বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৫৮

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৫৮
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

আদ্রিয়ান একদম গম্ভীর মুখে বসে আছে গাড়ির স্টেয়ারিং ধরে। আর অনিমা পাশের সিটে মুখ কাচুমাচু করে বসে আছে। কিছুক্ষণ পরপর আদ্রিয়ানের দিকে তাকাচ্ছে আর শুকনো ঢোক গিলছে। আজ বিকেলে একটু ঘুরতে বেড়িয়েছিল অরুমিতা, তীব্র, স্নেহা তিনজনের সাথে। কিন্তু রেস্টুরেন্ট থেকে বেড় হওয়ার সময় একটা ছেলে অনিমার সামনে সোজা হাঁটু ভেঙ্গে বসে প্রপোজ করে বসে। অনিমা কিছু সময়ের জন্যে ব্লাঙ্ক হয়ে গেছিল পুরো। তীব্র, স্নেহা, অরুমিতা তিনজনই প্রচন্ড শকড ছিলো এই ঘটনায়।

আর কপাল গুনে আদ্রিয়ানও ওকে পিক করার জন্যে তখনই ওখানে এসেছিল। আর এসেই এই দৃশ্য। যদিও অনিমা সাথেসাথেই রিজেক্ট করে দিয়ে চলে এসছে। কিন্তু সামনে এগিয়ে আদ্রিয়ানকে দেখে ওর গলা শুকিয়ে গেছিল একদম। কারণ আদ্রিয়ানের চোখে-মুখে স্পষ্ট রাগ ছিলো। অনিমা এটাই বুঝতে পারছেনা ঐ উটকো ছেলেটা কোথা থেকে এসে জুটলো! ও কী জানেনা অনিমা কার বউ? না জানার কথা কী? যারা মিডিয়া জগতের সাথে একটু এটাচড তাদের অনেকেরই জানার কথা। যদিও শুধুমাত্র ওদের বিয়ের দিনটাতেই অনিমাকে নিয়ে আর্টিকেলস বেরিয়ে ছিল, এরপর আর বের হয়নি। তাই হুটহাট দেখে নাও চিনতে পারে। কিন্তু তাই বলে এমন কাজ করবে? আর করল তো, করলো একদম সিংহের সামনেই করল! কী ভয়াবহ ব্যাপার! আদ্রিয়ান বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” ছেলেটা কে?”
অনিমা মাথা নিচু করে ইতস্তত করে বলল,
” চিনিনা তো!”
আদ্রিয়ান স্টেয়ারিং এ জোরে একটা আঘাত করে বলল,
” অপরিচিত একটা ছেলে তোমাকে প্রপোজ কেন করবে? তাও হাঁটু ভেঙ্গে বসে? ফিল্মি স্টাইলে? হুয়াই? ঐ স্টুপিড জানেনা তুমি আমার ওয়াইফ? মিসেস আদ্রিয়ান আবরার।”
অনিমার নিজেরও এবার একটু রাগ লাগল। সবসময় সব রাগ ওর ওপর ঝাড়ার কোন মানে হয়না। ও কী আদ্রিয়ানের রাগের স্টোর রুম নাকি? আজব! অনিমাও এবার কপট রাগ দেখিয়ে বলল,

” হয়তো জানে! কিন্তু এটা জানেনা যে আমি একটা মাফিয়ার বউ। তার গ্যাং এর লিডার। জানলে ভুল করেও করতোনা। আর তাছাড়াও বউতো থাকবোনা। আমি তো বলেছিলাম আপনাকে ডিভোর্স দেবো। সোজা ডিভোর্স!”
আদ্রিয়ান অনেকটা ক্ষিপ্ত চোখে তাকাল অনিমার দিকে। তারপল দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
” দেওয়াচ্ছি ডিভোর্স!”
বলে পকেট থেকে ফোন বের করে কাউকে একটা ফোন দি অনিমা চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টায় আছে যে ঠিক কী হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর ওপাশ থেকে ফোন ধরতেই আদ্রিয়ান বলল,
” এক্ষুনি মাকে নিয়ে সিনিয়রের বাড়িতে চলে এসো। এক্ষুনি মানে, এক্ষুনি!!”
এরপর বেশ রেগেই গাড়ি স্টার্ট দিলো। অনিমা পুরো বোকা বনে গেছে। এই ছেলে করতে কী চাইছে?

অনিমাদের বাড়ির সকলেই বেশ অস্বস্তিকর অবস্থায় বসে আছে। অনিমা বাড়ি ফিরে দেখে মানিক আবরার, মিসেস রিমা দুজনেই এসছেন। ওর বাবাও গম্ভীর মুখে বসে আছেন। আদিব, আশিস, রিক, নাহিদ চারজন একই স্টাইলে হাত ভাজ করে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আদ্রিয়ান এসে সোজা বলে বসল যে ও এই সপ্তাহের মধ্যেই ওদের বিয়ের অনুষ্ঠানটা সেড়ে অনিমাকে নিয়ে যেতে চায়। হাসান কোতয়াল বললেন,

” দেখো, সবেতো পরীক্ষা শেষ হলো। তারওপর এখন আবার ঝড়-বৃষ্__”
কিন্তু তাঁকে কথা শেষ করতে না দিয়েই আদ্রিয়ান শক্ত গলায় বলল,
” আমি আর কোন কথা শুনবোনা। তোমার কথা শুনে অলরেডি এতোগুলো মাস দেবদাস হয়ে কাটিয়ে দিয়েছি আর পারবোনা। ইদানীং আবার তোমার মেয়ের পাখনা গজিয়ে যাচ্ছে। সো তুমি এখন রাজি না হলে আমি কিন্তু এ বাড়ি থেকে নড়ছিনা। যতদিন রাজি না হবে আমি এখানেই আছি! এক কথায় ঘরজামাই। এবার ডিসিশন ইজ ইউরস।”

সবাই বোকার মত তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ানের দিকে। অনিমার তো লজ্জায় একদম মাটির নিচে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে। সবার সামনে কী শুরু করে দিলো এই ছেলে? রিক ওরা সবাই মিটমিটিয়ে হাসছে আর মজা নিচ্ছে। কেউ কোনভাবেই আদ্রিয়ানকে বোঝাতে পারল না। সে তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। তাই আদ্রিয়ানের জেদের কাছে হার মানে। হাসান কোতয়াল আর মানিক আঙ্কেল মিলে সামনের শুক্রবারই ওদের বিয়ের দিন ঠিক করে সবকিছু পাকা করল। বিয়ের দিন ঠিক হতেই ওদের মধ্যে আনন্দের হৈ হুল্লোড় পরে গেল।

অনিমা ওখান থেকে সরে সোজা ছাদে চলে এলো। ছাদে এসে রেলিং ধরে জোরে জোরে কয়েকটা শ্বাস নিলো। কী কান্ডটাই না করল আদ্রিয়ান! এরকম বাচ্চামো করার কোন মানে হয়? পাগল একটা। চারপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার। মনে হচ্ছে বৃষ্টি হবে এখন আবার। আকাশের দিকে তাকিয়ে এসব ভাবতে ভাবতে কেউ একজন হ্যাঁচকা টানে ওকে নিজের দিকে টেনে শক্ত করে কোমর জড়িয়ে ধরল। অনিমা না দেখেও জানে এটা কে। তাই বিরক্তি নিয়ে আদ্রিয়ানের মুখের দিকে তাকাল। আদ্রিয়ান ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে ভ্রু নাচিয়ে বলল,

” কী যেন বলছিলে? ডিভোর্স দেবে? এবার দিয়ে দেখাও? আর এক সপ্তাহ। এরপর সোজা আমার ঘরে নিয়ে যাচ্ছি।”
অনিমা একটা ভেংচি কেটে বলল,
” চিন্তা করবেন না। বিয়ের আগে ঠিক পালিয়ে যাবো। দেখি কীকরে নিয়ে যান।”
” যদি পালানোর অপশনই না রাখি তাহলে?”
” কী করবেন?”

আদ্রিয়ান অনিমার একদম কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
” এখনতো জাস্ট ফরমালিটি করে অনুষ্ঠান করা সবে। আমাদের আসল বিয়ে তো হয়ে গেছে। তো এখন আমি কিছু করলেও সেটা অন্যায় হবে না। রাইট?”
কথাটা শোনার সাথেসাথেই অনিমা কেঁপে উঠল। এতক্ষণ শান্ত থাকলেও এবার নড়চড়া শুরু করে দিলো। সাথেসাথে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টিও শুরু হল। আদ্রিয়ান আরেকটু শক্ত করে অনিমার কোমর জড়িয়ে ধরে বলল,

” এতো ছটফট করছো কেন বেবি? হাজবেন্ড হই আমি তোমার? খুব শখ ডিভোর্স দেওয়ার তাইনা?”
বৃষ্টির বেগ এতোটাই বেশি ছিলো যে ওরা একদম ভিজে গেছে। বেশ ঠান্ডা জল। তারওপর আদ্রিয়ানের এমন স্পর্শ। অনিমা একরাশ অস্বস্তি নিয়ে বলল,
” দেখুন ভিজে যাচ্ছি আমরা। প্লিজ ছাড়ুন না।”
আদ্রিয়ান যেন অনিমার কথা শুনতেই পায়নি। একদম মোহনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অনিমার দিকে। অনিমার কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলল,
” বর্ষণ হোক না। ক্ষতি কী?”
” আমি কি__”

আর কিছু বলার আগেই অনিমা চুপ করে গেল। কারণ আদ্রিয়ান অনিমার কথা বলার উপায়ই রাখেনি। কয়েকসেকেন্ড পাথরের মত দাঁড়িয়ে থেকে আবেশে ধীর গতিতে চোখ বন্ধ করে ফেলল ও। এরকম স্পর্শের সাথে অনিমা প্রথমবার পরিচিত হল তাই সমস্ত শরীর জুড়ে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে ওর। বেশ অনেকটা সময় পর আদ্রিয়ান অনিমাকে ছাড়লো। বৃষ্টির শব্দের সাথে দুজনের ভারী নিশ্বাসের শব্দও আসছে। অনিমা এখনও চোখ খোলেনি। আদ্রিয়ান অনিমার কপালে কপাল ঠেকিয়ে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বলল,

” তুমি যতো দূরে সরতে চাইবে। আমি ঠিক ততটাই কাছে টেনে নেব। তুমি দূরে যেতে চাইলেও আমি যেতে দেবোনা জানপাখি।”
অনিমা আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকাল আদ্রিয়ানের দিকে। দুজনের দৃষ্টিই দুজনের চোখের দিকে। একে ওপরের দৃষ্টির গভীরতায় হারিয়ে যাচ্ছে ওরা। অনেকটা সময় এভাবে দৃষ্টি বিনিময়ের পরে অনিমা ধীর কন্ঠে বলল,
” আই লাভ ইউ।”

এই তিনটে শব্দ শোনার সাথেসাথেই আদ্রিয়ানের সমস্ত শরীর কেঁপে উঠল। অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল অনিমার দিকে। কিন্তু আদ্রিয়ানকে এতো অল্প অবাক করে অনিমা যেনো তৃপ্তি পেলোনা। তাই একটা অসম্ভব কাজ করে বসল। আদ্রিয়ানের গালে হাত রেখে পা উঁচু করে আদ্রিয়ানের গালে গভীর এক কিস করে বসল। আদ্রিয়ান চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে অনিমার দিকে। অনিমা হঠাৎ করেই আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরল। আসলে এমন কান্ড করেছে যে আদ্রিয়ানের দিকে তাকাতেও লজ্জা করছে এখন। পারলে এখন আদ্রিয়ানের বুকের মধ্যে ঢুকে যেতো ও। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আদ্রিয়ান হেসে ফেলল। অনিমাকে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল, নিজেকে আজ পূর্ণ মনে হচ্ছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে ফিসফিসে আওয়াজে বলল,
” ধন্যবাদ বর্ষণের রাত।”

বিয়ের বিভিন্ন আয়োজন করতে করতে দেখতে দেখতেই এক সপ্তাহ কেটে গেল। আজ অনিমা আর আদ্রিয়ান দুজনেরই হলুদ সন্ধ্যা। আদ্রিয়ানের হলুদের ব্যবস্হা আদ্রিয়ানদের বাড়িতে আর অনিমার হলুদের ব্যবস্হা অনিমার বাড়িতেই করা হয়েছে। দুই বারেই চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছে। রাত হয়ে গেছে। হরেক রকম লাইটিং এর আলোতে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। এতোবড় একজন সেলিব্রিটির বিয়ে এরকমটাই স্বাভাবিক।

অনিমাকে বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। হলুদ শাড়ি, গায়ে বিভিন্ন কাঁচা ফুলের হালকা গয়না দিয়ে সাজিয়েছে ওকে। যেগুলো আদ্রিয়ান নিজে পছন্দ করে কিনে লোক দিয়ে নিজের পছন্দ মতো ডিজাইন করে বানিয়েছে। বেশি মেকআপ করানো হয়নি। ওপাশে আদ্রিয়ানের হলুদ হচ্ছে তার মধ্যেই ও অরুমিতা আর স্নেহাকে ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছে কীভাবে অনিমাকে সাজাবে। এটা নিয়ে দুপাশ থেকেই দু দলের হাসির শেষ নেই। আদিব, রিক ওরা একটু পরপরই এইজন্য আদ্রিয়ানকে পঁচাচ্ছে এজন্য। আর এপাশ থেকে স্নেহা আর অরুমিতা দাঁত বের করে করে হাসছে।

অনিমা শুধু অসহায়ের মতো বসে বসে দেখছে এদের পাগলামো আর একটু পরপর লজ্জায় লাল হচ্ছে। ও বাড়িতে আদ্রিয়ানের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ করে রিক, স্নিগ্ধা, আদিব, রাইমা, অভ্র, জাবিন, আশিস, নাহিদ, তনয়া আরও আদ্রিয়ানদের পরিচিত ইয়াং সকলের গিফটস, হলুদ আরও বিভিন্ন জিনিস নিয়ে এসছে। সব রেখে অনিমার সাথে দেখা করার জন্যে ওর রুমে এসে দেখে। স্নেহা আর অরুমিতা অনিমার হাতে মেহেদি পরাচ্ছে।

তীব্র কাজে ব্যস্ত। রিকের দৃষ্টি অনিমার ওপর পরতেই কয়েকসেকেন্ড তাকিয়ে রইল ও। খুব সুন্দর লাগছে আজ মেয়েটাকে। বুকের মধ্যে কোথাও একটা কষ্ট হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এটাও খেয়াল করল যে কোন আফসোস বা হিংসে হচ্ছেনা ওর। বরং ওর নীলপরীর মুখে সুখের ঐ হাসি দেখে মনে হচ্ছে, ব্যস এটুকুই তো চাই। অনিমার দৃষ্টি রিকের ওপর পরতেই অনিমা মুচকি এক হাসি দিল। রিক এগিয়ে গিয়ে বিছানায় বসে অনিমার দিকে তাকিয়ে বলল,

” বেশ সুন্দর লাগছে কিন্তু, ভাবিজান।”
অনিমা অনেকটা দুষ্টুমির ছলেই বলল,
” কেনো? এমনিতে সুন্দর লাগেনা?”
” নাহ! কালো পেত্নীর মতো লাগে। আদ্রিয়ানের চোখে নিশ্চয়ই ডিফেক্ট আছে। তাই তোমাকে এতো পছন্দ হয়েছে।”
অনিমা একটা বালিশ ছুড়ে মারল রিকের মুখের ওপর। রিক বালিশটা ধরে শব্দ করে হেসে ফেলল। কিছুক্ষণ মুখ ফুলিয়ে তাকিয়ে থেকে শেষে অনিমাও হেসে ফেলল।

হলুদের প্রোগাম শেষ হতে হতে বেশ রাত হয়ে গেল। অনিমা বেশ ক্লান্ত হয়েই ঢূকলো নিজের রুমে। অনেকটাই ধকল গেছে আজ ওর। বিয়ে করতেও যে এতো ঝামেলা সেটা জানতোনা। জানলেই বা কী? করতে তো হতোই! রুমে ঢুকে লাইট অন করার সাথেসাথেই আদ্রিয়ান টেনে ওকে দেয়ালের সাথে আটকে ধরে ফেলল। অনিমা অবাক চোখে তাকিয়ে রইল আদ্রিয়ানের দিকে। হঠাৎ আক্রমণে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আদ্রিয়ানের ঠোঁটে মুচকি হাসি ঝুলে আছে। দু গালে, কপালে, গলায় হলুদ লাগানো, চুলগুলোও আচড়ায় নি, স্যান্ডো গেঞ্জি আর জিন্স পরেই চলে এসছে। অনিমা জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বলল,

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৫৭

” আপনি? আপনি এখানে কী করে এলেন?”
” বাহ রে! আমার বউয়ের হলুদে সবাই হলুদ লাগাবে আর আমি লাগাবোনা? সেটা হয় না-কি?”
অনিমা অবাক হয়ে বলল,
” আপনি এখানে আমায় হলুদ লাগাতে এসছেন? কেউ দেখেনি তো? দেখে ফেললে কী হবে? এমনিতেই সাজানোর সময় যে কান্ড করেছেন লজ্জায় মাথা তোলা দ্বায় হচ্ছিল আমার।”
আদ্রিয়ান হেসে বলল,

” আরে কুল মাই ডিয়ার ওয়াইফ। ব্যালকনি দিয়ে এসছি। মই!”
অনিমা বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে রইল আদ্রিয়ানের দিকে। এই ছেলে ব্যালকনি টপকাতে একদম ওস্তাদ। অনিমা এসব ভাবতে ভাবতেই আদ্রিয়ান ওর নিজের হলুদ মাখা গাল অনিমার হলুদ মাখা গালে ঘষে দিলো। শুধু গাল, গলা পুরোটাতেই দুজনের হলুদ মিলেমিশে একাকার করে তবেই ছাড়ল। এরপর অনিমার কপালে একটা চুমু দিয়ে কানের কাছে ঠোঁট নিয়ে বলল,

” দ্রুত ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পরো। বেশিক্ষণ শাওয়ার নেবেনা কিন্তু। ঠান্ডা লাগবে। বাকি কথা কাল হবে। বাসর রাতে!”
বলে অনিমাকে একটা মোহনীয় হাসি উপহার দিয়ে আবারও ব্যালকনি দিয়েই চলে গেল আদ্রিয়ান। অনিমা বোকার মত তাকিয়ে রইল আদ্রিয়ানের যাওয়ার দিকে। ওর কানে শুধু আদ্রিয়ানের বলা শেষ বাক্যটাই বাজছে। উফ! কী ভয়ংকর!

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৫৯