বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২১ || Writer Nondini Nila

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২১
Writer Nondini Nila

লোকটা আমার কলেজে আসলো আবার আমার সাথে আগ বাড়িয়ে কথা ও বলল। দূর থাক গে।
বাসায় এসে আদনান রুমে উঁকি মারলাম কেউ নাই‌।
ভাইয়া অফিস এ মনে হয় সন্ধ্যায় পরে আসবে।
আমি খাবার খেয়ে ঘুম দিলাম উঠে মাঠে এলাম। আজকে খেলবো ওরনা কোমরে বেঁধে খেলতে লাগলাম।
আমি বল ছুরছি। সামনের জনকে একবারেই আউট করে দিলাম সবাই মিলে আনন্দ এ লাফিয়ে উঠলাম।
আর ইমন মুখ ছোট করে বাট রেখে চলে গেল। আবার আরেক জন এলো আমি আবার বল করার জন্য দৌড় দিলাম তখন বল ছুরার আগেই কোথা থেকে ভাইয়া চলে এলো।
ভাইয়াকে দেখেই আমি বল হাতে নিয়েছি দাঁড়িয়ে পরলাম।
ভাইয়া রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি ভাইয়া দেখেই হতদম্ব হয়ে গেলাম। ভাইয়া এখানে কা করছ? এখন অফিসে থাকার কথা।

ভাইয়ার দিকে ঢোক গিলে তাকিয়ে আছি ভাইয়া আশেপাশে তাকিয়ে বলল,,,
“আবার তুই এখানে লাফালাফি করছিস?”
শক্ত মুখ করে বলল।
আমি ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছি ভাইয়া দিকে ভাইয়া আমার কোমরের দিকে তাকিয়ে কর্কশ গলায় বললো,,,
“ওরনা কি কোমরে বেঁধে রাখার জিনিস?”
রেগে বললো।
আমি বললাম,,” না তো। ”
“তাহলে ওখানে কেন?”
“খেলছিলাম তাই।”
ভাইয়া কোমর থেকে ওরনা ছারিয়ে আমার গলায় দিয়ে দিল। তারপর আর কিছু না বলে হাত শক্ত করে ধরে বলল।
‘চল।”
আর কিছু বললাম না। ভাইয়ার সাথে চলতে লাগলাম ভাইয়া মাঠ ছেড়ে আসতেই থামলো আর বলল,,,
“তোকে বলেছিলাম না এখানে এসে লাফালাফি না করতে।”
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
“তাহলে কেন এসেছিস? এসে থামিসনি বাচ্চাদের মত লাফালাফি করছিস?”
ভাইয়া মৃদু চিৎকার করতে লাগলো।
নাক মুখ কুঁচকে ভাবছি কি করা যায়?
“কি হলো এখন বোবা হয়ে গেলি কেন?”
ভাইয়া আমার দুই কাঁধে হাত রেখে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে বললো।
“উফ ভাইয়া ঝাকাচ্ছো কেন?”
বলেই হাত সরাতে চাইলাম।

আরও গল্প পড়তে ভিজিট করুন

‘তুই আমার কথা অমান্য করে কেন খেলেছিস?”
‘খেলেছি বেশ করেছি।”
র্নিবিক ভঙ্গিতে তাকিয়ে বললাম।
ভাইয়া আমার কথা শুনে রাগে ফায়ার হয়ে যায়।
“কি বললি? তা করেছিস বেশ করেছিস?”
“হুম, আমি তোমার কথা কেন শুনতে যাব। তুমি কি আমার কথা শুন!”
ভাইয়া রেগেই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
“রাগছো কেন? তুমি কি আমার কথা শুনেছো শুনোনি তো। আমার সাথে প্রম করতে বলছি করছোই না খালি ধমকাধমকি করো।”
“ফাজিল মেয়ে ভাইয়া কে প্রমের প্রস্তাব দিতে লজ্জা করেনা।”
“না করে না তুমি আমার আপন ভাই নাকি। চাচাতো ভাইও না তুমি আমার কোন সম্পর্কের ভাই না। আব্বু আর আন্কেল বন্ধু তাই জাস্ট ভাই বলি। তোমার সাথে প্রেম করাই যায়।”
“তোর মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে।”
“হুম শুধু তোমার জন্য।”
“চুপ বেয়াদব।”
“ধুর সব সময় ধমকাবেনা তো। একটু সুন্দর করে রোমান্টিক হয়ে কথা বলতে পারোনা!”
“তোর সাথে কথা বলাই বেকার।”

বলে ভাইয়া আমাকে রেখেই বিরক্ত হয়ে চলে যেতে লাগল।
আমি দৌড়ে ভাইয়ার হাত ধরে ফেললাম।
ভাইয়া আমার দিকে শক্ত চোখে তাকালো।
‘কি হলো হাত ধরলি কেন তার?”
“না চলো আমার সাথে।”
“হাত ছার। আমি কোথাও যাব না তোর মতো বেয়াদবের সাথে।”
ভাইয়াকে নিতেই পারলাম না। তাও হাত ছারলাম না।
“হাত মারতে বলেছি তো।”
“ছারবো না।”
ভাইয়া গম্ভীর হয়ে বলল,,,
“দোলা।”
“হুম ছারবো কেন? একটু আগে তো তুমি‌ই জোর করে হাত ধরে নিয়ে এলে। এখন আমি তোমাকে ধরে থাকবো।”
“পাগল করে ছারবি তুই আমাকে।”
বলেই ভাইয়া আর হাত ছারালো না বিরক্ত হয়ে হাঁটতে লাগলো।
আমি বাসার কাছে এসে হাত ছেড়ে দৌড়ে বাসায় চলে এলাম।
পরদিন কলেজে গিয়ে আবার দেখি হলো আরাফাতের সাথে আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি তার দিকে।
আমাকে দেখেই দাঁত কেলিয়ে হেসে আমার কাছে এগিয়ে এলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি লোকটা আজ আবার এখানে কি করছ?
“হাই দোলা , কেমন আছো?”
আমি নাক মুখ কুঁচকে বললাম,, “আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আপনি?”
“আলহামদুলিল্লাহ।” হেসে উঠলো।
‘তা আজ আবার এখানে কি করছেন?”
চোখ ছোট ছোট করে বললাম।
“এতো এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলাম তাই ভাবলাম তোমার সাথে দেখা করে যাই।”
“আপনি আজকেও এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলেন কেন?”
“একটা কাজ আছে।”
“ভালো তা কাজ না করে আমার জন্য দাঁড়ানোর কারণ টা বুঝলাম না।”
“এমনি ভাবলাম।”
“উফফ আপনি এটা কেন ভাবলেন ? আর আমার সাথে দেখা করে আপনার কি লাভ?”

“সে তো কতোই লাভ?”
“কি বললেন?”
“কিছু না আসলে কাল পরিচিত হলাম তাই আর কি।আপনি কি বিরক্ত আমাকে দেখে।”
আমার লোকটার দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে আছি। লোকটাকে কেন জানি সুবিধার মনে হচ্ছে না। কিন্তু সেটা তো বলা যায় না তাই বললাম,,
“না না তা হতে যাব কেন?”
‘আমার মনে হচ্ছে আমাকে দেখে আফনি খুশি না।”
“আপনাকে দেখে আমি কেন খুশি হতে যাব। কে না কে কিন্তু অবাক হয়েছি।”
“আচ্ছা আর আসবো না‌।”
‘আমি আপনাকে আসতেও মানা করেনি‌। কিন্তু আমার জন্য এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন না আমার ভালো লাগেনা।”
“আপনি আমাকে খারাপ ভাবছেন?”
“সেটা ভাবাটা কি অস্বাভাবিক?”
“না এটা ভাবাটাই ঠিক আছে। কিন্তু আমার খারাপ না।”
“ওকে ভালো থাকবেন। আমার ক্লাস আছে।”
‘আচ্ছা বাই।টেক কেয়ার!”
হালকা হাসির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে কলেজে ঢূকে গেলাম।
নেহাদের সাথে ক্লাসে বসে আছি আর ওই আরাফাতের কথা বলছি ওরা শুনেও অবাক। আবার বলল,
“ওই ছেলেকে আবার দেখলে আমায় ঢাকিস তো।”
সুমাইয়ার কথায় সবকটা চোখ বড় করে তাকালো।
‘কেন তোকে কেন থাকবে?”
“এমনি!”
“এমনি নাকি অন্য কিছু।”

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২০

ওরা সবাই সুমাইয়াকে জেরা করতে লাগলো আমি থামালাম।
“আমি এখন কি করবো বল তো ভাইয়া তো আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না।”
মুখটা মলিন করে বললাম।
নেহা বলল,,”আসলেই তোর ভাই এতো চাপা কেন রে?”
“আচ্ছা আমাদের বুঝতে ভুল হচ্ছে না তো। এমন না তো ভাইয়া আমাকে ভালোই বাসে না আমাদের ধারনা ভুল।”
ইলমা বললো,,” ইম্পসিবল দোস্ত। এটা ভুল হতেই পারেনা। তোর ভাই তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে আমি সিউর!”
“তুই এতো সিউর হচ্ছিস কি করে বল তো!”
“আরে এখন ও বুঝিসনি গাধা। তোকে ভালো না বাসলে এখন ও না মেরে আস্ত রাখতো। তুই যা সব শুরু করছিস এসবের জন্য কি তোর বাবা মাকে জানাতো না। ”
জানিনা।
“গাধা এসব করে নি তার একটাই কারণ তোকে আদনান ভাই পাগলের মত ভালোবাসে। কিন্তু সমস্যা একটাই বলে না কেন? স্বীকার করতে সমস্যা কোথায়?”
“জানিনা।ভাইয়া সব সময় ইগনোর করে রে আমাকে। কতো পাগলামো না করলাম।”
বলেই মুখটা ছোট করলাম।
“ডোন্ট ওয়ারি দোস্ত আমরা আছি তো ঠিক একটা বুদ্ধি বের করবোই তোর ওই গোমড়া মুখ ভাইয়ের মুখ থেকে ভালোবাসি বের করেই ছাড়বো।”
ক্লাস শেষে বাসায় আসলাম। তারপর খাওয়া দাওয়া করে ঘুম উঠে আদনান ভাইয়ের বাসায় এসে পরলাম।

ভাই এখন বাসায় নাই আমি তার রুমে গিয়ে ল্যাপটপ ধরলাম। ভাইয়ার আইডিতে ঢুকতে হবে দেখবো কোন গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা।
ওপেন করতেই চমকে উঠলাম ভূত দেখার মত।
ল্যাপটপের স্কিনে আমার ছবি। এইটা কবে তুলছে কে জানে? আমি ছাদে দাঁড়িয়ে আছি বাতাসে আমার চুল উড়ছে কিছু দেখে আমি হাহাহা করে হাসছি। ছবিটা অনেক সুন্দর হয়েছে।
হতদম্ব হয়ে কিছু ক্ষন তাকিয়ে র‌ইলাম তারপর পরলাম বিপদে পাসওয়ার্ড দেওয়া এখন খুলবো কি করে?

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২২