বুকের বা পাশে পর্ব ২৭

বুকের বা পাশে পর্ব ২৭
written Nurzahan akter Allo

প্রিয়ম এখন তুয়ার এসব কথার জানার পর এমনিতেই ভেঙ্গে পড়েছে। এর মধ্যে হুট করে প্রত্যয়ের এমন কথাটা ঠিক যেনো,
–“বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো লাগলো।”
এদিকে প্রত্যয়ের কথা শুনে তুয়া অবাক হয়ে গেছে। আর বিষ্ময়কর দৃষ্টি নিয়ে তুয়া প্রত্যয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।কারন তুয়া তখন প্রত্যয়কে রিপোর্টটা শুধু দেখার জন্য ফোনটা ওর হাতে দিয়েছিলো।কিন্তু প্রত্যয় যে এসব মেসেজও দেখে ফেলবে তুয়া কল্পনাও করেনি। প্রত্যয় তুয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। তুয়ার থেকে পাওয়া উত্তরের আশায়।আর প্রিয়ম তাকিয়ে দেখছে তুয়ার ভয় পাওয়া মুখটাকে। তুয়া ওর হাত মুচড়াচ্ছে ওর কপাল বেয়ে ঘাম ছুটছে। প্রত্যয় তুয়ার দিকে এক পা এগোলো। আর তা দেখে তুয়া আর কোনদিকে না তাকিয়ে এক ছুটে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে গেল।প্রিয়ম আর প্রত্যয় তুয়াকে ডাকছে। কিন্তু তুয়া ওদের ডাক উপেক্ষা করেই বের হয়ে গেল।
প্রত্যয় প্রিয়মের দিকে তাকিয়ে বললো,

–“আপাতত এই বিষয় টা নিয়ে পরে ভাবা যাবে। তুমি নিজেরও খেয়াল রাখো। আর তুমি চিন্তা করোনা আমি দেখছি বিষয়টা। আমি এখন যাচ্ছি।তুয়াকে এখন একা ছাড়াটা উচিত হবেনা।” (প্রত্যয়)
–“হুম।” (প্রিয়ম)
প্রত্যয় আর কোন কথা বললো না। দ্রুত পা ফেলে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে গেল। প্রিয়ম শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।প্রত্যয় লিফ্টের কাছে গিয়ে দেখলো। লিফ্ট কেবল দুই তলায় উঠছে। তার মানে তুয়া সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেছে। প্রত্যয়ও দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে নামতে থাকলো। আর নামতে নামতে দেখতে পেলো তুয়াকে। তুয়া ওর বাম পা ধরে ১১ তলার সিঁড়ি বরাবর বসে আছে। তুয়াকে দেখে প্রত্যয় আগে উবু হয়ে ওর হাঁটুর উপর দুই হাত রাখলো। আর জোরে জোরে শ্বাস নিলো।দৌড়ে আসাতে প্রত্যয়ও হাঁপিয়ে গেছে।
প্রত্যয় তুয়ার কাছে গেল। তুয়া দ্রুত নামতে গিয়ে ওর পা মচকে গেছে। চোখের পানি আর নাকের পানি মিলেমিশে একাকার অবস্থা। কারো উপস্থিতি টের পেয়ে তুয়া মুখ তুলে তাকালো। প্রত্যয়কে দেখে তুয়া মুখ ঘুরিয়ে নিলো। প্রত্যয় এসে কিছু বলার আগেই তুয়া ফট করে বলে উঠলো,
–“আমি একা যেতে পারবো।তুমি চলে যাও।”
–“আচ্ছা! সব সময় এক ধাপ বেশি না বুঝলে তোর কি খুব বেশি ক্ষতি হয়? আর আমার সাথেই বা এতো ঘাড় ত্যাড়ামি করিস কেনো বল তো?” (প্রত্যয়)

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

–(তুয়া সাইলেন্ট)
–“এখন কি উঠতে পারবি,নাকি আমি তোকে..?” (প্রত্যয়)
–“না আমাকে তোমার কোলে নিতে হবেনা। আমি একা যেতে পারবো।” (তুয়া)
–“ল্যাও ঠ্যালা!আমি কখন বললাম আমি তোকে কোলে নিবো। আমি কি বাংলা সিনেমার হিরো নাকি,যে এখন এতোগুলো সিঁড়ি বেয়ে তোকে কোলে করে নিচে নামাবো?” (প্রত্যয়)
–(তুয়া সাইলেন্ট)
–“আচ্ছা এবার কি তুই উঠবি?নাকি এখান থেকেই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবো? কোথায় যেন শুনেছিলাম যে ভাগ্যবানের বউ মরে।” (প্রত্যয় ওর গালে হাতে রেখে)
–“তুমি যাও।আমি মোটেও ফাজলামি করার মুডে নেই।” (তুয়ার ওড়নাতে নাকের পানি মুছে)
–“ইয়াক!যাই হোক আমি আবার তোর সাথে কখন ফাজলামি করলাম? তুই কি আমার শালি বা বেয়ান লাগিস, যে তোর সাথে আমি ফাজলামি করবো?তুই তো আম আমার..।” (প্রত্যয়)

তুয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে প্রত্যয় আর বাকি কথাটা বলতে পারলো না। প্রত্যয় তুয়ার দিকে একবার তাকিয়ে চুপ হয়ে গেল। প্রত্যয় ভাল করে তুয়ার পা টা দেখলো। তুয়া কাঁদছে ওর পা টা খুব খারাপ ভাবে মচকে গেছে। প্রত্যয় হঠাৎ করে খুব জোরে টান দিলো। আর তুয়া ও মা গো করে উঠলো।এতক্ষণ তুয়া আস্তে কাঁদলেও এবার ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো। প্রত্যয়ের এখন কেন জানি হাসি পাচ্ছে তুয়ার কান্না দেখে। প্রত্যয় ওর হাসিটা কনট্রোল করে নিলো। তুয়ার বাহু ধরে ওকে দাঁড় করালো। তুয়াকে ধরে ধরে লিফ্টের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ করে প্রত্যয় বলে উঠলো,
–“বাহ্ দারুন ফিলিংস তো। খোঁড়া বউরা তাদের বরদের এভাবে জড়িয়ে ধরে হাঁটে। ব্যাপারটা দারুন রোমাঞ্চকর। বউ সবসময় বরের গলা জড়িয়ে থাকবে। ইস! কি সুন্দর একটা মুহূর্ত বল? তুয়া আমার এখন মনে হচ্ছে, তুই সারাজীবন খোঁড়াই থাকলেই ভাল হবে।” (প্রত্যয়)
–“তুমি এখন আমার সাথে মজা করছো?” (কেঁদে কেঁদে)

–“থাক আর কেঁদে বন্যা করতে হবেনা। আর হ্যাঁ আমার শার্টে নাক মুছবিনা। তোর নাক দিয়ে তো এখন ঝর ঝর করে সর্দি আসছে। ছিঃ! ইয়াক! আমি কিন্তু এসব মোটেও পছন্দ করিনা। আমি হলাম পরিষ্কার পরিছন্ন থাকা স্বাস্থ্য সচেতন ও দায়িত্ববান ছেলে।” (প্রত্যয়)
কথা বলতে বলতে ওরা লিফ্টের মধ্যে ঢুকলো। প্রত্যয়ের কথাটা বলতে দেরি। কিন্তু তুয়ার প্রত্যয়ের শার্টে নাক মুছতে দেরি হয় নি। কারন তুয়ার কাছে প্রত্যয়ের মুখ বন্ধ করার জন্য, এটাই সঠিক পথ বলে মনে হয়েছে। তুয়ার এমন কাজে প্রত্যয় নাক মুখ কুচকে নিলো। কিন্তু আর কিছু বললো না।লিফ্টের ভেতর দুজন চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো। মাঝে মাঝে তুয়ার নাক টানার শব্দ আসছে। আর প্রত্যয় তুয়াকে স্বযত্নে আগলে ধরে আছে।
প্রত্যয়ের ইচ্ছে করেই ওই মুহূর্তটাকে বদলে দিলো। ওই বিষয়টাও চেপে গেল। কারন এখন তুয়াকে জোর করলেও কোন কাজ হবে না। ওকে ভালো করে বলতে হবে। আর একটু সময় দিতে হবে। এজন্য প্রত্যয় ঠান্ডা মাথায় তুয়ার সাথে এমন মজা করলো। যাতে তুয়া আপাতত শান্ত হয়। আর সময় দিলে যাতে নিজে থেকে সব বলে। এখন তুয়াকে জোর করে বা রাগ দেখিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করাটাও উচিত হবেনা। এখন এই পরিস্থিতিতে তাড়াহুুড়ো করাটাও বোকামি হবে।

গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে ওরা বের হয়ে গাড়ির দিকে গেল। প্রত্যয় ইচ্ছে করেই তুয়াকে কোলে নিলো না। কারন তুয়াকে আর অস্বত্বিতে ফেলতে চাচ্ছে না। প্রত্যয় গাড়ির দরজা খুলে তুয়াকে গাড়িতে বসালো। তারপর নিজেও বসতে যাবে, তখনই একটা কাগজে মোড়ানো ঢিল এসে তুয়ার গায়ে লাগলো। তুয়া আহ্ শব্দ করে উঠলো। প্রত্যয় সাথে সাথে গাড়ি থেকে নেমে আশে পাশে তাকালো। কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলো না। প্রত্যয় দ্রুত এসে আবার ড্রাইভিং সিটে বসলো। তুয়া কাগজে মুড়ানো ঢিলটা লুকাতে গেলো। কিন্তু প্রত্যয় খপ করে তুয়ার হাত থেকে সেটা কেড়ে নিলো। আর ওটা খুলে দেখলো,
–“এখন তোমার তো আবার রেট বেশি হয়ে গেছে তাইনা? দুই মালির এক ফুটন্ত গোলাপ বলে কথা। তা গোলাপ তুমি কার?প্রিয়মের সাথে আর ভালো লাগছেনা। তাই এখন প্রত্যয়কে জুটিয়েছো? তবে যাই বলো,প্রত্যয় আর প্রিয়ম দুজনেই বেস্ট। এজন্য দুজনকে নিয়েই একসাথে খেলছো বুঝি? তবে তোমাকে একটা বুদ্ধি দেই। যে বেস্ট পারফর্মার তুমি তাকেই বেছে নাও। আর আমাকে না হয় ফ্রি টাইমে সময় দিও।আমাকে তো অবশ্যই সাথে নিতে হবে। আমাকে আবার ভুলে যেওনা। যদিও আমি তোমাকে আমার কথা ভুলতেই দিবোনা। তুমি হবে আমাদের ফুল। আর প্রত্যয় প্রিয়মের মতো আমিও ভোমর হয়ে গোলাপের মধু পান করবো।”

প্রত্যয় লেখাটা পড়ে ওর নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরলো। রাগে ওর মাথাটা যে ধপ ধপ করছে। প্রত্যয় চোখ বন্ধ করে, নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। এখন কোন ভাবেই রাগ করাটা উচিত হবেনা। তুয়া জানে না ওই কাগজে কি লিখা আছে? তবে প্রত্যয়ের মুখের ভাব ভঙ্গিতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে খারাপ কিছু। তুয়া ভয়ে ভয়ে একবার প্রত্যয়ের দিকে তাকাচ্ছে। আর একবার করে চোখ সরিয়ে নিচ্ছে।প্রত্যয় তখনও কিছু বললো না। বরং প্রত্যয় ড্রাইভ করতে শুরু করলো। কিছুক্ষন পরে হসপিটালের সামনে গিয়ে থামলো। প্রত্যয় তুয়াকে ধরে ওর চেম্বারে নিয়ে গেল। তুয়াকে বেডের উপর শুইয়ে দিলো। একজনকে ফোন করে কি কি যেন বললো। একটু পর একটা নার্স ট্রেতে করে আইস ব্যাগ আর ব্যান্ডজ দিয়ে গেল। প্রত্যয় আইস ব্যাগটা তুয়ার পায়ে চেপে ধরলো। যাতে আপাতত ফোলা আর ব্যাথাটা কমে যায়।
হঠাৎ করে প্রত্যয়ের দরজা কে যেন নক করলো? প্রত্যয় আসার পারমিশন দিলো। প্রত্যয়ের পি.এ এসে জানালো কয়েকজন পেশেন্ট এসেছে। প্রত্যয় একে একে উনাদের পাঠাতে বললো। প্রত্যয় তুয়ার পায়ে আইস ব্যাগটা রেখেই হালকা করে ব্যান্ডজ করে দিলো। যাতে নড়াচড়াতে আইস ব্যাগটা পা থেকে সরে না যায়। তুয়া কিছু বলছেনা, শুধু শুয়ে শুয়ে প্রত্যয়ের কাজ গুলো পর্যবেক্ষণ করছে। প্রত্যয়কে দেখে এখন খুব স্বাভাবিক লাগছে। যেন কিছুই হয়ই নি।

তুয়া বেডের উপর শুয়ে আছে। প্রত্যয় একে একে ওর পেশেন্ট দেখছে। কি সুন্দর ভাবে মুচকি হেসে প্রত্যয় পেশেন্টের সাথে কথা বলছে। তুয়া মাঝে মাঝে প্রত্যয়কে দেখে অবাক হয়। রাগ করার মতো পরিস্থিতিতেও প্রত্যয় নিজেকে স্বাভাবিক রাখে। তুয়া শুয়ে শুয়ে প্রত্যয়কেই পর্যবেক্ষণ করছে। প্রত্যয়ের প্রতিটা পেশেন্টের সাথে এমন অমায়িক ব্যবহার দেখে তুয়া নিজেও অবাক হচ্ছে।
প্রত্যয়কে পর্যবেক্ষণ করতে করতে তুয়ার চোখে ঘুম নেমে আসে। প্রত্যয় দেখেছে তুয়াকে ঘুমিয়ে যেতে। তাই আর কিছু বলেনি। বরং ধীরে সুস্থেই পেশেন্ট দেখছে। প্রত্যয় উঠে অনেক আগেই তুয়ার পায়ে থেকে আইস ব্যাগটাও সরিয়ে নিয়েছে। তা না হলে তুয়ার আবার ঠান্ডা লেগে যাবে। প্রত্যয়ের সব পেশেন্ট দেখতে প্রায় দেড় ঘন্টার মত সময় লেগে যায়। প্রত্যয় পেশেন্ট দেখা শেষ করে। লো ভয়েজে তুয়ার মাথায় হাত রেখে তুয়াকে ডাকে।

তুয়া চোখ খুলে তাকায়। প্রত্যয় তুয়াকে ধরে নামায়। তুয়া বলে পায়ের ব্যাথা কমে গেছে। প্রত্যয় ওয়াশরুম দেখিয়ে তুয়াকে বলে ফ্রেশ হয়ে আসতে। তুয়া ফ্রেশ হয়ে আসে। প্রত্যয় তুয়াকে নিয়ে কোথায় একটা যায়। প্রত্যয় যা যা বলে তুয়া তাই করে। তুয়া টু শব্দ করার সাহস পায়নি। প্রত্যয় ওর হসপিটালেই তুয়ার সব টেস্ট গুলো করায়। (ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন উইথ এসিটিক এসিড) পদ্ধতিতে যে কোন মহিলার জরায়ুতে ক্যান্সারের জীবাণু রয়েছে কিনা তা সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে। আর এই টেস্ট সহ তুয়ার আরো কয়েকটা টেস্টও প্রত্যয় করায়। আর এই টেস্টের রিপোর্ট দ্রুত ওকে জানাতে বলে। তারপর প্রত্যয় আর তুয়া হসপিটাল থেকে বেরিয়ে পড়ে।
বাইরে থেকে লাঞ্চ সেরে দুজনেই বাসায় ফিরলো। তুয়া রুমে ঢুকেই ঠাস করে বেডের উপর শুয়ে পড়লো। শরীরটা যেন আর চলছেনা। প্রত্যয় ওর হাতের ওয়াচটা খুলতে খুলতে বললো,

বুকের বা পাশে পর্ব ২৬

–“বাইরে থেকে এসে আগে ফ্রেশ হতে হয়।জামা কাপড়ে কত ধুলাবালি থাকে। এসব কি আমাকে বলে দিতে হবে।” (প্রত্যয়)
–“একটু পর যাচ্ছি।”
–“না এখনই যাবি আর তারাতারি উঠ।”
তুয়া বিরবির করতে করতে ওর ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। তুয়া সাওয়ার নিয়ে বের হলে প্রত্যয় গেল ফ্রেশ হতে।তুয়া চুপটি করে শুয়ে আছে। প্রত্যয় তুয়ার দিকে একবার তাকালো। কিছু একটা বলতে যাবে তখনই রুমের দরজায় কে যে নক করলো? প্রত্যয় দরজা খুলে দেখলো প্রত্যয়ের আম্মু। প্রত্যয়ের আম্মু প্রত্যয়কে বললো,
—“আব্বু তুয়া কই?”
–“রুমেই আছে। তুয়া আম্মু ডাকছে তোকে।” (তুয়ার দিকে তাকিয়ে)
তুয়া উঠে এসে দরজার কাছে দাঁড়ালো। প্রত্যয়ের আম্মু তুয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
–“তুয়া তোর আম্মু এসেছে।তোদের ডাকছে, তোরা দু’জনই চল।”
প্রত্যয় হাতের টাওয়াল টা মেলে দিলো। তুয়া আগে চলে গেল। প্রত্যয় চুল গুলো ঠিক করে রুম থেকে বের হলো।তুয়ার আম্মু গম্ভীর হয়ে বসে আছে। প্রত্যয় গিয়ে সোফাতে বসে মুচকি হেসে উনার কথা বললো। তুয়ার আম্মু তুয়ার সাথে কথা বললো না। কিন্তু প্রত্যয়ের সাথে স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছে। তুয়ার আম্মু প্রত্যয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,

–“আব্বু আজকে বিকেলে তোমার পরিবার সহ আমাদের বাসায় এসো। তুরাগ আর তিন্নির বিয়ের ডেট ঠিক করতে আসবে।”
–“জ্বি আন্টি।” (মুচকি হেসে)
তারপর তুয়ার আম্মু উঠে দাঁড়ালো।আর তুয়ার দিকে একবার রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,
–“আপনার মতো লোভী আর সুবিধাবাদী মেয়েকে বলার ইচ্ছে আমাদের ছিলো না। কিন্তু সমাজে তো বাস করি। তাই না চাইলেও মনের বিরুদ্ধে গিয়েও কিছু করতে হয়। তো আপনিও আসবেন যদি আপনার ইচ্ছে হয়। আপনার তো আবার ক্ষনিকে ক্ষনিকে মত বদলানোর অভ্যাস আছে। যখন তখন পাল্টি খেতেও দ্বিধাবোধ করেন না। তো যদি পারেন আপনার পায়ে ধুলা দিয়ে আসবেন আমার বাসায়। আমাদের আরো ধন্য করে দিয়ে আসবেন।” (তুয়ার আম্মু দাঁতে দাঁত চেপে)
তারপর তুয়ার আম্মু চলে গেল। আর তুয়া জোর পূর্বক একটা হাসি দিলো। চোখের পানিটা মুছে রুমের দিকে হাঁটা দিলো।

বুকের বা পাশে পর্ব ২৮