বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৬০

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৬০
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

খুব বেশি ক্লান্ত থাকায় শুয়ে পরার সাথেসাথেই বেশ গভীরভাবেই ঘুমিয়ে পরেছিল অনিমা। গতরাতেও হলুদ, নাচ-গান সব প্রোগ্রাম শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে গেছিল, তারসাথে আজ সারাদিনের ধকল। সাড়ে ন’টার পরে মিসেস রিমা প্লেটে করে খাবার নিয়ে এল অনিমার জন্যে। অনিমাকে পরপর তিনবার ডাকার পর ও পিটপিটে চোখে তাকাল। মিসেস রিমাকে বসে থাকতে দেখে একপ্রকার হুরমুরিয়ে উঠে বসল ও। ঘুম ঘুম চোখে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে দেখল যে ন’টা পয়তাল্লিশ বাজে। অনিমা অসহায়ভাবে মিসেস রিমার দিকে তাকিয়ে বলল,

” সরি মামনী। অনেকক্ষণ যাবত ডাকছো না?”‘
মিসেস রিমা মুখে হাসি ফুটিয়ে বললেন,
” এতোটা ক্লান্ত ছিলি এতো কম ডাকে উঠে যাবি সেটাই ভাবিনি। যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়। আমি খাইয়ে দিচ্ছি।”
অনিমা মাথা নেড়ে উঠে চলে গেল ফ্রেশ হতে। ভালোভাবে ফ্রেশ হয়ে নিল যাতে ক্লান্তি আর ঘুম ভাবটা একটু কমে। ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় বসতেই মিসেস রিমা ভাত মেখে ওর মুখের সামনে ধরে বলল,
” সেই দুপুরে কী না কী খেয়েছিস। সন্ধ্যায় তো খেলিই না কিছু। শুধু দু চামচ পায়েস। এবার এইটুকু চুপচাপ খেয়ে নে তো। তোকে বেশ ক্লান্ত লাগছে।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

অনিমা হালকা একটু হেসে হা করল। মিসেস রিমা ওকে খাওয়াচ্ছে অনিমা শান্ত চোখে তাকিয়ে আছে ওনার দিকে। ছোটবেলা থেকে কখনও মায়ের আদর পায়নি ও। মা কী হয়? কেমন হয়? ও জানেই না। হাসান কোতয়াল ওকে খুব যত্নে মানুষ করলেও মায়ের অভাব তো কখনও পূরণ হয়না। কিন্তু নিজের শাশুড়ির কাছে এতোটা স্নেহ পাবে সেটা সত্যিই ভাবেনি অনিমা। খাওয়ার মাঝে কিছু একটা ভেবে অনিমা জিজ্ঞেস করল,

” আচ্ছা, লিমা আন্টি কোথায়?”
মিসেস রিমা খাবারের লোকমা অনিমার মুখে দিতে দিতে বললেন,
” নিচে আছে রে কাজে ব্যস্ত। বুঝতেই পারছিস কাল রিসিপশন। আমারও তোকে খাইয়ে কাজে লেগে পরতে হবে। চল, তাড়াতাড়ি শেষ কর। যেতে হবে আমায়।”
মিসেস রিমা অনিমাকে খাইয়ে দিয়ে চলে যেতেই স্নিগ্ধা, অরুমিতা, স্নেহা, জাবিন চলে এলো রুমে। স্নিগ্ধার হাতে একটা ব্যাগ। দরজা বন্ধ করে চারজনই দাঁত বের করে নিঃশব্দে হাসতে শুরু করল। অনিমা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল,

” আবার কী?”
অরুমিতা এসে অনিমার পাশে বসে বলল,
” তোমাকে এখন সাজানো হবে বেবি।”
অনিমা জানে কেন সাজাবে। তবুও জেনে শুনেই বলল,
” কীসের সাজ? আমি একদম সাজতে টাজতে পারব না এখন। খুব ক্লান্ত আছি।”
স্নিগ্ধা ফিক করে হেসে দিয়ে বলল,
” এসব বলে লাভ নেই। সারাদিন যেসব সেজেছিলি সব নরমাল ছিল। স্পেশাল সাজ তো এখন সাজাবো।”

অনিমা দুঃখী দুঃখী মুখ করে তাকাল ওদের দিকে কিন্তু বিশেষ কোন লাভ হলো না। ওরা তিনজন মিলে অনিমাকে আবার সাজিয়ে দিল। তবে এরারের সাজটা একদম হালকা ছিল। মুখে তেমন মেকআপ ছিল না, চুলগুলোও একটা ক্লিপ দিয়ে স্টাইল করে ছেড়ে দিয়েছে। সাজানো শেষ করে অনিমাকে আদ্রিয়ানের রুমে নিয়ে বসিয়ে দিল। এরপর তিনজনই সেই দাঁত বের করা হাসি দিয়ে ‘অল দ্যা বেস্ট’ বলে চলে গেল। অনিমা একবার সাজানো রুমটায় চোখ বুলালো। ফুলগুলো হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিল একবার।

কিছুক্ষণ পর আদ্রিয়ান আসবে? অদ্ভুতরকম অনুভূতি হচ্ছে ওর। ভয়, লজ্জা দুটোরই মিশ্র অনুভূতি।
এদিকে বাহিরে আদিব, আশিস, নাহিদ, তীব্র চারজনই ভালোভাবে ঠিক করে নিয়েছে কীভাবে আদ্রিয়ানকে বেশ কিছুক্ষণ ডিসটার্ব করা যায়। এরমধ্যে জাবিন, অরুমিতা আর স্নেহাও চলে এলো। স্নিগ্ধা নেই। একটু বেড়িয়েছে ও। ওরা সাতজন আপাতত আদ্রিয়ানকে বাসর ঘরে ঢোকা থেকে আটকানোর জন্যে অপেক্ষা করছে। টাকা আদায় করতে হবে তো। অভ্র আদ্রিয়ানের সাথে আছে তাই আর ডাকা হয়নি ওকে। কিন্তু অনেকক্ষণ যাবত অপেক্ষা করার পরও আদ্রিয়ানের আসার নামগন্ধ নেই। দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে বলে ওরা যে যেভাবে পারল ওখানেই দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পরল। আর আদ্রিয়ানের আসার অপেক্ষা করতে লাগল।

আদ্রিয়ানের আসতে দেরী হচ্ছে দেখে অনিমা হেঁটে হেঁটে রুমে সাজানো জিনিসগুলো দেখছিল। আর হাত দিয়ে নাড়ছিল। হঠাৎ করে হাত টেনে ধরতেই অনিমা চমকে উঠল। চিৎকার করতে করতেও করল না কারণ ততক্ষণে আদ্রিয়ানের ওর ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে দিয়েছে। আদ্রিয়ান ভ্রু কুঁচকে ফিসফিসিয়ে বলল,
” সমসময় না দেখেই এভাবে চেঁচাও কেন?”
অনিমা আঙুল সরিয়ে বিরক্তি নিয়ে বলল,

” এই আপনি কী কখনও স্বাভাবিকভাবে আসতে পারেন না? হুটহাট কোথা থেকে এসে হাজির হয়ে হাত টেনে ধরেন। এমন কেন আপনি? আর দরজা খোলার আওয়াজ তো পেলাম না? এলেন কীভাবে?”
আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,
” ব্যালকনি দিয়ে।”
অনিমা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল আদ্রিয়ানের দিকে। এরপর একটা হতাশ নিশ্বাস ফেলে বলল,
” বাসর রাতেও ব্যালকনি টপকে আসতে হল?”
” তো কী করব? সব বিচ্ছু বাহিনীর দল বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ঝামেলা করতো অনেক। মাঝরাত অবধি জ্বালাবে ফর শিওর। তাই অন্য প্লান করেছি।”
অনিমা ভ্রু কুচকে বলল,
” কী প্লান?”

আদ্রিয়ান বাঁকা হাসি দিয়ে ওদের দুজনের ফোনই বেডের ওপর ফেলে অনিমার হাত ধরে বলল,
” চল আমার সাথে।”
বলে অনিমাকে নিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দেখে মই দাঁড় করানো। নিচে অভ্র দাঁড়িয়ে লম্বা লম্বা হাই তুলছে। আদ্রিয়ান বলল,
” চল, নামতে হবে।”
অনিমা চোখ বড় বড় করে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,
” নামতে হবে মানে? কোথায় যাবো এখন? এতো রাতে?”
আদ্রিয়ান বিরক্তি নিয়ে বলল,
” গেলেই দেখতে পাবে। আগে চল। অভ্র! মইটা ধরো।”
অভ্র ‘ জি স্যার’ বলে দৌড়ে এসে মইটা শক্ত করে ধরল। আদ্রিয়ান ব্যালকনি টপকে মইয়ে পা রেখে বলল,

” জানপাখি, হাত দাও।”
” পাগল হয়েছেন আপনি? আমি এখন শাড়িটাড়ি পরে এই মই বেয়ে নামব? অসম্ভব!”
” কিচ্ছু হবেনা। আমি ধরে রাখব তো।”
” আমি পারবোনা।”
আদ্রিয়ান অনিমার দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
” এখানে থাকলে অর্ধেক রাত পন্ড করবে ওরা। এখন তুমি নিজে আসবে নাকি আমি অন্যকোন ব্যবস্থা করব? দেখ তাতে কিন্তু রিস্ক বেশি থাকবে।”

আদ্রিয়ানের কথায় অনেকটা রাগের আভাস পেল অনিমা। এখন এই ছেলের কথামতো কাজ না করলে না জানি এই ছেলে আবার কী করবে। তাই কাঁপাকাঁপা হাতে আদ্রিয়ানের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। আদ্রিয়ান মুচকি হেসে অনিমার হাত ধরে আস্তে আস্তে অনেক সাবধানে নেমে গেল। আদ্রিয়ান অভ্রকে বলল,

” এখন যাও। সাতটার দিকে এখানে থাকবে। গট ইট?”
অভ্র হেসে দিয়ে মাথা নেড়ে চলে গেল। অনিমা বলল,
” কিন্তু ওরা সবাই অপেক্ষা করে আছেতো আপনার?”
আদ্রিয়ান চিবুক চুলকে একবার ওপরে তাকিয়ে বলল?
” থাকুক! খুব শখ না ওদের আমায় জ্বালানোর? এবার সারারাত ধরে মশা মারুক।”
বলে অনিমার হাত ধরে বাইরের দিকে হাঁটা দিল। অনিমা হতাশ চোখে তাকিয়ে রইল আদ্রিয়ানের দিকে। বাসররাতে নাকি বরবউ পালিয়ে যাচ্ছে, তাও একসাথে। ভাগ্যিস এমন একটা স্বামী কপালে জুটেছিল। তাইতো এরকম অভিজ্ঞতাও হয়ে গেল।

রিক ছাদের এক কোণে বসে আছে চুপচাপ। হালকা বাতাসে ওর চুলগুলো কিছুটা দুলছে। উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে আকাশের দিকে। বুকের ভেতরটায় খুব জ্বলছে ওর। নিজের ভালোবাসাকে অন্যকারো সঙ্গে দেখতে, নিজ উদ্যোগে তারই বাসরঘর সাজাতে সাহস লাগে। সেই সাহসটা ছিল ওর মধ্যে। কিন্তু বুকের জ্বালাতো কমার নয়। হাতে একটা মদের বোতল। ইচ্ছে করছে খেতে কিন্তু বারবার স্নিগ্ধার বারণ আর অনিমায অপছন্দের ব্যাপারটাই ওকে আটকে দিচ্ছে। বহুদিন যাবত খাওয়া হয়না। কিছু একটা ভেবে ওটা খুলে খেতে নিলেই পেছন থেকে স্নিগ্ধা হাত ধরে ফেলল। এরপর স্হির দৃষ্টিতে রিকের দিকে তাকিয়ে বলল,

” এটা কষ্ট কমাতে পারেনা। বরং ভবিষ্যতে অনেক কষ্টের কারণ হয়। ফেলে দাও ওটা।”
রিক ভ্রু কুচকে বলল,
” তুই এখানে কী করছিস?”
স্নিগ্ধা মলিন হেসে বোতলটা রিকের হাত থেকে নিয়ে ফেলে দিয়ে বলল,
” তোমাকে একা পুড়তে দেই কীকরে?”
রিক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। এরপর কিছু না বলেই স্নিগ্ধার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরল। স্নিগ্ধা প্রথমে একটু থমকে গেলেও। পরে আস্তে আস্তে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। অনেকটা সময় চুপ থাকার পর রিক বলল,

” জানিস নীলপরী আর আদ্রিয়ানকে একসাথে দেখলে কতটা কষ্ট হয় আমার? বুক ফেটে যায়। নিশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয় তখন। নীলপরী যখন আদ্রিয়ানের বুকে মাথা রাখে তখন ইচ্ছে করে মেরে ফেলি ওকে, একদম মেরে ফেলি। আমার না বড্ড হিংসে হয়। জীবনে প্রথম আমি আদ্রিয়ানকে হিংসে করছি। কিন্তু দুজন মানুষই আমার খুব কাছের। নিজের সুখের জন্যে দুজনকে একসাথে কষ্ট দিতে পারব না আমি। কিন্তু আমিও তো কষ্টটা সহ্য করতে পারছি না। একটুও পারছিনা। খুব কষ্ট হচ্ছে। কী করব? কী করব আমি?
হঠাৎ করেই স্নিগ্ধা বলে উঠল,
” আমি তোমাকে ভালোবাসি, রিক দা।”

অনিমার চোখে দুহাত দিয়ে আদ্রিয়ান একটা রুমে নিয়ে এলো ওকে। প্রায় আধ ঘন্টা গাড়ি চালিয়ে ওকে নিয়ে এখানে এসছে আদ্রিয়ান। ভেতরে আসার আগেই চোখ হাত দিয়ে ঢেকে দিয়েছে। অনিমা বারবার জিজ্ঞেস করেই চলেছে, কী হয়েছে? কোথায় নিয়ে যাবে? কিন্তু আদ্রিয়ান কোন উত্তরই দিলোনা। রুমে এনে চোখটা ছাড়তেই অনিমা আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকাল। এখানেও বেশ চমৎকার করে রুম সাজানো।

বিভিন্ন ফুল আর কালারফুল মোমবাতি দিয়ে। একপাশে দেয়াল নেই পুরোটাই কাঁচের। যেটা অর্ধেকের বেশি খুলে রাখা হয়েছে। বাইরে বিশাল ব্যালকনি আর আকাশের পূর্ণ চাঁদ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। চাঁদের আলোও বিনা বাধায় রুমে এসে ছড়িয়ে যাচ্ছে। বিছানায় ফুল দিয়ে ওদের দুজনের নামও লেখা আছে। সবটা দেখে অনিমার চোখ ধাঁধিয়ে গেল একপ্রকার। সেইসাথে ভেতর ভেতর একপ্রকার কম্পনও হচ্ছে। আদ্রিয়ান পেছন থেকে আলতো করে জড়িয়ে ধরল অনিমাকে। ওর কাঁধে থুতনি রেখে মৃদু আওয়াজে বলল,

” কেমন লাগল?”
হঠাৎ করেই অনিমা ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেল। লজ্জায় কিছু বলতে পারছেনা। এর আগে যে আদ্রিয়ান ওকে একেবারেই ছোঁয়নি তা কিন্তু না। কিন্তু আজকের ছোঁয়া ওর কাছে সবচেয়ে আলাদা মনে হচ্ছে। ওর সমস্ত রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। তাই চোখ বন্ধ করে শুধু ধীরে ধীরে শ্বাস নিচ্ছে। আদ্রিয়ান অনিমার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
” তোমাকে সমস্ত রূপেই আমার কাছে আস্ত মায়াবিনী মনে হয়। তাই আলাদা করে রূপের প্রশংসা করতে পারলাম না।”

বলে অনিমার গলায় ধীর গতিতে একটা লকেট পরিয়ে দিয়ে কাঁধে একটা চুমু খেল। অনিমা কেঁপে উঠল সাথে সাথে। চোখ বন্ধ করে আদ্রিয়ানের হাত খামচে ধরে জোরে জোরে শ্বাস নিতে শুরু করল। আদ্রিয়ান অনিমার কোমর ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল। অনিমা চোখ বন্ধ করে রেখেছে এখনো। আদ্রিয়ান হালকা করে মুখে ফু দিতেই অনিমা আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকাল আদ্রিয়ানের দিকে। আদ্রিয়ানের ঠোঁটে দুষ্টু হাসি ঝুলে আছে। অনিমা সাথেসাথে চোখ সরিয়ে নিল। আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,

” তোমার উপহার ছিল এটা।”
অনিমা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর অজান্তেই ওর ঠোঁটেও হালকা হাসি ফুটে উঠেছে। আদ্রিয়ান এবার অনিমার দিকে আরেকটু এগিয়ে মোহনীয় কন্ঠে বলল,
” জানপাখি?”
অনিমা কেঁপে উঠল। আদ্রিয়ানের এই ডাকের ওপর ও বরাবরই ভীষণ দুর্বল। তারওপর যদি এভাবে ডাকে! আদ্রিয়ান আবার বলল,

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৫৯

” আজ কী তোমাকে সম্পূর্ণ নিজের করে পেতে পারি? দেবে সেই অধিকার?”
অনিমার একমুহূর্তের জন্যে বলতে ইচ্ছে করছিল, আমিতো পুরোটাই আপনার। কিন্তু বলতে পারলনা শুধু একরাশ লজ্জা নিয়ে আদ্রিয়ানের বুকে মুখ লুকালো। আদ্রিয়ানের ঠোঁটেও মুচকি হাসি ধরা দিল। ওর জানপাখি কিছু না বলেও অনেক কিছু বলে দিয়েছে ওকে। তাই পরম আবেশে দুহাতে আগলে নিলো নিজের মায়াবিনীকে।

এদিকে আদ্রিয়ানের অপেক্ষা করতে করতে যখন ওদের সবার ঘুমে ঢুলুঢুল অবস্থা তখনই অভ্র এসে জানালো যে আদ্রিয়ান ব্যালকনি দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেছে। এটুকু জানিয়ে অভ্র একটা মেকি হাসি দিয়ে রুমে চলে গেল। আসলে এই মিথ্যেটাও আদ্রিয়ানেরই শেখানো। ওরা সবাই বোকা বনে গেল সাথে রাগও হল। নাহিদ বলল,

” প্রথম প্লান ফ্লপ হয়েছে তো কী হয়েছে? এবার দ্বিতীয় প্লান চলবে।”
এবার শুরু হল আদ্রিয়ান আর অনিমার ফোনে ফোন করা। কিন্তু কোন লাভ হল না। ফোন ধরছে না কেউ। দরজায় টোকা থেরাপিও চালানো হল কিন্তু কোন রেসপন্স নেই। ওরা সবাই বেশ অবাক হল। শোনার চেষ্টা করল ভেতরে কী হচ্ছে। কিন্তু কোন লাভ হলোনা। আদিব বলল,

” কী বাসর করছেরে ভাই, নো এফেক্ট? কিন্তু না হাল ছাড়া যাবেনা।”
ওরা আবারও ওদের চেষ্টা চালাতে লাগল। অনিমা আদ্রিয়ানকে ডিস্টার্ব করার নানারকম ফন্দি করতে করতে একপর্যায়ে দরজার সামনেই ফ্লোরে এলোমেলো হয়ে একেকজন একেকভাবে ঘুমিয়ে পরল ওরা।

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ৬১