Violent love part 45
Mariam akter juthi
“সূর্য ডুবে গেছে বেশ কিছুক্ষণ হয়, তবে আলোটা পুরোপুরি এখনো অন্ধকার হয়নি। এখনো বেশ চারপাশে আলো দেখা যাচ্ছে। হয়তো আর কিছুক্ষনের মধ্যেই পৃথিবীর বুকে অন্ধকার হয়ে রাত্রি নিয়ে আসবে। জুথি তখনের প্লান অনুযায়ী মাগরিবের নামাজ পড়ে ইভার রুমের সামনে এসে দরজা নক করতে বলল,
‘বনু ভিতরে আসি?
‘হুম আয় দরজা খোলাই আছে।
জুথি দরজাটা ঠেলে ভিতর আসতে দেখে রনি রেডি হয়ে আয়নার সামনে চুল আছরাচ্ছে। এটা দেখে জুথি বলল,
‘রনি ভাই আপনি চলে যাচ্ছেন?
‘হুম মেজ আপু।
‘রাতে আসবেন?
‘হুম, কাল সকালে তোমার আপুকে নিয়ে যাব, আসতে তো হবেই।
‘আচ্ছা, আসার সময় আমার জন্য চকলেট নিয়ে আসবেন।
‘আচ্ছা। — রনি আচ্ছা বলতে জুথি ইভার কাছে এগিয়ে বলল,
‘বনু, তোর না লাল একটা সিল্কের শাড়ি আছে? যেটা তুই কিছুদিন আগে কিনেছিলি?
‘হুম।
‘ওইটা আমাকে একটু দে না।
‘কি করবি?
‘পড়বো।
‘আলমারিটা খোল, দেখ কাতারে ঝোলানো আছে।
জুথি ইভার কথা মতো আলমারিটার সামনে এসে আলমারি টা খুলে, কাতার থেকে শাড়ি পেটিকোট ব্লাউজ নিয়ে ইভার দিক তাকিয়ে ওকে একটা হাসি উপহার দিয়ে বলল,
‘ধন্যবাদ বনু। তোর পড়ার আগেই শাড়িটা আমি পরে উদ্বোধন করে দিচ্ছি। — ইভাও জুথির কথায় সুন্দর একটা হাসি উপহার দিয়ে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘বলদ একটা, যা এবার।
‘হ যাবোই তো, জানিনা এখন দুজনে ইয়ে টিয়ে করবে। মানে চুম্মা চুমির কথা বলছি।
‘ফাজিল, কি বললি তুই?
‘ঠিকই তো বলেছি, না হলে এভাবে তাড়িয়ে দিচ্ছ কেন?
‘তবে রে, দাঁড়া তুই,, — কথাটা বলে ইভা উঠতে নিলে জুথি ইভার রুম থেকে ভো দৌড়। জুথি চলে যেতে সত্যিই রনি ইভার গালে কপালে চুমু খেয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
‘বউজান, আপনার কি লাগবে? — ইভা দুপাশে মাথা নাড়ালো। যার মানে, তার কিছু লাগবে না। ইভার মাথা নাড়ানো দেখে, রনি ঝুঁকে ইভার কোমল ঠোঁট দুটোতে চুমু খেতে ইভা লজ্জায় শিটিয়ে রনির টি শার্ট থামছে ধরতে, রনি ইভার কানে পাতায় আলতো কামড় দিয়ে বলল,
‘বউজান, এভাবে শার্ট খামচে ধরছেন? আপনাকে তো ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না, রাতে এলে আমাকে সামলাতে পারবেন তো? তখন আবার পালাই পালাই করবেন না তো? যদিও করেন, আমি কিন্তু আপনাকে ছাড়ছি না। — ইভা রনির লাগামহীন নির্লজ্জ কথায় ওকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে ছাড়িয়ে দূরে দাঁড়িয়ে লাজুক সরে বলল,
‘ধুর অসভ্য লোক, আপনি না বের হবেন? তাই জানত।
‘অসভ্য না হলে কি আর মেয়ের বাবা হতে পারব?
‘যাবেন আপনি? – লজ্জায় দুহাতে কান চেপে ধরে।
‘হ্যাঁ, এখন ঠিকই যাচ্ছি তবে রাতে কিন্তু কোনো ছাড় নেই। – দুষ্টু হেসে।
‘দুষ্টু লোক,রাতেরটা রাতে দেখা যাবে।
‘মনে থাকে যেন।
“জুথি তখন ইভার রুম থেকে শাড়িটা নিয়ে এসে, পরনের জামা কাপড় গুলো খুলে, ব্লাউজ পেটিকোট পরে খুব সুন্দর করে শাড়িটা পুতুলের মত করে পড়ে নিলো। সাথে হালকা মেকআপ, মোটা করে কাজল,আইলাইনার। হালকা শ্যাডো, নাকের উপর হাইলাইটার। চোখের পিসি গুলোতে মাসকরা। পিঙ্ক কম্বিনেশন করা সাদা পাথরের ছোট একটা টিপ। নিখুঁত বাঁকে করা, কোমল ঠোঁট দুটোতে লিফলাইনার দিয়ে একে গার করে লাল লিপিস্টিক পড়ে নিল। ব্যাস এতেই জুথিকে তাজা লাল গোলাপের মতো লাগছে। হাতে মোটামুটা দুটো রুলি,যেন সাজটা আরো বাড়িয়ে তুলছে। লাল শাড়ি সাজগোজের সাথে, আরিশের দেওয়া হীরের লাভ সেপের চেনটাও ঝলঝল করছে। জুথি সম্পূর্ণ মুখের সাজ টা শেষ করে, চুলগুলো আছড়ে সামনে থেকে সিঁথি করে দুপাশ মুড়িয়ে খেজুরবানি করে পিছন দিক ছেড়ে দিল। ব্যাস তার সাজ এখন সম্পূর্ণ কমপ্লিট। জুথির সাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যেতে আয়নার কাছ থেকে একটু পিছিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখে মুখে হাত দিয়ে নিজেই নিজেকে প্রশংসা করে বলে উঠল,
‘আল্লাহ, জুথি তুই এত সুন্দর? তোর তো তোকেই বিয়ে করা উচিত ছিল। আল্লাহ মনে হয় তোকে অনেক টাইম নিয়ে বানিয়েছে। তাই তুই এত সুন্দর, এজন্যই মনে হয় ওই হারামজাদা টা তোকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে বিয়ে করেছে। – জুথি একা একা নিজেকে নিয়ে আরো অনেক কিছু বকবক করে আবারও একা একাই বলল,
‘জুথি তুই এবার নিজেকে নিয়ে,একটু বেশি বলছিস না? নিজের এত প্রশংসা না করে, ভাব মোকলেসের সামনে কেমন করে এন্ট্রি নিবি।
জুথি বিছানায় পা দুলিয়ে ভাবতে ভাবতে, কিছু একটা মাথায় আসতে মুচকি হেসে উঠে দাঁড়ালো। তার পরিকল্পনা হয়ে গেলে বেশ কিছুক্ষণ পায়চারি করল রুমের মধ্য,আরিশ বাড়ি ফেরার জন্য। তবে আরিশের আসার টাইম নেই, দেখে জুথি এবার বিরক্ত হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে দরজাটা চাপিয়ে ঘুরতে নিলে করিডোর থেকে হেটে আসা রাদিফের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে,জুথি ততক্ষণে আউচ শব্দ করে ভয়ে চোখ বন্ধ করতে অনুভব করলো, কেউ তাকে খুব সাবধানে পড়ে যাওয়া থেকে আগলে রেখেছে। জুথি নিচে পড়ে যায়নি এমনটা মনে হতে, পিটপিট করে চোখ মেলে তাকাতে দেখল রাদিফের হা হয়ে যাওয়া মুখটা। জুথি রাদিফ কে নিজের দিক এভাবে হা করে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে, ওর থেকে কোন রকম স্বরে এসে সৌজন্য হাসি দিয়ে বলল,
‘তোমাকে ধন্যবাদ রাদিফ ভাই। আমাকে পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য। আমি এখন যাই। — বলে এক পা সামনে রাখতে রাদিফ তখনও জুথির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
‘সেই টোল পড়া হাসি, ঠোটের নিচে তিল। আজ এমন সাজ, আমাকে সেই আগের অনুভূতি দিচ্ছে। কেমন নেগেটিভ ফিল হচ্ছে। — রাদিফের এমন কথায় জুথি রাদিফের দিক ঘুরে বলল,
‘তুমি বিবাহিত রাদিফ ভাই, এসব কথা বলবে না।
‘তোমার চেহারা, তোমার হাসি। কিছুতেই তো ভুলতে পারিনা আমি। তুমি একবার শুধু বল আমার কাছে আসবে, বাকি সবটা আমি বুঝে নিব।
রাদিফ জুথির দিকে তাকিয়ে এমন ভাবে কথাগুলো বলল, জুথির কেমন একটা ফিল হল। রাদিফ যদি বিদেশ থেকে এসে পরপরই জুথি কে ভালবাসি বলতো, তাহলে হয়তো নরম হৃদয়ের জুথি রাদিফকেই নিজের সবটুকু দিয়ে ভালবাসত। রাদিফ সে তাকে রুমবন্দি নয়,বরং স্বাধীনতা দিত। কিন্তু আফসোস তার বলতে দেরি হয়ে গেল। জুথির রাদিফের কথায় খারাপ লাগলো, কিন্তু সেটা বুঝতে না দিয়ে বলল,
‘সেটা সম্ভব নয়, কারণ আমার হৃদয়ে ওনার (আরিশ) নাম স্থাপিত হয়ে আছে। আমার মস্তিষ্কে সারাক্ষণ উনি বিচরণ করেন। উনাকে ছাড়া আমি এমনিতেই দমবন্ধ হয়ে মারা যাব। কখন কিভাবে উনার প্রতি এতটা দুর্বল হয়েছি জানিনা। তবে এতোটুকু জানি উনি ছাড়া আমার কোন অস্তিত্ব নেই। উনি আমার স্বামী। আমি উনাকে ভালোবাসি। ঠিক ততটাই ভালোবাসি, যতটা ভালবাসলে নিজের জীবনটা কোন কথা ছাড়াই উনার নামে লিখে উৎসর্গ করে দিতে পারি। — বলে জুথি চলে যেতে নিলে রাদিফ জুথির হাত ধরে ওকে ঘুরিয়ে ওর হাত,ওর পেটের সাথে চেপে জুথির পিঠ ঠেকালো রাদিফের বুকে, অতঃপর রাদিফ জুথির ঘাড়ে মুখ ঠেকিয়ে বলল,
‘তুমি আমার হলে খুব বেশি কি ক্ষতি হয়ে যেত?
ততক্ষণে জুথি রাদিফের কথা ও এমন কাজে, রাদিফের থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ছুটাছুটি করে বলল,
‘কি করছো রাদিফ ভাই?আমাকে ছাড়ো। ছাড়ো না.. — কিন্তু রাদিফ ছাড়লো না, বরং জুথিকে ঘুরিয়ে ওর বুকের সাথে জড়িয়ে তাচ্ছিল্য কন্ঠে বলল,
‘এভাবে যদি অধিকার সহ জড়িয়ে ধরতে পারতাম, তো সারা জীবন এভাবে জড়িয়ে রাখতাম। — রাদিফের কোন কথায় জুথির মন নেই, রাদিফ কে নিজের থেকে ঠেলে সরাতে চাইলে রাদিফ ছাড়লো না জুথি কে। রাদিফ জুথি কে ছাড়ছে না বলে জুথি রাদিফের বুক থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য হালকা চেঁচিয়ে বলল,
‘ছাড়ো আমাকে, উনি এসে আমাকে এই অবস্থায় দেখলে, উল্টো আমার উপর রেগে যাবে। আর তখন আমার সব প্ল্যান ভেস্তে যাবে। — জুথির এমন চেঁচামেচির শব্দ পেয়ে, রোদ রাদিফের রুম থেকে বেরোলো দেখার জন্য, কে এভাবে ছাড়ো বলে চিৎকার করছে। রোদ বেরিয়ে চোখের সামনে এমন একটা দৃশ্য দেখবে সে খুনাক্ষরেও বুঝতে পারিনি। রোদ আসতে রাদিফ তখনও ছাড়লো না জুথি কে। জুথি এবার সহ্য করতে না পেরে রাদিফের হাতে কামড় দিতে রাদিফ ব্যথায় ওকে ছেড়ে দিতে, জুথি রোদের দিক না তাকিয়েই দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেল। জুথি চলে যেতে রোদ শূন্য চোখে বেশ কিছুক্ষণ রাদিফের দিক তাকিয়ে থেকে চুপচাপ সেভাবেই রুমে চলে যায়। রোদ চলে যেতে রাদিফ ও রোদের পিছু রুমে চলে আসে। রাদিফ রুমে এসে কিছু না বলে, ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে গেল। রাদিফ চলে যেতে রোদ আর পারলো না নিজের কান্না টাকে আটকে রাখতে, ততক্ষণে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে, দৌড়ে রুমের বারান্দায় চলে গিয়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করল। রোদ জানে, রাদিফ জুথি কে ভালোবাসতো,হয়ত এখনো ভুলতে পারছেনা। কিন্তু রোদ রাদিফের বউ হয়ে সেটা মানা দুষ্কের। রোদ চায়না নিজের দুর্বলতা কাউকে জানাতে। কারণ দুর্বলতার জায়গাটা কেউ একবার জেনে গেলে, বরং বার মানুষ সেটা দিয়েই আঘাত করে। রোদ হিচকি দিয়ে কান্না করার মধ্যে হঠাৎ ঘাড়ে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে সেদিক তাকাতে, রাদিফ কে দেখে কোন কিছু না ভেবেই রাদিফের গলা ঝাপটে ঝরিয়ে কান্না করতে করতে বলল,
‘রাদিফ ভাই আমি একটা মেয়ে, আর একটা মেয়ের সবচেয়ে ভরসা অধিকারের জায়গা তার স্বামী। তাহলে আপনি আমার সেইটুকু কেন কেড়ে নিচ্ছেন? স্বামীর অধিকার নিলেন,কষ্ট দিলেন। কই আমি তো কিছু বলিনি? বরং আমি তো আপনার সবকিছু মেনেই নিয়েছি। তাহলে আপনি কেন,,, — রোদ হিচকি দিয়ে কান্না করে কথাগুলো বলার মধ্য রাদিফ রোদকে কোলে তুলে বারান্দা থেকে রুমে এনে, রোদ কে বিছানার উপর বসিয়ে রোদের চোখের পানি মুছে দিতে রোদ তখনও হিচকি দিয়ে সমান তরে কাঁদছে দেখে রাদিফ বলল,
‘নারীর নীরবতা, চোখের পানি, পুরুষকে বাধ্য হতে বাধ্য করে। তোর আর আমার, বিয়ে হল ১২ দিন। যেই ১২ দিন তুই শুধুই কেদেছিস। দেখ আমি তোকে ভালবাসি না। কোনদিন বাসবো কিনা তাও জানিনা। তবে এটা বুঝতে পারছি, ভালোবাসার মানুষটা চোখের সামনে ভালো থাকলে আমারও ভালো লাগবে। তবে এটাই, যাকে ভালোবেসেছি সে চোখের সামনে সর্বক্ষণ থাকলে, ভালোবাসাটা হৃদয়ের এক কোণে থেকেই যায়। তবে আমি চেষ্টা করব তোকে ভালবাসতে, তোকে বউয়ের মর্যাদা দিতে। ভুলে যাস এতদিন আমার করা অত্যাচার গুলো। – এতোটুকু বলে থেমে আবার বলল,
‘আমি তাকে চেয়েছিলাম। এমন তো কোন কথা নেই, তাকে পেতেই হবে। সে থাক না অন্য কাউকে জড়িয়ে ভালো, আমি না হয় ইতিহাসের পাতা উল্টে দূর থেকে নয়, কাছ থেকে দেখব। দূর আকাশের সন্ধ্যা তারা ভেবে অন্ধকারে হারিয়ে গেছে ভাববো। তবুও চাইবো সে ভালো থাকুক, সে যাকে চায়, সে যেন তাকে আকাশ সমান ভালোবাসে, ভালো রাখে। আমার এতটুকুই শাফায়া। — একনাগাড়ে কথাগুলো শেষ করে, রোদকে বিছানা থেকে দাঁড় করিয়ে পুনরায় রোদের চোখের পানি মুছিয়ে রোদকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিজের কান্নাটা ঠোঁট কামড়ে আটকিয়ে বলল,
‘কাদিস না রোদ, মেয়েদের কাঁদতে হয় না। মেয়েদের চোখে পানি মানায় না। তুই হাঁস, ঠিক ততটাই হাঁস, যতটা হাসলে তুই ভালো থাকবি।
‘আপনি আমায় ভালোবাসবেন?
‘চেষ্টা করব।
‘কষ্ট দিবেন?
‘না।
‘একটা বাচ্চার মা বানাবেন?
‘ভবিষ্যতে।
‘যদি দুটো বাবু চাই?
‘দিব।
‘সত্যিই?
‘হুম। — দুজনার আর কোন কথা হলো না। রুমজুড়ে নীরবতা বিরাজ করল। তবে হয়তো এখান থেকেই শুরু হবে না হওয়া এক ভালবাসার শুরু। দুটি মন বৈধতার বেড়াজালে মায়ায় মুরানোর গল্প। তবে শেষটা ভালো হোক এটাই কামনা।
“জুথি তখন রাদিফের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে রুমে এসে, রাদিফের কর্মকাণ্ড গুলো মন থেকে ঝেড়ে ফেলে, বেশ সময় অপেক্ষা করল আরিশ বাড়ি ফেরার। কিন্তু আরিশ এখনো আসছে না দেখে, একবার রুমের বারান্দায় যাচ্ছে, তো আর একবার রুমে আসছে। ওর এমন পাইচারি করার মধ্য বারান্দায় গিয়ে দোলনাটায় বসতে, আরিশ আয়ান একসাথেই এলো বাইক নিয়ে। কি একটা স্বভাব? বাড়িতে দুই তিনটা মার্সিডিজ থাকতে এরা বাইক নিয়ে সব সময় চলাচল করে কেন? আরে বাবা মাঝে মাঝে তো কার নিয়েও যাওয়া যায়? জুথি এসব কথা আর না ভেবে, উঠে দৌড়ে রুমে এসে আয়নার সামনে নিজেকে একবার ভালো করে দেখে নিয়ে ঠোঁট কামড়ে হেসে দরজা খুলে ঢং করতে করতে করিডোর পেরিয়ে সিঁড়ি পর্যন্ত আসতে দেখল আরিশ এখনো বাড়ির ভিতরে ঢুকেনি। জুথি দরজায় উঁকি ঝুঁকি মারতে, আরিশ গম্ভীর মুখে আয়ানকে কিছু বলতে বলতে বাড়িতে ঢুকছে। হয়তো আরিশের দিক ভালো করে তাকালে বুঝতে পারত।
আরিশ কোন কিছু নিয়ে ভীষণ ক্ষেপে আছে। কিন্তু জুথি আরিশ কে দেখামাত্র কোন কিছু না ভেবেই সিঁড়ি থেকে নামার সময় হঠাৎ আরিশের ও চোখ পরল তার লাল টুকটুক শাড়ি পরা বউয়ের উপর। আরিশ জুথি কে এমন বউয়ের মত শাড়ি পরা দেখে আয়ানের সাথে কথা বলা ভুলে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার মধ্য ,আয়ান হঠাৎ আরিশ কে চুপ হয়ে যেতে দেখে ভ্রু কুঁচকে আরিশের দিক তাকিয়ে ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে সেদিক তাকিয়ে জুথি কে দেখা মাত্র, কোন কথা না বলেই আস্তে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। ওদিকে আয়ান চলে যেতে, জুথি আশপাশ তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে, যখন বুঝতে পারলো আরিশ ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তখন শাড়ির আঁচলটা সম্পূর্ণ কাঁধের উপর উঠিয়ে হলুদ ফর্সা পেটটা সম্পন্ন উন্মুক্ত করতে, আরিশ সে দিক তাকিয়ে ঢোগ গিলে, চোখ বন্ধ করে নিয়ে মাথা চুলকাতে, জুথি ততক্ষণে সিঁড়ি বেয়ে নামতে আরিশ চোখ মেলে জুথির দেখ তাকিয়ে বলল,
‘আমার সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে। – বলে হাত উচিয়ে জুথি কে ইশারায় কাছে ডাকতে, জুথি ভেংচি কেটে ওকে ইগনোর করে রান্নাঘরে চলে যেতে, আরিশ জুথি কে ওকে ইগনোর করতে দেখে হাত দুটো মুঠিবদ্ধ করে নিঃশ্বাস ফেলে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
‘বেয়াদব নারী, অবাধ্য হতেই হবে। – বলে রান্নাঘরের দিকে যেতে দেখে, জুথি সানজিদা খানের সাথে রাতের খাবার রেডি করতে সাহায্য করছে। এটা দেখে আরিশ নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে বলল,
‘মৌ রুমে আয়। – আরিশের গলা পেয়ে জুথি সানজিদা খানের পিছনে লুকাতে লিমা খান সেদিক তাকিয়ে বললেন,
‘কি হলো আরিশ বাবা ডাকছে তো? যাও।
লিমা খানের কথায় জুথি সানজিদা খানের পিছনে লুকানো অবস্থায় বলল,
‘মা তোমার ছেলেকে বল, আমি যাব না ওনার সাথে। উনাকে এখান থেকে চলে যেতে বল। – জুথির মুখে যাবো না শুনে, আরিশ রাগে হাতের কাছে রাখা রান্নাঘরের চিনির বৈয়ামটা পেয়ে ততক্ষণে সেটা আছাড় মেরে ভেঙ্গে চেঁচিয়ে বলল,
‘বান্দির বাচ্চা, মুখের উপর না বলস, তোরে তো আমি আজ,, — বলে তেরে জুথির দিক যেতে নিলে সানজিদা খান আরিশের সামনে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে রাগ কমানোর চেষ্টা করে বললেন,
‘যাবে তো আমার বাবা, মৌ তোমার সাথেই যাবে। – বলে উনি জুথির দিক তাকিয়ে বললেন,
‘মৌ ওর সাথে যাও। – সানজিদা খানের কথায় জুথি হুট করে রান্নাঘর থেকে দৌড়ে বের হয় যেতে যেতে চিল্লিয়ে বলল,
‘যাব না আমি, তোমার ওই শয়তান ছেলেটার সাথে। – কথাটা বলতে বলতে দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নিজের রুমে চলে এসে দরজাটা ঠাস করে লাগিয়ে দিতে, আরিশ সেদিক তাকিয়ে রাগে শূন্য হয়ে চুল খামছে ধরল। এমনেই সে রেগে ছিল,এখন আবার নিজ নারীর কথার অবাধ্যতা, দেখে আরিশ সানজিদা খানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে সিঁড়ি বেয়ে জুথির দরজার সামনে এসে দরজা ধাক্কে বলল,
‘মৌ ভালো চাস, তো দরজা খোল। আর নয়তো,,, – জুথি আরিশের কথার তেমন পাত্তা না দিয়ে বলল,
‘নয়তো? না খুললে কি করবেন হ্যাঁ? ডুবলিকেট চাবি দিয়ে ভিতরে ঢুকবেন? হা,হা তার কোন সুযোগ নেই। কারণ চাবিটা আমি আগেই চুরি করে নিয়ে এসেছিলাম আপনার রুম থেকে। এখন ভিতরে আসবেন কি করে?
‘দরজা ভেঙ্গে ভিতরে আসবো,,
‘ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, দরজা ভাঙলে বড় আব্বু আপনাকে ভাঙবে।
‘হাফফুট দরজা খোল, – চিৎকার দিয়ে কথাটা বলে দরজায় লাথি দিতে জুথি আরিশ কে আবারো চেচিয়ে বলল,
‘আপনাকে ভয় পাই নাকি? যে দরজায় লাথি দিলে দরজা খুলে দিব? উহুম একদম না।
‘তোর বুকে যখন এত সাহস, দরজাটা একবার খোল।
আরিশ কথাটা বলতে, জুথি মনে মনে আওরালো, — ‘হ আমারে তো পাগলা কুত্তায় কামড়াইছে, যে দরজা খুলে আপনার হাতে দাবাং মার্কা চড় খাই। তার চেয়ে বরং আমি কুল মুডে ডান্স করি, মনে মনে এসব কথা ভেবে আগে থেকে এনে রাখা সাউন্ড বক্সটা অন করতে সেটা থেকে হিন্দি গানে বেজে উঠলো,
~ডারো পিক ডান্স করে, ডান্স করে,
~ ডান্স করে..
জুথি গানের তালে তাল মিলিয়ে ডান্স করতে, আরিশ রুমের মধ্যে গানের শব্দ পেয়ে এবার নিজেকে চেয়েও স্বাভাবিক রাখতে পারল না। অতিরিক্ত রাগে শূন্য হয়ে দরজায় পরপর শব্দ করে লাথি মারতে, জুথি ডান্স বন্ধ করে কেঁপে উঠে তাড়াতাড়ি সাউন্ড বক্সটা বন্ধ করে দিতে, বাহির থেকে শুনতে পেল আরিশের অতিরিক্ত রাগের গর্জনী,
‘একটুখানি পুটুলি, শাড়ি পড়ে আমাকে পাগল করে, রুম আটকে ডান্স মারাও? তোরে একবার হাতের নাগালে পাই, খোদার কসম তোকে যদি জানে শেষ না করি, দরজা খোল।
Violent love part 44 (2)
আরিশের এত জোরে দরজা ধাক্কানোর শব্দ,সাথে এমন গর্জনী দেওয়া কথায়, জুথির সব সাহস হাওয়া হয়ে কই গেল কে জানে? মুহূর্তেই ভয়ে শিটিয়ে গিয়ে, এক জায়গায় জড়সড় হয়ে দাঁড়াতে। আরিশ তখনো জুথি দরজা খুলছে না দেখে,দরজা ভাঙার জন্য জোরে জোরে লাথি মারতে, নিচ থেকে এত জোরে দরজা ধাক্কানো শব্দ পেয়ে,সানজিদা খান লিমা খান সাথে ওনার বাকি দুই জাল, সাফওয়ান খান, ওনার ভাইয়েরা থেকে শুরু করে ছোট বড় সবাই জুথির দরজার সামনে আসতে আরিশ তখনও সমান ভাবে দরজায় লাথি মারতে সানজিদা খান আরিশের কাছে যেতে নিলে, আরিশ চেঁচিয়ে বলে উঠল,,,,