তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ২ || Suraiya Aayat

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ২
Suraiya Aayat

বেশ অনেকক্ষণ হলো আরূ সানাদের বাড়িতে এসেছে আর অপেক্ষা করেই যাচ্ছে তার সেই না-দেখা ক্রাশকে শুধু চোখের সামনে দেখার জন্য ৷ অনেকদিন ধরে ছেলেটার উপর ক্রাশ খেয়ে বসে আছে আরূ তবে তাকে আজ অব্দি নিজের চোখে দেখেনি কথাটা ভাবলেই আরুর বুকের ভিতরটা ফাইটা যাই ৷
মনের ভিতর কেমন একটা আনচান আনচান করছে আরুর , কখন যে দেখবে তার সেই ক্রাশকে সেটাই ভাবছে ও তবে শুনেছে যে তার নাকি সাদা রঙ অতি পছন্দের তাই বেছে বেছে একটা সাদা রঙের গাউন পরেছে, সাদা রঙের থ্রি পিস পরলে কেমন উদ্ভট লাগবে তাই সেটাতে একবার হাত দিয়েও দেখেনি ও যদি ফাস্ট ইমপ্রেশন খারাপ হয়ে যায় তখন !
বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে অলরেডি ওর আম্মু রুবিনা রহমানের কাছ থেকে কিছু শ্রুতিবাক্য শোনা হয়ে গেছে ওর ৷
রুবিনা :কি রে তুই হঠাৎ সাদা রঙের এমন একটা উদ্ভট ড্রেস পরেছিস কেন? তুই কি কোন শোকসভায় যাচ্ছিস?বলিস নি তো, তোর তো অনিকাদের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তবে !

আরু বাঁকা চোখে তাকিয়ে বলল :আম্মু তুমিও ! লাইক সিরিয়াসলি ! আমি যদি একটা সাদা থ্রি পিস পরতাম তাহলে তুমি তুমি অবশ্যই বলতা যে আমি একটা শোকসভায় যাচ্ছি বাট আমি একটা ডিজাইনার গাউন পরেছি সেটা তোমার কাছে উদ্ভট লাগতাছে? এই ড্রেসটাই আমাকে যে সুন্দর লাগতাছে সেটা তোমার চোখে পড়ে নাই !
রুবিনা রহমান সামান্য ভ্রু কুঁচকে আরুর দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,
__” তা হঠাৎ সাদা রঙের ড্রেস ব্যাপারটা কি ? নিশ্চয়ই কোনো ব্যাপার আছে না হলে আমার মেয়ে তো কখনো এই রঙের ড্রেস পড়বে না, তাও আবার কোথাও যেতে গিয়ে ৷”

__”তুমি কি বলতে চাইছো আম্মু যারা সাদা রঙের ড্রেস পরতে পছন্দ করে তারা মানুষ না !”
আরুর মা এবার অবাক চোখে আরূর দিকে তাকিয়ে বললেন ,,,,,,
__”এটা কি তুই নাকি অন্য কেউ , আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছি না ‌৷ তুই আমার আরু মা তো?”
আরু বাঁকা চোখে ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,,
__” কেন কি হয়েছে , না বিশ্বাস করার কি আছে! তোমার কি আমাকে এলিয়েন বলে মনে হচ্ছে !”
না আসলে ঠিক তেমনটা নয়, আমারতো মনে আছে যে আমার মেয়ে এই সাদা রঙের ড্রেস পরবে না বলে কি কান্ডটাই না করেছিল তার কাজিনের বিয়েতে ৷
আরু মনে মনে,,,,,,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

__”এই সেরেছে আম্মু এটা এখনো মনে রেখেছে ৷আম্মু যদি এটা আমার ক্রাশের সামনে বলে দেয় তখন তো ফাস্ট ইমপ্রেশনটাই খারাপ হয়ে যাবে ৷”
আরু এবার বলল,,,,,
__” আম্মু তুমিও না কেন আবার এইসব পুরনো কথা তুলছো বুঝিনা ৷”
__”বাবা সে স্মৃতি কি আর ভোলার কান্ড যে আমি ভুলে যাব , কখনোই ভুলবো না আমি ৷
আয়রার গায়ে হলুদের দিন সবার জন্য যখন সাদা ড্রেস অর্ডার করা হয়েছিল তখন তুই সাদা ড্রেস পছন্দ করতিস না বলে তুই প্রত্যেকটা জামা কেটে কেটে ট্রলিতে ভরে তোর মামার কাছে পারসেল পাটিয়েছিলি ,তার তাতে লেখা ছিল,,,,,
__”ডোন্ট ডেয়ার টু ওয়্য৷র দিস টাইপ অফ হোয়াইট কালারড ড্রেস ৷তোমার আরু মা ৷”

__”তোর মামাতো কিছু মুহূর্তের জন্য শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি , বেশ অনেকখন লেগেছিল নিজেকে সামলাতে ৷ ওই জায়গায় অন্য মানুষ হলে হয়ত তোর গালে ঠাস ঠাস করে চড় পড়ে যেত কতগুলো কিন্তু তোর মামা তোকে খুব ভালোবাসেন বলে তাই কয়েকশো জামা কেটে কেটে কুচি করলেও সব মুখ বুজে সহ্য করে নিয়েছিলেন , আবার নতুন করে হলুদ রঙের ড্রেস অর্ডার করেছিলেন ৷ ”
__”তো ৷”( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
__”তো কিছুই না , আমিতো জানি আমার মেয়ে কি ৷”
আরু এবার নিজেকে নর্মাল করে ব্যস্ততা নিয়ে বলল,,,,,,

__” মানুষ চেঞ্জএবেল আম্মু আর আমি মনে করি মানুষের দিন দিন নিজের মাইনডটাকে বদলাতে পারে সেটা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছুই নেই, আমার ইচ্ছা হচ্ছে সাদা রঙের ড্রেস পরার আমিও পড়েছি ৷”
বলে তাড়াতাড়ি করে ওখান থেকে চলে গেল গিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লা কারণ ও জানে সেখানে আর বেশিক্ষণ থাকলে ওর আম্মু পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে আবার অনেক কিছু বলতে শুরু করবে যাতে করে ওর প্রেস্টিজ ডাউন হবে আর ওর লাভের লাভ কিছুই হবে না ৷”

__”মেয়েটার কি হয়েছে আল্লাহ মালুম ৷”
ওদের গাড়ি চলছে আর আরু মনে মনে অনেকক্ষণ ধরে একটা কথা ভাবছে তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওকে ওর আম্মুকে বলতেই হবে না হলে বড় কিছু ঘোটালা হয়ে যাবে ৷
আরু ওর আম্মুর হাতে গুতো দিয়ে বলল,,,,
__” ও আমার পিয়ারি আম্মু শোনো না ৷”
আরূর মা বিরক্ত হয়ে বললেন,,,,,
__” কি বল ৷”

__”তুমি ওখানে গিয়ে আবার এসমস্ত কথা বলবে না তো?”(কাচুমাচু ফেস করে )
__”কেন বলতে হঠাৎ এই সমস্ত কথা বলছিস? আর নতুন করে বলবো কি তোর কীর্তিকলাপ তো তোর অনিকা আন্টির আর জানতে আর বাকি নেই ৷”
আরূ উত্তেজিত হয়ে বলল,,,,,
__” সেখানে তো কোন সমস্যা নেই , সমস্যা হলো ওই যে আমার ক্রাশ ৷”
বলেই মুখটা হাত দিয়ে চেপে ধরল ৷ আর একটু হলেই আসল কথাটা পেট থেকে বার হয়ে যাচ্ছিল ওর ৷
__”ক্রাশ মানে ঠিক বুঝলাম না , কি বলতে চাইলি৷”

__”আমি বলতে চাইছিলাম যে আব্বু বারবার তোমার উপর ক্রাশ খাই আর নতুন করে প্রেমালাপ শুরূ করে ,হাউ রোমেন্টিক ৷”
উনি বাঁকা চোখে তাকিয়ে আর কিছু বললেন না , উনি আর ওনার মেয়ের সাথে কোন কথা বাড়ালেন না কারণ ওনার মেয়েকে এত বছরেও উনি বুঝতে পারলেন না যে ও কি চায় , এত মুড সুইং হয় যে ওর চাওয়া পাওয়া গুলো বোঝা মুশকিল ৷
এতক্ষণ ধরে এই সমস্ত কথাগুলো ভাবছিল আরূ হঠাৎ পেছন থেকে সানার গলার আওয়াজ শুনেই ও চমকে উঠলো ৷
__” উনি চলে এসেতেন?”(উত্তেজিত হয়ে)
__”না এখনো আসেনি তবে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে , আর তুই এতখন কি ভাবছিলি?কখন থেকে ডেকেই যাচ্ছি আমি, তোর কোন সাড়া শব্দই নেই ৷”
আরু দাঁত বার করে হেসে বলল,,,,,

__” কই কিছুনা ৷”
__’বাই দ্যা ওয়ে আম্মু তোর জন্য চৌকো পরোটা বানাচ্ছে ৷”
__”নীচে নেমেই আন্টিকে একটা চুমু দেবো ৷”
সানা মনে মনে,,,,,
__”তুই নিজেও পাগল আর তোর সাথে আমার আম্মুও ,নাহলে কে চৌকো পরোটা খেতে চাই আর কে বানাতে চাই ৷?”
__” সানা আমাকে একটু আমার ক্রাশের ঘরে নিয়ে যাবি , আইমিন তোর ভাইয়ার রুমে ৷ আজ অব্দি তোমাকে তো নিয়ে গেলি না (মুখ ভাঙছি দিয়ে ) তাই আজকে তো নিয়ে যেতেই পারিস ৷?”
__”না একদমই না , ভাইয়া ওর রুমে কাউকে এলাও করে না , ইভেন আমি নিজেও খুব একটা যাই না শর রুমে , আম্মু গিয়ে মাঝে মাঝে পরিষ্কার করে আসে রুমটা ৷”

__”কি আছে এমন ঐ রুমে যে কাউকে এলাও করে না ৷”
__”এমনিই দেয় না , কারন ভাইয়া পছন্দ করে না তাই, আমি এর থেকে বেশী আর কিছু জানি না…”
__”কিন্তু আমিতো যাবোই ৷”
__”একদমই নয় , এখানে চুপ করে বসে থাক যতক্ষণ না ভাইয়া আসছে…”
__”আচ্ছা আমি একা একা বসে বোরিং ফিল করছি তাই আয় তোর সাথে গল্প করি ৷” বলে সানার হাত ধরে ওর পাশে বসিয়ে দিল ৷

মুহুর্তের মধ্যে সানার সারা শরীর জুড়ে যেন ঝড় বয়ে গেল , আরু ওর সাথে গল্প করবে মানে ওর জীবন তেজপাতা ৷ মহীয়সী নারীদের মতো জ্ঞান দেয় ও যা সানার একদম ভালো লাগেনা তবুও বাধ্য হয়ে মাঝেমাঝে শুনতে হয় , তবে আজকে কোন মতেই না ৷”
__”আরে তোর সাথে কথা বলতে বলতে আমি তো ভুলেই গেলাম যে আম্মু আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পাঠিয়েছিল যে তোর পরোটাতে ঘি দেবে কি না ৷”
আরু দাত বার করে হেসে ওকে টাটা করার ইশারা করে বলল,,,,,

__”দিতে বল, আজকে কেন জানি না ঘি জিনিসটার প্রতি আমার প্রেম প্রেম পাচ্ছে ৷”
কথার কথাটা শোনা মাত্রই সানা আর দাঁড়ালো না , ওই রুমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেরিয়ে যাওয়াই ওর পক্ষে মঙ্গল ৷
সানা রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই আরু বিজয়ের হাসি দিল ,,,,,,,,
__”ইয়াপ আমি সাকসেসফুল ৷ আমি জানি তো তুই আমাকে যেতে দিবি না তাই আমাকে নিজেই ব্যবস্থা করতে হলো আমার ক্রাশের রুমে যাওয়ার জন্য ৷ আমাকে দেখতেই হবে কি এমন আছে যার জন্য কাউকে এলাও করে না ৷ অবশ্য ইন ফিউচার রুমটা তো আমারো হতে পারে তাইনা ! “কথাটা বলে আরু লজ্জায় মুখ ঢাকলো ৷
আরু দরজা খুলে আসতে আসতে করিডোর দিয়ে কিছুটা দূরে এগিয়ে যেতেই একটা রুম দেখতে পেল৷ দরজাটা বাইরে থেকে আটকানো ৷

এর আগে অনেকদিন ও সানাদের বাড়িতে এসেছে তবে কখনই রুমটায় যাওয়া হয়নি ওর, তাই ওটাই ভাবলো সেইরুম ৷ধীর পায়ে রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো তারপরে কোনো কিছু না ভেবেই দরজাটা খুলে ভিতরে ঢুকে গেল….
ভিতরে ঢুকতেই আরু অবাক কারণ বাইরে থেকে রুমটা যতটাই ছোট মনে হচ্ছিলো ভেতর থেকে ঠিক ততটাই বড় , রুমটা সম্পূর্ণরূপে পরিপাটি করে গোছানো রয়েছে , দেওয়ালগুলো সাদা , ঘরের পর্দা গুলোও সাদা , ঘরের একপাশে লম্বা বুকশেলফ রয়েছে আর তাতে অজস্র বইয়ের সমাহার, এদিক ওদিক তাকাতেই ওর চোখ গেল ফ্লাওয়ার ভাস টার দিকে , সেখানে সাদা রঙের অর্কিড ফুলগুলো ওকে ভীষণভাবে আকৄষ্ট করছে ৷ বরাবরই অর্কিড ওর ভীষণ প্রিয় , তবে এর আগে কখনো সাদা রঙের অর্কিড ও দেখেনি তাই ফুলগুলো দেখতেই তাড়াতাড়ি করে ফ্লাওয়ার ভাসটার কাছে গিয়ে ফুলদানিটা হাতে জড়িয়ে নিয়ে ফুলগুলোর ঘ্রাণ নিতে লাগলো ৷ অপূর্ব যাকে বলে এককথায় ৷

__” সামথিং ইজ ডিফারেন্ট ইন ইউ মাই ডিয়ার ক্রাশ ৷হুইচ আই লাইক ইট ৷”
ফুলগুলো একদম সতেজ তা সেগুলো দেখেই বুঝতে পারল আরু ৷ হয়তো তিনি আসবেন বলেই নতুন করে ই ঘরটা পরিপাটি করে রাখা হয়েছে, ফুলগুলোকেও চেঞ্জ করা হয়েছে৷
ফুলদানিটা রেখে ব্যালকনির দিকে তাকাতেই দেখলো বিরাট বড় একটা অ্যাকোয়ারিয়াম আর তাতে অজস্র রংবেরঙের মাছ , তা দেখে আরুর মনটা খুশি হয়ে গেল ৷ ওর বাড়িতে অ্যাকোরিয়াম নেই কারণ ও জিনিসের যত্ন করতে পারেনা তাই মাছগুলোকে আনলে মাছগুলো যে অনাহারে মরবে তা ‌ও জানে , সেই কারণে আর ওর আম্মু আনতে দেয় না ৷ তাছাড়া উনিও সারাদিনের বাড়ির কাজের ব্যস্ততায় মাছ গুলোর পরিচর্যা করতে পারবেন না বলে সে কথা আর দুবার ভেবে দেখেননি…
অ্যাকোরিয়ামটাতে হাত দিয়ে আলতো করে স্পর্শ করতেই একটা গোল্ডফিশ এসে ওর আঙুল বরাবর কাঁচটা যেখানে স্পর্শ করেছে সেখানে গোল্ডফিশটা মুখ ঠেকালো…..

মাছটা মুখটা ঠেকাতেই আরু খুশিতে ডগোমগো হয়ে গেল, ভীষণ ভালো লাগছে ওর ৷
__” পছন্দ আছে বেশ , একদম অন্যরকম একজন মানুষ ৷”
একুরিয়ামের কাছে বেশ কিছুক্ষণ থেকে রুমের ভেতর ঢুকলো ও , চোখটা এদিক ওদিক ঘুরছে আর সবকিছু পরখ করে দেখছে , যে মানুষটা কে ও চেনে না ,জানে না সে মানুষটা সম্বন্ধে জানার জন্য ওর আগ্রহের শেষ নেই ৷
হঠাৎ চোখ পড়ল আলমারির ওপর রাখা গিটারটার দিকে ৷
গিটারটার দিকে চোখ পড়তেই আরূর মনে প্রবল ইচ্ছা জাগল সেটা বাজানোর জন্য , কিন্তু ও তো বাজাতে পারে না !
__”না পারলে সমস্যা কোথায় ? প্রয়োজনে শিখব ৷
আর কবি বলেছেন যে,,,,,
” পারিবোনা একথাটি বলিওনা আর,
একবার না পারিলে দেখো শতবার ৷”
আরু তুইও চেষ্টা পারবি , লেটস ট্রাই ৷”

কথাটা নিজে নিজেই বলে গিটারটা পাড়ার চেষ্টা করল তবে হাতটা ওর পৌঁছাচ্ছে না গিটার অব্দি , ওর হাইট অনেকটাই শর্ট তাই হাতটা গিটার অব্দি পৌঁছাচ্ছে না দেখে আরু বললো,,,,
__”আঙুর ফল টক ৷ তাই আরুপাখি ওসব কিছু তোমার জন্য নয় বাবু ৷”
বলে গিটারটার ভাবনা ছেড়ে দিল ৷
অনেকক্ষণ ধরে রুমটা ঘোরাঘুরি করে দেখছে ও তাই একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, চারিদিকে সব সাদা সাদা দেখতে দেখতে ৷
__” কোন মানুষের এসব পছন্দ হয় কেমনে ?” এই বলে বিছানায় শুয়ে পড়ল হাত-পা ছড়িয়ে দিয়ে ৷
নিজের রুমে ঢুকতে যাবে তখনই রুমের ভিতরে দরজাটা সামান্য খোলা দেখে আরিশের ভ্রূ জোড়া আপনা আপনিই কুঁচকে এল, আর ভাবতে লাগলো রুমের দরজাটা কেন খোলা ৷ সাধারণত ওর আম্মু বা সানা রুমে আসলেই দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে যাই, তাহলে কি ভেতরে কেউ আছে?

তাড়াতাড়ি করে রুমের ভিতরে ঢুকে গেল আরিস, ঢুকতেই দেখলো একটা মেয়ে বিছানার উপর সটান হয়ে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে , দেখতে কিছুটা অদ্ভুত লাগলেও মাথাটা এবার ওর বিগড়ে গেল ৷
কারণ ওর রুমে ঢুকে ওর জিনিসপত্রে টাচ করার মতো কাজ সাধারনত বাইরের লোকরা করে না ৷ এখনো আরূর মুখটা দেখেনি ও ৷
__”এই মেয়ে কে তুমি আর এভাবে অন্যের রুমে না বলে ঢোকার সাহস তুমি কোথা থেকে পেলে ?”
হঠাৎ একটা চেনা পুরুষালী কন্ঠ শুনে আরূ চমকে গেল, গলার স্বরটা যেন কোথায় শুনেছে ও তবে মনে করতে পারছেনা এখন ৷ তাড়াতাড়ি করে উঠে দেখতেই আরিশ কে দেখতে পেল ও ৷

__”আপনি এখানে ! আপনি এখানে কি করছেন ?দেখতে দেখতে আমার পিছু নিয়ে নির্লজ্জর মতো এখানে এসেছন ৷”
আরূকে এখানে আর এভাবে দেখে আরিশ অবাক হলো একটু,,,,,,
__”আর ইউ ক্রেজি , মানে মাথার একটা তার ছেঁড়া নাকি ? আজব ! আমার রুমে ঢুকে আমাকেই বলছেন যে অন্যর রুমে কেন ঢুকেছি, লাইক সিরিয়াসলি !”
আরিশের কথা শুনে আরূ একটু থতমত খেয়ে গেল, তাহলে এটা কি ওর সেই ক্রাশ যাকে দেখার জন্য আরু এতক্ষণ ধরে পাগল হয়েছিল , তবে এখন আর পাগল হতে ইচ্ছা করছে না,এখন ওর রাগটা সপ্তম আসমানে ছাড়িয়ে গেছে ৷
হঠাৎ মনে পড়ল কলেজে আরিশ ওকে একবার দেখে অ্যাটিটিউড দেখিয়ে গাড়িতে উঠে পড়েছিল ৷ আর আরু কারোর অ্যাটিটিউড সহ্য করে না একদম ৷
আরিসের সামনে গিয়ে বলল,,,,

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ১

__” আমি যদি জানতাম এটা আপনার রুম , যদি জানতাম তাহলে আমি কখনোই আসতামনা ঠিক আছে ৷”
__” তা আপনি এখন যখন জেনে গেছেন আশা করি আপনার এই রুমে আর কাজ নেই তাই আপনি যেতে পারেন…”
আরিসের কথাগুলো যেন এখন ওর কাছে ঠিক কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত লাগছে ৷
__”আপনার মত বেয়াদব এর সাথে আমার কথা বলার কোন ইচ্ছা নেই ৷ আপনার নিজের অ্যাটিটিউড নিজের পকেটে রাখেন ৷”
আরুর থেকে এত কিছু শোনার পরেও আরিশ শান্তকণ্ঠে বলল,,,,,,

__” আচ্ছা আপনি এখন এই রুম থেকে যেতে পারেন, আমি আমার রুমে কাউকে এলাও করি না, তাই যত তাড়াতাড়ি যাবেন তত তাড়াতাড়ি আপনার জন্যই মঙ্গল ৷”
__”কী করবেন এখান থেকে না গেলে, কি করবেন , আমি যাব না দেখি আপনি কি করেন ৷”
বলে বিছানায় হাত পা গুটিয়ে বসে পড়ল ৷
__”ভারী পাগলের পাল্লায় পড়লাম তো !”

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ৩