ভালোবাসার ভিন্ন রং পর্ব ৩৬ শেষ অংশ 

ভালোবাসার ভিন্ন রং পর্ব ৩৬ শেষ অংশ 
সাইয়্যারা খান

গাড়ীতে আর তেমন একটা কথা হলো না রোদ আদ্রিয়ানের মাঝে। ইয়াজ সেখান থেকেই চলে গিয়েছে। বাসায় এসে ফ্ল্যাটে ডুকতেই মিশি দৌড়ে এসে রোদের হাটু জড়িয়ে ধরলো। রোদ একটু ঝুঁকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করে বললো,
— কি হয়েছে আমার কিশমিশের? এই যে মাম্মা এসে পরেছি।
মিশি ছোট হাতে মায়ে’র গলা জড়িয়ে ধরলো। মিষ্টি কন্ঠে শুধালো,

— মিশি মিস মাম্মা।
রোদ মিশিকে আদর করে নামাতে নিলো কিন্তু মিশি নামবে না। গলা জড়িয়ে ধরে রেখেছে। রোদ ও আর নামাতে চাইলো না। বাচ্চাটা সারাটা দিন মা ছাড়া ছিলো। পাশেই সোফায় মিশান মাথা নিচু করে বসে আছে। রোদ মিশিকে কোলে নিয়েই ছেলের পাশে বসলো। আঙুল দিয়ে খোঁচা দিয়ে বললো,
— কি হয়েছে আব্বু? মন খারাপ?
মিশান সরে বসলো। রোদ আবারও পাশ ঘেঁষে বসলো। এবার সরলো না মিশান। রোদ ওর কাঁধে হাত রাখতেই মিশান মুখটা রোদের কাঁধের দিকে দিয়ে বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

— মিশান ও মিসড মা।
রোদ ফিক করে হেসে বললো,
— আব্বাজান আপনাকেও কি কোলে নিব?
— হু।
— আল্লাহ! আমার কোলে জায়গা হবে?
মিশান ঠেলে ঠুলে নিজের জায়গা করে নিলো। মায়ের কোলে মাথা দিয়ে সোফায় পা মেলে দিয়ে বললো,
— এই যে জায়গা হ’য়েছে।
রোদ খুৃজে পেলো না একদিন একটু দেড়ী করায় বাপ কঁপাল ফাটিয়েছে আর ছেলে-মেয়ে শোকে শোকাহত হয়ে গিয়েছে। যত দোষ নন্দঘোষ!

দুই বাচ্চা রেখে রোদ গেলো গোসল করতে। লম্বা একটা সাওয়ার দরকার এখন কিন্তু সেটা সম্ভব না। বাচ্চারা না খেয়ে এখনও। রোদের নিজের ও শরীর ক্লান্ত লাগছে। তারাতাড়ি গোসল করে মাথায় টাওয়াল পেচিয়েই কিচেনে ডুকলো। ভাত বসিয়েই গিয়েছিলো। ফ্রিজ থেকে রান্না করা তরকারি, ডাল বের করে গরম করে সালাদ বানিয়ে সব টেবিলে রাখলো। মিশি আর মিশান তো এখানেই। মা কে সারাদিন পেয়ে আশে পাশেই ঘুরঘুর করছে। একবার মিশানের সাথে জোরে ধাক্কাও খেলো। সেই থেকে মিশান একটু টেবিলে বসেছে। রোদ ভাতের ডিশটা টেবিলে রাখতে রাখতে মিশানকে বললো,

— মিশান বাবা’কে ডাকো তো।
মিশান উঠার আগেই মিশি দৌড়ে যেতে যেতে বললো,
— মিশি ডাকবে বাবাইকে।

বলেই ফুঁরুৎ। রোদ প্লেটে খাবার বাড়তে বাড়তেই আদ্রিয়ানের আগমন হলো। মাত্র গোসল করেছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে। চুল মুছে নি ঠিক মতো৷ টুপটাপ পানিতে টিশার্টের কাঁধ ভিজিছে কিছুটা। মিশান আর আদ্রিয়ানের খাবারটা বেড়ে সামনে দিয়ে রোদ রুমে থেকে টাওয়াল নিয়ে এলো। আদ্রিয়ানের চুলগুলো ভালোভাবে মুছে দিলো। আদ্রিয়ান কিছু না বলে খাওয়াতে মনোযোগ দিলো। রোদ আবার মিশিকে পাশে বসিয়ে খায়াতে লাগলো। এত কিছুতেও শান্তি নেই। মিশান খাবার থেকে সবজি আলাদা করছে। খুঁটে খুঁটে সবগুলো কিভাবে যেন সরায়। রোদ যদি মুখে তুলে খাওয়ায় তখন আবার সবই খাবে। মিশিকে খাওয়ানো শেষ হতেই রোদ উঠে মিশানের প্লেটটা হাতে তুলে নিলো। মিশান চমকে তাকাতেই রোদ কিছুটা শাসানোর ভঙ্গিতে বলে উঠলো,

— এই সবজি ফেলেছো কেন? মাইর খাবা আমার হাতে। দিন দিন বড় হচ্ছো আর খাবার নিয়ে টাল্টি ফাল্টি করছো।
মিশান চোরা মুখে মাথা নিচু করে রেখেছে। রাখবে না কেন? মা বকেছে তাকে। রোদ নিজেই ঐ সবজি সহ লোকমা বানিয়ে মিশানের মুখের সামনে ধরলো। মিশান ও মুখটা ভোতা করে সবটুকু খেলো। বকলেও সব বকা খেয়ে নিবে মিশান তবুও তো মা খায়িয়ে দিয়েছে। মিশানের মুখ মুছিয়ে দিয়ে রোদ খেতে বসলো। সারাদিনের খাটুনিতে শরীর ভীষণ ক্লান্ত হয়ে আছে। খেতেও মন চাইছে না।

কোনমতে প্লেটের খাবার টুকু খেয়ে উঠলো। আদ্রিয়ান খেয়ে নিজেই টেবিলের সব গুছিয়ে রাখলো৷ পাতিল একটা চুলায় বসিয়ে দুধের প্যাকেট ঢেলে দিলো। বাচ্চা দুটো একটাও আজ সারাদিন দুধ খায় নি। তিন গ্লাসে দুধ ঢেলে একটাতে জুনিয়র হরলিক্স আর বাকি দুটোতে নরমাল হরলিক্স মিশিয়ে মিশানের রুমে ডুকলো। রোদের কোলে বসা মিশি। মায়ের গলা ধরে সারাদিনের গল্প করতে ব্যাস্ত সে। পাশেই মিশান বই হাতে শুয়ে শুয়ে পড়ছে। আদ্রিয়ান ডুকে মিশানকে ডাক দিতেই মিশান উঠে বসলো। মিশান আর রোদের হাতে দুই গ্লাস দিয়ে মিশিরটা নিজেই খায়িয়ে দিলো। মিশি দুধ খাওয়ার কিছুক্ষণ পর রোদের কোলেই ঘুমে ঢোল। রোদ আস্তে করে ওকে বেডে শুয়িয়ে মিশান থেকে বই নিয়ে বললো,

— আজ থাক। অনেক সকালে উঠেছে। ঘুমাও। মা পাশে আছি।
মিশান শুতেই রোদ ওর মাথায় হাতিয়ে দিলো। ঘুমিয়েছে বুঝতেই এসির টেমপারড বাড়িয়ে ফ্যান ছেড়ে লাইট অফ করে চলে গেল রোদ। ড্রয়িং রুমেরও সব লাইট অফ করে রুমের দিকে বা বাড়ালো। আদ্রিয়ানের সাথে কথা বলতে এখন মোটেও মন চাইছে না। এই লোক কথা বলছে না। হয়েছে টা কি সেটাই জানতে মন চাইছে রোদের কিন্তু আপাতত শরীর সায় দিচ্ছে না আবার এমন করে থাকতেও পারছে না। রুমে ডুকে দেখলো আদ্রিয়ান হেলান দিয়ে বসে চোখ বুজে আছে। রোদ ধীর পায়ে এগিয়ে এসে আদ্রিয়ানের কোলে উঠে গলা জড়িয়ে ধরে রাখলো। এখন একটু শান্তি লাগছে ওর। আদ্রিয়ান তখনও ধরে নি ওকে।
বেশ খানিকটা সময় পর রোদ বলে উঠলো,

— কি হয়েছে?
আদ্রিয়ান উত্তর দিলো না। রোদ মুখটা তুলে কাটা জায়গার ব্যান্ডেজটায় ছুঁয়ে বললো,
— দেখে শুনে থাকবেন তো নাকি? একটুর জন্য চোখে লাগেনি। কি হলো কথা বলুন?
আদ্রিয়ান কেমন করা চোখে তাকালো রোদের দিকে। রোদ ওর দিকে ভ্রু নাচিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করলো, “কি?”
আদ্রিয়ান কোল থেকে রোদকে নামিয়ে শান্ত কন্ঠে বললো,

— এতটুকু কথার জন্য এত বড় শাস্তি আমাকে আর আমার সন্তানদের না দিলে কি হতো না রোদ? আমার কথা নাহয় বাদ ই দিলাম। আমার বাচ্চা দুটো তোমার জন্য কতটা পাগল তা কি তুমি জানো না? নাকি জানো দেখেই আজ হেনস্তা করলে?
রোদের চোখ টলমল করে উঠলো। কানের কাছে বাজতে লাগলো,”আমার বাচ্চারা”। আদ্রিয়ানে বাচ্চা? হ্যাঁ আদ্রিয়ানের ই তো। রোদের না। এতদিন সবাই বলতো আজ নাহয় আদ্রিয়ান ও বললো। কিন্তু কিসের দোষে রোদকে এত কথা শুনানো হচ্ছে? কি করেছে রোদ? প্রশ্ন গুলো গলায় দলা পাকাচ্ছে। ঢোক গিললো রোদ। আদ্রিয়ান আবারও বলে উঠলো,

— আমি তোমাকে কাছে টানি নি কেন সেটা এখন তুমি জানো। আমার চিন্তায় শুধু মাত্র আমি আর আমার চাহিদায় সীমাবদ্ধ না রোদ। আমার সবসময় মনে হতো যদি একটা গন্ডিতে আটকে যাও। এসবে যদি তোমার পড়াশোনায় ক্ষতি হয়? সেটা ভেবেই দূরে থাকা। আজ যখন ভালেবাসার মুহূর্ত কাটানোর পর তোমার মেডিক্যাল যেতে হেলামি দেখালম তখন আমার মনে হচ্ছিলো যেটা ভেবে ভয় পেয়েছি সেটাই হচ্ছে। তোমার ইম্পরট্যান্ট ক্লাস মিস দিতে চেয়েছিলে তুমি। আমি নাহয় একটু রেগে বলেছিলাম হোস্টেলে দিয়ে আসব। সেই কথার জন্য আজ আমাকে আর বাচ্চাদের ছেড়ে চলে গেলে? একটা বার ও ভাবলে না আমাদের কথা?
রোদ পুরোপুরি থম মে’রে গিয়েছে। আদ্রিয়ানের কথা মাথার উপর গিয়েছে যেন। না বুঝার ভঙ্গিতে রোদ জিজ্ঞেস করলো,

— ছেড়ে চলে গেলাম?
— হোস্টেলের কথা বলাতে হোস্টেলে গেলে।
— মানে? কিসের হোস্টেল? আমি চলে গিয়েছি মানে?
আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে তাকালো। কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললো,
— সকালে হোস্টেলে রেখে আসব একথা বলাতেই তো আজ সারাদিন হোস্টেলে ছিলে। হয়রানি করালে।
— কি বলেন এসব? সারাদিন হোস্টেলে কেন থাকবো? আপনি না মেডিক্যাল ড্রপ করলেন?
— ক্লাস তো দুপুরেই শেষ হয়ে গিয়েছিলো?

— হ্যাঁ। দুপুরেই শেষ হয়েছে। গ্রুপ প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলো। আজ না করলে কাল আবার যেতে হতো। কাল যেহেতু মেডিক্যাল অফ তাই ভাবলাম আবার আসব কেন তার থেকে বাসায় ই থাকব। এজন্যই আজ হাসবার হোস্টেলে আমরা তিনজন গিয়েছিলাম৷ বাকি দুজন ও তো ছিলো। দেখেন নি?
আদ্রিয়ান কিছুটা অবাক হলো। ভুল বুঝাবুঝিতে এত কিছু। তবুও রোদের বাচ্চামোতে বিরক্ত সে। বললো,

— একথা টা একটা বার কল করে বলা যেত না? আমি কি মানুষ না? চিন্তা হয় না আমার?
রোদ কোন কথা বললো না। পাশ থেকে আদ্রিয়ানের ফোনটা নিয়ে ম্যাসেন্জারে ডুকে একসাথে চারটা মেসেজ দেখালো যেগুলো রোদের পাঠানো ছিলো। আদ্রিয়ান খুঁজে পেলো না কখন এসেছে এই ম্যাসেজ। রোদ কিছুটা ধীর কন্ঠে বলে উঠলো,

— দুপুরের পরই দেখেছিলাম আপনি কল করেছেন। তখন ক্লাস ছিলো তাই রিসিভ করতে পারি নি। পরে যখন ব্যাক করব তখন দেখি ফোনে ব্যালেন্স নেই। চার্জ ও ছিলো না। রিচার্জ করতে করতে অফ হয়ে গেল। জানেন ই তো এপেল চার্জার পাওয়া যায় না সবজায়গায়। আপনার নাম্বার ও মুখস্থ নেই। পরে হাসবার ফোনে লগইন করে আপনাকে মেসেজগুলো পাঠিয়েছিলাম। বলেছিলাম আমার লেট হবে। হাসবার হোস্টেলে আছি। আমার দোষটা কোথায়?

রোদ উঠে গেলো। অনেক বড় একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হ’য়েছে বুঝলো আদ্রিয়ান। রোদ একটা পেইন কিলার এনে আদ্রিয়ানের মুখে ভরে দিয়ে পানি এগিয়ে দিলো। আদ্রিয়ান সেটা গিলে কিছু বলার আগেই রোদ মুখ এগিয়ে আদ্রিয়ানের গালে চুমু খেলো। লাইট অফ করে চুপ করে পাশে শুয়ে রইলো। ওর কানে এখনও বাজছে,” আমার বাচ্চারা”। রোদের না। রাগের মাথায় বললেও কথাটা বেশ গায়ে লেগেছে রোদের।
আদ্রিয়ান পেছন থেকে রোদকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ঘাড়ে মুখ গুজে দিতেই ঈষৎ কেঁপে উঠল রোদ। আদ্রিায়ন ওভাবেই ঘাড়ে চুমু খেয়ে বললো,

— আমি সরি। ভুল বুঝে ফেলেছি। ভেবেছিলাম তুমি রাগ করে এমন একটা বোকামি করেছো। ভয় পেয়েছিলাম। জান?
আদ্রিয়ানের অবাধ্য বিচরণ চলতেই রোদ ফট করে ওর হাত ধরে ফেললো। আদ্রিয়ান ছাড়িয়ে নিতেই রোদ বলে উঠলো,
— ঘুমোতে দিন প্লিজ।
আদ্রিয়ান কিছু বলছে না। রোদকে আরেকটু কাছে টানতেই রোদ কিছুটা মিনতির স্বরে বললো,
— কাল থেকে প্রায় নির্ঘুম আমি। সেটা তো আপনিও জানেন। সারাদিন অনেক ধকল গিয়েছে। একটু ঘুামাতে দিন।
আদ্রিয়ান রোদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,

— আসো বুকে ঘুমাবে।
— লাগবে না। এখানেই ঘুমাই। বুকের উপর বোঝা হতে চাই না।
আদ্রিয়ানের যেন কথাটা হজম হলো না। রোদ কি বললো? “বোঝা”। রোদ আদ্রিয়ানের কাছে বোঝা? এটা রোদ বলতে পারলো? রোদ ততক্ষণে বালিশে মুখ গুজে দিয়েছে। আদ্রিয়ান শোয়া থেকে উঠে বসলো। রোদের দিকে ফিরে বুঝার চেষ্টা করলো। অল্প আলোতে আবছা বুঝা যাচ্ছে ওর রোদের মন খারাপ। কিন্তু কারণ? আদ্রিয়ান রোদের কাঁধে হাত রাখলো। রোদ হাতটা সরিয়ে একটু চেপে গেলো। আদ্রিয়ান এবার জোর করে নিজের দিকে ঘুরাতেই দেখলো রোদের গাল ভেজা৷ ব্যাস্ত কন্ঠে আদ্রিয়ান বললো,

— সোনা আমার, কি হয়েছে?
— ঘুমাবো?
— বলো? কি হয়েছে? আচ্ছা এটা একটা ভুল বুঝাবুঝি ছিলো। ভুলে যাও।
— মাঝেমধ্যে ভুল বুঝাবুঝি ভালো। কারো মনের কথা জানা যায়।
— মানে? কিসের কথা বলছো?
— আপনার বাচ্চারা সকালেই উঠে যাবে। আমাকে লাগে তাদের তখন।ঘুমাতে দিন। দয়া করুন আমার উপর।
— এভাবে বলছো কেন?
— কিভাবে বললাম? আপনিই তো মাত্র বলেছেন “আপনার বাচ্চারা”। আমার কিছু না। আমি ওদের কিছু না।
কথাগুলো জড়িয়ে যাচ্ছে রোদের। আদ্রিয়ান বুঝলো এবার। রাগের মাথায় বলেছে তখন ও। একথা রোদকে বলতেই রোদ বললো,

— রাগের মাথায় মানুষ সত্যিটাই বলে। আপনিও বলেছেন। আসলে আমার মতো বাজা মেয়েদের জন্য এসবই ঠিক আছে। বেশি আশা করা ঠিক না। আমার তো কোনদিন বাচ্চা হবে না নাহলে আমিও বলতে পারতাম “আমার বাচ্চা”।
— রোদ!
ধমকে উঠলো রোদ। কেঁপে উঠল রোদ। আদ্রিয়ান ওর বাহু ধরে বললো,

— কোন কথা কোথায় টানছো তুমি? কিসের বাজা? একদিন বলেছি না এই শব্দ ব্যাবহার করতে না? বলেছি? আরেকদিন শুনলে থাপড়ে কান ঝালাফালা করে দিব। ওরা তোমার সন্তান। আমাদের সন্তান। জন্ম দিলেই মা হওয়া যায় না। ওরা তোমার প্রতি কতটা আসক্ত সেটা জানো তুমি? মিশানের একবেলা তোমাকে ছাড়া চলে না। মিশি থাকতে পারে না।ছয় মাসে এতটা এটাচমেন্ট তো বাইরের কারো সাথে হয় না কিন্তু তোমার সাথে হয়েছে। তুমি ওদের মা তাই হয়েছে।

ভালোবাসার ভিন্ন রং পর্ব ৩৬

ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো রোদ। ওর বাচ্চা দুটো। কারো না। কাউকে দিবে ও না রোদ। আদ্রিয়ানকে ছেড়ে বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো। আদ্রিয়ান সময় লাগিয়ে নিজেকে শান্ত করলো। অসহায় চোখে তাকালো রোদের দিকে। নিজেও শুয়ে মিশে রইলো রোদের সাথে। একটু পরই ঘুমিয়ে গেল রোদ। আদ্রিয়ান রোদের কাঁধ থেকে কপড়টা টেনে নামালো। উন্মুক্ত কাঁধে মুখ গুজে শ্বাস টেনে নিলো। এই মেয়েটা কে ওর ভীষণ ভাবে দরকার। একটু খানি ভুলের কারণে আজ এতসব ঘটলো। না চাইতেই কটু কথা শুনিয়েছে ও রোদকে। মেয়েটা কতটা কষ্ট পেয়েছে। এখন কিভাবে মানাবে ও বউকে??

ভালোবাসার ভিন্ন রং পর্ব ৩৭