Violent love part 28

Violent love part 28
Mariam akter juthi

“আরিশ জুথি কে রুমে নিয়ে আসতে,জুথি তখনো আরিশের গলা জড়িয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। আরিশ জুথি কে এখনো ফুপিয়ে কাঁদতে দেখে এক টানে ওর গলা ছাড়িয়ে সামনে এনে ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘সমস্যা কি, কাঁদছিস কেন?
‘,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,।
‘চুপ করে থাকাটা আমার মোটেও পছন্দ না মৌ।-হালকা চেঁচিয়ে।
জুথি আরিশ কে চেচাতে দেখে ওর বুকে মাথা গুঁজে মুখ লুকালো, জুথির এমন কাজে আরিশ ওর বুক থেকে ওকে টেনে বিছানায় ফেলে, দুই হাত বিছানার উপর রেখে তার মধ্যে জুথিকে আবদ্ধ করে বললো,
‘ন্যাকামি *মারাও? তোর ন্যাকামি দেখতে নিয়ে আসছি?
জুথি আরিশের দুহাতে বিছানার উপর আবদ্ধ থাকা অবস্থায় নড়াচড়া করার চেষ্টা করে মিনমিন কণ্ঠে বললো,
‘ভালোবাসেন আমায়?

জুথির এমন প্রশ্নে আরিশ রাগী নিঃশ্বাস ফেলে,বিরক্ত হয়ে ওর থেকে সরে এসে গম্ভীর কন্ঠ বললো,
‘তোকে ভালবাসতে যাব কেন?
আরিশ জুথির উপর থেকে সরে আসতে, জুথি বিছানায় উঠে বসে চোখের পানি মুছে ফুঁপিয়ে বললো,
‘ঠিকই বলেছেন, আপনি কেন আমায় ভালবাসতে যাবেন? — এতোটুকু বলে থেমে আবারো ফোপাতে ফোপাতে বললো,
“ভালোবাসা যদি এতটাই সহজ হতো তাহলে প্রতিটা ভালবাসাই পূর্ণতা পেত”
‘জুথি এতোটুকু বলে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে আবারো বললো,
‘আরিশ ভাই আপনি যদি আমাকে ভালোইবাসতেন,তাহলে সেই দিন সবার চোখের কাটা বানিয়ে রেখে চলে যেতে পারতেন না।
‘তোকে কে বললো আমি তোকে ভালোবাসি?? এটা তোর সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
জুথি আরিশের পরপর ভালোবাসি না, শব্দটা শুনে, বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কান্নারত চোখ নিয়ে বললো,
‘ধন্যবাদ আরিশ ভাই, আমি আপনার মুখ থেকে এটাই শুনতে চেয়েছিলাম। -‘বলে দু ফোটা চোখের পানি ফেলে সেখান থেকে প্রস্থান করে’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আরিশ জুথিকে কে চলে যেতে দেখে, মুখে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে বিড়বিড় করে বললো,—‘বোকা মৌচাক তোর প্রতিটা কদম, প্রতিটা নিঃশ্বাস, প্রতিটা পদক্ষেপ, আমার দেখানো ইশারাতেই হবে। তবে সেটা তোর আয়তের বাইরে। – বলে বিছানায় শুয়ে চোখের উপর হাত দিয়ে পায়ের উপর পা তুলে নির্দ্বিধায় শুয়ে রইলো। যদিও সে চাইলে তার মৌ’কে আটকাতে পারতো, তবে রেখে দেয়নি নিচে তানিশা এসেছে বলে, এ বিষয়টা তার মাথায় ছিল। মেয়েটা এই বাড়িতে ওর জন্যই এসেছে। এখন যদি ওকে এভাবে ওর কাছে রেখে দেয়, তাহলে মেয়েটা তো চলে যাবে। তাই আর জোর করেনি। তাছাড়া ওর কাছে থাকলে এই মেয়ে ফ্যাত ফ্যাত কান্না করত, যেটা ওর একদমই সহ্য হতো না।
“রাদিফ তখন দরজা আটকে রুমে আসতে কিছু জিনিসপত্র মেঝেতে আছাড় মেরে ভেঙে ফেলে, নিজেকে স্বাভাবিক করতে। তার কিছুতেই ঐ দৃশ্যটা মেনে নেওয়া পসিবল ছিল না। যতবার ওই জিনিসটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে, ততবার ওর মন চাইছে সবকিছু ভেঙে ঘুরিয়ে দিতে। রাদিফ এসব ভাবতে ভাবতে বিছানায় বসে ওর চুলের মুঠি চেপে ধরে বললো,

‘না না জুথি আমার থেকে আলাদা হতে পারে না? আমি তো ওকে ভালবাসি? তাহলে জুথি কেন আরি,, – এতটুকু বলে থেমে যায় ও, হঠাৎ ওর ভাবনা এমনটা হয়, – ‘ জুথি ইচ্ছে করে হয়তো আরিশের গলা জড়িয়ে ধরেনি। আরিশ হয়তো আবারো ওকে হার্ট করেছে, তাই হয়তো বাধ্য হয়ে জড়িয়ে ধরেছে। এসব ভেবে রাদিফ নিজেকে সান্তনা দিয়ে রুম থেকে বের হয়, অফিস যাওয়ার জন্য।
“সময় তার নিয়ম মেনে কেটে গেছে তিনটে দিন,জুথির সাথে সেদিনের পর আর আরিশের দেখা হয়নি। আরিশ সকাল হতে বেরোতো রাত্র ১২ টা নাগাদ কিংবা সাড়ে ১২ টা নাগাদ বাড়ি ফিরতো। আর যতটুকু টাইম আরিশ বাড়ি থেকেছে, জুথি ইচ্ছে করে আরিশের সামনে যায়নি, ওকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলেছে,আরিশ ও এই বিষয়ে নোটিশ করেছে, কিন্তু অতি ব্যস্ততার জন্য প্রীয়সির কাছে যেতে পারিনি। এতে তার দিন কাটলেও মানসিক শান্তি কেমন উধাও হয়ে গেছে,রাদিফ ও সেই বিষয় ভুলে স্বাভাবিক হয়ে আগের মত অফিস সামলাচ্ছে বাবা’চাচার সাথে। দু’দিন বাদ বাড়িতে বিয়ে পরবে, অফিস থেকে তখন হয়তো ছুটি নিতে হবে অন্যদের দায়িত্ব দিয়ে। কত কাজ তখন, তাই সবার ব্যাস্ততায় দিন পার হচ্ছে। রোদ ও সেদিনের পর থেকে আর রাদিফের মুখোমুখি হয়নি। যতটা সম্ভব রাদিফ বাসায় থাকলে রুমে থেকেছে।

“সন্ধ্যা প্রায় ৭.৩৭ মিনিট, খান বাড়ির সকল মানুষ বসার ঘরে সন্ধ্যার নাস্তা করতে ব্যস্ত। এমন সময় হঠাৎ ইভার ফোন বেজে ওঠায় খাবার রেখে ফোনটা হাতে নিতে দেখে, রনি ফোন দিয়েছে। এই সময় এই লোকের ফোন দেখে ইভা মনে মনে বলে –‘লোকটার কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই? সেই আমাকে দেখে যাওয়ার পর থেকে, দিন নেই,রাত নেই সন্ধ্যা নেই দুপুর নেই, সবসময় শুধু ফোন আর ফোন। ইভা কে ফোন হাতে নিয়ে কিছু ভাবতে দেখে সানজিদা খান বললেন,
‘কে ফোন দিয়েছে ইভা আম্মু? মুচকি হেসে।
ইভা সানজিদা খানের কথায় কিছুটা লজ্জা পেয়ে মাথা চুলকে বললো,
‘আসলে বড় আম্মু, — ওর সম্পূর্ণ কথা শেষ করতে না দিয়ে সানজিদা খান বুঝতে পেরে আবারো মুচকি হেসে বললেন,
‘বুঝতে পেরেছি মা, তুমি খাবারটা নিয়ে রুমে গিয়ে কথা বলো।
ইভা ওর বড় আম্মুর কথায়, সায় জানিয়ে হাতে খাবার প্লেট টা নিয়ে রুমে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করে মধু কন্ঠে বললো,

‘আসসালামু-আলাইকুম!
ইভার মিষ্টি কন্ঠে সালাম পেয়ে অপর পাশের লোকটা মুচকি হেসে বললো,
‘ওয়ালাইকুম-আসসালাম! মাই ডিয়ার। — এতোটুকু কথা বলে দুজনেই বেশ সময় নীরবতা পালন করে রনি বললো,
‘সন্ধ্যা বেলা নাস্তা করেছ?
‘জ্বি খাচ্ছি, আর আপনার সাথে কথা বলছি। আপনি খেয়েছেন?
‘হ্যাঁ। রনি এতটুকু বলে থেম আবারো আসন্ন গলায় বললো, —‘দুদিন পর আমাদের বিয়ে, তুমি এখনো আমায় আপনি করে বলবে?
‘,,,,,,,,,,,,,।
ইভা কে চুপ থাকতে দেখে, রনি অধৈর্য গলায় বললো,
‘প্লিজ তুমি করে বলো, আপনি শব্দটা ভালো লাগেনা।
ইভা রনির কথায় শ্বাস ছেড়ে মধু কণ্ঠে বললো,
‘আগে বিয়ে হোক! তারপর না হয় তুমি করে বলবো? বিয়ের আগে তুমি বলা, এটা কেমন দেখায় না?
‘মানলাম তোমার কথা! কিন্তু বিয়ে সম্পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে তুমি করে বলতে হবে? তখন কোন এক্সকিউজ শুনবো না কিন্ত।
‘হুম।

‘মনে রাখবেন কিন্তু ম্যাম। দুজনে বেশ বিভিন্ন কথায় মজগুল হলো, ব্যক্তিগত বিষয়।
“সানজিদা খান সবার সন্ধ্যার, নাস্তা করা শেষ দেখে, ভ্রু কুঁচকে উপরের দিক তাকালো। সে সেই কখন জুথি কে নাস্তা করতে ডাকলো, এখন পর্যন্ত নিচে আসার নাম নেই। উনি খাবার প্লেটটা ঢাকতে ঢাকতে আবারো ডাকলেন,
‘মৌ খেতে আসছে না কেন তুমি? রাতের খাবার সন্ধ্যার খাবার কি একসাথে খাবে নাকি?
জুথি ওর রুমে এলোমেলো ভাবে শুয়ে, গরমের উত্তাপে,ওর প্র্যায় নাজেহাল অবস্থা। ফর্সা মুখোশী কেমন লালচে হয়ে আছে, দেখে মনে হচ্ছে কেউ হয়তো মরিচ গুড়া লাগিয়ে দিয়েছে। সাথে টপ টপ ঘাম তো আছেই। তাই তখন সানজিদা খানের ডাক শুনলেও খেতে যায়নি। এখন আবারও সানজিদা খানের পরপর ডাকে জুথি উঠে বসে নিচে যাওয়ার জন্য। জুথি ওড়না দিয়ে ঘাম মুছতে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসছে সবাই ওর দিকে তাকালো। জুথি টেবিলের কাছে আসতে সানজিদা খান ওর দিক তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললেন,
‘তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?

‘আর বলো না, এটা বলে জোরে নিঃশ্বাস ফেলে একটু জোরেই বললো, —‘ডিয়ার গরম জোর করে কখনো ভালোবাসা পাওয়া যায় না। তাই তুমিও আমাকে ছেড়ে চলে যাও। দেখেছো তো তোমাকে আমার সাথে কেউ সহ্য করতে পারে না? তাই তাড়াতাড়ি করে চলে যাও।
জুথির এমন উদ্ভাট কথা শুনে সবাই ফিক করে হেসে দিলো, ততক্ষণে আরিশ ও বাড়িতে ঢুকছিল, তখন জুথি কে টেবিলের কাছে দেখে সোজা ওর কাছে গিয়ে ওকে কোলে নিয়ে সামনের দিক হাঁটতে হাঁটতে সানজিদা খান কে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘মৌ কে নিয়ে গেলাম।
‘কিন্ত ওতো নাস্তা করনি?
‘রুমে পাঠিয়ে দাও।
আরিশ জুথি কে হঠাৎ এভাবে কোলে নিতে, জুথি ওর থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ছোটাছুটি করে অস্থির কন্ঠে বললো,
‘ছাড়ুন আমাকে! যাবো না আমি আপনার সাথে।
‘জানি তো ঘাড় ত্যাড়ামি করবি। তাই তো বলে নয়, ডাইরেক্ট কোলে নিয়ে যাচ্ছি। – বলে আরিশ বা চোখ টা টিপ দিল।

আরিশ ওকে নামাচ্ছে না বলে জুথি ওর বুকে হাত ছাপরিয়ে বললো,
‘শুনতে পাননি, আমি আপনার সাথে যাব না? নামান আমাকে।
আরিশ জুথির কথায় পাত্তা না দিয়ে, ওকে চুমু দেখিয়ে রুমের দিকে যেতে জুথি বললো,
‘আপনার রুমে যাবো না,
‘রুমে না গেলে, হবে কিভাবে বেবি?
‘আস্তাগফিরুল্লাহ,
‘তুমি আস্তাগফিরুল্লাহ বলছ কেন জান? রুমে না গেলে সবার সামনে বসে কি হবে?

জুথি আরিশের এমন নির্লজ্জ মার্কা কথায়, ওর কোল থেকে নামার জন্য আরো ছটফট শুরু করলো,আরিশ তার মৌ’কে এভাবে ছটফট করতে দেখে, বাঁকা হেসে, খুব সযত্নে কোলে আঁকড়ে রুমে এসে জুথি কে বাচ্চাদের মত করে ওকে নিয়েই পিছনভাবে বিছানায় শুয়ে বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরে চোখ দুটো বন্ধ করে শান্তির নিঃশ্বাস ফেললো। তার এখন ভীষণ মানসিক শান্তি লাগছে, এই নরম তুলতুলে শরীরটাকে বুকে আঁকড়ে ধরতে পেরে। এই তিনদিন যে এই ছোট্ট শরীরটাকে একটা বারও ছুতে পারিনি কাছ থেকে দেখতে পারিনি, এতে তার ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছিল। এখন তার শান্তি লাগছে,আরিশ এসব ভেবে একটু ঝুঁকে জুথির মাথায় চুমু খেয়ে বললো,

Violent love part 27

‘ঠিক যতটা শান্তি তোর মুখের দিক তাকালে আমি পাই,ঠিক তার চেয়েও বেশি তোকে বুকে আগলে নিয়ে পাই।
জুথি আরিশের বুকে আবদ্ধ হয়ে, গত দিনের অভিমান ভুলে আরিশের বুকের মধ্যে আরো আবদ্ধ হয়ে কাতর কণ্ঠে বললো,
‘যাকে ভালোবাসেন না, তাকে বুকে নিয়ে শান্তি কেন পান?

Violent love part 29