হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ১৭
তোয়া নিধী দোয়েল
অভ্র আর শিপু রেজুয়ানের জন্য কাঠ-বাগানে অপেক্ষা করছে । কাল রাতে দু’জন প্ল্যান করে ওর জন্য একটা সারপ্রাইজ রেখেছে। রাতে বলার পর ও সকালে শিপু বার বার কল করে তাড়াতাড়ি আসতে বলেছে। কিন্তু, রেজুয়ানের এখনো আসার নাম নেই!
মুজাহিদ আর রেজুয়ান ওদের পার্সোনাল বাহনে করে আসছে। মুজাহিদ স্কুলে যাবে। কিন্তু, রেজুয়ান বলেছে আগে ওকে কলেজে দিয়ে আসতে।
“তোর জন্য আজ আমার স্কুলে যেতে দেরি হবে।”
“চুপ চাপ চলো বাপের ভাই। তুমি-ই তো দেরি করে বের হলে। আমি তো আগে রেডি হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম।”
“হুম। তাই তো কাকে যেনো গলা ফাটিয়ে ডেকে ঘুম থেকে তোলা হলো।”
“আরে বাপের ভাই! তোমাকে সব সময় এত সত্যি কথা বলতে বলে কে?”
দেবেন্দ্র কলেজের তিন নাম্বার গেটে রেজুয়ানকে নামিয়ে দেয় মুজাহিদ। সে তাঁর স্কুলের উদ্দেশ্যে চলে যায়। রেজুয়ান পকেট থেকে ফোন বের করে শিপুকে কল করে। ওদের অবস্থান জেনে সেখানে চলে যায়।
“শোন আজ ডিপার্টমেন্টে স্যার নেই। তো আজ আমরা ক্লাসে যাবো না। বরং আমরা এখন একটা খেলা খেলবো ওকে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মিলির কথা শুনে চিকন ভ্রু কুঁচকে যায় উপমার। সূচির মিলিকে তেমন একটা ভালো লাগে না। তাই ও উপমাকে বলে,
“চল তুই। আমরা কোনো খেলা খেলতে রাজি না।”
“আরে আরে ভয় পাচ্ছিস কেনো? তেমন কোনো ভয়ংকর কিছু না। জাস্ট একটা ডেয়ার।”
উপমা চোখ ছোট ছোট করে বলে,
“কি ডেয়ার?”
সূচি উপমার বাহু ধরে বলে,
“উপমা আমি বার বার বলছি, তুই চল এখান থেকে। কোনো আজে বাজে কাজে আর নিজেকে জড়াস না। চল তুই।”
উপমা উলটো সূচির হাত ধরে বলে,
“এক মিনিট সূচি। আগে শুনতে দে ওর ডেয়ার।”
“উপ…।”
উপমা চোখের ইশারায় থামিয়ে দেয় সূচিকে। তারপর মিলির দিকে ঘুরে বলে,
“বল কি ডেয়ার।”
মিলি হেসে বলে,
“তেমন কিছু না। ওই যে দূরে কাঠ-বাগানে একটা সুন্দর ছেলেকে গিয়ে একটা ফুল দিতে হবে। আমি দেখতে চাই আমাদের সাহসী উপমা রানী কি শুধু মারপিট করতে পারে নাকি কাউকে……।”
“এই সব আজে বাজে কাজ উপমা জীবনে ও করবে না। আমি করতে দেবো না। উপমা তুই চল এখান থেকে।”
“আরে সূচি…! তুই কেনো এত ভয় পাচ্ছিস বল তো। এইটা কি এমন কাজ? আর তা ছাড়াও উপমা এইটা কোনো দিন ও পারবে না। ও শুধু অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতে জানে। কোনো ছেলেকে গিয়ে সাধারণ একটা ফুল দিতে পারবে না। কারণ এই রকম কোনো সাহস ওর মধ্যে নেই।”
“কোনো দরকার নেই এই রকম কোনো সাহসের। উপমা….”।
সূচি উপমার দিকে ফিরে ওর হাত টেনে ধরে হাঁটার জন্য পা বাড়ায়। কিন্তু, উপমা সূচির হাত ধরে হাঁটা থামিয়ে দেয়। সূচি রাগী স্বরে বলে,
“উপমা…।”
“শান্ত হো।”
এরপর মিলির দিকে এগিয়ে বলে,
“তোর কেনো মনে হচ্ছে, এই কাজ টা আমি পারবো না?”
“কারণ এই সাহস টা আমাদের উপমা রানীর মাঝে নেই। উপমা রানি কোনো ছেলের সাথে মিশতে জানে না। শুধু ধমকাতে জানে।”
“মিলি তুই কেনো ওকে এই ভাবে উস্কাচ্ছিস?”
“না না উস্কাবো কেনো? যা সত্যি তাই বললাম। এই সাহসটা উপমার মধ্যে নেই। ভার্সিটিতে পড়া একটা মেয়ের কোনো ছেলে ফ্রেন্ড নেই। ভাবা যায়! কারণ মেয়েটা শুধু তেজ দেখাতে জানে কারো সাথে মিশতে জানে না।”
“কোন ছেলেকে ফুল দিতে হবে?”
সূচি উপমার দুই বাহু চেপে ধরে
“উপমা তুই কেনো বুচ্ছিস না ও তোকে জেনে বুঝে উস্কাচ্ছে। তুই এ রকমটা কোনো দিন ও করবি না।”
“সূচি, তুই শুনলি না ও কি বললো। সাধারণ একটা ফুল দেওয়ার সাহস নাকি আমার মাঝে নেই।”
এর পর মিলির কাছে এসে বলে,
“কি ফুল দিতে হবে? আর কোন ছেলেকে?”
মিলি ব্যঙ্গ স্বরে বলে,
“থাক ভাই তুই এটা করতে পারবি না। চল ক্লাসে যাই।”
“মিলি আমি দেখাতে বলেছি।”
“আরেকবার ভেবে দেখ পারবি কি পারবি না।”
“উপমা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। তুই দেখা।”
“ওকে।”
মিলি ক্যাম্পাসের আশেপাশে লাগানো অনেক ফুল গাছের মধ্যে থেকে একটা কাঠগোলাপ ছিঁড়ে নিয়ে আসে। এর পর আঙুল উঁচিয়ে উপমার উদ্দেশ্যে বলে,
“ঐ দূরে তাকা। (উপমা তাকায়) ওই যে চারজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ওই-খানে একটা সুন্দর ছেলে ও দাঁড়িয়ে আছে (সাইমম কে উদ্দেশ্য করে তবে নাম বলে না) ওই ভাইয়াটাকে গিয়ে এই ফুল টা দিবি। পারবি তো? নাকি ভয় হচ্ছে?”
উপমা কপালে ভাঁজ ফেলে বলে,
“ওই-খানে তো অনেক ছেলেই দাঁড়িয়ে আছে।”
“আরে কাঠ-বাগানের ডান পাশের কর্নারে তাকা।”
কাঠ-বাগানের ডান পাশের কর্নারে চারজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। একজন একটু দূরে। আর তিনজন কাছাকাছি। উপমা মিলির কাছ থেকে কাঠগোলাপটা নেয়৷ সূচি বাধা দেয়।
“দোস্ত তুই এই রকমটা করবি না। তুই….।”
“শান্ত হো দোস্ত। আমার কিছু হবে না। আর এইটা সাধারণ একটা ফুল।”
“তুই….”
উপমা আর কোনো কথা শোনে না। কাঠ-বাগানের ডান পাশের কর্নারের উদ্দেশ্যে চলে যায়। সূচি মিলির দিকে তেড়ে এসে বলে,
“তুই ওকে ইচ্ছে করে এই বিপদের মধ্যে ফেললি তাইনা। নিজে তো একটা অসভ্য। কাজ ও করে অসভ্যের মত।”
“সূচি মুখ সামলে কথা বল।”
“ফাজিল মেয়ে কোথাকার।”
এই বলে সূচি উপমার দিকে হাঁটা দেয়। মিলি ফোন বের করে সাইমমকে কল করে।
“ভাই কাজ হয়ে গেছে। তোমার নায়কা তোমার কাছে যাচ্ছে।”
“ওকে।”
তখন সাইমম মিলিকে নিয়ে বলেছে উপমাকে ওর পছন্দ হয়েছে। কিন্তু, মেয়ের যে তেজ ও আগে প্রপোজ করলে ক্ষেপে যেতে পারে। তাই উপমাকে দিয়ে জেনো আগে প্রপোজ করায়। পরে সাইমম বুঝিয়ে শুনিয়ে নিজের করে নেবে।
“কংগ্রাচুলেশনস বন্ধু। আজ কিন্তু, আমাদের কাচ্চি ট্রিট দিতে হবে।”
আজ অভ্র শিপু মিলে রেজুয়ানের ওল ব্রেকআপ উপলক্ষে ছোটখাটো পার্টি করবে। ওরা কাল রাতে হিসাব করে বের করেছে রেজুয়ান স্কুল থেকে ভার্সিটি পর্যন্ত প্রায় পঞ্চাশটি মেয়ের সাথে ব্রেকাপ করেছে। হয়তো এর বেশি ও হবে! তাই আজ ওরা এইটা একটু সেলিব্রেশন করবে। অভ্রকে রেখে শিপু কেক আনতে চলে যায়।
“বা* তোরা এইটার জন্য আমাকে ডাকছোস। আগে জানলে কোনো দিন ও আসতাম না।”
“কোনো ছাড় নাই মামা। চুপ চাপ কেক কাটিং করে আমরা রাজে যাবো।”
“বা* এত গুলা প্রেম করলাম অথচ মনের মত কাউকে পেলাম না। আর তোরা এইটা সেলিব্রেট করার জন্য ক্ষেপছস। সর আমাকে যেতে দে।”
এই বলে রেজুয়ান দৌড় দিতে গেলে অভ্র রেজুয়ানকে দুই বাহু দিয়ে ধরে বলে,
“মামা তা বললে তো হবে না। আমাগো কেউ পাত্তা-ই দেয় না। আর তুই এত গুলা ব্রেকআপ করছস। আমাগো তো কাচ্চি খাওয়াই-তেই হবে।”
ওরা ওদের মধ্যে কথপোকথন চালিয়ে যেতে থাকে। তবে আজ যে রেজুয়ানের পকেট ফাঁকা হবে এটা ও ভালো করে জানে।
রেজুয়ানের থেকে কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে আছে সাইমম। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে উপমার জন্য।
উপমা ধীর পায়ে হেঁটে আসছে। ওর পেছনে ছুটে আসছে সূচি। উপমা কাঠ-বাগানের এক দম কর্নারে এসে দাঁড়ায়। যেখানে আর কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে তিনটি ছেলে। উপমা দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকে কোন ছেলেটাকে এই ফুলটা দিতে বললো!
সাইমম খুশিতে মাথা ডানে বামে দুলিয়ে নিচু করে ফেলে। এখানে তিন জন ছেলে বাদে আর কোনো ছেলে নেই। তাই উপমা ধরে নেয় এই তিন জনের মধ্যে-ই কাউ কে দিতে হবে। রেজুয়ান ডান হাত পকেটে ঢুকিয়ে বাম হাত কপালে নেয়। আঙুলের ভাজে ভাজে কপালে থাক চুল নিয়ে তা পেছনে নিতে থাকে।
উপমা তিনজন কে একবার করে দেখে। দেখা শেষ হলে এক-পা এক-পা করে এগোতে থাকে। ও নিজের মধ্যে অদ্ভুত অনুভূতি টের পায়। আগে কখনো কোনো দিন কোনো ছেলের সামনে এই ভাবে আসে নি।
সাইমম এক হাত পকেটে নিয়ে অন্য হাত দিয়ে ঘাড় ম্যাসাজ করতে থাকে। আরেকটু! মনে মনে গুনতে থাকে,
এক, দুই তিন!
উপমা ধীর পায়ে হেঁটে রেজুয়ানের সামনে আসে। ধীরে ধীরে হাতে থাকা ফুল রেজুয়ানের দিকে বাড়িয়ে দেয় ।
অভ্র কিঞ্চিৎ পিছিয়ে যায়। রেজুয়ান কপাল থেকে হাত সরিয়ে সামনে থাকা নারীটির দিকে তাকায়। নারীটির চোখে চোখ পড়তেই মূহুর্তে এক অদ্ভুত অনুভূতি ওকে গ্রাস করে ফেলে! এক অন্য রকম অনুভূতি! অনুভূতি টা অন্য রকম নাকি সামনে থাকা নারীটি!
নারীটির পরনে সবুজ রঙের থ্রি-পিস। লম্বা চুল বেণী করা। এক পাশে ব্যাগ নেওয়া। সাথে হলুদ রঙের অদ্ভুত একটি ফুল। যা রেজুয়ান আগে দেখেছে কিনা মনে নেই। তবে ওর কাছে সব চেয়ে অদ্ভুত লাগলো মেয়েটির চোখ দুটি! রেজুয়ানের দৃষ্টি স্থির হয়ে গেলো। ওর লাইফে মেয়ের অভাব নেই। কিন্তু, আগে কখনো এই রকম অদ্ভুত অনুভূতির দেখা পাই-নি!
সামনে থাকা ছেলেটিকে এই ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে উপমা কিঞ্চিৎ বিচলিত হয়ে পড়ে। ও দৃষ্টি ঘুরিয়ে অন্য দিকে নেয়। তবে সামনে থাকা ছেলেটি স্থির!
উপমা নিজেকে ধাতস্থ করে আবারো সামনে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।
প্রথম বারের মত এই বার ও অদ্ভুত কিছু অনুভব করে রেজুয়ান। উপমা শান্ত ধীর কণ্ঠে বলে,
“দিস ইজ ফর ইউ!”
রেজুয়ান স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ও ভুলে গেছে কি প্রতিক্রিয়া দেখাবে। পাশ থেকে অভ্র কনুই দিয়ে গুঁতা মেরে রেজুয়ানের চেতনা ফেরায়। রেজুয়ান অভ্রর দিকে তাকায়। অভ্র ইশারা করে মেয়েটার হাতে থাকা ফুল নিতে। রেজুয়ান ডান হাত পকেটে থেকে বের করে উপমার হাতের ফুলটা নেয়। উপমা ফোস করে নিশ্বাস ছাড়ে! যেনো অনেক বড় বিপদ ঘাড় থেকে নেমেছে। উপমার পাশে এসে দাঁড়ায় সূচি। বাহু ধরে বলে,
“চল এ বার।”
উপমা উলটো ঘুরে হাঁটা ধরে। রেজুয়ান ফুলটাকে ভালো ভাবে দেখে অভ্রর দিকে তাকিয়ে বলে,
“এই…এই ফুলের নাম কি?”
অভ্র ঠোঁট উলটিয়ে বলে,
“কি জানি। দেখে তো মনে হয় কচু ফুল। এক বার কচু গাছে এই রকম হলুদ হলুদ ফুল দেখছিলাম।”
রেজুয়ান আবারও ফুলের দিকে তাকায়। কচু গাছে এত সুন্দর ফুল হবে অবিশ্বাস্য! রেজুয়ান আশে পাশে তাকিয়ে দেখে পাশ দিয়ে একটা মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। ও মেয়েটাকে ডেকে বলে,
“ওই বইন। বইন।”
মেয়েটা ঘুরে তাকায়। রেজুয়ান মেয়েটাকে ফুলটা দেখিয়ে বলে,
“এই ফুলটার নাম কি?”
মেয়েটা মুখ ভেঙিয়ে বলে,
“কাঠগোলাপ। কেনো?”
রেজুয়ান উপমাকে উদ্দেশ্য করে ডাকে,
“এই কাঠগোলাপ! এই কাঠগোলাপ। আরে এই কাঠগোলাপ!”
এত বার পেছন থেকে অদ্ভুত নাম শুনে উপমা কপালে ভাঁজ ফেলে হাঁটা থামিয়ে পেছনে তাকায়। আশে পাশে অনেকে-ই তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। রেজুয়ান কিঞ্চিৎ ঘাড় বাঁকিয়ে বলে,
“তোমার বাবার নাম্বার টা দিয়ে যাও কাঠগোলাপ। আমার ঘরের ঘরনী বানাবো তোমায়! বিয়ের আগে প্রেম করা পছন্দ না আমার!”
ভূতের মুখে রাম রাম শুনে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে অভ্র। পেছন থেকে আরো এক জোড়া চোখ ক্রোধ নিয়ে তাকিয়ে আছে! এ কি ভাবে হলো! মেয়েটা ফুল এই ছেলে টা কে কেনো দিলো? মিলিকে ধরতে হবে! সাইমম রাগ নিয়ে সরে যায়।
রেজুয়ানের কথা কানে যেতে উপমা চোখ বন্ধ করে ফেলে। পাশ থেকে সূচি বলে,
“আগেই বলে ছিলাম, এই সব কাজে জড়াস না। শুলনি না আমার কথা।”
উপমা এগিয়ে এসে রেজুয়ানের সামনে দাঁড়ায়। সূচি বাধা দেয়।
“চল।”
উপমা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলে,
“আপনাকে এই ফুলটা দেওয়া একটা ডেয়ার ছিলো। অন্য কিছু ভাববেন না।”
রেজুয়ান বুকে হাত দিয়ে অভ্রর দিকে তাকিয়ে বলে,
“অভ্র আমার হার্ট কই?”
অভ্র সহ আশে পাশে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। রেজুয়ান উপমার দিকে তাকিয়ে বলে,
“ওওওও কাঠগোলাপ! ইউ সি ইট ইজ এ ডেয়ার!
বাট আই সি, ইউ আর মাই হার্ট হ্যাকার!”
রেজুয়ান উপমার দিকে কয়েক পা এগিয়ে আসে। উপমা দৃষ্টি কঠোর করে বলে,
“বললাম তো এইটা একটা গেম ছিলো। আপনি কেনো অন্য কিছু ভাবছেন?”
“কাঠগোলাপ, তোমার কাছে এইটা একটা গেম ছিলো। কিন্তু, আমার কাছে তুমি আমার প্রথম প্রেম! তাই আর কোনো বাহানা দিও না। কাজে আসবে না। তুমি ফেঁসে গেছো। ভংকর কিছুতে ফেঁসে গেছো! এই যে দেখো আমার হার্ট আমার মাঝে নেই। তুমি আমার হার্ট হ্যাক করেছো। ”
উপমা কিছু বলে না। দৃষ্টি অন্য দিকে নেয়। কেমন জেনো লাগছে। ভংকর অনুভূতি! নাকি ছোট একটা ভুল! সূচি উপমার হাত টান দিয়ে বলে,
হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ১৬
“ভালো লাগছে এখন? বার বার বললাম আমার কথা শুনলি না। এখন বোঝ কেমন লাগে। আল্লাহ্ জানে কোন ঝামেলায় আবার ফাঁসলি।”
ও হাত টান দিয়ে দ্রুত হাঁটতে শুরু করে। উপমার মাথায় রেজুয়ানের কথা গুলো ঘুরপাক খেতে থাকে। ও ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকায়। ছেলেটা চোখ বন্ধ করে ফুলটার ঘ্রান নিচ্ছে। ও কেনো পারছে না জ্বলে উঠতে? নাকি চাচ্ছে না!