ভালোবাসি তোকে সুহাসিনী পর্ব ২৩

ভালোবাসি তোকে সুহাসিনী পর্ব ২৩
Raiha Zubair Ripte

চেয়ারে হাত পা বা’ঁধা চোখে বাঁধা কালো কাপড়। চিৎকার করে বারবার ডেকে উঠছে,,
” কেউ কি আছে? আমায় এখানে এভাবে আটকে রেখেন কেনো?
কিন্তু ফলাফল শূন্য। কেউ তার কথার প্রতিত্তোরে একটা কথাও বলছে না।

গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। ডেরা থেকে কয়েকজন মেয়ে পালিয়েছে সেখানেই যাচ্ছিল মাহতাব। ফিরতে দু তিন দিন লাগতে পারে তাই ল্যাগেজ নিয়েছিল যেনো শান্তা সন্দেহ না করে। কিন্তু মাঝ পথে এসে যে এভাবে সাহায্য চাওয়ার নাম করে কিডন্যাপ করবে তা কল্পনাতেও ভাবে নি মাহতাব।
এই তো দুজন লোক হঠাৎ চলন্ত গাড়ির সামনে এসে পড়ে। সময় মতে ব্রেক কষেছিল। লোকট দুটো হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” ভাই ভাই প্লিজ সাহায্য করুন পুলিশ আসছে পেছনে। কয়েক টা মেয়ে কে উঠানোর চেষ্টায় ধরা পড়তে পড়তে বেঁচে গেছি। প্লিজ ভাই এই রাস্তাটা পাড় করে দিন।
মাহতাব গাড়ির দরজা খুলে ভেতরে আসতে বলে তাদের। লোক দুটো ভেতরে ঢুকে। সামনে একজন আর পেছনে একজন। লোকগুলল মাহতাবের সাথে কথা বলার তালে তালে হঠাৎ রুমাল দিয়ে মুখ চেপে ধরে। আচমকা এমন হওয়ায় নিজেকে ছাড়াতেও পারে নি। আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ হয়ে আসে মাহতাবের।

হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে মাহতাব বুঝতে পারলো কেউ এসেছে। আগন্তুক ব্যাক্তি একটা চেয়ার টেনে মাহতাবের সামনা-সামনি বসলো। মাহতাব সেটা বুঝতে পারলো।
” কে আপনি? আমায় আটকে রেখেছেন কেনো?? কি চান টাকা?
আগন্তুক ব্যাক্তি মাহতাবের কথা শুনে শব্দ করে হেসে ফেললো। পাশ থেকে এক লোককে ইশারায় মাহতাবের চোখের বাঁধন খুলে দিতে বলে।

লোকটা রুদ্রর ইশারা পেয়ে মাহতাবের চোখের বাঁধন খুলে দেয়। মাহতাব চোখ মেলে তাকিয়ে রুদ্র কে নিজের সামনে দেখে চমকে উঠে সেই সাথে মনে ভয় ঢুকে যায়। রুদ্র গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলে,,
” তো মিস্টার মাহতাব কেমন লাগছে নতুন পরিবেশ নতুন অভিজ্ঞতা??
মাহতাব হাতের বাঁধন খুলার চেষ্টা করতে করতে রেগে বলে উঠে,,

” তাহলে তুই আমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এসেছিস। জাস্ট একবার আমি ছাড়া পাই তোকে দেখে নিবো।
” সেই সুযোগটা তুই পেলে তো দেখবি।
” ম মানে?
” মানে সিম্পল। তোর বাঁচার হায়াত শেষ। তোর কোনো শেষ ইচ্ছে আছে নাকি বল তো তাহলে পূরণ করার চেষ্টা করবো।
” আমায় ছেড়ে দে।

” এ চিন্তা মাথা থেকে বের কর। এটা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। আচ্ছা আন্টি কে কিভাবে মে’রেছিলি??
” আমি মা’রিনি।
” তুই মা’রিস নি।
” হুমম।
” সত্যি।
” বললাম তো আমি মা’রিনি।
” বেশ।

চোখের ইশারায় এক লোককে কিছু আনতে বলে। লোকটা রুদ্রর কথামতো রুম থেকে বেরিয়ে মিনিট পাঁচেকর মধ্যে আবার চলে আসে। হাতে তার আগুনে পু’ড়িয়ে আনা এক জলন্ত রড। রডটা রুদ্রর হাতে ধরিয়ে দেয়। রুদ্র রডটার দিকে তাকিয়ে হেঁসে উঠল। রুদ্রর হাসি দেখে মাহতাবের মনে ভয় ঢুকে যায়।
তুতলিয়ে বলে উঠে,,

” ক কি ক করতে চাইছিস ওটা দিয়ে??
” কিছুনা ইয়ার জাস্ট তোর শরীরে একটু চেপে ধরবো। ট্রাস্ট মি ব্যাথা পাবি না।
কথাটা বলে রুদ্র রড টা নিয়ে আগাতে থাকে মাহতাবের দিকে। মাহতাব বারবার প্রাণ বাঁচানোর জন্য হাতের বাঁধন খোলার চেষ্টা করছে শরীরের সর্বোচ্চ শক্তিশালী দিয়ে। রুদ্র যতো রড এগিয়ে আনছে ততোই মাহতাব ভয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
রুদ্র রড টা মাহতাবের পায়ের কাছে আনতেই মাহতাব জোরে বলে উঠে,,

” প্লিজ রুদ্র এমন করিস না।
” আন্টিকে কিভাবে মে’রেছিস??
” আমি মা’রিনি।
কথাটা বলার সাথে সাথে রুদ্র গরম রড টা মাহতাবের পায়ে চেপে ধরে। ব্যা’থায় আর্তচিৎকার করে উঠে মাহতাব। প্রাণ পাখি টা বুঝি বেড়িয়ে যাবে মাহতাবের।
মাহতাব চিৎকার দিয়ে বলে উঠে,,

” আ আমি ম মে’রেছি আ আমি ম মে’রেছি।
” কিভাবে??
” আগে এটা সরা আমি বলছি সব বলছি।
রুদ্র রড টা সরিয়ে চেয়ারে বসে। মাহতাব ব্যাথার যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। রুদ্র রেগে বলে উঠে,,

” তোর এই ড্রামা বন্ধ করে বল কি করে মে’রেছিস??
” স সেদিন আমি সুহাসিনী দের বাসায় গিয়েছিলাম বিকেলের দিকে। আমি জানতাম ঐ সময় সুহাসিনীর বোন আর মা ছাড়া কেউ থাকবে না বাসায়। সুহাসিনী এক্সামের পড় ফ্রেন্ডদের সাথে ঘুরতে গিয়েছিল তার বাবা ছিলো অফিসে আর তুই ছিলি নির্বাচনের কাজে ব্যাস্ত। আর সুহাসিনীর মা আমায় তিন বছর আগে সেভাবে দেখেও নি তাই সেদিন ও চিনতে পারে নি যেদিন সুহাসিনী কে বাসায় পৌঁছে দিয়েছিলাম। সেদিন আমি তাদের বাসায় গিয়ে দরজায় কড়া নাড়তেই সুহাসিনীর মা দরজা খুলে দেয়। আমায় চিনতে না পেরে বলে,,

” কে আপনি?
” আন্টি আমি রুদ্রর ফ্রেন্ড। রুদ্র আমায় পাঠিয়েছে।
” ওহ্ আচ্ছা কিন্তু কিসের জন্য?
” রুদ্র বললো সুভাষিণী ভাবির নাকি কিছু মেডিসিন লাগবে সেটার জন্য পাঠিয়েছে। প্রেসক্রিপশন টা দিতে বললো।
” ওহ্ আচ্ছা ভেতরে আসো আমি নিয়ে আসছি।

কথাটা বলে সুমনা বেগম সুভার ঘরে যায়। মেয়ে তার ঘুমে বিভোর। মেডিসিনের বক্স খুঁজে প্রেসক্রিপশন পেলো না। তারপর নিজের ঘরে গিয়ে খুঁজতে লাগলো। আচমকা হঠাৎ গলায় টান লাগাতে সুমনা বেগমের যেনো জান টা বেরিয়ে আসছে। পেছন ঘুরে মাহতাব কে দেখে। হাতে তার ছুড়ি মুখে রয়েছে পশ্চাৎ হাসি। সুমনা বেগম গলা ধরে বিছানায় পড়ে যায়।

মৃত্যুও যে এতো যন্ত্রণাদায়ক ইশ কি কষ্ট। চোখের সামনে ভেসে আসে স্বামীর সাথে কাটানো আটাশ টা বছরের কথা। সুভাষিণীর কথা ক’দিন পর মেয়ে তার মা হবে। ছোট মেয়ে সুহাসিনী সে কলেজ শেষে বাসায় এসে দেখবে তার মা আর নেই। তার সুখের সংসার খানিকের ব্যাবধানে উলোটপালোট হয়ে গেলো। মেয়ে স্বামী তো পা’গল হয়ে যাবে।
স্বামী কে রোজ সকালে ডেকে মসজিদে পাঠানো আর হবে না। সন্তান দুটোকে আর নিজের হাতে আদর করতে পারবে না। বুকে জড়িয়ে ধরে মেয়ে দুটো কে ভালোবাসতে পারবে না।

কথাগুলো মনে হতেই সুমনা বেগমের চোখের কার্নিশ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। চোখ বন্ধ করতেই স্বামী সন্তানের হাস্যজ্বল চেহারা ভেসে উঠে। স্বামীর সাথে শেষ বয়স পর্যন্ত পাশাপাশি থাকা হলো না। ইশ কি বেদনাদায়ক মূহুর্তে। মৃত্যু যে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। নিঃশ্বাস নেওয়া কষ্ট সাধ্য। নিঃশ্বাস নেওয়া যায় না। পৃথিবীর বুকে থাকা শেষ দিনটা অন্যরকম ভাবে হলেও পারতো।

কথাগুলো ভাবতেই হঠাৎ সারা শরীর ছেড়ে দিলো সুমনা বেগম। মাহতাব সুমনা বেগম কে বিছানায় শুইয়ে কাঁথা দিয়ে ঢেকে ঘরের লাইট অফ করে দেয়। সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতেই সুভার ঘরের দিকে চোখ যায় মাহতাবের। সুভা ঘুমাচ্ছে, মাহতাব সুভার ঘরের ভেতর ঢুকে ছু’ড়ি টা দিয়ে সুভাকে মা’রার জন্য হাত উঁচু করতেই কিছু একটা মনে করে আর মা’রলো না।
ড্রেসিং টেবিল থেকে তেলের বোতল এনে ফ্লোরে তেল ফেলে রাখলো। আর যাওয়ার পথে বেখেয়ালিতে হাত লেগে ফুলদানি পড়ে শব্দ হয়। ফুলদানি টা তাড়াতাড়ি করে টেবিলের উপর রেখে বেরিয়ে যায় বাসা থেকে।

কথাটা শোনার সাথে সাথে রুদ্র রাগ সামলাতে না পেরে গরম রডটা আবার চেপে ধরে মাহতাবে গায়ে এবার আর পায়ে ধরে না চেপে সোজা কাঁধে চেপে ধরে।
মাহতাব ব্যাথায় ছটফট করতে থাকে। রুদ্র কাঁধ থেকে সরিয়ে এবার হাতে চেপে ধরে। মাহতাব চিৎকার দিয়ে উঠে। আর বারবার অনুনয় হয়ে বলে,,

” ছেড়ে দে রুদ্র আর সহ্য করতে পারছি না।
রুদ্র হিংস্র বাঘের মতো মাহতাবের উপর আগুনে পুড়ানো রড চেপে ধরে। মাহতাবের আত্মচিৎকারে পুরো রুম কেঁপে উঠে।
” তুই আন্টিকে মে’রে ফেলছিস তার উপর অসহায় মেয়েদের সুযোগ নিয়ে তাদের পা’চার করিস। তোকে আজ আমি মে’রেই ফেলবো।

রুদ্রর লোক সামিউল দৌড়ে ছুটে আসে। রুদ্র কে থামানো প্রয়াস চেষ্টা চালায়। রুদ্র এবার রড টা ফেলে দিয়ে এলোপাথাড়ি চ’ড় থা’প্পড় ঘ’ুষি দিতে থাকে।
মাহতাব আধম’রা হয়ে গেছে। রুদ্র থেমে যায়। হুংকার দিয়ে বলে,,
” কেরলসিন তেল আর ম্যাচকাঠি দাও।

এক লোক কেরোসিন আর ম্যাচকাঠি এনে রুদ্রর হাতে ধরিয়ে দেয়। রুদ্র কেরোসিন তেল মাহতাবের শরীরে ঢেলে দেয়। মাহতাব ছুটার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা চালায়। মৃ’ত্যুর ভয় তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে। রুদ্রর কাছে মিনতি করছে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। সে আর কখনোই এসব কাজ করবে না তাকে যেনো শেষবারের মতো ক্ষমা করা হয়। ম্যাচকাঠিতে আগুন ধরিয়ে সেটা মাহতাবের উপর ফেলে দেয়। মূহুর্তে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে মাহতাবের শরীর।

চিৎকার দিয়ে বাঁচার জন্য আর্তনাদ করে উঠে মাহতাব। রুদ্র রুম থেকে বের হতে হতে বলে যায় পুরল গুডাউন টায় যেনো আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় আর সবাই জেনো বুঝে এটা শর্টসার্কিট থেকে আকস্মিক ভাবে আগুন ধরেছে।
কথাটা বলে চলে যায়।

সুহাসিনী হোটেল থেকে বেরিয়ে শান্তার হোটেলে এসেছে কিন্তু শান্তা নেই। ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোন রিসিভ করছে না। প্রায় ঘন্টা দুয়েক হয়ে গেলো সুহাসিনী এসেছে এই হোটেলে। হঠাৎ অন্যমনষ্ক হয়ে হাঁটার ফলে এক স্টাফের সাথে ধাক্কা খায় সুহাসিনী। কোনোরকম পড়া থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে সরি বলে চলে আসতে নিলে কিছুটা দূরে থাকা রুদ্রর দিকে চোখ যায় সুহাসিনীর রুদ্র আসছে এদিকটায়। রুদ্র পইপই করে বলে দিয়েছিল হোটেলের বাহিরে বের হতে না। এখন যদি রুদ্র তাকে দেখে ফেলে তাহলে নিশ্চয়ই খুব বকবে।

রুদ্র যেনো না দেখে তাই তড়িঘড়ি করে আড়াল হয়ে যায়। রুদ্রর শরীর রাগে কাঁপছে আশেপাশে না তাকিয়ে সোজা হেঁটে নিজের রুমে চলে যায়।
রুদ্র কে হঠাৎ ১০২ নম্বর রুমে যেতে দেখে ভ্রুকুটি করে ফেলে সুহাসিনী। রুদ্র হঠাৎ ঐ রুমটায় ঢুকলো কেনো? কি করবে ঐ রুমে?

মনে হাজার ও চিন্তার ভীড়। সব চিন্তা ভাবনা এক পাশে রেখে হোটেল থেকে বেরিয়ে যায়।
রুদ্র রুমে ঢুকে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায়। মাথা পুরো হ্যাঙ হয়ে আছে। অনেক বড় কাজ বাকি কাল। এখন কিছুটা একা থাকা দরকার তাই সুহাসিনীর কাছে না গিয়ে এই হোটেলে এসেছে।
প্রায় ঘন্টাখানেক ওয়াশরুমে থেকে বেরিয়ে ভিজা চুল না মুছেই সোজা বিছানায় গিয়ে ঘুম দেয়। মস্তিষ্ক কিছুটা শান্ত রাখার জন্য একটা ঘুম প্রয়োজন।

এদিকে সন্ধ্যা হয়ে গেছে রুদ্রর আসার নাম গন্ধ নেই। রুদ্র যে বলেছিল রেডি হয়ে থাকার জন্য কোথাও নিয়ে যাবে তাহলে? রুদ্র আসছে না কেনো আর ঐ রুমে কে ছিলো যে ওভাবে ঐ রুমে ঢুকলো?
রুদ্রর জন্য অপেক্ষা করতে করতে প্রায় রাত নয় টা বেজে যায় তবুও রুদ্র আসে না। সুহাসিনী এক আকাশ সম অভিমান নিয়ে শুয়ে পড়ে। এক সময় গভীর ঘুমে তলিয়েও যায় সুহাসিনী।

কিন্তু ঘুমটা আর ক্ষণস্থায়ী হলো না। হঠাৎ কারো স্পর্শে সুহাসিনীর ঘুম ভেঙে যায়। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে রুদ্র ডিপলি চুমু খাচ্ছে ঠোঁটে। সাথে ভেসে আসছে দুর্গন্ধ। দুর্গন্ধ টা কিসের রুদ্র ড্রিংক করেছে! দুর্গন্ধে সুহাসিনীর গা গুলিয়ে আসলো।
রুদ্র কে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। সে তার মনের সুখে ঠোঁটে, ঘাড়ে,কপালে গালে চুমু খাচ্ছে।
লোকটা তো নিজের হুঁশে নেই এসব কি করছে। সুহাসিনী এবার দু হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে নিলো যেনো রুদ্র আর চুমু খেতে না পারে।
রুদ্র সুহাসিনীর এহেন কাজে ভ্রু কুঁচকে বলে,,

” সমস্যা কি তোমার একটু আদর ও কি করতে দিবা না। এতেও সমস্যা তোমার?
সুহাসিনী খানিক হাত নিচু করে বলে,,
” আপনার মুখ দিয়ে ড্রিংক’স এর দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। আর তাতে আমার বমি চলে আসছে সরুন আমার উপর থেকে।
রুদ্র বা হাত মুখের সামনে এসে হা করে পরখ করে নেয়। সত্যি দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। পরক্ষণেই আবার মন বলে উঠে,, ছি রুদ্র তুই কাকে ভালোবাসলি আর কাকে বিয়ে করলি যে কি-না তোর সামান্য ড্রিংক’স এর গন্ধ সহ্য করতে পারছে না।

” তাই বলে এভাবে আমার ভালোবাসা রিজেক্ট করবে সুহাসিনী!
” ভালোবাসা পরে আগে জান ব্রাশ করে আসুন তারপর আমার কাছে ঘেঁষবেন তার আগে নয়।
” আচ্ছা তার আগে আর একটা….
” কোনো একটা দুটো নয় আগে ব্রাশ করে আসুন। ছি কি দুর্গন্ধ ওয়াক।

রুদ্র ঢুলতে ঢুলতে ওয়াশরুমে যায়। হঠাৎ কি মনে করে যেনো আজ ড্রিংক’স করে বসেছে সামিউলের সাথে রুদ্র ঘুম থেকে উঠেই। এই তো সামিউল পৌঁছে দিয়ে গেলো হোটেল অব্দি।
দাঁত ব্রাশ করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে সোজা সুহাসিনী কে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে নাক ডুবিয়ে দেয়।

রুদ্রর মতলব ভালো ঠেকছে না সুহার। যতোই রুদ্রর থেকে সে দূরে সরছে ততোই রুদ্র সুহাসিনী কে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে। সুহাসিনী পিঠ ঠেকে আছে রুদ্রর বুকে। হঠাৎ রুদ্র হাত টা কমিজের ভেতর দিয়ে পেট স্পর্শ করে। কেঁপে উঠে সুহাসিনী। রুদ্রর হাত খপ করে ধরে বলে,,

” কি করছেন রুদ্র?
” কেনো, ভালোবাসছি। আই নিড ইউ সুহা। তোমার উষ্ণতা খানিক পেতে চাই। প্লিজ না করো না। একটু ভালোবাসো আমায়।

রুদ্রর এহেন কথায় বুকের মধ্যে উথাল-পাতাল শুরু হয়। আজ আর রুদ্র কে ফেরানো যাবে না। সুহাসিনী হাত সরিয়ে নেয় নিজের। রুদ্র সুহাসিনী কে চুপ থাকতে দেখে সম্মতি ভেবে ভালেবাসার চাদরে জড়িয়ে নেয়। আস্তে আস্তে মিলিত হয় দুটি হৃদয়, দেহ।

ভালোবাসি তোকে সুহাসিনী পর্ব ২২

রাত যত বাড়ছে ততোই ভালেবাসার প্রকাশ গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। রুদ্র সুহাসিনীর কপালে চুমু খেয়ে বলে,,
” কাল সকালে তোমার জন্য অনেক বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে জান।

ভালোবাসি তোকে সুহাসিনী পর্ব ২৪