সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ৩৫

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ৩৫
লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা

‘ কোথায় যাবো আমরা?’
‘ জানিনা। স্যার বলেছেন রেডি থাকতে।’
‘ আমি যাবো না। তুই আর তূর্য ভাইয়া-ই যা।’
শ্রেয়া চোখ জোড়া ছোট ছোট করে তাকায় বিছানার দিকে। প্রিয়ু পায়ের উপর পা রেখেছে ক্রসিং স্টাইলে। দিব্যি দুই পাশে দোলাচ্ছে দু পা। হাতে এখনকার নিত্যকার সঙ্গী মোবাইল। এটা ছাড়া যেন আজকাল সবার নিঃশ্বাস-ই চলে না। শ্রেয়া বার্তাহীন চট করে মোবাইলটা কেড়ে নিল।

‘ কেন যাবি না?’
‘ তোরা একসাথে রোমান্স করবি,আমি গেলে করতে পারবি বুঝি?’
প্রিয়ুর বিবশ কন্ঠে রসাত্মক বাক্য শুনে শ্রেয়া হতবাক। ভ্রুঁ যুগল কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,
‘ তোর সাথে যখন আয়ুশ ভাইয়ার সাথে দেখা করতে যেতাম, তখন তোরা রোমান্স করতি?’
‘ না তো। তোর সামনে রোমান্স করতে লজ্জা লাগবে না আমাদের?’
‘ এটাই। স্যার গর্দভ নন যে তোর সামনে রোমান্স করবে। ‘

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

এবার প্রিয়ু কথার তাল পেয়ে গেল। জেঁকে ধরলো শ্রেয়াকে। মুচকি হেসে গাল দু’টো উঁচু করে। পরক্ষণেই আবার ভ্রুঁ নাচায়।
‘ তার মানে ভাইয়া আড়ালে রোমান্স করে?অনেক রোমান্টিক তাই না?’
নিজের কথায় নিজে হতবিহ্বল শ্রেয়া। সরব করে ব্যগ্র গলায় বলে উঠলো,
‘ এসব নিয়ে পড়ে থাকবি?রেডি হো। নয়ত স্যার উল্টো আমাকে বকবেন। ‘
‘ তোকে ভালোবাসি বলেছেন ভাইয়া?’

প্রিয়ুর হঠাৎ প্রশ্নে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল শ্রেয়া। অপ্রতিভ হলো অত্যধিক পরিমাণে। বাহ্যিক অংশে অপ্রস্তুত ভাব এলেও মস্তিষ্কের নিউরনে নিউরনে তীব্রভাবে বিঁধে প্রশ্ন খানা। না বললেও ওর হৃদয় থমকেছে যেদিন, তক্ষুনি বুঝে নেয় তূর্যর অপ্রকাশিত অনুভূতি। একদিক থেকে ভাবলে সেটা অব্যক্ত নয়। কারণ মানুষ টা প্রতিনিয়ত নিজের আচরণে মিশিয়ে দিচ্ছে কোনো এক মনোমুগ্ধকর অনুভূতি। সন্ধি তো ঘটে গিয়েছে।
কবে,কখন,কোন স্থানে,কেমন করে অতশত প্রশ্ন না করলেও চলবে। সর্বক্ষণ ভালোবাসি না,বাসি না বলা মানুষ টার কথার ভাঁজে লুকিয়ে আছে তীব্র ভালোবাসা। শ্রেয়ার ঠোঁটে লাজুক হাসি৷ মিহি কন্ঠস্বর। ছোট্ট করে জিজ্ঞেস করলো,

‘ বলা কি খুব প্রয়োজন?’
প্রিয়ু মাথা নাড়িয়ে বললো, ‘ একদমই নয়। তবে ভাইয়ার অতীত মানে অহমিকাকে নিয়ে কথাগুলো জানতে ইচ্ছে হয় না তোর?’
‘ অতীত ঘেটে কি লাভ?যেখানে আমি ওনার বর্তমান, ভবিষ্যৎ সব। তাছাড়া ওনার মুখ থেকেই শুনেছি অহমিকা আপু বড্ড স্বার্থপরতা করেছেন। ওনার ঘৃ*ণা মিশ্রিত বাক্যগুলোই বুঝিয়ে দিয়েছে ঠিক কতটা কষ্ট দিয়েছেন অহমিকা আপু। ‘
‘ তাহলে তুই স্যারের কাছ থেকে এত দূরে দূরে থাকিস ক্যান?লজ্জা পাস?একান্তে সময় কাটাতে ইচ্ছে করে না তোর?দেখিস অহমিকা এসে আবার না তোর স্যার কে নিয়ে যায়। এত কিসের জড়তা?আমি তো আয়ুশকে পারি না খামচে মে’রে ফেলি। ‘

শ্রেয়ার চক্ষু ছানাবড়া। এই মেয়ের মুখে কিছুই আটকায় না কখনও। সময়,মানুষ, পরিস্থিতি কিছুই বিবেচনা করে না। কেবল মুখ ফোটে বলতে পারলেই যেন পরম আনন্দ, শান্তি। আনমনে কপাল কুঁচকে এলো। বললো,
‘ তুইও স্যারের মতোন লাগামহীন। ‘
নিমিষেই প্রিয়ু অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। বিছানা ছেড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে। বলে,
‘ আমি কি ভাইয়ার মতো বলেছি নাকি?ভালোবেসে একটু আধটু চিমটি মা’রতেই পারি আমার জামাইকে। চাইলে তুইও মা’রতে পারিস। ‘
পরক্ষণেই প্রিয়ুর মুখের আদলে পরিবর্তন আসে ব্যাপক। শ্রেয়ার দেহ মুক্ত করে হাত ধরে বিছানায় এসে বসলো। কন্ঠে গুরুতর ভাব এনে বললো,

‘ তোকে কিছু কথা বলবো শ্রেয়া,মনোযোগ দিয়ে শুনবি। এতদিন আমি বাড়িতে সবকিছুই দেখেছি। এটাও দেখেছি বড় মা অহমিকাকে বাড়িতে আনার চেষ্টা করছেন আবারও। ওনার ভাষ্যমতে অহমিকাই মেয়ে হিসেবে ভালো। অথচ উনি অল্পতে পাওয়া সম্মানে ভুলে বসলেন তূর্য ভাইয়ার খারাপ অবস্থার জন্য সেই মেয়েটা কোনো না কোনো ভাবে জড়িত ছিল। কি না করেছেন ভাইয়া মেয়েটার জন্য? ঠিক কতটুকু ভালোবেসেছিল ওকে আমার জানা নেই। কারণ ভালোবাসা পরিমাপ করার ক্ষমতা আদৌ কারো হয় নি। তবে আমার চোখে পড়ত মাঝে মাঝে মেয়েটার জন্য ভার্সিটির ক্লাস মিস দিয়ে ভাইয়া মেডিকেল কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেন যা ওনার ব্যক্তিত্বের সাথে মিলাতে পারতাম না আমি। আমার জানামতে এবং ছোট থেকে চেনা অনুযায়ী তিনি একজন গম্ভীর এবং খুবই রগচটা স্বভাবের মানুষ ছিলেন। কোনো মেয়ের জন্য ওনার এত অপেক্ষা আমাকে ভীষণ মুগ্ধ করত। চাইতাম, আয়ুশও আমাকে এমন করে ভালোবাসুক। স্কুলে পড়তাম তখন তূর্য ভাইয়ার এসব পাগলামি আমার কিশোরী বয়সে অনেক প্রভাব ফেলে। ভেবে ভেবে সাজাতাম আয়ুশও কোনো একদিন আমাকে এমন করে ভালোবাসবে।

ছোট থেকেই ওনাদের বাড়িতে আমার আসা যাওয়া লেগে থাকত। সেই সুবাদে একদিন গিয়ে অহমিকাকে পাই সেখানে। বড় মা হাতে চুড়ি পড়িয়ে দিচ্ছিলেন। তূর্য ভাইয়ার সঙ্গে নাকি ওর বিয়ে প্রায় ঠিকঠাক। তোহাশ ভাইয়া যাওয়ার পর তূর্য ভাইয়া বেশ ভেঙে পড়েন,আঘা*ত পায় কিছু কথায়। তুই জানিস না কিন্তু আমি দেখেছি তূর্য ভাইয়ার কাছে ওনার পৃথিবী ছিলেন তোহাশ ভাইয়া। কিন্তু সেই পৃথিবী দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ভুবন নতুন করে সাজায় অহমিকা। শক্ত মানুষও ভাঙ্গে,তবে বাহ্যিক ভাবে নয়,ভিতরে ভিতরে। আমরা চাই কেউ আমাদের হোক,আমাদের বুঝুক। তূর্য ভাইয়াও হয়ত চাইতেন,সেই চাওয়ায় পরিপূর্ণতা এনে দিল অহমিকা।

আবার কেড়েও নেয় সে। একবার দুর্বলতা প্রকাশ করে ফেললে মানুষ সেই সুযোগে আরো কঠিন ভাবে আঘা*ত করে। অহমিকা নিজেকে ভালো জাহির করতে এতটাই পরিপক্ব ছিল কেউ ওর আসল রূপটাই দেখতে পারে নি। এমনকি তূর্য ভাইয়াও না। বছর খানেক চুটিয়ে প্রেম করে বিয়ের আগের দিন জানায় লন্ডন চলে যাবে। বিয়ে করবে না। বিয়ে নামক বেড়াজালে বাঁধতে চায় না নিজেকে। তূর্য ভাইয়া প্রথমে ভেবেছিল হয়ত মজা করছে আর সবাই স্বাধীনতা প্রিয় তাই অনেক বুঝায়। বুঝানোর কোনো ত্রুটি রাখে নি। এটাও বলে পড়তে চাইলে লন্ডন চলে যাক,এখন বিয়ে করতে না চাইলে অপেক্ষা করবে। পরে নাহয় করবে। কিন্তু অহমিকার একটাই কথা সে বিয়ে করবে না। একটা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ এতটা নত হলো তার ভালোবাসার কাছে কিন্তু ফলাফল শূন্য। চলে যায় অহমিকা। সে যাওয়ার পর ভাইয়াকে এসব ব্যাপারে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করে নি। কিন্তু কথা তো গোপন থাকে না বেশিদিন। বাতাসের মতোই বইয়ে আসে সত্যটা। লন্ডনে অবস্থিত কাজিনের সঙ্গে প্রেম অহমিকার, তাই তূর্য ভাইয়াকে ছেড়ে পাড়ি জমানো।

সেই ঘটনার পর ভাইয়াকে বাসায় দেখা যেত না সবসময়। ভবঘুরে হয়ে গিয়েছিলেন। এডভেঞ্চার দিয়ে বেড়াতেন। কোনো একদিন আয়ুশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ভাইয়া অ্যালকোহল ব্যবহার করছেন। পরিবারের ভাঙন, তোহাশ ভাইয়ার করা আঘা*ত,অহমিকার করা কান্ডে হয়ত ভেঙে পড়েন তিনি কিন্তু সেটা প্রকাশ করেন নি। নিজেকে সামলেছেন অন্যভাবে। দীর্ঘ দিন অ্যালকোহল ব্যবহারের কারণে তিনি সাইকোসিস ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

নেত্রগহ্বর জলে টুইটুম্বুর। ভিতরটা ধ্বক করে ওঠে শ্রেয়ার। সাইকোসিস ডিসঅর্ডার সম্পর্কে একটু হলেও অবগত ও। এটা এক প্রকার মানসিক ব্যাধি। গুরুতরও বলা যেতে পারে। মূলত বিভ্রম সৃষ্টি করে মানুষের মধ্যে। হ্যালুসিনেশন হয় ওই মানুষ টার সবসময়। ভাবে কেউ আছে। কাউকে অনুভব করে। কখনও কখনও মস্তিষ্ক উগ্র হয়ে যায় মানুষটাকে অনুভব করে। এটা মূলত স্বল্প মেয়াদী হয়। বিরল ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন, বছরও গড়ায়। সাইকোসিস একজন ব্যক্তির পাঁচটি ইন্দ্রিয় তাদের আচরণ ও আবেগকে প্রভাবিত করতে পারে। মন বাস্তবতার সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। তূর্যর বেলায়ও ঠিক এটাই হয়েছে হয়ত। শ্রেয়া ব্যাথাতুর কন্ঠে মৃদু আর্তনাদ করে। দুই অধর নড়েচড়ে ওঠে,

‘ সাইকোসিস ডিসঅর্ডার? ‘
‘ হ্যাঁ। তুই একবার পত্রিকায় এ রোগ সম্পর্কে পড়ছিলি আমি দেখেছিলাম, তাহলে তোর ধারণা রয়েছে। আমার আর বলতে হবে না খোলে। ভাইয়ার রোগ টা ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করে। উনি বেশি কল্পনা করতেন অহমিকা কে। ওকে ভেবে অনেক মানুষকেই আ’ঘা’ত করে ফেলতেন। প্রথম প্রথম নিজেকে নিজ থেকেই অনেক নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতেন কিন্তু পেরে ওঠতেন না। দিনকে দিন ক্রমশ হয় তা। কোনো গতি না পেয়ে সকলে মিলে বন্দী রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

বাড়িতেই ট্রিটমেন্ট চলত ভাইয়ার। একটা সময় ডাক্তার জানালেন চিকিৎসার পাশাপাশি আপনজনদের সেবা যত্নে ভাইয়া বাস্তব জগতে ফিরে আসতে পারেন। যেহেতু তিনি পরিবারের কাউকে সহ্য করতে পারতেন না, সেক্ষেত্রে দাদি তোকে দেখে সিদ্ধান্ত নেয় ভাইয়ার খেয়াল রাখার জন্য বউ করে আনার। উনি মনে করেছেন তুই অচেনা,তোর ক্ষতি করবে না। কিন্তু ভাবনা ভুল ফলে। তুই চলে আসার প্রায় দুই বছরের মাঝামাঝি সময়ে অহমিকা আবার ফিরে আসে।

ডাক্তার আংকেল ওকে রেফার করে ভাইয়ার ট্রিটমেন্টের জন্য। প্রথমে বড় মা ওকে দেখে জানিয়ে দেয় ঘৃণায়, ট্রিটমেন্ট করাবে না। পরে ছেলের অবস্থা দেখে অটল থাকতে পারলেন না। বেশ ভালোই চিকিৎসা চালিয়ে যায় ও। সময়ের স্রোতে আবারও ভালো সেজে বড় মা’র মনও জয় করে নেয়। বড় মাও ভাবে ও ভালো হয়ে গিয়েছে। এটাও বলে ও নাকি তূর্য ভাইয়ার অবস্থা শুনেই ফিরে এসেছে। কি জানি কোন স্বার্থ হাসিলে পরাজিত হয়ে আবার কোন স্বার্থের টানে ফিরে এসেছে। ‘

এত লম্বা লম্বা বাক্যে প্রিয়ু হাঁপিয়ে উঠেছে। দীর্ঘ নিঃশ্বাস নাসারন্ধ্র বেয়ে বাহিরে উন্মুক্ত হয়। প্রিয়ু পুনর্বার বলে উঠলো,
‘ তোকে এগুলো বলার একটাই উদ্দেশ্য শ্রেয়া ভাইয়ার কাছাকাছি থাক। কাউকে তোদের আলাদা করার সুযোগ দিবি না। কাউকেই না। ভাইয়া তোকে খুব ভালোবাসে। জানিস উনি কেন এতদিন একা একা কাউকে না জানিয়ে এখানে ছিল?কারণ ভালো নেই উনি। সেদিন সকালে বেরিয়ে আসার একটাই কারণ উনি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন আবারও।

পুরোপুরি পিছু ছাড়ে নি রো’গ টা। অতিরিক্ত চিন্তা করলেই মাথা ব্যাথা করে। এ ক’দিন যাবত সাইকিয়াট্রিস্টের শরণাপন্ন ছিলেন। আমাকে আর রহিমা খালাকে তোর দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিলেন। তুই উনার দ্বিতীয় ভালোবাসা হতে পারিস তবে ভুল মানুষ না। ‘

শ্রেয়ার হৃদয়স্থলে গিয়ে তীক্ষ্ণ যন্ত্রণা বিস্তার করে প্রিয়ুর কথাগুলো। তূর্য একা একা কতকিছু সহ্য করছে অথচ ও জানতেই পারলো না। প্রিয় মানুষের সান্নিধ্য প্রয়োজন নয়ত কেউ কেউ পরিণত হয়ে যায় মানসিক রোগী তে। মানসিক রোগের ওষুধ হলো সঙ্গ,ভালোবাসা, যত্ন। কিন্তু একটা সময় ও এসবই দিল না তূর্যকে। এখনও কি দিচ্ছে? প্রিয় হোক কিংবা অপ্রিয় মানসিকভাবে বিক্ষিপ্ত মানুষগুলোকে পারলে একটুখানি সঙ্গ দেওয়া উচিত।

রিকশা চলছে সোজা পিচঢালা রাস্তা ধরে। ব্যস্ত হাতে চাচা গামছা সমেত কপালের তপ্ত জলবিন্দু কণা মুছে নিচ্ছেন। মৃদুমন্দ সমীরণে ওড়ছে শ্রেয়ার শুভ্র রঙা আঁচল। সাঁঝবেলা পার হয়ে রজনী নেমেছে সদ্য। তবুও ঘোর রজনী চারিধারে। কোথাও কোথাও নিয়ন আলো পথিকদের সঠিক পথ দেখিয়ে চলেছে যেন আঁধারের অতলে ডুবে না যায়। প্রিয়ু পাশে বসে খানি সেকেন্ড বাদে বাদে নিরবতার সমাপ্তি ঘটাচ্ছে। বেশ কয়েকবার মলিন,নিষ্প্রভ স্বরে এক রাশ আফসোস নিয়ে বলেছে,
‘ আয়ুশকে বড্ড মিস করছি। আগে দূরে ছিলাম সইয়ে গিয়েছে। এখন কাছে থেকে অভ্যাস হয়ে গিয়ে অল্প সময়ের বিচ্ছেদে দম বন্ধ হয়ে আসছে। ‘

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ৩৪

বিচ্ছেদের বেদনার স্বাদ শ্রেয়া নিয়েছে। তাই প্রিয়ুকে প্রতুত্তরের শব্দাংশ খুঁজে পেল না। অচিরেই পেছনের রিকশা টা ওদের রিকশা পার করে থামলো। চাচাও প্যাডেল ঘুরানো বন্ধ করে দিলেন। শ্রেয়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টি মেলেছে সবে,তখনই তূর্য অপর রিকশা থেকে নেমে আসে। মুখে কেমন একটা উদ্বিগ্ন, অস্থিরতা। বড় বড় পা ফেলে এসে ঝুঁকে ওর শাড়ির বড়সড় আঁচল টা রিকশার চাকার কাছ থেকে তুলে ঠিক করে দিল। শ্রেয়ার হৃদস্পন্দন প্রায় থমকে গিয়েছে। কি হতে যাচ্ছিল এখন!সামান্য সতর্কতার অভাবে প্রাণ টা খোয়াতে হতো। তূর্যর দিকে করুণ চাহনি নিক্ষেপ করতেই নরম,শীতল কন্ঠস্বর শুনতে পায়,
‘ মে’রেই ফেলছিলে আমাকে। ‘

সন্ধি হৃদয়ে হৃদয়ে পর্ব ৩৬