বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ২৮

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ২৮
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

সকাল থেকে সবাই দ্রুত সব কাজ সেড়ে রেডি হয়ে নিচ্ছে। আদিবের বিয়ের কিছু শপিং আর যার যার ব্যাক্তিগত প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে যেতে হবে তাই। সব কাজ সেড়ে নিয়ে বিকেলের দিকে বেড় হবে ওনারা। রাইমাদের পরিবারও এই বাংলোতেই আছেন। কারণ ওনাদের নিজস্ব বাড়ি এখানে নেই। তাই একবাড়িতে থেকেই বিয়ে হবে। আদিব আর রাইমা দুজনের মা বেশ ভালো।

ওদের সবাইকে দ্রুত আপন করে নিয়েছেন। পরশু রাত থেকেই আদ্রিয়ান একটু বিরক্ত। ঐ আরমান নামক ছেলেটা অনিমার সাথে একটু বেশিই চিপকে থাকতে চাইছে। যেটা আদ্রিয়ানের মোটেও ভালো লাগছে না। অনিমা বুঝতে পারছে ব্যাপারটা কিন্তু কিছু করতে পারছেনা। মাঝেমাঝে শুধু অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আদ্রিয়ানের রাগে ফুঁসে ওঠাটাই দেখছে। বাকি ছেলে মেয়ে যারা ওদের ব্যাপারটা জানে তারাতো হেসে কুটিকুটি ওদের দুজনের হাল দেখে। যদিও সবার সামনে হাসিটা কন্ট্রোল করে রাখতে হয়। আর নাহিদতো এই অল্পসময়েই এমনভাবে সবার সাথে মিশে গেছে যে এখন ওকে এই বাড়ির কেউই মনে হচ্ছে। তবে আজ সকাল থেকে আদিবের ফুপি, মানে আরমানের মাও অনিমাকে কেমন করে ঘুরে ঘুরে দেখছে। যেটা অনিমা আর আদ্রিয়ান দুজনেই খেয়াল করেছে। ছেলে কী কম ছিল যে এখন মাও এভাবে পেছনে পরেছে?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

তিনদিন পর বিয়ে, বাড়িতে প্রচুর মানুষ তাই দুপুরের খাবারের জন্যে সবাই ছাদের ফ্লোরে বসেছে। সবাই মিলে একসাথে খাবে তাই। এক লাইনে ছোটরা মানে ইয়াংরা সবাই বসেছে। ওপর লাইনে মুখোমুখি হয়ে বড়রা বসেছেন। অনিমা আদ্রিয়ান পাশাপাশি বসলেও আরমানও অনিমার পাশে বসে পরেছে। যদিও ওখানে জাবিন বসতে চেয়েছিল কিন্তু তার আগেই আরমান বসে পরেছে। আর আরমানের মা অনিমা আদ্রিয়ানে মুখোমুখি হয়েই বসেছে। আবার অভ্র জাবিনও পাশাপাশি বসেছে। মুখে কিছু না বললেই চোখে চোখে হালকাপাতলা কথা হচ্ছে এদের। খাওয়ার মাঝে আরমান ইচ্ছে করেই অনিমার সাথে নানারকমের কথা বলছে। অনিমাও ভদ্রতা রক্ষায় টুকটাক উত্তর দিচ্ছে, কখনও চুপ করে আছে। আদ্রিয়ানতো শক্ত হয়ে বসে খাচ্ছে কম হাত নিয়ে খাবার নাড়ছে বেশি। আদিব ফিসফিসিয়ে আদ্রিয়ানকে বলল,

” কী ভাই? জ্বলছে?”
আদ্রিয়ান একবার তাকাতেই আদিব আবার খাওয়ায় মনোযোগ দিল, যেন ও কিছুই বলে নি। আরমান একটা বাটি থেকে মাংস তুলে অনিমার পাতে দিয়ে বলল,
” মাংস না নিয়েই তো ভাত শেষ করে ফেলছিলে। মাংসটা ভালো হয়েছে খেয়েই দেখ? আরেকটু ভাত দেই?”
আদ্রিয়ান মুখে লোকমা তুলতে যাচ্ছিল কিন্তু এটা শুনেই থেমে গেল। অনিমা আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে তারপর আরমানের দিকে তাকিয়ে একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,

” না, ঠিক আছে।”
” আরে আরেকটু নেও। এতো কম খাও বলেইতো এমন রোগা তুমি।”
তখন আদ্রিয়ান বলে উঠল,
” তুমি এতো চাপ নিওনা। ও রোগা হলে সেটা ওর বরের প্রবলেম। ঠিক ম্যানেজ করে নেবে। তার প্রয়োজন হলে রোগা থেকে মোটাও করে নেবে। তুমি খাও।”
” কিন্তু আমি যতদূর জানি অনি এখনও আনম্যারিড।”
” প্রথমত ওর নাম অনিমা। আর দ্বিতীয়ত ও চিরকুমারী থাকার প্রতিজ্ঞা করেনি। বিয়ে করবে একদিন।”
কথাটা শুনে যেন আরমান স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল। তবে আর কথা বাড়াল না। নাহিদ একটু গলা ঝেড়ে বলল,

” আচ্ছা এখানে কী কোন পোড়া খাবার নিয়ে এসছো না-কি? কেমন পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি।”
আশিসও সম্মতি দিয়ে বলল,
” সেম সেম। আমারও একই ফিল হচ্ছে।”
আদিবের মা অনেকটা অবাক হয়ে বললেন,
” কী বলছিস কী? পোড়া খাবার কেন আনতে যাবো?”
আদ্রিয়ান দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

” তোদের দুটোর নাকে ইনফেকশন হয়েছে, নাকের ডক্টর দেখা গাধাস্।”
আদ্রিয়ানের এই কথা নিয়ে একদফা সবাই হেসেও নিল। নাহিদ আর আশিস ওকে আর বেশি না ঘাটিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিল। অভ্র তো ভয়ে মুখ খুলছেনা, কখন আবার ঝাড়ি খেতে হয়। জাবিন আর রাইমা দুজনেই নিরবে বিনোদন নিচ্ছে। হঠাৎই আরমানের মা আদ্রিয়ানের উদ্দেশ্য বলে উঠল,
” আদ্রিয়ান তোমার ফুপির নাম্বারটা দিওতো।”
আদ্রিয়ান অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,

” কোন ফুপি?”
” আরে তোমার ফুপি। মানে অনিমার মা।”
আদ্রিয়ান আর অনিমা একসাথে অবাক হয়ে তাকাল আরমানের মায়ের দিকে। আরমান হালকা ব্লাশ করছে। তবুও আদ্রিয়ান একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,
” ফুপির নাম্বার দিয়ে আপনি কী করবেন? মানে..”
” আরে দরকার বলেই তো চাইছি। খাওয়া শেষ করে নাম্বারটা দিও কিন্তু।”
অনিমার তো ঘাম বেড়োচ্ছে। কী চায় কী এই মহিলা? আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,

” ফুপির ফোন তো নেই।”
আরমানের মা অনেকটা অবাক হয়ে বললেন,
” নেই মানে?”
” নেই মানে নেই? এইতো গত পরশু বাসের মধ্যে চুরি হয়ে গেল। ইশ! কত দামি ফোন ছিল। বল আদিব।”
আদিব হকচকিয়ে গিয়ে বলল,
” হ্যাঁ? ও হ্যাঁ তাইতো। অনেক দামি ফোন ছিল। ফুপির তো ফুপাও এতোটা প্রিয় ছিলোনা যতটা ঐ ফোনটা ছিল। ”

” এক্সাক্টলি। তাই ফুপি এখনও তার পুরোনো ফোনের শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আর ফুপাও এখনও এবরট থেকে ফোন কিনে পাঠায়নি। এইজন্যই তো অনি ওর মাকে ফোন করছেনা, সি।”
আদিবের দাদি বলে উঠলেম,
” হয়েছে খাওয়ার সময় এতো কথা বলতে নেই, খেয়ে নাও সবাই।”
আরমানের মা আশাহত হয়ে আবার খাওয়া শুরু করলেন। তবে আদ্রিয়ান খেতে পারছেনা শান্তিতে। অনিমার তো মনে মনে বড্ড ভয় লাগছে। ও বুঝতে পারছে যে আদ্রিয়ান বিরক্ত আর রাগ দুটোই হচ্ছে।

গোটা দুপুর জুড়ে চৌধুরী বাড়িতে বা পাশের বেডরুমটায় আবারও তান্ডব হয়েছে। সেটা রিকই করেছে। আসলে মাঝেমাঝেই ও এরকম করে। এমনিতে স্বাভাবিক থাকলেও যেই মুহূর্তে অনিমার কথা মনে পরে, এটা মাথায় ঘোরে যে অনিমা ওকে ঠকিয়ে পালিয়ে গেছে, তখনই এরকম নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায় ও। মাত্রাতিরিক্ত নেশা করে সবকিছুই ভেঙ্গে ফেলে। যদিও সব শান্ত হয়ে গেছে বেশ অনেকটা সময় হল। স্নিগ্ধা খাবারের ট্রে এনে আস্তে করে দরজা ফাঁক করে দেখে রিক উপর হয়ে শুয়ে আছে। ওর বা হাত দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পরছে। স্নিগ্ধা গুটিগুটি পায়ে ভেতরে এলো। প্লেটটা টি-টেবিলে রেখে রিকের পাশে বসে ওর মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে বলল,

” রিক দা?”
রিক চোখ বন্ধ করে রেখেই শক্ত কন্ঠে বলল,
” দেখ বিরক্ত করিস না আমাকে এখন। যা এখান থেকে।”
স্নিগ্ধা উঠে গিয়ে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে এলো। রিকের পাশে বসে রিকের কাটা হাতটা ধরতেই রিক ঝাড়ি মেরে বলল,
” তোকে যেতে বললাম না?”
সিগ্ধা রিকের ধমকে পাত্তা না দিয়ে রিকের হাত টেনে নিজের কাছে নিল। রিক সরাতে নিলেই স্নিগ্ধা কাটা জায়গায় একটু চাপ দিল। রিক ‘আহ’ করে উঠল। স্নিগ্ধা কোন কথা না বলে রিকের হাতে আলতো হাতে পরিষ্কার করে ঔষধ লাগিয়ে দিচ্ছে। রিকও আর কিছু বলেনি শুধু ভ্রু কুচকে তাকিয়ে ছিল স্নিগ্ধার দিকে। ব্যান্ডেজ করার সময় রিক বলল,

” তোকে এতো সাহস কে দেয় বলত? লোকে আমার দিকে চোখ তুলে তাকাতেও ভয় পায় আর তুই?”
” তুমি বলোনা আমার আর অনিমার মধ্যে অনেক সিমিলারিটিস্ আছে? তার মধ্যে কিন্তু এটাও একটা। ওও কিন্তু প্রথমে তোমাকে একদম ভয় পেতোনা। কিন্তু পরে এভাবে যমের মত ভয় পেতে শুরু করল কেন বলোতো? কী করেছিলে ওর সাথে?”
রিক বিরক্ত হয়ে বলল,
” কিছুই করিনি। জানি অদ্ভুত শোনাচ্ছে, কিন্তু এটাই সত্যি।”
” বাদ দাও। আদিব ভাইর বিয়েতে যাবে?”
” ফ্রি হলে, আর গেলে তোকে নিয়েই যাবো। এবার যা।”
” যাবোতো খেয়ে নাও আগে।”

রিক রাগী চোখে তাকাল স্নিগ্ধার দিকে। স্নিগ্ধা হেসে বলল,
” কী হল আমি খাইয়ে দেব?”
রিক বিরক্তি নিয়ে স্নিগ্ধার হাত থেকে প্লেট নিয়ে নিল। এরপর নিজেই খেতে শুরু করল। স্নিগ্ধা ভেংচি কেটে বলল,
” নীলপরী বললে তো নাচতে নাচতে ওর হাতে খেতে।”
রিক চোখ ছোট ছোট করে তাকাতেই স্নিগ্ধা প্রায় দৌড়ে ওখান থেকে চলে গেল। ওখানে এখন থাকা মানেই সিংহের মুখে হাত ঢোকানো। স্নিগ্ধার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে যে রিক হেসেছে সেটা হয়তো রিক নিজেও জানেনা।

অনেক খাটাখাটনির পর বিকেলের শপিং এর কাজ শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে এরেঞ্জ করে কেনাকাটা করতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে এদের। তবে তারমাঝেও বেশ মজার মজার ঘটনা ঘটেছে। আরমান সারাক্ষণ অনিমার পেছনেই চিপকে ছিল। অনিমা বারবার বারণ করার পরেও জোর করেই একটা পেন্ডেন্ট গিফট করেছে ওকে। এমনকি নিজের হাতে পরিয়েও দিয়েছে। অনিমা অনেক চেষ্টা করেও বারণ করতে পারেনি। পরিস্থিতিটাই এমন হয়ে ছিল।

ঐ মুহূর্তে ভীত চোখে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে ছিল ও। দুবার আরমান অনিমার গায়ে হাতও দিয়েছিল। যদিও সেটা পজিটিভলি, নরমালি কথার ছলে বা আড্ডার ছলে যেভাবে দেয় সেভাবেই। সেরকম কিছু ভেবে দেয়নি। কিন্তু সেটা আদ্রিয়ানের মোটেও সহ্য হয়নি। ও না পেরেছে সবার সামনে কিছু বলতে আর না সহ্য করতে পেরেছে। আদিব, আশিস, নাহিদ, জাবিন, রাইমা ওরা সবাই বেশ মজা নিয়েছে ব্যাপারটায়।

আদ্রিয়ান পরশু থেকে এমনিতেই হালকা রেগে ছিল। শপিং মল থেকে বেড়োনোর পর থেকে ফুলে বোম হয়ে রয়েছে। কারো সাথেই কথা বলেনি তেমনভাবে। অনিমার সাথেতো না-ই। বাড়ি ফিরে রেস্ট আবার সবাই কাজে লেগে পরেছে। আদ্রিয়ান এখনও বম হয়ে আছে। আদিব ওরাও মাঝে মাঝে গিয়ে একটু খোঁচা মেরে আসছে। তবে এই দুদিন ধরেই আদিবের কাজিন সিস্টারদের দু একজন আদ্রিয়ানের ওপর একটু বেশিই ঢলে পরে।

মুখে ‘ভাইয়া’ ‘ভাইয়া’ বললেও আদ্রিয়ানকে দেখলেই যে ওদের মন ‘সাইয়া’ ‘সাইয়া’ করে সেটা অনিমা বেশ বুঝতে পারে। বিশেষ করে আদিবের খালাতো বোনটা। আদ্রিয়ানকে সাহায্য করার নাম করে শুধু গা ঘেষছে। আদ্রিয়ানও আজ ঐ মেয়ের সাথে একটু বেশিই মিশছে। অনিমার রাগ হচ্ছে ঠিকই এটাও বুঝতে পারছে যে আদ্রিয়ানেরও এরচেয়ে বেশি রাগ হয়েছে নিশ্চয়ই ঐ আরমানের কজে। কিন্তু ঐ বা কী করবে? অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবটা দেখা ছাড়া আপাতত কোন উপায় নেই। জাবিন এসে অনিমার পাশে দাঁড়িয়ে বলল,

” ভাবি বি রেডি। বোম যেভাবে আস্তে আস্তে যত্ন নিয়ে বিশাল আকাড়ে তৈরী হচ্ছে, যেকোন সময় ফাটবে কিন্তু। সাবধান হ্যাঁ?”
অনিমা অসহায় দৃষ্টিতে তাকাল জাবিনের দিকে। জাবিন মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। রাইমার দিকে তাকাতে রাইমাও ইশারায় বলল ‘তৈরী থাকো বাচ্চা, খুব শীঘ্রই তোমার ওপর দিয়ে সুনামি যাবে’। অনিমা অসহায়ভাবে একটা শুকনো ঢোক গিলল।

কাজকর্ম শেষ করে ড্রয়িং রুমে সবাই একসাথেই একটু বসেছে। দরকারি কথাও হচ্ছে এরমধ্যে। আদ্রিয়ান এসে বসে জগ থেকে গ্লাসে পানি নিল। অনিমা শুধু আড়চোখে দেখছে আদ্রিয়ানকে আর ভাবছে যে আক্রমণটা কখন কোনদিক থেকে হতে পারে। কথার মাঝেই দাদি বলে উঠল,
” এইযে আদিব, আদ্রিয়ানকে দেখে শেখ যে বোনের খেয়াল কীকরে রাখতে হয়। সরাটাদিন অনিমাকে কেমন চোখে চোখে রাখে। বাপ মা এখানে নেই তো তাই। তুইতো তোর বোনগুলোর দিকে তাকাসও না। ভাইদের এমনই হতে হয় বুঝলি? আর অনিমাও কী সুন্দর আদ্রিয়ানের কথা মেনে চলে। কী সুন্দর সম্পর্ক ভাই বোনের।”

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ২৭

আদ্রিয়ান বেচারা জল খাচ্ছিল কিন্তু দাদির কথা বিষম খেয়ে গেল। আদিব উঠে আদ্রিয়ানের পিঠে হাত বুলিয়ে বলল,
” হ্যাঁ হ্যাঁ একদম। একেবারে সচ্ছ পবিত্র ভাইবোনের সম্পর্ক ওদের। পুরো বাঁধাই করানোর মতো।”
আদ্রিয়ানের কাশি থামছেইনা। অনিমা এখন পারছেনা মাটি ফাঁক করে তারমধ্যে ঢুকে যেতে। নাহিদ বলল,
” বাঁধাই মানে। ঐতিহাসিক ভাইবোনের সম্পর্ক এটা। বাঙালি.. না না শুধু বাঙালি না মানবজাতি যুগ যুগ ধরে মনে রাখবে ভাই বোনের এই অমর সম্পর্ক।”

আদ্রিয়ান রাগী চোখে তাকাল ওদের দিকে। জাবিন আর পারল না,সবার সামনেই ঘর কাঁপিয়ে হেসে দিল। অভ্র ঠোঁট চেপে অনেক কষ্টে হাসি আটাচ্ছে। যারা ব্যাপারটা জানে সবার অবস্থা একই। জাবিনের হাসির কারণটা বাকিরা বুঝলনা। রাইমা অনেক কষ্টে সবাইকে সামলালো।
সবাই যে যার যার মত শুতে চলে যাচ্ছে। আদিব, আশিস, নাহিদ, অভ্র ওরা এখনও এই বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছে। আদ্রিয়ানের ধমকিতে সব থেমে একে একে শুতে গেল। আদ্রিয়ানও ওপরে যেতে নেবে এমন সময় আরমানের মা ডাকল ওকে। আদ্রিয়ান দাঁড়িয়ে বলল,

” কিছু বলবেন?”
আরমানের মা মুখে হাসি ফুটিয়ে ইতস্তত করে বলল,
” কীকরে যে বলি। আসলে..”
আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে ফেলল। খানিকক্ষণ ভনিতা করে আরমানের মা বললেন,
” আসলে আরমানের তো বিয়ের বয়স হয়েছে এতো ভালো চাকরীও আছে। তুমি অনিমার কাজিন ভাই হও তাই তোমাকেই বলছি। আরমানের অনিমাকে পছন্দ হয়েছে। আমাদেরও বেশ পছন্দ হয়েছে ওকে। তাই বলছিলাম ওদের দুজনের বিয়েটা নিয়ে যদি তোমার ফুপির সাথে একটু কথা বলতে আরকি। বুঝতেই পারছ।”

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ২৯