শেষ চৈত্রের ঘ্রাণ পর্ব ৯

শেষ চৈত্রের ঘ্রাণ পর্ব ৯
নূরজাহান আক্তার আলো

ক’দিন ধরেই চাপা রাগের তোপে শুদ্ধর মনটা বিষিয়ে ছিল। ভেবেছিল শীতলকে আর কখনো শাষণ করবে না। মুখে বারণ করলেও গায়ে হাত তুলবে না। যে তার শাষণকে সব সময় বাঁকা ভাবে গ্রহন করে, চাচাতো ভাই বলে যা তা বলে, তাকে শাষণ করার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু এ মেয়ে
ভীষণ ঘাড়ত্যাড়া। সে যেন মুখিয়েই থাকে তাকে রাগিয়ে দেওয়ার জন্য। করেও তাকে রাগানোর মতোই কাজকর্ম। যেমন আজকে সকালে ফোন দিয়ে যা ইচ্ছে তাই বলল। কেন বলল, কি কারণে বলল, সেও জানে না।
তার অহেতুক কল ভালো মেজাজটা বিগড়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। সকালের ঘটনার পর ভেবেছিল এসেই দু’থাপ্পড় বসিয়ে দেবে। কান টেনে লম্বা করে ভদ্রতা জ্ঞানের শিক্ষা দেবে। কিন্তু খেতে বসে হঠাৎ ঠোঁট কেটে রক্তারক্তি হলো দেখে ভাবল আপাতত থাক। নিজে না দিক একটা শাস্তি তো পেলোই। তখন তার করা অপরাধের শাস্তি মওকুফ করলেও এখন হাতখানা নিশপিশ করছে। অনবরত থাপড়াতে ইচ্ছে করছে। বে’য়া’দবির একটা লিমিট থাকা দরকার। বাসায় বাইরের গেস্ট’রা উপস্থিত রয়েছে।

তারা যদি ভুলক্রমেও এসব শুনে, কি ভাববে? ফ্রেন্ডদের কানে গেলেও মজা নিতে বিন্দু পরিমাণ কার্পণ্যবোধ করবে না। বরং ওরা নিজ দায়িত্বে রটিয়ে দেবে যা হওয়ার নয় সেসব কথা। শীতল আচমকা শুদ্ধকে দেখে জোরপূর্বক হাসল। মাথা চুলকে তার লম্বা বিনুনির নাড়াচাড়া করে কিছু বলার জন্য শব্দ খুঁজল। কিন্তু কি বলবে বুঝতে উঠতে না পেরে এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল,
-‘ কলা খাবেন শুদ্ধ ভাই? বাবা এনেছে। কি যে মিষ্টি খেতে।’
-‘তোর কেন মনে হলো আমি কলা খাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি?’
-‘হে হে, না মানে, আমি খাব তাই ভাবলাম আপনাকেও সাধি।’
-‘তোর বাপ এনেছে তুই বেশি করে খা।’
-‘আচ্ছা, গিয়ে খাই তাহলে।’
-‘ফোনে কি যেন বলছিলি?
শীতল দু’ঢোক গিলল। আড়চোখে দেখেও নিলো শুদ্ধ রাগান্বিত চাহনিতে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে ঠাস্ করে মেরে বসবে। সেও বুঝল ছাড় পাবে না। তাই কৈফিয়ত দেওয়ার সুরে আমতা আমতা করে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-‘উ.. উপ.. উপন্যাসের কথা বলছিলাম।’
-‘ আমি তোর কাজিন হই, রাইট? উপন্যাস পড়ে কি হবে? আমি সিঙ্গেল, চল প্রেম করি?’
-‘না।’
-‘না কেন? আমি কোন দিক থেকে কম? কাজিন লাভ যখন এতই ভালো লাগে তাহলে সমস্যা কি? কি ভেবেছিস, আমার সঙ্গে প্রেম করলে তোকে লিপস্টিক কিনে দিতে পারব না?’
শীতল মুখ কাচুমাচু করে মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে। শুদ্ধর কথার জবাব খুঁজতে ব্যস্ত সে। তবে মুখ ফুটে না বললেও সে মনে মনে জবাব ঠিকই দিলো,

-‘আপনার মতো হিটলার প্রেমিক চাই না আমার। আপনি এমন এক পুরুষ যাকে ‘ভালোবাসি’ বললেও থাপ্পড় দিয়ে বলবেন, বে’য়া’দব, বললি কেন ভালোবাসি? ভালোবাসা বলে বেড়ানোর জিনিস?এক্ষুণি কান ধর! ধর বলছি, নয়তো চ্যালাকাঠ দিয়ে মেরে তোর পা ভাঙব আজ।’
মনে মনে চিৎকার করে একথা বললেও মার খাওয়ার ভয়ে মুখে বলা হলো না। শীতলকে চুপ থাকতে দেখে শুদ্ধ এককোণে রাখা ঝুল ঝাড়া ঝাড়ুটা নিতে গেলে শীতল বেলকনির সঙ্গে সেঁটে দাঁড়াল। চোখ, মুখে তীব্র ভয়। সে এবার ভয়ে ভয়ে জবাব দিলো,
-‘ কাজিন রিলেটেড বই দূর জীবনেও উপন্যাসের নাম মুখে নেবো না।’
-‘কেন, তোর না ভালো লাগে?’
-‘কিছুক্ষণ আগেও ভালো লাগত। এখন আর ভালো লাগছে না। ওসব পঁচা বই। পঁচা জিনিস থেকে দূর থাকা উত্তম।’
একথা বলতেই সায়ন তখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এসে শুদ্ধর পাশে দাঁড়াল। শীতলের রিমান্ডে চলছে দেখে হাসতে হাসতে বলল,

-‘এখন রুমে যা। শুদ্ধর ফ্রেন্ডরা এদিকে আসছে।’
কয়েকজোড়া পায়ের পদধ্বনি কানে আসতেই শীতলের কিছু বলারও সুযোগ হলো না, দ্রুত স্থান ত্যাগ করল। সব সময় তার সঙ্গেই এমন হয়। বলতে যায় এক মানুষ বুঝে বসে থাকে আরেক। করতে যায় এক ঘটিয়ে বসে থাকে আরেক। জীবনটাই বেদনার। তাকে যেতে দেখে সায়ন বলল,
-‘ছোটো মানুষ, কি বলতে কী বলেছে, বাদ দে।’
-‘কথার ধার দেখে কিন্তু মনে হয় না ছোটো মানুষ।’
-‘ওইটুকু ধার না থাকলে কি মনে হবে চৌধুরী বাড়ির মেয়ে? এবার বল, ল্যাবের কাজ কতটুকু এগোলো? ঢাকা থেকে একেবারে ব্যাক করবি কবে?’

-‘ কাজ এখনো একটু বাকি আছে। কাজের উপরে ডিপেন্ড করছে সব।’
এসব বলতে বলতে সায়ন পেতে রাখা চেয়ারে বসল। এইটুকু পথ হেঁটে
আসতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে।ক্ষতস্থানে টান পড়েছে। এ অবস্থায় বাইরে যেতেও পারে নি ক’দিন ধরে। দলের ছেলেপুলেরা ওদিকে আরেক কান্ড ঘটিয়ে বসে আছে। যত ব্যথায় থাকুক, আজ সন্ধ্যায় একটু বের হাতেই হবে। শুদ্ধ নিজেও ভাইয়ের পাশে বসে জানাল ল্যাবের কাজ সম্পর্কে।

চৌধুরী নিবাসের উল্টো পথ ধরে এগোলেই একটা নির্জন রাস্তার দেখা মিলে। রাস্তার দু’ধারে গাছ আর জঙ্গল। সেখানে মাটির নিচে তৈরা করা হচ্ছে শুদ্ধর পারসোনাল ল্যাব। সেখানে থাকবে মানব কল্যানে কার্যরত নিত্য নতুন আবিষ্কার। বিদেশিরা মূলত এসেছেই ল্যাব পরিদর্শন করতে। কাজ প্রায় শেষের দিকে। যদিও এ ব্যাপারে সায়ন ছাড়া বাড়ির কেউ’ই তেমনভাবে জানে না কারণ ল্যাবটা সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রেখে তৈরি করা হয়েছে। নির্জন স্থানে এমন ভাবে কাজ করা হচ্ছে কেউ ক্ষুণাক্ষরেও টের পাবে না ল্যাব রয়েছে। শুদ্ধ ঢাকা থেকে খুব তাড়াতাড়ি ব্যাক’ও করবে। কারণ এক নতুন আবিষ্কারের ভূত মাথায় চেপে বসেছে। যতক্ষণ না সেই কাজ হাত দিবে তার স্বত্বি মিলবে না, কিছুতেই না।
দুই ভাইয়ের আলোচনার মাঝেই কামরান, অর্ক, হাসান এসে ধপ করে বসল। কামরান ফস ফস করে জানাল অর্ক থাকলে সে আর থাকবেনা। বন্ধুর কথা শুনে শুদ্ধ ভ্রুঁ কুঁচকে পকেট হাতড়ে একশ টাকার নোট বের করে দিয়ে বলল,

-‘ধর।’
কামরান টাকা ধরে হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। তাকে এভাবে তাকাতে দেখে শুদ্ধ বলল,
-‘বসে রইলি যে, যা।’
-‘আমি রাগ করে বললেই পারি তাই বলে সত্যি সত্যি চলে যেতে বলবি? এই তোর বন্ধুত্ব?’
-‘ বন্ধু শখ করে একটা ইচ্ছে প্রকাশ করল। আমিও তার ইচ্ছেকে সন্মান দেখালাম। এখানে ইমোশনাল হওয়ার কি আছে?’

-‘তাই তো, তাই তো, তোর বন্ধু আমাকে কুত্তার দৌড়ানি খাওয়াল। আমি আর একটু হলে পটল তুললাম সেসব কিছুই না। সাধারণ একটা কথা বললাম তাতেই….. যাহ্ শালা, তোদের কারো সঙ্গেই বলব না কথা।’
শুদ্ধ এবার অর্কের দিকে তাকাল। কে বলবে এই ছেলেটা সবাইকে খোঁচা মেরে বেড়ায়? এই যেমন, কামরানকে কুত্তার দৌড়ানি খাইয়ে কি সুন্দর গোবেচারা মুখ করে তাকিয়ে আছে। চেহারাখানা দেখে যে কেউ বলবে ভাজা মাছটি উল্টো খাওয়া জানে না। তাকে তাকাতে দেখে অর্ক দাঁত কপাটি বের করে বলল,
-‘আমি কিছু করি নি ভাই। পুরো ঘটনাটা শুন, রাস্তার ধারে একটা লাল কুকুর শুয়ে ছিল। আমি শুধু পেছন থেকে তার ইয়েতে সুড়সুড়ি দিয়েছি। কিন্তু কুকুরটা আমাকে দৌড়ানি না দিয়ে কামড়ানের পেছনে ছুঁটতে শুরু করল। এখানে আমার কি দোষ? আমি কি কুকুরকে বলেছি ওর পেছনে যা।’

অর্কের বলার ভঙ্গিতে সায়ন হো হো করে হেসে উঠল। হাসান মিটিমিটি হাসতে হাসতে বলল,
-‘ আর একটু হলেই কামরানের বিয়ের সাধ মিটে যেতো। ছোটো বেলায় তুই মানুষকে কামড়ে বেড়াতি কুকুরটা বোধহয় তারই শোধ নিলো।’
একথা বলতে না বলতেই কামরান এক ঘুষি বসিয়ে দিলো হাসানের বাহু বরাবর। নামের জন্য সবাই তাকে পঁচায়, সবাই। বন্ধুরা তো কথায় কথায়
খোঁচায়। এখনো অর্ক, হাসান আর কামরানের তর্ক-বিতর্ক চলছে। আর
শুদ্ধ বিরক্ত মুখে তাকিয়ে রইল। তিনজনে সারাক্ষণ মেয়ে মানুষের মতো সামান্য ব্যাপারেও ঝগড়া করে। ঝগড়া থামাতে গেলে তার সঙ্গেও তুমুল ঝগড়া বেঁধে যায়। পরে নিজেরা সরি বলে দাঁত বের হাসে। লজ্জাও বলে কিছু নেই এদের। এরা শুধু কাজের সময়টুকু সিরিয়াস থাকে। সেই সময় তারা সাইন্টিস রুপে ফিরে আসে। দূরদর্শিতা, গম্ভীরতা, বুদ্ধিমত্তা তাদের চেহারায় স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। দুই বিদেশী স্যান্ডি, জুলিথও এদের সঙ্গে মিশে বাদর তৈরি হয়েছে। সায়ন চুপ করে এতক্ষণ এদের কথা শুনছিল। শুদ্ধ এর আগে কখনো বাসায় বন্ধুদের আনে নি। এবারও প্রথম। আনার
যথাযথ কারণও রয়েছে বটে। প্রতিটা পেশায় একজন শিক্ষাগুরু থাকে,

উনার থেকে হাতেখড়ি হয় সব কাজের। এরপর শিষ্যরা যখন শিখে যায় তখন তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয় নিজেরা কিছু করে দেখানোর আশায়।
বিগত পাঁচ বছরে তারা শিখেছে অনেক কিছু এবার তাদেরও কিছু করে দেখানোর পালা। নিজেদের আবিষ্কার দিয়ে নিজেদের নাম তৈরি করার পালা।
হঠাৎ সায়নের ফোন বেজে উঠল। সে কল রিসিভ করে হ্যালো বলতেই শোনা গেল আহনাফের গলা। আহনাফ দু’একটা কথা বলে তার বাবার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিলো কথা বলার জন্য। সায়ন উনাকে বিনয়ীসুরে
সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করল। ভদ্রলোক অহেতুক কথা না বাড়িয়ে সরাসরি আসল প্রসঙ্গে এলো,
-‘সায়ন বাবা বলছিলাম যে, বোনের বিয়ে দেবে না?’
-‘আমার তো তিনটে বোন। কার কথা বলছেন আঙ্কেল?’
-‘শখ মায়ের কথা বলছি।’
-‘বোন বড় হয়েছে বিয়ে তো দিতেই হবে। কিন্তু হঠাৎ একথা?’
-‘আহনাফকে তো তুমি ছোটো থেকেই চেনো। পাত্র হিসেবে কেমন এটাও জানো। ওর জন্যই শখের হাতটা চাইছি বাবা।’

-‘আমার বোনের ইচ্ছে ডাক্তারী পড়ার। আমরাও চাই সে ডাক্তার হোক। তাই ওর বিয়ের কথা ভাবছি না আপাতত।’
-‘ ওর পড়া নিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে কোনো সমস্যা হবে না এইটুকু গ্যারান্টি দিতে পারি।’
-‘ঠিক আছে, আমি বাসায় সবাইকে জানিয়ে আপনাকে জানাব।’
-‘ঠিক আছে, অপেক্ষায় রইলাম।’
-‘হুম।’
সায়ন কলটা কেটে শুদ্ধর দিকে তাকাল। শখের বিয়ের প্রস্তাব এসেছে বুঝতে বাকি নেই কারো। তারপরও সায়ন শুদ্ধকে আহনাফের ব্যাপারে যতটুকু বলা যায় বলল। শুদ্ধ আহনাফকে ভালো করে চেনে। ভদ্র ছেলে।
দেখা হলেই কথা হয়। অবিবাহিত বোনরা বাসায় থাকলে প্রস্তাব আসবে স্বাভাবিক। তবে ছেলে যতই ভালো হোক বোনের অমতের বিরুদ্ধে তারা যাবে না। কারণ বোনরা পানিতে পড়ে নেই যে, প্রস্তাব এলেই বিয়ে বিয়ে করে লাফাতে হবে। তাছাড়া তাদের তিনবোন তিন ধরনের। খুব ছোটো থেকে শখ খুবই নরম মনের। কারো কান্না দেখতে পারে না সে। কাউকে কাঁদতে দেখলে নিজেও কাঁদে। আর স্বর্ণ খুব চাপা স্বভাবের। মনের কথা
কাউকে বুঝতে দেয় না। হোক সেটা কারো প্রতি তীব্র রাগ বা অভিমান।

বাকি রইল শীতলের কথা, সে যেন খোলা আকাশের মুক্তমণা পাখি। মুক্তমনে উড়তে পছন্দ করে সে। যেই তাকে উঠতে নিষেধ করে সে তার জাত শক্রু। চোখের বিষ। তার জলজ্যান্ত উদাহরণ, শুদ্ধ।
বিকেলের দিকে শুদ্ধ বন্ধুদের নিয়ে কোথায় যেন গেল। সায়নও কাজের কথা বলে গাড়ি নিয়ে বের হলো। শীতলের বাবা শাহাদত চৌধুরীর ছুটি শেষ। দুপুরের পরপর উনি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছেন। তিন মাস পর হয়তো আবার আসবে। বাসায় ছেলেরা কেউ নেই তাই শীতল শখ আর স্বর্ণকে বাগানে এলো। ঘাসের উপরে খালি পায়ে হাঁটল। ফুলের বাগানে পানি দিয়ে দোলনায় বসতেই সাম্য কোথায় থেকে যেন লাফাতে লাফাতে এসে তিনটে গোলাপ ছিঁড়ে তিন বোনের কানে গুঁজে দিয়ে ধপ করে বসল শখের কোলের উপর। তারপর আহ্লাদী সুরে বলল,
-‘আপু চলো বউচুরি খেলি?’

-‘ ভাইয়ারা বাইরে গেছে যে কোনো সময় চলে আসতে পারে। অন্যদিন খেলব ভাই।’
-‘প্লিজ!’
-‘বউচুরি না অন্যকিছুর নাম বল।’
-‘তাহলে চলো কানামাছি খেলি?’
-‘আচ্ছা চল।’

শেষ চৈত্রের ঘ্রাণ পর্ব ৮

হঠাৎ শীতলের মনে পড়ল দুপুরে পেয়ারা পেড়েছিল সেগুলো রান্নাঘরে পড়ে আছে। শীতল দৌড়ে গিয়ে রান্নাঘর থেকে পেয়ারা এনে সবাইকে দিলো। পেয়ারা খেতে খেতেই খেলার প্রস্তুতি নিলো। শখের দুচোখ বেঁধে দেওয়া হলো। সাম্য, সৃজন, শখ, স্বর্ণ, শীতল খেলায় ব্যস্ত। তারা শখকে কাতুকুতু দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। শখ বন্ধ চোখে তাদের খুঁজছে। খেলতে খেলতে খিলখিল করে হাসছেও তারা। সিঁতারা, সিমিন, সিরাতও এসে দাঁড়িয়েছেন বাগানে। তিন জা মিলে সবজি বাগান থেকে সবজি তুলতে তুলতে গল্প করছে। টাটকা সবজিগুলো রান্না হবে আজকে রাতে। তখন চৌধুরী নিবাসের গেট পেরিয়ে পুলিশের গাড়ি এসে থামল। ধপধপ করে
কয়েকজন পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে স্বর্ণকে ঘিরে ধরে বলল,
-‘ইউ আর আন্ডার এরেস্ট সুবর্ণ চৌধুরী স্বর্ণ।’

শেষ চৈত্রের ঘ্রাণ পর্ব ১০