Violent love part 38

Violent love part 38
Mariam akter juthi

আরিশ দ্রুত পায়ে হেঁটে সানজিদা খানের রুমে এসে পাগলের মত করে বললো,
‘আম্মু আমার বউ কথা বলছে না, কান্না করছে না। দেখো না ওর কি হয়েছে? ওকে একটু বলোনা আমার সাথে কথা বলতে। আমার কষ্ট হয় তো।

আরিশের গায়ে কোন ধরনের পোশাক নেই। শুধু আছে হাঁটুর উপর পর্যন্ত পরা আন্ডার প্যান্ট। ওর অবস্থা বিধ্বস্ত, চুলগুলো এলোমেলো হয়ে সামনের দিক ছড়িয়ে আছে। চোখে মুখে অসহায়তা, মনে হচ্ছে অতি প্রিয় কিছু হারানোর উন্মাদনা তার মধ্যে বিরাজ করছে। ভারী শ্বাস নিঃশ্বাস সবমিলিয়ে সানজিদা খানের ওকে পরখ করা হয়ে গেলে উনি আন্দাজ করে সবটা বুঝে যান, – ‘তার ছেলে ওইটুকু খানি মেয়েটার সাথে কি করেছে। উনার এসব বুঝে আসতে উনি লজ্জায় আরিশের থেকে চোখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দাঁড়াতে দেখে সাফওয়ান খানের ও ঐ একই অবস্থা। তাই সানজিদা খান উনার দৃষ্টি দ্বারা, ইশারায় স্বামীকে বোঝাতে চাইলেন, –‘ছেলে তোমার প্রশ্ন করছে, উত্তর দাও।
তবে সাফওয়ান খান উনার ইশারার কথা বুঝতে পেরে উনিও ইশারা দ্বারা বুঝালেন, – ‘বিষয়টা ছেলের হলেও করনীয় তা বলা যেত। সেখানে ছেলের বউয়ের টা সে কিভাবে বলবেন? যা কুকর্ম করার, সে তো ছেলে নিজেই করেছে। সাফওয়ান খান ইশারায় ওনাকে কথাগুলো বুঝিয়ে লজ্জায় মাথাটা নিচু করে রুমের বারান্দায় চলে গেলেন। তা না হলে তার নির্লজ্জ উন্মাদ ছেলে কখন কোনটা ফট করে বলে ফেলে, তখন তার স্ত্রীর সামনে মাথা কাটা যাবে। এ কি ছেলের জন্ম দিয়েছে সে? তখন গুরুগম্ভীর রাগী মানুষটার মাথা থাকবে? উনি এসব ভেবে চলে যেতে, সানজিদা খান আরিশের দিক ঘুরতে আরিশ নিজের চুলগুলোতে পাগলের মতো হাত বুলাতে বুলাতে করুন কণ্ঠে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘ও মা আমার বউ, আমার বউকে সুস্থ অবস্থায় এনে দাও। আমার পাখি আমার সাথে কথা বলছে না। কেমন নিথর দেহে পড়ে আছে।
‘কেন আল্লাহ কি আমাকে অদৃশ্য শক্তি দিয়ে পাঠিয়েছেন? যে তোমার বউকে সুস্থ করে দিব?
‘আম্মু আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ওকে ছাড়া, আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যাব।
‘তখন বলেছিলাম না? মেয়েটাকে নিয়ে যেও না, তোমার মাথা ঠিক নেই। এতোটুকু মেয়ে কত মার খেতে পারে? তুমি কি ওর শরীরে আঘাত করেছ? শেষ কথাটা ভ্রু কুঁচকে বললেন।
‘,,,,,,,,।
আরিশ চুপ হয়ে আছে দেখে উনি মুখ ঘুরিয়ে করা কন্ঠে বললেন,

‘তোমার বউ সে,তুমি কি করবে না করবে সেটা তুমি গিয়ে ঠিক কর।
আরিশের মুখে অসহায়তা প্রকাশ পেল, তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। সে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না, হাটু ঘিরে মায়ের পা জড়িয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে কন্ঠ খাদে নামিয়ে বললো,

‘আম্মু আমার মাথা ঠিক ছিল না। কি থেকে কি করেছি জানিনা, আমার বউকে আমার লাগবে। ওকে সুস্থ করে এনে দাও, ওকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারবো না মা। — কথাগুলো বলার সাথে সাথে ওর কান্নার তোপ ক্রমশ বাড়ছিল দেখে সানজিদা খান এবার শক্ত খোলস ছেড়ে নরম হয়ে আসলেন। আরিশের এমন নাজেহাল করুন অবস্থা দেখে উনি মনে মনে ভাবলেন, – ‘তার এত বড় ছেলেটা, ওইটুকু খানি মেয়েটার জন্য কেমন অস্থির হয়ে পাগলামি করছে। কেমন বেহাল অবস্থা করেছে এতটুকু সময়ের ব্যবধানে। তাছাড়া তার গম্ভীর রাগী বদমেজাজি ছেলে কারো জন্য এভাবে কান্না করছে হারিয়ে ফেলার ভয়ে? উনি বুঝলেন অতিরিক্ত আসক্তি মানুষকে প্রবাল কাঙ্গার করে দেয়। যার শিকার হয়েছে আরিশ। উনি এই কথাগুলো ভেবে নিঃশ্বাস ফেলে স্বাভাবিক কন্ঠে বললেন,

‘তোমার শরীরে পোশাক নেই, যেটা পড়ে ছুটে এসেছ দেখতে বাজে লাগছে। রুমে গিয়ে লুঙ্গি পড়ে নাও, আমি ডক্টর কে ফোন দিয়ে আসতে বলছি।
“খান মহল জুড়ে নীরবতা বিরাজমান করছে, ছোটরা সব বড়দের আদেশে যে যার রুমে শুয়ে পড়েছে। যদিও তাদের মনে কৌতুহল হঠাৎ হলো টা কি?
তখন আরিশ সানজিদা খানের কথায় রুম থেকে চলে আসতে প্রায় ২০ মিনিটের মাথায় উনাদের ব্যক্তিগত কাঙ্খিত ডক্টর আহিম হাওলাদার আসেন। হঠাৎ এই রাতে পরিচিত ডাক্তার বাড়ি বয়ে আসছে সবার দৃষ্টি সেদিকে যায়। বাড়ির কেউ তো অসুস্থ না তাহলে ডক্টর এলো কেন? ভেবে ফারি এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে, সানজিদা খান সবার উদ্দেশ্যে করা কন্ঠে বললেন, ‘অনেক রাত হয়ে গেছে, কালকে বাড়িতে বিয়ে শরীর সুস্থতার জন্য সবাই গিয়ে শুয়ে পড়ো।

উনার কথায় কেউ আর কথা বাড়ালো না। নিঃশব্দে যে যার জায়গা ত্যাগ করল। তবে মনে প্রশ্ন রয়েই গেল, ‘ডক্টর আঙ্কেল কেন এলো? ওরা যে যার রুমে চলে যেতে উনি ছেলের কুকর্মের কথা আর কাকে জানালেন না। আর রাদিফ রোদের বিয়ের বিষয়টা লিমা খানিরাই বলে দিয়েছেন কিছুক্ষণ আগেই। এতে বিনা বাক্যে রাজি হয়েছেন উনার সেঝো জা দেবর। সানজিদা খান ডক্টর কে নিয়ে আর দাঁড়ালেন না, আরিশের রুমে নিয়ে আসতে, আরিশ ডাক্তারকে দেখে তেতে উঠে বললো,
‘গরুর ঘাস কাটছিলেন নাকি? দেখছেন না আমার বউ চোখ খুলছে না। আমার সাথে কথা বলছে না। এত দেরি হয়েছে কেন?

আরিশ কে রেগে যেতে দেখে, সানজিদা খান রুমের ভিতরের এসে চেয়ার টেনে উনাকে বসাতে উনি চশমাটা ঠিক করে আড় চোখে একবার আরিশের দিকে তাকালেন ,এই ছেলের সম্পর্কে সে বেশ কথাই শুনেছে। এই ছেলের স্বভাব তার জানা। কিছুদিন আগে বাইক রাইডে হাতে ইনজুর হলে উনার কাছেই গিয়েছিল। তখন উনার আসতে সামান্য দেরি হওয়ার দরুন পুরো হসপিটাল কাঁপিয়ে তুলেছিল। সেসব কথা ভেবে উনি শ্বাস ফেলে জুথির দিকে তাকিয়ে ওর পালস চেক করতে ওনার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। সাথে সাথে উনি বলে উঠেন,
‘কি হয়েছিল মেয়েটার সাথে? ওর পালস এত কম কেন?
ডাক্তারের কথায় আরিশের ডাইরেক্ট উত্তর,
‘ইন্টিমেট হয়ে ছিলাম দুজনে, আর কিছু?

ওর ডাইরেক্ট স্বীকারোক্তিতে ডক্টর পাশাপাশি সানজিদা খান কেশে উঠেন, ছেলের মাথা কাজ করছে না উনি বুঝতে পারছেন, তাই বলে আরিশ যে এভাবে উত্তর দেবে উনার ধারণা ছিল না। ডক্টর আহিম কথা ঘুরিয়ে বললেন,
‘ওনাকে অক্সিজেন দিতে হবে, উনার শ্বাস-প্রশ্বাস খুবই দুর্বল ওঠে নামা করছে, পাশাপাশি স্যালাইন।
‘তাহলে দিচ্ছেন না কেন?
আরিশের কথায় ডঃ আহেম স্বস্তি ছাড়লেন, ভাগ্যিস আজ উনার ব্যাগে অক্সিজেন মাক্সটা ছিল। এইতো কিছুক্ষণ আগে উনি শ্বাসকষ্টের রোগী দেখতে বাড়ি বয়ে যাবেন করে। মাঝ পথেই খান বাড়ির ইমারজেন্সি ফোন পেয়ে, দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে এখানে আসেন। তাই তাড়াতাড়ি করেন লেদার ব্যাগের পাশ থেকে ছোট অক্সিজেন ক্যানিস্টার মাস্কটা বের করে জুথির নাকে মুখে সেটাপ করে,ওর হাতে স্যালাইন লাগিয়ে বসে পড়তে। আরিশ জুথির গালে হাত রেখে ডাক্তারের দিকে ভ্রু কুঁচকে বললো,

‘আপনি কোন *বালের ডাক্তারি করছেন? আমার বউ তো চোখ খুলছে না। এই দাঁড়ান, আপনি আবার কোঠার ডাক্তার নায় তো?
‘কোঠার ডাক্তার হতে যাবো কেন? আর আপনার বউ চোখ খুলছে না,সেটা আপনার হটনেস দেখানোর আগে মনে ছিল না?
‘আমি আমার বউয়ের সাথে কি করব, সেটা আপনি বলে দিবেন? চোখ দুটো গরম করে।
ডক্টর আহিম আর কথা বাড়ালেন না, কোথা থেকে কোথা নিয়ে যাবে এই ছেলে, কে জানে? তাই দ্রুত চলে যাওয়ার জন্য সানজিদা খানের দিক তাকিয়ে বললেন,
‘মিসেজ খান, আমার একজন শ্বাসকষ্টের রোগী দেখতে যাওয়ার কথা, সেখানে যেতে হবে। আর ওনার জ্ঞান হয়তো ২৪ ঘন্টা পর ফিরবে। শরীর ব্যথার জন্য ওষুধ দিয়ে গেলাম জ্ঞান ফিরলে খাইয়ে দেবেন।
‘হুম।

সানজিদা খানের সম্মতি পেয়ে, আহিম উঠে দাঁড়ালেন, অতঃপর ব্যাগ পাতি গুছিয়ে নিঃশব্দ চলে গেলেন। ডঃ আহিম চলে যেতে সানজিদা খান শ্বাস ফেলে ছেলের দিক তাকিয়ে বললেন,
‘ডক্টর কি বললো শুনেছো? আশা করি মেয়েটার জ্ঞান ফেরানোর জন্য ওর উপর চাপ তৈরি করবে না। — বলে উনি আর দাঁড়ালেন না, দ্রুত পায়ে হেঁটে নিজের রুমে চলে গেলেন।
সানজিদা খান, চলে যেতে আরিশ জুথির মাথাটা উরুরুর উপর রেখে, ওর কপালে চুমু খেয়ে। ঠোঁট কামড়ে, কান্নাটাকে সংবরণ করার চেষ্টা করলো। তবে তাতে সে সফল হয়নি, তার পুরুষয়ালি চোখ দুটো লাল টইটুম্বুর হয়ে আছে। কখন জানি টুপ টুপ করে দু ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে, হলো ও তাই, দু ফোঁটা তিন ফোঁটা নয়, ঝর ঝর করে বৃষ্টির মত স্রোত বইতে লাগলো ওর দুচোখ থেকে। মুখ থেকে বেরিয়ে এলো অস্পষ্ট সরে দুটো লাইন,

~~ কি করে তোকে বলবো…
~~ তুই কে আমার..।
আরিশ ঠোঁটে ঠোঁট চেপে, হাত দুটো মুঠি বদ্ধ করে চোখ দুটো বন্ধ করে নিল, মাথাটা গিয়ে ঠেকালো খাটের হেডবোর্ড এর সাথে। তখনো তার বন্ধ চোখ থেকে আপনা আপনি পানি ঝরছিল। ভারী বিশ্বাসের সাথে, পাল্লা দিয়ে ওভাবে আর বসে থাকতে পারলো না। তৎক্ষণে উঠে দাঁড়ালো, ভীষণ রাগ হচ্ছে নিজের প্রতি নিজের, আরিশ এক পা দু পা পিছিয়ে, হঠাৎ করেই মুঠিবদ্ধ ডান হাত দ্বারা দেয়ালে আঘাত করতে ঘুষিটা গিয়ে পড়ল ড্রেসিং টেবিলের আয়নার উপর, সাথে সাথেই সেটা ফাটল ধরায়, আরিশের পরবর্তী আবারো তীব্র ঘুসি পড়ায় সেটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে সেখানের কাঁচ ঢুকে এলো আরিশের ডান হাতের তালুতে, সাথে সাথেই কাঁচ ঢুকে যাওয়া জায়গা থেকে গরম তরল রক্ত বেরিয়ে আসতে, সেদিকে কোন খেয়াল দিলো না আরিশ। কাঁচ ঢুকে যাওয়া হাতটা পর পর একই জায়গায় ঘুসি দিতে, তালুটা প্রায় থুতলে গেল। তবেই সে শান্ত হল। এই হাতটা দিয়েই সে তার কলিজা পাখি কে আঘাত করেছে। তাহলে এই হাত সুস্থ থাকুক, সে সেটা কি করে হতে দেয়? তাই তার ও শাস্তি পাওয়া উচিত।

“ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করে, সময়ের পর সময় শেষ হয়ে কেটে গেছে তিন তিনটা দিন। জুথির সেন্স এখনো ফিরেনি। সে এখনো ওভাবে নিথর দেহে পড়ে আছে। তবে এই তিন দিনে ঘটে গেছে অনেক কিছু। আরিশের অতিরিক্ত পাগলামি, খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেওয়া, সারাদিন রুম বন্দী হয়ে জুথির পাশে অসহায় দৃষ্টিতে ওর দিক তাকিয়ে থাকা, সবই যেন ওর অজানাই রয়ে গেল। আজ তিনদিন পর,জুথির শরীর মধু নড়লো। হাতে-পায়ের আঙ্গুলগুলো হালকা হালকা জেগে জেগে উঠলো। বেশ সময় এমন হতে, জুথি এপাশ হতে ওপাশ ফিরতে, আস্তে আস্তে করে চোখ দুটো মেললো, চোখ দুটো মেলার সাথে সাথে আবারো বন্ধ করে নিলো‌।

অতঃপর আস্তে আস্তে করে আলোর সাথে একটু একটু করে চোখ দুটো মানানসই করে তাকাতে, ওর সাথে হওয়া ঘটনার কিছুই ওর স্মরণে এলোনা। তবে মাথাটা ওর খুবই ভারী লাগছে। পর পর দুটো সজাগ হওয়ার বড় নিশ্বাস নিয়ে নিল। জুথি ওভাবে কিছুক্ষণ শুয়ে, রুমের দিক চোখ বুলাতে, দেখল এটা পরিচিত একটা রুম। যেখানে থাকতে তার ভীষণ ভালো লাগে, স্বস্তি ফিল হয়। কিন্তু আজ যেন তার উল্টোটা হল। রুমটা আরিশের স্মরণে আসছে তখনের ঘটনা মস্তিষ্কে টনক নাড়লো। সাথে সাথে ওর চোখে পানি জ্বরো হয়ে গেল। অভিমানের পাল্লাটা হল দ্বিগুণ ভারী। জুথি চোখের পানিটুকু মুছে, বিছানা থেকে উঠতে নিলে শরীরে ব্যথা অনুভব করল। মনে হলো ওর দুই পা অবাশ হয়ে আছে। হবে না কেন? সে সময় আরিশের করা কাজগুলো কি সে ভুলে গেছে?

একদমই না। তার জন্যই তো তার শরীরটা এত ব্যথা। তবুও হাল ছাড়লো না, কোনরকম ঠেলে ঠুলে উঠে পা দুটো মেঝেতে রাখবে, ঠিক তখন আরিশ বারান্দা থেকে রুমের মধ্যেই আসছিল। তখন বিছানার দিকে তাকাতে, জুথি কে এভাবে নামতে দেখে দ্রুত পায়ে হেঁটে ওর পাশে বসে ওকে টেনে সজোরে বুকের সাথে চেপে ধরে, বড় করে একটা নিশ্বাস ছেড়ে বললো,

‘মৌ, আমার জান, আমার সোনা, তোর সেন্স এসেছে আমাকে ডাকলি না কেন? অস্থির কন্ঠে।
জুথি আরিশের হঠাৎ এমন কাজে, কিছুক্ষণ স্তব্ধ থাকলো। অতঃপর ওকে ওর নরম হাত দ্বারা ঠেলে সরানোর চেষ্টা করতে, আরিশ নিজেই সরে গেল, তার মৌ কি করতে চায় দেখার জন্য। আরিশ জুথি কে ছেড়ে দিতে, জুথি ওর দিক না তাকিয়েই, এক হাত বিছানায় অন্য হাত আরিশের উরুর উপর ভর করে উঠে দাঁড়িয়ে, সামনে এক পা বাড়াতে মাথায় চক্কর দিতে, শরীরের ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যেতে নিলে ততক্ষণে আরিশ শক্ত হাতে ওকে ধরে পুনরায় বিছানায় বসিয়ে ওর পায়ের কাছে মেঝেতে হাটু ঘিরে বসে, ওর হাত দুটো ওর হাতের মধ্যে নিয়ে চাপা কন্ঠে বললো,
‘সমস্যা কি? আমাকে দেখতে পাচ্ছিস না?

জুথি আরিশের কথার তখনো মুখ আনুদিক ঘুরিয়ে চুপচাপ বসে আছে দেখে, আরিশ একটু জোরেই বললো,
‘কিছু জিজ্ঞেস করছি তো? উত্তর দিচ্ছিস না কেন?
আরিশের ধমক দেওয়া কথায়, জুথি হালকা কেঁপে উঠল। তবুও সে আরিশের দিকে চাইলো না। জুথি অন্য দিক মুখ ঘুরিয়ে আছে দেখে আরিশের মেজাজ চঙ্গে উঠে গেল। আজ তিনদিন পর প্রিয়সী তার সামনে বসে, অথচ তার সাথে কথা বলছে না? এটা সে মানতে পারল না।আরিশ উঠে বিছানায় ওর পাশে বসে, জুথি কে টেনে ওর দিকে ঘুরিয়ে, দুহাত দ্বারা ওর দু গালে হাত রেখে, দু গালে ঠোঁটে চুমু খেয়ে বললো,
‘কি হয়েছে বল আমাকে?

জুথি তখনো ওর দিক না তাকিয়ে, চোখ দুটো খিচে বন্ধ করে রাখলো। দেখবে না সেই পুরুষকে, যেই পুরুষ ওকে বিশ্বাস করে না, যে পুরুষ ওর অভিমান বোঝেনা, তাকে তার লাগবেনা। জুথি কোনভাবেই ওর কথার রেসপন্স করছে না দেখে, রাগে ওর মস্তিষ্ক টনটন করে উঠলো। রাগ সংবরণের জন্য জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলে ওর বাহু চেপে বললো,
‘মুখ কি বোবা হয়েছে? জিজ্ঞেস করছি গায়ে লাগছে না?সমস্যা কি কথা বলছিস না কেন?
জুথি আরিশের চেপে রাখা হাতের দিক তাকিয়ে আস্তে করে বললো,
‘ব্যাথা লাগছে আমার, ব্যথা পাচ্ছি তো।
আরিশ শ্বাস ফেলে, আস্তে করে ওর বাহু ছেড়ে ওর হাত দুটো ওর হাতের মুঠোর মধ্যে নিয়ে বললো,
‘তুই তো কিছু খাস নি, আমি খাবার নিয়ে আসছি।
‘আমি গোসল করব!

‘মানে? তোর মাথা ঠিক আছে? তোর শরীরে জ্বর, আর এখন তুই গোসল করবি?
জুথির বেশ মেজাজটা খারাপ হলো, এই লোক নিজে ওর সাথে এতসব করে এখন বলছে, গোসল করবে সেটার মানে। তাই চোখ দুটো বন্ধ করে আস্তে করে বললো,
‘বললাম তো গোসল করব।
‘সম্ভব না, জ্বর উঠবে।
‘আমি সয়ে নিব।
‘হাফফুট কথা গায়ে লাগেনা? একটু চেঁচিয়ে।

আরিশ আবারো ধমক দিয়ে কথা বলছে দেখে, কন্ঠটা নিচু করে আস্তে বললো,
‘ওসব করার সময় মনে ছিল না?
আরিশ এবার বুঝলো ও এত করে গোসল কেন করতে চাইছে, তাই বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
‘আজ করার প্রয়োজন নেই, শরীর ঠিক হলে জ্বর নেমে গেলে করে নিস।
‘নোংরা লোক।
জুথি আরিশের প্রতিটা কথার উত্তর অন্যদিক মুখ ঘুরিয়ে দিচ্ছে দেখে, আরিশ ওর মুখটা চেপে ওর দিক ঘুরিয়ে বললো,

Violent love part 37

‘আমি সেটাই।
জুথি বুঝলো, এই লোকটা যতক্ষণ ওর সামনে থাকবে কোনভাবেই ওকে পবিত্র হতে দিবে না। তাই আস্তে করেই বললো,
‘আমার খিদে পেয়েছে, খাবার নিয়ে আসুন।
‘ঠিক আছে, তুই এখানে বসে থাকবি আমি এক্ষুনি খাবার নিয়ে চলে আসব।
‘হুম।

Violent love part 39