Violent love part 26
Mariam akter juthi
“আজ তিন দিন হয় হসপিটাল থেকে বাড়িতে ফিরেছেন জিয়ানলুইজি গ্যান্টানার’ এই তিন দিনে হসপিটাল থেকে ডক্টর ওনাকে ছাড়েননি,উনি কমা থেকে মাত্র ফিরেছেন বলে। ওনার এই এক্সিডেন্টের কথা ইতিমধ্য পুলিশ এই বিষয়ে পুরোটাই তদন্ত করে ফেলেছেন। উনি হসপিটাল থাকাকালীন আরিশ রাগ দেখিয়ে চলে যেতে কিছু লোক ঠিক করেছিলেন, আরিশ কোথায় থাকে ইভেন্ট তার সব ইনফরমেশন জোগাড় করে দিতে। উনি বাড়ি ফিরতে আরিশের সব ইনফরমেশন পেয়ে, লুসিয়ানকে নিয়ে ওর ফ্লাটে যায়। তবে উনি যেয়ে নিরাশ হন,আরিশ তখন বাসায় ছিল না। পরপর এমন দুদিন যেতে আরিশের সাথে ওনার দেখা মিলে। আরিশ উনাদের দেখে ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘কি চাই আপনাদের?
‘তোমাকে। সোজা সাপটা উত্তর দিলেন জিয়ানলুইজি গ্যান্টানার’
‘আচ্ছা আপনাদের কি, একটা কথা বললে বোঝেন না? হালকা চেঁচিয়ে।
আরিশ কে চেঁচাতে দেখে লুসিয়ান ইংলিশ বাক্যে বললো,
‘সে তুমি যাই বলো দাদা ভাই তোমাকে আমরা নিয়ে যেতে এসেছি।
আরিশ কিছু বলবে তার আগে জিয়ানলুইজি গ্যান্টানার’ মুখখানা ছোট করে বললেন,
‘দেখো বাবা, আমি আজ দু’দিন ধরে এখানে আছি তোমার জন্য, আজকে আমি তোমাকে সাথে না নিয়ে এক পা এই জায়গা থেকে নড়ব না।
ওরার কথায় লুসিয়ান শায় জানিয়ে ইংলিশ বাক্যে বললো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘তুমি ঠিক বলেছ বাবা, দাদাভাই কে না নিয়ে আমি ও এক পাও যাব না।
আরিশের ভীষণ রাগ হচ্ছে নিজের উপর উনাদের কথায়, কি করবে ভেবে না পেয়ে, নিজেকে কন্ট্রোল করে দুহাতে মাথা চেপে বললো,
‘আপনারা কিন্তু এইবার বাড়াবাড়ি করছেন, আমার ধৈর্যের পরী,,— ওর কথা শেষ করতে না দিয়ে উনি বললেন,
‘তোমাকে আমি দত্তক নিব।
ওনার কথা শুনে আরিশ আশ্চর্যের সীমা পৌঁছে বললো,
‘হোয়াট?
আরিশ কে অবাক হতে দেখে লুসিয়ান এগিয়ে গিয়ে ইংলিশ বাক্যে বললো,
‘হ্যাঁ দাদা ভাই তুমি আমার ভাই হয়ে যাও, আমার বাবা-মা তোমাকে ভীষণ ভালবাসবে, আমার মত। দরকার হয় আমার চেয়ে তোমায় বেশি ভালবাসবে।
‘তুমি আমার বড় ছেলে আরিশ, আর ও আমার ছোট ছেলে লুসিয়ান।
আরিশ এদের অতিরিক্ত পাগলামি করতে দেখে বোঝানোর জন্য বললো,
‘দেখুন আমার মা-বাবা, আমার একটা পরিবার আছে, সেখানে আপনি আমাকে দত্ত,, —
‘আমি তো বলিনি? তুমি তোমার ফ্যামিলির কাছে যেতে পারবে না? তোমার যখন ইচ্ছে তুমি যাবে, কিন্তু তুমি এখানে যতদিন থাকবে আমার ছেলে হয়ে আমার বাসায় থাকবে, ব্যাস। – বলে সোফায় বসে পড়লেন।
আরিশ এদের ভাবসাব দেখে বুঝতে পারে, এরা ওকে না নিয়ে, এক পা জায়গাও নড়বে না, তাই অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নেয় আরিশ ওদের সাথে যাবে, আরিশ মেনে নিয়েছে দেখে ওনারা দুজন আরিশ কে জড়িয়ে ধরে কি করবে বুঝতে পারছিলেন না।
আরিশ ওদের বাড়ি, ‘দা গ্যান্টানার এস্টেট’ এসেছে আজ দু মাস শেষ হতে চলল। এই দু মাসে আরিশ এই তি’নজনকে নতুন ভাবে চিনেছে, একটা বাহিরের মানুষ কে কিভাবে আপন করতে হয় এদের কে দেখেছে। আপন ছেলে না হয়েও যে মানুষের থেকে এমন ভালোবাসা পাওয়া যায়, এদেরকে না দেখলে বোঝা যেত না। কে বলবে এদের এতো টাকা জায়গা বাড়ি গাড়ি, তারপরও কিভাবে ওকে আপন করে নিল? তবে আরিশ এখানে থাকছে ঠিকই কিন্তু আজ অব্দি উনাদের সাথে একজাস্ট করতে পারিনি। হয়তো ওর গম্ভীরতার কারণে, ও এই বাড়িতে থাকলেও ওর সব যাবতীয় খরচ ও নিজেই করতো। এতে ওনারা
আরিশ কে জোর করতে পারতেন না।
আরিশ চলে যেতে পারে সেই জন্য। ওনারা আরিশের সাথে বাড়তি কথা বলতে পারতেন না,আরিশের স্বভাবের জন্য। কারণ ওর এক কথার উপর উনারা দু কথা বললেই ও চেঁচামেচি করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইত, আর ওনার অনেক কষ্টে ওকে মানিয়ে রাখত। তবুও ওনাদের আরিশ কে চাই।
দিন যাচ্ছে রাত কাটছে, হঠাৎ একদিন আরিশ মিনি বাইক এক্সিডেন্ট করে, যদিও আঘাত তেমন পাইনি, হাত একটু কেটে গিয়েছে পাশাপাশি পা ছিলে গেছে। আরিশের এক্সিডেন্টের কথা উনাদের কানে যেতে সবাই কেমন অস্থির হয়ে পাগল ভেসে ছুটে এসেছিলেন,আরিশ কে হারানোর ভয়ে। ততক্ষণে আরিশ নিজেই হসপিটালে গিয়ে হাত কাটা জায়গায় সেলাই ও পায়ে ব্যান্ডেজ করিয়ে নেয়। ডক্টর ওষুধ লিখে দিতে ততক্ষণে ওনারা হসপিটালে এসে অস্থির হয়ে আরিশকে দেখতে দেখতে ইন্দ্রিয় ত্যাইনিন’ কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন,
‘আমার সোনা বাবা, আমার হীরা তুমি ঠিক আছো?আল্লাহ তোমার দরবারে শুকরিয়া।
আরিশ কে বাড়ি নিয়ে এসে ইন্দ্রিয়া ত্যাইনিন’ ওকে খাইয়ে দেওয়া যত্ন করা সব সময় মায়ের মতো পাশে থাকা, পাশাপাশি জিয়ানলুইজির গ্যান্টানার’ ওর প্রতি ধীরতা দেখে সেদিন আরিশ সত্যি ই অবাক হয়েছিল, মানুষ কিভাবে এতটা নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসতে পারে? কঠিন মনোভাবের আরিশ ও সেদিন উনাদের প্রতি দুর্বল হয়েছিল, ওনাদের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেছিল। সেদিন প্রথম বারের মত জিয়ানলুইজি গ্যান্টানার’ কে বাবাই বলে ডাক দিয়েছিল। যেটা শুনে উনি চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আরিশকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
‘কি বললে বাবা? আবার বল!
‘বাবাই, তুমি আমার বাবাই! — বলে ইন্দ্রিয়া ত্যাইনিন’ এর দিক তাকিয়ে বললো,
‘তুমি আমার মামনি।
আরিশের মাত্র দুটো ডাকে উনাদের মুখের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা যাচ্ছিল, ওনারা আকাশসমান খুশি হয়েছিল, উনাদের এত খুশি হতে দেখে আরিশ মনে মনে হেসে বললো —‘জন্ম না দিলেও যে মা-বাবা হওয়া যায়, এটা তোমারা প্রমাণ করে দিলে। ওর এসব ভাবার মধ্যে লুসিয়ান গাল বাঁকিয়ে মেয়েদের মত বললো,
‘হোয়েন দেয়ার বাবাই এন্ড মামনি, হু এম আই দাদাভাই?
~অর্থ:ওরা বাবাই মামনি হলে আমি কে দাদা ভাই?
‘তুই তো আমার ছোটু, আমার ছোট ভাই। আরিশ এটা বলতে লুসিয়ান ও নাদের মত আরিশকে জড়িয়ে ধরে বললো,
‘ইয়েস, উই আর ওয়ান হ্যাপি ফ্যামিলি।
~অর্থ: হ্যাঁ আমরা একটা হ্যাপি ফ্যামিলি।
সেই থেকেই উনাদের সাথে আরিশের পথ চলা শুরু হয়। আর সেই থেকেই কেটে গেল সাত সাতটা বছর।
“বর্তমান”
আরিশ তার মৌ কে সবটা খুলে বললো,কিভাবে তাদের সাথে ওর সম্পর্কটা একতা মজবুত এতটা ভালোবাসা হল। আর নয়তো কারো কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নিজের ছেলের সাথে অন্য কারো জন্য ভাগ করে সমান সমান? হ্যাঁ জিয়ানলুইজি গ্যান্টানার’ লুসিয়ান আর আরিশের নামে ওনার সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন। যদিও আরিশ এই বিষয়টা শুনে অনেক রিয়েক্ট করেছিল, সে কিছুতেই উনার থেকে কিছু নিতে রাজি নয়। তাছাড়া এত টাকা দিয়ে কি হবে? ওর নিজের টাকা, ওর নামে রাখা ওর বাবার টাকা। এখন আবার ওনাদের এত সম্পত্তির অর্ধেক? সবকিছুই কেমন যেন ছন্নছাড়া। আরিশ সম্পত্তির বিষয়টা এড়িয়ে যাচ্ছে দেখে জিয়ানলুইজি গ্যান্টানার’ আপাতত সবটা নিজেই ম্যানেজ করছে। যদি উনি জানতেন আরিশ এটা শোনার পর এমন ভাবেই রিয়াক্ট করবে। তবুও ওনার সমান সমান দিতে চাই। এতে বেশি লুসিয়ানেরই মত ছিল।
আরিশ কে সবটা বলে থেমে যেতে দেখে জুথি মিনমিন কণ্ঠে বললো,
‘ইস আপনার মত আমাকেও যদি এমন কেউ ভালোবাসতো।
আরিশ জুথির কথায় ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘তোকে এর থেকেও কেউ মারাত্মক ভাবে ভালোবাসে।
জুথি আরিশের কথায় তেমন পাত্তা না দিয়ে পেটে দুহাত ধারা চেপে ধরে বললো,
‘ভীষণ খিদে পেয়েছে, সবাই হয়তো খেয়েও নিয়েছে। আমি এখন যাই?
‘ওকে দুজনার খাবার রুমে নিয়ে আয়।
‘মানে? দুজনার খাবার আনতে যাব কেন?
আরিশ জুথির কথা শুনে বাঁকা হেসে ওর দিক এগোতে নিলে জুথি লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে বললো,
‘বুঝতে পেরেছি বুঝতে পেরেছি, আপনার জন্য আনতে বলছেন, চিন্তা করবেন না আমি আপনার জন্য নিয়ে আসছি দরকার হলে আপনাকে খাইয়েও দিব। বলে আর না দিয়ে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
জুথি যেভাবে রুম থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলো, ঠিক একইভাবে খাবার প্লেট হাতে নিয়ে রুমে ঢুকে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,
‘এই যে খাবার নিয়ে এসেছি।
‘খাইয়ে দে।
‘পারবো না, নিজেরটা নিজে খান।
‘দিবি না? আরিশ কে কেমন ভাবে ওর দিকে এগোতে দেখে বোকা হেসে বললো,
‘দেবো তো, বলে টেবিলের উপর খাবারটা রেখে ইচ্ছা না থাকা সত্বেও আরিশ কে খাইয়ে দেয় নিজেও খেয়ে নেয়।
খাবার শেষ হলে জুথি প্লেট ঘুচিয়ে রাখতে যেতে নিলে, আরিশ জুথির পেট বা হাতে পেঁচিয়ে উরুর উপর বসিয়ে ঘাড়ে মুখ গুজে বললো,
‘মৌ আজকের রাতটা আমায় দিবি প্লিজ?
বিশ্বাস কর তোকে একটুও ব্যথা দিব না। নিজেকে দাঁতে দাঁত চিপে কন্ট্রোল করব। শুধু আজকের রাতটা তোকে বুকের মধ্যে নিয়ে ঘুমাতে চাই। ঠিক যেমন লতা গাছকে প্যাঁচায় নিজেকে বাঁচাতে, ঠিক তেমনি আমিও তোকে বুকে নিয়ে মানসিক শান্তিটুকু পেতে চাই।
জুথি আরিশের এমন কাজে আরিশ কে ঠেলে সরাতে চেয়ে বললো,
‘ছা,ছাড়ুন আমাকে। এগুলো রাখতে হবে।
‘প্রয়োজন নেই, আমার কাছে থাকো।
আরিশের এমন গা কাপানো কথায় শুধু শোনা গেল জুথির ঘন ঘন ফেলা নিঃশ্বাস,জুথির শরীর ক্রমশে কাঁপছে দেখে আরিশ জুথি কে ছেড়ে দিয়ে রাগ বিরক্তি দুইটা মিলিয়ে বললো,
‘আমার সামনে একদম কাঁপাকাঁপি করবি না, বিরক্ত লাগে এতে আমার। বলে বিছানার উপর বসে গায়ের শার্ট খুলতে খুলতে বললো,
‘গিয়ে প্লেট গুলো রেখে সোজা রুমে আসবি।
জুথি কে এক জায়গায় নিচের দিক তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘কথা কানে যায়নি?
জুথি আরিশের কথায় প্লেটগুলো নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে রাদিফের রুমের সামনে পর্যন্ত আসতে রাদিফ ও রুম থেকে বেরোচ্ছিল, তখন জুথি কে প্লেটে হাতে যেতে দেখে জুথির হাতটা ধরে বললো,
‘কোথায় থাকো তুমি? দু’দিন ধরে তোমার কোন দেখাই মিলে না।
জুথি রাদিফের ধরে রাখা হাতটা ছাড়াতে চেয়ে বললো,
‘আমি তো বাড়িতেই ছিলাম,
‘আমি ত,, রাদিফের সম্পূর্ণ কথা শেষ হওয়ার আগে ফারিও নিচ থেকে মাত্র এসেছিল রুমে যাবে বলে। মাঝপথে রাদিফ জুথি কে হাত ধরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে একটু জোরেই বললো,
‘রাদিফ ভাই তুমি ওর হাত ধরেছ কেন?
‘তোকে বলতে হবে?
জুথি আরিশের রুমের দিক তাকিয়ে ভয়াত কন্ঠে বললো,
Violent love part 25
‘আমার হাত ছাড়ো রাদিফ ভাই,
‘তোমার সাথে আমার কথা আছে,
“রুমের বাইরে ওদের কথার শব্দ পেয়ে আরিশ ভ্রু কুঁচকে রুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখে রাদিফ জুথির হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে, এটা দেখে আরিশ হাত দুটো মুচিবদ্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে জুথির দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বললো,