প্রাণেশ্বরী পর্ব ৩৮

প্রাণেশ্বরী পর্ব ৩৮
Writer Asfiya Islam Jannat

লন্ডনের বাতাসে শৈত্যপ্রবাহের আগামবার্তা বইছে। দিনের সূর্য হারিয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। চারদিকে ঘােলাটে অন্ধকার। যতদূর দৃষ্টি কেবল সজল-কাজল মেঘের আনােগােনা। ফাঁকে ফাঁকে অলৌকিক আলোর ঝলকানি। শরৎ-এর শেষ বর্ষণ। আড়ম্বরহীন হলে কি চলে? প্রাণ ম্লান চোখে বারান্দায় সরু রেলিং-এ দুই হাত ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে মেঘে আচ্ছাদিত অন্তরিক্ষ দেখছে। দ*স্যু হাওয়ার আ*ক্র*ম*ণে খুলে গিয়েছে হাত-খোপাটা, শূণ্যে ভাসছে তার কালো রেশম চুলগুলো। প্রাণ মগ্ন নিজের ভাবনায়। তার জীবনের সকল ম*র্মা*ন্তি*ক গল্পগুলো ঘটেছে এই বাদল দিনেই। যখনই সে সব ভুলে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করেছে তখনই বর্ষণের ধারা এসে তাকে নিঃস্ব করে দিয়ে গিয়েছে। কেড়ে নিয়েছে তার আপনজনকে। তাই তো তার নিকট বর্ষণ মানে বি*ধ্বং*সী। প্রাণ বিরবির করলো। কন্ঠস্বর শান্ত অথচ দৃষ্টি ঘৃণায় পরিপূর্ণ, “আবার কেন এসেছ তুমি? মুক্তি কি দিবে না আমায়? থাকতে দিবে না ভালো?”

সময় অতিক্রান্ত হলো। বৃষ্টি এই নামলো বুঝি। ঠিক সেসময় ছন্দ এসে দাঁড়ালো প্রাণের পিছনে। স্মিথ কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো, “বৃষ্টি নামবে এখন, ভিতরে আসেন।”
প্রাণ ঘাড় ঘুরিয়ে একপলক পিছনে তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিল। ছন্দ স্মিত হেসে প্রাণের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। বলল, “যাবেন না?”
প্রাণ বলল, “ইচ্ছে করছে না।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ছন্দ এতে বলল না কিছু৷ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হওয়ার পর প্রাণ উদাসীন কন্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠে, “বলতে পারেন, কেন মেঘ আসে হৃদয় আকাশে?”
ছন্দ পাশ ফিরে পূর্ণদৃষ্টি তাকালো, “সব ভুলে নতুন দমে নিজেকে গড়তে। নব্য এক সূচনা লিখতে।”
“এর জন্য কাউকে নিঃস্ব করা কি জরুরি?”
“কোন কিছু বিনাকারণে হয় না। হয়তো এর মাঝে মঙ্গল কিছু নিহিত ছিল।”
প্রাণ ম্লান দৃষ্টিতে তাকালো, “বিষাদময় জীবনটাকে বি*ষা*ক্ত করাটা কি খুব মঙ্গল কিছু ছিল?”

ছন্দ প্রত্যুত্তর করার পূর্বেই প্রাণ পুনরায় শান্ত কন্ঠে বলে উঠলো, “আমার প্রতি কেন সর্বদা প্রকৃতির নির্দয় আচরণ? যাকে ধরেই বাঁচতে চাই তাকেই ছিনিয়ে নেয় আমার কাছ থেকে, কেন?”
প্রাণের কন্ঠ শান্ত,শীতল শুনালেও কথার পৃষ্ঠে লুকিয়ে ছিল অগাধ ক্লেশ। ছন্দ থমকালো কয়েক মূহুর্তের জন্য। আনমনে কথা গুছিয়ে বলল, “মানুষ মানেই নশ্বর, এটাই প্রকৃতির বিধান। যার শুরু আছে তার শেষও আছে৷ জন্ম আছে মানে মৃ*ত্যুও আছে। পৃথিবীর চরম সত্য এটা। তাই এর বিপরীতে অভিযোগ করা বোকামি। আর আপনি বোকা নন প্রাণ।”

প্রাণ এই কথার পিঠে বলার মত কিছু খুঁজে পেল না। ছন্দ তাই বলল, “জানেন বৃষ্টি কেন নামে? পৃথিবীকে শুদ্ধতম করতে। সজীবতায় রাঙ্গাতে। মন ভালো করতে ও সকলের গ্লানি,দুঃখ ধুয়ে মুছে নব্য প্রত্যুষ উপহার দিতে৷”
প্রাণ ছন্দের দিকে তাকাতেই দৃষ্টি এক হলো তাদের। প্রাণ দৃষ্টি অনড় রেখে বলল, “সবার জন্য বৃষ্টি এক হয় না। কারো কারো জন্যে সে আঁধারের সূচনাও লিখে।”
ছন্দ থেমে বলল, “ঝ*ল*সে যাওয়া শরীরও যোগায় মুগ্ধতার আলো, প্রত্যুষের আলোয় ফ্যাকাশে হয়েছে আঁধারের কলঙ্ক যত কালো।”

প্রাণ কথার অর্থ বুঝতে না পেরে দ্বিধান্বিত দৃষ্টিতে তাকালো। এই ফাঁকে মনস্তাপ নিয়ে নামলো ঝুম বৃষ্টি। পলকে সিক্ত হলো নগরী। ছন্দ সেদিক তাকিয়ে বলল, “জীবনে যতই আঁধার নামুক না কেনো দিনশেষে নতুন ভোরের আলোয় তা মিইয়েই যায়। ধরে রাখতে পারে না নিজের অস্তিত্ব। বৃষ্টিও ঠিক তেমনই। সে নিজের গুরুত্ব কখনো কমতে দেয় না, সুখ-দুঃখের মাঝেই নিজের জায়গায় করে নেয় মনে।”

প্রাণ মাথা নত করে নিশ্চুপ রইলো। ছন্দ প্রাণের বাহু হাতের মুঠোয় নিয়ে বলল, “আসুন আমার সাথে।”
কথাটা বলে ছন্দ প্রাণকে নিয়ে চলে এলো ছাদে। ভিতরে প্রবেশ করার আগে সে প্রাণকে বলল, “একবার বৃষ্টিকে বরণ করেই দেখুন না। তার প্রতি আর কোন অভিযোগ থাকবে না আপনার।”
প্রাণ দৃষ্টি তুললো, “দেখতে বলছেন?”
ছন্দ হেসে বলল, “ভিজতে বলছি। চলুন।”

ছন্দ প্রাণের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল তীব্র বর্ষণের মাঝে৷ সিক্ততার চাদরে মুড়ানোর উদ্দেশ্যে। ছাদের এক কিনারে দাঁড়িয়ে প্রাণের হাত দুটো প্রসারিত করে ধরলো ছন্দ। মাথা নামিয়ে কানের সামনে এনে ফিসফিসিয়ে বলল, “মনে যত কষ্ট,অভিযোগ আছে তা বলে ফেলুন। স্নিগ্ধ পরশে ধুয়ে মুছে যেতে দিন সকল গ্লানি। অতীতকে পিছনে ফেলে এগিয়ে আসুন। বর্তমানকে উপভোগ করুন। প্লিজ প্রাণ। কথা শুনুন আমার।”

ছন্দের কথা আঁখিপল্লব দুটো বন্ধ হয়ে এলো প্রাণের। সে সত্যি সত্যি এবার নিজের দগ্ধ হৃদয়টা থেকে মুক্তি চাইলো। সব ফেলে এগিয়ে যেতে চাইলো। তবে মনের চোখে আপনজনদের মুখখানি ভাসতে দূর্বল হয়ে পড়লো সে। অশ্রুসিক্ত হলো নেত্রপল্লব। কন্ঠলগ্ন হতে অস্ফুটস্বর বেরিয়ে আসতেই ছন্দ তাকে ঘুরিয়ে নিজের বুকে ঠাই দিল। প্রাণও সব ভুলে আকড়ে ধরলো ছন্দকে। অজান্তেই বানিয়ে ফেললো তাকে নিজের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। একমাত্র নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি। ছন্দ আলগোছে তার মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করল। আদুরে কন্ঠে বলল, “হুসস! আর কাঁদবেন না। কষ্ট হয় আমার।”

প্রাণ তাও থামলো না। মিনিট দশেক লাগলো ছন্দের তাকে স্বাভাবিক করতে। প্রাণ স্থির হয়ে ছন্দের বাহুবন্ধনী থেকে সরে আসতে নিলে ছন্দ দিল না। কোমরের পাশে শক্ত করে ধরে রাখলো। বৃষ্টি ততক্ষণে কিছুটা কমে এসেছে। ঝিরিঝিরি শীতল কণা ছুঁয়ে দিচ্ছে তাদের। প্রাণ মুখ তুলে উপরে তাকালো। নয়ন দুটো আ*র*ক্ত হয়ে আছে, ফোঁপানোর ফলে অধর কাঁপছে। গৌড়বর্ণ মুখটা ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে, কপালে লেপ্টে থাকা চুলগুলো দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। ঠান্ডায় নাক টানছে সে বার বার। ছন্দের কি হলো কে জানে? সে একধ্যাণে তাকিয়ে রইলো প্রাণের আর্দ্র অধরের দিকে।

অন্তঃকরণে আবদ্ধ সুপ্ত ইচ্ছেগুলো বেরিয়ে আসতে চাইলো, বাঁধা মানলো না কোন। হঠাৎ ছন্দের এমন অদ্ভুত,বেয়ারা দৃষ্টি দেখে প্রাণ কেঁপে উঠলো। কিছু জিজ্ঞেস করার পূর্বেই ছন্দ মাথা নামিয়ে প্রাণের অধর দু’টো নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিল। ঘটনাক্রমে প্রাণ হতবিহ্বল। গোলগাল চোখে তাকিয়ে থাকলো সে। অতঃপর একসময় বন্ধ করে নিল দৃষ্টি। কিয়ৎক্ষণ পর ছন্দ সরে এসে প্রাণের কাঁধে থুতনি রেখে লম্বা কয়েকটা নিঃশ্বাস নিয়ে বলল, “প্রাণেশ্বরীর নেশা মদ্যপনেশা থেকেও বি*ষা*ক্ত। না পান করা যায়, না ফেলে দেওয়া যায়। গলায় আটকে থেকে পীড়া দেয় শুধু। এর নিরাময় কবে পাবো বলুন তো?”

প্রাণের বুক অস্বাভাবিকভাবে কাঁপছে। ঠোঁট দুটো কামড়ে চুপটি করে আছে সে। অদ্ভুত ভালো লাগায় আবিষ্ট মন প্রত্যুত্তর করতে ভুলে গিয়েছে। সে চোখ বুজে ছন্দের পিছন দিকের শার্ট মুঠো করে ধরে রাখলো শুধু৷ মুখ লুকিয়ে রাখলো ব্যক্ত মানুষটার তীরে।
প্রতিক্ষেত্রে ভাষা মনকে সন্তুষ্ট করলেও মাঝে মধ্যে নীরবতা প্রশান্ত করে আত্মাকে। হয়তো এই উপলব্ধিটাই আজ ছন্দ করতে পারছে। তাই তো তার ঠোঁটের কোণে মাধুর্যপূর্ণ হাসিটা ঝুলছে।

মধ্যাহ্নের প্রহর। খাওয়া-দাওয়া শেষে নাফিসার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে প্রাণ। নাফিসা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন আর টুকটাক গল্প করছেন। এই দু’মাসে দুইজন এতটা ঘুলে-মিশে গিয়েছে যে এখন তাদের সম্পর্ক মা-মেয়ের থেকে অভিন্ন করা যায় না। প্রাণও ধীরে সুস্থে এখানের সকলকে আপন মানতে শুরু করে নিয়েছে। নীরবতার খোলস থেকে বেরিয়ে প্রাণবন্ত হতে শুরু করেছে। আর এটাই তো চাচ্ছিল তারা। অবশেষে তাদের পরিশ্রম সফল হলো বুঝি?
মিনিট খানিক পর ফারিনাজ এলো রুমে। নাফিসার কোলে প্রাণকে শুয়ে থাকতে দেখে গাল ফুলিয়ে বলে উঠলো, “এটা কি ঠিক ভাবি? তুমি আমাকে ছাড়াই আম্মুর আদর সব লুফে নিচ্ছ। আমি কিন্তু আমার ভাগ চাই।”

ফারিনাজের কথা শুনে প্রাণ মৃদু হাসলো। মুখ খুলার আগেই নাফিসা হেসে বলে উঠলেন, “তো প্রাণ কি তোকে ধরে বেঁধে রেখেছে নাকি? এপাশে জায়গায় আছে দেখিস না? এসে পড়।”
নাফিসার বলতে দেরি কিন্তু মায়ের কোলে ফারিনাজের ঝাঁপিয়ে পড়তে দেরি নেই৷ সামান্য সময়ের ব্যবধানে আড্ডা জমে গেল তিনজনের মাঝে। আধাঘন্টার মত এভাবে থাকার পর ফারিনাজের মনে পড়লো সে এখানে প্রাণের খোঁজে এসেছিল। কথার তালে বেমালুম ভুলে গিয়েছিল। তাই চটজলদি উঠে সে প্রাণকে নিয়ে ছুটলো নিজের রুমে।

ঘন্টা দুই-এক ধরে প্রাণ ফারিনাজের রুমে বসে। সন্ধ্যায় না-কি ফারিনাজের কোন বান্ধবীর জন্মদিন। তবে সে মনমতো কোন কিছু খুঁজে পাচ্ছে পড়ে যাওয়ার মত। প্রাণের যেহেতু ফ্যাশন সেন্স অনেক ভালো তাই সে প্রাণকে বলেছে তাকে সাহায্য করতে। প্রাণও নাকচ করেনি। তখন থেকেই ফারিনাজের সাথে সে৷ সব মিলিয়ে-টিলিয়ে দিচ্ছে তাকে।
এদিকে কয়েকক্ষণ যাবৎ ছন্দ প্রাণের দেখা না পেয়ে খুঁজতে বের হলো তাকে৷ ফারিনাজের রুমের সামনে আসতে কথার শব্দ পেয়ে থমকালো। দরজা ভিড়িয়ে রাখা ছিল দেখে দুইবার নক করে নবটা ঘুরিয়ে ভিতরের দিকে উঁকি দিল সে৷ দৃষ্টি ঘুরাতেই দেখতে পেল ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে প্রাণ ফারিনাজকে মেকাপ করে দিচ্ছে। তার আগমনে তারা দুইজনই ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে তার দিকে। ছন্দ সেই দৃষ্টি অগ্রাহ্য করে ফট করে ঢুকে পড়লো রুমে। তা দেখে ফারিনাজ চেঁচিয়ে বলে উঠলো, “তুই এখানে কেন? দেখছিস না দু’টো মেয়ে আছে রুমে? যা ভাগ।”

ছন্দ মুখ বাঁকিয়ে বলল, “দু’টো মেয়ের মধ্যে একটা আমার বোন, আরেকটা আমার বউ। তো এখানে আসার শতভাগ অধিকার আছে আমার৷”
কথাটা বলে ধপ করে বিছানায় বসে পড়লো। চারদিকে নজর বুলিয়ে বলল, “রুমটাকে বস্তি বানিয়ে রেখেছিস কেন? আমার বউকে দিয়ে খাটানোর ধান্দা নাকি?”
সেসময় জামা পছন্দ হচ্ছিল না বলে ফারিনাজ পুরো কাবার্ডের জামা নামিয়ে রুমের অবস্থা নাজেহাল করে ফেলেছিল। যা দেখেই ছন্দ মন্তব্যটা ছুঁড়ে। ফারিনাজ তেতে উঠে বলল, “আমাকে কি তোর ভ্যাম্প টাইপ ননদ লাগে? যে নিজের ভাবিকে খাটিয়ে মা*রে?”

ছন্দ ব্যঙ্গ করে বলল, “মুখ তো ভ্যাম্পায়ারের মতই। স্বভাব যে এক হবে না তার নিশ্চয়তা কি?”
ফারিনাজ কথায় না পেরে প্রাণকে বলল, “ভাবি কিছু বল না ভাইকে।”
প্রাণ চোখ তুলে তাকালো এবার। এতক্ষণ নীরব দর্শক হয়ে দুইজনের ঝগড়াই দেখছিল সে। ফারিনাজের কথা রাখতে সে বলল, “আপনার কি কিছু লাগবে?”
ছন্দ মাথার পিছনে হাত গলিয়ে কোমল কন্ঠে বলল, “না! তেমন কিছু না।”

ছন্দের কন্ঠস্বরে হঠাৎ করে পরিবর্তন আসতে দেখে ফারিনাজ আড়চোখে তাকালো। ঠেস দিয়ে বলল, “বোনের বেলায় গলা উঁচু অথচ বউয়ের বেলায় নিচু? দেখেছ কারবার।”
ছন্দ চোখ পাকিয়ে বলল, “বেশি কথা বলিস তুই।”
ফারিনাজ ভেংচি কেটে বলল, “ভাবি যেতে বল তো ভাইকে। আমার দেরি হচ্ছে।”
ছন্দ ফোড়ন কা*টা*র আগেই প্রাণ ছন্দের চোখের দিকে তাকালো। দুইজন দৃষ্টি বিনিময় হতেই ছন্দ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ালো। দরজার দিক যেতে যেতে বলল, “আচ্ছা যাচ্ছি৷”

ছন্দের যাওয়ার দিক তাকিয়ে ফারিনাজ হাসি চেপে বলে উঠলো, “বুঝলে ভাবি, বিয়ে করলে জুনিয়র কাউকেই করা উচিৎ। এরা প্রচন্ড বউপাগলা হয় আর বউয়ের কথা চুপচাপ শুনে। ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে না। প্রচন্ড আদুরে হয় ও খুব ভালোবাসতে জানে। আমি তো ঠিক করে ফেলেছি বিয়ে করলে নিজের জুনিয়রকেই করব।”
ছন্দ তৎক্ষনাৎ থেমে ফারিনাজের দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল, “ফারুর বাচ্চা।”
ফারিনাজ দ্রুত নিজের জায়গায় ছেড়ে উঠে ছন্দকে ঠেলে রুম থেকে বের করে বলল, “আমার বিয়ে হয়ে নিক তারপর ভাগনিকে ডেকো আমার বাচ্চা৷ এখন বিদায় হও তো।”

প্রাণেশ্বরী পর্ব ৩৭

কথাটা বলেই ফারিনাজ ছন্দের মুখের দরজা লাগিয়ে দিল। ছন্দ বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বলে উঠলো, “জীবনের শিক্ষা, বউ সিনিয়র হলে ভুলেও তা কাউকে জানতে দেওয়া যাবে না। নাহলে জীবন হবে রসুনবাটা।”

প্রাণেশ্বরী পর্ব ৩৯