তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি পর্ব ১৮

তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি পর্ব ১৮
Anika Fahmida

অনু ভয় পেয়ে পেছন ফিরে দেখল আদ্রের বাবা আনোয়ার হোসেন দাঁড়িয়ে আছেন। আনোয়ার হোসেনই অনুর হাত থেকে কলমটা কেড়ে নিয়ে ফেলে দিয়েছেন। অনু ভয় পাওয়া দৃষ্টিতে একবার আদ্রের বাবা আনোয়ার হোসেনের দিকে তাকাল তো একবার আদ্রের দিকে ফিরে অসহায় দৃষ্টিতে তাকাল। আনোয়ার হোসেন রাগী স্বরে চিৎকার করে বললেন,
–এই বিয়ে হবে না।
আনোয়ার হোসেনের কথা শুনে আদ্রের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। নিজের হাত শক্ত করে মুঠো করে আদ্র বসে আছে। চোখ বন্ধ করে আদ্র রাগ হজম করার চেষ্টা করছে কিন্তু পারল না। আদ্র রাগী স্বরে আনোয়ার হোসেনকে বলল,
–বাবা তুমি এখানে কেন এসেছ? আমরা এখানে আছি এটা তোমাকে কে বলেছে?
আনোয়ার হোসেন আদ্রকে বলল,
–আদ্র তুই কি ভেবেছিস আমি কিছু জানতে পারবো না? তোর পেছনে আমি লোক লাগিয়ে রেখেছিলাম। যারা সারাক্ষণ তোর ইনফরমেশন আমাকে জানিয়েছে। তারাই আমাকে বলেছে যে আজ তুই নাকি বিয়ে করবি।

আদ্র বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে আনোয়ার হোসেনকে গম্ভীর স্বরে বলল,
–হ্যা আজ আমি অনুকে বিয়ে করব। বিয়েতে কোনো ঝামেলা করতে এসো না বাবা। যেহেতু এসেই পড়েছ তো আমাদের জন্য মন থেকে দোয়া করো আমরা যাতে জীবনে সুখী হই।
আনোয়ার হোসেন হাসলেন। তারপর আদ্রকে বললেন,
–কি বললি? দোয়া করবো? তোর এই বিয়েটাই তো আমি হতে দিব না। তুই কি করে ভাবলি এই মধ্যবিত্ত ঘরের সামান্য মেয়েকে আমি আমার ছেলের বউ হিসেবে মানবো? আগেও তো আমি তোকে বলেছিলাম যে এই মেয়েকে আমি কিছুতেই আমার পুত্রবধু হিসেবে মেনে নিব না। ভুলে গেলি সেই কথা? তাহলে কি করে তুই লুকিয়ে বিয়ে করার সাহস দেখাচ্ছিস?
আদ্র রাগী স্বরে আনোয়ার হোসেনকে বলল,
–বাবা তুমি কিন্তু এবার বেশি অতিরিক্ত করছো। আমার আর অনুর বিয়ের মাঝে প্লিজ বাঁধা হয়ে দাঁড়িও না।
আনোয়ার হোসেন আদ্রকে বলল,
–এখনও তো অতিরিক্তের কিছু দেখিস নি৷ এবার দেখবি। তোর বাবা ঠিক কি কি করতে পারে এবার বুঝবি তুই।
আদ্র সন্দেহী গলায় আনোয়ার হোসেনকে বলল,
–কি করবে তুমি?
আনোয়ার হোসেন তখন কাউকে জোরে ডাক দিয়ে বলতে লাগল,
–এই তোরা ভিতরে আয়।

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

সাথে সাথেই অনেকগুলো গুন্ডার দল চলে আসলো। প্রায় বিশ জন গুন্ডা এসে হাজির হলো। এতো গুন্ডা দেখে অনু ভীষণ ভয় পেয়ে কান্না করতে লাগল। অনু আনোয়ার হোসেনকে কান্না করতে করতে বলল,
–আংকেল আপনি কেন এমন করছেন? আমার আর আদ্রের বিয়েটা ভাঙবেন না। আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি? কেন এমন করছেন? আর এতোগুলো গুন্ডা নিয়ে কেন এসেছেন?
আনোয়ার হোসেন রেগে অনুকে বলল,
–এই মেয়ে তুমি চুপ থাকো। নেহাতই আদ্রের খালাতো বোন তুমি। নাহলে তোমার মতো মেয়েকে আমি আদ্রের সাথে কথা বলার সুযোগ তো দূরের কথা আমার বাড়ির আশেপাশেও আসতে দিতাম না। আমার ছেলের মাথা চিবিয়ে খেয়ে তুমি আবার আমাকে বলছো তুমি আমার কি ক্ষতি করেছো? অনেক বড় ক্ষতি করেছো তুমি। এর শাস্তি তুমি পাবে।
আনোয়ার হোসেনের কথায় অনু ভীষণ কষ্ট পেল। অনু ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। অনুর কান্না আদ্রের সহ্য হচ্ছে না। তাই আদ্র অনুকে বুকে জড়িয়ে অনুর চোখের জল মুছতে লাগল। আনোয়ার হোসেন শান্ত স্বরে বলল,
–বাবা আদ্র বাসায় চল।
আদ্র রাগী স্বরে চোখ বন্ধ করে বলল,
–আমি যাবো না বাবা।
আনোয়ার হোসেন রেগে আদ্রকে বললেন,
–আদ্র এবার কিন্তু তুই বেয়াদবি করছিস।
আদ্র চিৎকার করে আনোয়ার হোসেনকে বলল,
–বেয়াদবি করলে করছি। বাবা আমি অনুকে ভালোবাসি। তাই আমি আজ অনুকে বিয়ে করবো। তুমি কেন আমাদের বিয়ে আটকাতে চাইছো? আমি যে অনুকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি তুমি কি বুঝতে পারছো না?

আনোয়ার হোসেন গম্ভীর স্বরে আদ্রকে বলল,
–তুই নিজের থেকেও বেশি এই মেয়েকে ভালোবাসিস এটা বলছিস কি করে?এগুলো সব তোর আবেগ। এই আবেগ বেশিদিন থাকবে না। আর আমি বার বার বলছি এই মেয়ে আমার বাড়ির পুত্রবধু হবে না মানে হবে না। তোর আমার কথা বুঝা উচিত।
আদ্র রাগী স্বরে আনোয়ার হোসেনকে বলল,
–আমি বুঝতে চাই না। তুমি চলে যাও এখান থেকে।
আনোয়ার হোসেন আদ্রকে বলল,
–চলে যাবো। কিন্তু তোকে সাথে নিয়েই যাবো। এই তোরা আদ্রকে ধরে নিয়ে আয়।
গুন্ডাগুলো আদ্রকে ধরে নিয়ে যেতে এলে আদ্র সেখানেই রেগে গিয়ে গুন্ডাদের সাথে মারামারি করতে থাকে৷ কাজী এসব দেখে ভয়ে সেখান থেকে চলে যায়। অনু এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। আদ্র সব গুন্ডাগুলোকে মেরে অবস্থা বেহাল করে ফেলে। কিন্তু দুইটা গুন্ডা তখনই অনুর মাথায় পিস্তল ঠেকাল। আরেকটা গুন্ডা অনুর হাত চেপে ধরল। অনু ভয়ে আদ্রকে ডেকে উঠল। অনুর ডাক শুনে আদ্র মারামারি অবস্থায় পেছনে তাকিয়ে অনুর মাথায় পিস্তল ঠেকানো দেখে থেমে যায়। আদ্র স্তব্ধ হয়ে যায়। আনোয়ার হোসেন শান্ত স্বরে আদ্রকে বলল,

–আদ্র তুই যদি অনুর কোনো ক্ষতি না চাস তাহলে এসব মারামারি বন্ধ করে বিয়ে ভেঙে দিয়ে চুপচাপ আমার সাথে চল।নাহলে আমার লোকেরা অনুকে শেষ করতে হাত কাঁপবে না।
আনোয়ার হোসেনের প্রতি আদ্রের এখন ভীষণ ঘৃণা জন্মাচ্ছে। কি করে পারছেন আনোয়ার হোসেন এরকম আদ্র ও অনুর সাথে নির্দয় আচরণ করতে? তার কি একটুও খারাপ লাগছে না? আদ্রের মনে অনুকে হারানোর ভয় কাজ করতে লাগল। আদ্র কাঁপা কাঁপা গলায় আনোয়ার হোসেনকে বলল,
–বাবা তুমি ওদেরকে বলো অনুকে ছেড়ে দিতে। আমার অনুর কোনো ক্ষতি করতে না করো।
আনোয়ার হোসেন আদ্রকে বলল,
–তুই তোর আর অনুর বিয়েটা ভেঙে আমার সাথে বাড়ি ফিরলেই আমি ওদের বলবো অনুকে ছেড়ে দিতে। নাহলে অনুকে এখানেই শেষ হতে হবে।
আদ্র অনুর দিকে ব্যথিত দৃষ্টিতে তাকাল। অনু এখনও আদ্রের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলছে। আদ্র অনেক আগেই গুন্ডাদের মারা বন্ধ করে দিয়েছে যখন অনুর মাথায় গুন্ডা পিস্তল ঠেকিয়ে রেখেছে। অনু মনে মনে বলল,

–তোমার সাথে হয়তো কোনোদিনই আমার বিয়েটা হবে না আদ্র। আমাদের ভালোবাসাটা কি এভাবেই শেষ হয়ে যাবে? এতো কষ্ট কেন হচ্ছে আমার? আমার শ্বাস নিতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে আদ্র।
আদ্রের বুকের ভিতরটা কষ্টে ছিড়ে যাচ্ছে। আদ্র হতাশ গলায় হাসার চেষ্টা করে আনোয়ার হোসেনকে বলল,
–ঠিক আছে বাবা। আমি অনুকে বিয়ে করবো না। আমার আর অনুর বিয়েটা আমি ভেঙে দিলাম। তবুও তুমি আমার অনুকে মেরো না বাবা। ওদেরকে বলো অনুর মাথা থেকে পিস্তল সরাতে।
আনোয়ার হোসেন গুন্ডাদের বলল,
–এই তোরা এই মেয়েকে ছেড়ে দে।
গুন্ডারা অনুর মাথা থেকে পিস্তল নামিয়ে দূরে সরে গেল। আদ্র অনুর কাছে যেতে গেলে আনোয়ার হোসেন আদ্রকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
–খবরদার আদ্র তুই অনুর কাছে যাবি না।
আদ্র অনুর কাছে যেতে গিয়েও থেমে গেল। কারণ আদ্র এক সেকেন্ডের জন্য ভুলে গিয়েছিল তার বাবা যে একজন ভয়ংকর মানুষ। আদ্র অনুর দিকে তাকিয়ে রইল। আদ্রের চোখের কোণে জল জমেছে কিন্তু সেই জল চোখ গড়িয়ে একটুও পড়ছে না। দৃষ্টি টলমল। আদ্রের বুকের কোথাও বারবার তীব্র ব্যথা হচ্ছে। আজ আদ্র নিজের কাছে নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছে। প্রিয় মানুষটিকে একটুর জন্য নিজের করতে পারল না। অনু কাঁদতে কাঁদতে আদ্রকে বলল,

–আদ্র তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে? আমাকে কি তুমি ভুলে যাবে?
আদ্র মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকাল। অনুর কান্না কিছুতেই আদ্র আর দেখতে পারবে না। আদ্র আনোয়ার হোসেনকে গম্ভীর স্বরে বলল,
–বাবা চলো এখান থেকে।
আনোয়ার হোসেন আদ্রকে বলল,
–হুম চল।
অনু পাথরের মতো এখনও দাঁড়িয়ে আছে। আনোয়ার হোসেন অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
–এই মেয়ে তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? বের হও আমার ফ্ল্যাট থেকে। তোমাকে যেন এখানে কিছুক্ষণ পর এসে আর না দেখি।
আনোয়ার হোসেন আদ্রকে নিয়ে চলে গেল। সাথে গুন্ডাগুলোও চলে গেল। অনু এখনও দাঁড়িয়ে আছে। একসময় পর অনু মাটিতে বসে পড়ে কাঁদতে লাগল।
অনু চিৎকার করে বলতে লাগল,
–আমার সাথেই কেন এমন হয়? আদ্র তুমি চলে গেলে? আমাকে তুমি ভুলে যাবে? আমাদের তো আজ বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। তাহলে কেন সব এভাবে শেষ হয়ে গেলে? আমার কপাল এতো খারাপ কেন? আমার কপালে কেন সুখ সয় না?

আদ্র নিজের বাসায় গিয়েই ড্রইং রুমের সবকিছু ভেঙে ফেলতে লাগল৷ একটা আসবাবপত্রও বাদ নেই যেটা আদ্র ভাঙে নি। আদ্রের মা রেহেনা পারভিন আদ্রকে শান্ত হতে বললেও আদ্র শান্ত হতে পারল না। আদ্রের মন অনুর জন্য পুড়তে লাগল। আদ্র একসময় নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে চিৎকার করতে লাগল। দরজার পিঠে হেলান দিয়েই আদ্র নিজের মাথার চুল টেনে ছিঁড়তে লাগল। একসময় রাগে নিঃশব্দে আদ্র কাঁদতে লাগল। আদ্র মনে মনে বলল,
–আই এম সরি অনু। আমি তোকে ভীষণ কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।আমি যে নিরুপায়। এছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। তোকে বাঁচানোর জন্য আমাকে বিয়ে ভেঙে চলে আসতে হলো। না জানি এখন তুই কেমন আছিস! খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তোকে। কিন্তু আমি যে তোকে দেখতে যেতেও পারবো না।
অনু রাস্তায় হাঁটতে লাগল। একসময় একটা রিকশা করে অনু নিজের বাসায় চলে গেল। অারমান রহমান ড্রইং রুমের সোফা বসে ছিলেন। অনু বাসায় এসেছে দেখলেন। কিন্তু অনুর পড়নে লাল বেনারসি জড়ানো দেখে অনুর বাবা আরমান রহমান অনুর দিকে তাকিয়ে রেগে চিৎকার করে বললেন,
–সারাদিন কোথায় ছিলি? আর তোর পড়নে বেনারসি শাড়ি কেন?
অনু ভয়ে কাঁপতে লাগল। কাঁপা কাঁপা গলায় আরমান রহমানকে অনু বলল,
–আব্বু আমি সারাদিন….

অনুর গলায় কথা আটকে যাচ্ছে। কিছু বলতে পারছে না। অনুর মা আমেনা বেগম অনু বাসায় এসেছে দেখে দৌড়ে ছুটে আসলো। আমেনা বেগম বিচলিত স্বরে অনুকে বললেন,
–অনু মা তুই কই ছিলি? মায়ের যে অনেক চিন্তা হয় জানিস না? আর তুই লাল বেনারসি শাড়ি কেন পড়েছিস?আর এতো সেজেছিসই বা কেন?
অনু আমেনা বেগমকে বলল,
–মা আজ আমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
অনুর কথা শুনে আমেনা বেগম স্তব্ধ হয়ে গেল। আমেনা বেগম অনুর কথা বুঝতে না পেরে অনুকে বলল,
–কি বললি তোর আজকে বিয়ে মানে কিসব বলছিস?
অনু আমেনা বেগমকে বলল,
–হ্যা মা। আদ্রের সাথে আমার আজ বিয়ে হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু বিয়েটা হলো না। আদ্রের বাবা মানে আংকেল আটকে দিল আমাদের বিয়েটা। হতে দিল না আমাদের বিয়েটা।
আমেনা বেগম অবাক হয়ে অনুর কথা শুনে চুপ করে রইল। কিন্তু অনুর বাবা আরমান রহমান রেগে অনুর সামনে এসে দাঁড়িয়ে অনুর গালে ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিল। জোরে থাপ্পড় দেওয়ার কারণে অনু আমেনা বেগমের উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। তারপর আমেনা বেগমকে জড়িয়ে ধরেই অনু কাঁদতে লাগল। আরমান রহমান রাগী স্বরে বলতে লাগল,
–ছিঃ এমন মেয়ের বাবা আমি! ভাবতেই আমার ঘৃণা লাগছে। শেষে কিনা লুকিয়ে তুই আদ্রকে বিয়ে করতে যাচ্ছিলি?
অনু শুধু কাঁদতেই লাগল। আমেনা বেগম আরমান রহমানকে বললেন,
–তুমি আমার মেয়েকে থাপ্পড় দিতে পারলে?
আরমান রহমান আমেনা বেগমকে রেগে বলল,

তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি পর্ব ১৭

–হ্যা পারলাম। তোমার মেয়ে যে দিনে দিনে অসভ্য, বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে এখন তো নিজের চোখেই দেখতে পেলে। কেন দুনিয়ায় কি ছেলের অভাব পড়েছিল? তাহলে তোমার মেয়ে আদ্রকেই কেন বিয়ে করতে চাচ্ছে? আদ্রের বাবা প্রচুর অহংকারী মানুষ। তার প্রচুর টাকার গরম। আমরা মধ্যবিত্ত সাধারণ ঘরের মানুষ। আদ্রের বাবা যে কোনোভাবেই তোমার মেয়েকে নিজের ছেলের বউ হিসেবে মানবে না তা কি তোমার মেয়ে জানতো না?
অনু কান্নাজড়িত স্বরে আরমান হোসেনকে বলল,
–ভালোবাসা তো কোনো পাপ না বাবা। আমি তো শুধু আদ্রকে মন থেকে ভালোবেসেছি আর আদ্রও আমাকে খুব ভালোবাসে। ভালোবাসা কি কোনো অপরাধ বাবা?
আরমান রহমান চেঁচিয়ে উঠে অনুকে বললেন,
–ভুল মানুষকে ভালোবাসা সবচেয়ে বড় অপরাধ। আর তুই সেই অপরাধটাই করেছিস। আমার মেয়ে এত অন্যায় করে বেড়াবে আর আমি চুপ করে বসে থাকবো তাতো হয় না। আগামী শুক্রবারেই আমি তোর বিয়ে দিব। তাও আমার পছন্দ করা ছেলের সাথে।
অনু আরমান রহমানের কথায় আঁতকে উঠে বলল,
–এসব তুমি কি বলছো বাবা?
আরমান রহমান অনুকে গম্ভীর স্বরে বলল,

–হ্যা আমি ঠিক বলেছি। আগামী শুক্রবার আমার পছন্দের ছেলের সাথে আমি তোর বিয়ে দিব। তুই আর একটা কথাও বলতে পারবি না।
অনু আরমান রহমানের কথা শুনে মাটিতে বসে পড়ল৷ অনু স্তব্ধ হয়ে গেল।অনুর মাথা ঘুরতে লাগল। পৃথিবী যেন একমুহূর্তের জন্য অনুর কাছে বড়ই নিষ্ঠুর মনে হতে লাগলো।

তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি পর্ব ১৯