বুকের বা পাশে পর্ব ২৬

বুকের বা পাশে পর্ব ২৬
written Nurzahan akter Allo

—“আমি আমার অনিশ্চিত জীবনের সাথে তোমাকে জড়াতে পারবোনা। প্লিজ! প্রিয়ম প্লিজ থামো।” (উচ্চ শব্দে কেঁদে,চোখ বন্ধ করে)
এই কথা শুনে প্রিয়ম থেমে গেল ঠিকই। কিন্তু আবার মস্তিষ্কে চাপ পড়ার কারনে সেন্স হারিয়ে ফেললো। তুয়া আর প্রত্যয় গিয়ে প্রিয়মকে ধরলো। প্রত্যয় দ্রুত ফাস্ট এইডের বক্স আনলো। আর মেডিসিন দিয়ে প্রিয়মের হাতের রক্ত বন্ধ করলো। ওর আঘাত পাওয়া জায়গা গুলোতে এ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগিয়ে হাতটা ব্যান্ডেজ করে দিলো।তুয়া প্রিয়মের মাথাটা ওর কোলে তুলে নিলো। প্রত্যয় পানি আনার জন্য একপা এগোতেই ওর পায়ে কাঁচ বিঁধে গেল।প্রত্যয় দরজা ধরে ওর পায়ে থেকে কাঁচ বের করে,পানি আনার জন্য রান্না ঘরের দিকে গেল। প্রত্যয়ের যে পা কেটে রক্ত ঝরছে তাতেও যেন ওর কিছু যায় আসেনা।
প্রত্যয় পানি এনে প্রিয়মের মুখে ছিটা দিলো। আর ওর পালস্ চেক করলো। একটু পর নিভু নিভু চোখে প্রিয়ম চোখ খুললো।প্রিয়ম তুয়ার কোলে মাথা রেখেই বললো,

—“ত তো তোর অনিশ্চিত জীবন মানে?” (প্রিয়ম)
–“প্রিয়ম তুমি শান্ত হও। আর চলো আমরা অন্য রুমে গিয়ে সেখানে বসে কথা বলি। এখানে চারদিকে কাঁচ ছড়িয়ে আছে। একবার যখন তুয়া একটা ক্লু দিয়েছেই এবার সত্যি টা ওকে বলতেই হবে।” (প্রত্যয়)
তারপর প্রত্যয় প্রিয়মকে ধরে অন্য রুমের নিয়ে গেল। আর তুয়া তখনও চুপ করে ওখানেই বসে ছিলো। প্রত্যয় এসে তুয়ার হাত ধরে টেনে ওই রুমে নিয়ে গেল। প্রিয়ম সোফাতে হেলান দিয়ে বসে আছে। প্রত্যয় তুয়াকে ওর দিকে ঘুরিয়ে বললো,
–“তুয়া এবার সত্যিটা তো বল। এখন যদি তুই চুপ থাকিস আর এবার প্রিয়মের যদি কিছু হয়। এজন্য তুই ই দায়ী থাকবি। প্লিজ এবার সত্যি টা বল কি হয়েছে তোর?কেন বললি তোর অনিশ্চিত জীবন?” (প্রত্যয়)
–“তুয়া বল না প্লিজ। কেন এমন করছিস?” (প্রিয়ম)
তুয়া হাটু মুড়ে মেঝেতে বসে পড়ল মাথা নিচু করে। ওর চোখের পানি মুছে নিলো। আর কান্না জড়িত কন্ঠে বললো,
–“আমি Cervical cancer এ আক্রান্ত। আমার এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করার সময় এসে গেছে।” (তুয়া)
–“কিহ্!কি বলছিস এসব তুই?” (প্রত্যয়)
–“আমি ঠিকই বলছি।” (তুয়া)
–“সবকিছু কিছু খুলে বল তা না হলে বুঝবো কিভাবে?” (প্রত্যয়)
–“আসলে আমার পিরিয়ডে কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছিলো।একদিন তিন্নি একটা কারনে হসপিটালে গিয়েছিলো। ওর সাথে আমিও ছিলাম। তাই দুজন মিলে একজন গাইনোলোজিস্টের কাছে যাই। আর উনি একটা টেস্ট করতে দেয়, আমিও টেস্ট করে আসি। আর সেই টেস্ট করেই জানতে পারি আমি সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত।” (তুয়া কেঁদে কেঁদে)

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

–“তুই একথা কবে জানতে পেরেছিস?” (প্রিয়ম)
— “আমাদের বিয়ের আগের রাতে জেনেছি। আর ওরাই ফোনে রিপোর্টের কথা আমাকে জানায়। সেদিনই আমি জেনেছি।” (তুয়া)
–“সে রিপোর্ট টা কই?আমাকে দেখা আমি দেখতে চাই।” (প্রত্যয়)
হঠাৎ প্রিয়ম এসে তুয়াকে এক ধাক্কা মারলো। আর রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে বললো,
–“আবার মিথ্যা কাহিনী শোনাচ্ছিস তুই?আমাদের পাগল বলে মনে হয় তোর। নিজেকে সাধু প্রমাণ করার জন্য আবার মিথ্যা বানোয়াট কাহিনী বানাচ্ছিস?” (প্রিয়ম)
–“আমি মিথ্যা বলছি না। আমি সত্যিটাই বলছি তোমরা বিশ্বাস করো।আমি নিজে ডক্টরের সাথে কথা বলেছি। উনি আমাকে সবকিছু খুলে বলেছে।আর এটাও বলেছে, এ রোগ হলে মা হওয়া যায় না। আমি বেশিদিন বাঁচবো না। আর আমি এতকিছু জেনে কিভাবে তোমাকে নিজের জীবনের সাথে জড়াতাম?কিভাবে ওর সুন্দর জীবনটা আমি নষ্ট করে দিতাম?আমি বাধ্য হয়েছি এটা করতে।” (তুয়া কেঁদে উঠে)

–“আচ্ছা তুই রিপোর্টটা এখন আমাকে দেখা। আমি একবার দেখি।” (প্রত্যয়)
–“এই যে এখানে আছে রিপোর্ট টা। তোমরা দেখো আমি সত্যি বলছি। আমি তোমাদের মিথ্যা বানায়াট গল্প বলছি না।” (তুয়া)
তুয়া ওর ফোনটা এগিয়ে দিলো।প্রত্যয় তুয়ার ফোনের মেসেজটা দেখলো। রিপোর্ট তো পভেটিভ বলছে,আসলেই কি তুয়া সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত? প্রত্যয়ের বুক কাঁপছে অজানা এক ভয়ে। আসলেই কি তুয়ার এই রোগে আক্রান্ত? আবার কেন জানি প্রত্যয়ের সন্দেহও হচ্ছে। তাই প্রত্যয় সেই হসপিটাল আর ডক্টরের নামটাও দেখে নিলো। আর নাম দেখতে গিয়ে প্রত্যয় আরো একটা ঝাটকা খেলো। কারন এই রিপোর্টে ডক্টরের নামটা উল্লেখ করা আছে। আর সেখানে শো করছে পৃথার নাম। প্রত্যয় তুয়ার ফোনটা ওর হাতে রেখেই তুয়ার দিকে তাকিয়ে বললো।
–“তোর কথা অনুযায়ী তোর যে সার্ভিক্যাল ক্যান্সার হয়েছে।তাহলে এত বড় অসুখের কথাটা কাউকে জানালি না কেন?” (প্রত্যয়)
–“আমি সিওর হয়েছি কবুল বলার কিছুক্ষন আগে। এজন্য কাউকে জানাতে পারিনি। আর চাইনি আমার জন্য প্রিয়মের জীবনটা নষ্ট হয়ে যাক।” (তুয়া)

–“ওহ বুঝলাম।এবার তোকে যা যা জিজ্ঞাসা করবো তুই সব কথার ঠিক ঠিক উত্তর দিবি।তাহলে বুঝবো রিপোর্ট ঠিক আছে।” (প্রত্যয়)
–“হুম।” (প্রত্যয়)
–“সার্ভিক্যাল ক্যান্সার নিয়ে তোর কি কোন ধারণা আছে?জানিস কেন আর কাদের সার্ভিক্যাল ক্যান্সার হয়?আর সার্ভিক্যাল ক্যান্সার হলে কি কি সমস্যা হয়?আর আমার জানা মতে, তোর এখন আনসার হবে না, তাই তো?” (প্রত্যয়)
–“হুম।” (তুয়া মাথা নিচু করে)
–“আচ্ছা এবার তুই আমাকে একটা কথা বল। সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের প্রথম লক্ষণ অতিরিক্ত রক্তপাত ঘটে। আসলেই কি তোর তাই হয়?এমন হলে তোর তো এই অবস্থায় বসে থাকার কথা না। আচ্ছা এটাও বাদ দিলাম। এবার বল তো,তুই কি একাধিক পুরুষের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিস?” (প্রত্যয় )
–“এসব কি বলছো তুমি?আমাকে কি তোমার এত নোংরা মনে হয়? আমার জীবনে একটা পুরুষ এসেছিলো। আর সে হলো প্রিয়ম।আর প্রিয়ম আমাকে কোনদিন খারাপ ভাবে টার্চও করেনি। আর তুমি আমাকে এসব বলছো?” (তুয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে )
–“তাহলে তুই এখন এটা বলতে চাচ্ছিস, আমার সাথে রুম ডেট করে তোর এই রোগের উৎপত্তি হয়েছে?আচ্ছা এবার আমাকে আরো নিচে নামাতে চাচ্ছিস?” (প্রিয়ম)

–“(তুয়া চুপ কাঁদছে, ওর আর কিছু বলার নেই)।”
–“তুয়া শোন, আমি তোকে খারাপ কিছু বলিনি। আমি তো তোর বলা রোগের লক্ষণ আর কারন গুলোর কথা বলছি।পিরিয়ডে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তাই পন্ডিতি করে একা একা ডক্টর দেখালি। ডক্টর যা বললো তাই বিশ্বাস করে এমন একটা সিদ্ধান্তও নিলি। একবারো ভাবলিনা এখানে ভুল কিছুও হতে পারে। চোখের দেখা জিনিস যে সব সময় সত্যি হয়, তা কিন্তু না।” (প্রত্যয়)
–“মানে?” তুয়া)
–“মানে হচ্ছে এটাই, যে সার্ভিক্যাল ক্যান্সার বা জরায়ুর ক্যান্সার নারীদের জন্য একটি ভয়াবহ ব্যাধি। আর ২০ বছরের কম বয়সীদের নিচে এ রোগ সাধারণত হয় না। আক্রান্তরা সাধারণত ৩৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী হয়ে থাকেন। এটা বেশির ভাগ বিবাহিত মহিলাদের হয়ে থাকে। হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাসকে সংক্ষেপে এইচপিভিও বলা হয়। আর এইচপি ভাইরাস জরায়ুমুখের ক্যান্সারের একটি অন্যতম কারণ, তবে এটি একমাত্র কারণ নয়। যৌন সংযোগে এর সংক্রমণ ঘটে।এবার বুঝলি কিছু?” (প্রত্যয়)
–“(তুয়া সাইলেন্ট)।”
–“পিরিয়ডে সমস্যা দেখা দিলেই, যে এটা বড় কোন রোগের ব্যাপার তা কিন্তু না। সমস্যা নেই আমি আবার নিজে টেস্ট করবো তোর। একবার যখন তোর মনে এমন সন্দেহ
জেগেছে। তাহলে সন্দেহ দুর করাটাই হবে উত্তম কাজ।” (প্রত্যয়)
–“তাহলে কি তুমি বলছো রিপোর্ট টা ভুল?” (তুয়া)

–“আমি বাংলা সিনেমার ডক্টরদের মত এত ভাল ডক্টর হয়নি। যে পালস্ দেখে বলে দিতে পারবো, “পেশেন্ট পেগনেন্ট”।আর আমি বলছিনা যে এই রিপোর্ট ভুল। তবে রিপোর্ট ভুল হতেও তো পারে এটা বলছি। কারন যতটুকু ধারণা করছি, সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের কোন লক্ষণই তোর মধ্যে বিদ্যমান নেই। এটা ছোট কোন রোগ না যে এটা লুকিয়ে রাখা সম্ভব। আর সার্ভিক্যাল ক্যান্সার হয়ে থাকলে, তোর তো ড্যাং ড্যাং করে হাটাচলা করে বেড়ানোর কথা না। তোর তো বিছানা গত হওয়ার কথা।” (প্রত্যয়)
–“(তুয়া এবারও সাইলেন্ট)।”
–“যেখানে মেয়েদের পিরিয়ড হলে নড়াচড়া, হাঁটাচলা করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সেখানে সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে অতিরিক্ত রক্তপাত হয়। অতিরিক্ত কথাটার মানে বুঝিস?যেটা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি তাকে অতিরিক্ত কিছু বলে।আচ্ছা এসব কথা এখন আপাতত থাক। আমি আজকেই তোর সব টেস্ট করবো। তারপর দেখা যাক কি হয়। তার আগে কিছু বলবো না।” (প্রত্যয়)
–(তুয়া সাইলেন্ট)

–“,অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী,এটাই তার প্রমান। বেশি বুঝলে যা হয় আর কি। এত বড় কথাটা তুই আমার থেকে লুকিয়ে গেলি?সিনেমার মত হিরোইন সাজতে গিয়েছিলি তাই তো?হিরোইন সেজে সবকিছু ত্যাগ করে মহৎ হতে চেয়েছিলি ?একা একা এতসব তো না করলেও পারতি। তোর মত বুদ্ধিমতী মেয়ে এমন ভুল কি করে করতে পারে?আমি তোর থেকে এটা মোটেও আশা করিনি তুয়া। আমাকে তো একটা বার জানাতে পারতি।আমি যদি জানতাম তো কি হতো? এই একটা কারনে তুই আমাকে দুরে সরিয়ে দিলি? এমন বোকামিটা না করলে কি এমন হতো?” (প্রিয়ম শান্ত সুরে)
–(তুয়া সাইলেন্ট)
প্রিয়ম এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তুয়ার দিকে। কি বা বলবে এখন তুয়াকে? এখানে তুয়াকে যে খোলার গুটি বানানো হয়েছে। এটা প্রিয়মের আর প্রত্যয়ের বুঝতে বাকি নেই।এখানে আরো বেশ কিছু রহস্য তো আছেই। এই একটা কারনে তুয়া এমন স্টেপ নিবে না। হয়তো আবেগপ্রবণ হয়ে এমনটা করেছে। আর না হলে কেউ ঠান্ডা মাথায় ওর ব্রেণ ওয়াশ করেছে। এই কথাটা প্রত্যয় আর প্রিয়ম দুজনেরই মাথাতেই ঘুরছে। কিন্তু কেউ সেই কথাটা আপাতত প্রকাশ করলোনা। প্রিয়মের এখন খুব মাথা ব্যাথা করছে। তারপরেও প্রত্যয়ের ইশারায় প্রিয়ম যথেষ্ট মাথা ঠান্ডা রেখে,চুপ করে আছে।কারন এখানে রেগে গেলেই খেলার মোড় আবার ঘুরে যেতে পারে। তুয়া মাথা নিচু করে কাঁদছে ।আর প্রত্যয় ডুবে আছে অন্য এক চিন্তায়।
—“পৃথা কেন এমনটা করলো?কারন তুয়ার মাঝে

সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে কোন লক্ষণই নেই। আর সার্ভিক্যাল ক্যান্সার লুকিয়ে রাখার মতো কোন রোগ না। তুয়ার সার্ভিক্যাল ক্যান্সার হবে। আর ওর বাসার কেউ ক্ষুনাক্ষরেও টের পাবেনা।এটা হতে পারেনা। তাহলে পৃথা কেন তুয়াকে সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের ভয় দেখাচ্ছে? এখানে পৃথার কি স্বার্থ আছে? পৃথা কেন এমন একটা জঘন্য কাজ করছে? এর উওর তো পৃথাকে দিতেই হবে! এমন তো না যে পৃথা তুয়ার ব্যাপারে কিছু জানেনা, বা পৃথা তুয়াকে চিনেনা? তাহলে পৃথা কেন এমন করলো?” (প্রত্যয় মনে মনে)
প্রিয়ম দেওয়ালে মাথা ঠেকিয়ে চুপ করে বসে আছে। ওর চোখ দুটো প্রচন্ড জ্বালা করছে। এখন একটু কাঁদতে পারলে মনে হয় একটু শান্তির দেখা মিলতো। তুয়ার মুখে এসব শুনে প্রিয়মের কলিজা শুকিয়ে গিয়েছিলো। প্রত্যয় কিছুক্ষন চুপ থেকে সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের ব্যাপারটা সিওর জন্য আজকেই এখান থেকে যাওয়ার পর তুয়াকে সব টেস্ট করাবে বলে, ঠিক করলো।
কিন্তু এখন প্রত্যয়ের কথা বলার কন্ঠস্বর আর মুখের ভাব ভঙ্গি বদলে গেছে। প্রত্যয় যে রাগে ফুসছে সেটা ওর নাক আর চোখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। প্রত্যয় এবার ওর গলার স্বর কঠিন করে বললো,

বুকের বা পাশে পর্ব ২৫

–“কার এত বড় বুকের পাটা যে তোকে নিয়ে নোংরা ভিডিও বানানোর প্রোপোজাল দেয়। কে তোকে বার বার ভয় দেখাচ্ছে? কিসের যুদ্ধ ,এসব মেসেজের মানে কি?কে এমন করে মেসেজে দেয় তোকে?নাম বল কে সে?তুয়া এখন যদি চুপ থাকিস, তাহলে এক থাপ্পড়ে তোর সব দাঁত ফেলে দিবো।এতক্ষণ অনেক বুঝিয়েছি এবার তুই সব রহস্যের রহস্যভেদ কর।শুধুমাত্র প্রিয়মের জন্য আমি এতদিন তোকে কিছু বলিনি। বাট আর না,এই মেসেজটা দেখার পর তো নয়ই।তুয়া আমাকে আর রাগাস না। সব সত্যিটা বল আমাদের।তোর ফোনে এইসব মেসেজের মানে কি?” (প্রত্যয় রাগী সুরে)

প্রিয়ম এবার ভ্রু কুচকে তাকায় প্রত্যয়ের দিকে। এখানে আবার ফোনে নোংরা মেসেজ আসলো কোথা থেকে? প্রত্যয় আবার কোন মেসেজের কথা বলছে? আর হঠাৎ করে প্রত্যয়ের মত ঠান্ডা ব্রেণের মানুষ, এভাবে রেগে যাওয়ার কারনটাই বা কি?আর যাই হোক,প্রত্যয় তো হুট করে রেগে যাওয়ার মতো মানুষ না। আর প্রত্যয়ই বা তুয়াকে কোন রহস্যের রহস্যভেদ করার কথা বলছে? এখন সব রহস্য গুলো যেন অক্টোপাসের মতো চারদিক থেকে ওদের পেঁচিয়ে নিচ্ছে। একটা সমস্যার সমাধান বের করতে না করতেই অন্য সমস্যার আগমন ঘটছে।তবে এর পেছনে একটা ‘কিন্তু’ তো থেকেই যাচ্ছে। এই কিন্তুর আসল রহস্যটা তাহলে কি?
প্রিয়ম এখন তুয়ার এসব কথা জানার পর ও এমনিতেই ভেঙ্গে পড়েছে। এর মধ্যে হুট করে প্রত্যয়ের এমন কথাটা ঠিক ওর কাছে ,
–“বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো লাগলো”।

বুকের বা পাশে পর্ব ২৭