প্রেমের রঙ পর্ব ৩

প্রেমের রঙ পর্ব ৩
মোহনা হক

‘রাতের আকাশের মেঘ বুঝা যাচ্ছেনা কিছু। চারদিন এমনিও অন্ধকার হয়ে আছে। বৃষ্টি হওয়ার পর কেমন নির্জন মনে হচ্ছে শহরটা। চারদিকে শীতল আবহাওয়া। মৃদু বাতাস বইছে। বাতাসের সাথে সাথে হালকা কেঁপে উঠছে পদ্ম। ইজহান পদ্মের দিকে তাকিয়ে আছে। পদ্ম যে কিছুক্ষণ পর পর কেঁপে ইজহান ভালো করেই খেয়াল করছে। পদ্মের কেঁপে উঠা দেখে নিঃশব্দে ইজহান হাসছে। পদ্ম আগের মতো ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। আবার মেঘের আওয়াজ শোনা গেলো। পদ্ম এবার মুখ ফুটে বলেছে।’

“আমার ভিষণ ভয় করছে।”
‘ বলেই পদ্ম জড়িয়ে ধরেছে ইজহানকে। ইজহান খুব হালকা ভাবে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেছে। কিন্তু পদ্ম খুব জোরেসোড়ে জড়িয়ে ধরেছে। বুঝাই যাচ্ছে পদ্ম খুব ভয় পেয়েছে। পদ্ম ইজহানের বুক সমেত। ইজহান মনে মনে বললো ‘বয়সেও ছোট উচ্চতায়ও’। আচ্ছা ইজহানের এমন কেনো লাগছে, পিচ্চি একটা মেয়ের সংস্পর্শে এসে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ইজহানের জীবনের প্রথম নারী পদ্ম। কিছুক্ষণ বাদে ইজহান ছেড়ে দিলো পদ্মকে। পদ্ম হকচকিয়ে গেলো। লজ্জায় সে ওখান থেকে চলে আসছে। বেশি চিন্তা-ভাবনা করতে পারেনা পদ্ম। তবে ওইসময়ের মুহুর্তটা মনে পড়তেই পদ্মের মুখে লাল আভা ছড়িয়ে পড়লো। ইশশ কি লজ্জা। পদ্ম ঘুমিয়ে পড়েছে। ইজহান রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।সারারাত ইজহান লিভিং রুমের সোফায় কাটিয়ে দিলো। মন চাচ্ছেনা রুমে যেতে। তাই এখানেই শুয়ে পড়লো।’

সকাল ৭টা
আজ শুক্রবার। ইজহানের ছুটি। হসপিটালে যেতে হবেনা তার। তাই ঘড়িতে অ্যালার্ম ও দেয়নি।মুলত শুক্রবার ইজহান একটু বেশি সময় ঘুমায়। ইজহান ঘুমাচ্ছে। মুনিরা শেখ ঘুম থেকে উঠে লিভিং রুমে এসে দেখে তার ছেলে সোফায় ঘুমাচ্ছে। মুনিরা শেখের বেশ খারাপ লাগছে। হয়তো ইজহান পদ্মকে মেনে নিতে পারেনি তাই রুমে না শুয়ে এখানে সোফায় শুয়েছে। আজই তিনি ইজহানের সাথে কথা বলবেন তারপর তার একটা ব্যবস্থা তিনি করবেনই।

‘ইজহানের ঘুম ভেঙেছে ৮টায়। ইজহান উঠে তার রুমে গেলো। আশ্চর্য আজ রুমে পদ্মকে দেখিনি ইজহান। ফ্রেশ হয়ে আসলো নিচে। প্রতিবারের মতো ইজহানের বাবা হুমায়ুন শেখ টিভি দেখছেন আর চা খাচ্ছেন।
ইজহান তার বাবার পাশের সোফায় বসলো। ইদানীং হুমায়ুন শেখ ইজহানের সাথে কথা বলছে না। কিন্তু ইজহান তো তার কথা রেখেছে তাও কেনো এতো তে’জ দেখাচ্ছে ইজহান বুঝছেনা। পদ্ম কফি নিয়ে এসেছে ইজহানের জন্য। পদ্ম মুখের সামনে কফিটা ধরেছে একদম।’

“আপনার কফি।”
‘ইজহান মাথা তুলে পদ্মকে দেখলো। মাথা নিচু করে পদ্ম কফি নিয়ে একদম তার সামনে এসে দাঁড়ালো। পদ্ম ইজহানের দিকে তাকাচ্ছেনা। ইজহান কফিটা হাতে নিলো। পদ্ম ইজহানের হাতে কফি দিয়ে রান্নাঘরে চলে আসলো। আসলে পদ্ম ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘরে এসেছিলো মুনিরা শেখের কাছে। তিনি পদ্মকে কফি বানিয়ে শিখিয়ে দিয়েছেন
যে কফিটা পদ্ম বানিয়েছে সেটাই আবার উনি ইজহানের জন্য পদ্মের হাত দিয়েই পাঠালেন।

“প্রথমে তো বলেছিলে বিয়ে করবে না। বিয়ে না করলে এইসময় কে কফি বানিয়ে এনে খাওয়াতো।”
‘হুমায়ুন শেখ টিভির দিকে তাকিয়ে কথাটি বললো ইজহান কে।এই বাসায় থাকলে এমনিও সকালে তার মা কফি বানিয়ে দেয় তাকে।আর ফ্ল্যাটে থাকলে নিজে বানিয়ে খায়। কিন্তু ইজহান কোনো ভ্রুক্ষেপ করলো না হুমায়ুন শেখের কথায়। সে জানে তার বাবা তাকে খোঁচা দিয়ে কথাটি বলেছে।

আর অকারণে তার কথা বলা পছন্দ না। খুব কম সময়ই এসব অযুক্তিযুক্ত কথার উত্তর দেয় ইজহান। সে নিজের মতো কফি খাচ্ছে আর ফোন দেখছে। এরই মাঝে পদ্মের মা কল দিয়েছে। পদ্ম যেহেতু রান্নাঘরে তাই ফোনটা নিয়ে ওখানেই গেলো। পদ্মকে ফোনটা রিসিভ করে দিয়ে বললো কথা বলতে।

‘পদ্ম কিছুক্ষণ কথা বললো তার মায়ের সাথে। কথা বলার মাঝে মাঝে তার কন্ঠ আটকিয়ে আসছিলো। চোখে পানি টলমল করছিলো। এটা বেশ খেয়াল করলো ইজহান। কথা বলা শেষে পদ্ম ফোনটা দিয়ে দিলো ইজহানকে। ইজহান তার মাকে বলছে
“মা আমার তো কাল রাতে যাওয়ার কথা ছিলো ওই ফ্ল্যাটে কিন্তু বৃষ্টির জন্য যেতে পারিনি। আজ নাস্তা করার পর চলে যাবো।”

“তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে ইজহান। পদ্ম তুমি একটু এদিকটায় থাকো। আমি আসছি একটু পর।”
‘পদ্ম মাথা নাড়ালো। ইজহান পদ্মের দিকে তাকালো। মুনিরা শেখ ইজহানের হাত ধরে ওনার রুমে নিয়ে গেলো।”
“শুন ইজহান তুই সত্যি কথা বলবি আমি যা যা বলবো তুই শুধু সোজাসাপ্টা উত্তর দিবি.!”
‘ইজহান বেশ বিরক্ত হলো মায়ের কথায়। ইজহানের চোখ মুখে এক রাশ বিরক্তি।
“মা তুমি কি জানো না আমি ঘুরিয়ে পেছিয়ে কথা বলা পছন্দ করিনা?”

“সেটা তো আমি জানি। আচ্ছা তুই কি পদ্মকে মেনে নিতে পারিস নি কোনোভাবে?”
‘ইজহান ছোট ছোট চোখ করে মায়েক দিকে তাকিয়ে আছে।
“হঠাৎ এই প্রশ্ন করার কারণটা কি?”

“এইযে তুই তো বলেছিস ঘুরিয়ে পেছিয়ে কথা পছন্দ করিস না। তাহলে কেনো বলছিস এখন!?”
“তুমি আসলে কি বলতে চাইছো সেটা বলো।”
“আমি বলতে চাইছি তোর কি পদ্মকে পছন্দ হয়নি?ওকে মেনে নিতে পারিসনি? আজ সকালে দেখলাম তুই সোফায় শুয়ে আছিস। কেনো ইজহান কেনো? তুই শুধু একবার বল তুই মেনে নিতে পারিসনি।

‘মুনিরা শেখ বেশ ব্যস্ত হয়ে গেছেন। ইজহান শান্ত গলায় উত্তর দিলো।’
” আচ্ছা আমি যদি বলি মেনে নিতে পারিনি তাহলে কি হবে?”
‘মুনিরা শেখ থমকে গেছেন ইজহানের কথা শুনে।
“এটা বলতে পারিস না তুই। মেয়েটার কি হবে ভেবে দেখ একবার।
‘ইজহান হাসতে হাসতে এক হাত দিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরলো।’

” বলেছি মেনে নিতে পারিনি এটাতো বলিনি যে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো না।”
‘মুনিরা শেখ এবার ক্ষেপে গেলেন।
“সোজাসাপ্টা বলতে পারিস না?”
“আরে মা শান্ত হও তো। আমার কথার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমি পদ্মকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো এবং ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছি।”

‘ছেলের কথায় মুচকি হাসলেন মুনিরা শেখ। তিনি জানেন তার ছেলে কখনো তার বাবা মায়ের কথা অবজ্ঞা করবেনা। ইজহান তার বেশ শখেরই একটা ছেলে বলতে গেলে। ছেলেকে ভিষণ ভালোবাসেন তিনি। প্রথমে ছেলের কথা বুঝতে না পেরে একটু রেগে গিয়েছিলেন বটে।
“মা তোমাকে তখন কি বললাম মনে নেই? আমার যে আজ ফ্ল্যাটে ফিরতে হবে।”
“হ্যাঁ পদ্মকে নিবি তোর সাথে?”

“এক কথা আর কতোবার বলতে হবে বলতো?”
“নিবি কিনা সেটা বল।”
” হ্যাঁ ওকে আমার সাথেই নিবো। যেখানেই যাই নিয়ে যাবো।
‘শেষের কথাটা বিড়বিড় করে বললো ইজহান।’
“আর শুন আমিও যাবো তোদের সাথে। পদ্মতো নতুন তাই ওকে একেবারে সব শিখিয়ে দিয়ে আসবো বুঝেছিস। ”
“আচ্ছা নাস্তা খেয়ে রেডি হয়ে থাকবে আর ওকে বলে দিবে ও যেনো রেডি হয়ে থাকে এক মিনিট লেইট করবো না কিন্তু মনে রেখো।”

“আচ্ছা বাবা বুঝেছি।”
‘অতঃপর নাস্তা করে সবাই ওই বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। পদ্মকে ইজনিয়া রেডি করিয়ে দিলো। যদিও পদ্ম বলেছিলো ও রেডি হতে পারবে।তাও ইজনিয়া বললো সে রেডি করিয়ে দিবে।আজ আর শাড়ি পড়েনি পদ্ম। ইজনিয়া একেবারে অন্যভাবে সাজিয়ে দিলো। ইজহানের তো যে কথা সেই কাজ। সে চিৎকার শুরু করে দিয়েছে৷ তড়িঘড়ি করে মুনিরা শেখ পদ্মকে নিয়ে নিচে নামলেন। পদ্ম এবং মুনিরা শেখের লাগেজ আগে আগেই গাড়িতে রাখা হয়েছে। গাড়িতে উঠতে উঠতে মুনিরা শেখ বললেন।’

“জানো পদ্ম এই ছেলে এক মিনিটও লেইট করতে চায় না। নাহলে আবার মাথা ঘরম হয়ে যায়।”
‘মুনিরা শেখের কথায় মুচকি হাসলো পদ্ম। ইজহান এখনো পদ্মকে খেয়াল করেনি। সে সামনে বসেছে। আর মুনিরা শেখ, পদ্ম পিছনে। প্রায় ২ ঘন্টারও বেশি সময় লেগেছে তাদের। অনেক জ্যাম ছিলো নাহলে আরও আগেই বাসায় চলে আসতো তারা। এই জ্যামে সবার বিরক্ত লাগলেও পদ্ম বেশ উপভোগ করেছে। কারণ সব গাড়ি এক সাথে আটকে থাকা এটা প্রথম দেখেছে। তাই হয়তো ভালো লেগেছিল তার।’

‘বাসায় এসে সবাই টায়ার্ড। বিশেষকরে মুনিরা শেখ। ইজহান গিয়ে খাটে গিয়ে শুয়ে পড়লো উপুড় হয়ে। পদ্ম রুমে গেলো না সে ডাইনিং রুমের সোফায় বসে পড়লো। এই বাসাটাও অনেক সুন্দর। সব সাজানো গোছানো। এই রুমের বাসাতেও বেশিরভাগ দেয়ালে ইজহানের ছবি। পদ্ম চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এগুলোই দেখছে। ইজহান খেয়াল করলো পদ্ম রুমে আসেনি এখনো। মাথা উঠিয়ে পদ্মকে ডাক দিলো ইজহান।

“পদ্ম রুমে আসো।”
‘কথাটি পদ্মের কানে ঢুকেছে। কিন্তু তার ওই রুমে যেতে ভয় লজ্জা দুটোই কাজ করছে। সে কিভাবে যাবে। ইশশ না ডাক দিলে হতো না? এখন সে কিভাবে যে ওই রুমে যায়। অনেক চিন্তা করেই রুমে ঢুকেছে পদ্ম।
“জ্বী কিছু বলবেন?”
‘ইজহান মুখ ওইদিক রেখে বললো-
“বাহিরে কি করছিলে এতো দূর থেকে এসেছো ফ্রেশ হবেনা?”

“জ্বী।”
‘ইজহান আর উত্তর দিলো না। পদ্ম ইজহানের উত্তরের আশায় দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ইজহান কিছু বলছে না। পদ্ম ভেবে নিয়েছে সে কিছু বলবেনা। তাই সে ফ্রেশ হয়ে আসলো ওয়াশরুম থেকে। পদ্ম মুনিরা শেখের রুমে গেলেন তিনিও শুয়ে আছেন। পদ্মের একটু বিরক্ত লাগছে সবাই এমন শুয়ে আছে কেনো।’
“মা আপনি শুয়ে আছেন কেনো?”

“কি যে বলো এতো জার্নি করে আসলাম একটু তো ক্লান্তি লাগছে। তোমার লাগছে না?
‘পদ্মের সহজসরল উত্তর-‘
” না তো।”
‘মুনিরা শেখ বললেন।’
“ইজহান কি করছে?”
“শুয়ে আছেন দেখেছি।”

“মা ছেলের একই দশা দেখছি। আচ্ছা তুমি একটু বসো আমি আসছি।”
‘পদ্মকে রেখে মুনিরা শেখ ওয়াশরুমে চলে গেলেন। কিছু সময় বাদে তিনি বের হয়ে এসে পদ্মকে বললেন-‘
“চলো পদ্ম আমার সাথে রান্নাঘরে”

‘পদ্ম আর মুনিরা শেখ রান্না করলেন। রান্না করার মাঝে পদ্ম যে কতো শত প্রশ্ন করেছে মুনিরা শেখকে। তিনি একটুও বিরক্ত হোননি। তিনিও সমানভাবে কথা বলে চলেছেন পদ্মের সাথে। মাঝেমাঝে মুনিরা শেখ পদ্মকে ইজহানের রুমে পাঠাচ্ছেন। পদ্ম যতোবারই আসে ততবার উঁকি দিয়ে দেখে যায় ইজহান কে। মহাশয় ঘুমাচ্ছেন। এতটুকু এসে ক্লান্ত হয়ে একেবারে ঘুমিয়ে গেলো।’

‘দুপুরে সবাই একসাথে লাঞ্চ করলো। মুনিরা শেখ খাবার পর প্লেট রেখে আসতে গিয়েছেন। ইজহান পদ্মের কানের কাছে এসে বললো-‘
“খাবার শেষ করে রুমে যাবা।”
‘পদ্ম শুনে মাথা নাড়লো। মুনিরা শেখ খাওয়ার পর রেস্ট করতে রুমে গিয়েছেন। ইজহানের কথামতো পদ্ম রুমে গেলো। ইজহান কিসব করছে কাগজে। পদ্ম সেটা না বুঝে অবুঝের মতো শুধু চেয়ে রইল। ইজহান পদ্ম কে দেখে তার কাগজগুলো রাখলো। খাটে বসলো সে। পদ্মকে বললো বসার জন্য। পদ্মও বসলো কিন্তু দূরত্ব বজায় রেখে৷ ইজহান একেবারে পদ্মর সামনে এসে বসলো।

“এতো দূরে বসার কি আছে হু?”
‘ পদ্ম জবাব দিলো না। তার দৃষ্টি ফ্লোরের দিকে। সেটা দেখে ইজহান কিছুটা ধমক দিয়ে বললো-‘
“শুনো নি কি বলেছি?আর মাথা উঠাও।

‘ পদ্ম মাথা উঠালো। ইজহান মনে মনে বললো ‘মেয়েটা তো খারাপ না! মা যে বললো মায়াবী চেহেরা ঠিক তাই। ফর্সা বেশি। ভ্রু গুলো চিকন দূর থেকে দেখলে মনেহবে আর্ট করা। কিন্তু কাছ থেকে দেখলে বোঝা যাবে এগুলো নেচারালই এমন। এতো বেশি মোটাও না আবার চিকনও না দু’টোর মাঝামাঝি। চুলগুলো বিনুনি করা। অনেক লম্বা না চুলগুলো। পিঠের মাঝ বরাবর। সাধারণত গ্রামের মেয়েগুলোর চুল খুব বেশি লম্বা থাকে। ইজহানকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে পদ্মের খারাপ লাগছিল। পদ্ম আবারও মাথা নিচু করে ফেললো।

” সরি। আচ্ছা তোমাকে যে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দিলো তোমার খারাপ লাগেনা? আমাকে বিয়ে দিলে আমি সারাদিন কান্না করতাম। যাই হোক আল্লাহ বাঁচিয়েছেন আমার বাবা মা আমাকে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দেননি।”
‘প্রথম কথাটা শুনে পদ্মের খারাপ লাগলেও শেষের কথাগুলো শুনে পদ্ম হেসে দিলো। পদ্মের হাসি দেখে ইজহানও হেসে দিলো। মেয়েটা খুব সুন্দর করে হাসে।’

“আচ্ছা তুমি বুড়ো বর পেয়েছো সেটা নিয়ে কিছু বলবে না? তোমার আগে তো আমি ম’রে যাবো, তখন কি হবে?”
‘পদ্মের হাসি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পদ্ম অনেকটা আঁতকে উঠছে। এসব কি বলছেন উনি। তার বিয়ে হলো কয়েকদিন হয়েছে। এর মাঝে উনি এসব বলছেন’

“কে আগে মারা যাবে এটা আমি আপনি কেউই জানি না। হয়তো আপনার আগে আমিও মারা যেতে পারি। আর বুড়ো বর পেয়েছি সেটা নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই কারণ আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।”
‘ইজহান চুপ হয়ে আছে। পিচ্চি মেয়ে যে এতো কথা বলতে পারে সেটা জানতো না ইজহান।
” বুঝলাম! আচ্ছা আমি একটু তোমার আরেকটু কাছে গিয়ে বসি হ্যাঁ।”

‘এটা বলে সত্যি সত্যি ইজহান পদ্মের একদম কাছে এসে বসলো। পদ্ম ঘাবড়ে গিয়ে দূরে সরে আসতে চাইলো কিন্তু সে মুহূর্তে ইজহান হাত টেনে ধরলো। পদ্মকে একেবারে তার সাথে মিশিয়ে বসালো। পদ্মের কাঁধ জড়িয়ে ধরে বললো-‘
“জড়তা কাঁটাও পদ্ম। আমার সাথে কথা বলো। আমার স্পর্শ স্বাভাবিক ভাবে নাও।

প্রেমের রঙ পর্ব ২

[আসসালামু আলাইকুম। অবশেষে কারেন্ট আসলো তাই পোস্ট করেছি গল্প। অনেকে আমার গল্প নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কমেন্ট করে। ভালো কমেন্ট খারাপ কমেন্ট দু’টোই করে। গল্প নিয়ে বেশ ধারণা ছিলো আমার। তবে গল্প লিখলে যে বাজে বাজে কথাও শোনা লাগে সেটা লিখার পর বুঝেছি। যাই হোক পদ্মের বয়স যেহেতু কম সেই চিন্তা করেই ইজহান সচেতন থাকবে। চেয়েছিলাম অন্যভাবে গল্পটা লিখবো। তবে অনেকেই চাচ্ছে ইজহান যেনো পদ্মকে কেয়ার করে ভালোবাসে। সবার কথাই রাখলাম। আর আমি মানসিক শান্তির জন্য সালাম দিই। সবাই সালামের উত্তর দিবেন আশাকরি। আমার ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। শব্দসংখ্যা ১৭৭৭]

প্রেমের রঙ পর্ব ৪