আমার ক্রাশ পর্ব ২১ || Tanisha Sultana (Writer)

আমার ক্রাশ পর্ব ২১
Tanisha Sultana (Writer)

তুলি মোটামুটি পায়ে ভালোই ব্যাথা পেয়েছে। চুপচাপ আছে ব্যাথার কথাটা কাউকে বলতে চাচ্ছে না।
“ওই চলো আমাদের বাড়ি যাবো
সায়ান বেলকনিতে ফোন দেখছিলো রুমে এসে বলে।
” থাকি না আজকে
“কেনো বলো তো
” এমনিতেই
“ওকে থাকলাম কিন্তু রুম থেকে তো বের হবা
” আপনি যান আমি এখন বের হবো না
“কেনো?
” ভাল্লাগে না
তুলি সুয়ে পরে। সায়ানের সন্দেহ হয়। তুলির পাশে বসে
“এতোটা চুপচাপ থাকার মেয়ে তো তুমি না। কাহিনি কি বলো
” সত্যি কিছু না
“ওঠো
সায়ান জোর করে তুলিকে উঠিয়ে বসাতে যায়। তুলি আহহহ করে ওঠে
” কি হয়েছে? ?
“না মানে
” স্পষ্ট করে বলো
“পায়ে একটুখানি ব্যাথা পাইছি
” ওহহহ শিট আমারই বোঝা উচিৎ ছিলো
সায়ান তুলির পায়ে হাত দিয়ে দেখে পাটা ফুলে গেছে।
“হাসপাতালে যেতে হবে
” প্লিজ আমি যাবো না
“তুমি যাবে না তোমার ঘাড় যাবে
সায়ান তুলিকে কোলে নিতে যায়
” এই ড্রেসে হাসপাতালে যাবো?
“অমানুষ

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

সায়ান আলমারি থেকে তুলির একটা ড্রেস বের করে। ড্রেসটা তুলির সামনে রেখে বলে
” পড়ে নাও
“আমার পায়ে ব্যাথা আমি কি করে পড়বো
” হাতে তো আর ব্যাথা না।
“তো কি হয়েছে?
” না পড়লে এভাবেই নিয়ে যাবো
“জানি তো ভালোবাসেন না
” কে বললো?
“ভালোবাসলে ড্রেসটা পড়িয়ে দিতেন।
সায়ান তুমির মুখের কাছে মুখ নিয়ে বলে
” আমি পড়াতে গেলে কিন্তু পবলেম হতে পারে
“আমিও সেটাই চায়?
সায়ান একটু দুরে গিয়ে বলে
” পবলেম বলতে পায়ে আবার ব্যাথা পেতে পারো
“?????
” নাও হেল্প করছি
“লাগবো না?
” গুড গার্ল ?
“সর তুই ?
এমন করো কেন?
” চেঞ্জ করবো তাই যেতে বলছি?
“ওহহহ আগে বলবা তো
সায়ান বেলকনিতে যায়। তুলি জামাটা হাতে নিয়ে বসে আছে
” একা একা কিভাবে চেঞ্জ করবো? যদিও করা যাবে কিন্তু আমি করবো না?। জামাই আছে তো। একটা মাএ জামাই। তারপর এতোদিন আমারে কতো কষ্ট দিছে একটু শোধ তো নিতেই হয়। হি হ
তুলি পড়ে থাকা জামাটা খুলে জোরে একটা চিৎকার দেয়। সায়ান দৌড়ে আসে। তুলির দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
“এটা কি হলো?
সায়ান তুলির নিশির কাছে যায়। নিশি রান্না করছিলো
” নিশি শোন
“হুম বলো
” যা তুলিকে একটু হেল্প কর
“কেনো?
” পায়ে ব্যাথা পাইছে তাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো তো চেঞ্জ করতে পারছে না একা একা
“কখন ব্যাথা পেয়েছে? আর বলো নি কেন আমাদের
” বাঁদরামী করতে গিয়ে ব্যাথা পাইছে। খুব বেশি না। একটু হেল্প কর। আর এখন কাউকে বলতে হবে না
“আচ্ছা

নিশি তুলির রুমে যায়। দেখে তুলি চেন্জ করে গাল ফুলিয়ে বসে আছে
” ভাইয়া আমাকে পাঠালো তোমাকে হেল্প করতে
“আমার চেঞ্জ করা শেষ
” মুখ ভাব কেনো?
“একটা গাঁধার ওপর ক্রাশ খাইছিলাম
“কেনো?
” তুমি বুঝবা না। গাঁধাটাকে পাঠিয়ে দাও। বলো চেঞ্জ করা শেষ
“ওকে
নিশি গিয়ে সায়ানকে পাঠিয়ে দেয়।
” চলো
“হুম চলুন। আমি তো আবার হাঁটতেও পারি
” এতো তেরা কেন তুমি
“আপনি এতো ব. ল. দ কেনো?
” কি বললা তুমি ?
“শুনেন নাই
” ইডিয়েট
“আপনার থেকে ভালো আছি
” সেটাই
“হুম সেটাই
সায়ান তুলিকে কোলে নেয়
” তোমার ওজন কতো
“৪১
” ডপবাজ
“??
রাগো কেন আমার তো একশোগ্রাম কমই মনে হচ্ছে।
” ৮০ কেজি ওজনরে বলতেছে ৪১ আজকে আমি শেষ
সায়ান বিরবির করে বলতেছে
??
“মিস্টার সায়ান আপনার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট
” কিহহহ??(সায়ান)
“সত্যি ? (তুলি)
ডাক্তার একবার সায়ানের মুখের দিকে তাকাচ্ছে আবার তুলির।
” এটা পসিবল না
“এটা পসিবল
” তুলি তুমি চুপ করো

“কেনো চুপ থাকবো? আমি মা হতে চলেছি এটা তো ঢাকঢোল পিটিয়ে বলবো
” তুমি প্রেগন্যান্ট না
“আপনি এসবের কি বুঝেন? আমার সকালে একবার মাথা ঘুরে ছিলো। যদিও এখনো বমি হয় নি তবে তারতাড়ি হয়ে যাবে। কি বলেন ডাক্তার সাহেব। সারা পারা মিষ্টি বিলাবো আমি
ডাক্তার গালে হাত দিয়ে বসে আছে
” সত্যি তুমি প্রেগন্যান্ট
“হুম
” কার বাচ্চা এটা??
আমার
“বাবা কে
” আপনি
“আমি তো
” কাল রাতের কথা ভুলে গেলেন। জানেন ডাক্তার সাহেব কাল রাতে উনি আমাকে
সায়ান তুলির মুখ চেপে ধরে
“একদম চুপ
” আপনারা থামবেন
ডাক্তার দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলে। সায়ান তুলি চুপ হয়ে যায়।
“আপনারা বের হন
” আমার বেবি কেমন আছে?
ডাক্তার মাথায় হাত দিয়ে বসে।
“আপনার বেবি খুব তারাতাড়ি আপনার পেটে আসবে। এবার বের হন
” ওহহ
তুলি মন খারাপ করে বের হয়। গাড়িতে বসে কান্না শুরু করে দেয় তুলি।
“কি হলো?
” ??????
“কান্না করছো কেনো?
” আপনার জন্য ডাক্তার আমাকে অপমান করলো?
“আমি কি করলাম?
” গাঁধা আপনি
“তুমি তো ইডিয়েট
” কথাই বলবো না আপনার
“না বললে তো আমি বেঁচে যায়। কিন্তু কথা না বলার কারণ
” আই নিড বেবি

“মি টু
” তাহলে
“তুমি একটু বড় হও
” অনেক বড় হয়েছি আমি
“বিশ হোক
” না আমার এখুনি লাগবো
“জেদ করো না
তুলি জানালায় মাথা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। সায়ান ডাইফ করছে আর একটু পরপর তুলিকে দেখছে।
” ওই তুলি
“……..
” আচ্ছা তুমি কি বেবিদের নাম ঠিক করেছো?
“হুমম ছেলে হলে জুনিয়র নেইমার আর মেয়ে হলে তামসি
” ওয়াও
“হুমমম
” ঠিক আছে
“দেবেন
” দেখি
“পরে দেখিয়েন। এখন দেন
” মানে
“ও থুক্কু পরে দিয়েন
তুলি হাজারটা কথা বলছে আর সায়ান শুনছে
সায়ান তুলির হাতের ওপর হাত রাখে
” আই লাভ ইউ তুলি
“লাভ ইউ টু
সায়ান তুলির হাতে একটা চুমু দেয়। তুলি সায়ানের একহাত জড়িয়ে ধরে।
” এটা তো বাড়ির রাস্তা না তাহলে আমরা কোথায় যাচ্ছি
“সারপ্রাইজ
” কিন্তু
“কোনো কিন্তু না। বিয়ের পর থেকে এই পর্যন্ত আমি তোমাকে অবহেলা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারি নি। আসলে এমন একটা সময় তুমি আমার জীবনে এসেছিলে সে সময়টাই খারাপ ছিলো। এখন আমি তোমার সব অবহেলার অবসান ঘটাবো। খুব সুখে রাখবো তোমায় আমি। কখনো অভিযোগ করার সুযোগ দেবো না।
” আপনি আমার পাশে থাকলে আমার আর কিচ্ছু চায় না। বড্ড বেশি ভালোবাসি আমি আপনাকে। আগে আমার সাথে কি করেছেন এসব কিচ্ছু মনে নেই আমার। এখন আপনি আমার সাথে আছেন আর ফিউচারেও থাকবেন এটাই আমার কাছে অনেক। থাকবেন তো

আমার ক্রাশ পর্ব ২০

“কোথায় যাবো বলো? তোমাকে ছাড়া তো থাকতেই পারি না। দম বন্ধ হয়ে আসে।
দুজন একসাথে হেসে ফেলে। একটা বাড়ির সামনে সায়ান গাড়ি থামায়
” এটা
“ফিউচারে আমি তুমি আর আমাদের বেবিরা থাকবো এই বাড়িতে। নিজের টাকায় গড়েছি বাড়িটা। তোমার জন্য।
অসম্ভব সুন্দর বাড়িটা। দেখেই মন জুড়িয়ে যায়। বাড়ির সামনে বড় বড় করে লেখা ” সায়ান তুলি”
তুলি শক্ত করে সায়ানকে জড়িয়ে ধরে
“থ্যাংক্স #আমার ক্রাশ
” ওয়েলকাম ভালোবাসা

আমার ক্রাশ পর্ব ২২