সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৬

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৬
লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা

অহমিকার প্রশস্ত অধরে ফিচেল হাসি। এগিয়ে এসে জড়তা বিহীন নিঃসংকোচে শ্রেয়ার ডান হাত টা আঁকড়ে ধরে। অকস্মাৎ স্পর্শে নড়েচড়ে উঠে শ্রেয়া। এটা যে তার আশার প্রতিফলন নয়। তবুও কঠোরতা বজায় রেখে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল। চেহারার ভঙ্গিমায় তেজের ছাপ। অহমিকা হাসি মুখেই বলে,
‘ বেশ তেজস্বী তো তুমি। ‘

শ্রেয়া গাঢ় দৃষ্টে পর্যবেক্ষণ করছে অহমিকাকে। মেয়েটা যথেষ্ট স্মার্ট। চালাকও বৈকি। নয়ত প্রাক্তনের বউয়ের সাথে এত নরম,ভদ্র ব্যবহার? তাছাড়া কিয়ৎক্ষণ পূর্বেই তো ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষর দেওয়ার কথা বলছিল। নিশ্চয়ই বিয়েতে মেয়েটার মত আছে। এত বড় একটা মেয়েকে ধরে বেঁধে একজন বিবাহিত ছেলের সাথে সারাজীবন বেঁধে দেওয়া অসম্ভব। এছাড়াও মেয়েটা পেশায় একজন ডাক্তার। জীবনের ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত থাকবে এমন ধাঁচের নয়। তাই হালকা ভাবে নিতে পারল না সে। হাত ছাড়াতে প্রয়াস চালালে অহমিকা আরও শক্ত করে চেপে ধরে। রাশভারি গলায় বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘ সাইন টা করে দাও। কি করবে এমন একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রেখে যা কখনও পূর্ণতা পাবে না?মুক্তি দাও তূর্যকে। তুমি ওকে এক পারসেন্টও চিনো না যতটা আমি জানি। আমার পাওয়া তথ্য মোতাবেক তুমি নাকি ও যেখানে লেকচারার হিসেবে নিয়োজিত সেখানকার ছাত্রী তাও ওর ডিপার্টমেন্টের?’
অহমিকা হাতটা ছেড়ে গলা ঝেড়ে নিল। পুনরায় বলতে শুরু করে,

‘ শুনো শ্রেয়া,তূর্যর অতীতে আমি। ওর জীবনেও এতকাল আমিই ওতোপ্রোতভাবে মিশে আছি। মানসিক ভারসাম্য হারানোর আগেও আমি ছিলাম, হারানোর পরেও ওর মস্তিষ্কের সমগ্রটা জুড়ে আমিই অবস্থান করেছিলাম। আবার সেই আমিই ওকে তিলে তিলে দিন-রাত এক করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছি। মাঝ থেকে তুমি উড়ে আসলে দাদির ভুল উদ্যোগে কিন্তু জুড়ে বসতে পারলে কই?স্বার্থপরতাই তো দেখালে যেটা দেখিয়েছিলাম আমি এক কালে। তবে পার্থক্য কি জানো?তূর্যকে যে ব্যাথা আমি দিয়েছি সেটার প্রশমনের মাধ্যমও আমি। কিন্তু তুমি কিছুই না। এমনকি তোমার হাসবেন্ড তোমাকে চিনে না অব্দি। তাহলে তুমি ওকে কি করে ডিজার্ভ করো?ভুল আমি করেছি,শুধরেও নিয়েছি,তূর্যও আমার। যদি নূন্যতম সেন্স থাকে কিংবা ভালো হয় তাহলে ভেবে দেখবে। রাত পর্যন্ত ভেবো,তারপর এসো আমার কাছে। তুমি আমার ছোট বোনের মতোন। তাই বলে ভালোবাসা ভাগাভাগি সম্ভবপর নয়। ‘

‘ আমার পক্ষেও স্বামী ভাগাভাগি অসম্ভব ব্যাপার। ‘–কথাটা বলে আলতো হাসে শ্রেয়া। গুণে গুণে কয়েক কদম সরে গিয়ে দাঁড়ায়। মেহরিমা ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। অহমিকা চেয়ে আছে কপাল কুঁচকে। চক্ষুদ্বয়ের আকৃতি ছোট ছোট। শ্রেয়া কন্ঠ ভার করে বলে উঠলো পুনর্বার,
‘ আপনার প্রাক্তন কিন্তু আমার স্বামী। পার্থক্য বুঝেন?আপনি ছিলেন হারামে লিপ্ত এবং আমারটা একদম পবিত্র। চাইলেই আপনাদের মতো মানুষ সেটা নিঃশেষ করার ক্ষমতা রাখে না। আমি স্যারের যোগ্য কিনা,তিনি আমাকে তার জীবনে রাখবেন কিনা সবটা ওনার থেকেই নাহয় শুনে নিব। সম্পর্ক যার সাথে গড়েছি তার মুখের একেকটা শব্দই আমার নিকট গ্রহণযোগ্য হবে। বিনা বাধায় মেনে নিব। ফারদার আমাকে জোর করার চেষ্টা করবেন না শাশুড়ী আম্মা। ‘

দাউদাউ করে জ্বলে উঠলেন মেহরিমা। শ্রেয়ার কাঁধ ঝাঁকালেন শক্ত হাতে। হুংকার ছেড়ে বললেন,
‘ স্বার্থপর মেয়ে। অস/ভ্য। এতো লাই কোথায় পেয়েছিস তুই?সব আম্মার দোষ। তুই আমার ছেলের সামনে দাঁড়ানোর যোগ্যতা রাখিস না। ভাগ্যক্রমে পারছিস। প্রিয়ুর মতোন এত বড় বাড়ির একটা মেয়ে তোকে কিভাবে বুকে জড়িয়ে নিয়েছে আমি ভেবে ভেবে দিশেহারা। যা-ই হোক আমার ছেলের উপর অধিকার খাটানোর চেষ্টা করবি না। তোকে না চাইতেও মেনে নিয়েছিলাম বিয়ের দিন। কিন্তু তোর কারণে অলিগলিতে রটে যায় চৌধুরী বাড়িতে চেপে থাকা সত্য। তূর্যকে পাগ’ল বলে আঙুল তুলত,হাসত,কৌতুক করত কেবল তোর জন্য। কই এর আগে কেউ জানত না। মা হয়ে এটা আমার পক্ষে কখনোই সহনশীল না। আমার বাড়ি,পরিবার, ছেলে আমার অহংকার। আর সেই অহংকারে কালি লেপে দেওয়া এতিম মেয়েটা তুই। এবার পিছু ছাড় আমাদের। দয়া করে,পিছু ছাড়। আমি বুঝি তূর্য নিজের মধ্যে কষ্ট চেপে রেখেছে। ও খুব চাপা স্বভাবের। ওকে সুন্দর, স্বাভাবিক,সুখী জীবনে দেখতে চাই। ‘

মেহরিমার চোখ থেকে দুই ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে যায়। শ্রেয়ার কাছে একদিক দিয়ে ওনার কথাগুলো সঠিক ও উচিত ঠেকল। তূর্যর পাগ’ল হওয়ার বিষয়টা সত্যিই কেউ এত একটা জানত না। খুব কম মানুষ জানত। সবাইকে এটাই বলা হয়েছিল তূর্য দেশে নেই। বিয়ের পরের প্রভাতে কিছু অতি নিকটস্থ আত্মীয়দের জানানো হয় তূর্য ফিরে এসেছে, ঘরোয়া ভাবে বিয়ে করেছে। সেই সুবাদে ছোটখাটো একটা আয়োজন। এগুলো না-কি প্রিয়ুকে আয়ুশী জানিয়েছে এবং ওর মাধ্যমে কর্ণধার হয় শ্রেয়ার। তবুও সূক্ষ্ম নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,

‘ আমি সেদিন এসেছিলাম, আপনিই তো ফিরিয়ে দিলেন আমাকে। অর্ধ পথ অতিক্রম করে আমি বাস থামিয়ে আবারও এসে দাঁড়িয়েছিলাম আপনাদের দুয়ারে। দারোয়ান আমাকে ঢুকতে দিচ্ছিল না। খবর পাঠাতেই আপনি এলেন। কিন্তু দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলেন আমাকে,ঘরে তুললেন না আর। হয়ত আমি এতিম বলেই এটা করতে জয়ী হয়েছেন। মাথার উপর কারো হাত থাকলে কখনই পারতেন না। জীবনে আমরা যতই বলি একা চলতে পারব বাক্যটা নিতান্তই নিরর্থক। কারো না কারো পাশে থাকতে হয় মানসিক, মনের শক্তি জোগান দিতে। যা আমার ছিল না। ফলস্বরূপ আমি হেরে গেলাম। দুর্বল হয়ে চলে গেলাম এ শহর ছেড়ে,স্বামী ফেলে। ‘

শ্রেয়া তড়িৎ বেগে সুসজ্জিত কক্ষ ত্যাগ করে। করিডোরে এসে প্রাণ ভরে শ্বাস টেনে নেয় অন্তর্দেশে। এতক্ষণ ভেতরটা বড্ড ব্যাথা করছিল। চিনচিনে ব্যাথা। তূর্যর রুমে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করে এলেও পরিস্থিতি অনুযায়ী কল্পনাগুলো সম্পূর্ণ উবে গেল। এখন রুমে গেলে প্রিয়ু হাজার খানেক প্রশ্নের, সন্দেহের ঝুলি খুলে বসবে। তাই নিচে নেমে আসে। উদ্দেশ্য প্রিয়ুর মা’য়ের কাছে যাওয়া। বিয়ে বাড়িতে কত-শত কাজ থাকে,টুকিটাকি করে দিলেও অনেকটা কমবে।
রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে দেখে প্রিয়ুর মামী,খালা,ফুপু, আরও অনেক মহিলা হাতে হাতে কাজ সারছেন। পিছন থেকে কাঁধে কারো ছোঁয়ায় নিস্তব্ধ হয়ে যায় শ্রেয়া। ফিরে দেখে ত্রিহা চৌধুরী মলিন মুখে ওর পানে চেয়ে। শ্রেয়া কি বলবে ভাবতে থাকে। এদের মুখোমুখি হলে নিজেকে অত্যধিক অপরাধী মনে হয়। দাড়িয়ে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ে। নত মস্তকে বললো,
‘ কেমন আছেন?’

ত্রিহা স্মিত হেসে বললো–‘ ভালো আছি মা। তোমার কি অবস্থা? সেদিন হঠাৎ চলে গেলে কেন?আমি প্রিয়ুকে তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম। আয়ুশও খুব অবাক হয়েছিল তোমার চলে যাওয়ায়। ‘
শ্রেয়া স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলে,
‘ কোচিং সেন্টারে টিচিং প্রফেশনে আছি চাচি। বন্ধ করলে বাচ্চাদের পড়াশুনায় ব্যাঘাত ঘটে যায়। যদিও এক বিষয়ের জন্য একাধিক শিক্ষক রয়েছে তবুও নিজের তরফ থেকে ঘাটতি রাখতে চাই না। ‘
‘ আচ্ছা আসো এখন একটু কাজে সাহায্য করবে। তোমার বান্ধবী, দেবরের বিয়ে বলে কথা। চৌধুরী বাড়ির বড় বৌ তুমি। দায়িত্ব অনেক তোমার। ‘

বড় বউ?কথাটা অত্যন্ত নিছক। শ্রেয়া একটুও নড়ল না৷ কাজে হাত দিবে সে তবে বড় বউ হিসেবে নয়,প্রিয়ুর বান্ধবী হয়ে। ত্রিহা যেন ওর মনের অব্যক্ত বাক্যগুলো আন্দাজ করে নিল। বললো,
‘ নিজের অধিকার ছেড়ে দিতে নেই মেয়ে। আমি শিওর তূর্য যেদিন জানবে তুমি ওর বউ, বুকে লুকিয়ে রাখবে তোমাকে। ও যেমন ঘাড়ত্যাড়া,রগচটা তেমন সুন্দর মনের মানুষ। মিলিয়ে নিও আমার কথাটা৷ আর বাকি রইল অহমিকার সঙ্গে বিয়ের ব্যাপার টা?তূর্যকে আমি সম্পূর্ণ বুঝে উঠতে পারি নি এত বছরে ওর চাচি হয়েও। কিন্তু যতটুকু জানি অহমিকার বিপদ খুব একটা দূরে নয়। আসো এখন। ‘

শ্রেয়া নত মাথায় সঙ্গে চলল। দুই কপোলে রক্তবর্ণ ছেয়ে গেছে নিমেষে। সত্যি কি ওকে তূর্য বুকে লুকিয়ে রাখবে?এত লাগবে না। ধারে কাছে একটুখানি জায়গা দিলেই ঢের।
বাহিরে বিরাট আয়োজন চলছে। তন্মধ্যে আয়ুশের সঙ্গে একবার দেখা হলো শ্রেয়ার। ঠান্ডা দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন করে –‘কখন আসলে?’ শ্রেয়া ক্ষীণ স্বরে আসার সময়টা জানায়। তৎপরে আর কোনো কথা বলে নি আয়ুশ। দৃষ্টি ঝুঁকিয়ে কাজের বাহানায় প্রস্থান ঘটায়। কিন্তু তার আকার ভঙ্গিতে শ্রেয়ার চক্ষু ধরে ফেলে সংকোচ চাহনি। এত কিসের দ্বিধা আয়ুশের?

এতকাল লুকিয়েছে বলে?অগোচরেই হোক ব্যাপকভাবে সহায়তা করেছে লোকটা। সে না থাকলে হয়ত নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অক্ষম হতো শ্রেয়া। মনে মনে ভাবে সকল ব্যস্ততা কেটে গেলে আয়ুশের সাথে কথা বলবে। কোনো প্রকার অপরাধবোধ বইতে দিবে না তাকে। সাহায্যকারীকে অপরাধের অনুভূতিতে জর্জরিত করার মতো খারাপ কাজ করবে না ও। বাহির থেকে এসে রাহেলার আদেশে ট্রে নিয়ে ছুটল ছাঁদে। প্রিয়ুর কাজিন গ্রুপ,মেহমান অনেকেই ছাঁদে। তাদের জন্য নাস্তা পাঠালেন রাহেলা। সাথে এলো বাড়ির কাজের মেয়েটা। সিঁড়ি ভেঙে মেয়েটা আগে আগে চলে গেল। বেশ চটপটে সে। শ্রেয়া আবার এত তাড়াতাড়ি হাঁটতে অভ্যস্ত নয়। তাড়াতাড়ি হাঁটতে গেলে মনে হয় কখন পড়ে যায় মুখ থুবড়ে, ঘটে যায় দুর্ঘটনা। সময়ের চেয়ে জীবনের দাম খুব খুব বেশি,অত্যন্ত।

মন্থরগতিতে কয়েকটা সিঁড়ি উঠতেই সম্মুখে এসে দাঁড়ায় তাগড়া,সুঠাম দেহের অধিকারী এক ব্যক্তি। মুখটা এ কয়দিনে মানসপটে, মনের ক্যানভাসে আঁকা সমাপ্ত। গেঁথে থাকবে চিরতরে। মৃ-ত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলবে না। সিঁড়ির অনেকখানি স্থান দখল করেই দাঁড়িয়ে আছে। চেয়ে আছে অনিমেষনেত্রে। নিমিষেই দৃষ্টি কড়া হয়ে উঠে। কপালে ভাঁজ ফেলে তূর্য বলে উঠলো,
‘ চলে এলে?’
শ্রেয়া চোখ বুঁজে সুর নরম রেখে প্রতুত্তর করে,

‘ জ্বি। আসতেই হয়,বেস্ট ফ্রেন্ডের বিয়ে বলে কথা। ‘
কন্ঠ কি কাঁপছে? শ্রেয়ার মনে হলো ওর কন্ঠানালিতে কম্পন। কাঁপছে তিরতির করে। তূর্যর ঠোঁটের কার্নিশে সুপ্ত হাসি ফুটে ওঠে। এক হাত দিয়ে চুলগুলো পিছনে ঠেলে দেয়। হাসি মিশ্রিত কন্ঠধ্বনি,
‘ আমারও কিন্তু বিয়ে। ‘
তৎক্ষনাৎ উত্তর শ্রেয়ার–‘ জানি। অভিনন্দন। ‘
বাহ্যিক আচরণে ত্রুটি রাখছে না শ্রেয়া। কিন্তু অভ্যন্তর ভেঙ্গে চুরে তচনচ। ক্ষতবিক্ষত একেকটা অঙ্গ-প্রতঙ্গ। তূর্য মাঝখানের খালি সিঁড়ি টায় নেমে এলো।

‘ আমার বউকে দেখলে?’
‘ হ্যাঁ। খুব সুন্দর। ‘
শ্রেয়া কথাটা বলতে বলতে কাজের মেয়েটা এসে হাজির হয়। সন্দেহাতীত দৃষ্টিতে তাকায় ওদের দিক। লজ্জায় চুপসে যায় সে। তূর্য বিরক্তি প্রকাশ করে হাত থেকে ট্রে টা নিয়ে মেয়েটার হাতে দিয়ে বললো,
‘ তাড়াতাড়ি আসবে না। এগুলো নিয়ে সবার খাওয়া শেষ হলে তারপর প্লেট গুলো নিয়ে নামবে। ওকে?’
মেয়েটা কি বুঝলো কে জানে!ঘাড় নাড়িয়ে ‘আইচ্ছা’ উচ্চারণ করে চলে গেল। শ্রেয়া নেমে যেতে নিলে ওড়নার কোণা টেনে আঙ্গুলে বেঁধে নিল তূর্য।
হতভম্ব, স্তম্ভিত শ্রেয়া। বিহ্বল কন্ঠে ভ্রুুঁ কুঁচকে জিজ্ঞেস করল,

‘ কি করছেন স্যার?’
তূর্য গম্ভীর কন্ঠে দাঁত কিড়মিড় করে বললো,
‘ আমি যেতে বলেছি তোমাকে?আস্ত বড় একটা বেয়া/দব। অনুমতি না নিয়ে উপেক্ষা করে চলে যায়। ‘
পরক্ষণেই শ্রেয়ার সন্নিকটে দাঁড়িয়ে বলে,

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৫

‘ আমার বৌ শুধু সুন্দর? ওর গাঢ় দৃষ্টি চোখে বিঁধেছে তোমার?মাথায় এক ঝুঁটি করলে ওকে বড্ড কিউট লাগে। মনে হয় মাথায় তালগাছ। মারাত্মক একটা মেয়ে। ক্ষণে ক্ষণে অস্থির করে তুলে আমাকে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এখন খুবই দুর্বোধ্য হয়ে পড়ছে। মুখে লাগাম টানতে ভুলে যাই ওর সামনে। টানবো-ই বা কেন?বৌয়ের সঙ্গে সবই জায়েজ। সিদ্ধান্ত নিলাম মধুচন্দ্রিমা পর্যন্ত গিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণকে বাঁধন হারা করে দেওয়ার। বউটা ঠিকঠাক মানিয়ে নিতে পারলেই হলো। ‘
পেট মুচড়াচ্ছে শ্রেয়ার। বক্ষস্পন্দনের গতি নিয়ন্ত্রণ হারা। কি মাতাল করা কন্ঠস্বর!দেহে তরঙ্গ খেলে গেল। কম্পন সহ্য করতে না পেরে তূর্যর পড়নের গেঞ্জি টা মুঠোয় পুরে নিল তাৎক্ষণিক।

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৭