বেলা শেষে পর্ব ৩

বেলা শেষে পর্ব ৩
মেঘাদ্রিতা মেঘা

আমার মাথা কোন কাজ করছেনা ভাইয়া এসব আবোল তাবোল কি বলছে আমায়।
আমি আবার কখন ভাইয়াকে বাসা থেকে অপমান করে বের করে দিলাম?
ভাইয়া কি দিনের বেলা ঘুমিয়ে কোন খারাপ স্বপ্ন দেখেছে নাকি?

_আদ্রিতা,কি হয়েছে রে?
_আম্মু দেখোনা আদ্র ভাইয়া কি সব আবোলতাবোল বলছে।
আম্মু আমার কাছ থেকে ফোন টা নিয়ে হ্যালো বলতেই আদ্র ভাইয়া ওপাশ থেকে জিজ্ঞেস করে,
_ফুফু তুমি ঠিক আছো তো?
তুমি বাসায়?কিন্তু আদ্রিতা যে আমাকে বল্লো তুমি বাড়ী ছেড়ে চলে গেছো।
আর আমাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিলো।
আমিতো তোমাদের বাসায়ই গিয়েছিলাম একটু আগে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

_আমি বাসা ছেড়ে চলে এসেছি ঠিকই,কিন্তু আদ্রিতা তোকে কিভাবে বাসা থেকে বের করে দিবে?
আদ্রিতা নিজেও তো আমার সাথে বাড়ী ছেড়ে চলে এসেছে।
_ফুফু তুমি ঠিক আছো তো?
আদ্রিতাকে আমি নিজের চোখে দেখেছি ও ওর সৎ মায়ের কোলে মাথা রেখে আঙ্গুর খাচ্ছে।

ওই মহিলা সোফায় বসে ওকে নিজ হাতে মুখে তুলে ওকে খাওয়াচ্ছে।
আমি যখন তোমাদের বাসায় গেলাম এক বয়স্ক মহিলা এসে গেইট খুল্লেন।
মনে হয় তিনি ওই মহিলা,মানে ফুফার ২য় স্ত্রীর মা।
তারপর ভেতরে ঢুকতেই দেখি হল রুমের সোফায় বসে আছেন ওই মহিলা,আর তার কোলে মাথা রেখে সোফায় শুয়ে শুয়ে আঙ্গুর খাচ্ছে আদ্রিতা।

দেখেই তো আমার মেজাজ বিগড়ে গেলো।
আমাকে দেখে ফুফার ২য় স্ত্রী জিজ্ঞেস করলো আমি কে,কাকে চাই।আমি তাকে বললাম,
আমার ফুফু কোথায়?আমি আদ্রিতার মামাতো ভাই।
ওই আদ্রিতা,ফুফু কোথায় রে?
তখন মহিলা উত্তর দিলো তুমি নাকি বাড়ী ছেড়ে চলে গেছো।
আমি আদ্রিতাকে বললাম,
উনি কি বলছেন এসব?
ফুফু কোথায়?

ফুফু বাড়ী ছেড়ে চলে গেছেন মানে?
তুই কোন কথা বলছিস না কেন?
তখন আদ্রিতা ফট করে সবার সামনে বলে,
আপনি কে?আপনাকে আমি চিনিনা।
আম্মু বলেছে না আপনার ফুফু এ বাড়ী ছেড়ে চলে গেছেন?
আপনিও চলে যান।

আমি তো ওর কথা শুনে রীতিমতো অবাক,
এই মেয়ে ওই মহিলাকে আম্মু বলছে।
আবার আমাকে বলছে চলে যেতে।
আমি ওকে বললাম,এক থা প্পড়ে তোর গাল লাল করে দিবো।
ফুফু কোথায় বল,আর তুই আমাকে চিনিস না?
গালের উপর দুই একটা পড়লেই ঠিক চিনতে পারবি।
এ কথা বলার সাথে সাথে আদ্রিতা আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেইটের বাইরে বের করে দিয়ে ধুম করে গেইট লাগিয়ে দিলো।

চিন্তা করো কত্ত বড় বেয়াদব।
যাইহোক,তুমি ঠিক আছো তো ফুফু?
আব্বুর নাকি তোমার জন্য খারাপ লাগছিলো।
তাই আম্মু আমাকে পাঠিয়েছিলো তোমাকে আর আদ্রিতাকে নিয়ে আসতে।
কিছু দিন বেড়িয়ে যাবার জন্য।
তাহলে আব্বুরও ভালো লাগতো আর তোমাদের আমাদেরও।
কিন্তু বাসায় গিয়ে যা দেখলাম তাতে তো আমার কিছুই আর ভালো লাগছেনা।

_তুই ভাইয়াকে কিছু বলিস নি তো?
বা ভাবীকে।
_না ফুফু,আমি এখনো বাসায় যাইনি।
_কাউকে কিছু বলিস না কেমন?
আমি কালই তোদের বাসায় আসছি আদ্রিতাকে নিয়ে।
ভাবীকে বলিস,ফুফুর একটু কাজ ছিলো তাই আজকে আসতে পারেনি।
কাল আসবে।

_কিন্তু ফুফু আদ্রিতা তো বাসায়।ওকে তুমি পাবে কোথায়?
_আমি তোকে বাসায় এসে সব বলছি।
আপাতত কাউকে কিছু বলিস না তুই।
অযথা সবাই চিন্তা করবে।
_আচ্ছা ফুফু,তুমি ঠিক আছো তো?
_হ্যাঁ আমি ঠিক আছি,আর আদ্রিতাও আমার সাথে আছে।চিন্তা করিস না।
_ধুর আমি বুঝতেই পারছিনা কিছু।
আদ্রিতা আবার তোমার কাছে গেলো কিভাবে।

_বললাম তো দূর থেকে বললে এখন কিছুই বুঝবিনা।
কাল এসে আমি তোকে সব বলছি।
রাত টুকু অপেক্ষা কর।
_আচ্ছা ফুফু,তুমি সাবধানে থেকো।
_আচ্ছা রাখছি।
_হুম।

তারপর আমাকে আর আম্মুকে দুজন মহিলা তাদের বাসায় নিয়ে যান।তারা সম্পর্কে দুজন জা হন।
তাদের সাথে অনুদ্রিতাদের খুব ভালো সম্পর্ক।
তারা আমাদের ফ্রেশ হয়ে নিতে বলেন,তারপর আমাদের খেতে দেন।
আমরা ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নেই।
তারপর তারা দুজনই আম্মুকে জিজ্ঞেস করেন,আমি কেমন।
আমি কেমন আছি এই সব।
আর তারা অনুদ্রিতা কেমন তা ও বলা শুরু করেন।
তাদের মধ্যে একজন বলেন,

_জানো তোমার বোন কেমন?
_কেমন?
_একদম দু্ষ্টু একটা মেয়ে।সারা এলাকা নিজেই মাথায় করে রাখে।
সবাইকে পেরেশানিতে রেখে দেয়।
কার গাছের ফল, কার পুকুরের মাছ,সব সে পেরে ধরে নিয়ে আসে।
তোমার মা কত না করতেন।
কিন্তু শুনতোইনা।

হি হি করে হেসে বলতো,ওর নাকি এগুলো করতে ভালো লাগে।
বাসায় তো একটু সময়ের জন্যও থাকতোনা।
রাত ছাড়া।
সারাদিন টই টই করে ঘুরে বেড়াতো।
তোমার মা ওকে নিয়ে কত যে চিন্তা করতো।
জানেন আপা,ওদের মা আদ্রিতার কথা প্রায়ই আমাদের কাছে বলতো।
বলতো,মেয়েটাকে যদি একবার দেখতে পেতাম।

আমরা বলতাম,যাও তাহলে দেখে আসো।
সে বলতো,যেতে তো পারি।
কিন্তু মেয়েটারে দেখলে যে রেখে আসতে মন চাইবেনা।
তাছাড়া যারা এখন ওর বাবা মা,তারাও কষ্ট পাবে আমি যদি গিয়ে মেয়ের জন্য কান্নাকাটি করি।অনুদ্রিতা দেখলেতো নিয়ে আসতে চাইবে ওকে।তখন আমি কি করবো?
আমি তো আর নিয়ে আসতে পারবোনা।

তখন কষ্ট আরো বাড়বে।
থাক,আমার মেয়ে তাদের কাছেই ভালো আছে,ভালো থাক।
তুমি ভালো আছো তো মা?
_হ্যাঁ আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।
আম্মু আব্বু আমাকে কখনো বুঝতেই দেন নি আমি যে তাদের পালিত সন্তান।
_যাক শুনে খুশি হলাম।
এবার তাহলে তোমরা শুয়ে পড়ো।
অনেক পথ জার্নি করে আসছো।

_কি বলে যে আপনাদের ধন্যবাদ দিবো ভাবী।আপনারা যা করলেন।
_না আপা,কি বলেন।
ধন্যবাদ দিতে হবেনা।
আপনারা আমাদের আদ্রিতাকে এত ভালো রেখেছেন।
তাতেই আমরা খুশি।
তারা আমাদের ঘুমাতে বলে চলে যান।
আমি আর আম্মু শুয়ে পড়ি।
_আম্মু আদ্র ভাইয়া কি বল্লো?
সে এমন ভুলভাল কি বল্লো আমাকে?

আমি নাকি তাকে অপমান করে বাসা থেকে বের করে দিয়েছি।
_এখন ঘুমা,
সকাল হোক,
তোর মামার বাসায় গিয়ে আদ্রর সামনেই সব বলবো।
_কিন্তু অনুদ্রিতা এখন কোথায় আছে,কেমন আছে, ওর সন্ধান পাবো কি করে?
_ওকে নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবেনা।

ও যেখানে আছে ভালো আছে।
আদ্রকে বলে ওর খোঁজ খবর নিবোনে।
_আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি আর আম্মু ঘুমিয়ে পড়ি।
সকাল হতেই নাস্তা করে আমরা ভদ্র মহিলা দুটোকে বিদায় জানিয়ে চলে আসি মামার বাসায়।
মামা মামী তো আমাদের দেখে মহা খুশি।

কিন্তু আদ্র ভাইয়া মুখ টা একদম কালো করে রেখেছে আমাকে দেখে।
অথচ অন্য সময় কত সুন্দর হাসি টাই না দিতো আমাদের দেখে।
মামী আমাদের ফ্রেশ হতে বললেন।
আমরা ফ্রেশ হলাম।
আদ্র ভাইয়া আম্মুর কাছে আসলেন।
এসে বললেন,

_ফুফু তুমি ভালো আছো?ঠিক আছো?
_হুম ঠিক আছি আমি।
_এবার বলো,আদ্রিতা তোমার কাছে কি করে এলো?
ওকে তো আমি বাসায় দেখে এসেছি,আর ও আমার মুখের উপর ধুম করে গেইট ও লাগিয়ে দিয়েছে।
_ওহ ভাইয়া,বার বার কি আবোল তাবোল বলছো?
আমি কেন তোমার মুখের উপর গেইট লাগাতে যাবো?

_তাহলে কি তোর ভূত লাগিয়েছে?
_না,ওর ভূত লাগায় নি।
অনুদ্রিতা লাগিয়েছে।
_অনুদ্রিতা?এ আবার কে?
_হুম অনুদ্রিতা,আদ্রিতার জমজ বোন।
_কিহ! আদ্রিতার জমজ বোন?
_হ্যাঁ তোকে আমি সব খুলে বলছি,

এরপর আম্মু আদ্র ভাইয়াকে আমার আর অনুদ্রিতার কথা সব খুলে বলেন।আমাকে দত্তক নেয়া থেকে শুরু করে, অনুদ্রিতাকে খুঁজতে গ্রামে যাওয়া পর্যন্ত সব কিছু।
আর এও বলেন অনুদ্রিতা আমাকে খুঁজতেই ওই বাসায় গিয়েছে।
আদ্র ভাইয়া এবার সব বুঝতে পেরেছে।
বাসায় আমি ছিলাম না,ছিলো অনুদ্রিতা।
_সবই তো বুঝলাম,কিন্তু অনুদ্রিতা তাহলে ওই মহিলাকে আম্মু কেন ডাকছে?
আমাকে না হয় চিনেনি।

কিন্তু ওরকম ব্যবহার কেন করলো?
আর তাছাড়া,ওই মহিলার কোলে শুয়ে আছে ও।
আবার মহিলা ওকে আঙ্গুর ও খাওয়াচ্ছে।
কয়েক ঘন্টার মধ্যে এত খাতির কিভাবে এদের?
মহিলা কি দেখেনি আদ্রিতা তোমার সাথে বাসা থেকে বেড়িয়ে গেছে?
তাহলে ওই মেয়েকে আদ্রিতা মনে করে এত আদর কেন করছে?

_উনি অনুদ্রিতাকে আদ্রিতা মনে করেছে।
এটা ঠিক।
কিন্তু এত আদর কেন করছে আমিও ঠিক বুঝতে পারছিনা।
_আম্মু আমি জানি,
_কি জানিস?

_অনুদ্রিতাকে আমি ভেবে আব্বুর ২য় স্ত্রী কেন এত আদর যত্ন করছেন।
কারণ আব্বু তার সামনে আমি বেড়িয়ে আসার আগ মুহূর্তে বলে দিয়েছেন,
আব্বু ওই বাড়ীর অর্ধেক আমার নামে লিখে দিয়েছেন।
তাই আমার আদর তার কাছে বেড়ে গিয়েছে।
কিন্তু অনুদ্রিতা কেন উনাকে আম্মু ডাকছে?
আদ্র ভাইয়া,ও কি বুঝতে পেরেছে আমার আম্মু যে তোমার ফুফু?ওই মহিলা না?

_হ্যাঁ খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছে।
আর সব চেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে,
ও কিন্তু আদ্রিতা সেজেই আছে ওখানে।
অনুদ্রিতা হিসেবে নয়।
আর ও যখন আমাকে অপমান করছিলো,ওই মহিলা কি সুন্দর হাসছিলো।

_আব্বু ছিলেন না বাসায়?
_না ফুফা ছিলেন না।
_আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা।
_আমিও নারে।ফুফু তুমি কি কিছু আন্দাজ কর‍তে পারছো?
_না।তবে আমার মনে হয়না অনুদ্রিতা এমন কিছু করবে,যাতে আদ্রিতার ক্ষতি হয়।
কোন না কোন রহস্য তো ঠিকই আছে।
_কিন্তু তুমি বাসা থেকে চলে কেন গেছো?
_আরে এ আবার আরেক কাহিনী।
ওই মহিলা তার মা বোন মিলে তোর ফুফাকে ঠকাচ্ছে।
তার মাথাটা খারাপ করে দিচ্ছে।

তাই তাদের প্ররোচনায় পড়ে তোর ফুফা আমাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে।
আমাকে বের করে দিয়েছে বলে আদ্রিতাও আমার সাথে বেরিয়ে এসেছে।
_কিন্তু এখন আমরা কি করবো ফুফু?সব কিছু ঠিক করবো কিভাবে?সব ঝামেলার সমাধান হবে কি করে?
_এখন প্রথম কাজই হচ্ছে তোর ওই বাসায় এন্ট্রি নেয়া।
_আমি?
আমি কেন ওই বাসায় যাবো?

_কারণ যা করার এখন সব তোকেই করতে হবে।আমি আর আদ্রিতাতো আপাতত যেতে পারছিনা।
তাই তুই যাবি।
ওখানে থেকে সব ঝামেলা মিটমাট করবি।
_তোমরা নেই আমি কিভাবে যাবো ওই বাসায়?
আর ফুফা কি আমাকে এলাউ করবে?
_তোর ফুফা খারাপ মানুষ নারে।তিনি আগের মতই আছেন।
শুধু খারাপের পাল্লায় পড়ে মাথাটা একটু বিগড়ে গেছে।
তোকে সে খুশি মনে থাকতে বলবেন।আমার রাগ তোর উপর ঝাড়বেন না।

_কিন্তু আমি কি বলে থাকবো?
_তুই বলবি,কয়দিন পর তোর চাকুরীর জন্য একটা পরীক্ষা আছে।
তাই তোর কিছুদিন কোচিং ক্লাস করা লাগবে।
আর কোচিং সেন্টার আমাদের বাসা থেকে কাছে।
_আচ্ছা ঠিক আছে।তা না হয় বললাম।
কিন্তু ওই বাসায় গিয়ে আমার প্রথম কাজ কি?
_ওই বাসায় গিয়ে তোর প্রথম কাজ হচ্ছে অনুদ্রিতার সাথে কথা বলা।
ওকে সব কিছু খুলে বলা।

তারপর দুজন মিলে প্ল্যান করে, জুটি বদ্ধ হয়ে,যেভাবে পারিস ওই মহিলা আর মহিলার মা বোনের প্রতারণার পর্দা তোর ফুফার সামনে ফাঁস করা।
_কিন্তু ওই অনুদ্রিতা তো আদ্রিতার ভাব নিয়ে বসে আছে।
আর যেভাবে ওই মহিলার কোলে শুয়ে ছিলো।
ও কি ওই মহিলার বিপক্ষে যাবে?
_তুই আগে যা।
তারপর অনুদ্রিতাকে আদ্রিতার সাথে কথা বলিয়ে দিস।
তাহলেই হবে।

যা বলার আদ্রিতা আর আমি ওকে বুঝিয়ে বলবোনে।
তুই গিয়ে আগে ওর সাথে কথা বল।
ওকে তোর দলে আন।
_ধুর কি এক ঝামেলা।
যেই ভাবে ওইদিন মুখের উপর গেইট লাগিয়ে দিলো।
না জানি এবার কি করে।
এত্ত ফাজিল মেয়ে বাবা।
আর আমাদের আদ্রিতা কত্ত ভালো।
_হুম এই ভালো মেয়েটাকে তো কত কিছু বলছিলা।
রাগ করছিলা আমার সাথে।

_সরি রে।
মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিলো।
আমি কি জানি নাকি ওটা আমাদের আদ্রিতা না,পঁচা মেয়ে অনুদ্রিতা।
_এই খবরদার!আমার বোনকে পঁচা বলবা না।
_ওরে,লেগে গেলো?
_লাগবেনা?হাজার হলেও জমজ বোন বলে কথা।
_বুঝেছি বুঝেছি,
যাই আগে তারপর বলবোনে,তোর বোন পঁচা নাকি ভালো।
আচ্ছা ফুফু,
বাবা মাকে কি বলবো তাহলে?
কোথায় যাচ্ছি বা কি?

_বলবি,একটা চাকুরির জন্য ক্লাস করতে হবে কিছু দিন।
বন্ধুর বাসায় যাচ্ছিস।
ওখানে থেকেই ক্লাস করবি।
আমি চাইনা ভাইয়া ভাবী কোন কিছু জানুক।
আমাকে যে তোর ফুফা..
এগুলো শুনলে ভাইয়া সহ্য করতে পারবেন না।
এমনিতেই তার ২য় বিয়ের কথা শুনে ভাইয়া অনেক কষ্ট পেয়েছেন।
আমি চাইনা আর কষ্ট পাক।

_আচ্ছা ফুফু আচ্ছা।
মামী আমাদের খাওয়াদাওয়া করার জন্য ডাকছেন।
আমরা সবাই এক সাথে বসে খাওয়া দাওয়া করলাম।
আদ্র ভাইয়া খাবার টেবিলে বসে মামা মামীকে কোচিং এর কথা বল্লো।
আর বল্লো তার কিছু দিন বন্ধুর বাসায় থাকতে হবে।
মামা মামীও অনুমতি দিলেন যাওয়ার জন্য।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে,

রেস্ট নিয়ে বিকেলেই রওনা দেয় আদ্র ভাইয়া।
আম্মুকে বলে,শুধু মাত্র তোমাদের মুখের দিকে চেয়ে আমি ওই অ ভদ্র মহিলা আর নাগিন টার সামনে নিজের জান নিয়ে যাচ্ছি।
নইলে কোন দিনও যেতাম না।
_এই ভাইয়া এই,আমার বোন কে নাগিন বলবা না।
_তাহলে কি বিষধর নাগিনী বলবো?
_আম্মুউউ ভাইয়াকে কিছু বলোনা।
_আদ্র,
ওখানে গিয়ে অনুদ্রিতার সাথে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে আবার শত্রুতা বাধিয়ে ফেলিস না।

_দেখা যাক ফুফু কি হয়।
আসছি তাহলে দোয়া করে দাও।
_হুম ভালো মত যা,
আর দোয়া করি তুই তোর মিশনে সাক্সেস হ।
আমাদের সংসারে সুখ ফিরে আসুক।
_আদ্রিতা,আসছিরে।
_সাবধানে যেও,সাবধানে থেকো।
আমার বোন আবার যেন গেইট লাগিয়ে দেয়না।হি হি।
_আচ্ছা আচ্ছা,

তোরাও ভালো থাকিস।
ফুফুকে দেখে রাখিস।
আদ্র ভাইয়া মামা মামীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দেয় আমাদের বাসার উদ্দেশ্যে।
বাসায় পৌঁছে কলিং বেল বাজাতেই গেইট খুলে অনুদ্রিতা।
_হাই নাগিন।
_আপনি আবার এসেছেন?
চলে যান এক্ষুনি।
_উঁহু,
এবার তো যাবার জন্য আসিনি।
এবার এসেছি থেকে যেতে।
_মানে?

আমি কিন্তু আজও মুখের উপর গেইট বন্ধ করে দিবো।
তাই ভালো মত বলছি চলে যান।
দেখি তো কিভাবে গেইট বন্ধ করতে পারো।
এই বলে আদ্র ভাইয়া অনুদ্রিতাকে ধাক্কা দিয়ে পেছনে নিতে নিতে দেয়ালের কাছে নিয়ে যায়।অনুদ্রিতা দেয়ালে আটকে যায়।
_সরুন বলছি,সরুন।

বেলা শেষে পর্ব ২

ছাড়ুন আমাকে।
আদ্র ভাইয়া অনুদ্রিতার চোখে চোখ রেখে বলে,
_ধরেই যখন ফেলেছি,
সহজে ছাড়ছিনা।

বেলা শেষে পর্ব ৪