আমার ক্রাশ পর্ব ৩ || romantic love story

আমার ক্রাশ পর্ব ৩
Tanisha Sultana (Writer)

অবশেষে সায়ান তুলির বিয়েটা হয়েই গেলো। কবুল বলেই তুলি উরাধুরা নাচা শুরু করে দিছে। ক্রাশ বর হইছে ভাবা যায়। বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই হইছে। বিয়ে শেষে তুলি জিসান আর নিশি তুলি সায়ানের বাসব সাজাচ্ছে। তুলিই একমাত্র মেয়ে যে নিজের বাসর নিজেই সাজাচ্ছে।
“দোস্ত তোর নাম ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে (জিসান)
” আমি আবার কি মহান কাজ করলাম
“নিজের বাসর নিজেই সাজাচ্ছিস
” ভাই ঠিক বলসো (নিশি)
“আমার নাম কোথায় লেখা থাকবে জানি না। তবে তোর ভাই যে আমার সাথে কি করবে ভাবছি
” কি আর করবে বাসর করবে
“তাই যেনো হয়। আল্লাহ হেলেপ করো তোমার নিষ্পাপ বান্দারে
(বিয়েটা কি করে হলো আস্তে আস্তে বলবো)
একহাত ঘোমটা টেনে বসে আছে তুলি।
“সায়ান এসে কি করবে? আমার ঘোমটা সবারে। আমি ওকে সালাম করতে যাবো ও বলবে তোমার স্থান আমার পায়ে না বুকে। তারপর?
এসব ভাবছে আর নিজে নিজেই হাসছে।
” একটা গান খুব মনে পরছে।
বুক চিনচিন করছে হায়,
মন তোমায় কাছে চায়

তুলি সুর তুলে গানটা গাইছে তখন ঠাস করে দরজা খুলে সায়ান ঢুকে। পাগড়ি ছুড়ে ফেলে। পানজাবির বুতাম খুলে ঠুসঠাস করে পানজাবি খুলে।
তুলি সায়ানের সামনে গিয়ে বলে
” এতো তারাহুরো করে খুলছেন কোনো? আমি তো বর বেশে আপনাকে দেখতেই পারলাম না। যদিও আমি জানি আপনাকে দারুণ লাগছে তারপর একটা পিক তুলতাম। আপলোড দিতাম আসলে সবার কাছে আপনার কথা এতো বলেছি যে সবাই আপনাকে দেখার জন্য এক্সাইটেড।
সায়ান তুলির গলা চেপে ধরে
“কেনো করলে তুমি? কি চাও তুমি? তুমি কি ভেবেছো এসব করে আমার থেকে মনাকে দুরে করে দেবে? পারবে না। কজ আমি মনাকে আর মনা আমাকে আমরা দুজন দুজনকে ভীষণ ভালোবাসি। কেনো তুমি থার্ডপারসন হচ্ছো আমাদের মধ্যে
তুলি নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।
” আমি আপনাকে ভালোবাসি। আমার আপনাকে চায়।
“আমি তোমাকে ভালোবাসি না আর কখনো বাসবোও না
ভালোবাসো আর নাই বা বাসো
শুধু তোমায় ভালো বাসতে দিও
তুলি সুর টেনে গানটা গায়। সায়ান মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

” ওহহহ গড
কি করে মুক্তি পাবো তোমার থেকে?
তুলি সায়ানের পাশে বসে
“আপনি মুক্তি পাওয়ার কথা ভাবছেন আর আমি বেবির কথা ভাবছি
” কিহহহহ
“হুম। ভাবছি এগারো না বারোটা বেবি নেবো। পুরো একটা ব্রাজিলের টিম বানাবো। তারপর ২০২২ সালের বিশ্ব কাপটা আমরাই জিতে নেবো
“ককককককককি
” আপনি যদি আরও বেশি নিতে চান তবে আমার পবলেম নেই
“এই তুমি মানুষ
” নাহহ আপনার বউ
সায়ান দাঁড়িয়ে বলে
“বের হও
” কেনো?
“তোমার সাথে বেড শেয়ার করা সম্ভব না
” এক সাথে না ঘুমালপ বেবি হবে কি করে?
সায়ান তুলির হাত ধরে রুমের বাইরে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়
“যাহ বাবা আমাকে অপমান করলো। রুম থেকে বের করে দিলো। আমিও ছাড়বো না। দেখে নেবো। বিয়ে করা বউ আমি #আমার ক্রাশের। আমাকে ইগনোর করবা দেখাচ্ছি।
” এ্যা এ্যা?????
তুলি জোরে কাঁদতে থাকে।
“এই মেয়ে এভাবে কাঁদলে তো আবার বাবা বকবে। এমনিতেই কোলে নেওয়ার জন্য একে বিয়ে করতে হয়েছে। এবার রুম থেকে বের করার জন্য না জানি কি হবে। তার থেকে রুমে নিয়ে আসি।
সায়ান এসব ভেবে দরজা খুলে
” সমস্যা কি তোমার?
“আপনি শিশু নির্যাতন কেনো করছেন?
” ওই চুপ
সায়ান তুলির মুখে হাত দেয়।
“রুমে চলো
সায়ান চলে যায়। তুলি এক লাফে উঠে নাচতে নাচতে রুমে ঢুকে।
” থ্যাংকু জামাই ?
“ওভারে ঠোঁট বাঁকালে কেনো?
” এভাবে ঠোঁট বেঁকিয়ে কিছ করলাম। উড়ল্ত কিছ?
“কে শেখাই এসব তোমায়
” মোবাইল শেখাই। সিনেমা দেখে শিখি। আপনি শিখবেন?
“সাট আপ
” সাট আপ বানান পারেন তো
“কিহহহ
” খালি গায়ে আপনাকে যা লাগছে না পুরাই হট হট গ্রীষ্ম কাল?
“আল্লাহ কে এটা

” আপনার একমাত্র সুইট কিউট মিষ্টি বউ তুলি।
“এর সাথে আর একটু থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো
সায়ান বেলকনির দরজা লক করে বেলকনিতে বসে থাকে। দরজা লক না করলে আবার তুলি চলে আসবে।
মনা কল দেয়
” কি করে আমার জানটা
“সায়ান চৌধুরীর সাথে কথা বলি। তুমি?
” হবু মিসেস এর সাথে কথা বলি। ওই মেয়েটার কি করবো সবই তো বললাম তোমায়
“তোমার কিঢ়ু করতে হবে না। ওই মেয়ের ব্যবস্থা তো আমি করবো
” কি করবে
“ওয়েট এন্ড সি
” ওকে
“এখন তুমি পাগলটাকে নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসো
” কিন্তু
“বলবা তোমার অফিস এখান থেকে কাছে হয় সেই জন্য এই বাড়িটা ভাড়া নিয়েছো
” ঠিক আছে। তবে তুলি কিন্তু ভীষণ ডেঞ্জারাস
“শুধু কি ডেঞ্জারাস সয়তান একটা?
” বাদ দাও ওর কথা। এখন বলো খেয়েছো
“নাহহ। তুমি
” নাহহহ
“যাও এখুনি খেয়ে আসো। এতো রাত হয়েছে আর তুমি এখনও খাও নি। ইটস নট ফেয়ার সায়ান
” ওকে খাবো। তুমি
“আমিও খেয়ে আসি
” ওকে লাভ ইউ
“লাভ ইউ টু
” ???
“??

সায়ান বেলকনিতেই ঘুমিয়ে ছিলো। আজানের শব্দে ঘুম ভাঙে। রুম থেকে ল্যাপটপ এনে বেলকনিতেই কাজ করতে থাকে।
নয়টা পর্যন্ত কাজ করে রুমে যায়। তুলি বাথরুমে গোছল করতেছিলো।দরজা লক করতে ভুলে গেছে। সায়ান কোনো কিছু না ভেবেই বাথরুমে ঢুকে পরে। তুলির দিকে তাকিয়ে সায়ান চোখ বড়বড় করে ফেলে। এখান থেকে বের হওয়ার কথা মনে নেই। তুলি তো শান্তিতে গোছল করছে। কোনোদিকে খেয়াল নেই।
তুলির এবার সায়ানের দিকে নজর যায়। সায়ান চিল্লানি দিতে যায় তুলি মুখ চেপে ধরে
” একদম চেঁচাবেন না।
সায়ান ঘামছে। তুলি সায়ানের খুব কাছে দাঁড়ানো। তুলি সরে দাঁড়ায় সায়ান এক দৌড়ে বেরিয়ে যায়। বাইরে গিয়ে বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নেয়
“আল্লাহ এই মেয়ে কি?
সায়ান জিসানের রুমে চলে যায়। ওখানে গিয়ে গোছল করে। রুমে এসে দেখে তুলি বাকি সব পরে শাড়ি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। সায়ান সেদিকে পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজ করে
” ও জামাই
সায়ান একবার আড়চোখে তাকিয়ে আবার নিজের কাজে মন দেয়
“ওই সায়ান ডাকছি তোরে শুনোস না
” নাহহ শুনি না। আমার কান বন্ধ
“আমি খুলে দিবো
তুলি সায়ানের দিকে সয়তানির একটা হাসি দিয়ে বলে।
” আমার কাজ আছে
“আমারও
” ফাজলামি ভালো লাগে না
“আমারও
” ইডিয়েট

সায়ান ফাইল টাইল নিয়ে বেরিয়ে যায়৷ তুলি একটা ওড়না জড়িয়ে লেহেঙ্গারের মতো পরে সায়ানের পিছে দৌড় দেয়।
কিন্তু সায়ানকে ধরতে পারে না। তুলি গাল ফুলিয়ে রুমে চলে যায়। ইউটিউব দেখে শাড়ি পরা শেখে। তারপর ফোন নিয়ে বসে। দেখে সায়ানের ফ্রেন্ড লিস্টে ৫১২ জন ফ্রেন্ড তার মধ্যে ৫০০ জনই মেয়ে
“আমার লুচ্চা ক্রাশের ভাব দেখে মরে যায়। মেয়ে দেখলেই নিকনিক শুরু হয়ে যায়। দেখাচ্ছি বাড়ি আসো তুমি। খুব বম্ভচারি হয়ে ঘুড়ে বেড়াও তাই না।
” ওই লেডি কি করোস?
জিসান রুমে ঢুকতে ঢুকিতে বলে
“তোর ভাইয়ের নিকনিক দেখছি।
” তুই একটা মানুষ ই। কেমন ছলে বলে কৌশলে ব্রোকে বিয়ে করে নিলি।
“হুম এবার দেখ ছলে বলে কৌশলে ব্রাজিলের টিম ও বানিয়ে ফেলবো
” কথা বার্তা সাবধানে বল আমি তোর দেবর
“সো হোয়াট
” আরে গাধী এসব বলতে নেই
“করে দেখাতে হয় বুঝি
” তোর কাজিনরে পটাই দে
“আমার কাজিন কি গাঁজা খাইছে না কি যে আমি বললেই পটে যাবে। তবে তুই যদি তোর ভাইয়ের মন জয় করাতে হেল্প করিস তবে ভেবে দেখবো
” ওকে ডান। আগে তোকে রান্না শিখতে হবে
“আমি তো রান্না পারি
” আরও বেটার পারতে হবে
“তুই বলতে চাইছিস আমি বেটার রান্না করি না?
” বাদ দে। হট হট সাজতে হবে
“ধুর
” কেন?

আমার ক্রাশ পর্ব ২

“তোর কাছ থেকে হট শব্দটা শিখলাম। যখনই তোর ভাইয়ের সামনে হট শব্দটা বলি রনোচন্ডা রুপ ধারণ করে।
” রনোচন্ডী শুনেছি চন্ডা তো শুনি নি
“আমি নতুন আবিষ্কার করলাম।
” তুলি
শাশুড়ী ডাকে
“তোর মা ডাকছে আসছি
” চল

আমার ক্রাশ পর্ব ৪