তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব ১৯
মুন্নি আক্তার প্রিয়া
“তোর মতো ঘাড়ত্যাড়া, অভদ্র, অ’সভ্য মেয়ে মানুষ আমি আর একটাও দেখিনি অনু!”
রায়ান ভাইয়ের কথা শুনে অনু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। সে গায়ে হলুদের জন্য রেডি হচ্ছিল। কথা নেই বার্তা নেই, রায়ান ভাই এসে গালমন্দ করে যাচ্ছে। সবাই রেডি হয়ে নিচে চলে গেছে। তার অবশ্য এতক্ষণে রেডি হওয়া হয়ে যেত। সবাইকে সাজাতে গিয়ে নিজেরই দেরি হয়ে গেছে। তাই এখন চটজলদি চেষ্টা করছিল তৈরি হওয়ার। সে কানে দুল পরতে পরতে জিজ্ঞেস করল,
“বকছেন কেন?”
রায়ান ভাই কর্কশকণ্ঠে জবাব দিল,
“বকব না তো কি তোকে কোলে বসিয়ে আদর করব?”
“আপনার কোলে ওঠার জন্য আমি ম’রে যাচ্ছি না।”
“কিন্তু তোকে কোলে নেওয়ার জন্য তো আমি ম’রে যাচ্ছি।”
অনু চোখ রাঙিয়ে বলল,
“মানে কী?”
রায়ান ভাইও চোখ রাঙানি দিয়ে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“একদম আমার কথার ডাবল মিনিং বের করে আমাকে রাগ দেখাবি না। আমি সহজ-সরল, শান্ত-শিষ্ট, নিপাট, ভদ্র একটা ছেলে। আমার চরিত্রে কোনো রকম দাগ লাগানোর চেষ্টা করবি না।”
অনু বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। দুহাত বগলদাবা করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
“রায়ান ভাই, আপনি কি জানেন আপনার মাথাটা পুরো নষ্ট হয়ে গেছে?”
“আশ্চর্য অনু! দিনকে দিন তোর সাহস দেখছি পাহাড় ছুঁয়ে যাচ্ছে। তুই আমাকে পাগল বলছিস?”
“বলতাম না। আপনার কাজকর্ম দেখে বলতে বাধ্য হচ্ছি।”
“তোর বাধ্যকে আমি গু’লি মারি। তুই ছোটো একটা বিষয়কে এত বড়ো করলি কেন? ছোটোবেলায় কি তুই আমার কোলে উঠিসনি?”
“তখন আমি ছোটো ছিলাম।”
“তুই এখনো আমার ছোটোই। তখনো আমাদের বয়সের পার্থক্য যত ছিল, এখনো ততই আছে। নিজেকে খুব বড়ো ভাবার চেষ্টা করিস না। আর তোর এসব চ্যাটাংচ্যাটাং কথা আমার সাথে বলার দুঃসাহস দেখাবি না আর খবরদার!”
“দেখালে কী করবেন?”
রায়ান ভাই রাগে ফুঁসছে। দাঁত কিড়মিড় করছে। সে চুলগুলো হাত দিয়ে ঠিক করতে করতে বলল,
“আর কী করব? সহ্য করব। নেহাৎ তোকে ভালোবাসতে শুরু করেছি বলে তোর এসব ব্যবহার আমি সহ্য করছি। নয়তো এক থা’প্প’ড়ে তোর গাল লাল করে ফেলতাম।”
অনু তাচ্ছিল্য করে হেসে বলল,
“আপনার রুডনেস দেখেছেন? আপনার মতো রুড ব্যক্তি কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারে না।”
রায়ান ভাই ভ্রুকুঞ্চন করে বলল,
“হ্যাঁ, তোকে বলেছে! আমার মতো রোমান্টিক স্বামী তুই পুরো দেশ ঘুরেও পাবি না।”
“লাগবে না আমার আপনার মতো কাউকে।”
“তাহলে কার মতো লাগবে? ঐ স্নিগ্ধ ছাগলটার মতো?”
“আশ্চর্য! আপনি আমাদের কথার মাঝে তাকে কেন টানছেন?”
“কেন খুব গায়ে লাগছে?”
অনু হাল ছেড়ে দিল। রায়ান ভাইয়ের মাথা ঠিক নেই। তাকে বুঝিয়েও কোনো লাভ হবে না। তাই সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গাঁদাফুলের মালাটি খোঁপায় জড়াতে লাগল। রায়ান ভাই ক্ষেপে গিয়ে বলল,
“জবাব দিচ্ছিস না কেন?”
অনু নিশ্চুপ। রায়ান ভাই ফের বলল,
“অনু, আন্সার মি! আমি তোকে ভালোবাসতে শুরু করেছি। আর তুই আমাকে কোনো জবাবই দিচ্ছিস না।”
কালো ক্লিপ দিয়ে ফুলগুলো সেট করতে করতে অনু জবাব দিল,
“উত্তর তো আপনার জানাই আছে। আপনিই তো বলেছিলেন, আপনি আমাকে বিয়ে তো দূরে থাক; কখনো ভালোই বাসবেন না। বলেছিলেন না?”
ফুলের মালাটি চুলের সাথে পুরোপুরি সেট করার পূর্বেই খুলে পরে গেল নিচে। অনু বিরক্তিতে ‘চ’ সূচক শব্দ করে উঠল। উবু হয়ে মালাটি তুলতে যাবে, তখন রায়ান ভাই হাঁটু মুড়ে বসে মালাটি তুলল। মাথা তুলে অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
“মানুষ কি ভুল করে না, অনু?”
অনু নিরুত্তর। রায়ান ভাই দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মালাটি হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়াল। অনুকে আয়নার দিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করিয়ে নিজে ফুলের মালাটি অনুর খোঁপায় পেঁচিয়ে বলল,
“ক্লিপ দে।”
অনু নিরুত্তর থেকে ক্লিপ এগিয়ে দিল। রায়ান ভাই খুব মনোযোগ দিয়ে ক্লিপগুলো দিয়ে ফুলের মালাটি চুলের সাথে সেট করে দিচ্ছে। সে এতটাই মনোযোগ কাজে দিয়ে রেখেছিল যে, দেখতেই পায়নি অনু আয়নার মাঝে রায়ান ভাইয়ের দিকে নিষ্পলকভাবে তাকিয়ে ছিল। আগের রায়ান ভাইয়ের সাথে এখনকার মানুষটার কোনো মিল সে খুঁজে পাচ্ছে না। এই পরিবর্তনটা শুধু অনুর জন্যই। অন্যদের জন্য সে আগের মতোই রগচটা, স্বল্পভাষী স্বভাবেরই আছে।
খোঁপায় মালা গোঁজা শেষ হলে রায়ান ভাই বেশ ভাবসাব নিয়ে বলল,
“দেখ কত নিখুঁত ও সুন্দর করে কাজটা করে দিলাম। আর তুই কিনা আমাকে বলিস আমি রুড? একবার বিয়ে তো করে দেখ, দেখবি বউয়ের সেবায় কীভাবে নিজেকে নিয়োজিত রাখি।”
অনু বামপাশের ভ্রু উঁচু করে তাকাল। রায়ান ভাই মিষ্টি করে হেসে বুকে হাত রেখে বলল,
“ওভাবে তাকাবি না অন্দি, বুকে ব্যথা করে।”
এরপর অন্যমনস্ক হয়ে দরজার দিকে তাকাতেই দেখতে পেল, শাপলা দাঁড়িয়ে আছে। অনুর আসতে দেরি হচ্ছিল বলে সে ডাকতে এসেছিল। রায়ান ভাই হকচকিয়ে গেল। কী করবে, কী বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না। সে থতমত খেয়ে বুকে হাত রেখেই ক্যাঁকিয়ে-কুঁকিয়ে বলল,
“বুকে খুব ব্যথা রে অনু, গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা! জলদি একটা ওষুধ দে তো। কখন থেকে সাজছিস, আমাকে ওষুধটা দিয়ে তারপর সাজ।”
অনু বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে। মুহূর্তেই চেঞ্জ! সে মুখটিপে হেসে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের পাতাটি এগিয়ে দিয়ে বলল,
“নিন। আশা করছি সকল ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। পানি দেবো?”
“না, না আমি নিচে গিয়ে খেয়ে নেব। তোর রংচঙ মাখা শেষ হলে তাড়াতাড়ি নিচে আয়।”
রায়ান ভাই চলে যাওয়ার পর শাপলা দম ফাটিয়ে হাসা শুরু করল। এতক্ষণ অনেক কষ্টে হাসি আটকে রেখেছিল। অনু জিজ্ঞেস করল,
“এভাবে হাসছ কেন?”
শাপলা হাসতে হাসতে অনুর গায়ে গড়িয়ে পড়ছে। কোনোরকম হাসি কন্ট্রোল করে বলল,
“ভাইয়ার অভিনয় দেখে! ভাইয়া ভেবেছে আমি কিছু দেখিনি আগে? সবই দেখেছি, শুনেছি। এখন যেভাবে অভিনয়টা করল!”
“আরে হয়েছে, হয়েছে। তুমি এখন হাসি থামাও। যেভাবে হাসছো দম আটকে যাবে তো।”
“হাসতে হাসতে এখন আমার গাল, পেট ব্যথা করছে।”
অনু শাপলার হাত ধরে বলল,
“হয়েছে আর হাসতে হবে না এখন। নিচে চলো।”
আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গাটিতে। স্টেজও ওখানেই সাজানো হয়েছে। কারণ আজকে প্রচুর মানুষজন আসবে। এত মানুষ বাড়িতে আটবে না। তাই ফাঁকা জায়গায় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে করে সবাই আসতে পারে, অনুষ্ঠান দেখতে পারে, খাওয়া-দাওয়া করতে পারে শান্তিমতো।
অনু এত মানুষ দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এখানের সবাইকেই কি দাওয়াত করা হয়েছিল? সে আলমগীর চৌধুরীর কাছে গিয়ে জানতে চাইল,
“এত মানুষ কারা আব্বু?”
“সবাই গ্রামেরই। আজকে সবার দাওয়াত।”
অনু হাসল। গ্রামের মানুষ কি আর এমনি এমনি চৌধুরী পরিবারকে এত ভালোবাসে?
একে একে সবাই মিলে রিয়াদ ভাইয়াকে হলুদ দিচ্ছে। অনুও হলুদ দিয়ে এসে স্টেজ থেকে নেমে নিচে এসে দাঁড়াল। কোথা থেকে তখন রায়ান ভাই এসে উপস্থিত হলো। এসে দাঁড়াল অনুর পাশে। রায়ান ভাই ফিসফিস করে বলল,
“তোকে সুন্দর লাগছে।”
অনু জবাব দিল না। রায়ান ভাই ক্ষেপে বলল,
“আবার দুঃসাহস দেখাচ্ছিস আমাকে?”
অনু ভ্রুকুটি করে বলল,
“বেশি কথা বললে হলুদ লাগিয়ে দেবো।”
“দে। নিষেধ কে করল?”
অনু জবাব দিল না। রায়ান ভাই নিষ্পলক তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। এরপর চারপাশে একবার তাকাল। সবাই সবার মতো করে অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত সেই সুযোগে সে আলতো করে অনুর চুলগুলো কানের পিঠে গুঁজে দিল। ফিসফিস করে বলল,
“তোর মাঝে উপন্যাসের নায়িকাদের একটা প্রতিচ্ছবি আছে। তুই যখন চোখে গাঢ় করে কাজল দিস, দেখলে মনে হয় দিঘির জল টলমল করছে। তোর ঘর্মাক্ত মুখ, কাজলকালো চোখ, দীঘলকালো কেশ, কিংবা প্রাণখোলা হাসি; ঠিক কোনটার প্রশংসা করব বল তো, আমার অন্দি?”
অনু জবাব দিত পারল না। বোধ করি জবাব দিতও না। তবুও আশায় বাঁচে চাষা। সেই আশায় বুক বেঁধেছিল রায়ান ভাই। কিন্তু এরপূর্বেই বিচ্ছুর দলগুলো চলে এসেছে। কাজিনরা এসে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গেল তাকে। সকলের আবদার এখন রায়ান ভাইকে গান গাইতে হবে। গান গাইতে রায়ান ভাই পছন্দ করলেও এখন সে ভীষণ বিরক্তবোধ করতে লাগল। এমন রোমান্টিক একটা মুহূর্তে কেউ এভাবে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে আসে গান গাইতে? ভাগ্যিস বিয়েটা রিয়াদ ভাইয়ার; তার নয়! না হলে দেখা যেত বাসরঘর থেকেও কোলে করে তুলে নিয়ে যেত গান শোনার জন্য ব’জ্জা’তের দল!
সবার সামনে রায়ান ভাই তার স্বভাবসুলভ স্বল্পভাষী ভাবটাই ধরে রাখল। ঠোঁটে মৃদু হাসি টেনে কাজিনদের পছন্দমতো কতগুলো হিন্দি গান গাইল। ক্যামেরাম্যানসহ উপস্থিত অনেকেই তা ভিডিয়ো করছে। রায়ান ভাই এবার একটা বাংলা গান ধরেছে। গান গাইছে সে অনুর দিকে তাকিয়ে।
“চাই না মেয়ে তুমি অন্য কারো হও
পাবে না কেউ তোমাকে তুমি কারো নও,
চাই না মেয়ে তুমি অন্য কারো হও
পাবে না কেউ তোমাকে তুমি কারো নও।
তুমি তো আমার-ই জানো না হো ওওও
এ হৃদয় তোমার-ই ওওও,
তোমাকে ছাড়া আমি
বুঝি না কোনো কিছু যে আর,
পৃথিবী জেনে যাক
তুমি শুধু আমার।
তোমাকে ছাড়া আমি
বুঝি না কোন কিছু যে আর,
পৃথিবী জেনে যাক
তুমি শুধু আমার।”
অনু সরাসরি ভাব নিয়ে থাকলেও মনে মনে হাসছে রায়ান ভাইয়ের পরিবর্তন দেখে। গান গাওয়া শেষ ফ্যামিলি ফটো তোলার জন্য ডাকলেন বড়ো চাচ্চু। সবাই একসাথে দাঁড়িয়েছে। পিচ্চিগুলো একদম সামনের সারিতে পাটিতে বসে পড়েছে। দ্বিতীয় সারিতে রায়ান ভাই, অনু, জুঁই, আয়ানসহ যারা বড়ো ওরা হাঁটু মুড়ে বসেছে। একদম সিনিয়ররা ওদের পেছনে চেয়ারে বসেছে। রিয়াদ ভাইয়া কাজিনদের মধ্যমণি। সদস্য সংখ্যা অনেক বলে সবাই বেশ গাদাগাদি করেই বসেছে। সেই সুযোগে রায়ান ভাই অনুর কোমরে হাত রাখল ছবি তোলার সময়। অনু চমকে তাকাল রায়ান ভাইয়ের দিকে। ক্যামেরাম্যান তখন ক্লিক করে ফেলেছে। রায়ান ভাইও অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
“কী?”
দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে, তখন ক্যামেরাম্যান আরেকটা ক্লিক করল। অনু দাঁত-মুখ খিঁচে বলল,
“হাত সরান।”
রায়ান ভাই হাসল। কোমর থেকে হাত সরিয়ে, অনুর বাহুতে ধরে নিজের আরো কাছে এনে বলল,
“সামনে তাকা।”
কাছে টেনে নেওয়ার সময় অনু হা করে ফেলেছিল, আর রায়ান ভাই সামনে তাকিয়ে হাসছিল। এই দৃশ্যটিও ক্যামেরাতে বন্দি হয়ে গেছে।
ছবি তোলা শেষ হলে রাগে গজগজ করতে করতে অনু অন্যদিকে চলে গেল। রোমিও ওর কাছে এসে লেজ নাড়াচ্ছে। এত মানুষ দেখে হয়তো ওর অস্বস্তি লাগছে। অনু ওকে কোলে তুলে নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“বাড়িতে যাবি?”
রোমিও লেজ নাড়াচ্ছে। অনু বলল,
“চল তোকে বাসায় রেখে আসি।”
বাবাকে বলে অনু রোমিওকে নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে। পেছন পেছন রায়ান ভাইও এলো। পাশাপাশি হাঁটছে দুজনে। অনু তখনো রেগে আছে ভীষণ। বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে রায়ান ভাই বলল,
“অন্দি, তোকে একটা চুমু খাই?”
অনু চোখ দুটো বড়ো বড়ো করে বলল,
“কী? কী বললেন আপনি?”
রায়ান ভাই রোমিওকে অনুর কোল থেকে নিয়ে, গালে টুপ করে একটা চুমু খেয়ে বলল,
“এটার কথা বলেছি।”
তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব ১৮
অনু চোখ বড়ো করে, মুখ হা করে পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে। রায়ান ভাই রোমিওকে ওর ঘরে শুইয়ে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে দেখে, অনু বরফ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রায়ান ভাই হাসল। অনুর নাক ধরে টেনে কাঁধে হাত রাখল। গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
“শোন অন্দি, তোকে হৃদয়ের কুঠুরিতে করতে চাই বন্দি।”