সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৭

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৭
লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা

তূর্য ভ্রুঁ কুঁচকে পেটের দিকে তাকাল। কপালে ভাঁজ পড়ল তার। চাহনি চোখে পড়তেই শ্রেয়া নিজের দেহখানা সামলে চট করে সোজা হয়ে দাঁড়াল। হাতের মুঠোয় হতে মুক্ত করে দিল টি শার্টের কিছু অংশ। তড়তড় করে উত্তেজনা ভরপুর কন্ঠে বলে উঠল–‘ সরি স্যার। হঠাৎ মনে হলো পিছনের দিকে পড়ে যাচ্ছি, তাই কোনো দিকবিদিক না পেয়ে ভুলবশত আপনার গেঞ্জি আঁকড়ে ধরে ফেলেছি। সত্যিই আমি খুব খুব দুঃখিত। ‘

শ্রেয়া ভয়ার্ত দৃষ্টি মেলে ধরল। মুখশ্রীতে অজস্র চিন্তার ছাপ। আঁখি পল্লব কাঁপছে। ক্ষীণ সময় পর পর ছুঁয়ে দিচ্ছে মসৃণ ত্বক। ভিতরে যেন আন্দোলন চলছে। অনুভূতিদের আন্দোলন। তোরজোর হরতাল চালাচ্ছে। এখন অপেক্ষা শুধু তূর্যর পরবর্তী কথা শোনার। শরীর এত কাঁপছিল যেকোনো মুহুর্তে সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ে রক্তাক্ত হয়ে যেত। সিঁড়ির মাঝে থাকায় আশেপাশের প্রাচীর ধরার কথাও মাথায় আসে নি। হাতের নাগালে নিজেকে রক্ষার জন্য যাকে পেল তাকে ধরেই বাঁচার তীব্র প্রচেষ্টা।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

তূর্যর দৃষ্টি এখনও অবিচল, অনঢ়। একটুও নড়চড় হয় নি তার চাউনির। দেয়ালে এক হাত ঠেকিয়ে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ল। তৎপরে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। ঠোঁটের কোণে হাসি বজায় রেখে ফিচেল স্বরে বললো,
‘ কখনও আমার বুকে তোমার তুলতুলে দেহ নিয়ে পড়ে থাকো,আবার কখনও পেটে নখের আঁচড় কেটে গেঞ্জি মুঠোয় পুরে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করো। আমি কি তোমার রক্ষক?মতলব কি বলো তো?এই যে এখন পেটে নখ বিঁধিয়ে দিলে আমার কি হবে?মধুচন্দ্রিমা টা ভেস্তে দিলে?এত হিংসা তোমার মধ্যে? আমি আমার বউকে আদরে ভাসিয়ে দিব, সেইজন্য নখের আঁচড় দিয়ে আমার বউয়ের মনে সন্দেহ বাঁধানোর ধান্দা। তুমি কি ভেবেছো আমি বুঝি না?এই মেয়ে এত ধান্দা খুঁজো কেন তুমি?হিংসে হয়?’

নিমিষেই শ্রেয়ার শ্রবণগ্রন্থি গরম হয়ে ওঠে। কেমন উত্তপ্ত অদৃশ্য ধোঁয়া বেরিয়ে প্রকৃতিতে মিশে যাচ্ছে যেন। আবার মধুচন্দ্রিমার রাত্রিতে অহমিকা তূর্যর বউ হয়ে অবস্থান করবে,আদর-সোহাগ গায়ে মাখিয়ে নিবে,এসব কথা ভেবে শ্রেয়ার বক্ষস্থলে থরথর করে কম্পন ছড়িয়ে পড়ে। সেকেন্ডের ব্যবধানে বিষাক্ত যন্ত্রণায় পরিণত হয় তা। রক্তের ন্যায় প্রবাহিত হয় শিরা উপশিরায়,সমগ্র কায়ায়। দীর্ঘ নিঃশ্বাস চেপে রেখে আনমনে বলে,
‘ স্যার আপনার পেট দেখান,ওষুধ লাগিয়ে দিব। ‘

‘ হোয়াট?’— তূর্যর কড়া, উচ্চস্বর।
এবার হুঁশে এলো শ্রেয়া। কি বলল এটা সে?উল্টো ঘুরে পালাতে যাবে এহেন মুহুর্তে তূর্য গলা ঝেড়ে ডাকল। কন্ঠটা কেমন রসাত্মক,ঠাট্টামিশ্রিত,
‘ এই মেয়ে,তুমি কি চাইছো আমার উদোম দেহ দেখতে?আবারও নায়ক ভাবছো আমাকে?আহারে! আমি আমার বউয়ের হাসবেন্ড। আর কারো হতে পারব না। বেয়াই হিসেবেই বললাম স্যরি বেয়াইন। আমার উন্মুক্ত দেহটা আমার মাথায় তালগাছওয়ালা বউয়ের প্রাপ্য। ‘
শ্রেয়া ভড়কালো। চোখ বড়সড় করে বলতে চাইল,’ আপনি একটা চরম লেভেলের চরিত্র-হীন পুরুষ। নাহলে বউয়ের সামনে অন্য নারীর সাথে মধুচন্দ্রিমার কল্পনা করতে লজ্জা লাগে না?’ মনের কথা মনে সঞ্চয় করে রেখে নরম,নম্র কন্ঠে বলে,
‘ আমি নিচে যাব। আসি। ‘
তাৎক্ষণিক তূর্য গম্ভীর স্বরে বলে উঠল,

‘ তোমাকে ধরে রেখেছে কে?যাও। তবে আমার পেট থেকে ঝরানো এক ফোঁটা রক্তের অধিকার আমি ছাড়ছি না। যেভাবে পারো সময় বুঝে শোধ করে দিও। তুমি অবশ্য আগেই জ্ঞাত আছো হিসেবে এক চুলও ছাড় দেবার মানুষ আমি নই। সো তপ্ত দেহের অধিকারীণি শ্রেয়সী রক্ত কিন্তু চাই মানে চাই।’
শ্রেয়ার অবাক স্বর–‘ রক্ত ঝরেছে?কই?আপনি নিজেই তো দেখেন নি?’
তূর্য অগ্নিময় দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো সঙ্গে সঙ্গে। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
‘ আমি স্যার নাকি তুমি ম্যাডাম?’
নিমেষে প্রতি উত্তর শ্রেয়ার–‘ আপনি স্যার। ‘
তূর্য দুই অধর আলগা করে। পুনরায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল,
‘ দেহ টা তোমার নাকি আমার?’
‘ আপনার। ‘

‘ তাহলে আমি অনুভব করবো নাকি তুমি?অনুভবে বুঝেছি রক্ত ঝরেছে। দু ফোঁটা হয়ত। কিন্তু এক ফোঁটা নিব। আমি আবার নির্দয় না। আর স্যার যেহেতু আমি,বুঝিও তোমার চেয়ে অধিক। কোনো বাহানা চলবে না, দুইয়ের স্থানে এক কমিয়ে, এক ফোঁটায় এনেছি রক্তের পরিমাণ। তোমার দেহ থেকে আমার গায়ে এক ফোঁটা রক্ত প্রবেশ করলেই দায় মুক্ত করব তোমাকে।’
শ্রেয়া তাজ্জব হয়ে চেয়ে রইল নির্নিমেষ। অক্ষিপটে চমক,বিস্ময়। মস্তিষ্ক কিছু বুঝে উঠতে পারছে না। এ কেমন লোকের পাল্লায় পড়েছে?মানুষ টা এখনও পাগল রয়ে গেল নাকি?নিস্তব্ধতা ভেঙে তূর্য আদেশের সুরে বললো,
‘ নিচে নেমে বড় জায়গা টায় দাঁড়াও তো। ‘
শ্রেয়া মিনমিনে কন্ঠে উল্টো জিজ্ঞেস করে,

‘ কেন?’
‘ চরিত্রহীন পুরুষ হওয়ার আশা আবার ভিতরে জেগেছে তাই। ‘
তূর্যর কাঠ কাঠ কন্ঠের নিরলস জবাবে শ্রেয়ার হৃদয়স্থল ধুকপুক করে উঠল। তড়িঘড়ি করে নিচে নেমে মিশিয়ে নিল দেহটা দেয়ালের সঙ্গে। তূর্য হাসল। দুর্বোধ্য হাসি। গুণে গুণে তিন পা ফেলল সমুখে। দূরত্ব থাকল। এক আঙুল, কিঞ্চিৎ পরিমাণের তফাত টুকু আজও ঘুচায় নি সে। গাঢ় স্বরে বললো,
‘ কানে কানে একটা কথা শুনো। ‘

শ্রেয়া দম আঁটকে স্থির হয়ে আছে। নড়ছে না বিন্দুমাত্র। তূর্যর ঘোর লাগা স্বর হৃদয় নিংড়ানোর ক্ষমতা রাখে। হ্যাঁ বা না কিছু বলতে পারল না। সুঠাম,তাগড়া দেহের যুবক খানিকটা ঝুঁকে এসে বলে,
‘ তোমার সন্নিকটে আজকাল আমার সহ্যের মাত্রা বেড়েই চলেছে। অস্থির হলাম তবুও সহ্যশক্তি কমল না। হেয়ালি না করে বলেই ফেলি যে কারণে তোমায় এতক্ষণ আঁটকে রাখলাম তা হলো– তোমার কাঁধের একপাশে কালো কালো কি যে উঁকি দিচ্ছে। ঠিক করে নিও। ‘
শেষের বাক্যটা প্রচন্ড মৃদু স্বরে উচ্চারণ করলো তূর্য। দ্রুত গতিতে প্রস্থান ঘটালো নিজের। শ্রেয়া থম মেরে আরো চিপকে গেল দেয়ালে। পেট মোচড় দিচ্ছে আবারও। এবার বোধহয় বাথরুমে যেতেই হবে। ওড়না পিঠে ছড়িয়ে কাঁধসহ ডেকে দৌড় মারল। আর দাড়ানো যাবে না। কোনোমতেই না। করিডোরে এসে মুখোমুখি হলো প্রিয়ুর মামী রাহেলার। তিনি চোখ ছোট ছোট করে জিজ্ঞেস করলেন,

‘ দৌড়াচ্ছ কেন?কি হয়েছে? আমি তোমাদেরই ডাকতে যাচ্ছিলাম। সেই যে গেলে দু’জন আর এলে না। চলো চলো রাশেদা ডাকছে তোমাকে খাওয়ার জন্য। এত বেলা গড়ালো এখনও খেলে না। প্রিয়ুও অপেক্ষা করছে। ‘
শ্রেয়া পেটে এক হাত চেপে জানালো,
‘ আমি আসছি। পাঁচ মিনিট দেরি হবে। ‘
এক মুহুর্ত অপেক্ষা না করে দৌড়ে রুমে এলো। ঢকঢক করে পানি খেয়ে বিছানায় বসে বিড়বিড় করলো — ‘ এমন চরিত্রহীন পুরুষ, পাগল লেকচারার দু’টো দেখি নি। ‘

প্রিয়ুর টানাটানিতে বাথরুমে যাওয়া আর হলো না। অবশ্য প্রয়োজনও পড়ে নি। পানি খাওয়াতে কেমন শান্ত হয়ে গেল পেট টা। এই অঙ্গের শত্রু একজনই এবং মানুষটা হলো তূর্য চৌধুরী। ওনি কাছে এলে যত মোচড়ামুচড়ি। সরব করে নিচে আসে। একদল খেয়ে ওঠে গেছে। বিয়ে বাড়ি বলে কথা। যে পারছে চেয়ার দখল করছে, পেট ভরে খাচ্ছে, গিলছে আবার ওঠে যাচ্ছে। নতুন করে টেবিলে খাবার সাজাচ্ছেন কাজের লোকেরা। প্রিয়ু বসে পাশের চেয়ারে শ্রেয়াকে বসাল। বাম পাশের চেয়ার কাছাকাছি বসল আয়ুশ। এতে প্রিয়ু আলতো হাসে। লজ্জাতুর হাসি হলে আখ্যায়িত করা হয় এটাকে। শ্রেয়া দেখে চকিতে মাথা নত করে খাবার খাওয়ায় নিমজ্জিত হয়। কিন্তু ওর সেই খাওয়ায় বিঘ্ন ঘটিয়ে সামনের দিকে চেয়ারে টেনে বসে তূর্য। তাকে দেখেই শ্রেয়ার পুনর্বার পেটের পীড়ার সৃষ্ট হয়। গ্রোগাসে গিলে ওঠে যাওয়ার চেষ্টা করে। আঁড়চোখে তাকাতেই আঁখিদ্বয়ে বিঁধে ওর পানে তূর্যর তীক্ষ্ণ,তুখোড় চাহনি। এভাবে চাওয়ার মানে খুঁজে পেল না। নিজের দিকে চেয়ে দেখল ওড়না ঠিক আছে কিনা। কাঁধে কোনো কিছু নেই তো। তবুও টেনেটুনে ঠিক করলো। সাথে সাথেই তূর্যর ওষ্ঠে উপহাসের হাসির দেখা মিলে। শ্রেয়ার মন বলছে এই লোক ওর থেকে মজা লুফে লুফে নিচ্ছে।

চেয়ার ছেড়ে বেসিংয়ে এসে হাত ধুয়ে উপরে ওঠে আসল। রুমে যাওয়ার পথিমধ্যে একটা রুম থেকে ভেসে আসে চাপা স্বর,’ এই মাইয়া এখানে আয়। ‘
হতবাক শ্রেয়া। ফাতেমা চৌধুরী নিজের রুম থেকে নিচু গলায় হাঁক ছাড়ছে। গটগট পায়ে গিয়ে উপস্থিত হলো ও। ফাতেমা চৌধুরী রহিমার দিকে তাকিয়ে দরজা বন্ধ করতে ইশারা করলো। কথামতো রহিমা কাজটা বড় নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করে দাঁত কেলিয়ে বললো,’ করে দিছি আম্মা।’

তারপর শ্রেয়ার পানে দৃষ্টি মেলে বললো,’ নতুন বধূ বও খাটে। দাঁড়ায় আছো ক্যান?’
ইতস্তত ভঙ্গিতে প্রতুত্তর করে শ্রেয়া–‘ ঠিক আছি খালা। ‘
ফাতেমা গর্জে উঠলেন,’ রহিমা তুই তাইরে নতুন বধূ কইলি কিরে?নতুন বধূ হইব অহমিকা টহমিকা। এই মাইয়া স্বর্ণ চিনে নাকি?’
শ্রেয়া স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলে, ‘ ঠকবাজ চিনি দাদি। ‘

‘ কি কইলি তুই?ঠকবাজ কারে কইলি?এহনই গাট্টি বস্তা বাইন্ধা তুই বিদায় হইবি। আমাগো খাইয়া,পইড়া একটা সাদা চামড়ার দেহ বড় করলি। দশবছর তোরে বিনা পয়সায় পালছি, আমার লগে টক্কর লস?’
‘ আল্লাহ আমার রিযিক দিয়েছেন। আপনারা মাত্র উছিলা ছিলেন। এত অহংকার?এতিমকে ঠকাতে গায়ে লাগে নি?এতিমদের পালেন ভালো কথা, এভাবে খোঁটা দেন কেন?আমি যাবো না। আমার বান্ধবীর বিয়েতে পাক্কা নিমন্ত্রণ পেয়ে এসেছি। আপনার কথায় আমার পাও নড়তে অনিচ্ছুক। ভালো থাকবেন। বুড়ো বয়সে তেজ কমান। ‘
কথাগুলো বলে শ্রেয়া দরজা মেলে চলে আসে। ফাতেমা চৌধুরী ওকে শুধু নিজেদের ব্যবহারে চৌধুরী বাড়ির পুত্রবধূর স্থান দিয়েছিল তা আরো একবার প্রমাণিত হলো। চক্ষু কোটর জলে টইটুম্বুর হয়ে উঠল এক লহমায়।

ঘড়ির কাটা বরাবর নয়টার ঘরে। পিটপিট করে চোখ মেলে রুমে একদল রূপসীর মেলা দেখে শ্রেয়া ধড়ফড় করে উঠে বসল। সন্ধ্যার পর ক্লান্তিতে বিছানায় কোমল দেহ খানি এলিয়ে দিতেই চোখ বুঁজে আসে। তন্দ্রা ভর করে। নিয়ে যায় ঘুমের রাজ্যে। অস্পষ্ট চক্ষে দেখে সবাই সেজেগুজে ফিটফাট। হলুদ শুরু হবে বলে তাড়া দিচ্ছে অনেকে। শ্রেয়া নির্বাক হয়ে গেল স্বয়ং বউ হলুদের সাজে সজ্জিত হয়ে ওর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। অপ্রতিভ হলো ও। রিনঝিনে স্বরে জিজ্ঞেস করলো,

‘ কি হয়েছে প্রিয়ু?হলুদ শুরু হয়ে গেছে? তুই সাজুগুজু করে এখানে বসে আছিস কেন নিচে না গিয়ে?কত সময় চলে গেল। ‘
প্রিয়ু সূক্ষ্ম একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে টেবিলের উপর থেকে বড় ঢালা এনে বিছানায় রেখে বললো,
‘ফটাফট তৈরি হ বোন। আমি তোকে ছাড়া বাসর ঘরে যেতেও নারাজ আর এটা তো শুধু হলুদ। ‘
উপস্থিত সকলে বিস্ফোরিত নয়নে চাইল। প্রিয়ু হেসে বলে,
‘ বাসর ঘরের বাহিরে ওকে পাহারাদার হিসেবে রাখব। ঘরে ঢুকাবো নাকি?যা তো শ্রেয়া রেডি হয়ে আয়। ‘
প্রিয়ুকে যত দেখে সবাই তত চমকায়। কেউ এত ভালোবাসতে পারে বান্ধবীকে?অথচ মানুষ বলে স্বার্থ ফুরালে নাকি বছরের পর বছর ধরে অটুট থাকা বন্ধুত্বেও ফাটল ধরে। কিন্তু শ্রেয়া ও প্রিয়ু যেন এর উল্টো উদাহরণ। সবার বন্ধুত্বে প্রয়োজনীয়তা থাকে না, কারো কারো টা নিঃস্বার্থ হয়,ভালোবাসাময় হয়।

শ্রেয়া ঢালার উপরের কাপড় সরিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেল। একদম টুকটুকে লাল কাতান শাড়ি সাথে আর্টিফিশিয়াল লাল গোলাপের গহনা। এগুলো পড়লে তো ওকে প্রিয়ুর চেয়ে অনেকাংশে কম লাগবে না। এমনকি মানুষ ভাববে ওর হলুদ অনুষ্ঠান। ডেকে প্রিয়ুকে দেখালো।
‘ এগুলো মা দিয়েছে শ্রেয়া। মা বললো তোর জন্য ওনি নিজ হাতে শপিং করবেন তাই আমি আর যাই নি। মেয়ের জন্য মা শখ করতেই পারে তাই না?’

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৬

এতো ত্যাগ!নিজের মা’য়ের ভাগ পর্যন্ত দিয়ে দেয় এই মেয়ে। শ্রেয়া একটু ভেবে বললো,
‘ কিন্তু এগুলো মানে এরকম কেন দিবে?আমাকে বউ ভাববে না মানুষ? ‘
প্রিয়ু ফিক করে হাসল। কর্ণকুহরে ফিসফিস করে বললো,
‘ লাগলে যেই পাত্র তোকে চাইবে তার হাতেই তোকে তুলে দিব। তূর্য স্যার ডিলিট। ‘

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ১৮