Violent love part 24
Mariam akter juthi
আরিশ বড়দের ডাকতে বাড়ির কর্তীরা সবাই আসেন, পাশাপাশি প্রায় ১ ঘন্টা আগে সাফওয়ান খান, মাহামুদ খান,ও রাদিফ ৩ জন একসাথেই অফিস থেকে বাসায় ফিরেছে, উনারা ক্লান্তির রেস ধরেই যে যার রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তখন আরিশের ডাকে উনারা দু’জন আসলেও রাদিফ ওর রুমেই থেকে যায়। আরিশ সবাইকে বসার ঘরে আসতে দেখে,টেবিল থেকে পেপারগুলো হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে দেখতে,গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘তোমাদের সবার সাথে আমার গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
আরিশের গম্ভীরতা দেখে সানজিদা খান কপাল কুঁচকে বললেন,
‘কি বলবে বাবা?
আরিশ ওর মায়ের কথায় পেপার গুলো গুছিয়ে রাখতে রাখতে বললো,
‘হ্যাঁ যা বলতে তোমাদের ডাকা।—আরিশ এটুকু বলে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে মাথা চুলকে বললো,
‘আমি বিয়ে করবো।
সাফওয়ান খান, আরিশের কথায় ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘মানে? তুমি কাকে বিয়ে করবে?
আরিশ ওর আব্বুর কথায়, ওনাকে উদ্দেশ্যে করে সানজিদা খানের দিক তাকিয়ে বললো,
‘আম্মু ৭ বছর আগে, মৌয়ের সাথে আমার ইসলামিক শরিয়াত মোতাবেক বিয়ে হয়েছিল। সেই মোতাবেক মৌ আমার বউ, আমার অর্ধাঙ্গিনী। আর আমি চলে যেতে আম্মু মৌকে একটা উইলপেপারে সাইন করায়, ডিভোর্স পেপার বলে। কিন্তু সেটা কোন ডিভোর্স পেপার ছিলনা। জীবন বন্দি ছিল। যেখানে লেখা ছিল, “আমি নিজ ইচ্ছায় জীবনবন্দি দিচ্ছি, সাফওয়ান খান ও সানজিদা খানের একমাত্র ছেলে ‘আরিশান আরিশ খান’ব্যতীত আমি দ্বিতীয় কোন পুরুষকে বিবাহ করিব না” সেখানে আরো অনেক লেখা ছিল, আমি শুধু মূল পয়েন্ট টুকু বললাম। আরিশ এতোটুকু বলে ওর মায়ের দিক তাকিয়ে বললো,
‘আমি জানিনা আম্মু কেন মৌয়ের জীবনবন্দি নিয়ে, সেটা কেন ডিভোর্স পেপার বলেছিল? তাই হয়তো অনেকের মনে এই বিষয় নিয়ে দণ্ড থাকতে পারে। আর যাদের মনে এই সংশয় আছে তাদেরকে বলা, —‘আমি মৌ কে আইনগতভাবে বিয়ে করবো।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আরিশের উক্ত কথায় মোমেনা খান বললেন,
‘কিন্তু আরিশ বাবা,, উনাকে থামিয়ে আরিশ গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘দেখো মামনি আমি কারো থেকে মতামত চাই না, আমার বউকে আমি আইন গতভাবেও নিজের করতে চাই।
আরিশের চেহারায় পরিবর্তন হতে দেখে মাহমুদ খান বিষয়টা সামলে নেওয়ার জন্য বললেন,
‘ঠিক আছে বাবা তুমি যখন চাইছো আমরা ব্যবস্থা করব। তু,
‘আমি সব ব্যবস্থা করেই এসেছি, আজ সবার সামনে, এই মুহূর্তে,আমি মৌ কে বিয়ে করবো।— বলে আরিশ আর কারো কোন কথা না শুনে গলা ছেড়ে জুথিকে ডাকতে,জুথি ফারি গল্প রেখে দুজন দুজনার দিকে তাকিয়ে বললো,
‘এখন আবার ডাকছে কেন?
‘আমি কিভাবে বলবো? তুইও যেখানে আমিও তো সেখানে।
‘আমি যাব না বাবা। মাথা দু’দিক নাড়িয়ে।
‘তুই থাক আমি যাই। তুই বরং এখানে বসে থাক ভাই এসে তোকে কোলে করে নিয়ে যাবে আনে। শয়তানি হেসে,
‘ফারিইই,
‘কি? তুই জানিস না ভাইয়ের স্বভাব? ভাই নিজে ডেকেছে,সেখানে তুই যাবি না। তাহলে তো তোকে কোলে করেই, নিবে তাই না?
ফারির ঠ্যাস মারা কথায় জুথির মুখটা ভেজার করে বললো,
‘দূর *রম্বা, সারাদিন আঠার মত লেগে থাকতে হবে। বলে ফারি, জুথি সিঁড়ি বেয়ে নিচে এসে দেখে শুধু ওরা না ইভা,রোদ পাশাপাশি বাড়ির সবাই পেরায় এক জায়গায়।জুথি সবাইকে এক জায়গায় দেখে এক কিনারে দাঁড়িয়ে বললো,
‘ডেকেছেন কেন?
‘বিয়ে করতে।
‘মানে?
‘কিছু না, এখানে এসে বস। ওর পাসটা দেখিয়ে,গম্ভীর কণ্ঠে।
জুথি কে এক জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আরিশ ধমকে বললো,
‘এখানে বসতে পারলাম না?
জুথি আরিশের ধমক খেয়ে হালকা কেঁপে উঠে মিনমিন করে বললো,
‘বসছি তো, অসভ্য লোক সবসময় শুধু ধমকে কথা বলে,জুথি মনে মনে এসব বলে ভাংচি কেটে আরিশের পাশে বসতে,আরিশ উঠে দাঁড়িয়ে প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে মাঝারি একটা প্যাকেট বের করে সেটা থেকে ছোট একটা বক্স খুলে দুটো ডায়মন্ড রিং বের করে, জুথির হাতটা নিয়ে অনামিকা আঙ্গুলে একটা রিং পরিয়ে পাশাপাশি প্যাকেট থেকে একটা হীরের বালা বের করে ওর হাতে পরিয়ে দিয়ে বললো,
‘নে,এটা তোর পরীক্ষার গিফট, আর এটা আমার আঙ্গুলে পড়িয়ে দে। বলে অন্য রিংটা ওর সামনে ধরে।
জুথি হাতের রিং ও বালা,টা দেখতে দেখতে বললো,
‘পরীক্ষা তো শেষ, এখন গিফট? যাইহোক আপনাকে ধন্যবাদ।
‘হুম এটা পরিয়ে দে,
‘আপনি পড়ে নিলেই তো পারেন?
ওর কথায় আরিশ রাগি,দৃষ্টি নিয়ে তাকাতে, জুথি আরিশের হাত থেকে রিংটা নিয়ে পড়াতে নিলে আরিশ ওর অনামিকা আঙ্গুলটা সামনে ধরতে জুথি টুপ করে পরিয়ে দিল।জুথি রিং টা পরিয়ে দিতে আরিশ একবার সেটা দেখে, পেপারগুলো ওরদিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
‘এগুলোতে সাইন কর।
জুথি আরিশের গম্ভীরতা দেখে ভয়ে ভয়ে বললো,
‘এগুলো কিসের পেপার?
‘সাইন করতে বললাম না তোকে? ধমক দিয়ে।
জুথি আরিশের ধমক খেয়ে মাথা নিচু করে বললো,
‘করছি তো, বলে প্রথমের একটা পেপারে সাইন করে আরিশের সামনে দিতে আরিশ বললো,
‘তোকে একটায় সাইন করতে বলছি? সবগুলোতে সাইন কর। আবারো ধমকে।
জুথি আরিশের পরপর ধমক খেয়ে, সবগুলো পেপারে সাইন করে,আরিশের কাছে দিতে আরিশ পেপার গুলো নিয়ে সেগুলোতে সাইন করতে করতে বললো,
‘বয়স কত তোর?
জুথি আরিশের এমন প্রশ্নে মনে মনে বিরক্তি নিয়ে বললো,
‘আপনি জানেন না?
‘তোর থেকে জানতে চাইছি। সই শেষ করে ওর দিকে করা দৃষ্টিতে তাকাতে দেখে জুথি ঢোগ গিলে একবার সবার দিক আড় চোখে তাকিয়ে বললো,
‘এভাবে তাকানোর কি আছে? বলছি তো।
‘হুম,
‘১৬ শেষ হয়ে ১৭ বছর চলছে।
‘ও, তুই তো SSC পরিক্ষা দিয়েছিস, তাহলে বল তো, মেয়েদের কিংবা ছেলেদের বিয়েতে কি বলতে হয়?
জুথি একবার সবার দিক তাকাচ্ছে তো, একবার আরিশের দিকে তাকাচ্ছে,ওর মাথায় আসছে না? আরিশ ভাই সব কিছু জেনে শুনে ওর কাছে জিজ্ঞেস করছে কেন?ও কিছু বলতেও পারছে না, থাপ্পড় খাওয়ার ভয়ে,এসব ভেবে বিরক্তি নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
‘এটা কে না জানে? উভয় পক্ষকেই কবুল বলতে হয়।
‘কি বললি? বুঝলাম না।
‘কবুল বলতে হয়।
‘জোরে বল, ভ্রু কুঁচকে।
‘আরে বাবা কবুল, কবুল বলতে হয়।
‘আলহামদুলিল্লাহ। তুই তো বিয়ে সম্পর্কে ভালোই জানিস। যে উভয়পক্ষকে কবুল কবুল কবুল, তিনবার বলতে হয়।—এতোটুকু বলে আরিশ পেপারগুলো গুছিয়ে ফাইলে রাখতে রাখতে বললো,
‘মৌ,তোর কাজ শেষ, তুই তোর রুমে যা। বলে ফারির দিকে তাকিয়ে বললো, —‘ফারি ওকে নিয়ে যা।
আরিশের কথাটা বলতে মিনিট শেষ হওয়ার আগেই, জুথি হাফ ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ফারিকে নিয়ে উপরে চলে গেল।ওরা যেতে আরিশ সবার দিক তাকিয়ে বললো,
‘ব্যাস ,আবারো তিন কবুল পাশাপাশি আইনিভাবে মৌ আমার হয়ে গেল, এখন আশা করি কারো মনে কোন দণ্ড নেই। মৌ,কে নিয়ে? আর হ্যাঁ আজ থেকে মৌ আমার সাথে আমার রুমে থাকবে। বলে ওঠতে নিলে মেহজাবিন খান ভ্রু কুঁচকে বললেন,
‘ওকে বিয়ের বিষয়টা বললে না কেন?
‘এই মুহূর্তে ঝামেলা চাই না তাই। বলে সিঁড়ি পর্যন্ত যেতে সানজিদা খান বললেন।
‘তোমার কথা বুঝলাম না?
আরিশ যেতে নিয়েও মায়ের কথায় দাড়িয়ে বললো,
‘থাক না কিছু বিষয় আমার আর মৌয়ের মধ্যে? তোমাদের কাছে তো বিয়েটা কিলিয়ার করেই দিলাম? বলে আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে ওর রুমে চলে যায়।
এতক্ষণ যা হচ্ছিল সবাই চুপচাপ দেখছিল, কারণ কেউ কিছু বললেও আরিশ যা করতে চাইছিল,সেটা এমনেও করতো আর না বললেও করতো। আরিশ চলে যেতে সাফওয়ান খান নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,
‘ও যেটা নিয়ে ভালো থাকছে থাকুক। শুধু ও স্বাভাবিক থাকলেই শান্তি। কারণ আজ হোক কাল হোক জুথির সাথে ওর বিয়ে টা দিতেই হতো।
ওনার কথায় মাহামুদ খান বললেন,
‘কিন্তু বড় ভাই, কোন অনুষ্ঠান ছাড়াই,, ওনাকে শেষ করতে না দিয়ে সাফওয়ান খান বললেন,
‘ও যেটা নিয়ে থাকতে চাইছে থাকুক। আর ভবিষ্যতে যদি ও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু করতে চায় তখন না, হয় করা যাবে।বলে একবার মাহামুদ খানের দিক তাকিয়ে ঘাড়ে হাত রেখে রুমের দিকে চলে যান। সাফওয়ান খান চলে যেতে সবাই যে যার মতো রুমে চলে যায়। কারণ যেখানে ওনারা মেনে নিয়েছেন সেখানে মহিলা কি বলবে? তাছাড়া খান বাড়ির একটা রেওয়াজ আছে, ছেলে মেয়েদের ইচ্ছা কে মর্যদা দেওয়া হয়, নিজেদের ইচ্ছা কারো উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয় না। সাফওয়ান খান আরিশের সাথে জুথি কে সেই ৭ বছর আগেই মেনে নিত, যদি আরিশ ওভাবে বেপরোয়া হয়ে না উঠতো।
“আরিশ তখন রুমে এসে ফ্রেশ, হয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতে ওর ফোনটা বেজে ওঠে। ফোনটা হাতে নিতে দেখে হোয়াটসঅ্যাপ কল এসেছে। সেখানে একটা নাম ঝলঝল করে ভেসে উঠছে,ছোটু। ছোটু নামটা দেখে আরিশ কেলান্ত শরীর নিয়ে উঠে বসে ফোনটা রিসিভ করে মুচকি হেসে বললো,
‘আসসালামুয়ালাইকুম,ছোটু।
‘অলাইকুম আসসালাম। হাউ আর ইউ বাইয়া?
‘আমি ভালো আছি, তুই কেমন আছিস?
‘আই এম ফাইন, বাই।
আরিশ লুসিয়ান কে বারবার ভাইয়ের জায়গায় বাইয়া বলতে দেখে নাক মুখ কুঁচকে বললো,
‘ওই তোরে না বলছি বাংলা না, শিইক্ষা আমার সাথে বাংলা বলবি না?
‘অড়ে আমি বাংলা তো ষিখিলাম,
‘অড়ে না, আরে হবে শব্দটা, আর ষিখিলাম না শিখলাম।
‘এইতো হইলে।
‘আবার ভুল শব্দ বল? বিরক্ত হয়ে।
‘বাইয়া,, তুমি
‘আবার, শব্দটা ভাইয়া হবে।
‘সরি ভাইয়া,
‘এবার ঠিক আছে, ভাবছি তোকে খাঁটি বাঙালি একটা মেয়ের সাথে বিয়ে দেব তারপর যদি তুই ইংলিশ ছেড়ে বাংলা ভাষা শিখতে পারিস।
‘নো ভাই আমি বাঙালি মেয়ে বিয়ে করব না। ওরা অনেক মটু হয়, দ্যাখতেও তমন সন্দর না। আর বউ যদি দেখতে সন্দর না হয়? মটু হয় তহলে বউকে কোলে নিয়ে ঘুরবো কিভাবে?
লুসিয়ানের ডিজিটাল বাংলা শুনে আরিশ চোখ দুটো ছোট ছোট করে বললো,
‘তোর উক্তি শুনে আমারই সন্দেহ হচ্ছে? আমি বাঙালি মেয়ে বিয়ে করে ভুল করলাম কিনা?
আরিশের কথায় লুসিয়ান কেবলা মার্কা হাসি দিয়ে বললো,
‘যখানে আরিশ খান, সেখানেই বাজিমাত। সে কিনা perfect লাইফ পার্টনার পাবে না?
‘হুম,
Violent love part 23
‘হোনো ভাই তমার লগে এই সাত বছরে অনক কথা কইছি, এখন অমার মায়ের মত বাবিরে দেহাও দেহি।
আরিশ লুসিয়ানের কথায় শ্বাস ছেড়ে বললো,
‘ওয়েট কর, আমি ডাকছি। বলে জুথি কে ডাকতে, দু মিনিট পরে,জুথি বিরক্তি হয়ে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে আরিশের রুমে এসে কপাল কুঁচকে বললো,
‘সারাদিন মৌ,মৌ,কি হ্যাঁ? একটু পরপর মৌ,। ভ্যাং করে।
জুথি কে এভাবে কথা বলতে দেখে আরিশ ফোনটা বিছানার উপর রেখে ওর দিকে এগোতে এগোতে শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,,