আমার ক্রাশ পর্ব ১৩ || motivational golpo

আমার ক্রাশ পর্ব ১৩
Tanisha Sultana (Writer)

তুলি ধপ করে খাটে বসে পরে। সায়ান তুলির কাছেই চলে আসে। খাটে বসে পরে। তুলির দিকে ঝুকে তুলির ওড়না ধরে টান দেয়৷
“ওড়না নিবেন বললেই আমি দিয়ে দেই।এতো টানাটানি করার কি আছে।
তুলি ওড়না দিয়ে দেয়। সায়ান ওড়না ফেলে দেয়।
” ও মা ফেলে দিলেন কেনো? জানেন এটা আমার বাপি কিনে দিছিলো।৷ তারপরও ওড়না টা জাস্ট আজকেই পরলাম আর আপনি এটা ফেলে দিলেন। একদম ঠিক করেন নি। এখুনি তুলে এনে দিন। না হলে আমি আপনার সব গুলো জামা পুরিয়ে দেবো নাহলে আমার নামও মিসেস তুলি চৌধুরী নয়?

“থাপ্পড় চিনো
” ও মা চিনবো না কেন? কতো খাইছি থাপ্পড়। এইতো সেদিন আপনি থাপ্পড় মারলেন। এখনো গালটা ব্যাথা করে। তাছাড়াও কতো থাপ্পড় খাইছি মামনির হাতে তা গোনা নেই। আপনি বলছেন আমি থাপ্পড় চিনো না কি। থাপ্পড়ে থাপ্পড়ে জীবনটা বিয়ে পর্যন্ত চলে এলো।
“ও আল্লাহ বাঁচাও আমাকে
” ও বাবা আল্লাহ বাঁচাইবো কেন? কি হয়েছে আপনার? কথায় কথায় আমি বলি আল্লাহ হেলেপ করো। এখন আপনি বলছেন। আসলে হেলেপ শব্দটা আমি মিঠাইয়ের কাছ থেকে শিখেছি
“পাগলে ধরছে আমারে
” ভুতে ধরে শুনছি। এই ফাস্ট শুনলাম পাগলে ধরছে৷ যাই হোক আই নিড বেবি
“নাক টিপলে দুধ বের হয় এখন সে বলছে মা হবে। কি দিনকাল আসলো। একটা বাচ্চা আরেটা বাচ্চা চায়

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

” সতেরো বছর বয়স আমার হুম। আমার একটা প্রাইমারি স্কুলের ফ্রেন্ড দুই বাচ্চার মা হইছে আর আপনি বলছেন আমি বাচ্চা। আমার দাদিমার মা সতেরো বছর বয়সে আটটা বাচ্চার মা হইছিলো বুঝছেন। আশ্চর্য আমি বাচ্চা ???
“তুলি তুমি মানুষ হইবা না তাই না
” আমাকে দেখে কি গরু ছাগল মনে হয়? আমার কি চারটা পা আছে। আমি কি ঘাস খাই? খাই না তো? তো আমি মানুষ তাও আবার পিওর ভালো মানুষ। আর আপনার বউ। তাও আবার একমাত্র বউ। হুম
সায়ান উঠে যেতে নেয়। তুলি হাত ধরে টান দেয়। সায়ান তুলির খুব কাছে চলে আসে।

“ও জামাই আমার সোনা জামাই। আমার টুনুমুনু। আমার ক্রাশ। দাও না
” দোকান থেকে দুটে ললিপপ এনে দেবোনি
তুলি সায়ানকে ধাক্কা মেরে দুরে সরিয়ে দেয়।
“ভাল্লাগে না। এখন আমি শশুড় কে বলবো
” কিহহহহ
“আপনার কাছ থেকে আমাকে বেবি আদায় করে দিতে।
” তুলি শুনো
“বেবি দিলে শুনবো
” একটা দত্তক এনে দেবো
“নাহ আমার পিওর বেবি চায়
” দিতেই তো যাচ্ছিলাম তুমি ভুলভাল কথা বলে মুড নষ্ট করে দিলে
“ফাইন আবার প্রথম থেকে শুরু করি।
তুলি আগের জায়গায় যায়

” এখন ওড়না টান দেন
“মুড নাই
” হনুমান
“ইডিয়েট
” খালাম্মার বফ
“একদম খালাম্মা বলবা না
” তো কি সতিন কমু না কি?
“তোমার যোগ্যতা নাই
” খালাম্মার যোগ্যতা নাই আমার সতিন হওয়ার। আমারে দেখছেন কতো কিউট আমি। আমার পেছনে ছেলেদের লাইন পরে যায়। এইতো প্রপোজ ডে তে দুইশত বাইশটা প্রপোজ পাইছি
“পঁচা জিনিসেই মাছি ভনভন করে
” কি বললেন
“বললাম আজ কি বার
” ইডিয়েট
“বানান করতে পারো
” নাহহ আপনার কাছ থেকে শিখবো। যতসব
যাচ্ছি আমি। কথা কমু না আর
“বাঁচলাম।
হুরর

তুলি রুম থেকে বেরিয়ে কিচেনে যেতে নেয় তখন অভির সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পরে যায়। তুলি ওপরে আর অভি নিচে পরেছে।
“আল্লাহ গো আমার কোমর ভেঙে গেলো
” তুলি তোমার না আমার কোমর ভেঙেছে।
এবার তুলির হুশ আসে। দ্রুত উঠে বসে
“ওহহহ সরি
অভিও উঠে বসে।
” ইটস ওকে
“খুব ব্যাথা পাইছো
” নাহহহ একটু খানি
“আসলে ভুলটা আমারই। আমিই আমার হাত পা কন্ট্রোল করতে পারি না। সব সময় খালি ছুটোছুটি করতে ইচ্ছে হয়। মনডায় চায় উড়ে বেড়ায়
অভি হাসে ঠোঁট চেপে। তারপর তুলির গালে আলতো করে হাত রেখে বলে
” তোমাকে ছুটোছুটি করতেই বেশি ভালো লাগে। চুপচাপ থাকা তুলির ক্যারেকটার না
“তুমিই খালি বুঝো আমাকে আর কেউ বুঝে না।
” হুমমম চলো আজ তোমাকে ফুসকা খাওয়াতে নিয়ে যাবো
“সত্যি
” হুমমম
তুলি অভির গাল টেনে বলে
“থ্যাংকু??
” এটা কি?
“ভেংচি
” ???
“একদম কিস ভাবনা না
” ভাবি নি
“গুড দেবর
বিকেলে তুলি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজুগুজু করছে। সায়ান রুমে এসে তুলিকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে বলে
” কোথাও যাচ্ছে
তুলি লিপস্টিক লাগিয়ে ? কিসের মতো করে। সায়ান বেষম খায়।
“বেবি তুমি খালি বেষম খাও কেন?
” খালি কি বেষম খায় মাঝেমাঝে তো হার্ট অ্যাটাক ও খায়।
“তা তো খাইবাই
” হুমমম
“আমি একটু বেরোবো
” কোথায়
“কমু কেন
” না কইলা
“না থাক কই
” কও
“ফুসকা খেতে
” একা
“নাহহ
“তাহলে
” বফের লগে?
বাই জামাই উম্মা????
“বফ আবার কে
“একটা স্মার্ট হট ছেলে
” সেটা নাহ বুঝলাম বাট গাধার সাথে প্রেম করছে নিশ্চয় বলদ হবে
“হুরররর
” ধুরররর
“দিনদিন আপনি আমার মতো যাচ্ছেন
” না হয়ে আর উপায় আছে
“সেটাই
তুলি চলে যায়।

“ঘটনা কি পাগলটা কার সাথে যাচ্ছে? আমি কি যাবো পেছন পেছন। নাহ থাক। যা ইচ্ছে করুক আমার কি? যার সাথে ইচ্ছে যাক। আমি বরং এতোটুকু সময় রেস্ট নেই। সারাদিন কথা বলে বলে আমায় পাগল করে দেয়।
সায়ান একা একা বলে।
তুলির অনেক রিকোয়েস্ট এ অভি বাইক নিয়ে বের হয়। তুলির আবার বাইকে ঘুরতে দারুণ লাগে। অভি আর তুলি এক বাইকে আর জিসান অন্য বাইকে। তুলি অভির কাঁধে হাত রেখে বসে আছে। অভির খুব ভালো লাগছে। খুব করে একটা গান গাইতে ইচ্ছে হচ্ছে
” এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলোতো
যদি পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হতো তবে ভালোই হতো
কিন্তু আফসোস এটা কখনো পসিবল না। এই পথটাও শেষ হয়ে যাবে আর পৃথিবীটাও স্বপ্নের দেশ হবে না।
এসব ভাবছে অভি
“এই এই বাইক থামাও
তুলির কথায় অভির ঘোর কাটে।
” কেনো?
“থামাও না
অভি বাইক থামায়। জিসানও থামে। তুলি এক দৌড়ে ঝালমুড়ির দোকানে চলে যায়।
” বুঝলি অভি আজ একটা চিজকে নিয়ে বের হইছি। হয় পকেট খালি করবে নয়ত মাথা খালি করবে। আল্লাহও আজ বাঁচাইবো না। হেলেপ থুক্কু হেল্প করবো না
অভি জিসানের কাঁধে হাত রাখে।
“এরকম সরল মেয়ে কটা হয় বলতো?
” তা ঠিক বলছোস।
“চল ওখানে না হলে আবার ঝালমুড়ি ওয়ালার বারোটা বাজিয়ে দেবে।
” ও মামা তাড়াতাড়ি বানান না। আমার আর তর সইছে না। কতোদিন ঝালমুড়ি খায় না। একটু একটু না বেশি করে লঙ্কা মানে মরিচ দেবেন। ঝাল খেতে আমার হেব্বি লাগে

আমার ক্রাশ পর্ব ১২

ঝালমুড়ি বানিয়ে তুলিকে দেয়। তুলি খেয়েই যাচ্ছে। আসলে তুলির ঝাল জিনিস খুব পছন্দের। বিশেষ করে বেশি করে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ঝালমুড়ি আর ফুসকা। এসব হলে তুলির আর কিচ্ছু লাগে না। অভি হা করে তুলির দিকে তাকিয়ে আছে। জিসানও খাচ্ছে।
“একটা মেয়ে এতো সরল, পবিত্র হতে পারে সেটা তুলিকে না দেখলে জানতেই পারতাম না। সত্যি তুলির তুলোনা হয় না।।সবার থেকে আলাদা। হাসি খুশি। মিশুক। আই লাইক তুলি।
অভি বিরবির করে বলছে। তুলির খাওয়া শেষ।

” অভি বিল দাও
অভি বিল দেই। আবার বাইকে বসে এবার তুলি ফুসকা খাবে।
পঁয়তাল্লিশ টা ফুসকা খেয়ে তুলির অবস্থা বেসামাল। না বসতে পারছে না হাঁটতে। প্রায় একটা ঝামেলায় পরে যায়। অভি তুলিকে ধরে আছে।
“ধুর কেনো যে এতো খাইলাম এখন আমি বাড়ি যামু কেমনে?
তুলি বিরবির করে বলছে

আমার ক্রাশ পর্ব ১৪

1 COMMENT

Comments are closed.