Violent love part 27
Mariam akter juthi
জুথি এটা দেখে মাথা চুলকে কিছুক্ষণ দেখলো, অতঃপর মুচকি হেসে চট করে বললো,,
‘আয়ান ভাই তুমি যেটা চাচ্ছ সেটাই হবে।
জুথির কথায় আয়ান তানিশার দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে না বোঝার মত ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘কি বললি বনু?
‘তোমাকে আলাদাভাবে বলবো! বলে আড় চোখে একবার তানিশার দিক তাকিয়ে।
আয়ান জুথির ভাব সাব দেখে,জুথি কি বলবে মুহুর্তেই বুঝে যায়, অতঃপর ফিক করে হেসে দিয়ে বললো,
‘তোর বুঝতে টু-লেট হয়ে গেছ বনু। সে আগেই খান বাড়ির বউ হিসেবে সিলেক্ট হয়ে গেছে। বলে শার্টের হাতা ব্লাড করতে করতে তানিশার গা ঘিশে বসলো ওর পাশে। আয়ান তানিশার পাশে বসতে তানিশা উঠে অন্য পাশে বসতে নিলে আয়ান ওর হাতটা চেপে ধরে পাশে বসিয়ে চাপা কন্ঠে বললো,
‘সমস্যা কি? ভালো লাগছে না?
‘দেখুন আপনি,
‘সেদিন তো তোমাকে বললাম? যা দেখার একবারই দেখব, এতে যদি তোমার তর না সয়, তাহলে চলো তোমাকে প্রাইভেসি দি।
‘আপনি,, — তানিশার কথা সম্পূর্ণ করতে না দিয়ে, জুথি মাথা চুলকে জোরে নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
‘আয়ান ভাই আমি তোমার কথা বুঝতে পারিনি।
ওদের কথায় মধ্যে মধ্যে আরিশ সিঁড়ি বেয়ে নিচে এসে খাবার টেবিলের দিকে যেতে যেতে বললো,
‘ওসব তোর মোটা মাথায় ঢুকবে না, তুই বরং আমাকে খেতে দে।
জুথি আরিশের কথায় ভেংচি কেটে বললো,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
‘এহ, আসছে খেতে দে! কেন ওখানে কি বড় আম্মু, মেঝো মা, মা নেই? যে আমাকে খাবার দিতে হবে?
জুথির কথায় আয়ান একবার আরিশের দিক আড় চোখে তাকিয়ে মাথা চুলকে গলার ভিতর কথা আটকে বললো,
‘সকাল সকাল মার খেতে না চাইলে, ভাই যেটা খেতে চায় খাবারটা দিয়ে আয়।
জুথি আয়ানের কথায় মুখ ফুলিয়ে উঠে দাঁড়ালো, আরিশ কে খাবার দেওয়ার জন্য। জুথি টেবিল পর্যন্ত যেতে যেতে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে মনে মনে বললো, —‘এই ব্যাটা শুধু সব সময় মৌ, মৌ করবে, যেখানে যাই মৌ কে লাগবে, অসহ্য একটা। বলে টেবিলে প্লেট রেখে তাতে সুন্দর সকালের ব্রেকফাস্ট সাজিয়ে দিয়ে বললো,
‘খাবার, নিচের দিক তাকিয়ে।
আরিশ প্লেটটা ওর কাছে নিয়ে পরোটা ছিঁড়তে ছিঁড়তে বললো,
‘কাছে আয়!
‘,,,,,,,,,,,,,,।
জুথি কে চুপচাপ ঠায় জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আরিশ ওর দিক তাকিয়ে বললো,
‘কি বললাম শুনতে পাসনি?
জুথি ছোট ছোট পায়ে আরিশের পাশে একটা চেয়ারে বসতে নিলে আরিশ ওকে কাছে টেনে উরুর উপর বসিয়ে পরোটার টুকরো মুখের সামনে ধরে বললো,
‘হা কর!
আরিশ জুথির মুখে খাবার তুলে দিতে, জুথি ছলছল নয়নে তাকিয়ে ছোট করে হা করতে আরিশ খাবারটা ওর মুখে পুরে দেয়। জুথি খাবারটা মুখে নিতে চোখের পানি ছেড়ে, আরিশের গলা জড়িয়ে হাউমাউ কান্না করে বললো,
‘কেন এত মায়া বাড়াচ্ছেন? আবারো দূরে চলে যেতে?
আরিশ জুথি কে হঠাৎ এভাবে হাউমাউ কান্না করতে দেখে, আশপাশটা একবার তাকালো। জুথির হঠাৎ এমন কান্নায় আয়ান তানিশা সহ সবাই অবাক হয়ে ওর দিক তাকাতে, আরিশ খাবারটা ওভাবেই টেবিলের উপর রেখে, জুথি কে কোলে নিয়ে ওর রুমে যেতে যেতে সানজিদা খান কে বললো,
‘আম্মু কষ্ট করে খাবারটা রুমে পাঠাও। – বলে উঠে আসলো, তখনো জুথি একি রকম আরিশের গলা জড়িয়ে কান্না করছে।
আরিশ জুথি কে কোলে নিয়ে রুমে যাওয়ার সময় রাদিফ ও রুম থেকে বেরহচ্ছিল, তখন জুথি কে আরিশের গলা জড়িয়ে থাকতে দেখে, ভ্রু কুঁচকে তাকায়। হঠাৎ তার মনে হলো,তার বুকের বা পাঁশটায় ভীষণ ব্যথা হচ্ছে,রাদিফ তখনই ডান হাতটা বুকের বা পাশে চেপে রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে, ঘনঘন নিঃশ্বাস নিতে লাগলো। তার এমনটা মনে হচ্ছে তার রুহুটা বের হয়ে যাচ্ছে। তার এই মুহূর্তে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কেমন দম আটকে আটকে আসছে। রাদিফ এভাবে শ্বাস নেওয়ার মধ্যে, বন্ধ চোখ দুটো থেকেই টপ টপ দু ফোটা পানি গড়িয়ে মেঝেতে পড়লো। পানি জাতীয় কিছু অনুভব করতে, রাদিফ চোখ দুটো খুলে ডান হাত দিয়ে মুখে হাত দিতে দেখল সত্যিই এটা পানি, সে কখনো কান্না করেছে কিনা তার জানা নেই! রাদিফের গলা আটকে আসছে, ঢোগ গিলতেও কেমন কষ্ট হচ্ছে। রাদিফ আর নিতে পারল না, আর না পারলো দাঁড়িয়ে থাকতে, টপ করে দরজার সামনে বসে টপটপ করে চোখের জল ফেলতে লাগলো, রোদ ও তখন রুম বের হয় নিচে যাওয়ার জন্য, তখন রাদিফ কে এভাবে দেখে, ছুটে এসে রাদিফের বাহুতে হাত রেখে বললো,
‘কি হয়েছে আপনার? আপনি কাঁদছেন কেন? আর এভাবে বা দরজার সামনে বসে আছেন কেন?
‘,,,,,,,,,,,,,,,,,।
রোদ রাদিফের চোখের জল মুছে দিতে দিতে অস্থির কন্ঠে বললো,
‘আরে বাবা বলবেন তো এভাবে কাঁদছেন কেন? আমি কি মেঝো মাকে ডাকবো?
রাদিফ হুঁশ হারালো, কান্নার তোপে রোদ কে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে বললো,
‘ভালোবাসা এত ভয়ঙ্কর কেন? আমি সহ্য করতে পারছি না।
রাদিফ রোদকে জড়িয়ে ধরায় রোদ হাসফাস করে ওকে ছাড়াতে চেয়ে বললো,
‘কি করছেন ছাড়েন ভাই। আপনি ঠিক নেই, আপনাকে দেখে কেমন লাগছে।
রাদিফ রোদ কে ওভাবে জড়িয়ে ধরেই চোখ দুটো বন্ধ অবস্থায় বললো,
‘হ্যাঁ হ্যাঁ আমি ঠিক নেই, কষ্ট হচ্ছে আমার। বুকে ব্যথা হচ্ছে, মনে হচ্ছে যখন তখন হার্ট ব্রেক করতে পারে।
রোদ রাদিফের কথার আগা মাথা না পেয়ে, ওকে জোর করে ওর থেকে ছাড়াতে চেয়ে, রাদিফের বুক বরাবর হাত দুটো দিয়ে ঠেললো, তবে রাদিফ ওর উপর পুরো ভর করায় রোদ ওকে ওর থেকে সরাতে পারল না। রোদ এমন অবস্থায় কি করবে বুঝতে না পেরে হাসফাঁস করে বললো,
‘আপনি যেভাবে ধরে রেখেছেন, আমার তো শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
‘থাক না এভাবে একটু থাক,
‘কিন্ত,,, — ওর সম্পূর্ণ কথা শেষ হওয়ার আগে ফারিও নিচ থেকে উপরে আসছিল, উপরে এসে এমন দৃশ্য দেখে হা করে তাকালো, কথায় আছে না যেখানে কান ফাঁস সেখানেই সর্বনাশ! রোদের ও তাই হলো। ফারি একটু জোরেই চিৎকার করে বললো,
‘কি হয়েছে রাদিফ ভাইয়ের? ভাই এভাবে দরজার সামনে বসে আছে কেন?
রোদ কি বলবে কিছুই ভেবে পাচ্ছেনা, ততক্ষণে ফারির গলার আওয়াজ পেয়ে, সানজিদা খান,সহ আয়ান তানিশা লিমা খান ছুটে উপরে আসেন। লিমা খান ওপরে এসে এমন দৃশ্য দেখে দৌড়ে গিয়ে রোদের থেকে রাদিফ কে জোর করে ছাড়িয়ে উনার বুকে নিয়ে বললেন,
‘আমার বাবা, আমার সোনা এভাবে কাদছো কেন তুমি? এভাবে মেঝেতে বসে আছো কেন? অস্থির হয়ে।
রোদ রাদিফের থেকে ছাড়া পেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলল, এতক্ষণ ওর মনে হচ্ছিল দম আটকে আসার পালা, যেভাবে ওকে জড়িয়ে রেখেছিল। ততক্ষণে রোদের মা মেহজাবিন খান ওর কাছে এসে ওকে ঘুরিয়ে ঠাস করে থাপ্পর দিয়ে বললেন,
‘ঠাসস, —‘কি হয়েছিল এখানে? ও বা তোকে এভাবে জড়িয়ে রেখেছিল কেন?
রোদ থাপ্পড় খেয়ে মাথা নিচু করে চোখের জল ফেলতে, সানজিদা খান এসে মেহজাবিন খানের থেকে রোদকে সরিয়ে করা কন্ঠে বললেন,
‘কি শুরু করেছে তোমরা? শরীরে হাত দেওয়ার একটা রেওয়াজ তুলছে দেখছি?
বড়ো’জা সানজিদা খানের কথায় মাথা নিচু করে মেহজাবিন খান বললেন,
‘বড় ভাবি, আমি এভাবে বলতে চাইনি। কিন্তু ও তো এখন বড় হয়েছে? আর রাদিফ সে একজন প্রাপ্তবয়স্ক যুবক। দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়ে এভাবে জড়িয়ে থাকা সেটা ভাল দেখায় না।
সানজিদা খান, ওনার কথায় যুক্তি পেয়ে চুপ হয়ে যান, তবে গায়ে হাত তোলা বিষয়টা উনার মোটেও পছন্দ না। তাই ওভাবে বললেন,
‘সেটা মুখে বলা যায়, গায়ে হাত দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
‘,,,,,,,,,,।
উনাকে চুপ থাকতে দেখে সানজিদা খান রোদ কে ওনার কাছে টেনে বললেন,
‘এখানে কি হয়েছিল রোদ আম্মু?
‘আসলে বড় আম্মু বিষয়টা আমিও জানি না, আমি যখন রুম থেকে বের হচ্ছিলাম তখন দেখি উনি এভাবে দরজার সামনে বসে কান্না করছেন তাই ওনাকে জিজ্ঞেস করতে উনি এভাবে জড়িয়ে,, — রোদ কে শেষ করতে না দিয়ে সানজিদা খান বললেন,
‘আচ্ছা ঠিক আছে,বুঝতে পেরেছি। তুমি এখন যাও। বলে উনি রাদিফের কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
‘কি হয়েছে তোমার বাবা? আমাদের বলো!
Violent love part 26 (2)
রাদিফ তৎক্ষণে দরজার সামনে থেকে উঠে হাতমোট করে চোখের পানি মুছে, -‘কিছু হয়নি বলে, রুমের ভিতর ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দিতে লিমা খান আহাজারি কন্ঠে বললেন,
‘বাবা দরজাটা খোলো! মাকে বলো, মা শুনবে তো তোমার কথা।
ততক্ষণে ভিতর থেকে রাদিফের কন্ঠে শোনা গেল,
‘তোমরা যাও!