পূর্ণতা নাকি শূন্যতা পর্ব ২

পূর্ণতা নাকি শূন্যতা পর্ব ২
রেজওয়ানা রমা

আমার কাছ থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধাত ভাইয়া বলে,
– নে যা তোর প্রেমিক তো তোর সামনেই আছে। এখনো যাচ্ছিস না কেন? যা
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

ভাইয়া আমাকে এখানে ওর জন্য এনেছে? ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। কি করবো এখন। রাক্ষস টা কিভাবে জানলো আমি ওর সাথে মিট করতে চেয়েছিলাম। হায় আল্লাহ বাচাও আমায় এবারের মত। না হলে রাক্ষস আমাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে। মনে মনে এইসব বিড় বিড় করছিলাম তখনই রাক্ষস টা আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

– কি করছো? হাতে লাগছে ছাড়ো সিদ্ধাত ভাইয়া প্লিজ। লাগছে তো
-নাও তোমরা কথা বলো আমি বাইরে আছি।
বলেই ভাইয়া আমাকে রেখে বাইরে চলে যায়। আমি থ হয়ে দাড়িয়ে আছি। চোখের সামনে সেই মানুষ টা যাকে আমি ভুল করে ভালোবাসে ফেলেছি। কিন্তু এই মানুষ টা সঠিক নয়। ভালোবাসার মানে আমাকে সিদ্ধাত ভাইয়া বুঝিয়েছে। আমি এখন বুঝি কোন টা ভালোবাসা আর কোন টা ভালো লাগা। কিছুক্ষণ পর আমি মেঘ ( আমার প্রাক্তন প্রেমিক) বললাম।

– বলো কেন দেখা করতে চেয়েছিলে?
মেঘ: কেমন আছো ঈশা
আমি: ভালো আছি। যা বলবে তারাতারি বলো। আমাকে যেতে হবে
মেঘ: খুব ব্যস্ত?
আমি: হ্যাঁ তোমার জন্য আমি সবসময় ব্যস্ত। আমার জামাই বাইরে দাড়িয়ে আছে। আমাকে যেতে হবে। তোমার কি আর কিছু বলার আছে?

মেঘ: বিয়ে টা তো এখনো হয় নি।
আমি: হয়েছে।
মেঘ: কবে? কাল ই তো বললে এখনো সাত দিন বাকি আছে
আমি: আজ বিয়ে টা হয়ে গেছে। আমরা বিয়ে করে এখানে এসেছি। আর কিছু বলার আছে তোমার?
মেঘ: বিয়ে করে ফেললে?

আমি : হ্যাঁ ফেললাম। যাকে ভালোবাসি তাকে বিয়ে করেছি।
মেঘ: আমাকে ভালোবাসো নি?
আমি: তুমি বেসেছিলে? লিসেন মেঘ, পুরোনো কথা তুলো না। আমি কিন্তু কিছুই ভুলি নি। ঠিক আছে? আর যোগাযোগ করবে না আমার সাথে। প্লিজ
কথা গুলো বলে আমি উল্টো ঘুরে হাটা দিলাম শুনতে পেলাম মেঘ বলছিলো,

– ভুল করেছি আমি। প্লিজ ঈশা ক্ষমা করে দাও। ফিরে এসো ঈশার। তোমার মত করে কেউ ভালোবাসে না।
আমি মেঘের কথায় কর্ণপার না করে চলে এলাম। বাইরে এসে দেখি মহাশয় সিগারেট টানছে। আমাকে দেখে বলল,
– কথা শেষ?
– হুম ( নরম সুরে)
– এতো তারাতারি?
-তো? পিরিতের আলাপ করবো নাকি ওর সাথে যে অনেক সময় লাগবে? ( রেগে বললাম)
– করতেও পারিস
– বাড়ি যাবো।

সিদ্ধাত ভাইয়া এখনো রেগে আছে বুঝতে পারছি। কিন্তু উনি এখনো সেই রাগ টা আমার ওপর ঝারে নি। ভয়ে ভয়ে আছি কখন যে ঝড় টা উঠবে। কি যে হবে। আজকে মনে হয় আমাকে মেরেই ফেলবে। এসব ভাবতে ভাবতে গাড়ি তে উঠে বসলাম। ভাইয়া এখনো সিগারেট টানছে। রেগে গেলেই সিগারেট খায় খাটাস টা।

এখনো খাচ্ছে। এদিকে যে আমার সিগারেটের গন্ধ সহ্য হয় না সেটা মনে হয় ভুলে গেছে। উফ আমি আর সহ্য করতে পারছি না, বলতেও পারছি না। খালি ছটফট করছি। এর মধ্যেই দেখি রাক্ষস টা সিগারেট ফেলে দিয়েছে। মনে মনে বললাম,

– ওরে আমার রাক্ষস রে থুড়ি জামাই রে। বুঝে গেছো না আমার কষ্ট হচ্ছে হিহিহিহি। এত্ত গুলো ভালোবাসি রাক্ষস টা কে উম্মাহ
গাড়ি চলছে আপন গতিতে। ভাইয়া আমার সাথে কথাই বলছে না। আমি বেশিক্ষন চুপ করে থাকতে পারি না। পেটের ভিতর কেমন কেমন করে। এই যে দেখছেন না আপনাদের সাথে কত বকবক করছি। কিন্তু এই খাটাস টা একটা কথাও বলছে না। তাই না পেরে আমি ই বললাম,

– তুমি কি রেগে আছো রাক্ষস ভাইয়া থুক্কু সিদ্ধাত ভাইয়া?
– কি বললি? আবার বল
– বললাম তুমি কি রেগে আছো?
– না এটা নয়। আমি কি ভাইয়া?
– (এই রে শুনে ফেলেছে। এবার কি হবে। কি বলবো – মনে মনে) তু তুমি তুমি তো সিদ্ধাত ভাইয়া
– আমি যেন অন্য কিছু শুনলাম

– তুমি কানে যে একটু কম শোনো সেটা তো আমরা সবাই ই জানি। এখনো ভুল ভাল কি না কি শুনেছো
– শাট আপ । মুখ টা বন্ধ কর। তুই কি করেছিস আমি ভুলে গেছি ভাবছিস? ( রেগে)
– এমা!! ভুলবে কেন? ছোট থেকে বড় মা তোমাকে কত গুলো হরলিক্স খাইয়েছে কি ভুলে যাওয়ার জন্য?
– তুই কি চুপ করবি নাকি গাড়ি থেকে ফেলে দেবো।

আমি এবারও ঝাড়ি খেয়ে চুপ হয়ে গেলাম। খাটাস টা সব সময় এমন করে। বড় মা জিজ্ঞাসা করবো মুখে মধু কেন দেয় নি রাক্ষসের। ভাল্লাগে না। ভাবলাম ধুম ধাম করে বিয়ে করবো সব টা নষ্ট করে দিলো। বিয়ে কি মানুষ বার বার করে। আমার সব প্লান মাটি করে দিলো। আমার আর বউ সেজে ছবি তোলা হলো না। ফেসবুকে পোস্ট ও করা হলো না। এইসব ই ভাবছিলাম হঠাৎ দেখি আমাদের গাড়ি টা চলছে না।

– এমা গাড়ি চলছে না কেন? সিদ্ধাত ভাইয়া কই। সিদ্ধাত ভাইয়া ও সিদ্ধাত ভাইয়া? আরে এই সিদ্ধাত ভাইয়া আবার কই গেল। গাড়ি কে চালাবে। বাড়ি ফিরবো কিভাবে?
– তুই কি গাড়িতে থাকবি বলে ঠিক করেছিস?

সিদ্ধাত ভাইয়ার এমন কড়া কথায় মাথা তুলে দেখি ভাইয়া এবারও জানালার পাশে দাঁড়িয়ে। আর আমাদের গাড়ি টা বাড়ির সামনে। আমি তারাতারি গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভিতর দৌড় দেবো এমন ই একটা প্রিপারেশন নিচ্ছি। কিন্তু আমার প্রিপারেশনের চৌদ্দ টা বাজিয়ে মহাশয় আমার হাত ধরে ফেলল। আমি চোখ পিট পিট করে তাকিয়ে মুখে জোর করে একটা হাসি এনে বললাম,

– আমি তোমাকে না নিয়ে যাবো নাকি। আমি তো দেখছিলাম আ…..
– তোর মুখ কি কখনও বন্ধ হয় না?
– এই নাও বন্ধ হলো আমার মুখ ( মুখে আঙুল দিয়ে বললাম)
– শোন। আমরা যে বিয়ে করেছি সেটা যেন কেউ না জানে বাড়ি তে। জানলে তোর অবস্থা কি হবে বুঝতে পারছিস তো?
– কেন কেন??

– বড্ড বেশি প্রশ্ন করিস ঈশা। যা বলেছি সেটা মাথায় রাখবি। ওকে?
-ওক্কে রাক্ষস রাজা থুক্কু সিদ্ধাত ভাইয়া (জিভে কামড় দিয়ে)
– কি বলল? ( রাগী লুকে)
-এই রে সত্যি কথা বের হয়ে যায় খালি।

বলেই হাত ছাড়িয়ে দিলাম মেরাথন দৌড়। এক দৌড়ে বাড়ির ভিতরে। পিছনে শুনতে পেলাম রাক্ষস টা বলছিল,
– পালিয়ে যাবি কই। একবার ধরতে পারি বুঝাবো এই সিদ্ধাত কি জিনিস।
আমি রাক্ষস রাজার কথায় কর্ণপাত করলাম না। বাড়ি ঢুকেও দৌড়াচ্ছি দৌড়াচ্ছি ধরাম করে ধাক্কা খেলাম বড় মার সাথে। বড় মার হাতের ফুল গুলো সব পড়ে গেল। সাথে আমিও। জোরে চিল্লাই উঠলাম।

– চোখের মাথা খেয়েছো নাকি। দিলে তো কোমর টা ভেঙে? উবাবা গো। ফ্লোর টাও বদজ্জাত হয়েছে।কি শক্ত। বিয়ের আগেই বর টা আমার বিধবা হয়ে গেলো রে।
বড় মা: একি এভাবে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছিলি? দেখলি তো পড়ে গেলি। সাথে আমার ফুল গুলোও ফেললি।
আমি: তুমি আমাকে তুলবে নাকি আমাকে এভাবে জ্ঞান দেবে? এক্ষুনি তোমার বদজ্জাত ছেলে চলে আসবে তোলো আমায়।
সিদ্ধাত: আমি তুলবো?

ওরে বাবা গো। আমার ব্যাথা ভালো হয়ে গেছে। বলেই উঠে দিলাম আরেক দৌড়। সোজা নিজের রুমে। দরজা বন্ধ করে একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিলাম। আসার সময় সবার জোরে হেসে উঠার শব্দ পেয়েছি। সব কটা ভিলেন। বাবা গো কি ভয়ংকর ব্যাপার। এক্ষুনি ধরে ফেলত। আর বড় মা কে বলি হারি, কেন তোমাকে এখন আসতে হবে। আমি দৌড়ে আসছি আমি না হয় দেখি নি তুমিও কি দেখো না।

ফুল গুলো ফেলে দিলো সব টা পড়লো আমার ওপর সিনেমার মত। উফফফ
আর ওদিকে নিচে বিয়ের আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। বাড়ি টা সাজাচ্ছে। আসলে এক সপ্তাহ ধরে বিয়ের অনুষ্ঠান চলবে। আজ শনিবার। আজ থেকেই শুরু।

কি জানি আজ সন্ধ্যায় আবার কার শ্রাদ্ধ আছে থুক্কু বিয়ের কি জানি অনুষ্ঠান আছে। সবাই ব্যস্ত। আমার ক্রাইম পার্টনার দুইটা এক মাস আগে থেকেই আমাদের বাড়িতে। বাকি গুলো আজকে সন্ধ্যায় হাজির হবে মনে হয়। মেরাথনে আমি ই ফাস্ট হয়েছি এখন যাই ফ্রেস হয়ে আসি। উল্টো ঘুরে ওয়াসরুম যাবো এমন সময় চোখের সামনে এই জন্তু টা কে দেখার জন্য একদম প্রস্তুত ছিলাম না,,,

আমার কাছ থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধাত ভাইয়া বলে,
– নে যা তোর প্রেমিক তো তোর সামনেই আছে। এখনো যাচ্ছিস না কেন? যা
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

ভাইয়া আমাকে এখানে ওর জন্য এনেছে? ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। কি করবো এখন। রাক্ষস টা কিভাবে জানলো আমি ওর সাথে মিট করতে চেয়েছিলাম। হায় আল্লাহ বাচাও আমায় এবারের মত। না হলে রাক্ষস আমাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে। মনে মনে এইসব বিড় বিড় করছিলাম তখনই রাক্ষস টা আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

– কি করছো? হাতে লাগছে ছাড়ো সিদ্ধাত ভাইয়া প্লিজ। লাগছে তো
-নাও তোমরা কথা বলো আমি বাইরে আছি।
বলেই ভাইয়া আমাকে রেখে বাইরে চলে যায়। আমি থ হয়ে দাড়িয়ে আছি। চোখের সামনে সেই মানুষ টা যাকে আমি ভুল করে ভালোবাসে ফেলেছি। কিন্তু এই মানুষ টা সঠিক নয়। ভালোবাসার মানে আমাকে সিদ্ধাত ভাইয়া বুঝিয়েছে। আমি এখন বুঝি কোন টা ভালোবাসা আর কোন টা ভালো লাগা। কিছুক্ষণ পর আমি মেঘ ( আমার প্রাক্তন প্রেমিক) বললাম।

– বলো কেন দেখা করতে চেয়েছিলে?
মেঘ: কেমন আছো ঈশা
আমি: ভালো আছি। যা বলবে তারাতারি বলো। আমাকে যেতে হবে
মেঘ: খুব ব্যস্ত?
আমি: হ্যাঁ তোমার জন্য আমি সবসময় ব্যস্ত। আমার জামাই বাইরে দাড়িয়ে আছে। আমাকে যেতে হবে। তোমার কি আর কিছু বলার আছে?

মেঘ: বিয়ে টা তো এখনো হয় নি।
আমি: হয়েছে।
মেঘ: কবে? কাল ই তো বললে এখনো সাত দিন বাকি আছে
আমি: আজ বিয়ে টা হয়ে গেছে। আমরা বিয়ে করে এখানে এসেছি। আর কিছু বলার আছে তোমার?
মেঘ: বিয়ে করে ফেললে?

আমি : হ্যাঁ ফেললাম। যাকে ভালোবাসি তাকে বিয়ে করেছি।
মেঘ: আমাকে ভালোবাসো নি?
আমি: তুমি বেসেছিলে? লিসেন মেঘ, পুরোনো কথা তুলো না। আমি কিন্তু কিছুই ভুলি নি। ঠিক আছে? আর যোগাযোগ করবে না আমার সাথে। প্লিজ
কথা গুলো বলে আমি উল্টো ঘুরে হাটা দিলাম শুনতে পেলাম মেঘ বলছিলো,

– ভুল করেছি আমি। প্লিজ ঈশা ক্ষমা করে দাও। ফিরে এসো ঈশার। তোমার মত করে কেউ ভালোবাসে না।
আমি মেঘের কথায় কর্ণপার না করে চলে এলাম। বাইরে এসে দেখি মহাশয় সিগারেট টানছে। আমাকে দেখে বলল,
– কথা শেষ?
– হুম ( নরম সুরে)
– এতো তারাতারি?
-তো? পিরিতের আলাপ করবো নাকি ওর সাথে যে অনেক সময় লাগবে? ( রেগে বললাম)
– করতেও পারিস
– বাড়ি যাবো।

সিদ্ধাত ভাইয়া এখনো রেগে আছে বুঝতে পারছি। কিন্তু উনি এখনো সেই রাগ টা আমার ওপর ঝারে নি। ভয়ে ভয়ে আছি কখন যে ঝড় টা উঠবে। কি যে হবে। আজকে মনে হয় আমাকে মেরেই ফেলবে। এসব ভাবতে ভাবতে গাড়ি তে উঠে বসলাম। ভাইয়া এখনো সিগারেট টানছে। রেগে গেলেই সিগারেট খায় খাটাস টা।

এখনো খাচ্ছে। এদিকে যে আমার সিগারেটের গন্ধ সহ্য হয় না সেটা মনে হয় ভুলে গেছে। উফ আমি আর সহ্য করতে পারছি না, বলতেও পারছি না। খালি ছটফট করছি। এর মধ্যেই দেখি রাক্ষস টা সিগারেট ফেলে দিয়েছে। মনে মনে বললাম,

– ওরে আমার রাক্ষস রে থুড়ি জামাই রে। বুঝে গেছো না আমার কষ্ট হচ্ছে হিহিহিহি। এত্ত গুলো ভালোবাসি রাক্ষস টা কে উম্মাহ
গাড়ি চলছে আপন গতিতে। ভাইয়া আমার সাথে কথাই বলছে না। আমি বেশিক্ষন চুপ করে থাকতে পারি না। পেটের ভিতর কেমন কেমন করে। এই যে দেখছেন না আপনাদের সাথে কত বকবক করছি। কিন্তু এই খাটাস টা একটা কথাও বলছে না। তাই না পেরে আমি ই বললাম,

– তুমি কি রেগে আছো রাক্ষস ভাইয়া থুক্কু সিদ্ধাত ভাইয়া?
– কি বললি? আবার বল
– বললাম তুমি কি রেগে আছো?
– না এটা নয়। আমি কি ভাইয়া?
– (এই রে শুনে ফেলেছে। এবার কি হবে। কি বলবো – মনে মনে) তু তুমি তুমি তো সিদ্ধাত ভাইয়া
– আমি যেন অন্য কিছু শুনলাম

– তুমি কানে যে একটু কম শোনো সেটা তো আমরা সবাই ই জানি। এখনো ভুল ভাল কি না কি শুনেছো
– শাট আপ । মুখ টা বন্ধ কর। তুই কি করেছিস আমি ভুলে গেছি ভাবছিস? ( রেগে)
– এমা!! ভুলবে কেন? ছোট থেকে বড় মা তোমাকে কত গুলো হরলিক্স খাইয়েছে কি ভুলে যাওয়ার জন্য?
– তুই কি চুপ করবি নাকি গাড়ি থেকে ফেলে দেবো।

আমি এবারও ঝাড়ি খেয়ে চুপ হয়ে গেলাম। খাটাস টা সব সময় এমন করে। বড় মা জিজ্ঞাসা করবো মুখে মধু কেন দেয় নি রাক্ষসের। ভাল্লাগে না। ভাবলাম ধুম ধাম করে বিয়ে করবো সব টা নষ্ট করে দিলো। বিয়ে কি মানুষ বার বার করে। আমার সব প্লান মাটি করে দিলো। আমার আর বউ সেজে ছবি তোলা হলো না। ফেসবুকে পোস্ট ও করা হলো না। এইসব ই ভাবছিলাম হঠাৎ দেখি আমাদের গাড়ি টা চলছে না।

– এমা গাড়ি চলছে না কেন? সিদ্ধাত ভাইয়া কই। সিদ্ধাত ভাইয়া ও সিদ্ধাত ভাইয়া? আরে এই সিদ্ধাত ভাইয়া আবার কই গেল। গাড়ি কে চালাবে। বাড়ি ফিরবো কিভাবে?
– তুই কি গাড়িতে থাকবি বলে ঠিক করেছিস?

সিদ্ধাত ভাইয়ার এমন কড়া কথায় মাথা তুলে দেখি ভাইয়া এবারও জানালার পাশে দাঁড়িয়ে। আর আমাদের গাড়ি টা বাড়ির সামনে। আমি তারাতারি গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভিতর দৌড় দেবো এমন ই একটা প্রিপারেশন নিচ্ছি। কিন্তু আমার প্রিপারেশনের চৌদ্দ টা বাজিয়ে মহাশয় আমার হাত ধরে ফেলল। আমি চোখ পিট পিট করে তাকিয়ে মুখে জোর করে একটা হাসি এনে বললাম,

– আমি তোমাকে না নিয়ে যাবো নাকি। আমি তো দেখছিলাম আ…..
– তোর মুখ কি কখনও বন্ধ হয় না?
– এই নাও বন্ধ হলো আমার মুখ ( মুখে আঙুল দিয়ে বললাম)
– শোন। আমরা যে বিয়ে করেছি সেটা যেন কেউ না জানে বাড়ি তে। জানলে তোর অবস্থা কি হবে বুঝতে পারছিস তো?
– কেন কেন??

– বড্ড বেশি প্রশ্ন করিস ঈশা। যা বলেছি সেটা মাথায় রাখবি। ওকে?
-ওক্কে রাক্ষস রাজা থুক্কু সিদ্ধাত ভাইয়া (জিভে কামড় দিয়ে)
– কি বলল? ( রাগী লুকে)
-এই রে সত্যি কথা বের হয়ে যায় খালি।

বলেই হাত ছাড়িয়ে দিলাম মেরাথন দৌড়। এক দৌড়ে বাড়ির ভিতরে। পিছনে শুনতে পেলাম রাক্ষস টা বলছিল,
– পালিয়ে যাবি কই। একবার ধরতে পারি বুঝাবো এই সিদ্ধাত কি জিনিস।
আমি রাক্ষস রাজার কথায় কর্ণপাত করলাম না। বাড়ি ঢুকেও দৌড়াচ্ছি দৌড়াচ্ছি ধরাম করে ধাক্কা খেলাম বড় মার সাথে। বড় মার হাতের ফুল গুলো সব পড়ে গেল। সাথে আমিও। জোরে চিল্লাই উঠলাম।

– চোখের মাথা খেয়েছো নাকি। দিলে তো কোমর টা ভেঙে? উবাবা গো। ফ্লোর টাও বদজ্জাত হয়েছে।কি শক্ত। বিয়ের আগেই বর টা আমার বিধবা হয়ে গেলো রে।
বড় মা: একি এভাবে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছিলি? দেখলি তো পড়ে গেলি। সাথে আমার ফুল গুলোও ফেললি।
আমি: তুমি আমাকে তুলবে নাকি আমাকে এভাবে জ্ঞান দেবে? এক্ষুনি তোমার বদজ্জাত ছেলে চলে আসবে তোলো আমায়।
সিদ্ধাত: আমি তুলবো?

ওরে বাবা গো। আমার ব্যাথা ভালো হয়ে গেছে। বলেই উঠে দিলাম আরেক দৌড়। সোজা নিজের রুমে। দরজা বন্ধ করে একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিলাম। আসার সময় সবার জোরে হেসে উঠার শব্দ পেয়েছি। সব কটা ভিলেন। বাবা গো কি ভয়ংকর ব্যাপার। এক্ষুনি ধরে ফেলত। আর বড় মা কে বলি হারি, কেন তোমাকে এখন আসতে হবে। আমি দৌড়ে আসছি আমি না হয় দেখি নি তুমিও কি দেখো না।

ফুল গুলো ফেলে দিলো সব টা পড়লো আমার ওপর সিনেমার মত। উফফফ
আর ওদিকে নিচে বিয়ের আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। বাড়ি টা সাজাচ্ছে। আসলে এক সপ্তাহ ধরে বিয়ের অনুষ্ঠান চলবে। আজ শনিবার। আজ থেকেই শুরু।

পূর্ণতা নাকি শূন্যতা পর্ব ১

কি জানি আজ সন্ধ্যায় আবার কার শ্রাদ্ধ আছে থুক্কু বিয়ের কি জানি অনুষ্ঠান আছে। সবাই ব্যস্ত। আমার ক্রাইম পার্টনার দুইটা এক মাস আগে থেকেই আমাদের বাড়িতে। বাকি গুলো আজকে সন্ধ্যায় হাজির হবে মনে হয়। মেরাথনে আমি ই ফাস্ট হয়েছি এখন যাই ফ্রেস হয়ে আসি। উল্টো ঘুরে ওয়াসরুম যাবো এমন সময় চোখের সামনে এই জন্তু টা কে দেখার জন্য একদম প্রস্তুত ছিলাম না,,,

পূর্ণতা নাকি শূন্যতা পর্ব ৩