বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ৫০

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ৫০
লেখিকা: তানজিল মীম

বিস্ময়সূচক চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে অথৈ আহির মুখের দিকে। সে এখনো বুঝতে পারছে না আহি কি করে জানলো এসব। অথৈর চাহনী দেখে আহি বেশ বুঝতে পেরেছে অথৈর মনে কি চলছে এখন। আহি মুচকি হেঁসে অথৈর হাত ধরে নিয়ে আসলো নীরবের সামনে। তারপর নীরবের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ তোমার ভালোবাসার মানুষকে তোমার কাছে পৌঁছে দিলাম ভাইয়া এখন আমার ছুটি।’
আহির কথা শুনে নীরব কিছুটা অবাক হয়ে বললো,
‘ ছুটি মানে কোথায় যাবি তুই?’
‘ আপাতত আমায় এখন হসপিটালে যেতে হবে দু’ঘন্টার ছুটি নিয়ে বেরিয়ে ছিলাম। আর তাছাড়া তোমরা এখন তোমাদের কনফিউশান দূর করবে সেখানে আমি থার্ড পারসন হয়ে কি করবো?’ অথৈ এতদিন খুব কষ্ট পেয়েছে ভাইয়া। তুমি আর ওকে কষ্ট দিও না।’
এতটুকু বলে অথৈর দিকে তাকিয়ে বললো আহি,

‘ আমি জানি অথৈ,তোর মনে এখন কি চলছে? প্রথমেই সরি বলছি তোকে না জিজ্ঞেস করেই তোর পারসোনাল ডাইরিটা আমি একটু ধরেছিলাম।’
আহির কথা শুনে বিস্মিত চোখে তাকালো অথৈ আহির দিকে। এতক্ষণ পর যেন অথৈ বুঝতে পারলো আহি এসব তাহলে তাঁর ডাইরি থেকে পেয়েছে। অথৈ অনুশোচনাসূচক আহির দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ আহি?’
‘ দেখ আমি জানি এখন তুই কি বলবি বাট আমি এখন কিছুই শুনবো না। তোরা দুজন কথা বল আমি আসছি।’
বলেই ওদের দুজনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে উল্টোদিক ফিরে যেতে নিলো আহি। কয়েক কদম যেতেই অথৈ গম্ভীর কণ্ঠ নিয়ে বললো,
‘ দাঁড়া আহি, কষ্ট লুকাতে পালিয়ে যাচ্ছিস নাকি?’
হুট করেই অথৈর মুখে এমন কথা শুনে থমকে গেল আহি। বিষন্ন ভরা মনটাকে দূরে সরিয়ে রেখে শুকনো হেঁসে পিছন ফিরে বললো সে,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘ পালাতে যাবো কেন?’
উওরে অথৈ আহির দিকে এগিয়ে এসে বললো,
‘ পালাচ্ছিস না তো কি করছিস, এত ভালো হতে কে বলেছে তোকে?’
‘ ভালো হওয়ার কি আছে এখানে?’
‘ অনেক কিছু আছে আর আমি নীরবকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারবো না।’
‘ কেন পারবি না? আমি নীরব ভাইয়াকে ভালোবাসতাম বলে
উওরে মাথা নিচু করে ফেলে অথৈ। অথৈকে মাথা নিচু করতে দেখে শুকনো হেঁসে বললো আহি,
‘ তাহলে শোন আমি এখন আর নীরব ভাইয়াকে ভালোবাসি না। আর ভালো আমি নই তুই সেজেছিস নিজের ভালোবাসাকে লুকিয়ে রেখে।’
আহির প্রথম কথাটা শুনে শুরুতে অবাক হলেও পরক্ষণেই বিশ্বাস না করে বললো অথৈ,

‘ আমাদের মিলাতে মিথ্যে বলছিস?’
‘ কি মিথ্যে বলেছি আমি?’
‘ এই যে তুই নীরবকে ভালোবাসিস না। তাহলে কাকে ভালোবাসিস তুই?’
অথৈর এবারের কথা শুনে হুট করেই আহির সামনে আদ্রিয়ানের ফেসটা ভেসে উঠল। ফট করেই বলে উঠল সে,
‘ মিথ্যে বলতে যাবে কেন?’
‘ আমি জানি আহি তুই নীরবকে সেই ছোট বেলা থেকে ভালোবাসিস তাহলে হুট করে কি এমন হলো যে এখন তুই ভালোবাসিস না।’
‘ কারন আমি সত্যি অন্য কাউকে ভালোবাসি।’
আহির এবারের কথা শুনে অথৈ নীরব দুজনই বেশ অবাক। অথৈ তখন এমনি বলেছিল ‘তাহলে কাকে ভালোবাসিস তুই? কিন্তু এখন সত্যি সত্যি আহির মুখে অন্য কারোর কথা শুনে হতভাগ সে। হতভাগ হয়েই বলে ফেললো অথৈ,
‘ কে সে, আর তুই যে মিথ্যে বলছিস না তাঁরও বা কি প্রমান আছে?’
মনটা অস্থিরতা ফিল করছে আহির। কিছুক্ষন চুপ থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো আহি,

‘ আমি মিথ্যে বলা পছন্দ করি না এটা তুই ভালো মতো না জানলেও নীরব ভাইয়া ঠিকই জানে। এটা ঠিক একটা সময় নীরব ভাইয়াকে আমি ভীষণ ভালোবাসতাম তাঁকে নিয়েই ছিল আমার ধ্যান জ্ঞান সবকিছু। কারন সেই ছিল আমার ছোট বেলা নিয়ে ঘেরা ‘বাবুইপাখির অনুভূতি’ মিশ্রিত গল্প। কিন্তু যেদিন থেকে জেনেছি নীরব ভাইয়া আমায় নয় তোকে ভালোবাসে তখন থেকেই ধীরে ধীরে আমি তাঁকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কষ্ট পেয়েছি খুব এটা ঠিক কিন্তু আমার সেই কষ্টের সময়গুলোতে কেউ একজন ছিল আমার পাশে।

যে খুব কেয়ারিং করেছে আমার, বৃষ্টির রাতে নিজ গাড়ি করে নিজ বাড়িতে নিয়ে সেবা করেছে আমার, হতাশা ভরা বিকেলে বাচ্চাদের সাথে নিয়ে বন্ধু হয়েছে আমার, রাতের জোৎসা ভরা আলোতে উঁচু পুলের মাঝে দার করিয়ে নীরব ভাইয়াকে ভুলতে সাথে নিজের ফিলিংস গুলোকে বিসর্জন দিতে হেল্প করেছে আমায়, আমার ব্যাথার দিনে আমায় সামলিয়েছে, হঠাৎ দুপুরের রোদে গাড়ি করে ঘুরতে নিয়ে গেছে আমায় যদিও সেই দিনগুলো তাঁর জন্য মন খারাপের দিন ছিল কিন্তু তাঁরপরও আমার জন্য হেঁসেছে, মাঝরাস্তায় বৃষ্টির মধ্যে অনিচ্ছা থাকা সত্বেও ভিজেছে আমার সাথে, নীরব ভাইয়া ছিল আমার ছোট বেলার অস্তিত্বে যেটা বড় হওয়ার সাথে সাথে ফুরিয়ে গেছে। কিন্তু আদ্রিয়ান উনি আমার যৌবন কালে অনুভূতি আর উনি আমায় আমার থেকেও বেশি ভালোবাসে।

তাই আমিও ওনায় ভালোবেসে ফেলেছে। নীরব ভাইয়া ছিল আমার প্রথম আর অতীতের ভালোবাসা কিন্তু আদ্রিয়ান আমার বর্তমান জীবনে গল্প। যেটা চাইলেও আমি আর মুছতে পারবো না। ঝড়বৃষ্টির রাতে আমাকে বাঁচাতে নিজে আঘাত পেয়েছে, আরও কত কি এঁকে তো ভালোবাসতেই হতো আমায়। নিজের অজান্তেই মন দিয়ে ফেলেছি আমি তাঁকে। মানুষটা রাগী আর গম্ভীর টাইপের কিন্তু মনের দিক থেকে খুব ভালো। নীরব ভাইয়া আমার প্রতিবেশী হয়েও সেইভাবে তাঁর কাছাকাছি কখনোই যাই নি আমি বা প্রয়োজন পড়ে নি। কিন্তু ওই মানুষটার সাথে কারনে অকারণে ভুল করে কতবার কাছাকাছি হয়েছি তাঁর হিসাব। কিছুদিন আগে তো কাছাকাছি হওয়াটা যেন একটা রুটিনে পরিণত হয়েছিল। এতটুকু বলে থামলো আহি তারপর আবারো বললো সে,

‘ কতবার যে মানুষট আমায় হেল্প করেছে তা বলে শেষ করা যাবে না। আমার ওপর রেগে থাকলেও আমায় হেল্প করেছে বহুবার বহুক্ষণে।’
আহি যখন কথাগুলো বলছিল প্রতিটি কথার সাথে সাথে সে আদ্রিয়ানকে ফিল করছিল। আর আহির কথা শুনে অথৈরও কেন যেন মনে হলো আহি সব সত্যি বলছে। বিচলিত মন নিয়ে বললো অথৈ,
‘ তাঁর মানে তুই?’
‘ হুম তুই যেটা ভাবছিস সেটাই, হয়তো আমারই বুঝতে একটু সময় লেগেছে। আমি নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছি আদ্রিয়ানকে। আর বিয়ে করলে তাঁকেই করবো যে আমায় ভালোবাসে, আমার জন্য ফিলিংস আছে যার। তাঁকে বিয়ে করবো না যে আমায় ভালোবাসে না, যার আমার জন্য কোনো ফিলিংস নেই।’
লাস্টের কথাটা আহি নীরবের দিকে তাকিয়েই বলেছে। নীরবও আহির লাস্টের কথাটা যে তাঁকে ইংগিত করেই বলেছে সেটা বুঝতে পেরে সেও মাথা নিচু করে ফেললো। নীরবের কাজে শুঁকনো হাসলো আহি। তারপর চটজলদি নীরবের উপর থেকে চোখ সরিয়ে অথৈর দিকে দৃষ্টি রেখে বললো,

‘ তাই বলবো আমায় নিয়ে আর ভাবিস না আমি ভালো আছি। এখন তোরাও ভালো থাক। অবশেষে বলবো তোদের ভালোবাসার দিনগুলো সুন্দর হোক দোয়া রইলো। আজ তবে আসি বড্ড দেরি হয়ে যাচ্ছে বুঝলি। এমনিতেই হসপিটাল থেকে অনেকদিনের ছুটি নিয়েছিলাম আজ আবার ২ ঘন্টার ছুটি নিয়েছি। ২ ঘন্টা পেরিয়ে গেছে অনেক আগে আর দেরি হলে সত্যি সত্যি চাকরিটা চলে যাবে আমার।’
বলেই নীরবের দিকে একপলক তাকিয়ে আদ্রিয়ানকে মাথায় নিয়েই হাঁটতে শুরু করলো আহি। এমন সময় দূর আকাশে মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল এক মস্ত বড় প্লেন। আহি তাকালোও সেটার দিকে, কেমন যেন শুন্য শুন্য মনে হলো কিছু। কিন্তু আবার এমনি ভেবে হেঁটে গেল সে।’

কিন্তু সে তো বুঝলো না তার শুন্যতা ফিল হওয়া মানুষটাই মাত্র প্লেনে করে কোনো এক জানালার সিটে বসে তার কথা ভাবতে ভাবতেই চললো তাঁর থেকে বহু দূরে। এতটাই দূরে যে চাইলেও সে সেখানে পৌঁছাতে পারবে না।’
এদিকে আহির যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো নীরব আর অথৈ। দুজনেই বেশ অবাক আহির কথা শুনে। নীরব এগিয়ে এসে কাঁধে হাত রাখলো অথৈর। হয়তো অথৈর অবস্থাটা সে বুঝতে পারছে। অথৈও ছলছল চোখে তাকালো নীরবের দিকে পরক্ষণেই নীরবের বুকে মাথা রাখলো সে। নীরবও হাত বুলালো অথৈর মাথায়। এবার যেন দুই প্রেমিক-প্রেমিকার বুকে প্রান ফিরে এলো। অনেক দিনের ভালোবাসা যেন আজ পূর্ণতা পেল। এবার আর রইলো কোনো বাঁধা যেটা রইলো সেটা হলো ভালোবাসা, ভালোবাসা, শুধুই ভালোবাসা।’

আকাশের সূর্য্যিমামাও মস্ত বড় আকাশের নদীর দূর সীমানা দিয়ে ডুবতে শুরু করলো। কারন,
‘এখন যে তাঁর বাড়ি ফেরার সময়।
সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাতের দিকে অগ্রসর হওয়ার পূর্বাভাস।
সূর্য্যিমামাকে হারিয়ে চাঁদ মামাকে স্বাগতম দেওয়া আলাপন।’

রাত_৯ঃ০০টা…
হসপিটাল থেকে জাস্ট বের হলো আহি। মনটা বড়ই অস্থির তাঁর। আহি বুঝতে পারছে না এত খারাপ আর খালি খালি কেন লাগছে তাঁর। সেই সন্ধ্যা থেকেই মনটা বড় উতলা হয়ে আছে। সকালের স্বপ্নটটাও হুট করে হানা দিলো তাঁর। আহি তাঁর অস্থিরতার মন নিয়েই অগ্রসর হলো আদ্রিয়ানের অফিসের উদ্দেশ্যে। আজ অথৈকে যা যা বললো আহি তাঁর একটাও তাঁর মনগড়া বা বানানো ছিল না সে সত্যি ভালোবেসে ফেলেছে আদ্রিয়ানকে। আর আদ্রিয়ানের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য হয়তো নীরবকে তাঁকে ত্যাগ করতে হয়েছে। এই জন্যই হয়তো বলে,
‘ সবার ভাগ্যে সবাই থাকে না,

ভাগ্যে তো সেই থাকে যাকে আপনার জন্য আল্লাহ বানিয়েছে। তাই মন খারাপ করবেন না যা হারিয়ে গেছে তা তো গেছেই অপেক্ষায় থাকুন সেই মানুষটার জন্য যাকে আপনার জন্য বানানো হয়েছে। কে জানে তাঁকে পেয়ে হয়তো আপনি আপনার হারিয়ে যাওয়া মানুষটাকেই একসময় তুচ্ছ মনে করবেন। আবার হয়তো মনে হবে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটাই পেয়ে গেছে। তাই মন খারাপ করবেন না কারন জীবন খুবই সুন্দর।’?
আনমনেই কথাগুলো ভাবতে ভাবতে এগিয়ে গেল আহি। আর হাঁটতে হাঁটতেই কখন যে আদ্রিয়ানের অফিসের সামনে চলে আসলো সে বুঝতেই পারে নি। এরই মাঝে সেই সময় অফিস বন্ধ করে অফিস থেকে বেরিয়ে আসছিল নিলয়। আহিকে আনমনেই এদিকে আসতে দেখে বললো সে,

‘ আহি তুমি এখানে?’
হুট করেই নিলয়ের কন্ঠ শুনে হকচকিয়ে তাকালো আহি তাঁর দিকে, পরক্ষণেই সে যে আদ্রিয়ানের অফিসের সামনে চলে এসেছে এটা বুঝতে পেরে বললো আহি,
‘ হুম আমি! একটু আদ্রিয়ানের সাথে দেখা করতে এসেছিলাম কিছু কথা ছিল ওনার সাথে।’
আহির কথা শুনে বিস্মিত হয়ে বললো নিলয়,
‘ কিন্তু আদ্রিয়ান তো নেই আহি?’
‘ নেই মানে উনি বাড়ি চলে গেছেন কিন্তু ওনার অফিস তো আরো এক ঘন্টার মতো খোলা থাকার কথা।’
‘ হুম তা ঠিক কিন্তু,

নিলয় আর কিছু বলার আগেই আহি বলে উঠল,
‘ ঠিক আছে কোনো ব্যাপার না আমি ওনার সাথে কাল দেখা করে নিবো।’
‘ তা তো হবে না আহি।’
এবার আহি ভীষণই বিষন্ন। এমনিতেই মনটা তাঁর অস্থির হয়ে আছে কখন আদ্রিয়ানের সাথে দেখা করবে কিন্তু নিলয়ের কথায় প্রচন্ড হতাশ সে। হতাশা নিয়েই বললো আহি,
‘ হবে না কেন ভাইয়া?’
‘ কারন আদ্রিয়ান তো বাংলাদেশ নেই।’
‘ বাংলাদেশ নেই মানে কোথায় গেছে?’
‘ ওহ তো অফিসের একটা কাজে আজ বিকেলের ফ্লাইটে সুইজারল্যান্ড গেছে।’
নিলয়ের কথা শুনে প্রচন্ড হতাশা ভরা কন্ঠ নিয়ে বললো আহি,
‘ কি?’
‘ হুম।’
‘ কবে ফিরবে?’
‘ তা তো ঠিক নেই।’
‘ ওহ।’

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ৪৯

বলেই প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে চললো আহি বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে। আহির যাওয়ার পানে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে হঠাৎ কিছু একটা মনে পড়তেই বলে উঠল নিলয়,
‘ আহি দাঁড়াও!’
সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়লো আহি। আহত দৃষ্টিতে নিলয়ের দিকে তাকালো সে। আহিকে নিজের দিকে তাকাতে দেখে নিলয় দৌড়ে এসে তাঁর পকেট থেকে একটা নীল খামের চিঠি বের করে আহির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
‘ এটা তোমার জন্য আহি আদ্রিয়ান যাওয়ার আগে তোমায় দিতে বলেছিল।’

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ৫১