Violent love part 22

Violent love part 22
Mariam akter juthi

“বেলা দুপুর ২:৪৫ মিনিট। লোকজনের ভিড় উপচে পড়ছে। হাজার হাজার মানুষ বিজয়ের আনন্দে চিৎকার চেঁচামেচি করছে, আর স্লোগান দিচ্ছে।—‘ আরিশ খান চেয়ারম্যান সাহেব নয়, এখন সে আমাদের এমপি সাহেব। সবার এত ভিড় জমেছে যে মানুষের হাঁটতে পর্যন্ত কষ্ট হচ্ছে। আমান সে, আরিশের পাশে চোখ দুটো ছোট ছোট করে আরিশের দিকে তাকিয়ে আছে। সে জানতো এইসব নেতৃত্ব ক্ষমতা খেলায় যখন আরিশ খান হাত লাগিয়েছে তখন সে বিজয়ী হবেই। আর আজ ৩৬৫৪ টা ভোট বেশি পেয়ে এমপি হয়েছে। এমন সময় আরিশ কে পুলিশ কমিশনার শুভেচ্ছা জানিয়ে মঞ্চে কিছু বলার জন্য বলতে আরিশ মঞ্চে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায়,।

কালো পাঞ্জাবি, চোখে তীব্র আত্মবিশ্বাস। চারপাশের ক্যামেরা ফ্ল্যাশ, নেত্রীদের শুভেচ্ছা আর সাধারণ মানুষের বাঁধভাঙা উল্লাসের মাঝে বললো,
‘এই চেয়ার, এই দায়িত্ব শুধু ক্ষমতার খেলা নয়। এটা আমার যুদ্ধের পুরস্কার ও নয়, এটা আমার প্রতিশ্রুতির শুরু। যারা আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, তাদেরকেও আমি সঙ্গে নিয়ে এগোবো।বলে আড় চোখে আমানের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে জনতার দিক তাকিয়ে বললো, —‘আমাকে ভোট দিতে কাউকে বাধ্য করা হয়নি, কিন্তু যারা আমার বিরোধিতা করে এখন পর্যন্ত বেঁচে আছে তাদের ভাগ্য ভালো। কারণ এখন সবকিছু আমার দায়িত্বে, আর যাকে একবার ছাঁটাই করব সে কান্না করার ও সুযোগ পাবে না।
আরিশ এতটুকু বলে মঞ্চ থেকে নেমে দাঁড়াতে ওখানে থাকা মাঝবয়সী টাইপের একজন নেতা পাশে থাকা কমিশনার কে বললেন,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘আরিশ খান এমন যে,সে একাই আসে, আর আসে তো সবকিছু বদলে যায়।
উনার কথায় কমিশনার সাহেব বললেন,
‘হুম ঠিক বলেছেন, এই ছেলে আগুন একদিন পুড়িয়ে দিবে সব কিছু। সেটা তার চোখ দেখলেই বোঝা যায়।
ওনাদের কথার মধ্যে,আরিশ চুলে হাত বুলাতে বুলাতে এসে আয়ান কে উদ্দেশ্য করে বললো,
‘গাড়ি বের কর বাড়ি ফিরব, বাহিরে মেঘ করেছে ভীষণ। আর এখানে থাকা প্রত্যেককে বিজয়ের মিষ্টি খাইয়ে দিস। আর আমান ওকে আমি পার্সোনালি ট্রিট দিবো। বলে কমিশনারের দিক তাকিয়ে বললো,
‘পার্টি অফিসে রাতে চলে আসবো, আপনার ওখানে দেখা করবেন। বলে ব্যস্ত পায়ে হেঁটে বের হয়ে আসে।
আরিশ কে বের হতে দেখে আয়ান ও ব্যস্ত পায় হেঁটে বের হয়ে আসে,আরিশ গাড়িতে উঠে চোখের উপর হাত দিয়ে বসে থাকার মধ্যে ওর ফোনে ফোন আসে, আরিশ ফোন বাজতে দেখে চোখের উপর থেকে হাতটা সরিয়ে দেখে স্কিনে বাবাই নামটা ভেসে উঠছে। এটা দেখে আরিশ শত ক্লান্তির মাঝেও মুচকি হেসে ফোনটা রিসিভ করে বললো,

‘আসসালামু-আলাইকুম বাবাই।
‘অলাইকুম-আসসালাম।
‘কেমন আছো বাবাই?
‘ফাইন মাই সন, এই বাবাই টাকে তো একদম ভুলেই গেছো?
‘না বাবাই, দেশে ফেরার পর ইলেকশনের কাজে সময়টা অনেক বিজি কাটছে। তাই সময় করে,,
‘হ্যাঁ বুঝতে পেরেছি বাবা, এইমাত্র লাইভ দেখলাম বাংলাদেশের, তুমি এমপি নেতৃত্ব পেয়েছ।
‘ছোটু কই বাবাই?
‘ও বিজনেস ডিল করতে আমেরিকা গিয়েছে। আজকে ফ্লাইট ল্যান্ড করার কথা।
‘মামনি কেমন আছে?
‘তোমার মামনি একদম তোমাকে ছাড়া ভালো নেই, সারাক্ষণ শুধু ‘লুসিয়ান’ আর তোমার কথা মুখে থাকবেই।
‘মামনির কাছে ফোনটা দাও।
‘ইন্দিয়া ত্যাইনিন’ ফোন টা ওনার স্বামী ‘জিয়ানলুইজি গেন্টানার’ এর কাছ থেকে নিয়ে অভিমানী কন্ঠে বললেন,
‘আমার কাছে আর ফোন দিয়ে কি করবে?শুনি?কেউ কি খবর নেয় আমার?
‘মামনি আই এম সরি, আসলেই ব্যাস্ত ছিলাম।
‘ঠিক আছে এইবারের মতো মেনে নিলাম, তবে দেশে যে বউয়ের জন্য ফিরলে তাকে তো একটা নজর আমাকে দেখালে না?

‘আসলে মামনি বিষয়টা মাথা থেকে বেরিয়ে গেছিল।
‘ইন্দ্রিয়া ত্যাইনিন’ জানেন আরিশ কেমন টাইপের ছেলে, ব্যক্তিগতভাবে উনি আরিশ কে আরিশের ব্যক্তিত্বের জন্য ভীষণ ভালোবাসেন। ঠিক যতটা উনি উনার লুসিয়ান কে ভালবাসেন ঠিক ততটাই। তাই আবারো অভিমানী কন্ঠে বললেন,
‘আমি এতকিছু জানি না আমার বউমাকে আজকেই দেখাবে।
‘ঠিক আছে মামনি আমি তোমাকে সন্ধ্যায় ভিডিও কল দিব।
‘হুম।
‘মামনি, লুসিয়ান ব্যাক করলে আমাকে ফোন দিতে বল।

‘হুম সে আমি তোমাকে বলতেও ফোন দেবে, আর না বললেও দিবে, এই কিছুদিন বিজনেস নিয়ে ব্যস্ত থাকার পাগলামিটা একটু কমেছে। আর নয় তো তুমি ছাড়া তার নাকি চলেই না।
আরিশ আরো কিছুক্ষণ ওনাদের সাথে কথা বলে ফোনটা রেখে দেয়। আকাশে কালো মেঘের হাতছানি, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি থেকে মুষলধারে নামবে নামবে ভাব। নামবে কি বৃষ্টি ছুপছুপ করে পুরো শহরে বর্ষণ করতে শুরু করে দিয়েছে। খিচে বৃষ্টি নামতে দেখে খান বাড়ির মেয়েদের আর পায় কে?রোদ, ইভা,ফারি জুথি,মনি সবগুলো একসাথে দৌড়ে ছাদে এসে মনের আনন্দে ঘুরঘুর করে ঘুরতে লাগলো আর বৃষ্টিকে উপভোগ করতে লাগলো। ফারি তো গান গাইতে গাইতে নাচ শুরু করল,

Aaj cham cham cham chalein
Mere sang sang sang
Tu hai jahaan main hoon wahaan
Saath chalti rahoon
Barsaat mein
Le ke tujhe
Bheegti rahoon
Tere hi baahon mein
Baahon mein reh loon…
মুষলধারা বৃষ্টির মধ্যে সবগুলো নাচছে আর যার যে গান মনে পড়ছে সে সেটাই বলছে, পাশাপাশি ইতিমধ্যে খান বাড়িতে খবর পৌঁছে গেছে, আরিশ ইলেকশনে বিজয় হয়েছে। এ নিয়ে বাড়ির কীর্তি দের আনন্দে মিষ্টি খাওয়ার জম চলছে। এমন সময় আরিশ আয়ান ভেজা শরীর নিয়ে খান বাড়িতে প্রবেশ করে, সানজিদা খান আরিশ কে দেখে ওর কাছে গিয়ে বললেন,
‘বাবার নাম রেখেছো?
‘আম্মু আমি ওনার নাম শুনতে চাই না।
‘উনি ভীষণ খুশি হয়েছে।
‘,,,,,,,,।

আরিশ কে চুপ করে থাকতে দেখে উনি নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,
‘ভিজে আছো জামা কাপড় পাল্টে আসো।
‘মৌ কোথায়?
‘ওরা সবাই ছাদে বৃষ্টিতে ভিজতে গেছে।
আরিশ আর দাঁড়ালো না ও ভাবেই দ্রুত পায়ে উপরে ওঠে ছাদের দিকে চলে আসে,জুথি ওড়নাটা শরীর থেকে খুলে একটা পাশে রেখে ফারি কে চোখ টিপ দিয়ে barso re,, গানটা গাওয়ার সাথে নাচতে শুরু করল,

Barso re megha megha barso re
Aaye hain tujhe pukarane
Barso re megha megha barso re
Aaye hain tujhe pukarane
Chheda hai jahan mein aaj
Mujhko wohi dhoonde jaa
Barso re megha megha barso re
Aaye hain tujhe pukarane
Raat ka wo badli ka mela
Jisme tanha main rooth gaya
Main hoon saawan, tu hai paani
Tu hi meri manzil hai
Barso re megha megha barso re
Aaye hain tujhe pukarane….

জুথি বৃষ্টির ভিতর নাচতে নাচতে খেয়ালই করল না, আরিশ ওর একদম কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে খুব নিখুঁত দৃষ্টিতে ওকে প্রজাপেক্ষন করছে। আরিশ ছাদে আসতে বাকি সবাই চুপচাপ চলে আসে, শুধুমাত্র রোদ অশ্রু চোখে তাকিয়ে ছিল, যদিও তার মনে আজ আর কোন সংশয় নেই, তবুও সে দুজনকে দেখে মনে মনে এটাই বলেছিল।—‘মানুষ কেন বামন হয়ে চাঁদেই হাত বাড়ায়? জুথি তো আরিশের ছিল, আর সে এখনো ঠিক তেমনি আছে। শুধু মাঝখান থেকে আমি থার্ড পার্সন হয়ে তাদের জীবনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিলাম ‌,এটা ভেবে মুখ চেপে কান্না আটকে দফ দফ পা ফেলে ওর রুমে চলে আসে।
জুথির গান শেষে হতে হাত দুটো দুই দিক সোজা করে ঘুরতে ঘুরতে,আরিশ জুথি কে কোলে নিয়ে ওর মতো গোল গোল ঘুরতে ঘুরতে থেমে বললো,

‘এভাবে ওড়না ছাড়া বৃষ্টিতে ভিজে আমার চোখ দুটোতে নেশা ধরিয়ে দিয়েছেস, এখন এর দায়ভার কে নেবে?
আরিশ জুথি কে আস্তে করে নিচে নামিতে, জুথি ওর শরীরের দিক তাকিয়ে হাতটা বুকের উপর রাখে, কিন্তু আরিশের চোখ দুটো জুথির ঘারের দিকে আটকে আছে, হীরার চেইনটার পাশাপাশি পানিগুলো যেন মুক্তোর মত চিকচিক করছে। এটা দেখে আরিশ চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়। তার ভীষণ নেগেটিভ ফিল হচ্ছে। কোনভাবে নিজেকে সামলাতে না পেরে হুট করেই জুথি কে বুকের সাথে চেপে ধরে বললো,

Violent love part 21

‘মৌ তোকে আমার একেবারে নিজের করে চাই, হবি তুই আমার? আমার হরমোন তোর হরমোনে মিক্সরিত করতে দিবি? বিশ্বাস কর জীবনের সবটুকু দিয়ে তোকে আগলে রাখবো। একটা মাছিকেও আল্লাহর রহমতে তোর কাছে ঘিরতে দেব না, ইনশাল্লাহ।
জুথি আরিশের নির্লজ্জ টোটকাটা কথায় আরিশের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে তোতলাতে তোতলাতে বললো,
‘আ,আমি নি,নিচে যাব।
‘কিন্তু আমি তো তোকে যেতে দিব না।
‘দে,দেখুন আপনার কা,কাছে থাকলে আমার কেমন অস্বস্তি হয়, কেমন কেমন জানি লাগে।

Violent love part 23