আমার ক্রাশ পর্ব ৪ || Tanisha Sultana

আমার ক্রাশ পর্ব ৪
Tanisha Sultana 

তুলি মন প্রাণ দিয়ে রান্না শিখতেছে। বেস্ট রান্না ও শিখবেই। শাশুড়ী বা নিশি কাউকেই রান্না ঘরে ঢুকতে দিচ্ছে না।
প্রায় দুইঘন্টা রান্না শেখার পরে তুলি রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে বলে
“রান্না করার তো বেপারই না। এটা তো আমার বা হাতের খেলা?
শাশুড়ী টেস্ট করেন
শাশুড়ী ভয়ে ভয়ে বলে
” আমি কেনো? জিসান আছে তো
“নাহহহহ আপনিই খাবেন
শাশুড়ী ভয়ে ভয়ে খায়। নাহহ বেশ ভলো হয়েছে।
” আমি ফ্রেশ হতে যাচ্ছি বাই গাইজ
ওদের বাই বলে তুলি রুমে ঢুকতে। তাও আবার সাধারণ ভাবে না গলা ছেড়ে গান গাইতে গাইতে
বুক চিনচিন করছে হায়
মন তোমায় কাছে চায়

তুমি ছুঁয়ে দিলে হায়
আমার কি যে হয়ে যায়❤️
সায়ান রুমে বসে কাজ করছিলো তুলির গান শুনে তুলির দিকে তাকায়।
“এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো গো জামাই। প্রেম প্রেম পাচ্ছে না কি?
সায়ান কাজে মন দিয়ে বলে
” ইডিয়েট
“আপনারই তো বউ
” সেটাই তো কপাল
তুলি একটা ভেৎচি কেটে ফোন হাতে নেয়। দেখে সায়ান মনা আর সায়ানের একটা পিক কভার ফটো দিছে। তুলি ওখানে কমেন্ট করে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের জান্নাত?
সায়ানের কমেন্ট টা দেখে মাথা গরম হয়ে যায়।
“কি কমেন্ট করলে তুমি?
তুলি ফোনটা রেখে বলে
” সত্যি কথাই তো বললাম
“মনা আমার গার্লফ্রেন্ড
” খালাম্মা কি করে গার্লফ্রেন্ড হয়?
“আর একবার খালাম্মা বললে চাপকে গাল লাল করে দেবো
” সব সময় পিচ্চি টাকে বকতে আপনার ভালো লাগে
“তোমার আমার হার মাংস জ্বালিয়ে খেতে ভালো লাগে
” হুম ভীষণ ভালো লাগে
“যাও তো এখান থেকে কাজ করতে দাও
” মনা খালাম্মা যদি থাকতো তাহলে কি এই কথা বলতেন?
সায়ান গম্ভীর হয়ে বলে
“নাহহহ মাথায় করে রাখতাম। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতাম আমার মায়াবীনির দিকে। চোখের তৃষ্ণা মেটাতাম। মনা আমার জীবন। আমি ওকে আমার জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি।
তুলি হাত তালি দিয়ে লাফিয়ে ওঠে। সায়ান ভয় পেয়ে যায়

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

” দারুণ ডাইলোক দেন আপনি। হিরোদের মতো। আমার হিরো। আপনাকে এতোগুলা লাভ ইউ।
“কারে কি কইলাম
” বউরে লাভ ইউ কইলেন
“মাথা খারাপ হয়ছে না কি আমার
” আমাকে দেখে হতেও পারেন
“ইডিয়েট
সায়ান বিরক্ত হয়ে কাজে মন দেয়
” যে বোঝে না তাকে বোঝানো যায় কিন্তু যে বুঝেও না বোঝার ভান করে তাকে বোঝানোর সামর্থ্য কারো নেই”
তুলি সায়ানের দিকে তাকিয়ে আছে গালে হাত দিয়ে। সায়ান এক মনে কাজ করে যাচ্ছে। তুলি ভাবছে সায়ানের সাথে প্রথম দিন দেখা হওয়ার কথা।
তুলি বাইক চালিয়ে কলেজে যাচ্ছিলো তখন দেখে রাস্তার পাশে কতোগুলো ছেলে সায়ানকে মারছে আর একটা মেয়ে মানে মনা দাঁড়িয়ে দেখছে। তুলি বীর মহিলার মতো গিয়ে ছেলেদের সাথে ফাইট করে ছেলেদের ভাগিয়ে দেয়। মনা তো দৌড়ে চলে যায়। সায়ানের হুশ ছিলো না তাই সায়ান তুলিকে দেখে নি।
“হেলো
সায়ান তুলির সামনে তুরি বাজিয়ে বলে। তুলি ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে
” হুম জামাই বলো
“এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? খেয়ে ফেলবে না কি?
” খেতেই তো মন চায় আমার হট হট গ্রীষ্মকালরাকে
“যাও এখান থেকে
তুলি লাফ দিয়ে গিয়ে সায়ানের কোলে বসে পরে।
” এটা কি হলো
“লাভ ইউ
” হেট ইউ। নামো তো
তুলি সায়ানের গলা জড়িয়ে ধরে।
“এমন করেন কেনো আমার সাথে। (আদুরী সুরে)
” তাহলে কেমন করবো
“ভালোবাসবেন
” মনাকে ভালোবাসি তো
“ওই ভালোবাসা না
” তাহলে কোন ভালোবাসা
“শরম করে বুঝেন না কেন??
” এসব বাদ দাও পড়ালেখায় মন দাও
তুলি সায়ানের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলে
“হুম
” কি হুম
তুলি ঠাস করে সায়ানের ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে ফেলে সায়ান ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
“এটা কি হলো?
” তুমি কি করতে যাচ্ছিলে
“আপনি জানেন না আমি কি করতে যাচ্ছিলাম
” নাহহ জানি না
“কিছ,করতে যাচ্ছিলাম বুঝছেন
” তুলি তুমি এমন কেনো করো
“ভালোবাসি তাই করি
” সরো কাজ আছে আমার
“তুলি গলা জড়িয়ে আরো কাছে গিয়ে বলে
” সরবো না
“ভাল্লাগে না
” আমার ভাল্লাগে
“তুলি প্লিজ
তুলি সরে যায়
সায়ান উঠে ফোন নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়। জিসান আসে
“কি রে কি করোস
” নাচতেছি
“চেতস কেন
” ভাল্লাগতেছে না
“একটা জিনিস দেখবি
” কিহহহহহ
জিসান ফোন বের করে তুলিকে ছবি দেখায়। তুলি যখন সায়ানের কোলে বসেছিলো তখন তুলছে জিসান। কিছ করার ছবিও তুলছে। পিক দেখে তুলি লাফিয়ে ওঠে
“এই না হলো আমার টুনুমুনু দোস্ত উম্মমমমনা????
” এগুলো আপলোড দিয়ে দে
“ওকে বেবি
জিসান চলে যায়।
সায়ান মনার সাথে কথা বলছে
” কি করো
“বসে আছি। তুমি
” তোমার কথা ভাবছি
“লাভ ইউ সো মাচ মনা
” লাভ ইউ টু
“বিকেলে মিট করবো
” করতে পারি যদি তুমি আমায় কিছ করো
সায়ানের তুলির কথা মনে পরে যায়। একটু আগে কিছ করছিলো সেটাও মনে পরে।
“এতোদিনের রিলেশন আমাদের কিন্তু তুমি আমায় টাচ করো না৷ কেনো বলো তো
” বাদ দাও
“কেনো
” সামনের মাসে সিঙ্গাপুর যেতে হবে
“আমিও যাবো
” তুমি কেনো যাবে
“প্লিজ আমি যাবো। কখনো সিঙ্গাপুর যায় নি। প্লিজ নিয়ে যাবে
” পাগলি একটা
“হুম তোমার। নিয়ে যাবে
” ঠিক আছে
কথা বলা শেষ করে সায়ান রুমে এসে দেখে তুলি বেলকনির দরজার ওখানে দাঁড়িয়ে আছে
“তুমি এখানে
তুলি সায়ানকে জড়িয়ে ধরে বলে
” থ্যাংকু জামাই
“কেনো
” আপনি এখনো খালাম্মা কে টাচ করেন নাই তাই
সায়ান তুলিকে ছাড়িয়ে রুমে ঢুকে
“আমি কিন্তু সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য আপনাকে জোর করবো না
সায়ান হাঁপ ছেড়ে বলে
” ধন্যবাদ
“তবে বাবা আই মিন শশুরমশাই জোর করবে
” ইউ?
“তুলি আপনার ঝাকানাকা বউ
সায়ান মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে
” জানু মনু বেবি বাবু টুনুমুনু আপনি ঠিক আছেন তো?
তুলিও সায়ানের পাশে বসে
“এগুলো কি বললে
” এগুলো ভালোবাসার প্রতিক। অতিরিক্ত ভালোবাসলে এসব বলতে হয়।
“কে শেখায় এসব
” আপনি শিখবেন না কি? সমস্যা নাই আমি শেখাবো। আমি তো এক্সপার্ট
“তা তো দেখতেই পাচ্ছি
” জানটা?
“হপ?

আমার ক্রাশ পর্ব ৩

????
তুলি চলে যায়।
” আমি পাগল হয়ে বের না হওয়া পর্যন্ত এই মেয়ে আমাকে ছাড়বে না। কি সাংঘাতিক
আজ তুলিকে তুলির বাবা এসে নিয়ে গেছে। কয়দিন বাবার বাড়িতে থাকবে। সায়ানের খুশি দেখে কে। সায়ান তো খুশিতে লাফাতে লাফাতে মনার সাথে মিট করতে চলে যায়।
সায়ান মনার জন্য কফিশপে অপেক্ষা করছে আর ফেসবুক দেখছে। হঠাৎ নিউজফিল্ডে দেখে সায়ান তুলির রোমান্টিক ছিন।
“ও মাই গড এই মেয়ে তো মানসম্মান ডুবিয়ে ফেলবে। আজ একে ইচ্ছে মতো ঝাড়বো যাতে ফাজলামির ভুত মাথা থেকে বেরিয়ে যায়।
সায়ান কফিশপ থেকে বেরিয়ে উল্টাপাল্টা দৌড় দেই। মনা যে পেছন থেকে ডাকছে সেদিকে খেয়াল নেই।
সায়ান দৌড়াতে দৌড়াতে তুলিদের বাড়িতে যায়। বাড়িটা কাছে হওয়ায় দৌড়েই যায়।
তুলি ওর মায়ের সাথে রান্না করছিলো
” তুলি
তুলি পেছনে তাকিয়ে দেখে সায়ান
তুলি হাসিমুখে এগিয়ে যায়
“আরো জামাই আপনি আসেন আসেন। আমাকে এতো মিছ করেন। এিশ মিনিট ও আমাকে ছাড়া থাকতে পারেন না। এতো ভালোবাসেন কেনো গো আমায়? আমিও না আপনাকে মিছ করছিলাম ভীষণ। কিন্তু লজ্জায় বলতে পারি নি। কিন্তু এখন আপনি চলে এলেন।
তুলি মা আর সায়ান দুজনই লজ্জা পায়। সায়ান তুলির হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে যায়।

” কি হলো এখানে আনলেন কেন?
সায়ান তুলির হাত ধরে ঝাঁকিয়ে বলে
“কমনসেন্স নাই তোমার? অবুঝ তুমি? কেনো পেছনে পরে আছো? কি পিক আপলোড দিছো? মানসম্মানের ভয় নেই তোমার? এতো খারাপ কেনো তুমি? সব সময় কি ফাজলামি ভালো লাগে না কি? ইডিয়েট একটা। জাস্ট সয্য হয় না তোমাকে আমার। মুক্তি দাও প্লিজ
সায়ানের কথা গুলো তীরের মতো বিধে তুলির শরীরে। তুলি দৌড়ে একটা ফাঁকা রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

আমার ক্রাশ পর্ব ৫