বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৩৫

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৩৫
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

অনিমার কথা শুনে আদ্রিয়ান অনিমার হাত ছেড়ে দিয়ে ভ্রু কুচকে তাকাল। অনিমা এখনও কৌতূহলী চোখে তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ানের দিকে। আদ্রিয়ানের চোয়াল খানিকটা শক্ত হয়ে এলো। ও চোখ বন্ধ করে লম্বা একটা শ্বাস ফেলে সামনে তাকাল। আদ্রিয়ান এরকমটা তখনই করে যখন ও রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। অনিমা সেটা জানে। তাই একটু ভয় পেল। না জানি আবার কী ভুলভাল বকে ফেলেছে।

কিন্তু ও তো সাধারণ একটা প্রশ্ন করেছে। রেগে যাওয়ার মতো তো কিছু বলে নি। হ্যাঁ ও জানে আদ্রিয়ান ওকে ভালোবাসে। কিন্তু হঠাৎ করেই বিয়ের মত একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা সহজ নয়। বিয়েটা ছেলেখেলা নয়। অনেক ভাবনা চিন্তা করতে হয়। পরিবারিক ব্যাপারও আছে। ও তো শুধু সেইজন্যেই জিজ্ঞেস করেছিল। আদ্রিয়ান শান্ত গলায় বলল,
” তোমার কী মনে হয়? কেন বিয়ে করেছি আমি তোমাকে?”
আদ্রিয়ানের এমন ঠান্ডা গলার সাথে অনিমা পরিচিত। এটা একপ্রকার বিপদ সংকেত। তাই অনিমা একটু ভয়ে ভয়ে বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” আমি কীকরে বলব? আপনি কেন বিয়ে করেছেন সেটাতো আপনি ভালো বলতে পারবেন তাইনা? ”
আদ্রিয়ান মাথা নাড়িয়ে বলল,
” কান্ড তো তুমি ঘটিয়েছ। কারণটা আমি ভালো কীকরে জানবো?”
আদ্রিয়ানের কথায় অনিমার একটু অভিমান হল। ও মাথা নিচু করে অভিমানী গলায় বলল,
” হুম। দোষটা আমারই। আমারই আপনাকে শুরুতে সবটা বলা উচিত ছিল। তাহলে আপনি প্রথমেই সবটা সামলে নিতে পারতেন। এতোটা সিনক্রিয়েট হত না। আর আপনাকে আমায় বিয়ে করতেও হতোনা।”

কথাটা শেষ করতেই আদ্রিয়ান অনিমার কোমর চেপে ধরে টেনে ওর দিকে টেনে এনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। অনিমা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। আদ্রিয়ান খানিকটা শক্ত কন্ঠে বলল,
” এই মুহূর্তে আমার কী ইচ্ছে করছে জানো? তোমার ঐ তুলতুলে নরম গাল দুটোতে ঠাটিয়ে দুটো চড় মারতে। কিন্তু তোমার ভাগ্য অনেক ভালো আজ আমি সেটা করব না। কারণ প্রথমত আজ এমনিতেই তোমার ওপর দিয়ে অনেক কিছু গেছে। আর দ্বিতীয়ত আজ আমাদের বিয়ের প্রথম রাত। সুতরাং আজ কোন মারামারি না শুধু প্রেম হবে।”

অনিমা চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ানের দিকে। লোকটা আসলেই অদ্ভুত। কখন তার মুড কেমন থাকে সেটা উনি ছাড়া কেউ জানেনা, আন্দাজও করতে পারেনা। যেমন ও ভেবেছিল এই ছেলে এখন ওকে আচ্ছা ধোলাই দেবে। কিন্তু তা হলোনা। সে তো এখন অন্য গান গাইছে। অনিমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আদ্রিয়ান ভ্রু নাচালো। অর্থাৎ ‘কী দেখছ?’ অনিমা মাথা নেড়ে বোঝালো ‘কিছু না’। তারপর আশেপাশে তাকিয়ে বলল,

” অনেকটা রাত হয়েছে। ঘুমাবেন না? চলুন!”
আদ্রিয়ান অনিমাকে নিজের সাথে আরও ভালোভাবে মিশিয়ে ধরে বলল,
” উমহুম। আজ কোথায় যাচ্ছিনা। আজ নিচে ঘুমাতে গেলেই দুজনকে আলাদা আলাদা রুমে ঘুমাতে হবে। কারণ বিয়েটা হুট করেই হয়েছে। তুমি প্রস্তুত ছিলেনা একদমই। আমিও যে খুব বেশি তৈরী ছিলাম তা না। আমি চাই তোমাকে একটু সময় দিতে। আপাতত ব্যাপারটা এই অবধিই রাখতে চাইছি আমি। তাছাড়া বিয়েতো হয়েছেই আমাদের। অপেক্ষা করলে সমস্যা কোথায়। এটা তো সত্যি তুমি আমার বউ। মিসেস আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের।”

অনিমার মন হালকা কেঁপে উঠল শেষের কথাটা শুনে। সত্যিই ও আদ্রিয়ানের বউ এখন। আদ্রিয়ানের নামের সাথে ওর নাম জড়িয়ে গেছে। নিজের ভালোবাসার মানুষটার বউ হতে পেরেছে। ওর পাশে বসা মানুষটা এখন ওর। শুধুই ওর। এসব ভাবতে ভাবতে নিজেও আদ্রিয়ানের পেটের ওপর হাত রেখে বুকের পাশে মাথা রেখে দিল। আদ্রিয়ান একহাতে অনিমার মুখের পাশের চুলগুলো সরাতে সরাতে বলল,

” তাই আজকের এই বিশেষ রাতটা একসঙ্গে কাটাতে চাই!”
অনিমা কিছু একটা ভেবে বলল,
” আঙ্কেল, আন্টির সাথে কথা বলেছেন?”
” হ্যাঁ। রেগে আছে একটু। তোমাকে বিয়ে করেছি বলে না, ওনাদের দেরীতে ফোন করেছি তাই। তোমাকে নিয়ে ওনাদের সমস্যা নেই। দেখো, কাল পরশুই ফোন করবে তোমার কথা বলার জন্যে। এরপর আমাকে ভুলে তোমাকে নিয়ে নাচবে। আমার মিষ্টি বউ বলে কথা।”

অনিমা আর কিছু বলল না। এখন একটু লজ্জা লজ্জা লাগছে ওর। একজন সার্ভেন্ট দুটো মগে কফি দিতে এল। ওনাকে দেখে অনিমা আদ্রিয়ানকে ছেড়ে দিলেও অাদ্রিয়ান ওভাবেই জড়িয়ে ধরে বসে রইল ওকে। মেয়েটি ওগুলো রেখে দ্রুত মাথা নিচু করে চলে গেল। অনিমা বিরক্তি নিয়ে বলল,
” এরকম করলেন কেন? কী ভাবলো ও?”
” কী ভাববে? কেন ভাববে? আমার বউ আমি ধরেছি তাতে কার কী?”

অনিমা কিছু বলল না। আদ্রিয়ানের মুখে বারবার ‘বউ’ শব্দটা শুনে কেমন একটা ফিল হচ্ছে ওর। আদ্রিয়ান অনিমাকে ছেড়ে একটা কফিমগ অনিমার দিকে এগিয়ে দিলো। অনিমা কফি মগটা নিয়ে দূরে সরতে নিলেই আদ্রিয়ান আবারও একহাতে ওকে বুকে জড়িয়ে নিল। অনিমা আর কিছু বলল না চুপচাপ ওভাবেই কফির মগে চুমুক দিতে লাগল।

বেশ অনেকটা সময় কেটে গেছে। দুজনেই চুপচাপ আছে। কফি শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। আদ্রিয়ান এখনও বুকে জড়িয়ে রেখে দিয়েছে অনিমাকে। আদ্রিয়ান অনিমার চুলে আঙ্গুল নাড়তে নাড়তে বলল,

” জানপাখি!”
অনিমা আদ্রিয়ানের বুকে মাথা রেখে আদ্রিয়ানের টিশার্টের ওপর নখ ঘষতে ঘষতে বলল,
” হুম।”
” তুমি খুশি তো!”
” আপনি খুশি?”
” আমার জীবনের সেরা দিনগুলোর মধ্যে একটা এটা।”
অনিমা চোখ তুলে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,

” এতো খুশি হওয়ার কারণ? আপনি যেরকম মানুষ আপনিতো আরও বেটার কাউকে ডিসার্ব করতেন। আরও সুন্দরী, হায়ার ক্লাসের মেয়ে পেতে পারতেন। সেখানে আমার মত একটা মেয়েকেই কেন?”
আদ্রিয়ান এবার একটু রাগী কন্ঠে বলল,

” অনি আই সোয়ার আমি কিন্তু এবার আর কোন ফার্স্ট নাইট টাইট দেখব না। সত্যিই মেরে দেব কিন্তু!”
অনিমা কিছু না বলে সাথেসাথেই আদ্রিয়ানের বুকে গুটিয়ে গেল। ব্যাস! আদ্রিয়ানের রাগটাও সাথেসাথেই জল হয়ে গেল। ও আবার অনিমার চুলে আঙুল চালাতে চালাতে বলল,
” জানপাখি আজকাল খুব চালাক হয়ে যাচ্ছো তুমি।”
অনিমা আদ্রিয়ানের বুকে মুখ গুজে রেখেই হাসল। আদ্রিয়ান বলল,

” কাল আমার ভাই আসছে। কাজিন ব্রাদার।”
” কখন আসবে?”
” এসে দুপুরে খাবে বলেছে।”

অনিমা কিছু বলল না। এভাবে গল্প করতে করতে বেশ অনেকটা রাত হয়ে গেল। আদ্রিয়ান খেয়াল করল যে অনিমা ঘুমিয়ে পরেছে। আদ্রিয়ান মুচকি হেসে অনিমাকে বুকে রেখেই দোলনার সাথে হেলান দিয়ে বসল। অনিমা একদম নিশ্চিন্তে আদ্রিয়ানের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। ‍যেন এরচেয়ে নিরাপদ জায়গা ওর কাছে কিছুই নেই। আদ্রিয়ান অনিমার মাথায় একটা চুমু দিয়ে ওকে আরও শক্ত করে বুকে জড়িয়ে রাখল। এই মেয়েটা এখন ওর বউ। ওর নিজের। এরচেয়ে ভালো অনুভূতি ওর জন্যে আর কী হতে পারে! কিন্তু এটা ভেবেও চিন্তা হচ্ছে যে এখন অনিমার কথা সবাই জানে। এখন ওকে আর ওকে লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এখন ওকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আগলে রাখতে হবে ওর জানপাখিকে। যেন নতুন কোন ঝড় ওকে ছুঁতে না পারে।

রিক খুব দ্রুত রেডি হচ্ছে। ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছে এমনিতেই। এতক্ষণ কেন ঘুমালো সেটাই বুঝতে পারছেনা। যেতে যেতে এবার প্রায় বিকেল হয়ে যাবে। তাই ঘুম থেকে উঠেই কোনদিকে না তাকিয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হতে শুরু করেছে। স্নিগ্ধা রুমের কোণে দাঁড়িয়ে হাত কচলে যাচ্ছে। ও জানে আজ রিক যদি আদ্রিয়ানের বাড়িতে যায় তাহলে ভয়ংকর কিছু একটা হয়ে যাবে। কিন্তু রিককে আটকাচ্ছে না কারণ একদিনতো জানবেই। ব্যাপারটা যত তাড়াতাড়ি হয় ততই ভালো। রেডি হয়ে রিক স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে বলল,

” আসছি আমি।”
স্নিগ্ধা শুধু মাথা নাড়ল। রিক বেড়িয়ে ড্রয়িংরুম পাস করতে যাবে তখন ওর রঞ্জিত চৌধুরী বলে উঠল,
“কোথায় যাচ্ছো?”
রিক দাঁড়িয়ে গিয়ে বলল,
” তুমিতো জানো, আজ আদ্রিয়ানের বাড়ি যাচ্ছি।”
রঞ্জিত চৌধুরী গম্ভীর স্বরে বললেন,
” আজ না অন্যদিন যেও। বিকেলে একটা..”
রিক বিরক্তি নিয়ে বলল,

” ড্যাড প্লিজ। এতদিন যখন নিজেরা সব সামলে নিয়েছ। আজকেও পারবে। তোমার রোজ রোজকার এসব আমার আর ভালো লাগছে না। আমিও মানুষ! একটু শান্তি দাও। আমি যাচ্ছি। মামা আমি এলাম। মা কে বলে দিও।”
বলে রিক বেড়িয়ে গেল। রঞ্জিত চৌধুরী কিছু বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু কবির শেখ আটকে নিয়েছে ওনাকে। রঞ্জিত চৌধুরী রেগে বললেন,
” থামালেনা কেন ওকে?”
কবির শেখ রিকের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন,

” আজ ও যেতোই। আটকে লাভ হতোনা। খেলার মোর ঘুরেছে। এবার নতুন কিছু ভাবতে হবে।”
” কিন্তু কী ভাবব? আর সারা দুনিয়ায় এতো জায়গা থাকতে তোমার ঐ ভাগ্নের বাড়িতে গিয়েই পরল মেয়েটা? তোমার ভাগ্নে আবার ওকে বিয়েও করে নিল?”
কবির শেখ গভীর ভাবনায় থেকে বলল,
” এটাই তো প্রশ্ন! আদ্রিয়ানই কেন? কিছুতো গন্ডগোল আছেই। কিছু একটা হয়েছে আমাদের অগচরে। ঐ ছেলেটা সুবিধার না। তারওপর সিলেটের ঐখানেও ঐ বুড়িকে পেলাম না। গেলোটা কোথায়!”
বলে টেবিলে ঘুষি মারলেন উনি। রঞ্জিত চৌধুরীর চোখেমুখেও ভীষণ গাম্ভীর্য আর চিন্তা।

এদিকে যাওয়ার পথে রিক কানাঘুষায় শুনতে পেল আদ্রিয়ান কাল বিয়ে করেছে। রিক একটু অবাক হল। গুজব নয়তো? আদ্রিয়ান বিয়ে করলেতো ওকে বলবে তাইনা? এসব ভাবতেই আদ্রিয়ানের ফোন চলে এলো। রিক ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আদ্রিয়ান বলে উঠল,

” ঐ তোর না দুপুরে এসে খাওয়ার কথা? কটা বাজে?”
” আমার কথা ছাড়। কী শুনছি? তুই বিয়ে করেছিস? ”
আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে ইতস্তত করে বলল,
” হ্যাঁ কালকেই করেছি।”
” শালা, দাওয়াত তো দূর জানালিও না? এটা কোন কথা হল নাকি?”
” আরে সব অনেক দ্রুত হয়ে গেছে। নিজেও রেডি ছিলাম না। আয় সব খুলে বলছি। আর নেটে ঢুকলেই আমার বউয়ের ছবি পেয়ে যাবি।”
রিক হেসে বলল,

” ঢোকার ইচ্ছে ছিল কিন্তু এখন আর ঢুকবোনা। একবারে সামনাসামনি ভাবিকে দেখব। ভাবিটা নিশ্চয়ই তোর মায়াবিনী?”
আদ্রিয়ানও হেসে দিয়ে বলল,
” হ্যাঁ ওই আরকি। যাই হোক কখন আসছিস?”
রিক একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,
” পৌছাতে পৌছাতে বিকেল হবে। ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছে।”
” আচ্ছা দ্রুত আয়।”
রিক ফোনটা রেখে ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলল। যদি ওর নীলপরী আজ ওর কাছে থাকতো তাহলে হয়তো এতোদিনে ওদের বিয়ে হয়ে যেত। কোথায় আছে মেয়েটা কে জানে?

অনিমা আর জাবিন মিলে কিচেনে কয়েকরকম স্নাকস বানাচ্ছে। আসলে রিক বলেছে যে ও দুপুরে বাইরেই খাবে। তাই অনিমা ভাবল যে বিকেলের ভালো কিছু স্নাকস বানিয়ে রাখুক। এসে খেতে পারবে। এতোকিছুর মধ্যে অনিমা জিজ্ঞেস করেনি আদ্রিয়ানের ঐ ভাইয়ের নাম কী? তেমন আগ্রহ নেই ওর। জাবিনও ‘ভাইয়া’ বলে সম্বোধন করছে। আদ্রিয়ানও নাম নেয়নি। এদিকে আদ্রিয়ান, অভ্র আর নাহিদ মিলে ড্রয়িংরুমে বসে গল্প করছে। হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠল। নাহিদ বলল,

” রিক এসে গেছে বোধ হয়।”
আদ্রিয়ান উঠে গেল দরজা খুলতে। দরজা খুলে দেখে সত্যিই রিকই দাঁড়িয়ে আছে। দুজনেই হেসে দিয়ে একে ওপরকে জড়িয়ে ধরল। আদ্রিয়ান ছাড়িয়ে বলল,
” আয় ভেতরে আয়!”
রিককে নিয়ে ভেতরে আসার পর রিক অভ্র আর নাহিদ দুজনকেই জড়িয়ে ধরে কুশল বিনিময় করল। দুজনকেই চেনে ও আগে থেকে। নাহিদের দিকে তাকিয়ে বলল,

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৩৪

” দেশে এলি কবে?”
” এইতো আদিবের বিয়েতেই এসছি।”
রিক উৎসাহি চোখে চারদিকে তাকিয়ে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,
” ভাবী কোথায়? কোথায় লুকিয়ে রেখেছিস? তাড়াতাড়ি সামনে আন। দেখি কোন মায়াবিনীকে এভাবে হুট করে বিয়ে করে নিলি!”
আদ্রিয়ান একটু শব্দ করে হেসে দিয়ে বলল,
” আরে আনছি। এতো অধৈর্য হচ্ছিস কেন?”
বলে আদ্রিয়ান রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে জোরে ডাকল,

” অনি!”
‘অনি’ নামটা শুনে রিকের বুকের মধ্যে ধক করে উঠল। বিস্ফোরিত চোখে তাকাল আদ্রিয়ানের দিকে। অনি? কোন অনি? ওর নীলপরী নয়তো? না এরকম হতে পারেনা। দুনিয়াতে কী অনি নামের ঐ একটা মেয়েই আছে না-কি? নিশ্চয়ই অন্যকেউ। হ্যাঁ অন্যকেউ। তখনই অনিমা হাত মুছতে মুছতে এগিয়ে এসে বলল,
” জি ডাকছিলেন?”

অতি পরিচিত কন্ঠ শুনে রিক অবাক হয়ে তাকালো সেদিকে। তাকিয়ে সত্যিই সত্যিই অনিমাকে দেখে ও থমকে গেল। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা। অনিমা এখানে আছে? আর ও এখন আদ্রিয়ানের বউ? মানে ওর নীলপরী এখন ওরই ভাইয়ের বউ? অনিমার দৃষ্টি রিকের ওপর পরতেই ওর পা থেমে গেল। ওও অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রিক এখানে কী করছে? এখন কীকরে এলো? গা কাঁপছে ওর। মাথা চক্কর দিয়ে উঠছে। নিজের অজান্তেই দুকদম পিছিয়ে গেল অনিমা।

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৩৬