প্রণয়ের জলসাঘরে পর্ব ২৫

প্রণয়ের জলসাঘরে পর্ব ২৫
রেহানা পুতুল

ভালোবাসার মধুময় স্রোতে ভেসে গেল দুটি হৃদয়। অবগাহন করলো সুখের ফল্গুধারায়। জীবন যেন মধুর পেয়ালা। প্রতি চুমুকে চুমুকে দারুণ স্বাদ। পবিত্র ভালোবাসা মানুষের জীবনকে মহান করে তোলে। উদার হতে শেখায়। এক ক্রুশ অন্ধকার থেকে নিয়ে যায় আলোর দিগন্তে।

পিয়াসা সকালে উঠেই গোসল সেরে নামাজ পড়েই আবার শুয়ে গেল বিছানায়।
আয়মানও আজ একটু লেট করেই ঘুম থেকে উঠলো। ঘুমন্ত পিয়াসার মুখপানে সে অনিমেষ চেয়ে রইলো। নিষ্পাপ শিশুর মতো লাগছে তার বউয়ের আদুরে মুখখানা। গায়ের জামা দেখে বুঝে নিল গোসল সেরে নিয়েছে। আয়মান ও উঠে গোসল সেরে নিল। বেলা হয়ে গেল তবুও পিয়াসা উঠছেনা।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আয়মান নাস্তা খেতে গেলে তার মা জিজ্ঞেস করলো,
কিরে বউয়ের শরীর খারাপ নাকি? এখনো উঠেনি?
মা ও নামাজ পড়েই শুয়ে গেল আবার। মনে হয় তাই হবে। আমি জিজ্ঞেস করিনি।
এই ক্ষেত্রে তোর আক্কেল বুদ্ধি এত কম কেন? তুই জিজ্ঞেস করবিনা কি হয়েছে? যা জিজ্ঞেস কর। নাস্তা নিয়ে যা ওর জন্য। ধর বলে,

পিয়াসার জন্য আয়মানের হাতে নাস্তার ট্রে ধরিয়ে দিল তার মা।
আয়মান নাস্তা নিয়ে টেবিলে রাখল। মনে মনে, মাকে যে কিভাবে কোনটা বলি। পিয়াসার কপালে মুখে পরম মমতায় হাত রাখল আয়মান । পিয়াসা আয়মানের দিকে চেয়েই কাঁথা দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে ফেলল।
আয়মান হেসে ফেললো। তোমার কি খুব খারাপ লাগছে?

জানিনা। কেমন যেন কাহিল লাগছে শরীর। মৃদু স্বরে জানাল পিয়াসা।
আম্মু তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছে। বলছি শরীর খারাপ একটু। উঠো। নাস্তা খেয়ে আবার শুয়ে থাক।
আপনি চলে যান। আমি পরে খেয়ে নিব।
নোওওও। তা হবেনা। উঠো একটু । আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
পিয়াসা আয়মানের চোখে চোখ রাখতেই নুয়ে যাচ্ছে লজ্জায়।

আয়মান বুঝতে পেরে বলল,
তুমি চোখ বন্ধ রাখ। আমি রুটি ভাজি দিয়ে মুখে পুরে দিচ্ছি। পিয়াসাকে নাস্তা খাইয়ে দিয়ে আয়মান ট্রে নিয়ে বের হয়ে গেল।
মনে মনে বলল,থ্যাংকস চিনি বউ আমার। গত নিশিতে আমাকে অপার্থিব অসহ্যকর সুখে ভাসিয়ে নেওয়া জন্য।
পিয়াসা দূর্বল স্বরে হুঁ হাঁ করতে করতে ফের বিছানায় গা এলিয়ে দিল।

সম্পূর্ণ নতুন এক রোমাঞ্চকর অনুভূতির সাথে পিয়াসা ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হলো রাতে। মুহুর্তগুলো মনে করতেই সে আড়ষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গুটিসুটি হয়ে যাচ্ছে কাঁথার নিচে।
তার চেয়েও বেশী আপ্লুত হয়ে যাচ্ছে কানের দুলের কথা মনে করেই। ভোরে গোসলের সময় বেসিনের সামনের আয়নায় বারবার কানে হাত দিয়ে দেখল নিজের ভালোবাসার দুল জোড়া। আয়মান জহুরিকে দিয়ে একদম নতুনের মতো চকচক করিয়ে নিল। আয়মানের প্রতি শ্রদ্ধায়, কৃতজ্ঞতায় থেমে থেমেই পিয়াসার চোখ অশ্রুতে টলমল হয়ে উঠল ।

জীবন বড় বেশী সুন্দর। জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে খুব বেশী কিছুর প্রয়োজন হয়না৷ পরিবারের মানুষের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা,কেয়ারিং,ছোট ছোট উপহার,আবেগের মূল্যায়ন করতে পারলেই জীবনকে অর্থপূর্ণ ও মহিমান্বিত করে তোলা যায়।

অথচ এ জীবনটাকে অসুন্দর করি তুলি আমরা মানুষেরাই । নানা ছোট ছোট বিষয়কে বড় করে দেখা, অহেতুক সন্দেহ, ভুল বোঝা, অবিশ্বাস, অনাদর, অকারণেই উপহাস,উঁচু নিচুর বৈষম্য, অহংকায়,তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা কাউকে , এসব দিয়েই বিষিয়ে তুলি জীবনের বড় একটা অংশ।

বেলা বয়ে যায়। সময় গড়িয়ে সময় আসে। মাস গড়িয়ে মাস। পিয়াসা অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে উঠে গেল। আলিশা ও ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে উঠে গেল। অংক শুভ’র কাছেই করছে সে। শুভ আলিশার ফাইনাল পর্যন্তই অংক করাবে। তার সাথে এমন কথাই হয়েছে আয়মানের। ইদানীং আলিশা শুভ’র সাথে বাইরে মেলামেশা করছে বেশী। বিষয়টা আয়মানের কানে চলে এলো।
আয়মান রাতে মায়ের রুমে গিয়ে আলিশাকে ডাক দিল পিয়াসার মাধ্যমে।
আলিশা এলো ভাইয়ের সামনে।

আজকাল পড়াশোনা বাদ দিয়ে কি শুরু করছিস এসব? ঠান্ডা মেজাজে জিজ্ঞেস করলো আয়মান।
কই কি করছি? পড়াশোনাইতো করছি। টনটনে গলায় প্রতিউত্তর দিল আলিশা।
আমার কানে এসেছে কিছু। তুই বাইরে গিয়ে কি করে বেড়াচ্ছিস?
কোথায় আমি বের হই? কাঁদোকাঁদো গলায় বলল আলিশা৷

আমি এত কথা শুনতে চাইনা। তুই যার সাথে ঘুরছিস, সে ছেলে হিসেবে ভালনা। ওর সাথে অতিরিক্ত মেলামেশা বন্ধ করবি। তুই এখনো ছোট। কি বুঝিস বাস্তবতা সম্পর্কে?
আয়মানের গরম চোখে ঝাঁঝালো কথার তোড়ে আলিশা নিঃশ্চুপ হয়ে গেল।
মোবাইল দিয়েছি তোকে প্রয়োজনেই। তার অপব্যবহার করিস এখন রাত জেগে জেগে?
কই রাত জেগে জেগে মোবাইল টিপি?

তাহলে তুই সকালে উঠতে পারিসনা কেন রোজ? কাল থেকে পিয়াসার সাথে তুই ও ফজরের নামাজ পড়বি। দিনদিন উগ্রে যাচ্ছিস আমাদের প্রশ্রয় পেয়ে। যে মাথায় তুলে আদর করতে পারি। সেই মাথায় তুলে আছাড় ও দিতে পারি আমি। মনে রাখিস।
আম্মু ওকে সাবধান করে দাও বলছি।
আয়মান উঠে চলে গেল।

কিরে আয়মান কি বলল। শুনছিস? নাকি এক কানে দিয়ে ঢুকে আরেক কানে দিয়ে বের হয়ে গেল। তোর বাপ নেই। গার্ডিয়ান বলতে ওই এক বড় ভাই। সে ভাইয়ের কথা মেনে চলবিতো । নাকি?
আলিশা মেঘমুখে বোবার মতো চুপ থেকে, মায়ের সামনে থেকে চলে গেল নিজের রুমে। দরজা বন্ধ করে দিল। ফেসবুকে ঢুকে শুভর আইডিতে গেল। দেখল সে অফলাইন। তবুও মেসেজ দিয়ে রাখল।

” স্যার, ভাইয়া জেনে গিয়েছে আপনার কথা।
আমাকে বকেছে খুব। এখন একটু সাবধানে থাকতে হবে। আপনি অংক করানোর সময় অতিরিক্ত কথা লিখবেন ও না। মুখে ও কিছু বলবেন না। ”
সকালে আইড়িতে ঢুকেই শুভ মেসেজ পেল
আলিশার।

এই সেরেছে রে। প্রেমের আকাশে উদয় হলো দূর্যোগের ঘনঘটা। কে থামাবে। কি হবে। কে করিবে সমাধান।
এবার সিরিয়াস মুডে ভাবনায় পড়ে গেল শুভ। কি বিচ্ছিরি কাণ্ড হয়ে গেল। কিভাবে এখন পড়াতে যাব সে বাসায়। আয়মান ভাইয়ের সাথে মুখোমুখি হলে কি যে অপ্রস্তুতকর সিচুয়েশনে পড়ে যাব।
মনে মনে শুভ আলিশার উপর রাগ ঝাড়তে লাগল। কোনকিছু দ্রুত পেতে গিয়ে হারানোর শংকার চেয়ে অল্প অল্প করে দীর্ঘদিন বা চিরদিন পাওয়া ঢের আনন্দ নয় কি।

এই মেয়েটাকে এত করে বললাম, এত মাখামাখি করোনা। কে শুনে কার কথা। নাহ। উনি মরে যাচ্ছে আমার সান্নিধ্য ছাড়া। উনার পরান নাকি যায় জ্বলিয়ারে। এবার ঠেলা সামলাও ভাই আর মায়ের। আমার কি। আমার কার্য তোমাদের বাসায় মাত্র দেড়ঘন্টা। তাও সপ্তাহে তিনদিন মাত্র।
সে হিসেব করে দেখল,

আজ শুক্রবার পড়া নেই। কাল শনিবার একটা এক্সিউজ দাঁড় করাব। যাবইনা। পরশু যাব। তাও দুইদিন অন্তত সেই বাসার মানুষের সাথে দেখা হবেনা।
শুভ অনলাইন থেকে বের হয়ে গেল। জোরে নিঃশ্বাস টেনে ভিতরে নিল। থম মেরে উপুড় হয়ে পড়ে রইলো বালিশে বেশ কিছুক্ষণ ।
দুইদিন পরে বোনের উপরে চড়া মেজাজ দমে গেল আয়মানের। ফুরফুরে মেজাজে পিয়াসাকে বলল, কাল বিকেলে ঘুরতে যাব। তোমার পছন্দের কোন লোকেশন আছে?
পিয়াসা বলল,

উমম তেমন কিছুরই প্রতি আগ্রহ নেই। তবে মিনা আন্টির বাসায় যেতে খুব মন চাচ্ছে। কতদিন উনাদের দেখিনা। একসময় আমার ভরসার আশ্রয় কেন্দ্র ছিল উনারা। নিজের বোনের মেয়ের মতো করে আগলে রেখেছে আমায়। নিজেদের অসচ্ছলতার মাঝেও,আমাকে তিনবেলা খাইয়েছে। থাকার জায়গা দিয়েছে আন্তরিকতার সাথেই।
আচ্ছা তাহলে কাল প্রথমে উনার বাসায় যাব। পরে একটা মুভি দেখব হলে গিয়ে। অনলাইনে দেখে নিব টিকেট কি আগে বুকিং দিতে হবে। না সাথে সাথেই পাওয়া যাবে৷ নাকি বল চিনি বউ?
আপনার যা ইচ্ছে। আমার এসবে কোন আপত্তি নেই।

পরেরদিন শেষ দুপুরেই ওরা দুজন ঘুরতে বেরিয়ে গেল। আয়মান পিয়াসাকে নিয়ে মিনা আন্টির বাসায় গেল। পিয়াসার পছন্দমতো উনাদের জন্য অনেক ফল ফলাদি এটা সেটা কিনে নিল । তারা পিয়াসা ও আয়মানকে দেখেই অনেক বেশী উৎফুল্ল হয়ে উঠল।
সেখানে কিছু সময় কাটিয়ে বসুন্ধরা সিনেমা হলে ঢুকল আয়মান পিয়াসা। খাওয়ার জন্য পপকর্ন আর ইগলো কাপ আইসক্রিম নিয়ে নিল। পিয়াসার আইসক্রিম খুব প্রিয়।

স্টার সিনেপ্লেক্স এর প্রিমিয়ার টিকেট কেটে আয়মান পিয়াসার হাত ধরে ভিতরে চলে গেল। সিনেমা শুরু হলে পুরো হলরুমের লাইট অফ করে দেয়া হয়। হলিউডের একটি সিনেমা দেখছে দুজনে।
পিয়াসা লতার মতো আয়মানের হাত পেঁচিয়ে ধরে বসল। পাঁচ মিনিট পরেই সিনেমার এক পর্যায়ে রোমান্টিক দৃশ্য শুরু হয়ে গেল। হলিউডের মুভিগুলোর এই এক সমস্যা। সব ওপেনলি প্রেজেন্ট করা হয়।
পিয়াসা আবছা আলোয় লুকানো চোখে পাশাপাশি সিটগুলোতে তাকিয়ে দেখল,

প্রায় সব প্রেমিক প্রেমিকা জুটি গুলোর চার ঠোঁট এক হয়ে গিয়েছে। আলাদা হওয়ার কোন নাম নেই।
আয়মান এক হাত পিয়াসার পিছন দিকে নিয়ে কোমর জড়িয়ে নিজের বাহুর সাথে ভিড়িয়ে নিল। পিয়াসার অধর দখল করে নিল নিজের দুই অধর দিয়ে বীরদর্পে।
পিয়াসাও আপোষে চলে এলো। সাপোর্ট দিল নিজের স্বামীরুপি প্রেমিককে।
পরে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করলো ,
এটাও কি আপনার রোমান্টিসিজমের কোন পার্ট?

আয়মান হাতে থাকা আইসস্ক্রিম থেকে কাঠের চামচটাতে বেশী করে তুলে নিল। পিয়াসার এক গালে আইসক্রিমগুলো লেপ্টে লাগিয়ে দিল । নিমিষেই নিজের উষ্ণ জিভের মাথা দিয়ে উপর নিচ করে চেটে খেয়ে নিল৷
পিয়াসা ড্যাবড্যাব চোখে চেয়ে রইলো আয়মানের দিকে। জানতে চাইল কি মজা পান এসব রোমান্স করে?
আয়মান পিয়াসার কানে কানে ফিসফিস করে বলল,

সেইম ফিল পেতে হলে তোমাকে ছেলে হতে হবে। আর মজা?
হাজির কাচ্চি বিরিয়ানির চেয়েও বেশী মজা পাই এসব মধু মধু প্রেমে।
ও হ্যাঁ। এটা আমার প্ল্যান বা ইচ্ছেই ছিল বলতে পার। যেদিন তুমি ক্লাস টেনে থাকা অবস্থায় সিনেমা দেখেছিলে। আমি তারপরেই মনে মনে জেদ ধরেছি। একবার তোমাকে পাই। সিনেমা দেখার সাধ মিটিয়ে দিব। অন্ধকারে কিছুই বাকি রাখবনা।

যত্তসব পাগলামি আপনার । থামেন বলছি। পিয়াসা নিজের আইস্ক্রিম খেতে লাগল। আয়মান তার আইসক্রিম খেয়ে ফেলল। পিয়াসার ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে চুমু খেতে লাগল। উফফস। অসভ্যতামি করছেন কেন?
আজব! নিজের বউর সাথে প্রণয়লীলা করছি। কিসের অসভ্যতামি। সেসবতো করবো আজ রাতেই।
খবরদার বলছি। আমার ভয় করে। এক রাতের ধকল সামলাতেই আমার সাতদিন লেগে যায়।
আয়মান মোহাচ্ছন্ন দৃষ্টিতে পিয়াসাকে দেখল। বলল,

আমার প্রণয়ের জলসাঘরে তুমিই একমাত্র দেবী! তুমি সুখপিয়াসী! তুমিই কুসুমিত কামিনী! আমি তোমার… আচ্ছা থাক। এবার একটু ভদ্র হই।
সিনেমা শেষ হয়ে গেল। দুজনে হাত ধরাধরি করে বের হয়ে গেল চিত্ত ভরা উচ্ছ্বাস নিয়ে।
এর কয়দিন পরে একদিন বিকেলে,

আয়মান বাইরে থেকে এসেই হনহন পায়ে সোজা বোনের রুমে চলে গেল । তার মা তাকে দেখেই বুঝে নিল। আজ কিছু একটা ঘটবেই৷ তাই তিনিও জোর পায়ে ছেলের পিছন দিয়ে মেয়ের রুমে ঢুকলেন। ছেলের পিছনে দাঁড়িয়ে রইলেন।

কিরে তোকে আমি মানা করার পরেও সেই ছেলের সাথে দেখা করলি কেন বাইরে?
আলিশা চুপ হয়ে আছে মাথা নত করে। জবাব দেওয়ার মতো সে কোন বাক্যই খুঁজে পাচ্ছেনা। আর যা দিতে ইচ্ছে করছে। তা দিলেই সব শেষ হয়ে যাবে। তাই সে বাকহীন। বাক্যহারা।
তুই এত বেহায়া, বেশরম কবে থেকে হলি?বলেই আয়মান চড় মেরে বসল আলিশার গালে।
আলিশা অসহায়ের মতো কান্না বোবা জুড়ে দিল।

তার মা ধরার সময়টুকুও পেলনা তাকে। তার মেজাজ ও ভারি হয়ে আছে মেয়ের উপর।
ছেলের সামনেই মেয়েকে শাসনের সুরে,
সুপাত্রের অভাব হবে তোর জন্য? আগে পড়াশোনা শেষ হোক। কোন বাদাইম্মনা ছেলের সাথে টইটই করিস? ঘুরিস বাইরে কোচিং এর নাম করেই।

আয়মান চেতে গেল আরো বেশি। মায়ের দিকে চেয়ে অগ্নিস্বরে বলল,
কে আবার? ওকে যে অংক করায় বাসায় এসে। সে শুভ ছেলেটার সাথেই তোমার মেয়ের রিলেশন।
তার চেয়ে বড় কথা হলো এই ছেলেটার স্বভাব ভালনা। সে পিয়াসাকে বিয়ে করার জন্য খুব উঠে পড়ে লেগেছিল একসময় । এখন আবার আলিশার পিছনে উঠে পড়ে লেগেছে। তার অংক করানো ভালো। নয়তো কবেই ওকে বিদায় করে দিতাম।

প্রণয়ের জলসাঘরে পর্ব ২৪

কিইই? বলে আয়মানের মা অবাক চোখে আলিশার দিকে তাকালো।
আলিশাও যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছেনা। শুভ স্যার ভাবিকে পছন্দ করতো? বিয়েও করতে চেয়েছে খুউব করে? অথচ আমি এসবের কিছুই জানিনা? স্যার বা ভাবিতো কখনো এ বিষয় শেয়ার করেনি আমার সাথে। তার মানে শুভ স্যার যেহেতু ভাবির এলাকার ছেলে। তাদের প্রেম ছিল? হতেই পারে। তা না হলে এটা গোপন কেন আমার ও আম্মুর কাছে ? এজন্যইতো শুভ স্যারকে আমার দিকে ফেরাতে এত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।

প্রণয়ের জলসাঘরে পর্ব ২৬