বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৪১

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৪১
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

আবরার মেনশনে পৌছাতে পৌছাতে রাত হল অনিমাদের। অনিমা বড় সোফার একপাশে বসে আছে, আর রিমা আবারার সুন্দর করে খাইয়ে দিচ্ছে ওকে। এতোটা জার্নি করে এসে কেউই তেমন কিছু খেতে পারবেনা তাই আহামরি কিছু রান্না করেনি। অনিমা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে ওনাকে। প্রথম দিনে যদিও কিছু বোঝা যায় না। তবে আসতেই ওকে সাদরে বুকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন উনি। এখন কেমন পরম মমতায় খাইয়ে দিচ্ছে।

মায়ের ভালোবাসা পায়নি ও কখনও। তাই এই প্রথম মাতৃস্নেহ পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পরছে ও। তারওপর আসার পর থেকেই মানিক আবরারের এতো স্নেহ ওকে ওর আব্বুর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। খুব কান্না পাচ্ছে। কিন্তু অনেক কষ্টে নিজের কান্না আটকে রেখেছে। আদ্রিয়ান সিঙ্গেল সোফায় গালে হাত দিয়ে বসে দেখছিল নিজের মা আর বউকে। বউ-শাশুড়ি নয় একদম মা-মেয়ের মত লাগছে দুজনকে। দেখেই চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে ওর। কিন্তু অনিমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ওপরপাশে সোফায় বসে থাকা মানিক আবরারের উদ্দেশ্যে বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” দেখেছ বাবা? দেখ! তোমার বউকে দেখ। এতোদিন ফোন করে কবে আসব? কবে আসব? করে কান পঁচিয়ে ফেলছিল। আর আজ যখন আমি এলামই তখন উনি কী করল? না তুমিই দেখ? কী করল টা কী? বউমাকে বসিয়ে বসিয়ে আদর করে খাওয়াচ্ছে। আমার দিকে তাকানোর সময় আছে ওনার? নেই, একদম নেই।”

অনিমার মন খারাপ সব কেটে গিয়ে একটু হাসি পেল আদ্রিয়ানের কথায়। কেমন বাচ্চা বাচ্চা কথা তাঁর। মানিক আবরারও হাসছেন। মিসেস রিমা একটু রাগী গলায় বললেন,
” একদম চুপ থাক তুই। হিংসুটে একটা।”
আদ্রিয়ান অবাক হওয়ার ভান করে বলল,
” সত্যি কথা বললেও আজকাল হিংসুটে ট্যাগ গায়ে লেগে যায়! দেখ বাবা কী দিনকাল পরল।”
মানিক আবরার হাসতে হাসতে বললেন,
” তোর গায়ে তো শুধু হিংসুটে ট্যাগ লেগেছে। আমার দিনে কতবার কতরকম ট্যাগ লাগে সেটা তো জানিস না।”

আদ্রিয়ান অনেকটা উৎসাহ নিয়ে নড়েচড়ে বসে বলল,
” আরিব্বাস! কী কী ট্যাগ বলোতো?”
মিসেস রিমা, মানিক আবরারের দিকে কটমটে চোখে তাকাতেই উনি একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,
” থাক বাপ, ঘরের কথা ঘরেই থাক। দিন শেষে তো আবার আমাকে ঘরেই ফিরতে হবে। তাই রিস্ক বাড়াবোনা।”

বলে কয়েকসেকেন্ড চুপ থেকে দুজনেই অট্টহাসিতে ফেটে পরল। অনিমা অবাক দৃষ্টিতে দেখছে ওনাদের। ওনারা সত্যি সত্যি বাবা-মা আর ছেলে? সত্যিই ওনারা অন্যরকম। তাইতো আদ্রিয়ানও এতোটা আলাদা তৈরী হয়েছে। মিসেস লিমা রাগান্বিত কন্ঠে বললেন,
” বাপ বেটা দুটোই ফাজিলের হাড্ডি হয়েছে। ভেবেছিলাম ছেলেটা আমার কিছু গুন পাবে। কিন্তু না শুধু আমার চেহারাটাই পেয়েছে। দেখতেই শুধু মনে হয় আমি পেটে ধরেছি। কিন্তু স্বভাব। স্বভাব পুরোটাই বাপের মত। অনি ভালোকরে শুনে রাখ। তোকে প্রথম প্রথমই বলে রাখছি একদম ছাড় দিবিনা। শুরু থেকেই টাইট দিয়ে রাখবি। নইলে মাথায় উঠে নাচবে।”

অনিমা বেশ অবাক হয়ে তাকাল নিজের শাশুড়ির দিকে। ও এতোদিন মনে করত আদ্রিয়ানই শুধু অদ্ভুত। কিন্তু এখনতো দেখছে না, ওর গোটা পরিবারটাই অদ্ভুত। এমনও হয়? আদ্রিয়ান অবাক হয়ে নিজের মায়ের দিকে তাকিয়ে থেকে উঠে মানিক আবরারের সোফার হ্যান্ডেলের ওপর গিয়ে বসে ফিসফিসিয়ে বলল,

” বাবা, তোমার সিরিয়াল প্রেমি বউটা সারাদিন সিরিয়াল দেখে শেখেটা কী? মানে সিরিয়ালের মায়েদের মত কোথায় ছেলেকে চোখে হারাবে, যত দোষই করুক সব আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখবে। তা-না, উল্টে আমারই সামনে, আমারই বউকে, আমাকেই টাইট দিয়ে রাখার টেকনিক শেখাচ্ছে। আনবিলিভএবল!”
মানিক আবরার হেসে দাঁতে দাঁত চেপে নিচু গলায় বলল,
” সেটা আমি জানি, এতবছরের সংসার করেছিতো। এবার চুপ কর নইলে দুজনের মাথাতেই গ্লাস ভাঙবে। বেশ রেগে আছে।”

আদ্রিয়ান গলা ঝেড়ে সোজা হয়ে বসল। তারপর ইনোসেন্ট একটা হাসি দিয়ে বলল,
” ওওও মা।”
মিসেস রিমা আবারও রেগে বললেন,

” একদম ঢং করতে আসবি না। তুই জানিস তোর ঐ ডাকেই আমি গলে যাই। তাই খবরদার বলছি একদম ট্রায় করবিনা। আমি এখন তোর ওপর রেগে থাকতে চাইছি। বিয়ে করলি অথচ সেটা আমাদের তোকে ফোন করে জানতে হল? এমন মিষ্টি একটা মেয়ে! কী ভেবেছিলি সত্যি সত্যি তিন-চারটা বাচ্চার বাপ হয়ে তারপর এসে বলবি যে, মা আমি বিয়ে করে ফেলেছি, এই নাও তোমার নাতি-নাতনি। বাদর ছেলে।”
অনিমা লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে। এভাবে বাচ্চার কথা তোলার কী দরকার ছিল? এভাবে সবার সামনে বাচ্চার কথা তুললে ওর লজ্জা করেনা বুঝি? আদ্রিয়ান মুখ ছোট করে বলল,

” এভাবে বলছ কেন? আমি বলতাম তোমাদের। কিন্তু তার আগেই ফোন করে ফেললে। সত্যিই বলছি।”
মিসেস রিমা তবুও মুখ গোমড়া করে বসে আছেন। আদ্রিয়ান এবার পেছন থেকে ভালোবাসার সাথে নিজের মাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
” আমার মিষ্টি মা। রাগ করোনা প্লিজ। চারটা কেন? তিন চারে বারোটা নাতি-নাতনি গিফ্ট করব তোমাকে। তবুও হাসো। প্লিজ স্মাইল…”
বলে ওনার গালে চুমু দিলো। মিসেস রিমা আর পারলেন না হেসে দিলেন। মানিক আবরারও হাসলেন। আদ্রিয়ান অনিমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে চোখ মারল। অনিমাতো লজ্জায় পুরো গুটিয়ে গেছে। উঠে যেতেও পারছেনা। ওর মত অসহায় একটা মেয়েকে বারবার এভাবে লজ্জায় ফেলার কোন মানে হয়? ইশ! কী লজ্জার ব্যাপার।

রাতে বসে শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল অরুমিতা। শুতে যাবে এমন সময় ফোন বেজে উঠল। নাম্বারটা সেভ করি নেই। কিন্তু চিনতে একটুও অসুবিধা হলোনা ওর। কপাল কুচকে এলো ওর। একরাশ বিরক্তি নিয়ে ফোন কেটে শুতে নিলেই আবার বেজে উঠল। ও আর ফোন ধরল না। কিন্তু ফোন বেজেই চলেছ। অরুমিতার এবার বেশ রাগ হচ্ছে। রাগ নিয়েই উঠে ফোনটা রিসিভ করে বলল,

” কে বলছেন?”
” আমি আশিস।”
” কী চাই?”
” তোমাকে ফোন করেছি নিশ্চয়ই তোমাকেই চাই।”
অরুমিতা চোখ বন্ধ করে একটা শ্বাস নিয়ে আগে নিজেকে সামলে নিল। তারপর বলল,
” হঠাৎ তিনবছর পর আমাকে এতো কী প্রয়োজন পরল যে এতো মেসেজে, কল করছেন? হঠাৎ মনে পরল কীকরে?”

আশিস চুপ হয়ে গেল। সত্যিই তো, এই তিন বছরে অরুমিতাকে মনে পরলেও কথা বলতে ইচ্ছে হয়নি। এতো টান অনুভব করেনি। কিন্তু হঠাৎ আবার ওকে দেখার পর এমন কেন হচ্ছে? কেন বারবার কথা বলতে ইচ্ছা করছে? কেন? কিছুক্ষণ চুপ থেকে ও বলল,
” আমরা কী আজকাল নরমালি কথাটাও বলতে পারিনা অরুমিতা?”
” আমাদের সম্পর্কটা কী নরমালি কথা বলার মত কোন জায়গায় আছে মিস্টার আশিস?”
আশিস হালকা হেসে বলল,

” সত্যি পাল্টে গেছো।”
উত্তরে অরুমিতাও তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল,
” সে অধিকার শুধু আপনার নেই।”
” অরুমিতা আমি..”
অরুমিতা আশিসকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
” আপনার কী জরুরি কিছু বলা আছে?”
আশিস বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
” না।”
” তাহলে রাখছি।”

বলে অরুমিতা আশিসকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দিল। তিনবছর আগে যখন ওদের সম্পর্কটা শুরু হয় সবকিছুই অন্যরকম লাগত অরুমিতার কাছে। এতো ভালোলাগা এর আগে ওর লাইফে আসেনি। রাত জেগে কথা বলা, ছোটখাটো খুনশুটি, আশিসের কেয়ারিং, এতো ভালোবাসা সবকিছুই স্বপ্নের মত লাগছিল। ওর কিশোরী মন তখন স্বপ্নের রাজ্যে ভাসছিল। সবকিছু ঠিকই চলছিল। কিন্তু ছয়মাস পর হঠাৎই সব এলোমেলো হয়ে গেল। স্বপ্নগুলো নিমেষেই ভেঙ্গে গুড়িয়ে গেল। কথাগুলো ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘুমানোর চেষ্টা করল অরুমিতা।

মোটামুটি বড় আকারের ডুপ্লেক্স একটা বাড়ি। বিশাল নকশা করা লোহার গেইট হতে বাড়ির সদর দরজার ছোট সিঁড়ি অবধি রয়েছে সাত ফুট চওড়া ইট দিয়ে তৈরী রাস্তা। রাস্তাটার ডানপাশটা পুরোটাই ফাঁকা বিশাল একটা মাঠের মতন তার পাশ ঘেষে বাউন্ডারির দেয়াল ঘেষে বড় বড় গাছ আছে। অপরপাশে একটু দূরেই খুব সুন্দর বাগান। বাড়িটার পেছনে সুইমিং পুল আছে। অনিমা হাটতে হাটতে সবটাই দেখছে।

সত্যিই খুব সুন্দর করে সাজানো সব। হাটতে হাটতে ও পেছনের সুইমিং পুলে গিয়ে দাঁড়াল। পায় দুই ঘন্টা হল ও বাইরে আছে। কেমন একটা লাগছে ওর। আজ এখানে রিকের আসার কথা। এসেও গেছে নিশ্চয়ই এতক্ষণে। পৃথিবীতে এতো মানুষ থাকতে রিককেই আদ্রিয়ানের ভাই হতে হল? দুহাত বুকের ওপর ভাজ করে সুইমিং পুলে নিজের প্রতিবিম্ব দেখতে দেখতে এটাই ভাবছে অনিমা। হঠাৎ মাথায় কেউ টোকা দিতে পেছনে তাকিয়ে দেখল আদ্রিয়ান। অনিমা কিছু না বলে আবার পানির দিকে তাকাল। আদ্রিয়ান ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,

” কী ভাবছ?”
” কিছুনা।”
” হুমম সকাল থেকেই বেগম সাহেবার মুড অফ দেখছি। কিছুতো হয়েছে?”
” কিছুই হয়নি।”
আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
” আচ্ছা তোমাদের ঐ নিউ ইয়াং প্রফেসর। কী জেনো নাম?
অনিমা একটু ভাবুক হয়ে বলল,

” অয়নদ্বীপ স্যার?”
” হ্যাঁ উনিই। উনি কিন্তু তোমার বান্ধবীর ওপর হেব্বি ক্রাশ খেয়েছে।”
অনিমা বেশ অনেকটা অবাক হয়ে আদ্রিয়ানের দিকে ঘুরে বলল,
” অরুর ওপর?”
” জি ম্যাডাম।”
” কিন্তু সেটা আপনি কীকরে জানলেন?”

আদ্রিয়ান অনিমার কোমর ধরে কাছে টেনে অবাক কন্ঠে বলল,
” আমার বউয়ের বেঞ্চের দিকে ওভাবে তাকিয়ে থাকবে আর আমি খোঁজ না নিয়েই ঐ ব্যাটাকে ছেড়ে দেব? কী ভাবো আমাকে তুমি?”
অনিমা একটা হতাশ নিশ্বাস ফেলে পরে হেসে দিয়ে বলল,
” অরুর সাথে স্যারের কিছু হলে ভালোই হবে বলুন?”
আদ্রিয়ান কিছু বলবে তার আগেই গলা ঝাড়ার আওয়াজে দুজনেই দুজনকে ছেড়ে দাঁড়াল। তাকিয়ে দেখল রিক দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিয়ান হেসে বলল,

” ও তুই? এখানে এলি যে?”
রিক তীক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে ছিল এতক্ষণ। কিন্তু আদ্রিয়ানের প্রশ্নে মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,
” খালামনি ডাকছে। খাবার বাড়া হয়েছে।”
এরপর অনিমার দিকে তাকিয়ে বলল,
” কী ব্যাপার ভাবি? সেই কখন এসছি অথচ আপনার দেখাও পেলাম না। এভাবে পালিয়ে বেড়ানোটা কী ঠিক?”
অনিমা একটা শুকনো ঢোক গিলল। রিককে কেন জানি খুব বেশি ভয় লাগছে ওর। আদ্রিয়ান অনিমার হাত ধরে রিককে বলল,
” চল ডায়নিং এ চল।”

বড় মাপের ডায়নিং টেবিল জুড়ে বিভিন্ন রকমের খাবার রাখা। পোলাও, মালাই চিকেন, চিকেন রোস্ট, চিংড়ি মাছের মালইকারী, পায়েস, মিষ্টি আরও বেশ কয়েকপদ। আবরার মেনশনে সবাই একসাথে খেতে বসেছে। জাবিন বারবার আড়চোখে অভ্রকে দেখছে। ছেলেটার প্রতি খুব বেশি বিরক্ত ইদানীং ও। আসার সময় দরকার ছাড়া কোন কথা বলেনি ওর সাথে। এরকম কেন ছেলেটা? যদিও ওর কিছুই যায়-আসার কথা না। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে ততবেশি যায়-আসছে ওর। কেন এমন হচ্ছে নিজেও জানেনা। মিসেস রিমা অনিমাকে বেড়ে বেড়ে খাওয়াচ্ছে।

অনিমা এতো খাবেনা বলছে তবুও জোর করে খাওয়াচ্ছে। আদ্রিয়ান আর রিক দুজনেই বোকার মত তাকিয়ে আছে আর হতাশ দৃষ্টিতে দেখছে একে ওপরকে। ওরাও কতদিন পর এলো। অথচ ওদের ভ্যালুই নেই! এই নিয়ে একদফা হাসাহাসিও হল পরে।

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৪০

রাতে অনিমা মিসেস রিমার সাথে গল্প শেষে জাবিনের রুমে শুতে যাচ্ছে। আদ্রিয়ানের সাথে এখানেও এক রুমে থাকছেনা ও। আসলে আদ্রিয়ানই চায়না। ও চায়না আপাতত স্বামী স্ত্রীর মত থাকতে। কিন্তু কেন চায়না সেটা কেউ জানেনা। অনিমাও কিছু বলেনি। এতে ওরও আপাতত বিশেষ কোন সমস্যা নেই। শুধু মাঝেমাঝে ইচ্ছে হয় একটু, এই যা। কিন্তু করিডর দিয়ে হাটার সময় হঠাৎই কেউ ওর হাত টেনে ধরে দেয়ালে মিশিয়ে দুই বাহু চেপে ধরল। অনিমা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখল রিক রক্তিম চোখে তাকিয়ে আছে। ও অবাক হয়ে বলল,

” অাপনি? কী করছেন? ছাড়ুন আমায়।”
রিক রাগে গজগজ করে বলল,
” তুমি জানোনা কী করছি? রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে আমার। সহ্য করতে পারছিনা আমি এসব। আদ্রিয়ান তোমার এতো ঘনিষ্ঠতা, কাছে আসা, এতো প্রেম সহ্য হচ্ছেনা আমার। চেষ্টা করছি সবটা মানতে কিন্তু পারছিনা। পারছিনা আমি। কী করব বল? টেল মি ড্যাম ইট!”
অনিমা প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেছে রিকের আচরণে। কেঁদে ফেলেছে ও। কাঁপাকাঁপা গলায় বলল,

” কী বলছেন এসব?”
রিক ওকে ঝাড়া দিয়ে ছেড়ে বলল,
” বুঝতে পারছোনা কী বলছি। বুঝতে পারোনা আমি ভালোবাসি তোমাকে? আই লাভ ইউ ড্যাম ইট।”
অনিমা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল রিকের দিকে। রিক ওকে ভালোবাসে? কই আগেতো বলেনি? ও তো জানতো ও রিকের জেদ শুধুমাত্র। তাহলে? হঠাৎ কেউ বলে উঠল,
” কী করছিস তোরা এখানে?”
আওয়াজ শুনে রিক অার অনিমা দুজনেই ঘুরে তাকাল। তাকিয়ে দেখে আদ্রিয়ান হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে।

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৪২