বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৩৬

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৩৬
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

রিক এখনও হতভম্ব দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অনিমার দিকে। ওর মন খুব করে বলছে এটা মিথ্যা হোক, স্বপ্ন হোক। কিন্তু না; এটা বাস্তব। আর ও সেটা এতক্ষণে বুঝেও গেছে। অনিমার পক্ষে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। মাথা যন্ত্রণা আবার তীব্রভাবে শুরু হয়ে গেছে। হঠাৎ এরকম ধাক্কা নিতে পারছেনা ও। আচমকা এরকমভাবে রিকের সম্মুখীন হওয়াটা মেনে নিতে পারছেনা ।

ওর মনে হচ্ছে ও আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেনা। হলোও ঠিক তাই। আবারও জ্ঞান হারিয়ে ফেলল ও। অনিমা পরে যেতে নিলে রিক দ্রুত দৌড়ে ধরতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই আদ্রিয়ান ধরে ফেলল। রিক সাথে সাথেই থেমে গেল। আদ্রিয়ান দুই হাতে অনিমাকে জড়িয়ে ধরে গালে হালকা চাপড় মেরে ডাকল। জাবিন এসে এরকম পরিস্থিতি দেখতে পেয়ে দাঁড়িয়ে গেল। নাহিদ বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” জাবিন, দ্রুত পানি নিয়ে আয় যা।”
জাবিন দৌড়ে কিচেনে গেল জল আনতে। আদ্রিয়ান অনিমাকে কোলে তুলে নিয়ে বড় সোফায় শুইয়ে দিয়ে আবার ডাকতে শুরু করল। অভ্র আর নাহিদও ওর মাথার কাছে এসে ডাকছে ওকে কিন্তু অনিমার কোন সারাশব্দ নেই। রিক শুধু তাকিয়ে আছে অনিমা আদ্রিয়ানের দিকে। অনেকটা থমকে গেছে ও। তারওপর অনিমার এরকম অবস্থা দেখে কী বলবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছেনা। এরমধ্যেই জাবিন জল নিয়ে চলে এলো। আদ্রিয়ান দ্রুত সেটা হাতে নিল। রিক একটু এগিয়ে কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বলল,

” ক্ কী হয়েছে ও্ ওর?”
আদ্রিয়ান অনিমার মুখে পানি ছেটাতে ছেটাতে ব্যস্ত কন্ঠে বলল,
” টেনশন করিস না। ও একটু অসুস্থ। আমি দেখছি।”
কিছুক্ষণ চেষ্টার পর অনিমা চোখ খুলে তাকাল। আদ্রিয়ানের মনে ভয় ঢুকে গেছে। ডক্টর যা বলেছিল তেমন কিছু হয়ে গেলে ও মানতে পারবেনা। ও অনিমাকে নিজের সাথে আরেকটু জড়িয়ে নিয়ে নরম কন্ঠে বলল,
” ঠিক আছো তুমি এখন?”

অনিমা একটা শুকনো ঢোক গিলে আদ্রিয়ানের টিশার্ট খামচে ধরল। জোরে জোরে দুটো শ্বাস ফেলে ভয়ে ভয়ে পাশে তাকাতেই রিকের দিকে তাকাল। রিকের চোখ লালচে হয়ে গেছে। ঠোঁট সামান্য কাঁপছে। অনিমা ওদের সামনেই আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বুকে মুখ গুজে দিল। রিক সাথেসাথেই নিজের হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলল। অনিমার মত এমন লাজুক মেয়ের এমন কান্ড দেখে আদ্রিয়ান নিজেও অবাক হয়ে গেল। নাহিদ, অভ্র আর জাবিন ঠোঁট চেপে হাসছে। আদ্রিয়ান খেয়াল করল অনিমা নিঃশব্দে কাঁদছে। ও অনিমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

” জানপাখি, কী হয়েছে কাঁদছো কেন?”
আদ্রিয়ানের কথা শুনে অনিমা আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরল আদ্রিয়ানকে। আদ্রিয়ানও আর কিছু না বলে চুপচাপ ওকে জড়িয়ে ধরে বসে রইল। নাহিদ হঠাৎ বলে উঠল,
” রিক, তুই ঠিক আছিস তোর কী হয়েছে?”
নাহিদের কথায় রিকের হুস এলো। বাকি সবাই তাকাল রিকের দিকে। অনিমাও অনেকটা ভয় নিয়েই তাকাল। রিক যথাসম্ভব নিজেকে সামলে বলল,

” হ্যাঁ, ঠিক আছিতো!”
আদ্রিয়ান চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল,
” তোর চোখ, নাক এমন লাল হয়ে গেল কেন?”
” আরে একটু ঠান্ডা লেগেছে। তারওপর এখন আবার চোখটা জ্বলছে একটু। একটু ওয়াশরুমে যাবো আমি।”
জাবিন বলল,
” চল আমি নিয়ে যাচ্ছি।”

জাবিন রিককে নিয়ে চলে গেল। অনিমা রিকের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। রিক আদ্রিয়ানের ভাই? কাজিন ব্রাদার? ওর জানামতে রঞ্জিত চৌধুরীর কোন ভাই বোন নেই। তাহলে? মায়ের পক্ষের কেউ? কবির শেখতো বিয়েই করেনি। হ্যাঁ শুনেছিল লিমা আন্টির আরেকটা জমজ বোন আছে। নামটা মনে নেই ওর। আদ্রিয়ানকি কবির শেখের ভাগ্নে?

আদ্রিয়ানও কী তাহলে ওদের মতই? না কী ভাবছে কী ও? এক পরিবারের হলেই একরকম হবে এরকম কোন মানে নেই। লিমা আন্টিও তো কতো ভালো। কিন্তু ভাগ্য ওকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আবার সেখানেই এনে কেন দাঁড় করালো? যে মানুষটাকে ও সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে ও আজ তারই ভাগ্নের বউ! এটা কেমন নিয়তি? আর কিছু ভাবতে পারছেনা ও। কোনরকমে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,

” পা-পানি।”
নাহিদ দ্রুত পানি এগিয়ে দিল। আদ্রিয়ান সেটা নিয়ে ওকে খাইয়ে দিয়ে বলল,
” রুমে যাবে? শুয়ে একটু রেস্ট করলে ভালো লাগতো।”
অনিমা মাথা হ্যাঁ বলল। আদ্রিয়ান অনিমাকে ধরে ওপরে নিয়ে গেল। নাহিদ আর অভ্র বসে পরল সোফায়। আর রিকের আসার অপেক্ষা করতে লাগল। সন্ধ্যার দিকে আদিব, আশিস আসবে। তীব্র, অরুমিতা, স্নেহাকেও ইনভাইট করা হয়েছে ওরাও আসবে।

বাথরুমের দরজা বন্ধ করে বেসি কল ছেড়ে দিয়ে আয়নার দিকে তাকাল রিক। চোখ, নাক সত্যিই লাল হয়ে আছে। মাথায় একটা কথাই ঘুরছে যে ওর নীলপরী এখন অন্যকারো বউ। অনিমার ওভাবে আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরা, ওরকম ঘনিষ্ঠতা সব চোখের সামনে ভেসে উঠতেই সব ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। প্রচন্ড জোরে চেঁচাতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু ওর ভেতরের কোন এক সত্তা ওকে বাঁধা দিচ্ছে কোনরকম সিনক্রিয়েট করতে।

জোরে জোরে মুছে কিছুক্ষণ পানির ছিটা দিয়েও নিজেকে সামলে রাখতে পারছেনা। আদ্রিয়ানতো ওর ভাই! ও জানতো ও নীলপরীকে ঠিক কতটা চায়, সবটা জেনে শুনে ভাই হয়ে ভাইয়ের সাথে এরকম কীকরে করল? কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল যে আদ্রিয়ানতো জানতোনা ওর নীলপরী কে। ও আসল নামটাও কখনও বলেছি আদ্রিয়ানকে। ও কীকরে জানবে? কিন্তু অনিমা এখানে কীকরে এলো? ওর মামা বলেছিল কোন ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে। সেই ছেলেটাকে কী আদ্রিয়ান? কিচ্ছু ভাবতে পারছেনা ও।

কিন্তু ওর নীলপরীকে অন্যকারো সাথে সহ্য করতে পারবেনা ও, সম্ভব না সহ্য করা। কিন্তু কী করবে এখন? একটাদিন আগে হলেও ও ঠিক অনিমাকে নিজের করে নিতো কিন্তু এখন ও ওর ভাইয়ের বউ। শুধু তাই না। রিক জানে আদ্রিয়ান ওর মায়াবিনীকে ঠিক কতটা ভালোবাসে। কিন্তু ওও তো ওর নীরপরীকে ভালোবাসে। কীকরে ছেড়ে দেবে? কীকরে? সবকিছুই অসহ্য হয়ে উঠছে। রেগে গিয়ে সামনের আয়নায় জোরে ধাক্কা মারলো। আয়নাটা ভেঙে নিচে পরে গেলো। রিকের হাতও কেটে গেছে খানিকটা। দমবন্ধ লাগছে,কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারছেনা ও। কিছুতো করতে হবে কী করবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছেনা।

” ভাইয়া? কী হয়েছে? কী ভাঙল? তুমি ঠিক আছো?”
জাবিনের গলায় আওয়াজ শুনে রিক নিজেকে সামলে জোরে কয়েকটা শ্বাস নিয়ে দরজা খুলল। জাবিন রিকের কাটা হাত দেখে বলল,
” কী হয়েছে? কাটলো কীকরে?”
রিক হাতের দিকে তাকিয়ে এরপর সামনে তাকিয়ে বলল,
” ধাক্কা লেগে আয়নাটা পরে গেছে। আর হাতে লেগেছে তাই___
” ইশ! কতখানি কেটে গেছে! চলো ড্রেসিং করে দিচ্ছি।”

জাবিন রিকের হাত ধরে নিয়ে গেল। রিকও কিছু বলল না। কিছুক্ষণ পর আদ্রিয়ান নিচে নেমে দেখে ওরা সবাই বসে আছে সোফাতে। রিকের হাতে ব্যান্ডেজ দেখে অবাক কন্ঠে বলল,
” হাতে কী হয়েছে?”
রিক হাতের দিকে তাকিয়ে একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,

” কিছুনা, ওয়াসরুমে আয়না ভেঙ্গে একটু কেটে গেছে।”
” তো ওয়াসরুমে গিয়ে কী যুদ্ধ করছিলি না-কি?”
আদ্রিয়ানের কথা শুনে উপস্থিত সবাই হেসে দিলো। রিক বলল,
” ন_ ভাবি কেমন আছে এখন?”
” এখন একটু ঘুমাচ্ছে। সন্ধ্যায় বাকিরা চলে এলে ডেকে দেব।”
রিক কিছুই বলল না। মাথাটা ধরে যাচ্ছে এখন।বাতাসটাও অসহনীয় হয়ে উঠছে। ওর এখন কী করা উচিত সেটাই বুঝে উঠতে পারছেনা।

সন্ধ্যার পর একে একে আদিব, রাইমা, আশিস। পরে অরুমিতা, তীব্র, স্নেহা সবাই চলে এলো। এলো। অরুমিতা ওরা রিককে দেখে বেশ অবাক হল। অনিমার মুখ কিছুটা শুনেছে ওরা। কিন্তু কিছু বলল না। পরিস্থিতি বিগড়ে দিতে চায়না আপাতত। রিক তেমন কথা বলছেনা চুপচাপ বসে আছে। এতক্ষণে কেবল অনি-আদ্রিয়ানের বিয়ের ঘটনাটা কিভাবে ঘটেছে সেটাই জানতে পেরেছে। অন্যকিছু জানতে চাওয়ার মানসিকতা এখন নেই ওর।

আদ্রিয়ান গিয়ে অনিমাকে ঘুম থেকে তুলে ফ্রেশ করিয়ে নিচে নিয়ে এলো। অনিমা রিককে দেখে আবার ঘাবড়ে গেল। রিক যদি আদ্রিয়ানকে কিছু বলে? আদ্রিয়ান ভুল বুঝবে না-তো ওকে? শুনবেতো ওর কথা? রাইমা উঠে গিয়ে অনিমাকে জড়িয়ে ধরে বিয়ের জন্যে কনগ্রাচুলেট করল। এরপর অনিমাকে নিয়ে ওদের মাঝে বসাল। অনিমা ওখানে বসতেই রিক তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকাল। অনিমা রিকের দিকে তাকাচ্ছেনা ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে ওর। আদ্রিয়ান বলল,

” অনি, তুমি তো অসুস্থ হয়ে পরলে তাই আলাপ করানো হয়নি। ও আমার খালাতো ভাই রিক।”
অনিমা একপলক রিকের দিকে তাকিয়ে একটু হাসার চেষ্টা করে চোখ নামিয়ে নিল। রিক নিজের চোয়াল শক্ত করে রেখেছে। আদ্রিয়ান রিকের কাধে হাত রেখে বলল,
” কীরে? ভাবিকে দেখার জন্যে তো মরে যাচ্ছিলি। এখন চুপ কেন।”
রিক অনিমার দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেই বলল,
” আছিতো এখানেই ঠিক কথা বলে নেব। এখনতো অসুস্থ। চুপচাপ থাকাই ভালো।”

অনিমা শুধু নিচের দিকে হাত কচলে যাচ্ছে। অভ্র জাবিন একে ওপরেই থেকে দশ হাত দূরে থাকার চেষ্টা করছে। তীব্র স্নেহার সেই বিখ্যাত ঝগড়া মাঝেমাঝেই শুরু হচ্ছে। আদিব আর রাইমা নিজেদের মতো বসে টুকটাক কথা বলছে। আশিস কিছুক্ষণ পরপরই কীরকমভাবে দেখছে অরুমিতাকে। যেটা আর কেউ বুঝতে না পারলেও অরুমিতা বুঝতে পারছে। কিন্তু পাত্তা দিচ্ছেনা।

ওর আর এসবে কিছু যায় আসেনা। সারাটা সন্ধ্যা সবার হাসি মজাতেই কেটেছে। শুধু রিক আর অনিমার মধ্যে দুটো আলাদারকম ঝড় বইছিলো। রাতে আদ্রিয়ান নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছিল অনিমাকে। ও অসুস্থ বলে। রিক গা জ্বলে যাচ্ছিল এসব দেখে। পারছিল না সহ্য করতে। এবার ওর অনিমার ওপর রাগ হতে শুরু করল। যুক্তি নেই জেনেও সবকিছু জন্যে ওকেই দোষী মনে হচ্ছে এখন রিকের। এমন মনে হচ্ছে অনিমা ইচ্ছে করে ওদের দুজনের জীবন নিয়েই খেলেছে। ঠিক করে আর খেতে পারলোনা রিক। কোনরকম খেয়ে উঠে পরল।

সবাইকে বিদায় দেওয়ার পর সবাই যে যার রুমে শুতে চলে গেল। প্রচন্ড ক্লান্ত এখন সবাই। আদ্রিয়ান অনিমা এখনও আলাদা রুমেই শোয়। স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন এখনই শুরু করছেনা ওরা। সেটা আদ্রিয়ানের কথাতেই। রুমে যাওয়ার সময় আদ্রিয়ান অনিমাকে একটু ডাকল ওর রুমে। যেটা রিক তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করেছে।

অনিমা আদ্রিয়ানের রুম থেকে থেকে নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল। অন্যমনষ্ক হয়ে কিছু ভেবে চলেছে। কিন্তু সামনে তাকিয়ে রিককে ওর বিছানায় বসে থাকতে দেখে ও চমকে উঠল। রিকের চোখে মুখে ভয়ংকর রাগ। ভয়ও এল প্রচন্ড। ভীত গলায় বলল,
” আপনি?”
রিক উঠে দাঁড়িয়ে একটু হেসে বলল,
” আশা করোনি তাইনা? বিশ্বাস করো, আমিও আশা করিনি। আমি ভাবিও নি তুমি এরকম কিছু করতে পারো। তোমাকে সবার চেয়ে আলাদা মনে হতো। কিন্তু তুমিও তো সেই লোভী মেয়েদের দলে গিয়েই পরলে।”

অনিমা অবাক হয়ে তাকাল। রিকের কথার মানে বুঝে উঠতে পারছেনা। রিক আবার বলল,
” আমার কাছেতো ভালোই ছিলে। কিন্তু আমাকে পরে আর ভালো লাগেনি তাইনা? তাই এখন আমার ভাইয়ের গলায় এসে ঝুলেছে।”

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৩৫

রিকের কথা শুনে অনিমা কেঁদে ফেলল। এরকম কথা কেন বলছে সে? রিক রাগে দুঃখে কী বলছে নিজেও জানেনা। ও চেনে অনিমাকে। তবুও বলছে এসব। রিক অনিমার দুই বাহু ধরে ঝাকিয়ে বলল,
” কাঁদছো কেন? কেন করলে এটা নীলপরী? কী করিনি আমি তোমার জন্যে? তোমার প্রাণ বাঁচিয়েছি, তোমাকে আশ্রয় দিয়েছি, বাবার আপত্তি সত্ত্বেও তোমাকে আগলে রেখেছি। আর তুমি এভাবে চলে এলে?”

অনিমা কান্নাভেজা কন্ঠে বলল,
” ছাড়ুন, আমার লাগছে।”
” আমার প্রশ্নের উত্তর দাও! কেন করলে এটা?”
” আমি কারো প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই। ছাড়ুন।”
রিক আরও জোরে চেপে ধরে বলল,
” একশবার বাধ্য তুমি! আমার জবাব চাই।”

অনিমা এবার একটু রেগে গেল। রিকক ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে রিককে থাপ্পড় মেরে দিল। রিক অবাক তাকাল অনিমার দিকে। অনিমা হাফানো কন্ঠে বলল,
” আমি কী করেছি, কেন করেছি; সেটা সবচেয়ে ভালো আপনি জানেন। জেনে শুনে ন্যাকামো করছেন? সেটাইতো হয়েছিল না যেটা আপনি চেয়েছেন? না-কি আজ আমি এখনও বেঁচে আছি বলে আপনার রাগ হচ্ছে, আফসোস হচ্ছে।”
রিক হতভম্ব হয়ে গেল। অনিমার কথার মানে বুঝতে পারল না ও। যেখানে ওর অভিযোগ করার কথা সেখানে উল্টে অনিমা অভিযোগ করছে ওকে নিয়ে? কী করেছে ও?

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৩৭