হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ১৬
তোয়া নিধী দোয়েল
কলেজ ক্যাম্পাসের আশে পাশে অনেক স্টুডেন্ট। কেউ কেউ কাঠ-বাগানে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কেউ ক্লাসের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে।
নতুন ভবনে যাওয়ার রাস্তায়; একটি মেয়ে এক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে নতুন ভবনের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। হঠাৎ পেছন থেকে ব্যাগে সজোরে টান পড়ায় মেয়েটি চলন্ত পা থামিয়ে দেয়। ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকায়।
একটা ছেলে তাঁর ব্যাগ ধরে ঠোঁটে শয়তানি হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটার বুক ধক করে উঠে! শ্বাস প্রশ্বাসের মাত্রা বেড়ে যায়! ছেলেটা ঠোঁটে শয়তানি হাসি বজায় রেখে মেয়েটির উদ্দেশ্যে বলে,
“এই সুন্দরী শুনে যাও!”
মেয়েটার ঠোঁট কেঁপে উঠে। ভীত কণ্ঠে বলে,
“এই ভাবে আমার ব্যাগ ধরেছেন কেনো? ছাড়ুন বলছি। ছাড়ুন।”
আশে পাশে অনেক স্টুডেন্ট এই সব দেখছে। কিন্তু, কেউ এগিয়ে আসছে না। ছেলেটা হাসি আরও প্রসার করে বলে,
“আমার প্রপোজাল গ্রহণ করো সুন্দরী। আর কত দিন আমাকে তোমার পেছনে এই ভাবে ঘুরাবে?”
মেয়েটি আবারো ভীত কণ্ঠে বলে,
“ছাড়ুন আমার ব্যাগ। কত বার বলেছি আমি রিলেশন করবো না। কেনো বার বার আমার পেছনে এই ভাবে পড়ে আছেন?”
ছেলেটি ঠোঁট অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে নাড়িয়ে বলে,
“চু…..”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কথা শেষ করার আগে-ই, ছেলেটির গালে শব্দ করে একটা চড় পড়ে যায়! আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যায় আশে পাশে সবাই। ছেলেটি মেয়েটির ব্যাগের যে জায়গায় ধরেছিলো তার কিঞ্চিৎ উপরে আরেকটা হাত! ছেলেটি চড় খেয়ে চোয়াল শক্ত করে হিংস্র দৃষ্টি নিয়ে পাশে তাকায়।
অপরুপ সৌন্দর্যের অধিকারিণী এক নারীর, দুটি মায়াবী চোখের অগ্নি দৃষ্টি স্থির হয়ে আছে তার দিকে! নারীটি শান্ত কণ্ঠে বলে,
“ব্যাগ ছাড়।”
মেয়েলী কণ্ঠস্বর শুনে ছেলেটি আরও শক্ত করে ব্যাগ ধরে। ক্রোধ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। যে মেয়েটির ব্যাগ ধরা হয়েছে সেই মেয়েটি ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। মেয়েটির চোখের পানি গাল অবধি আসার আগে-ই; পাশে থাকা নারীটি অন্য হাত দিয়ে মুছে দেয়। মেয়েটি অবাক চোখে তাকায়। পরপরই ওই নারীটি হুংকার দিয়ে উঠে,
“ব্যাগ ছাড় শু***বা**। ও কি তর মায়ের পেটের বোন! যে এই ভাবে ব্যাগ ধরছস?”
মেয়েটির গর্জন শুনে ছেলেটি দ্রুত ব্যাগ ছেড়ে দেয়। রক্তিম চোখে তাকিয়ে থাকে নারীটির দিকে। আশে পাশে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। মেয়েটি ব্যাগ ছাড়া পেয়ে বুকে জড়িয়ে আবারও ফুপিয়ে উঠে। পাশে থাকা নারীটি মেয়েটির দুই বাহু চেপে ধরে নিজের দিকে ঘুরায়। আবারো চোখ মুছে দিয়ে বলে,
“কাঁদছো কেনো? নিজের কর্ণধার নিজে হও। বেজ*ন্মাদের শাস্তি দিতে পিছপা হও কেনো? তোমার জুতা খোলো।”
মেয়েটি চোখ বড় বড় করে তাকায়। সামনে থাকা ছেলেটি গর্জে উঠে,
“এই মেয়ে এই। তুই জানোছ আমি কে…”?
মেয়েটি ঘুরে আরেকটা চড় মারে ছেলেটিকে। এইবার ছেলেটির মাথায় রক্ত উঠে যায়। ছেলেটি হিংস্রতা নিয়ে হাতের আঙুল উঁচিয়ে গর্জে উঠে,
“এএইইই”
“ওইইইইই। এক দম চুপ। গলার স্বর নিচু কর। আঙুল নামা বেজ**।”
মেয়েটিও হাতের আঙুল উঁচিয়ে ছেলেটির চেয়ে দ্বিগুণ হিংস্রতার স্বরে বলে। ছেলেটি রাগে ফোসতে থাকে। আশে পাশে থাকা সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে রয়েছে! একটা মেয়ের এত তেজ কি ভাবে হতে পারে! মেয়েটি ঘুরে ওই মেয়েটির উদ্দেশ্যে বলে,
“জুতা খুলতে বলেছি তোমাকে। জুতা খুলে এই বেজ** গালে ঠাস করে একটা চড় দেও। বুঝিয়ে দেও তোমাকে অপমান করার ফল।”
একটা মেয়ে দৌড়ে এসে মেয়েটির হাত ধরে বলে,
“উপমা! কি করছিস তুই। পাগল হয়ে গেছিস। সরে আয় বলছি।”
“সূচি সর তুই। এই জানু**টাকে আজ শাস্তি না দিলে এই রকম অন্যায় ও বার বার করবে। আর ওকে নারীজাতিকে এত ভীতু ভাবার ফল ভোগ করতে হবে।”
উপমা ওই মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আবারও বলে,
“কি হলো। তোমাকে…”
মেয়েটি কান্নামাখা স্বরে বলে,
“আপা ছেড়েদেন ওকে। আপনি মেরেছেন এতে-ই হয়েছে।”
“না হয়নি। অন্যায় তোমার সাথে করেছে তাই শাস্তি তুমি দিবে। দেও বলছি।”
“এই এই তুই চেনছ আমাকে?”
উপমা ঘাড় কিঞ্চিৎ বাঁকিয়ে বলে,
“তোকে তো চিনিনা। তবে তোর মাকে চিনি। যে পতিতালয় থাকে। তাই তোর মত জানু** জন্ম দিছে।”
“এই খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু। তুই আমাকে..।”
“গলার স্বর নিচে নামা। তা না হলে…”। (চোখ গরম করে)।
“উপমা…উপমা কি করছিস তুই।”
“কি হলো…।”
“আপা পরে যদি আমাকে ধরে।”
উপমা আশ্বাস্ত দিয়ে বলে,
“আমি আছি। তুমি শুধু জ্বলে উঠো।”
ছেলেটি দৌড়ে পালাতে গেলে উপমা লেং মেরে ফালিয়ে দেয়। ছেলেটি উবু হয়ে পড়ে। আশে পাশে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। তবে কিছু দূরে একটি ছেলে মুদ্ধ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে উপমার দিকে। সে এই রকম মেয়ে জীবনে আরেকটা দেখেনি। যেমন সুন্দর তেমন তেজি! মূহুর্তে মনঃস্থ করে ফেলে এই মেয়ে তাঁর চাই চাই!
উপমা পড়ে যাওয়া ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে,
“কই পালাচ্ছিস সোনার চাঁদ। বলে যা কে তুই। আর শুনে যা কে আমি!”
তারপর মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলে,
“শুরু করো।”
মেয়েটি দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে পায়ের জুতা খোলে। ছেলেটি চিৎকার করে,
“সুমা..সুমা খুব খারাপ হবে বলে দিচ্ছি। দূরে যা। দূরে যা।”
সুমা নামে মেয়েটি মৃদু তেজ নিয়ে বলে,
“খারাপ তো এখন হবে জানুয়া***।”
এই বলে জুতা দিয়ে ইচ্ছে মতো পেটাতে থাকে। এলোপাথাড়ি কিছুক্ষণ মারার পর দূরে থাকা ছেলেটি ছুটে আসে। পড়ে থাকা ছেলেটিকে উঁঠিয়ে দুই তিনটা চড় মেরে বলে,
“মাফ চা।”
ছেলেটি অবাক চোখে তাকায়। ছেলেটি আবার বলে,
“কথা কানে যায় না। মাফ চা বলছি”।
উপমা সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আগন্তুকের দিকে। ছেলেটি উঠে এসে সুমার কাছে এসে বলে,
“আমাকে মাফ করে দেও সুমা। আই আম সরি।”
উপমা ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে বলে,
”উহুম। এই ভাবে না। হাঁটুগেড়ে বসে দুই হাত জোর করে মাফ চাইতে হবে।”
ছেলেটি চোখ বড় বড় করে তাকায় উপমার দিকে। পেছনে থাকা আগন্তুক বলে,
“কি হলো কথা কানে যায় না। যে ভাবে মাফ চাইতে বলছে চা।”
ছেলেটি সুমার সামনে হাঁটুগেড়ে বসে দুই হাত জোর করে মাফ চায়। উপমা বলে,
“যদি আর কখনো কোনো মেয়ের পেছনে লাগিস, এর চেয়ে খারাপ অবস্থা করবো তর।”
“আসো।”
এই বলে মেয়েটিকে নিয়ে নতুন ভবনের দিকে চলে যায়।
আগন্তুক ছেলেটি কিছু ছেলেকে নির্দেশ দিলে তাঁরা ওই ছেলেটিকে ধরে নিয়ে চলে যায়। উপমার চলে যাওয়ার পর একটা মেয়ে উপমার নাম ধরে ডাকে। তবে উপমা তা শুনতে পায় না। তবে আগন্তুক ছেলেটি বলে,
“মিলি।”
মেয়েটা দাঁড়ায়।
“সাইমম। কি রে ভাই তোর তো দেখাই পাওয়া যায় না।”
“এইতো। ওই মেয়েটাকে তুই চিনিস?”
মিলি বলে,
“কোন মেয়ে?”
“আরে ওই যে লম্বা চুলের মেয়েটাকে। যাকে একটু আগে ডাকলি মনে হলো।”
“হ্যাঁ। কেনো?”
“এই দিকে আয় তোর সাথে একটা কথা আছে।”
ক্লাসে বসে বসে ঘুমাচ্ছে তুর্কি। ওই অসভ্য লোকটার জন্য সাত সকালে ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে। পাশে বসে এক নাগাড়ে বকবক করে যাচ্ছে সোফিয়া। তবে তাতে তুর্কির কোনো হেলদোল নেই। এখন থেকে ও রোজ ক্লাসে এসে ঘুমাবে।
ক্লাসে তেমন স্টুডেন্ট নেই। তবে হুট করে এক এক করে স্টুডেন্ট ঢুকতে থাকে ক্লাসে।
“কিরে হুট করে ক্লাসে এমন পোলাপান আসছে কেনো?এই বা* তুই কি আমার কথা শুতাছস?”
তুর্কি মৃদু স্বরে বলে,
“হুম।”
“দেখ হুট করে কেমন ক্লাস ভরে উঠলো। বা* তুই আমার কথা শুনতাছস না। এই রকম মরার মত করতাছস কেন। রাতে কি ডাকাতি করতে গেছিলি যে এখন ঘুম পারতাছস?”
এত শোরগোল শোনার পর তুর্কি বিরক্ত মুখে তাকিয়ে বলে,
“বা* তোর প্রেমকাহিনী শোনার ইচ্ছা আমার নাই। চুপ থাক। আমাকে ঘুমাতে দে।”
“ভাই আমি প্রেমকাহিনী কই বলতেছি? তুই সারারাত কি করছস যে এখন ঘুম পারতাছস।”
তুর্কি কিছু বলতে যাবে তখন ক্লাসে ঢুকে আদনান। আদনানকে দেখে প্রায় স্টুডেন্টের মুখে হাসির রেখা দেখা যায়। তবে এই ছিলো কারণ! হুট করে এত স্টুডেন্ট ক্লাসে আসার৷ আজ আদনানের ক্লাস আছে। সোফিয়া খুশিতে তুর্কিকে চিমটি কাটে।
“দোস্ত দোস্ত! দেখ দেখ আদনান স্যার। উফ্! স্যারটা কে যে কি ভালো লাগে।”
তুর্কি বিরক্ত নিয়ে সোফিয়ার দিকে তাকায়। এই বুইড়া মার্কা স্যারকে দেখে এত এই রকম করার কি হলো!
“তুই দেখ বেশি বেশি।”
আদনান দৃষ্টি ঘুরিয়ে প্রেয়সীর অবস্থান দেখে। টিচার হিসেবে আদনান অসাধারণ! লেকচার স্ট্যান্ডের উপর দাঁড়িয়ে চমৎকার করে হেসে বলে,
“গুড মর্নিং এভ্রিওয়ান।”
সবাই বিনয়ের সাথে উত্তর নেয়।
“বাহ্! তোমাদের প্রেজেন্স তো অসাধারণ। রুবেল বললো দুই তিন জন ছাড়া ক্লাসে নাকি কাউকে পাওয়া যায় না?”
একটা মেয়ে বলে,
“রুবেল স্যারের ক্লাস ভালো লাগে না। এক দিন করেছিলাম। শুধু ধমকায়। কিছু জিজ্ঞাসা করলে ও ধমকায়। পুরো ঘন্টা এক দমে পড়ায়। অসহ্য লাগে।”
একটা ছেলে বলে,
“স্যার, আমি গার্লফ্রেন্ডর সাথে ঘুরতে আসছিলাম। হঠাৎ মনে পড়লো আজ আপনার ক্লাস। গার্লফ্রেন্ড ফেলেই চলে এসেছি।”
ছেলেটির কথা শুনে পুরো ক্লাস হাসিতে ফেটে পড়ে। আদনান ও হাসে। তুর্কি অবাক চোখে তাকায়। এই ঘাড়ত্যাড়া লোক হাসতে ও জানে! আদনান কে সবার পছন্দ করার অন্যতম কারণ ও ভীষণ ফ্রি মাইন্ডের। আদনান বলে,
“দিস ইজ নট গুড। আমি ইন্টারে থাকাকালীন প্রতিদিন ক্লাসে আসতাম। মা বাবা কথা মেনে চলতাম।”
সবার হাসি মিলয়ে যায়। পরপরই আদনান বলে,
“এইটা সব চেয়ে বড় মিথ্যা কথা!”
পুরো ক্লাস পুনরায় হাসিতে ফেটে পড়ে।
“একবার ক্লাসের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। কিন্তু, সেই দিন ছিলো কেমিস্ট্রি প্রাকটিক্যাল ক্লাস। আমাদের সময় দুই তিন ঘণ্টা ধরে প্রাকটিক্যাল ক্লাস হতো। এক দিন গিয়েই বিরক্ত হয়েগেছিলাম। পরে আর থাকতে না পেরে পাশে থাকা কয়েকটা এসিড আরো কি কি যেনো ছিলো। একটার মধ্যে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেয়েছিলাম। এর পর থেকে আর কোনো দিন কলেজের দিকে যাই নি।”
পুরো ক্লাস আবারো হাসিতে ফেটে পড়ে। তুর্কি অবাক হয়ে আদনানের কথা শোনে। এই কি সেই লোক! একরোখা ঘাড়ত্যাড়া! এর কথায় সবাই এত হাসছে। অথচ ওকে সব সময় পড়ায়। আজ বাড়ি যাক। মজা বোঝাবে। আদনান হাসি থামিয়ে বলে,
“ওকে। ওকে লিসেন! এই বার পড়া শুরু করা যাক।”
“দোস্ত। দেখছস স্যারটা কি অসাধারণ! উফফ কে যে স্যারের বউ হবে। সে খুব লাকি। এই রকম রসিক এক জন্য মানুষ পাবে!”
“হুম ভাগ্যবতী না গু*বতি সে তো আমি জানি।”
“কিছু বললি?”
“দোস্ত তুই কি পাগল? তুই কেনো ওই ছেলেটার সাথে লাগতে গেলি? যদি তর কোনো ক্ষতি করে?”
“উফফ সূচি! এক কথা কতবার বলবি। তুই জানিস আমি কোনো অন্যায় দেখলে সহ্য করার মানুষ না। আর সেটা যদি কোনো মেয়ের সম্মান নিয়ে হয় তবে তো আরও না।”
“তবু ও দোস্ত আমার ভয় লাগছে।”
উপমা আর সূচি নতুন ভবন থেকে নিচে নামছে। ওই মেয়েটার সাথে কথা বলে জানতে পেরেছে মেয়েটার সুমা। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আর ওই ছেলেটার নাম জিতু। অনেক দিন ধরে ছেলেটা ওর পেছনে পড়ে আছে। ও অনেকবার না করেছে তবু ও শুনে নি। উপমা ওর নাম্বার দিয়ে দিয়েছে। যদি আবার কোনো দিন বিরক্ত করে ওকে যেনো ফোন দিয়ে জানায়।
মিলি উপরে উঠতে গিয়ে সিঁড়িতে দেখায় হয় উপমা আর সূচির সাথে। মিলি উপমাকে বলে,
“কিরে ডাকলাম তখন শুনলি না কেনো?”
“খেয়াল করিনি। কেনো কোনো দরকার?”
“না এমনি। চল”।
এক সাথে নিচে নামে ওরা তিনজন। উপমা ও সূচি বেস্ট ফ্রেন্ড। মিলি নিচে নেমে উপমার উদ্দেশ্যে বলে,
“দোস্ত দোস্ত। আজ তর একটা পরিক্ষা নেবো।”
উপমা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে,
“কি পরিক্ষা?”
“তুই তো অনেক সাহসী। তো আজ তর সাহসের পরিক্ষা নেবো।”কলেজ ক্যাম্পাসের আশে পাশে অনেক স্টুডেন্ট। কেউ কেউ কাঠ-বাগানে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কেউ ক্লাসের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে।
নতুন ভবনে যাওয়ার রাস্তায়; একটি মেয়ে এক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে নতুন ভবনের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। হঠাৎ পেছন থেকে ব্যাগে সজোরে টান পড়ায় মেয়েটি চলন্ত পা থামিয়ে দেয়। ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকায়।
একটা ছেলে তাঁর ব্যাগ ধরে ঠোঁটে শয়তানি হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটার বুক ধক করে উঠে! শ্বাস প্রশ্বাসের মাত্রা বেড়ে যায়! ছেলেটা ঠোঁটে শয়তানি হাসি বজায় রেখে মেয়েটির উদ্দেশ্যে বলে,
“এই সুন্দরী শুনে যাও!”
মেয়েটার ঠোঁট কেঁপে উঠে। ভীত কণ্ঠে বলে,
“এই ভাবে আমার ব্যাগ ধরেছেন কেনো? ছাড়ুন বলছি। ছাড়ুন।”
আশে পাশে অনেক স্টুডেন্ট এই সব দেখছে। কিন্তু, কেউ এগিয়ে আসছে না। ছেলেটা হাসি আরও প্রসার করে বলে,
“আমার প্রপোজাল গ্রহণ করো সুন্দরী। আর কত দিন আমাকে তোমার পেছনে এই ভাবে ঘুরাবে?”
মেয়েটি আবারো ভীত কণ্ঠে বলে,
“ছাড়ুন আমার ব্যাগ। কত বার বলেছি আমি রিলেশন করবো না। কেনো বার বার আমার পেছনে এই ভাবে পড়ে আছেন?”
ছেলেটি ঠোঁট অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে নাড়িয়ে বলে,
“চু…..”
কথা শেষ করার আগে-ই, ছেলেটির গালে শব্দ করে একটা চড় পড়ে যায়! আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যায় আশে পাশে সবাই। ছেলেটি মেয়েটির ব্যাগের যে জায়গায় ধরেছিলো তার কিঞ্চিৎ উপরে আরেকটা হাত! ছেলেটি চড় খেয়ে চোয়াল শক্ত করে হিংস্র দৃষ্টি নিয়ে পাশে তাকায়।
অপরুপ সৌন্দর্যের অধিকারিণী এক নারীর, দুটি মায়াবী চোখের অগ্নি দৃষ্টি স্থির হয়ে আছে তার দিকে! নারীটি শান্ত কণ্ঠে বলে,
“ব্যাগ ছাড়।”
মেয়েলী কণ্ঠস্বর শুনে ছেলেটি আরও শক্ত করে ব্যাগ ধরে। ক্রোধ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। যে মেয়েটির ব্যাগ ধরা হয়েছে সেই মেয়েটি ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। মেয়েটির চোখের পানি গাল অবধি আসার আগে-ই; পাশে থাকা নারীটি অন্য হাত দিয়ে মুছে দেয়। মেয়েটি অবাক চোখে তাকায়। পরপরই ওই নারীটি হুংকার দিয়ে উঠে,
“ব্যাগ ছাড় শু***বা**। ও কি তর মায়ের পেটের বোন! যে এই ভাবে ব্যাগ ধরছস?”
মেয়েটির গর্জন শুনে ছেলেটি দ্রুত ব্যাগ ছেড়ে দেয়। রক্তিম চোখে তাকিয়ে থাকে নারীটির দিকে। আশে পাশে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। মেয়েটি ব্যাগ ছাড়া পেয়ে বুকে জড়িয়ে আবারও ফুপিয়ে উঠে। পাশে থাকা নারীটি মেয়েটির দুই বাহু চেপে ধরে নিজের দিকে ঘুরায়। আবারো চোখ মুছে দিয়ে বলে,
“কাঁদছো কেনো? নিজের কর্ণধার নিজে হও। বেজ*ন্মাদের শাস্তি দিতে পিছপা হও কেনো? তোমার জুতা খোলো।”
মেয়েটি চোখ বড় বড় করে তাকায়। সামনে থাকা ছেলেটি গর্জে উঠে,
“এই মেয়ে এই। তুই জানোছ আমি কে…”?
মেয়েটি ঘুরে আরেকটা চড় মারে ছেলেটিকে। এইবার ছেলেটির মাথায় রক্ত উঠে যায়। ছেলেটি হিংস্রতা নিয়ে হাতের আঙুল উঁচিয়ে গর্জে উঠে,
“এএইইই”
“ওইইইইই। এক দম চুপ। গলার স্বর নিচু কর। আঙুল নামা বেজ**।”
মেয়েটিও হাতের আঙুল উঁচিয়ে ছেলেটির চেয়ে দ্বিগুণ হিংস্রতার স্বরে বলে। ছেলেটি রাগে ফোসতে থাকে। আশে পাশে থাকা সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে রয়েছে! একটা মেয়ের এত তেজ কি ভাবে হতে পারে! মেয়েটি ঘুরে ওই মেয়েটির উদ্দেশ্যে বলে,
“জুতা খুলতে বলেছি তোমাকে। জুতা খুলে এই বেজ** গালে ঠাস করে একটা চড় দেও। বুঝিয়ে দেও তোমাকে অপমান করার ফল।”
একটা মেয়ে দৌড়ে এসে মেয়েটির হাত ধরে বলে,
“উপমা! কি করছিস তুই। পাগল হয়ে গেছিস। সরে আয় বলছি।”
“সূচি সর তুই। এই জানু**টাকে আজ শাস্তি না দিলে এই রকম অন্যায় ও বার বার করবে। আর ওকে নারীজাতিকে এত ভীতু ভাবার ফল ভোগ করতে হবে।”
উপমা ওই মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আবারও বলে,
“কি হলো। তোমাকে…”
মেয়েটি কান্নামাখা স্বরে বলে,
“আপা ছেড়েদেন ওকে। আপনি মেরেছেন এতে-ই হয়েছে।”
“না হয়নি। অন্যায় তোমার সাথে করেছে তাই শাস্তি তুমি দিবে। দেও বলছি।”
“এই এই তুই চেনছ আমাকে?”
উপমা ঘাড় কিঞ্চিৎ বাঁকিয়ে বলে,
“তোকে তো চিনিনা। তবে তোর মাকে চিনি। যে পতিতালয় থাকে। তাই তোর মত জানু** জন্ম দিছে।”
“এই খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু। তুই আমাকে..।”
“গলার স্বর নিচে নামা। তা না হলে…”। (চোখ গরম করে)।
“উপমা…উপমা কি করছিস তুই।”
“কি হলো…।”
“আপা পরে যদি আমাকে ধরে।”
উপমা আশ্বাস্ত দিয়ে বলে,
“আমি আছি। তুমি শুধু জ্বলে উঠো।”
ছেলেটি দৌড়ে পালাতে গেলে উপমা লেং মেরে ফালিয়ে দেয়। ছেলেটি উবু হয়ে পড়ে। আশে পাশে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। তবে কিছু দূরে একটি ছেলে মুদ্ধ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে উপমার দিকে। সে এই রকম মেয়ে জীবনে আরেকটা দেখেনি। যেমন সুন্দর তেমন তেজি! মূহুর্তে মনঃস্থ করে ফেলে এই মেয়ে তাঁর চাই চাই!
উপমা পড়ে যাওয়া ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে,
“কই পালাচ্ছিস সোনার চাঁদ। বলে যা কে তুই। আর শুনে যা কে আমি!”
তারপর মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলে,
“শুরু করো।”
মেয়েটি দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে পায়ের জুতা খোলে। ছেলেটি চিৎকার করে,
“সুমা..সুমা খুব খারাপ হবে বলে দিচ্ছি। দূরে যা। দূরে যা।”
সুমা নামে মেয়েটি মৃদু তেজ নিয়ে বলে,
“খারাপ তো এখন হবে জানুয়া***।”
এই বলে জুতা দিয়ে ইচ্ছে মতো পেটাতে থাকে। এলোপাথাড়ি কিছুক্ষণ মারার পর দূরে থাকা ছেলেটি ছুটে আসে। পড়ে থাকা ছেলেটিকে উঁঠিয়ে দুই তিনটা চড় মেরে বলে,
“মাফ চা।”
ছেলেটি অবাক চোখে তাকায়। ছেলেটি আবার বলে,
“কথা কানে যায় না। মাফ চা বলছি”।
উপমা সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আগন্তুকের দিকে। ছেলেটি উঠে এসে সুমার কাছে এসে বলে,
“আমাকে মাফ করে দেও সুমা। আই আম সরি।”
উপমা ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে বলে,
”উহুম। এই ভাবে না। হাঁটুগেড়ে বসে দুই হাত জোর করে মাফ চাইতে হবে।”
ছেলেটি চোখ বড় বড় করে তাকায় উপমার দিকে। পেছনে থাকা আগন্তুক বলে,
“কি হলো কথা কানে যায় না। যে ভাবে মাফ চাইতে বলছে চা।”
ছেলেটি সুমার সামনে হাঁটুগেড়ে বসে দুই হাত জোর করে মাফ চায়। উপমা বলে,
“যদি আর কখনো কোনো মেয়ের পেছনে লাগিস, এর চেয়ে খারাপ অবস্থা করবো তর।”
“আসো।”
এই বলে মেয়েটিকে নিয়ে নতুন ভবনের দিকে চলে যায়।
আগন্তুক ছেলেটি কিছু ছেলেকে নির্দেশ দিলে তাঁরা ওই ছেলেটিকে ধরে নিয়ে চলে যায়। উপমার চলে যাওয়ার পর একটা মেয়ে উপমার নাম ধরে ডাকে। তবে উপমা তা শুনতে পায় না। তবে আগন্তুক ছেলেটি বলে,
“মিলি।”
মেয়েটা দাঁড়ায়।
“সাইমম। কি রে ভাই তোর তো দেখাই পাওয়া যায় না।”
“এইতো। ওই মেয়েটাকে তুই চিনিস?”
মিলি বলে,
“কোন মেয়ে?”
“আরে ওই যে লম্বা চুলের মেয়েটাকে। যাকে একটু আগে ডাকলি মনে হলো।”
“হ্যাঁ। কেনো?”
“এই দিকে আয় তোর সাথে একটা কথা আছে।”
ক্লাসে বসে বসে ঘুমাচ্ছে তুর্কি। ওই অসভ্য লোকটার জন্য সাত সকালে ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে। পাশে বসে এক নাগাড়ে বকবক করে যাচ্ছে সোফিয়া। তবে তাতে তুর্কির কোনো হেলদোল নেই। এখন থেকে ও রোজ ক্লাসে এসে ঘুমাবে।
ক্লাসে তেমন স্টুডেন্ট নেই। তবে হুট করে এক এক করে স্টুডেন্ট ঢুকতে থাকে ক্লাসে।
“কিরে হুট করে ক্লাসে এমন পোলাপান আসছে কেনো?এই বা* তুই কি আমার কথা শুতাছস?”
তুর্কি মৃদু স্বরে বলে,
“হুম।”
“দেখ হুট করে কেমন ক্লাস ভরে উঠলো। বা* তুই আমার কথা শুনতাছস না। এই রকম মরার মত করতাছস কেন। রাতে কি ডাকাতি করতে গেছিলি যে এখন ঘুম পারতাছস?”
এত শোরগোল শোনার পর তুর্কি বিরক্ত মুখে তাকিয়ে বলে,
“বা* তোর প্রেমকাহিনী শোনার ইচ্ছা আমার নাই। চুপ থাক। আমাকে ঘুমাতে দে।”
“ভাই আমি প্রেমকাহিনী কই বলতেছি? তুই সারারাত কি করছস যে এখন ঘুম পারতাছস।”
তুর্কি কিছু বলতে যাবে তখন ক্লাসে ঢুকে আদনান। আদনানকে দেখে প্রায় স্টুডেন্টের মুখে হাসির রেখা দেখা যায়। তবে এই ছিলো কারণ! হুট করে এত স্টুডেন্ট ক্লাসে আসার৷ আজ আদনানের ক্লাস আছে। সোফিয়া খুশিতে তুর্কিকে চিমটি কাটে।
“দোস্ত দোস্ত! দেখ দেখ আদনান স্যার। উফ্! স্যারটা কে যে কি ভালো লাগে।”
তুর্কি বিরক্ত নিয়ে সোফিয়ার দিকে তাকায়। এই বুইড়া মার্কা স্যারকে দেখে এত এই রকম করার কি হলো!
“তুই দেখ বেশি বেশি।”
আদনান দৃষ্টি ঘুরিয়ে প্রেয়সীর অবস্থান দেখে। টিচার হিসেবে আদনান অসাধারণ! লেকচার স্ট্যান্ডের উপর দাঁড়িয়ে চমৎকার করে হেসে বলে,
“গুড মর্নিং এভ্রিওয়ান।”
সবাই বিনয়ের সাথে উত্তর নেয়।
“বাহ্! তোমাদের প্রেজেন্স তো অসাধারণ। রুবেল বললো দুই তিন জন ছাড়া ক্লাসে নাকি কাউকে পাওয়া যায় না?”
একটা মেয়ে বলে,
“রুবেল স্যারের ক্লাস ভালো লাগে না। এক দিন করেছিলাম। শুধু ধমকায়। কিছু জিজ্ঞাসা করলে ও ধমকায়। পুরো ঘন্টা এক দমে পড়ায়। অসহ্য লাগে।”
একটা ছেলে বলে,
“স্যার, আমি গার্লফ্রেন্ডর সাথে ঘুরতে আসছিলাম। হঠাৎ মনে পড়লো আজ আপনার ক্লাস। গার্লফ্রেন্ড ফেলেই চলে এসেছি।”
ছেলেটির কথা শুনে পুরো ক্লাস হাসিতে ফেটে পড়ে। আদনান ও হাসে। তুর্কি অবাক চোখে তাকায়। এই ঘাড়ত্যাড়া লোক হাসতে ও জানে! আদনান কে সবার পছন্দ করার অন্যতম কারণ ও ভীষণ ফ্রি মাইন্ডের। আদনান বলে,
“দিস ইজ নট গুড। আমি ইন্টারে থাকাকালীন প্রতিদিন ক্লাসে আসতাম। মা বাবা কথা মেনে চলতাম।”
সবার হাসি মিলয়ে যায়। পরপরই আদনান বলে,
“এইটা সব চেয়ে বড় মিথ্যা কথা!”
পুরো ক্লাস পুনরায় হাসিতে ফেটে পড়ে।
“একবার ক্লাসের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। কিন্তু, সেই দিন ছিলো কেমিস্ট্রি প্রাকটিক্যাল ক্লাস। আমাদের সময় দুই তিন ঘণ্টা ধরে প্রাকটিক্যাল ক্লাস হতো। এক দিন গিয়েই বিরক্ত হয়েগেছিলাম। পরে আর থাকতে না পেরে পাশে থাকা কয়েকটা এসিড আরো কি কি যেনো ছিলো। একটার মধ্যে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেয়েছিলাম। এর পর থেকে আর কোনো দিন কলেজের দিকে যাই নি।”
পুরো ক্লাস আবারো হাসিতে ফেটে পড়ে। তুর্কি অবাক হয়ে আদনানের কথা শোনে। এই কি সেই লোক! একরোখা ঘাড়ত্যাড়া! এর কথায় সবাই এত হাসছে। অথচ ওকে সব সময় পড়ায়। আজ বাড়ি যাক। মজা বোঝাবে। আদনান হাসি থামিয়ে বলে,
“ওকে। ওকে লিসেন! এই বার পড়া শুরু করা যাক।”
“দোস্ত। দেখছস স্যারটা কি অসাধারণ! উফফ কে যে স্যারের বউ হবে। সে খুব লাকি। এই রকম রসিক এক জন্য মানুষ পাবে!”
“হুম ভাগ্যবতী না গু*বতি সে তো আমি জানি।”
“কিছু বললি?”
“দোস্ত তুই কি পাগল? তুই কেনো ওই ছেলেটার সাথে লাগতে গেলি? যদি তর কোনো ক্ষতি করে?”
“উফফ সূচি! এক কথা কতবার বলবি। তুই জানিস আমি কোনো অন্যায় দেখলে সহ্য করার মানুষ না। আর সেটা যদি কোনো মেয়ের সম্মান নিয়ে হয় তবে তো আরও না।”
“তবু ও দোস্ত আমার ভয় লাগছে।”
উপমা আর সূচি নতুন ভবন থেকে নিচে নামছে। ওই মেয়েটার সাথে কথা বলে জানতে পেরেছে মেয়েটার সুমা। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আর ওই ছেলেটার নাম জিতু। অনেক দিন ধরে ছেলেটা ওর পেছনে পড়ে আছে। ও অনেকবার না করেছে তবু ও শুনে নি। উপমা ওর নাম্বার দিয়ে দিয়েছে। যদি আবার কোনো দিন বিরক্ত করে ওকে যেনো ফোন দিয়ে জানায়।
মিলি উপরে উঠতে গিয়ে সিঁড়িতে দেখায় হয় উপমা আর সূচির সাথে। মিলি উপমাকে বলে,
“কিরে ডাকলাম তখন শুনলি না কেনো?”
“খেয়াল করিনি। কেনো কোনো দরকার?”
“না এমনি। চল”।
হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ১৫
এক সাথে নিচে নামে ওরা তিনজন। উপমা ও সূচি বেস্ট ফ্রেন্ড। মিলি নিচে নেমে উপমার উদ্দেশ্যে বলে,
“দোস্ত দোস্ত। আজ তর একটা পরিক্ষা নেবো।”
উপমা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে,
“কি পরিক্ষা?”
“তুই তো অনেক সাহসী। তো আজ তর সাহসের পরিক্ষা নেবো।”