প্রেমসুধা পর্ব ৭২
সাইয়্যারা খান
পূর্ব আকাশে লাল আভা ফুটতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে অন্ধকার। পুকুর পাড়ে আজ জাল ফালানো হয়েছে। বাড়ির মানুষদের জন্যই মাছ তোলা হচ্ছে। সেই সুবাদে ওখানে শব্দ হচ্ছে। মানুষ জনের কথা শোনা যাচ্ছে। পৌষ কপাল কুঁচকে চোখ খুললো। তার রাতে ভালো ঘুম হয় নি। তৌসিফ কাল খুব করে জ্বালালো। এখনও গুটিশুটি মে’রে বুকে ঘুমাচ্ছে। এত বড় মানুষ এভাবে ঘুমালে কেমন লাগে? পৌষ সরাতে চাইলো। ভাবলো ডাকবে কিন্তু কেমন একটা মায়া কাজ করলো তার। পৌষ ভাবলো তৌসিফে’র সাথে কথা বলবে। তৌসিফে’র মতো মানুষ কেঁদেছে এটা নিশ্চিত করে যে বিষয়টা খুবই জটিল হয়ে গিয়েছে। পৌষ আজ কথা বলবেই। তার ভেতরে অসস্তি লাগছে। গতরাতে তৌসিফে’র ওভাবে করা গুমরে কান্না তার সহ্য হচ্ছিলো না। ভেতর ভেতর কেমন যে লাগলো তা পৌষ প্রকাশ করতে পারবে না। তার মনে হচ্ছিলো তৌসিফ বোধহয় এখনই মা’রা যাবে। বড় দেহটা কেমন কুঁকড়ে গিয়েছিলো। পৌষ হাত দিলো ওর কপালে। এখনো যথেষ্ট গরম। চুলে হাত বুলালো বেশ সময় নিয়ে। একটা মানুষ যে কিনা শক্তপোক্ত, চালচলন অনুসরণীয় সে যদি কেমন করে তাহলে কেমন লাগে?
পৌষ আস্তে করে ডাকলো,
— শুনছেন? উঠবেন না।
তৌসিফ জবাব দিলো না। ও বুকের মধ্যে মুখ গুজেই রইলো। পৌষ’র ময়া হলো। ভীষণ মায়া। কষ্টে তার ভেতর ফেটে যাচ্ছে। আস্তে ধীরে ঠেলে সরালো তৌসিফ’কে। এমন গভীর ঘুম কোনদিনই তৌসিফে’র ছিলো না। তার ঘুম পাতলা। পৌষ নড়লেই সে নড়েচড়ে উঠে। ঠোঁট কামড়ে ধরে পৌষ। এদিক ওদিক তাকিয়ে ক্ষুদ্র শ্বাস ফেলে মোটা কম্বল দিয়ে গলা পর্যন্ত ঢেকে দেয় তৌসিফ’কে। উঠে দাঁড়াতে তার কষ্টই হলো। কোমড় ধরে গিয়েছে যেন। মুখ ধুঁয়ে একটু বারান্দায় আসতেই ঠান্ডা বাতাসে দেহ প্রাণ জুড়িয়ে যাওয়ার যোগাড় হলো তার। এটা শীতের নয় বরং আগত বসন্তের বাতাস। পৌষ ভালো লাগলো যদিও বসন্ত কোনদিনই তার পছন্দের তালিকায় ছিলো না। বসন্ত আসা মানেই শীতের বিদায়। শীত ভালোবাসা মানুষগুলোর কাছে বসন্ত যেন এক আতঙ্ক। সে আসা মানেই শীত পোটলা বেঁধে চাঁদের দে-শে পালাবে। একদম ধরা ছোঁয়ার বাইরে যাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকলেও কাছে আসবে না। ধরা দিবে না। মাছ ধরার ওখানে দাঁড়িয়ে তদারকি করছে তৌফিক তালুকদার। পৌষ মুখ ঘুরিয়ে চলে গেলো।
রান্না ঘরে এসে ফুরফুরা মেজাজে গরুর গোশত কষালো। একদম ঝাল করে। তৌসিফে’র জ্বর। এখন ঝাল খেলে কিছুটা ভালো লাগবে। বুয়া’কে পরোটা বানাতে বলে দারোয়ান দিয়ে ডাক্তার ডাকালো। কেন জানি পৌষ যা করছে সবটা শান্ত ভাবেই করছে। অন্য সময়ের মতো ছটফট তার মাঝে দেখা যাচ্ছে না। এটা কি? মাতৃ কালীন আসা কোন পরিবর্তন নাকি পৌষ দমিয়ে রাখা অনুভূতি পৌষ বুঝে না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ডাক্তার দেখেই জানালেন জ্বর একশ’রও উপর। মাথায় পানি দিয়ে বলে ঔষধ দিলেন লিখে। পৌষ স্বাভাবিক ভাবেই আড়ালে ছিলো। সবটা শুনলো সে অতঃপর ফোঁস করে শ্বাস ফেললো। এই ব্যাটাকে শিক্ষা দিতে মানুষ আনাচ্ছে পৌষ৷ একা পেয়ে পৌষ’কে অনেক জ্বালাচ্ছে সে। এখন কি তার অসুস্থ থাকার? লজ্জা করা উচিত তার।
তৌসিফে’র মাথায় এতক্ষণ পানি ঢেলেছে পৌষ। জামাই এর সেবা করতে তার এবার রাগ উঠেছে। সে সেবা করছে এদিকে তৌসিফ ফুঁপিয়ে উঠছে খানিকক্ষণ পরপর। এই আচরণের মানে কি? আচমকা পৌষ থমকে গেলো যখন গুঙিয়ে উঠে তৌসিফ তার মা’কে ডাকলো। পৌষ’র ভেতর চুরমার হয়ে এলো। তার মা নেই। মা বলতে কাউকে মনেও নেই। তারাতাড়ি তৌসিফে’র মাথাটা ও বুকে জড়ালো। আদুরে ভাঙা গলায় বললো,
— কি হয়েছে? এই তো আমি আছি তো। আমি দোয়া করি আপনার মা ফিরে আসুক। এতদিন ইচ্ছে ছিলো আমার বাবা আসুক কিন্তু এখন থেকে আপনার জন্য হলেও চাইব মা আসুক। দুটোই মা আসুক। আপনি এভাবে কেন কাঁদছেন? শুনুন না?
পৌষ’র গলা রোধ হয়। তৌসিফ এই এতক্ষণে একটু চোখ খুলে। পৌষ ওর কপালে চুমু দিয়ে বললো,
— শোধ নিচ্ছেন এভাবে অসুস্থ হয়ে?
তৌসিফ চোখ বুজার আগেই কাঠখোট্টা গলায় পৌষ বলে উঠলো,
— খবরদার! ফ্যাচফ্যাচ করবেন না। আপনার মা আছে না পেটের ভেতর? তার যত্ন না করে এভাবে খাটাচ্ছেন আমাকে?
মুহুর্তেই যেন কণ্ঠে নমনীয়তা এলো। পৌষ কাতর স্বরে বলে উঠলো,
— অ্যাই মামাতো ভাই, এমন কেন হলো?
— হাসবেন্ড হই তোমার। মামাতো ভাই না।
গতকাল থেকে আজ, এই পর্যন্ত ভাঙা জড়ানো গলায় এই প্রথম গোটা একটা লাইন বললো তৌসিফ। পৌষ হেসে ফেললো। বললো,
— লাইনে এসেছেন। দেখি উঠে বসবেন এখন। আমার কলিজায় টুকরো জামাইটাকে এভাবে মানায় না। আপনার পছন্দের গরু ভুনা করেছি।
— ব্রাশ করব।
— লাগবে না।
— পা’গলামি করো না হানি। কাউকে ডাকো। আমি উঠতে পারছি না।
পৌষ কটমট করে চাইলো। ধারালো কণ্ঠে বললো,
— বাহ বাহ! জামাই আমার অথচ ডাকব কি না আরেকজনকে তাকে টানতে? দেখি উঠুন। ভং হলো অনেক।
তৌসিফ মাথা নেড়ে হাসলো অল্প। পৌষ’র হাত ধরে উঠে টলতে টলতে বাথরুমে যেতেই পৌষ তাকে ব্রাশ করতে সাহায্য করলো। তৌসিফ’কে ভেতরে দিয়ে কঠিন গলায় বললো,
— আছি। দরজা লক করবেন না।
বাইরে থেকে দরজা ধরে দাঁড়িয়ে রইলো পৌষ। খানিক বাদে তৌসিফ ডাক দিতেই দেখলো বেসিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে তৌসিফ। তার মাথা ঘুমাচ্ছে। এত দূর্বল কিভাবে হলো সে? মানুষিক বিষাদ কি মানুষকে এতটাই দূর্বল করে দেয়? পৌষ ওকে বিছানায় হেলান দিয়ে বসালো। বুয়াকে ডেকে খাবার রুমে আনিয়ে মুখে তুলে খাওয়াতে খাওয়াতে বললো,
— কেমন হয়েছে?
— আমার পৌষরাতের হাতের রান্না কখনো খারাপ হয়? তুমি খেয়ে সাথে সাথে হানি।
— খাব। শুনুন?
— শুনছি।
— এসব ভংচং বাদ দিন৷ একদিন সময় দিলাম সুস্থ হন৷ আপাকে কাল কল দিয়েছি। টিকিট কেটে আসতে যতক্ষণ। যদি সুস্থ না হন বাপের বাড়ী চলে যাব।
বউ এর হুমকিতে তৌসিফ একটু হাসলো। সে কিনা যাবে বাপের বাড়ী অথচ তৌসিফ ছাড়া থাকতে পারে না। পৌষ ওকে খায়িয়ে ঔষধ খাওয়ালো। এতেই যেন ওর বারোটা বেজে গেলো। এই তৌসিফ বাচ্চাদের হার মানাবে। এত বড় দামড়া লোক ঔষধ খেতে চায় না। পৌষ’র যেন একদিনেই ডুগডুগি বাজিয়ে ছাড়ছে তৌসিফ।
সোহা’র ডেলিভারি ডেট এগিয়ে এসেছে। মেহেদী আজ এসে মিনু’কে নিয়ে গেলো। সোহা অবাক হয়ে তাকিয়েই ছিলো মিনু’কে দেখে। মিনু যখন আপা ডেকে ঝাপ্টে ধরলো তখন সোহা’র ধ্যান ভাঙলো। তার হাত-পা কাঁপতে লাগলো। কত হাসিখুশি তার বাচ্চাটা। সারাদিন ওর সাথে থেকে রাতে মিনুই বায়না ধরলো চলে যাবে। পৌষ’র সাথে ভালোই খাতির তার। সোহাও মানা করলো না। যেতে দিতো। মেহেদী নিজে গিয়ে মিনু’কে দিয়ে আসতে আসতে দেখলো বাড়ীতে কান্ড ঘটে গিয়েছে। সোহা’র চিৎকারে চারপাশ গমগম করছে। আশেপাশের মহিলারা ওদের ঘরে। মেহেদী ঘড়িতে দেখলো রাত দশটা। ত্রস্ত পায়ে ঘরে ঢুকতেই টেবিলে মাথা ঠেকিয়ে বসা বাবা’কে দেখলো। হরবরিয়ে ডাকলো ও,
— সোহা? সোহা কোথায়? ও কাঁদছে কেন?
মেহেদী’র বাবা মাথা তুলে ছেলেকে ধরে বসালেন। জানালেন সোহা’র ব্যথা উঠেছে আধ ঘন্টা আগে। মেহেদী বের হওয়ার পরপর। তখন বাসায়ই ওর মা চেষ্টা করছেন। মেহেদী’র গা হিম হয়ে গেলো। বাসায় কিন্তু কেন? মেহেদী টাকা রেখেছো তো। ওর চোখ ভর্তি পানি জমলো। তারাতাড়ি ঐ দিকে পা বাড়িয়ে ডাকলো,
— মা? মা? সোহাকে হাসপাতালে নিব। ওকে তুলো।
ভেতর থেকে যা শুনা গেলো তাতে জমে গেলো মেহেদী। কান্নার শব্দ আসছে। ছোট্ট একটা চিকন মিহিয়ে যাওয়া কণ্ঠ। সোহা’র শব্দ আসছে না আর। ভয়ে আত্মা কেঁপে উঠে মেহেদীর। কিছু কি খারাপ হলো? ততক্ষণে হাসিমুখে একজন মহিলা বাইরে এসে জানালেন,
— মেহেদী, আব্বা তুমি তো মেয়ের বাবা হয়ে গেলো। ঘরে বরকত এসেছে।
আরেকজন ভেতর থেকে বললো,
— মেয়ে তো তাই বাবার টাকা বাঁচালো।
মেহেদী শুনলো না। ওর মুখে শুধু জিজ্ঞেস এলো,
— সোহা কি করছে?
জানা গেলো সোহা জেগেই আছে। মেয়ে হয়েছে শুনার পর থেকে চুপ আছে। মেয়ে আপাতত তার দাদির কোলে। মেহেদী’র কোলে দেয়া মাত্রই মেহেদী শার্টে দুই হাত মুছলো। মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো অপলক। তার ভেতর থেকে কান্না পাচ্ছে। মেয়েকে বুকে নিয়ে ভেতর ঢুকলো ও। ওদের আলাদা থাকতে দিয়ে সবাই বের হলো। মেহেদী সোহা’র পাশে বসেই ডাকলো,
— জান আমার?
সোহা তাকালো। মেহেদী দেখলো ওর দৃষ্টি। ব্যস্ত হয়ে বললো,
— কি হয়েছে সোহা? তোমার খারাপ লাগছে? ডাক্তার ডাকব?
— ও মেয়ে কেন?
বলেই কেঁদে উঠলো। মেহেদী অবাক হলো। নিজের মেয়েকে বুকে জড়িয়ে রাখলো আরেকটু। সোহা’কে সান্ত্বনা না দিয়ে বড় বড় পা ফেলে বাইরে চলে এলো।
পৌষ’কে ফাঁকি দিয়ে তৌসিফ বাইরে গিয়েছিলো। রাগে থম ধরে থাকা পৌষের রাগ ধুয়েমুছে সাফ হলো যখন দেখলো দু’জন ধরে ভেতরে আনছে তৌসিফ’কে। পৌষ প্রথমে ভাবলো হয়তো উলোটপালোট গিলে এসেছে তৌসিফ কিন্তু না শুনা গেলো গাড়ি থেকে নামতে গিয়ে মাথা ঘুরেছে তার। পৌষ চুপচাপ ওর পাশে বসলো। ডিম সেদ্ধ খায়িয়ে মুখটা মুছে দিতেই তৌসিফ জানালো তার শরীর ব্যথা করছে। পৌষ যতখানি পারলো ওর ঘাড় থেকে নিয়ে পা পর্যন্ত টিপে দিলো। এক জীবনের সবটুকু সেবা যেন পৌষ করে যাচ্ছে। তৌসিফ ঘুমাতেই ওর মাথায় হাতালো পৌষ। ফোনে সময় দেখে তা রাখতেই বেজে উঠলো। অপর পাশ থেকে তায়েফা জানালো সে এয়ারপোর্টে আছে। চলে আসবে ঘন্টা খানিকের মাঝে।
তৌসিফে’র ঘুম ভাঙতেই পৌষ’কে পাশে বসা পেলো। খারাপই লাগলো ওর। মেয়েটাকে অতিরিক্ত চাপ দেয়া হচ্ছে। পৌষ’কে টেনে বুকে নিলো তৌসিফ। কপালে সময় নিয়ে চুমু দিয়ে বললো,
— হানি, আ’ম সরি।
— কেন?
— সবকিছুর জন্য।
— সরি বলার মতো কিছু হয় নি।
পৌষ উঠে বসতেই তৌসিফও হেলান দিয়ে বসলো। পৌষ ওর চোখে সরাসরি তাকিয়ে চোখ নামালো। তৌসিফে’র ডান হাতের তালু নিজের গালে ঠেকিয়ে প্রশ্ন করলো,
— কি হয়েছে বলুন তো আমাকে। আপনি ওভাবে কেন কাঁদছিলেন? আপনি কি জানেন আপনাকে ওভাবে দেখে আমার কেমন লাগছিলো?
পৌষ’র গলা ধরে এলো। তৌসিফ চোখ বুজলো অতঃপর খুলেই সরাসরি আর্জি জানালো,
— আগের মতো হয়ে যাও পৌষরাত। তুমিও বাচ্চা চাইতে তাহলে ওদের কথা জানার পর থেকে এতটা চুপসে গেলে কেন? কেন আমার থেকে গুটিয়ে যাচ্ছো? কেন চঞ্চলতা দেখছি না? আমার পৌষরাত তো এমন না। সে তো দূরন্ত।
পৌষ’র চোখ ভরে এলো। আস্তে ধীরে বলা শুরু করলো,
— যেদিন শুনলাম ওরা আছে আমার ভেতর তখন আমার পৃথিবী যেন থমকে ছিলো। যাকে আপনি খুব করে চাইতেন তাকে আমিও চাইতে লাগলাম। শুনলাম তারা দু’জন। আমার প্রতিক্রিয়া কি হবে নিজেই বুঝলাম না। চারপাশে যেন বদলে গেলো সব। আমার ধ্যান ধারণা বদলে গেলো। আমি জানিই না এসময় কেমন লাগে। বুঝতেই পারছিলাম না কি করব। পেটের ভেতর দুটো জান। এদের দায়িত্ব কিভাবে নিব? আমার না রাগ হচ্ছিলো না কষ্ট। আমার অনুভূতি থমকে ছিলো। আমি প্রকাশ করতে পারছিলাম না। আপনার শাসন আমাকে কখনোই কষ্ট দেয় নি। অধিকার নিয়ে কেই বা শাসন করেছে আমাকে? কে ই বা এত যত্ন করেছে? বাচ্চাগুলোর কথা ভাবলেই আমার কেমন লাগে। আমি তো এলোমেলো হয়ে যাই। সব যেন এলোমেলো। আমিও এলোমেলো হয়ে যাই। ওদের নিয়ে ভাবতে গিয়ে বারবার হারিয়ে যাই। খেই হারিয়ে ফেলি। আমি জানি না কেন এমন হয়? আমি সত্যিই জানি না। আমি আপনাকে কখনোই কষ্ট দিতে চাই নি৷ অবহেলা করার সাধ্য আমার নেই। বিশ্বাস করুন।
পেটে হাত দিয়ে আজ এতদিন দিন কাঁদলো পৌষ। তৌসিফ ঝট করে ওকে টেনে বুকে নিলো। ডাক্তার বারবার বলেছিলো ওকে এসব স্বাভাবিক কিন্তু তৌসিফই মানতে পারে নি। ওর এত সাধের পৌষরাত, এভাবে কষ্ট তো তৌসিফ দিতে চায় নি। ওর কপালে চুমু দিয়ে তৌসিফ কাতর স্বরে বলে উঠলো,
— মাফ করে দাও। আমাকে মাফ করে দাও। প্রথমবার আব্বু হব তো তাই বুঝতে পারছিলাম না। অভিজ্ঞতা নেই একদমই।
প্রেমসুধা পর্ব ৭১
পৌষ’র রাগ হলো পরক্ষণেই হাসি পেলো। পেটে চিনচিন ব্যথা হচ্ছে তবুও পৌষ হাসছে। হাসতে হাসতে তৌসিফে’র গলা জড়িয়ে গালে ঠৌঁট ছোঁয়ালো। দাঁড়ির মাঝে এক কড় সমান আঙুল দিয়ে চুলকে দিতে দিতে বললো,
— অ্যাই মামাতো ভাই, মমো খাব।