Violent love part 15

Violent love part 15
Mariam akter juthi

“তখন জুথি বাধ্য হয়েই আরিশের একটা টিশার্ট, সাথে ওর থেকেও বড়ো একটা ট্রাউজার,পরে নেয়। কারণ জুথি তখন আরিশের কথায় না করে, ফারিকে ডেকে দিতে বলেছিল। কিন্তু আরিশ জুথির কথার কোন পাত্তা দিচ্ছিল না বলে, জুথি আরিশের দেওয়া সাদা টিশার্ট ও ছাই বর্ণের একটা ট্রাউজার পরে ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে দেখে আরিশ ওর বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে,আরিশ কে বারান্দায় দেখে জুথি এক দৌড়ে রুমের দরজা খুলে গৌ। জুথি চলে যেতে আরিশ রুমের দিক গুরে দরজার দিক তাকিয়ে বললো,
‘কত পালাবে মৌচাক? সেই ঘুরে ফিরে আমার ঘরেই আসতে হবে।

জুথি আরিশের রুম থেকে এসে ওর পরার জামা বের করে, ট্রাউজার টা খুলে কালো প্যান্ট কাট একটা ছেলোয়ার পরে নিয়ে, যখন জামা পরতে নিবে তখন ওর চোখ পড়ে ওর গায়ে পরা আরিশের টিশার্টের দিকে,জুথি টিশার্টা গলার কাছ থেকে একটু উঁচু করে ঘ্রান টা নিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে, খুলতে চোখ জোড়া পানিতে ভরে যায়,আজ কত বছর পর নির্ভয়ে প্রিয় মানুষেটার গন্ধ নিল। চোখের পানি টা মুছে পরপর প্রিয় ঘ্রান টা কয়েক বার সুখে নিল। হঠাৎ রুমের দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ পেয়ে দরজার দিক তাকিয়ে দেখে রোদ রাগী চোখ নিয়ে ওর দিকে তেড়ে আসছে, এটা দেখে চোখের পানি ভালো করে মুছে,জুথি কন্ঠ খাদে নামিয়ে বললো,
‘রোদ আপু তু,—ওর বাকি কথা শেষ করার আগেই রোদ জুথির গালে ঠাটিয়ে থাপ্পড় দিল।
‘ঠাসসসস।
‘আপু,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘ঠাসসসস।—‘তোর লজ্জা করে না? নিষেধ করার পরও আরিশের রুমে গিয়েছিস, বেহায়া একটা মেয়ে।
পর পর দুটো থাপ্পর খেয়ে আপনা আপনি জুথির চোখ দুটো পানিতে টয়টুম্বুর হয়ে যায়।জুথির মুখ থেকে ফুপানোর শব্দ শুনে রোদ জুথির থুতনিটা ওর দিক করে বললো,
‘তোর নাটক দেখতে আসিনি আমি। কি কি করেছিস আরিশের সাথে সত্যি করে বল।
জুথি ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে রোদের কথার তাৎপর্য না বুঝে বললো,
‘ম’মানে?
‘ওলে আসছে আমার নেকা, সুন্দর চেহারা দেখিয়ে, উড়তি বয়সের ফুর্তি মিটাতে গিয়েছিলি তাই না?
রোদের এমন জঘন্য কথা শুনে, জুথি অনুনয়ের কণ্ঠে বললো
‘আ,আপু তুমি ভুল বুঝছো।
‘কোনটা ভুল কোনটা সঠিক আমি সেটা বুঝিনা? একটা ছেলের রুমে গিয়ে তারই পোশাক পরে বের হয়েছিস। নিশ্চয়ই তোদের মধ্যে অনেক কিছু হয়েছে?
‘ছি আপু, তুমি এসব কি বলছো?

‘আমার মেজাজ এমনি গরম, সত্যি কথা বল।
‘দেখো আপু তুমি যেসব ভাবছো সম্পূর্ণ ভুল, আমি,, ওর সম্পূর্ণ কথা শেষ করার আগে দরজায় কারআঘাত করার শব্দ পেয়ে দুজনেই সেদিক তাকায়। রোদ দরজার দিক থেকে চোখ সরিয়ে জুথির দিকে তাকিয়ে বললো,
‘আমি যে তোকে চড় মেরেছি, এটা তুই কাউকে বলবি না। আর যদি বলিস,
‘না আপু আমি কাউকে বলবো না।
‘হুম। আমি দরজা খুলছি।
বলে রোদ দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলে দেখে ফারি ভ্রু কুঁচকে দাঁড়িয়ে আছে। ফারি রোদকে দেখে বললো,
‘তুমি এই রুমে কি করছো?
‘সেটা কি তোকে বলতে হবে?
‘না তুমি তো কোন কারণ ছাড়া এই রুমে আসো না, তাই জিজ্ঞেস করলাম।
‘আমি যাচ্ছি, বলে একবার জুথির দিকে তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
রোদ চলে যেতে ফারি,জুথির কাছে এসে ওর দিক তাকাতে ফারির চোখে পড়ে জুথির গালে থাপ্পরের দাগ। থাপ্পরের দাগ দেখে ফারি ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘তোর গালে দাগ কিসের? নিশ্চয়ই রোদ আপু মেরেছে তাই না?

‘আরে না, আপু মারতে যাবে কেন।
‘তাহলে আরিশ ভাই মেরেছে?
‘না, না। উনি মারেনি।
‘তো আমাকে মিথ্যা বলছিস কেন? রোদ আপু যে মেরেছে সেটা আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি।
‘আসলে,
‘দাঁড়া আমি আরিশ ভাইয়ের কাছে বিচার দিব।
‘আরে এই না না, প্লিজ দেখ কেমনটা করিস না।
‘তো?
‘আমি ওনার রুমে গিয়েছিলাম এটা ভেবে আপু মেরেছে।
‘তোর ভাইয়ের রুমে যাওয়ার সম্পূর্ণ রাইট আছে তাহলে?
‘কোন রাইট নেই আমার ফারি,অন্যদিক তাকিয়ে।
‘আছে,মৌ।
‘বললাম তো নেই।
‘মৌ তুই ভাইয়ের ব,
‘দেখ ফারি আমি এসব কোনো কথা শুনতে চাই না, তুই আমার রুম থেকে যা।
‘তুই না শুনলেও ওটা সত্যি।
‘কোন সত্যি নেই।

‘আমার কাছে মিথ্যে বলবি না, তুই যে এখনো ভাইয়ের কথা মনে করে বালিশ ভিজাও সেটা কি আমি জানিনা?
‘তুই যাবি?
‘কেন আমি যাব কেন? তুই তোর অনুভূতির লুকাচ্ছিস, তুই ভাই কে ভালো,
‘দেখ ফারি আমার এসব কথা শুনতে ভালো লাগছে না।
‘দেখ তুই মানিস আর না মানিস, আজ তোকে স্বীকার করতেই হবে। তোর মনে আছে , দেড় বছর আগের কথা? যখন তুই ৮এ পড়তি? তখন এক বিকেলে গার্ডেনে বসে আমরা সবাই চিরকুট খেলছিলাম?
জুথির ফারির কথায় মনে পড়ে সেই দেড় বছর ফেলে আসা আগের গঠনা।

“সময়টা প্রায় পড়ন্ত বিকাল, মানে দিনের সেই সময়টা যখন বিকেল প্রায় শেষ হয়ে আসে, সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে, আলো একটু নরম হয়ে নিভে নিভে আসে। আর চারপাশে এক ধরণের শান্ত, আবছা, স্নিগ্ধ পরিবেশ তৈরি হয়। ঠিক এই সময়টা খান বাড়ির ছেলে মেয়েদের, আড্ডা, গল্প গান, করার সময় হয়। কখনো কখনো আয়ান ও থাকে যদি ওর কোন জরুরী কাজ না থাকে। আজ আয়ানের কাজ থাকায় সে এই সময়টা তার বোনদের দিতে পারিনি। যদিও আয়ান না থাকলেও তাদের আড্ডা মিছ হবে না।আর আজকে তারা চিরকুট খেলবে এটাই সিদ্ধান্ত। সে-ই অনুযায়ী রোদ,ইভা,ফারি,জুথি,মনি সব কিছু ঠিকঠাক করে আসর জমালো সবাই মিলে। আর নিয়মটা, কাঁচের বাটিতে অনেকগুলো কাগজ তাতে অনেক কিছু লেখা থাকবে, আর যার যেটা ইচ্ছা সেই কাগজটা উঠিয়ে সেখানে যেটা লেখা থাকবে সেটা করবে। প্রথমেই ইভা একটা চিট নাড়াচাড়া করে উঠিয়ে খুলে দেখলো তাতে লেখা।

“মা বাবাকে কতটা ভালোবাসো সেটা মিন করে ছোট করে কবিতা বলো?
ইভার চিরকুট দেখা হয়ে গেলে, সবার দিক তাকিয়ে বললো,
‘নিশ্বাসে ভরে আছে মা-বাবার নাম,
তাদের ছায়াতেই আমার সব শান্তি,
বাবার হাত ধরেই হাঁটতে শিখেছি,
মায়ের চোখে চেয়ে স্বপ্ন লিখেছি।
আজ দূরে এসে বুঝি খুব ক্লান্ত আমি,
ভালোবাসার খামে নেই আগের সেই অভিমান,
ভুলে যাই মাঝে মাঝে, তবু মন কাঁদে,
একবার তুমি যদি ফিরে আসতে বাবা,—ইভা এতোটুকু বলে থেমে বললো,
‘আমার আর মনে আসছে না, এর থেকে বেশি এগুলে আব্বুর কথা খুব মনে পড়ে যাবে। আর তখন সবগুলো আবেগি হয়ে কেঁদে দিব। এখন রোদ কে বল চিরকুট ধরতে।
রোদ চিরকুট ধরে দেখে তাতে লেখা,
“আমাদের সবার জন্য আজ সন্ধ্যায় নাস্তা বানাতে হবে। এটা দেখে রোদ হাত-পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বললো,
‘হে মাবুদ আমার কপালেই কেন এত বড় ঝামেলা জুটলো? রোদের কথা শুনে সবাই হু হু করে হেসে দিল,ফারি তো বলেই ফেলল।

‘তোর এটা পাওয়াই উচিত।
ফারি রোদকে বলে জুথির দিকে বাটিটা ধরে চিরকুট উঠাতে বললে,জুথি উপর থেকে একটা চিরকুট হাতে নিতে তাতে লেখা।
“তোমার প্রিয় মানুষকে ডেডিকেট করে একটা গান শোনাও আমাদের।
জুথি চিরকুটে প্রিয় মানুষ বলতে প্রথমেই ওর চোখে ভেসে ওঠে আরিশ মুখটা। সাথে সাথেই ওর মনটা বিষিয়ে যায়, বেরিয়ে আসে ভিতর থেকে এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস। কিন্তু সবাই তো নাছোড়বান্দা, চিরকুট যেহেতু ধরেছে এখন খেলতেও হবে। তাই চোখটা বুঝে আরিশের কথা মনে করে গাইতে শুরু করলো।
~~‘ঝরে যাওয়া পাতারি মতন,
ঝরে গেছি আজ আমি।
কেন ভালোবাসো নি আমায়,
হারিয়ে কোথায় তুমি। (২)
~~একলা পথের পথিক হয়ে,
হেঁটে চলেছি একা।
আকাশ পানে শুধু তাকিয়ে থাকি,
খুঁজে পাই না তোমার দেখা।(২)
~~ঝরে যাওয়া পাতারি মতন,
ঝরে গেছি আজ আমি।
কেন ভালোবাসো নি আমায়,

হারিয়ে কোথ,,, — জুথি আর গানটা সম্পূর্ণ শেষ করতে পারিনি, তার আগেই ফুপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। কান্নার বেক বেড়ে যেতে, জুথি খেলা রেখে উঠে দৌড়ে সোজা ও রুমে গিয়ে, বিছানার উপর উপুর হয়ে শুয়ে হাতের উপর মাথাটা রেখে অঝোরে কান্না করতে লাগলো, কিশোরী মন আজ আরিশ কে তার ভীষণ প্রয়োজন। এটা সে কাকে বোঝাবে? সে মারাত্মক পরিমাণ ভালোবাসে আরিশ কে, কেন চলে গেছে? কেন, কেন, কেন? জুথি কাঁদতে কাঁদতে ভাঙ্গা গলায় বললো,
‘আরিশ ভাইয়া আপনি আমার সেই জায়গায় থাকেন। যেই জায়গা শত খুঁজলে না পাওয়া যাবে না অনুভব করা যাবে। শুধু এক আকাশ ভরা তিক্ততা নিয়ে পড়ে আছি আপনার প্রলাহে। ফিরে আসুন না আবারও সেই আগের মত মৌ বলে ডাকুন না।আপনার মৌ আপনাকে খুব মিস করছে। ফিরে আসুন।

I am waiting for you. Yes waiting please come back vaiya… please come.
তখন জুথি ওখান থেকে চলে আসতে, সবাই খেলা থেকে উঠে আসে, রোদ ওখান থেকে এসে ওর রুমে যায়। ইভা বোন কে এভাবে চলে যেতে দেখে, বোনের রুমে আসতে নিলে ফারি আগবাড়িয়ে ইভার হাত ধরে বলে—‘আপু তুমি থাকো আমি যাই, ইভা ও আর নিষেধ করে না।ফারি কে যেতে বললে,ফারি জুথির রুমে এসে জুথির কান্না, পাশাপাশি বলা কথাগুলো শুনে,জুথির পিঠের উপর হাত রেখে বললো,
‘মৌ,তুই ভ,, ফারির কথা শেষ করার আগেই জুথি উঠে বসে ফারির গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
‘ফারি সবকিছু ছিন্ন হওয়ার পরেও আজও ভালোবাসি তো আমি ওনাকে, তাহলে উনি কেন আমার কাছে ফিরে আসছেন না?

‘তুই এভাবে কান্না করলে কিভাবে হবে বল?
‘আমি ওনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না তো?
‘ভাইয়া চলে আসবে, এভাবে ভেঙে পড়িস না।
জুথি তখনও ফারিকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদছিল।
‘বর্তমান’
জুথির এসব কিছু ভাবার মধ্যে ফারি, জুথি কে ওর দিকে ঘুরিয়ে ওর দুই বাহুতে হাত রেখে বললো,
‘কি হলো কোথায় হারিয়ে গেলি?

‘চুপ করে থাকবি না। এই দেড় বছরের নিশ্চয়ই তোর ভালোবাসা ফুরিয়ে যায়নি?
জুথি ফারির বারবার এক কথায়, ওর হাত থেকে ফারির হাত সরিয়ে, বললো,
‘হ্যাঁ, হ্যাঁ ভালোবাসি, বাসতাম, বাসবো, কিন্তু আমার তাকে প্রয়োজন নেই। তাকে আমি যতটা পরিমাণ না ভালোবাসি, তার থেকেও বেশি ঘৃণা করি।
‘তুই,,
‘উনার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই,তুই এখন যা, যা সোনার সেটা তো শুনেছি?

“সময়ের বেগ টেনে কেটে গেছে দুটো দিন,আরিশ রাজনৈতিক কাজে প্রায়ই রাত করে বাড়ি ফিরে। বাসায় খুব কমই থাকা হয় তার,আরিশ আজ আর বেরোয়নি, আয়ান কে পাঠিয়েছে, তার নাকি কোন প্রডাক্ট আসবে। সময় সকাল ১১ টা ২০ মিনিট খান বাড়ির মহিলারা রান্নার কাজে ব্যস্ত। মনি স্কুলে গেছে, জুথির আজকে পরীক্ষা নেই, তাই ও ওর রুমে। ইভা ভার্সিটি গেছে। রোদ, ফারি বসার ঘরে টিভি দেখছে। এমন সময় দরজায় কলিং বেল বাজতে, রোদ উঠে দরজা খুলে দিতে দেখে, একজন ডেলিভারি চার্জ ম্যান দাঁড়িয়ে আছে। উনাকে পার্সেল হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রোদ বললো,

Violent love part 14

‘কে অর্ডার দিয়েছে?
‘আরিশ খান কোথায়? ওনার পার্সেল এসেছে। উনাকে ডেকে দিবেন।
‘আমার কাছে দিন আমি দিয়ে দিব।
ডেলিভারি ম্যান, রোদের হাতে পার্সেলটা দিয়ে বাইক নিয়ে চলে যায়। ডেলিভারি ম্যান চলে যেতে, রোদ পার্সেলটার দিকে তাকিয়ে কিছুটা অবাক হয়, এত ছোট পার্সেলে কি অর্ডার করেছে আরিশ? রোদ ভ্রু কুঁচকে price এর দিক তাকাতে চোখ দুটো ছানা বরাদ্দ দিয়ে যায়। কারণ সেখানে লেখা, the price in Switzerland,1 million. এটা দেখে সাথে সাথে বললো,
‘হোয়াট,এটা সুইজারল্যান্ড থেকে আনানো? ১ মিলিয়ন, মানে বাংলাদেশি রেট ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

Violent love part 16