আমার ক্রাশ পর্ব ২০ || romantic love story

আমার ক্রাশ পর্ব ২০
Tanisha Sultana (Writer)

মোটামুটি তুলির বিয়ের সব বন্দবস্ত করা হয়েছে। কাল বিয়ে চজ গাঁয়ে হলুদ। তুলির মোটামুটি সব বিরক্ত লাগছে আবার মুখে কিছু বলতেও পারছে না। একঘন্টা যাবৎ বিউটিশেয়ানরা বসে আছে তুলিকে সাজানোর জন্য কিন্তু তুলি সাজতেই চাচ্ছে না। তুলির মা এসে বলে
“তুলি সমস্যা কি তোমার?
” মা না সাজলে কি হবে?
“অনেক কিছু হবে। তোমার ইচ্ছেতেই তো বিয়েটা হচ্ছে। কেউ তো তোমাকে জোর করে নি তাহলে এখন এমন ড্রামা করার কি আছে
” আমাকে সাজিয়ে দাও
তুলি গাল ফুলিয়ে আয়নার সামনে বসে। মেয়ে গুলো তুলিকে সাজাতে থাকে।
গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হয়।
লাল বেনারসি পরে বউ সেজে বসে আছে তুলি। বাইরে থেকে চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ আসছে। তুলির সাথে নিশি আর জিসান বসে আছে।
“বাইরে কি কোনো গন্ডগোল হয়েছে?
তুলি ওদের জিজ্ঞেস করে। জিসান আমতাআমতা করে বলে
” আমরা কি করে জানবো? তুই যেখানে আমরাও সেখানে।
“আমি দেখে আসছি
তুলি যেতে নেয় নিশি আটকে দেয়
” তোমাকে যেতে হবে না। জিসান তুই দেখে আয়
“ওকে
জিসান বেরিয়ে যায়। চেচামেচির শব্দ আরও বেশি হতে থাকে।
” নাহহ এবার আমি যাবোই
তুলি বেরিয়ে যায়। নিশিও পেছনে যায়।
সায়ান বর বেশে দাঁড়িয়ে আছে। তুলিকে দেখে তুলির বাবা তুলির দিকে এগিয়ে যায়
“সায়ান তোমার হবু বরকে গুম করে নিজে এসেছে বিয়ে করতে। এখন তুমি কি বলবে

” আমি ওনাকে বিয়ে করবো না
তুলি কিছুটা জোর গলায় বলে।
“সোজা কথায় বিয়ে করতে রাজি না হলে জোর করতে হবে এই আর কি?
তুলি কিছু বলতে যাবে তার আগেই তুলির মা তুলিকে বলে
” এখানে অনেক মানুষ সিনক্রিয়েট করো না। আমাদের একটা সম্মান আছে।
তুলি চুপ হয়ে যায়।
“চুপ করে থাকা সম্মতির লহ্মণ। শুভ কাজে দেরি করতে নেই। বিয়েটা করেই ফেলি
বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়। সায়ান প্রশান্তির হাসি দেয়।
তুলি নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। ভেতরে আগে থেকেই সায়ান ছিলো সেটা তুলি জানতো না। দরজা বন্ধ করে পেছনে ফিরে চমকে যায় সায়ান মুখে বাঁকা হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তুলি সায়ানকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নেয় সায়ান হাত ধরে।
” বলেছিলাম লিপস্টিক না দিতে তবুও লিপস্টিক দিলা
“আপনার কথা শুনতে বাধ্য নয়
” দুইবার বিয়ে করা বর আমি তোমার + তোমার ক্রাশ
“ওসব পাস্ট
” আজ বিয়ে হলে এটাও পাস্ট
“গুন্ডামি করে বিয়ে করেছেন ভালোবেসে না।
” ভালোবেসে করেছি
“হুম আপনার কাছে তো ভালোবাসা মানে ডাল ভাত
” নাহহ আমার কাছে ভালোবাসা মানে ব্রাজিলের ফুটবল টিম??
“???
” অবাক হলে কেন??
“মনা কোথায়?
সায়ান মাথা নিচু করে বলে
” চলে গেছে
তুলি হাত তালি দেয়

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

“বাহহহ ভেরি গুড। মনা টু তুলি তুলি টু মনা এটাই তো? যখন মনা ছিলো তুলি কে এখন তুলি আছে মনা কে। এরকম কেনো বলেন তো? নাহয় আমি ভুল করে ক্রাশ খাইছিলাম তাই বলে এমনটা করবেন? মনা চলে গেছে বলে এখন আমার কাছে এসেছেন। মনা চলে আসলে আবার চলে যাবেন। সায়ান আমিও তো মানুষ। মন তো আমারও আছে কষ্ট তো আমারও হয়। ভালোবাসি বলেই কি এতো অবহেলা এতো এটিটিউট
সায়ান তুলির দুগালে হাত রাখে।
” মনা চলে যায় নি। আমি চলে এসেছি। তুমি চলে আসার পরে আমি ভালোভাবে রিলাইজ করতে পেরেছি তুলি ছাড়া সায়ান শূন্য। আমি তোমার জন্য কি ফিল করি এটা মনাকে বলেছি দেন ও নিজে থেকেই চলে গেছে। তোমাকে ছাড়া আমার দুইটা সেকেন্ড চলে না। তোমার পাগলামি খুব মিছ করি। প্লিজ আগের মতো হয়ে যাও। তোমার হাসিমাখা মুখটা দেখি না কতো দিন হলো।

সায়ান একটু শ্বাস নিয়ে তুলির আর একটু কাছে গিয়ে বলে
“জানো আমি মদ খেয়েছি। মদের গন্ধটাও সয্য করতে পারতাম না সেই সায়ান মদ খেয়েছে তাও আবার পাঁচদিন। সিগারেট কতো খেয়েছি তার তো হিসেব নাই। কিন্তু কিছুতেই নেশা হয় নাই। কজ “আমি ভীষণ ভাবে আসক্ত তুমি নামক নেশায় ”

দুইটা থাপ্পড়ের জন্য অনেক শাস্তি দিয়েছো এবার প্লিজ নরমাল হও। চাইলে তুমি আমাকে একশোটা থাপ্পড় দাও তবুও আমার সাথে ভালোভাবে কথা বলো।
সায়ানের নিশ্বাস তুলির চোখে মুখে পরছে। তুলি কথা বলার শক্তি টুকু পাচ্ছে না। মনে মনে বলছে কিন্তু মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।
“এএএএকককটু সরে দাঁড়ান প্লিজ
তুলি তুতলিয়ে বলে। সায়ান মজা করে আরও কাছে এসে বলে
” দুরে যাওয়ার জন্য তো কাছে আসি নি
“আমার কথা আটকে আসছে নিশ্বাস নিতে পারছি না। কেমন কেমন লাগছে
সায়ান এবার তুলির পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে। তুলি কাঁপছে। সায়ান দুরে গিয়ে দাঁড়ায়। তুলি বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেয়

” আল্লাহ দুই সেকেন্ডে জন্য মরি নাই
“কও কি
” হহ আপনি যেভাবে ধরে ছিলেন আর একটু হলে পরাণ পাখি উড়াল দিতো।
“বাঁদরামো শুরু হলো
তুলি হাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে বলে
” এখনো মাফ করি নি
“কি করলে মাফ পাবো
” বারোটা বেবি দিতে হবে?
“এতো কম??
কম?
” আমি তো ভেবে রেখেছি পুরো আর্জেন্টিনা ব্রাজিল দুই টিমে যতগুলা আছে ওতো গুলা বেবি নেবো?
তুলি লাফ দিয়ে সায়ানের পাশে বসে বলে
“সত্যি
” হুম
“শুরু করেন
” পাগলী যাও চেঞ্জ করে আসো
“?????
তুলি চেঞ্জ করতে যায়। সায়ান মুচকি হাসে
” কতোদিন পরে ইডিয়েটটার হাসি মুখটা দেখলাম। আই প্রমিজ আর কখনো তোমাকে কাঁদাবো না। রাগাবো না। বকবো না। শুধু ভালোবাসবো
“জানেন কাল অভি ফোন দিছিলো। অনেকখন কথা বলছি। খুব ভালো লাগলো?

” কিহহহহহ???????
তুলি চেঞ্জ করে বের হয়ে সায়ানের কথা শুনতে পায়।
“এই তো প্রমিজ করলেন রাগবেন না। বকবেন না। এখনি ভুলে গেলেন?
সায়ান চুল টেনে নিজেকে শান্ত করে। তারপর নরম গলায় বলে
” অভির সাথে কথা বলো না প্লিজ। অভি তোমায় ভালোবাসে। তুমি ওর সাথে কথা বললে ওতো তোমার প্রতি আরও এডেক্টেট হয়ে পরবে তাই না
“আমি তো অভির সাথে কথা বলিই নি আপনাকে রাগানোর জন্য বলেছি?
” ইডিয়েট
“আপনারই তো বউ
” সেটাই কপাল
“হুমমন????
” এভাবে দুর থেকে ঠোঁট না বেঁকিয়ে ডিরেক্টলি দিলেই তো পারো
“সত্যি ?
হুমম

আমার ক্রাশ পর্ব ১৯

সকাল বেলা ধপাস করে কিছু পরে যাওয়ার শব্দে সায়ান ধরফরিয়ে ওঠে। তাকিয়ে দেখে তুলি পরে গেছে। সায়ান দৌড়ে তুলির কাছে যায়
” কি হলো পড়লে কি করে?
“চুলের পানি পড়ছিলো ফ্লোরে খেয়াল করি নি। ধপাস করে পরে গেছি????
” ব্যাথা পাইছো

“নাহহহহ? ব্যাথা তো আমারে দেইখা ডরায় তাই আমার কাছে আসে নাই
” তেরা কথা৷ কোথায় ব্যাথা পাইছো
“কোমর আর পায়ে
” ভেরি গুড
“আপনি সত্যি আমার জামাই তো?
” নাহহহ তোমার জামাইয়ের ফটোকপি ☹️
“ধুর
সায়ান তুলিকে কোলে করে বিছানায় বসায়

আমার ক্রাশ পর্ব ২১