বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২০ || Romantic Love Story

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২০
Writer Nondini Nila

রাতে একেবারে খেতে বের হলাম আম্মুর রিয়াকশণ দেখে তো মনে হচ্ছে না ভাইয়া কিছু বলেছে। ভাইয়া তার মানে কিছু বলে নি খুশিতৈ খাওয়ার টেবিলেই চেঁচিয়ে উঠলাম,,,
আমার চেঁচানো দেখে আব্বু আম্মু দুজনেই চমকে তাকালো।
“কিরে এভাবে চেঁচিয়ে উঠলি কেন?”
আম্মু বলে উঠলো আব্বু বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আমি আম্মুর কথায় চমকে উঠলাম।‌ হতদম্ব হয়ে র
তাদের দিকে তাকালাম।
“কি হলো এমন অবাক হয়ে তাকাচ্ছিস কেন? চেচালি কেন?”
“আম্মু আমি ওই আসলে।”
তোতলাতে লাগলাম।
“তোতলাচ্ছিস কেন?” আম্মু সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আব্বুর চোখে মুখেও প্রশ্ন।
‘আম্মু আব্বু আমি না একটা কথা মনে করে চিৎকার করেছি?”
“কি কথা?”

“ওই আসলে হ্যা আমার না একটা সিনেমার কথা মনে পরেছিল তাই।”
আমি ভয়ে ভয়ে দুজনের দিকে তাকাচ্ছি বিশ্বাস করেছে কিনা কে জানে? কিন্তু কেউ আর কিছু বলল না। খাওয়া শেষ করে রুমে এসে দরজা আটকে দিলাম।
বিছানায় শুয়ে ভাবছি কি করা যায় হুট করেই উঠে বসলাম আর ফোন বের করলাম। তারপর ভাইয়ার নাম্বার এ কল করলাম।
রিং হচ্ছে আর আমার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে আজকে আমি ভাইয়ার সাথে প্রম করবো? ভাবতেই মন টা নেচে উঠছে।
ফোন বেজে কেটে গেল আমি রেগে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছি আবার কল করলাম। এবারো তাই আবার করলাম এবার ভাইয়া কেটে দিল।তারমানে ইচ্ছে করে ফোন রিসিভ করছে না।
আমার ফট করে উঠে বারান্দায় এলাম আর এসেই দেখি ভাইয়া রেগে দাড়িয়ে আছে হাতে ফোন।
আমি আবার কল করলাম কারণ এখন কথা বলল বাসর কেউ জেগে যেতে পারে।
এবার ভাইয়া রিসিভ করলো আর কর্কশ গলায় বললো,,,
“এতো রাতে না ঘুমিয়ে আমাকে ফোন দিয়ে জ্বালাচ্ছিস কেন?”
“জ্বালানি শুরু করার আগেই বলছো জ্বালাচ্ছি?”
ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম।
“মানে!”

আরও গল্প পড়তে ভিজিট করুন

“মানে আবার কি? মানে তো বিকেলেই বলে দিলাম আমি প্রম করবো। কিন্তু তুমি তো ফোন‌ই রিসিভ করছিলে না।”
“তোর পাগলামি আবার শুরু হয়েছে‌।”
“এটা পাগলামো না এটাকে ভালোবাসা বলে।”
মুচকি হেসে বলে উঠলাম।
ভাইয়া দাঁত কিড়মিড় করে বলল,, “আর একটা বাজে কথা বললে কিন্তু আমি তোকে ঠাস করে চর মারবো।”
“তুমি আমাকে মারতে পারবা।”
“পারবো না কেন?”
“উফ মারবা কেন ভালোবাসার মানুষ কে কেউ বুঝি মারে। চাইলে কিস করতে পারো।”
লজ্জা মাখা গলায় বললাম।
ভাইয়া বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে‌।
“ছিঃ লজ্জা করছে না তোর ভাই কে এসব বলতে।”
“তুমি আর আমার ভাই না বলছি না।এখন একবার ও ভাই বলেনি দেখ না‌। আর বলবো না।”
“তুই পাগল হয়েছিস।”
“বারবার পাগল কেন? বলছো আমি পাগল কেন হবো‌?”
“ফোন রাখ ফালতু কথা বার্তা না বলে আর এসব বলতে আমাকে কল করবি না।”
“এমা কি বলছো এখন‌ই ফোন কেন রাখবো ? এখনো ও তো করা শুরু ই করলাম না।”
“হোয়াট কিসের কথা?”
“প্রমের কথা।”

“তুই এখন সামনে থাকলে চরিয়ে তোর গাল লাল করে ফেলতাম ইডিয়েট!”
“পারতা না তুমি আমাকে একটু ও মারতে পারতা না।”
“কে বলছে আপনাকে মারতে পারতাম না?
আমি জানি।”
‘ভুল জানিস। তুই দিন দিন একটা বেয়াদব হয়েছিস তোকে আমার মারতে একটু হাত কাঁপপে না।”
“ধুর ভালো লাগেনা, কোথায় একটু প্রেম করবা রোমান্টিক কথা বলবা তা না খালি ধমকাচ্ছো।”
“ফাজিল রুমে গিয়ে ঘুমা ফালতু কথা না বলে।”
কথাটা বলে ভাইয়া ফোন রেখে দিল। আর হাত দিয়ে আমার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়তে বলল।
আমি ও ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। কি আর করব আসলে এখন আমার ঘুম পাচ্ছে।
পরদিন সকালে কলেজে যাব তাই রেডি হয়ে নিচে নামতেই ভাইয়ের সাথে হলো। ভাইয়া রেখে দাঁড়িয়ে আছে।আমাকে যেতে দেখে ঝড়ের গতিতে আমার সামনে এসে হাতের বাহু শক্ত করে ধরল। আমি হকচকিয়ে গেলাম। দূর থেকে আমি যত‌ই সাহস দেখায় না কেন কাছে এলেই ভীতু হয়ে যাই‌।
“ভাইয়া কি করছো ছাড় আমার ব্যাথা লাগছে!”
হাত ছারানোর চেষ্টা করতে করতে বললাম।
ভাই আরো শক্ত করে ধরে বলল,,,
“কাল রাতে কি বলছিলি কি বলছিলি বল?”
“কি বলছিলাম?”

“চড় মারবো কিন্তু একটা। বল কি বলছিলি? প্রেম করবে আমার সাথে? আমি তোকে কিস ছিঃ এসব কথা কি করে বলতে পারলি।”
‘বলেছি বেশ করেছি। আমি কি তোমার মতো ভীতু নাকি?”
ভাইয়া হতভম্ব হয়ে বলল,,,”কি বললি আমি ভীতু? ভীতুর কি করেছি আমি।”
“করেছে তো ভালোবাসা অথচ বলতে পারো না।”
“কে কাকে ভালোবাসে?”
“কে আবার তুমি আমাকে?তুমি আমাকে “ভালোবাসো কিনা সেটা বলো না লুকিয়ে রাখ আমিতো তোমার মতো ভীতু না। দেখনা কত সাহসী তোমাকে বলে দিয়েছি আমার মনের কথা।”
“কি হল কথা বলছো না কেন ভাইয়া তুমি আমাকে ভালোবাসো না সত্যি করে বল।”
“বললাম তো ভালোবাসি না। না এসব কথা আর বলবে না।”
বলে ভাই আমাদের ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। আমি ভাইয়া যাওয়া দিকে তাকিয়ে রইলাম। তারপর কলেজে চলে এলাম।
দুইটা ক্লাস আজকে হলো না তাই আগেই ছুটি হয়ে গেল গেটের বাইরে এসে আইসক্রিম কিনে খাচ্ছি আর গাড়ির জন্য ওয়েট করছি তখনই কোথা থেকে একটা ছেলে এলো।ছেলেটাকে দেখে কিছুটা চেনা চেনা লাগছে কিন্তু চিনতে পারছিনা ছেলেটা একদম মুখোমুখি দাঁড়ালো। আমি ব্রু কুঁচকে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছি।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ১৯

“হ্যালো মিস চিনতে পারছেন আমাকে?”
ছেলেটার কথায় অবাক হলাম তারপর মাথা নেড়ে বললাম না।
‘আরে ম্যাডাম এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন।”
“আচ্ছা আমি কি আপনাকে চিনি আমার চেনা চেনা লাগছে কিন্তু মনে করতে পারছিনা।”
“অবশ্যই চেনেন আপনার জন্য আমার কি হাল হয়েছিল।”
“আচ্ছা আপনার সাথে আমার কোথায় দেখা হয়েছে কিভাবে চিনি আপনাকে?”
“ওইযে শপিংমলে আপনি আমার শরীরে কেক ফেলে দিয়েছিলেন।”
“ওপসস ভুলে গিয়েছিলাম। মনে পড়েছে।”
তাও ভাল মনে পরেছে আমি তো ভাবলাম একদম ভুলে গেছেন।”
‘তা আপনি এখানে কি করছেন?”
“এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলাম তাই আপনাকে দেখলাম চলে এলাম কথা বলতে।”
‘ও তা কি কথা বলবেন?”
“এমনি পরিচিত হয় সেই দিন তো শুধু ঝগড়াই করেছিলাম।”
“তা ঝগড়া করবোনা আপনার জন্যেই তো এসব হয়েছিল।”
“এই যে ম্যাম পড়ে কিন্তু আমি আপনাকে কেক কিনে দিয়েছিলাম।”
“হুম তা দিয়েছিলেন।”
“আচ্ছা তা ম্যাডামের নাম কি?”
‘নাম দিয়ে কাম কি?”
“কেন নাম কি জানতে পারি না।”
“বলেন নাম জেনে কি করবেন?”

“কি আর করব জেনে রাখবো যদি কখনো দেখা হয় নাম ধরে ডাকবো।”
‘আচ্ছা আমার নাম দোলা। আমার নাম কি?”
‘আমার নাম আরাফাত হোসেন।”
‘ও আচ্ছা আমার গাড়ি চলে এসেছে যায়।”
‘ওকে আপনার বাসাটা কোথায় চলে যান।”
আমি বাসার ঠিকানা দিলাম না চলে এলাম।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২১