাত্রী ছাউনি আছে। আপাতত ওখানেই দুজনে আশ্রয় নেবে। রায়ান ভাই জিজ্ঞেস করল,
“ব্যাগে ছাতা আছে?”
অনু ঠোঁট উলটে বলল,
“উঁহু!”
“এত বড়ো ব্যাগ নিয়ে তাহলে কেন ঘুরিস যে ছাতা-ই রাখিস না সাথে?”

অনু ভ্রু কু্ঁচকে মাথা নত করে রাখল। ইউটার্ন নিয়ে রাস্তার ঐপাশে যেতে যেতে ভিজে যাবে বলে বাইক এইপাশেই থামিয়েছিল রায়ান। ভেবেছিল অনুর কাছে ছাতা আছে। দুজনে ছাতা নিয়ে ঐপাশে যাবে রাস্তা পার হয়ে। কিন্তু তা আর হলো কই? এখন ভিজে ভিজেই যেতে হবে। রায়ান ভাই রাশভারী কণ্ঠে বলল,
“আয় আমার সাথে!”

তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব ৭

অনু পাশাপাশি হেঁটে রাস্তা পার হওয়ার সময় ভয়ে রায়ান ভাইয়ের হাত ধরে ফেলল। রায়ান ভাই এবারও কিছু বলল না। হাতও সরিয়ে দিল না। টুপটাপ বৃষ্টি, হাতের মুঠোয় রায়ান ভাইয়ের হাত। এরচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত আর কী হতে পারে? আজ পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে সুখী মানুষটা বোধ হয় অনু। সে রাস্তা পার হওয়ার সময়ও অদ্ভুত মায়ার দৃষ্টিতে রায়ান ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। তার খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে,
“রায়ান ভাই, আপনাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি!”

তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব ৯