অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৯
সাদিয়া শওকত বাবলি
“ত্রয়ী যেমন আমাদের মেয়ে তেমনি আপনাদের বাড়ির বউ। ওকে আটকে রাখার সাধ্য আমাদের নেই। তবে এভাবে রাতের আঁধারে সাদামাটাভাবে আমি ওকে আপনাদের হাতে তুলে দিতে চাইছি না। যতদূর শুনেছি ওদের বিয়েটাও কোনো আনুষ্ঠানিকতা মেনে হয়নি। তাই আমি চাইছি ওদের আবার বিয়ে দিতে। দুই চার জন আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতিতে ছোট খাটো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ত্রয়ীকে আপনাদের বাড়িতে পাঠাতে।”
এই টুকু বলে থামলেন সোহরাব হোসেন। ছোট একটি নিঃশ্বাস ফেলে ফের বললেন,
“আমি হয়তো ত্রয়ীর জন্মদাতা পিতা নই। কিন্তু ওকে মেয়ে হিসেবে যখন মেনেছি তখন ওর প্রতি আমার একটা দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেও আমি ওকে এভাবে রাতের আঁধারে আপনাদের হাতে তুলে দিতে পারি না।”
আরও কিছুক্ষণ আলোচনা চললো বসার কক্ষে। সিদ্ধান্ত হলো আজ থেকে চৌদ্দ দিন পর শুক্রবার শীর্ষ এবং ত্রয়ীর আবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হবে। তবে আজ রাতটা আব্দুর রহমান খান, ফাহমিদা বেগম এবং শীর্ষ এখানেই থেকে যাবে। যদিও তারা থাকতে চাইছিলেন না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কারণ শীর্ষ ত্রয়ীর বিয়ের ব্যাপারটা তাদের জানা থাকলেও এখানকার মানুষদের তো জানা নেই। তারা জানবে আবার যেদিন শীর্ষ ত্রয়ীর বিয়ে হবে সেদিন। সেক্ষেত্রে এখানে থাকাটা তাদের মানায় না। এমনি মফস্বল অঞ্চল। আশেপাশের মানুষ দেখলে কথা বানাতে পারে। তবে তাদের কোনো যুক্তি তর্কের কথাই মানলেন না সোহরাব হোসেন। তার এক কথা এই রাতে কোথাও যাওয়া চলবে না তাদের। প্রয়োজনে কাল সকালে যাবে। শেষ পর্যন্ত আব্দুর রহমান খানও হার মানলেন সোহরাব হোসেনের সামনে। থেকে যেতে রাজি হলেন ও বাড়িতেই।
রাত্রি গভীর। চারদিকটা নীরব, নিস্তব্ধতায় ঢেকে গেছে। ত্রয়ী ঘুমিয়ে আছে নিজ কক্ষের বিছানায়। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সে। এই নীরবতার বুক চিরে হঠাৎ তার কক্ষের দরজায় টোকা পড়ল। প্রথমবারে শুনতে পেল না ত্রয়ী। কিন্তু এ টোকা যে থামার নয়। মৃদু আওয়াজে এক নাগাড়ে টোকা পড়েই যাচ্ছে। ত্রয়ী বিরক্ত হলো। এত রাতে তার কক্ষে কে আসতে পারে বুঝতে বাকি রইল না তার। ত্রয়ী একবার ভাবলো দরজাটা খুলবে না। কিন্তু মন সায় দিল না তার। এখন তো এক প্রকার সব ঝামেলা মিটেই গেছে। তাছাড়া শীর্ষ তার স্বামী। তাকে না মেনে তো সারাজীবন থাকা যাবে না। এখনই অনেকটা মেনে নিয়েছে। আর দুই চার দিন পর পুরোটা মেনে নিবে। তাহলে শুধু শুধু নিজেদের মধ্যে আর দূরত্ব বাড়িয়ে কি লাভ? বিছানার পাশে অবহেলায় ফেলে রাখা ওড়নাটা ভালোভাবে গায়ে জড়িয়ে নিল সে। যত্রতত্র পায়ে এসে দাঁড়াল দরজার কাছে। দুই হাতে দরজাটা খুলেই ঝাঁঝালো কণ্ঠে প্রশ্ন ছুঁড়ল,
“এত রাতে এখানে কি?”
শীর্ষ ওষ্ঠ বাঁকিয়ে হাসলো। আঁকাবাঁকা কদমে ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল,
“এলাম আমার বউটার ঘুম ভাঙিয়ে একটু আদর সোহাগ করতে।”
“এত আদর সোহাগ আসে কোথা থেকে আপনার? যান এখনই নিজের কক্ষে গিয়ে ঘুমান।”
শীর্ষ এগিয়ে গিয়ে ঠাস করে শুয়ে পড়ল ত্রয়ীর বিছানায়। স্বাভাবিক কণ্ঠেই বলল,
“বিয়ের পর আবার নিজের কক্ষ আর বউয়ের কক্ষ আছে নাকি? আমার কক্ষই আমার বউয়ের কক্ষ। আবার আমার বউয়ের কক্ষই আমার কক্ষ। এক কক্ষে ঘুমালেই হলো।”
ত্রয়ী দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে বিছানার নিকট এগিয়ে এলো। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
“গ্রামবাসীদের চাপে পড়ে, এক প্রকার জোরপূর্বক আমাকে বিয়ে করতে হয়েছিল আপনার। সে বিয়ে আপনার পরিবারের কেউ মানেনি। এখন আমাদের আবার বিয়ে হবে। তারপর আপনি আমার কক্ষে আসবেন।”
শীর্ষ উঠে বসলো। ত্রয়ীর এক হাত টেনে বসিয়ে নিল কোলে। মিহি কণ্ঠে বলল,
“বিয়ে হতে হতে এখনো ১৪ দিন। এতদিন আমি তোকে ছাড়া থাকব কিভাবে যে বালির বস্তা?”
“যেমনটা ছয় মাস থেকেছেন।”
“সেই ছয় মাস থাকতে থাকতেই তো চুল দাঁড়ি পাখির বাসায় পরিণত হয়ে গিয়েছিল। তোর সাথে দেখা হওয়ার পর কাটলাম। এখন এই চৌদ্দদিনে চুল দাঁড়ি আবার পাখির বাসা হয়ে যাবে। তারপর যখন তোকে বিয়ে করতে আসবো তখন তোর বন্ধু বান্ধবরা তোকে তিরস্কার করবে। বলবে ‘এ কোন সাধু সন্ন্যাসীকে বিয়ে বিয়ে করছিস তুই?’ তার থেকে বলি কি তোর বাপকে বল বিয়ের ডেটটা কাছাকাছি নিয়ে আসতে। এই ধর সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আমাদের বিয়ে দিতে।”
ত্রয়ী ওষ্ঠ বাঁকাল। ভেংচি কেটে বলল,
“আপনার বাবাকে বলুন। আমার বাবা তো আর একা এই বিয়ের তারিখ ঠিক করেননি। সাথে আপনার বাবাও আছেন।”
“আমার বাবা তো একটা পাষাণ। উনাকে আমি আগেই বলেছিলাম আমাদের বিয়েটা দিয়ে দিতে। সেদিন যদি উনি বিয়েটা দিয়ে দিতেন তাহলে না ঐ গ্রামবাসীদের পাল্লায় পড়তে হতো, না আমাকে বিয়ের ঘটনা লুকাতে হতো। আর না এত ঝামেলা হতো।”
ত্রয়ী অবাক হলো। কণ্ঠে বিস্ময় ভাব নিয়েই শুধাল,
“আপনি আমাদের গ্রামে যাওয়ার পূর্বেই আঙ্কেলকে বিয়ের কথা বলেছিলেন?”
“হুম, শুধু বাবাকে কেন তোকেও বলেছিলাম। কিন্তু তোরা কেউই আমার কথাটাকে গুরুত্ব দিলি না। সেদিন যদি আমার বাপ আর তুই আমার কথাগুলোকে একটু গুরুত্ব দিতি তাহলে আর আজকের এই দিনগুলো দেখতে হতো না।”
ত্রয়ী মস্তিষ্কে চাপ প্রয়োগ করল। স্মরণে এলো শীর্ষ বেশ কয়েকবারই তাকে বিয়ের কথা বলেছিল। কিন্তু কোনো বারেই সে কথাগুলোকে গুরুত্ব দেয়নি ত্রয়ী। সে ভেবেছিল শীর্ষ তাকে ভয় দেখানোর জন্য, জ্বালানোর জন্য বলছে। ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল মেয়েটা। শীর্ষের কোল থেকে ওঠার চেষ্টা করে বলল,
“হয়েছে বুঝেছি। এখন ছাড়ুন তো। কেউ এসে দেখে ফেললে ঝামেলা হবে।”
শীর্ষ ত্রয়ীকে উঠতে দিল না কোল থেকে। বরং আরও শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বলল,
“এত রাতে এখানে কেউ আসবে না। আর এসে দেখলেও কেউ কিছু বলবে না।”
“কিন্তু আপনি…”
এই টুকু বলতেই তাকে থামিয়ে দিল শীর্ষ। মুখ গুজলো মেয়েটার ঘাড়ে। ঘোর লাগা কণ্ঠে বলল,
“হুশ, আর কোনো কথা বলিস না। এভাবে থাকতে দে।”
ত্রয়ী কিছু বলতে গিয়েও পারল না। অজানা অদ্ভুত এক অনুভূতি ঘিরে ধরেছে তাকে। কেমন সুখ সুখ অনুভব হচ্ছে হৃদয়ে। শীর্ষের এ স্পর্শ গুলো খারাপ লাগছে না। ইচ্ছে হচ্ছে না লোকটাকে তার নিকট থেকে দূরে সরিয়ে দিতে। ত্রয়ী চুপ রইল। শীর্ষকে দূরে সরিয়ে না দিয়ে লেপটে রইল তার সাথে।
সময় প্রবাহমান। সে বসে থাকে না কারো জন্য। নিজের নিয়মে, নিজের গতিতে সে সর্বদা গড়িয়ে চলে। সেদিনের পর চৌদ্দ দিন যেন কেটে গেল চোখের পলকে। আজ শীর্ষ এবং ত্রয়ীর গায়ে হলুদ। সোহরাব হোসেন ছোট খাটো একটি অনুষ্ঠান করার কথা বললেও বেশ বড়োসড় অনুষ্ঠানেরই আয়োজন করেছেন। সে চয়নি ত্রয়ীর ভিতরে এই বিয়ে নিয়ে কোনো আফসোস থাকুক কিংবা বিয়ের আয়োজন দেখে কখনো তার মনে এই ভাবনা আসুক যে ‘ইসসস, আজ আমার বাবা বেঁচে থাকলে এর থেকে বড়ো আয়োজন করতেন।’ সোহরাব হোসেন নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছেন ত্রয়ীর মন রাখার, চার ওষ্ঠে হাসি ফুটিয়ে তোলার।
তবে বড়ো দুঃখের বিষয় হলো, এই চৌদ্দ দিনে শীর্ষ এবং ত্রয়ীর মধ্যে দেখা হয়নি একটা বারের জন্যও। শীর্ষ বার কয়েক ভেবেছিল বরিশালে ত্রয়ীর সাথে অন্তত একবার দেখা করতে আসবে। কিন্তু ব্যবসায়িক বিভিন্ন কাজের চাপ, বিয়ের আয়োজন, শপিং সব মিলিয়ে আর আসা হয়নি। এমনিই ত্রয়ীকে খুঁজতে এসে এখানে বেশ অনেকদিন পড়েছিল সে। ততদিনে ব্যবসায়িক অনেক কাজ জমেছে যা এই কয়দিনে শেষ করতে হয়েছে। যদিও মুঠোফোনে তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়েছে। তবে তাতে কি আর মন ভরে? আজ গায়ে হলুদের দিনও দুজনের মধ্যে সরাসরি দেখা সাক্ষাৎ নেই কোনো। দু’জনের বাড়ির মধ্যেকার দূরত্ব বেশি হওয়ায় দুজনের দুই স্থানেই গায়ের হলুদের আয়োজন করা হয়েছে। তবে শীর্ষ ত্রয়ীকে আগাম সতর্কতা দিয়ে রেখেছে গায়ে হলুদের সাজ সেজে আগে তাকে দেখাতে হবে। তাকে না দেখিয়ে স্টেজে যাওয়া যাবে না।
ত্রয়ীর হলুদের সাজ শেষ হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ হলো। মেয়েটা ফরসা শরীরে হলেদেটে একখানা শাড়ি জড়িয়েছে আজ। কানে, হাতে, গলায় কাঁচা ফুলের গহনা। ঠোঁটে লিপস্টিক, মুখে ভারী মেকআপের প্রলেপ। পার্লার থেকে মেয়েদের এনে তাকে সাজানো হয়েছে আজ। যদিও ত্রয়ী বলেছিল বাড়িতেই সাজবে। এমনিই এই বাড়ির লোকগুলো তাদের জন্য কত কি করছে। তার মধ্যে আবার এই সাজ গোজের চাপও ফেলতে চায়নি তাদের উপর। কিন্তু সোহরাব হোসেন এবং তাতিম কোনো কথাই শুনলো না তার। একদম পার্লার থেকে ধরে বেঁধে সাজানোর লোক নিয়ে এলো। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো ত্রয়ী। আড় চোখে তাকাল চারদিকে। কক্ষে মানুষ গিজগিজ করছে। এর মধ্যে সে শীর্ষকে নিজের সাজ দেখাবে কিভাবে? এতগুলো মানুষের মধ্যে ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে কেমন যেন লজ্জা লাগছে তার। আর ওদিকে শীর্ষকে তার সাজ না দেখিয়ে স্টেজে গেলেও তো খ্যাপে যাবে। লোকটা এমনিই যা বদমেজাজি, খ্যাপাটে ধাঁচের। বেশ অনেকটা ঝড় ঝাপটা পেড়িয়ে ত্রয়ী কেবল একটু সুখের মুখ দেখে উঠতে শুরু করেছে। একটু একটু করে তার জীবনে সব ঠিক হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে মেয়েটা আর কোনো ঝামেলা চায় না। ত্রয়ী আশেপাশে তাকাল। এরপর হাত ইশারা দিয়ে তাকাল তৃপ্তির দিকে। বোনের ইশারা পেয়েই সে ছুটে এলো। চঞ্চল ভঙ্গিতে বলল,
“ডেকেছ কেন? কিছু বলবে আপু?”
ত্রয়ী ফের ইশারা দিয়ে মেয়েটাকে নিচের দিকে ঝুঁকতে বলল। তৃপ্তিও সাথে সাথে ঝুঁকে গেল নিচের দিকে। ত্রয়ী মুখ এগিয়ে আনল মেয়েটার কানের কাছে। ফিসফিসিয়ে বলল,
“আমার একটা ছবি তুলে তোমার শীর্ষ ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দাও।”
তৃপ্তি ঠোঁট টিপে হাসলো। ত্রয়ীর মোবাইল নিয়ে বেশ সুন্দর এবং স্পষ্টভাবে একটি ছবি তুলে পাঠিয়ে দিল শীর্ষের কাছে। প্রায় সাথে সাথেই মোবাইলটা বেজে উঠল। মোবাইলটা তৃপ্তির হাতেই ছিল। ভেবেছিল আরও কিছু ছবি তুলবে ত্রয়ীর এবং নিজের। এর মধ্যেই শীর্ষ কল করেছে। মেয়েটা মোবাইলটা এগিয়ে দিল ত্রয়ীর দিকে। স্বাভাবিক কণ্ঠেই বলল,
“আপু শীর্ষ ভাইয়া ভিডিয়ো কল করেছে।”
শীর্ষর নামটা শুনেই চারদিকে হইচই পড়ে গেল। সবাই যেন হামলে পড়ল মোবাইলটার দিকে। ত্রয়ী অপ্রস্তুত হলো। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে তৃপ্তিকে বলল,
“কেটে দাও তুমি।”
তৃপ্তি কলটা কেটে দিতেও উদ্যত হলো। কিন্তু বাঁধ সাধলো আশেপাশের সকলে। ত্রয়ীর এক বান্ধবী বলল,
“ধর না কলটা। আমরাও একটু দেখি শীর্ষ ভাইকে। শুনেছি তিনি নাকি অনেক হ্যান্ডসাম।”
ত্রয়ী যেন বিপাকে পড়ল এবার। এতগুলো মানুষের সামনে কল ধরে সে কি বলবে? আর শীর্ষের ওটা তো মুখ না যেন কোনো মেশিন। একবার চালু হলে আর বন্ধ হতে চায় না। আর কার সামনে কি বলছে তারও কোনো ঠিক ঠিকনা থাকে না। লাজ লজ্জাও তো নেই বললেই চলে। তারপর সবার সামনে কি বলতে কি বলে ফেলবে তার মান ইজ্জত নিয়েই টানাটানি লেগে যাবে। ত্রয়ী এলোমেলো দৃষ্টি ফেলল। আমতা আমতা করে বলল,
“একটু পর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে। এখন আর কল ধরে কাজ নেই।”
“আরে ধর না। একটু সময় কথা বললে কিছু হবে না।”
কথাটা বলে ত্রয়ীর বান্ধবী মোবাইলটা এনে ধরিয়ে দিল তার হাতে। কলটাও রিসিভ করে দিল। আর তারপর! ত্রয়ী যা ভেবেছিল তাই হলো। মোবাইলের ভিতর থেকে বু’লে’টে’র বেগে তার কানে ভেসে এলো,
“ভীষণ সুন্দর লাগছে তোকে ডার্লিং। ইচ্ছে হচ্ছে খেয়ে ফেলি। আর যে আর তর সইছে না। ইচ্ছে হচ্ছে এখনই বাসরটা সেড়ে ফেলি।”
সাথে সাথে চারদিকটা নীরব নিস্তব্ধতায় ছেয়ে গেল। সবাই কেমন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকাল ত্রয়ীর দিকে। লজ্জা, অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করে উঠল মেয়েটার ভিতরটা। ইচ্ছে হলো এখনই মাটিটা ফাঁক করে তার ভিতরে ঢুকে যেতে। এই লোকটার সব সময় এমন কথা বার্তা! কি হতো আজ অন্তত নিজের মুখটা একটু সামনে রাখতে। ঠিক আছে, সে একা লজ্জা পাবে কেন? শীর্ষও একটু দেখুক কি রাজকার্য সেড়েছে সে। একটু বুঝুক তার এই কথার গুনে কতটা অস্বস্তিতে পড়েছে ত্রয়ী। মেয়েটা মোবাইলের স্ক্রীনে ক্লিক করে ব্যাক ক্যামেরায় দিল। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাল কক্ষে উপস্থিত সকলকে। শীর্ষও অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল এবার। না জেনে, না বুঝে সে যে কি ঘটিয়ে ফেলেছে বুঝলো ভালোভাবেই। তবে মুখে স্বীকার করল না। বরং বেশ স্বাভাবিক কণ্ঠেই বলল,
অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৮
“তো কি হয়েছে? ওখানে যে কয়জন মানুষ আছে তারা একজনও কি বিয়ে ছাড়া, বাসর ছাড়া থাকতে পারবে? কারো আগে হবে আর কারো পরে। জিজ্ঞেস করে দেখো কেউ হয়তোবা ইতোমধ্যে কাজ সেড়েও ফেলেছে।”