বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২২ || valobashar golpo

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২২
Writer Nondini Nila

গালে হাত দিয়ে চিন্তিত হয়ে বসে আছি। বানিয়ে বানিয়ে কিছু দিয়ে ট্রাই ও করলাম পারলাম না। অসহায় মুখ করে তাকিয়ে আছি। তারপর ল্যাপটপ অফ করে উঠে দাঁড়ালাম ওমনি ভাইয়া আসলো রুমে। ভাইয়াকে দেখেই আমি হতদম্ব হয়ে গেলাম। চমকে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। ভাইয়াকে ক্লান্ত লাগছে অনেক চোখ মুখ ক্লান্তে ভরা ভাইয়া আমাকে দেখে নি আয়ি ভয়ে ভয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
ভাইয়া আমার দিকে তাকালো আর ভ্রু কুটি করলো।
আমি ঢোক গিলে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি‌।
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
“এখানে কি করছিস?”

আমি ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে ঝড়ের গতিতে ভাইয়ার সামনে এসে বললাম,,,
“ভাইয়া তুমি এতো তাড়াতাড়ি চলে এলে যে।”
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“তাড়াতাড়ি এসেছি এতে কি তোর সমস্যা হয়ে গেল।”
“এই না না সমস্যা হবে কেন? আমার তো ভালো হলো।”
ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,,” ভালো হলো মানে!”
“ভালোই তো আমি তো তোমার অপেক্ষায় করছিলাম।”
“আমার অপেক্ষা করছিলি কেন?”
সন্দেহ চোখে তাকিয়ে।
আমি হকচকিয়ে বললাম,,
“করছিলাম একটা কারনে!”
“কি কারন?”
আমি চিন্তা করছি এখন কি বলবো?আমি চিন্তা করছি তখন ভাইয়া বলে উঠলো,,
“বুঝতে পেরেছি আবার আজেবাজে কাজের কথা ভাবছিল।”
ভাইয়া শক্ত কন্ঠে বলল।
আমি বুঝতে পারছি না কি আজেবাজে কাজ আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়া বলল,

আরও গল্প পড়তে ভিজিট করুন

“দেখ দোলা এখন আমি খুব ক্লান্ত এখন প্লিজ আমাকে ডিস্টার্ব করিসনা।”
“আমি তোমায় ডিস্টাব কোথায় করলাম।”
“করিস নি করবি আমি জানি।এখন আমি রেস্ট করবো প্লিজ যা।”
সত্যি ভাইয়াকে অনেক ক্লান্ত লাগছে আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।ভাইয়া আমার দিকে নীরব হয়ে তাকিয়ে বাথটাবে চলে গেল।
কিছু ক্ষন পর এসে বিছানায় শুয়ে পরলো আর আমাকে এখনো ও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো,,,
“,এখন ও যাস নি কেন?”
আমি আসলে ইচ্ছে করেই যাইনি। আমার কেন জানি যেতে ইচ্ছে করেনি। ভাইয়ার ক্লান্ত মুখ দেখে থেকে গেছি।
আমি ভাইয়ার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ভাইয়ার মাথায় কাছে বসে পরলাম।
ভাইয়া আমাকে নিজের মাথায় কাছে বসতে দেখে বসতে গেল।
“কাল হচ্ছে কি দোলা ?তোকে আমি যেতে বলছিলাম। তুই এখানে এসে বসলি কেন?”
আমি ভাইয়াকে উঠতে দিলাম না টেনে ধরে রাখলাম। ভাইয়া চরম বিস্মিত হল আর বড় বড় করে তাকিয়ে বললো,,
“কি করছিহ?”
আমি বললাম,,
“উফফ ভাইয়া উঠছো কেন? শুয়ে থাকো।”
“মানে।”

‘আরে শুয়ে পরো তো আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি তোমার তো মাথা ব্যথা ও করছে তাইনা।”
বলেই ভাইয়ার মাথায় হাত দিলাম।
ভাইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।আমি বললাম,,
“কি হলো এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন?”
“তুই চলে যা দোলা।”
“কোথায় যাব?”
“বাসায় যা আমার কাছে এতো আসিস না।”
বলেই ভাইয়া চোখ বন্ধ করে ফেলল।
আমি ভাইয়ার মাথা হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললাম,,
“সত্যি আসবো না।”
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে র‌ইলো কিছু বলল না।
“কি হলো বলো সত্যি আসবো না।আমি না আসলে তুমি হ্যাপি থাকবে তাইনা।”
বলেই মুখটা ছোট করে ফেললাম।

ভাইয়া আচমকা আমার হাত মাথা থেকে টেনে নিয়ে নিজের বুকের কাছে রাখলো শক্ত করে।আমি থমকে গেলাম। ভাইয়া আমার হাতে নিজের বুকে শক্ত করে ধরে রেখে চোখ বন্ধ করে ফেলল আর বলল,,,
“না রে তুই আমার কাছে এলেও কষ্ট হয়। দূরে গেলেও কষ্ট হয়। এই কষ্ট আমি কাটাতে পারছিনা।বুকের ভেতরটা প্রচন্ড ব্যাথা করে।‌মাথা বিগড়ে যায়। এই কষ্ট আমি কাউকে দেখাতে পারিনা কাউকে না।”
আমি হাঁ করে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো শুনলাম আগা মাথা কিছুই বুঝলাম না।হা করে তাকিয়ে বুঝতে চাইছি।
ভাইয়া আবার বলল,,
“আমার বুকের ভেতরটা পুরে ছারখার হয়ে গেছে রে। একটু ভালোবাসার জন্য ভালোবাসার মানুষটি কাছে থেকেও দূরে এতো কাছে তবু আপন করতে পারছি না। বলতে পারছি না দেয়ালে আটকে আছি সেই সময়ে জন্য। কিন্তু সেই সময় পর্যন্ত থাকাটা কতোটা কষ্ট তা শুধু আমি জানি না বলতে পারছি না স‌ইতে। আমার আর এই কষ্ট সহ্য হচ্ছে না। ভালোবাসা পাবার জন্য এই মনটা ছটফট করছে খুব।”

ভাইয়ার কথার মাথা কিছুই বুঝলাম না।
“ভাইয়া কি সব বলছো ভালো করে বলো বুঝতে পারছি না তো।”
আমার কন্ঠ কানে যেতেই ভাইয়া চমকে তাকালো আর আতকে উঠলো।
তাড়াতাড়ি আমার হাত ছেড়ে উঠে বসলো।
আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি।
তারপর বললাম,,
“ভাইয়া কি যেন বলছিলে ভালোবাসা আমি বুঝিনি ভালো করে বলো।”
ভাইয়া আমার মুখে ভালোবাসা শুনে আতকে উঠলো। কিন্তু বুঝিনি বলতেই একটা নীরব হয়ে শক্ত করে মুখ আমার হাতের বাহু ধরলো।
“কি করছো এভাবে ধরছো কেন?”
“তোকে আমি চলে যেতে বলছিলাম এখন ও আছিস কেন?”
“আমি তো…
“চুপ আর একটা কথা ও শুনতে চাইনা। আর আমার এতো কাছে আসবি না।”
“ভাইয়া আমি
“আমি কিছু শুনতে চাই না।”
বলেই টেনে রুমের বাইরে এনে দরজা আটকে দিল।
আমি কিছু ক্ষন হতদম্ব হয়ে থেকে বাসায় ফিরে এলাম। পরদিন কলেজ করে আসার পথে আবার ওই আরাফাতের সাথে দেখা হলো। আমি সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকে ইগনোর করে গাড়ির দিকে গেলাম সে এক প্রকার দৌড়ে আমার সামনে এসে দাড়ালো আর বললো,,
“এই যে ম্যাম আমাকে দেখেন নি নাকি কথা না বলে চলে এলেন।”
আমি কর্কশ গলায় বললাম,,

“আপনাকে দেখলেই আমার কথা কেন বলতে হবে।আর আপনি আজ ও এখানে কি করছেন?”
“আমি ওই তো কাছে এসেছিলাম।”
আমি রেগে বললাম,,
“আপনার প্রতিদিন এইখানেই কাজ থাকে।”
উনি বললো,,
“না তো।”
“আপনাকে আমি প্রতিদিন এইখানেই দেখতাছি।”
“প্রতিদিন কোথায় দুইদিন না দেখলে।”
“জি না আরেকদিন আসছিলেন। আর আপনার সমস্ত কাজ ইদানিং এই দিকেই পরছে নাকি‌।”
আমার কথা উনি একটু বিচলিত হলো কিন্তু প্রকাশ করলো না মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলে বললো,,
“তা হচ্ছে। কিন্তু আরেক কথা আপনার সাথে পরিচিত হবার পর বেশি হচ্ছে মানে আপনার সাথে আমার দেখা হ‌ওয়ার একটা পথ হয়েছে।বিষয়টা কিন্তু ভালো হয়েছে কি বলেন?”

“মুটেও না এই কাজটা আমার একটু ও ভালো লাগেনি। ফালতু কাজ আমার মনে হচ্ছে আপনি আমাকে ফলো করছেন।আর ক্রমাগত আমাকে মিথ্যা বলছেন।”
আরাফাত চমকে উঠলো আর মনে মনে ভাবলো কি মেয়েরে বাবা? এইভাবে বললো এটা আমার করছি ঠিক তাই না জেনে অপমান আর জানলেও কি এভাবে বলা যায়।মেয়েটাকে নরম ভেবেছিলাম কিন্তু মনে হচ্ছে ধানি লন্কা এটা।
“কি হলো ধরা পরে মুখ বন্ধ হয়ে গেল নাকি?”
” নো ম্যাম আপনি তো সত্যি বুদ্ধি মতি। অথৈ তাড়াতাড়ি বুঝে গেলেন।”
“সেসব পরে হবে আগে বলেন আমাকে ফলো করার কারন কি?”
” সত্যি বলতে ,”আই লাইক ইউ” আমি তোমাকে পছন্দ করি।”
“বাবাহ এটা বলতেই আপনার থেকে তুমি তে চলে এলেন।”
“তা তো আসতেই হবে গার্লফ্রেন্ড কে কি আপনি করে বলবো নাকি।”
‘গার্লফ্রেন্ড। বলতে না বলতেই।”
“হুম আমি বলেছি আপনি রাজি তো..
“এক মিনিট আমার রাজি হলাম কখন?”
“হোননি হবেন।”
“আমি হবো কে বলল।”

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২১

“বলার কি দরকার রাজি হবে আমার মনে হয়।”
“এমনটা মনে হ‌ওয়ার কারণ টা জানতে পারি।”.
“রাজি না হওয়ার কোন কারণ দেখছি আমি দেখতে সুন্দর, স্মার্ট, ধনী আমার সব আছে। একটা মেয়ের পছন্দের সো রাজি না হ‌ওয়ার কোন আফিডেন্স দেখছি না।”
আমি ওনার কথায় হাহাহা করে হেসে উঠলাম।
“তুমি হাসছো কেন?”
আমার বললাম,,
“আপনার কথা শুনে।কি মিস্টার আরাফাত আমি তো রাজি না।”
“মানে।”
“বিকজ আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি সো আপনার সব থাকলেও আমার কিছু ই ভালো লাগে না। আসি বাই‌”
বলেই গাড়িতে উঠে পড়লাম।
পাগল ছেলে।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৩