হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ৩০
তোয়া নিধী দোয়েল
সময় বিকেল তিন-টার কাছা-কাছি। রেজুয়ান গোসল সেরে বিছানায় বসেছে। ঘণ্টা খানিক আগে ওরা সদর থেকে এসেছে। পা দেখিয়ে, ঔষধপত্র নিয়ে এসেছে। বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে। গোসল করলে শরীর-মন সতেজ হয়ে যায়। পাশে হাত বাড়িয়ে ফোন নেয়।
আজকের দিনটা ভীষণ অলুক্ষণে! যত বার-ই উপমার সাথে কথা বলার জন্য অগ্রসর হয়েছে, তত বার-ই কোনো না কোনো বাধা পড়েছে। সকালে খাওয়ার পর সদরে গিয়েছিলো। ভীড় থাকার কারণে, ডাক্তার দেখাতে বিলম্ব হয়েছে। তারপর কিছু পরিক্ষা-নিরিক্ষা করতে, ঔষধ নিতে আরও কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে।
ও ফোন স্ক্রোল করে, উপমার নাম্বার বের করে। যেই-না কল করতে যাবে; সেই মূহুর্তে প্লেট হাতে উপস্থিত হয় হুমাইরা। রেজুয়ানের দিকে আসতে আসতে বলে,
-ওঠ। ভাত এনেছি।
রেজুয়ান মায়ের দিকে তাকিয়ে নিজের কপালকে আরেকবার দোষারোপ করে। চেহারায় একটু অসহায়ত্ব ফুটিয়ে বলে,
-টেবিলের উপর রেখে যাও। পরে খাই।
হুমাইরা বিছানায় ভাতের প্লেট রেখে, গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে বলে,
-তাড়াতাড়ি ওঠ। আমার অনেক কাজ পড়ে আছে।
রেজুয়ান আধাশোয়া অবস্থায় হয়ে, পিঠে একটা বালিশ দিয়ে বসে। হুমাইরা পানি কাছে নিয়ে এসে ভাতের প্লেট হাতে তুলে নেয়। টেবিলের সামনে থেকে চেয়ার টেনে এনে বসে। ভাত মাখাতে মাখাতে বলে,
-তোর প্রিয় ডিম-আলুর তরকারি।
ক্ষণকাল পার হওয়ার পর আবার বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-নিচ দিকে তাকিয়ে হাঁটস না তাইনা? আকাশের দিকে চেয়ে-চেয়ে হাঁটস? এত বড় ছেলে উস্টা খেয়ে পড়ে, পায়ে ব্যথা পাস।
ছেলেকে খাইয়ে দিতে দিতে আরও কয়েক গাল দেয় হুমাইরা। রেজুয়ান যে মারা-মারি করে পায়ে আঘাত পেয়েছে, সে কথা ওরা তিন-জন ছাড়া বাড়ির কোনো সদস্য জানে না। জানলে ও-কে আর বাড়িতে থাকতে দিবে না। দোষ অপর-পক্ষের থাক কিংবা ওর; তা বিবেচনা না করেই ও-কে পিটাবে। তাদের ভাষ্যমতে, ভদ্র বাড়ির ছেলেরা কখনো মারা-মারিতে জড়ায় না।
খাওয়ানো শেষ হলে, হুমাইরা ঔষধ এনে দেয়।
রেজুয়ান দ্বিতীয় বারের মত বিছানায় গা এলায়। তখন ঘরে উপস্থিত হয়, মোহনা সূচনা। অস্থির কণ্ঠে বলে,
-ভাই, তুই নাকি ব্যথা পাইছস?
রেজুয়ান ওদের ডাক শুনে চোখ মুখ কুঁচকে তাকায়। এক ধমক দিয়ে বলে,
-তাতে তোদের কী? এখানে আসছস কেন?
রেজুয়ানের কাছ থেকে এর থেকে ভালো ব্যবহার আশা করা যায় না। তা মোহনা সূচনা ভালো করেই জানে। তাই বলে,
-কুত্তার মত করিস না। তোকে দেখতে এসেছি।
-আমার কিছু হয় নাই। যা বের হো।
মোহনা রাগান্বিত স্বরে বলে,
-ফাজিলের জাত। ভালো মত দেখতে আসলাম। চল বোন। কুত্তারে পাইতে দে ব্যথা।
দুই-বোন উল্টো ঘুরলে রেজুয়ান আবার ডাকে,
-বেঙ্গির ছাও, পানির টা একটু দিয়ে যা।
-তুই নিয়ে খা। কুত্তার মত ব্যবহার করার সময় মনে থাকে না?
রেজুয়ান একটু সুন্দর কণ্ঠে ডাকে,
-বনু, কইছি দিয়ে যা। ভিডিও এডিট করে দিম নি।
সূচনা পানির জগ থেকে পানি ঢেলে রেজুয়ানকে দিয়ে যায়। রেজুয়ান পানি খেয়ে গ্লাস পাশে রাখে।উপমার নাম্বার ডায়াল করতে গিয়ে কেমন যেনো লাগছিলো। জীবনে এত মেয়ের সাথে কথা বলেছে; তবে এইবার অন্যরকম লাগছে।
ও কল রিসিভ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এইবার ভাগ্য সারা দেয়। কল ঢোকার ক্ষণকাল পরই উপমা কল ধরে সালাম দেয়। রেজুয়ান স্মিত হেসে বলে,
-কাঠগোলাপ!
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সন্তপর্ণে ভেজা চুল মুচ্ছে তুর্কি। আদনান বিছানায় বসে, ভীষণ মনোযোগ সহকারে ফোন স্কোল করছে৷ তুর্কি আড়চোখে আদনানের কার্যকলাপ দেখছে। ফোনের প্রতি এত মনোযোগী দেখে তুর্কি ভ্রু যুগল কুঁচকে মনে মনে ভাবে; ফোনের প্রতি কত মনোযোগী এই লোক! অথচ, কোনো দিন ওর দিকে এত মনোযোগী হয়েছে? কোনোদিন ওর দিকে এই ভাবে এক ধ্যানে তাকিয়েছে? ওর থেকে ফোন বেশি সুন্দর?
ও আদনানের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য, আয়নার দিকে তাকিয়ে গলা ছেড়ে গান শুরু করে,
‘তোমায় দেখতে দেখতে,
আমি যেনো কানা হয়ে যাই!
দুনিয়াতে তোমাকে ছাড়া,
আর কিছু দেখতে পাই নাই!’
তুর্কি আয়নায় আদনানকে দেখতে দেখতে গান চলমান রাখে। তবে, তাতে কোনো হেলদোল লক্ষ্য করা যায় না আদনানের। ও আবারও গেয়ে উঠে,
‘তোমাকে ছাড়া, আমার দুই চোখ
আর কিছু দেখতে তো চায় না..!’
আমি তোমার চেহারার আয়না
তুমি আমার গলার গয়না…।’
‘ও..ও…ও…!’
এলোমেলো লিরিক্স বলে ও যখন আদনানের কোনো পরিবর্তন দেখা গেলো না, তখন তুর্কি রানী শব্দ করে চিরুনী রেখে আদনানের দিকে ঘুরে দাঁড়ায় বলে,
– স্যার, গানটা কেমন লাগলো?
আদনান ফোনে দৃষ্টি রেখেই বলে,
-হুম, ভালো।
তুর্কি ভ্রু কুঁচকে একটু কঠিন স্বরে বলে,
-আপনি, তখন থেকে ফোনে এত কি দেখছেন? ফোনের ভেতর এমন কি মহা- মূল্যবান জিনিস যে, আমার প্রতি খেয়াল দিচ্ছেন না?
আদনান এ পর্যায়ে ফোন থেকে দৃষ্টি তুলে বলে,
-তোমার রুটিন দিয়েছে। সেটাই দেখছিলাম। ১ তারিখ থেকে শুরু। আজ ১৫ তারিখ। পড়া তো লাটে উঠিয়েছো। পাশ করবে কী ভাবে; সেটা একবার ভেবেছো?
আদনানের, কথা শুনে তুর্কির কপালে ভাঁজ পড়ে। পরপরই কপালের ভাঁজ মিলিয়ে, চমৎকার করে হেসে বলে,
-আরে স্যার, আপনি এইটা নিয়ে প্যারা নিচ্ছেন? আল্লাহ্! (কয়েক পা এগিয়ে এসে বলে) একদম প্যারা নিবেন না স্যার, আমি পড়লেও ফেল; না পড়লেও ফেল! আমি যদি হলে বই নিয়ে ও যাই, তবুও ফেল। কারণ, আমি নকল করতে পারি না। তাই, এক দম প্যারা নিবেন না। আপনি আমার লেখা-পড়া বাদ দিয়ে দিন।
আদনান চোখ ছোট ছোট করে বলে,
-টাকা গুলা তো এমনি এমনি আসে না, তাইনে? পড়ার পিছনে যে কত টাকা খচর করা হচ্ছে, তাঁর কী হবে?
তুর্কি দ্রুত পায়ে হেঁটে আদনানের সামনে বসে বলে,
-সেই জন্যই তো বললাম। আমাকে পড়ানো বাদ দিয়ে দিন, স্যার। আমার পিছনে অযথা টাকা নষ্ট করবেন না। আপনি বরং, এই টাকা গুলা জমান। তারপর চলুন, আমরা একটা হানিমুন ট্যুর দিয়ে আসি। বিয়ের এত দিন হয়ে গেলো, এখনো হানিমুনে যেতে পারলেন না। জাতি কি আপনাকে মেনে নিবে?!
আদনান ঘাড় বাঁকা করে ওর কথা শুনছিলো। তুর্কি থামলে ও ঘাড় সোজা করে বলে,
-আমি দেশের মন্ত্রী হবো না, যে আমাকে জাতির মানতে হবে। তোমার কথা শেষ হয়ে থাকলে বই-খাতা নিয়ে হাজির হও।
তুর্কি দিকে ঝুঁকে বসে বলে,
-দরকার আছে, স্যার। কলেজে তো আপনি লাভ গুরু নামে পরিচিত। তাঁরা যদি শোনে আপনি এখনো হানিমুনে যেতে পারেন নি, তাহলে কিন্তু আপনার এই পদবি ধুয়ে চলে যাবে। তখন কি আপনাকে তাঁরা আর লাভ গুরু মানবে?
-তোমার, আমার পদবি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। সিটিতে (ক্লাস টেস্ট) কীভাবে পাশ করবে, সেটা নিয়ে চিন্তা করো।
-আচ্ছা স্যার, হানিমুনে যাওয়ার আগেই যদি পড়া-লেখের জন্য আপনার বউ মারা যায়, তাহলে আপনার কী হবে?
তুর্কির কথা শুনে আদনান কপালে ভাঁজ ফেলে বাজখাঁই কণ্ঠে বলে,
-কিহ্!…
-শুনুন স্যার, পড়া লেখা মানে মৃত্যু। দেখুন, যখন আমি পড়া-লেখা করবো; তখন পরীক্ষায় পাশ করবো। যখন পাশ করবো; তখন আমি ভীষণ খুশি হবো। এবং, এই খুশি সেলিব্রেট করার জন্য; নাচা-নাচি করবো, লাফা-লাফি করবো। যখন লাফা-লাফি করবো; তারপর অনেক ক্লান্ত হয়ে যাবো। বেশি ক্লান্ত হওয়ার ফলে, আমি অসুস্থ হয়ে যাবো। আর এই অসুস্থর ফলে আমি মরে যাবো।
তো শেষ-মেষ কি দাঁড়ালো? লেখা-পড়া বর্জনীয়। লেখা- পড়া করলে নির্ঘাত মৃত্যু। আর, আমার নতুন-নতুন বিয়ে হয়েছে; কই স্বামী নিয়ে হানিমুনে যাবো, মজা করবো। তা না করে আপনি আমাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন!
আদনান সিলিং এর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে। এই মেয়ের মাথায় যে সমস্যা আছে আর কোনো দ্বিধা রইলো না। ও সিলিং থেকে দৃষ্টি সরিয়ে তুর্কির দিকে নিয়ে বলে,
-হানিমুনে গিয়ে মজা করবে; এতে ক্লান্ত হয়ে যাবে। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়বে৷ তারপর মৃত্যু হবে। তো দূরে গিয়ে না মরে, বাড়িতে বসে মরা ভালো। এতে যাতায়াতের টাকা গুলো বেঁচে যাবে। বুঝেছো? এখন কথা বাদ দিয়ে বই নিয়ে হাজির হও।
আদনান বিছানা থেকে উঠে যায়। ওর লজিক শুনে তুর্কির দুই ভ্রুর মাঝে সূক্ষ্ণ ভাঁজ পড়ে। এই লোক এমন কেনো? ও আপন মনে বিড়বিড় করে,
-ধুর বিয়ে, পড়া-লেখা উভয়ই বিপদজনক!
কাঠগোলাপ নামটি শুনে, নাম্বারটি চিনতে বাকি রইলো না উপমার। ও এক পলক নাম্বার দেখে, ফের ফোন কানে তুলে বলে,
-আপনি, আমার নাম্বার পেলেন কই?
রেজুয়ান বিছানায় শুয়ে বলে,
-ভালোবাসার টান থাকলে সব সম্ভব, কাঠগোলাপ। আগে তুমি বলো এত দিন ছিলে কই? কত খুঁজেছি তোমাকে জানো? আমার হৃদয় চুরি করে ;কোন গাছে ফুটে আছো?
রেজুয়ানের কথা শুনে, মুখে বিরক্তি ছাপ পড়ে উপমার। ও রাশভারি কণ্ঠে বলে,
-আপনার, ফালতু কথা শোনার টাইম আমার নেই। নেক্সট টাইম আর কখনো কল দিবেন না। ফালতু টাইম ওয়েস্ট করার মত টাইম, আমার কাছে নেই।
-উঁহু, কল কেটো না কাঠগোলাপ। তোমাকে কী বলেছিলাম? তুমি ভয়ংকর কিছুতে ফেঁসে গেছো। আর তার চেয়ে ও বড় কথা, তোমার জন্য আমি, আমার ভাই, বাপের ভাই মার খেয়েছি; তোমাকে নিজের করতে না পারলে বড় অন্যায় হয়ে যাবে!
উপমার ভ্রু কুঁচকে বলে,
-মার খেয়েছেন মানে?
বিষাদ মুখে পড়ার টেবিলে বসে আছে তুর্কি। বইয়ের দিকে ক্রুদ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে। ও ভেবে পায় না, জীবনে পরীক্ষা থাকার কি দরকার? লেখা-পড়া থাক। তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু, পরিক্ষা কেনো থাকবে? এই পরিক্ষা দেওয়া কী দরকার? মানুষ পড়া-লেখা শিখবে, তারপর যাঁর যাঁর পছন্দ মত চাকরি করবে। ঝামেলা শেষ! পরিক্ষা দিয়ে কেনো চাকরি-বাকরি করতে হবে?
আদনান পাশে বসে কী বই যেনো পড়ছে। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে দৃষ্টি বুলাচ্ছে তুর্কির দিকে। তুর্কি কে অমনোযোগী দেখে; বই বন্ধ করে জিজ্ঞাসা করে
-কি, কোনো সমস্যা?
তুর্কি আদনানের দিকে তাকিয়ে উপরে নিচে মাথা নাড়ায়। আদনান কপালে ভাঁজ ফেলে বলে,
-কী?
-স্যার, আমার মনে হচ্ছে অক্ষর গুলা নাচ্ছে! ওদের নাচা দেখে আমার মাথা ঘুরাচ্ছে। আপনি বলুন, চোখের সামনে এই রকম নাচা-নাচি করলে পড়া যায়?
আদনান ওর দিকে কিঞ্চিৎ ঝুঁকে বলে,
-অক্ষর গুলা নাচ্ছে না। তুমি নাচ্ছো। এক তালে পা নাড়াচ্ছো। মাথা চুলকাচ্ছো। এদিক ওদিক তাকাচ্ছো? তাহলে পড়া কী ভাবে হবে?
-চোখের সামনে এত সুন্দর জামাই থাকলে পড়তে কি আর ইচ্ছে করে, স্যার।
আদনান ভ্রু কুঁচকে বলে,
-কী?
তুর্কি ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে বলে,
-মানে, আমার তো পড়তে ইচ্ছেই করে। পড়া-লেখা ভালো লাগে। শুধু, পরীক্ষা দিতে ইচ্ছে করে না। পরীক্ষা ভালো লাগে না। পরীক্ষা নেওয়ার কী দরকার?
-পরিক্ষা না হলে, ভালো-খারাপের যাচাই হবে কী ভাবে?
তুর্কি আদনানের দিকে একটু এগিয়ে এসে বলে,
-ভালো-খারাপ দিয়ে কি হবে, স্যার? এই যে আমি, ব্যাকবেঞ্চার হয়ে এত শিক্ষিত, এত স্মার্ট, এত সুন্দর জামাই পেয়েছি, জীবনে আর কী লাগে আমার? আপনি বলুন?
তুর্কির কথা শুনে আদনান ঘাড় কিঞ্চিৎ বাঁকা করে। তুর্কি নিজের অবস্থান ঠিক রেখে বলে,
-পরীক্ষায় পাশ-ফেল ম্যাটার না, স্যার। লাইফে সুন্দর জামাই পাওয়াটা ম্যাটার। যে যত সুন্দর জামাই পাবে, সেই তত জিতবে। সেই লাকি। সো ব্যাকবেঞ্চার হয়ে যদি ;আপনার মত স্বামী পাওয়া যায়, তাহলে আমি সারা জীবন ব্যাকবেঞ্চার হয়ে থাকতে চাই। শত বার পরীক্ষায় ফেল করতে চাই! কারণ, আমি ওয়াইফ ম্যাটিরিয়াল! স্বামী ছাড়া মাথায় কিছু ঘোরে না।
আদনান বাম হাত উঠিয়ে তুর্কির নাকে টোকা দেয়। তুর্কি টোকা খেয়ে চোখ মুখ খিঁচে কিঞ্চিৎ দূরে সরে যায়।
-তুমি ব্যাকবেঞ্চার হও আর যা-ই হও, আমি সব সময় তোমার পিছুই থাকবো। তোমাকে পাশ করিয়ে ছাড়বো। কারণ, আমি হাসবেন্ড ম্যাটিরিয়াল!
তুর্কি কপালে বিরক্তির ছাপ ফুটিয়ে আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে,
-হাসবেন্ড ম্যাটিরিয়াল অন্য ভাবে ও হওয়া যায়।
আদনান চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে বলে,
-পড়তে থাকো, বাপের ভাইয়ের কাছে চায়ের অর্ডার দিয়ে আসি।
হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ২৯
আদনান চলে যায়। তুর্কি আদনানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর সিলিং এর দিকে তাকিয়ে বলে,
-হে আল্লাহ্! সব তো ঠিকই ছিলো। জামাই টা ও অনেক সুন্দর দিছো। কিন্তু, এই রকম নিরামিষাশী কেনো দিছো? আর যখন আনরোমান্টিকই দিবা, তাহলে আমাকে এত রোমান্টিক কেনো বানাইছো? এ জীবন তো, নিরামিষ খেতে খেতেই চলে যাবে!
সৃষ্টিকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে; বইয়ের উপর শুয়ে পড়ে তুর্কি।