শেষ চৈত্রের ঘ্রাণ পর্ব ৫

শেষ চৈত্রের ঘ্রাণ পর্ব ৫
নূরজাহান আক্তার আলো

-‘এই যে মিস, শাহরিয়ার ভাই কি বাসায় আছে?’
হঠাৎ পেছন থেকে কারো কথা শুনে ঘুরে তাকাল শখ। লম্বা-চওড়া, শ্যাম বর্ণের এক যুবক হাসি মুখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। শাহরিয়ার ভাই বলায় বুঝল কথাটা তাকেই জিজ্ঞাসা করা হয়েছে৷ কারণ সায়নের নাম শাহরিয়ার। তবে এই ছেলেকে চেনে না সে। কখনো দেখেছে বলেও মনে হচ্ছে না। হবে হয়তো পার্টি লোক। কোনো প্রয়োজনে সায়নকে বাড়িতে খুঁজতে এসেছে। লোকটা জবাবের আশায় মুখের দিকে তাকিয়ে আছে দেখে সে ছোট্ট করে জবাব দিলো,

-‘জি, ভাইয়া বাসাতেই আছে।’
-‘ডেকে দেওয়া যাবে? কথা ছিল, বলবেন মন্টি এসেছে।’
নামটা শুনে কেন জানি শখের হাসি পেল। মস্তিষ্কে ধাক্কা দিলো মাউন্টেন ডিও। মাউন্টেন থেকে মন্টি। এত সুদর্শন ছেলের সঙ্গে নামটা বড্ড বেশি বেমানান লাগল। কারো নাম নিয়ে কটু কথা বলা ঠিক না। এগুলো বাজে অভ্যাস। তাই সে মনকে ধমকে সম্মতি সূচক মাথা নাড়িয়ে ভেতরে চলে গেল। এদিকে ক্লাসের সময় হয়ে যাচ্ছে। প্রথম ক্লাসটা ধরতে পারবে কি না কে জানে। সে দ্রুত পায়ে দো’তলায় উঠে সায়নের রুমের দরজা নক করল,
-‘ভাইয়া! ভাইয়া শুনতে পাচ্ছো? এই ভাইয়া! তোমার সঙ্গে মন্টি নামের একজন দেখা করতে এসেছে।’

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ঘুমে কাতর সায়নের কোনো হুঁশ নেই। কড়া মেডিসিনের প্রভাবে গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে। এদিকে শখ একনাগাড়ে নক করেই যাচ্ছে। এজন্যই সায়নকে ডাকতে আসতে চায় না। ডেকে ডেকে গলা শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যায় তবুও সায়নের কানে ডাক পৌঁছায় না। শুদ্ধর ঘুম খু্ব পাতলা। একবারের বেশি দু’বার ডাকলেই উঠে যায়। আর সায়ন মহিষ টাইপের, ঘুমালে দিন দুনিয়া ভুলে যায়। সকালবেলা হুট করে কারো রুমে প্রবেশ করাও উচিত না তাই আবার ডাকল। বেশ কয়েকবার ডাকার পর সায়ন ঘুম ঘুম চোখে ভেজানো দরজার দিকে একবারতাকিয়ে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিলো। শখ রুমে ঢুকতে ঢুকতে হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ব্যস্ত হয়ে বলল,

-‘ভাইয়া, তুমি নিচে যাবে? নাকি উনাকে উপরে আসতে বলব?’
-‘ কার কথা বলছিস?’
-‘মন্টি নামের একজন তোমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। বাগানে দাঁড়িয়ে আছে।’
-‘মন্টি কে? চিনলাম না তো।’
-‘আমিও চিনি না। কখনো দেখিও নি। হবে হয়তো তোমার পার্টির লোক। তুমি বললে উপরে পাঠাব।’
-‘আচ্ছা পাঠিয়ে দে। তা কোথাও বের হচ্ছিস নাকি তুই?’
-‘হুম। ক্লাস আছে আমার।’
-‘ফিরবি কখন?’
-‘ক্লাস শেষ করে ল্যাবে যাব। দেরি হতে পারে।’
-‘ শীতল, স্বর্ণের ক্লাস নেই? যাবে না ওরা?’
-‘যাবে, রেডি হচ্ছে। আমি আসি ভাইয়া খুব লেট করে ফেলেছি আজ।’
-‘আচ্ছা যা।’
শখ ব্যস্ত পায়ে যাওয়ার জন্য ঘুরতেই সায়ন তাকে পুনরায় ডেকে উঠল,
-‘এই শুন, টাকা নিয়ে যা। বাইরে কখন কী দরকার হয় বলা যায় না।’

একথা বলে সায়ন এক হাজার টাকার নোট এগিয়ে দিলো। সে ভাইয়ের থেকে টাকা নিয়ে মিষ্টি করে হেসে বেরিয়ে গেল। বের হতে হতে শীতল, স্বর্ণও রেডি হয়ে রুম থেকে বের হলো। তিনবোন একসঙ্গে যাবে। ভিন্ন সময় ক্লাস থাকলেও আজ যাচ্ছে একসঙ্গে। শীতল শখের হাতে কলেজ ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বুকের ভি-বেল্ট ঠিক করতে করতে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামল। গলা ফাটিয়ে আম্মু! আম্মু! করে ডাকতে ডাকতে রান্নাঘরে এসে পৌঁছাল। মায়ের কাছে ঘ্যানঘ্যান করে ফুচকা খাওয়ার টাকা হাতিয়ে বড় মাকে বলল,

-‘ ওহ বড় মা, আর বিশ টাকা খুচরো থাকলে দাও না।’
কচকচে একশত টাকার নোট দেওয়া পরেও মেয়ের কথা শুনে সীমিন চৌধুরী কিছু বলার আগেই সিঁতারা থামিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ আগে ডিম
এনে ভাংতি টাকা থেকে পঞ্চাশ টাকার নোট বের করে তার হাতে ধরিয়ে তাড়া দিয়ে বললেন,
-‘ধর, ধর, শখ’রা চলে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি যা, এই তোরা সাবধানে যাস কিন্তু।’
-‘আচ্ছা!’
মায়ের বকুনি থেকে বাঁচতে শীতলও টাকা নিয়ে ছুটল শখের পিছু পিছু।
দৌড়ে এসে ব্যাগটা কাঁধে তুলে নিযে বেরিয়ে পড়ল তিনজন। স্বর্ণ বিরক্ত মুখে শীতলের দিকে একবার দেখে দ্রুত পা চালানোর তাগাদা দিলো।
তাড়াহুড়োর সময় রিকশাও পাওয়া যায় না আজ পাবে নাকি কে জানে।
একদিকে লেট করলে সবদিকেই এমন হয়। মন্টি নামের ছেলেটা তখনো
দাঁড়িয়ে ছিল বাগানের দিকটায়। সম্ভবত ফোন কথা বলছিল। তাদেরকে দেখে কান থেকে ফোন সরিয়ে ঘুরে তাকাল। শখ একনজর তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে পা বাড়াতেই পেছন থেকে শুনতে পেল সিঁতারা চৌধুরী মন্টির উদ্দেশ্যে বললেন,
-‘এসো বাবা, ভেতরে এসো, সায়ন তোমাকে রুমে ডাকছে।’

উনার কথা শুনে মন্টি সিঁতারা চৌধুরী পেছন পেছন বাড়ির দিকে পা বাড়ালেও তার নজর ছিল চৌধুরী বাড়ির মেয়েদের দিকে। তিনটে পুতুল যেন চোখের সামনে। ছোটো টা কি একটু বেশিই সুন্দরী নাকি? নাম কি তার? কোন ক্লাসে পড়ে? স্কুলের গন্ডি পেরিয়েছে তো? চৌধুরী নিবাসের মেয়েরা দেখতে এত সুন্দরী জানত না সে। এজন্যই কি তার বাবা তাকে বলেছিল, ‘যাচ্ছো যাও। তবে চৌধুরীদের মেয়েদের দিকে নজর দিও না।
মেয়েগুলো ভালো হলেও ভাই দুটো ডেঞ্জারাস। একবার যদি দেখে তুমি বোনদের দিকে তাকিয়েছো চিলের মতো উড়ে এসে কখন দু’চোখ তুলে নিয়ে যাবে আফসোস করারও সময় পাবে না।’

-‘তাই নাকি? এত সাহস তাদের?’
-‘হুম, আর তাদের বিশেষত্ব হলো তারা ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না।’
-‘তুমি একটু বেশি বেশিই বলছো বাবা। কই তাদের নামে এমন কিছু শুনি নি কখনো।’
-‘বোকারা কথা রটাতে পছন্দ করে আর বুদ্ধিমানরা গোপনে কাজ সারে। তারা সমাজের সন্মানিত মানুষ। সামান্য আঁচড়ও গায়ে লাগাতে দেয় না। আর শাহরিয়ার রাজনীতির মানুষ। সে বাড়িতে ভদ্র কিন্তু বাইরের আস্ত হায়েনা। যতটুকু জানি সে কারো গায়ে হাত তুলে হাত নোং’রা করে না। সরাসরি মাটিতে গেঁড়ে গলায় ছুরি চালায়।’
বাবার কথায় সে হেসেছিল। কারণ তার মনে হচ্ছিল বাবা তাকে মজা করে কথা বলেছিল। কারণ এগুলো বছর বিদেশে থাকলেও মেয়েলী কেসে জড়ায় নি কখনো। কেউ বলতে পারবে না কখনো মেয়েদেরকে কটুক্তি করেছে। এসবের ধারে কাছেও নেই সে, ভদ্র গোছের ভদ্র মানুষ কি না। তাছাড়া ইশতিয়াক ভাই তার বড় বোন আশালতার স্কুল ফ্রেন্ড।

দেখা হয়েছে বহুবার। সেই সূত্রে অল্প স্বল্প চেনাজানা আছে ইশতিয়াকের সঙ্গে। সেও জানে ইশতিয়াক আর শুদ্ধ কেমন। শুদ্ধ, ইশতিয়াকও জানে সে কেমন। মনে মনে এসব ভাবতে ভাবতে সে সিঁতারার সঙ্গে সায়নের রুমে এলো। সায়ন ততক্ষণে বিছানার হেডবোর্ডে হেলান দিয়ে বসেছে।
সদ্য ঘুম থেকে উঠায় চোখ ফুলে আছে। পার্টির ছেলেরা বাসায় আসবে না। কড়া আদেশ জারি আছে যত ঝামেলায় হোক কেউ যেন বাড়িতে না আসে। তাহলে এত সকালে কে এলো? কার এত জরুরি দরকার পড়ল যে, সাধের ঘুমটার বারোটা বাজিয়ে দিলো। তখন দরজা খুলে সিঁতারার
সঙ্গে থাকা ছেলেটাকে দেখামাত্রই কুঁচকানো ভ্রুঁ মসৃণ হলো। গম্ভীরতার ছাপ সরে ঠোঁটে হাসি ফুটল। মন্টি তাকে দেখে কিছু বলার আগেই সায়ন বলল,

-‘আহনাফ তুই! দেশে ফিরলি কবে?’
-‘এসেছি গত সপ্তাহে। তা আপনার এই অবস্থা কেন ভাই?’
-‘আমাদের পেশাতে এসব টুকটাক লেগেই থাকে। ছাড় সেসব কথা। তোর খবর বল।’
সায়নের কথা শুনে সে একটা কার্ড এগিয়ে দিয়ে জানাল তার বোনের অর্থাৎ সায়নের ফ্রেন্ডের বিয়ে। আশালতা অবশ্যই তাকে যেতে বলেছে।
বোনের কার্ড বিলানোর দায়িত্বটা তার ঘাড়ে পড়েছে তাই আসতে হলো আর কি। সায়ন হেসে ব্যান্ডেজ করা হাতে কার্ড খুলতে গিয়ে থেমে গেল।
সে খুলতে পারছে না দেখে আহনাফ কার্ড খুলে দিলে বরের নাম, ধাম, দেখল। খোঁজখবর নিলো। তারপর সে ভিডিও কলে আশালতাকে ফোন করে কিছুক্ষণ ফাজলামি করল। সিঁতারা চৌধুরী চা, নাস্তা দিয়ে গেলেন। তারা খেতে খেতে কিছুক্ষণ গল্প করে আহনাফ বিদায় নিয়ে চলে গেল।

শখ, শীতল, স্বর্ণ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও রিকশা পেল না। শখের প্রথম
ক্লাস আজ মিস হয়েই গেল। আর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে একটা রিকশা পেয়ে তারা চট জলদি উঠে বসল। শীতল ছোটো বিধায় বসল শখের কোলের উপর। নতুবা বসে সিটের উপরে। ভাঙা রাস্তায় সিটের উপরের অংশে বসলে কেমন যে লাগে যে বসে সেইই জানে। একদিন ফাঁকা অংশ দিয়ে ধপাস করে পড়ে গিয়েছিল শীতল। হাত ছিঁলে কি একটা অবস্থা।তারপর থেকে শখ জোর করে হলেও তাকে কোলে বসায়। আজ লেট হওয়াতে বিরক্তি প্রকাশ করতে করতে কিছুদূর গিয়ে শখ ভাড়া দিয়ে নেমে পড়ল। ওদেরকে সাবধানে যেতে বলে দ্রুতপায়ে ছুঁটল চারতলার ক্লাসের দিকে। ক্লাস মিস করলেও নোট মিস করা যাবে না।

একটা নোট মিস গেলে চাপ বেড়ে যায়। তাই সে রোজকার পড়া রোজ সারে। এদিকে আর কিছুদূর গিয়ে স্বর্ণও নেমে গেল। সেও শীতলকে সাবধানে যেতে বলে, সেও ছুটল জারুল তলায়। তার ফ্রেন্ডরা সেখানে বসে আড্ডা দিচ্ছে। ক্লাস শুরু হতে এখনো দেরি আছে। কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে তারপর দলবেঁধে যাবে ক্লাস করতে। এটাই তো ভার্সিটি লাইফের আসল মজা। বোনকে যেতে দেখে শীতল আরাম করে বসল। ঘাড় ঘুরিয়ে ডানে-বায়ের মানুষ দেখল। পাখি দেখল। রাস্তা দেখল। পথের ধাঁরে ফুটে থাকা ফুলের রং দেখল। এভাবে দশ মিনিট পর সেও তার কলেজের গেটে গিয়ে নামল। ভাড়া তখন শখ দিয়েছে তার টাকা বেচে গেল দেখে খুশি হলো। সে ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে পা বাড়াল গেটের দিকে। তার বেস্ট ফ্রেন্ড কিয়ারা তার জন্যই অপেক্ষা করছিল। তাকে দেখে কিয়ারা খ্যাক করে কিছু বলার আগে কিছু পড়ার শব্দে দু’জনে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল। একটা ছেলে বাইক নিয়ে পড়ে গেছে।

বাইকের অবস্থা খুব খারাপ। পিচচালা রাস্তায় এভাবে পড়ায় ছিঁলে ছুঁটে গেছে হাত-পা। শীতল চুইংগাম চিবাতে চিবাতে ছেলেটাকে ভালো করে দেখল। এই ছেলেকে তাদের বাগানের কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখছিল।
পথচারীরা তাকে ধরে তুলছে দেখে সে আর গেল না। চেনে না,জানে না।
আর অনেকেই সাহায্য করছে। সে ছোট্ট মানুষ, গিয়ে না পারবে এত বড় একজন মানুষকে টেনে তুলতে। না পারবে তার নামি-দামি বাইকটা দাঁড় করাতে। তাই কিয়ারার সঙ্গে ভেতরে চলে গেল। কলেজের মাঠে চলছে আরেকটা সার্কাস। বিদেশি ক’জন ছেলে সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি, সাদা লুঙ্গি ও মাথায় লাল গামছা বেঁধে হেঁটে বেড়াচ্ছে। তারা বিদেশী পর্যটক। মাত্র কিছুদিন হলো বাংলাদেশ এসেছে। এখানে এসে বাঙালিদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বাংলাদেশ ঘোরার ইচ্ছে পোষণ করেছে।শিক্ষকরা তাদের
এলাও করেছে। তারা অবশ্য হাঙামা করছে না আগ্রহভরে শুধু দেখছে,

মাঝে মধ্যে ছবি তুলছে, কখনো নিজেরা নিজেরা বকবক করছে।তাদের দিকে কৌতুহলবশত তাকিয়ে আছে কলেজের অনেক স্টুডেন্ট। হাঁটতে হাঁটতে শীতলের হঠাৎ দৃষ্টি আঁটকে গেল কামরানের দিকে। এই কামরান ছেলেটা শুদ্ধর ঘনিষ্ঠ ফ্রেন্ড। সেও গবেষক। এবং শুদ্ধর সঙ্গে থাকে এক ফ্ল্যাটে। তার তো এখানে থাকার কথা নয় তাহলে সে এখানে কেন? আর এই বিদেশীদের সঙ্গেই বা কেন? তখন কিয়ারা কামরানকে দেখে বলল,

শেষ চৈত্রের ঘ্রাণ পর্ব ৪

-‘ওই ছেলেটাকে চেনা চেনা লাগছে কোথাও দেখেছি মনে হচ্ছে। ‘
-‘ওটা শুদ্ধ ভাইয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড কামরান ভাইয়া।’
-‘কামরান? এ আবার কেমন নাম?’
-‘ এমনই নাম।’
-‘কিন্তু এত নাম থাকতে কামরান কেন?’
-‘উনার দাদার নাম ইমরান। উনার বাবার নাম জুবরান। উনি ছোটো বেলায় যাকে তাকে কামড়ে দিতো। তাই বাপ দাদার সঙ্গে মিল রেখে তার উনার নাম হয়েছে কামরান।’

শেষ চৈত্রের ঘ্রাণ পর্ব ৬