বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ১৯ || facebook golpo

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ১৯
Writer Nondini Nila

দরজা অফ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আর মিটিমিটি হাসছি ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে এটা আমি সিউর হয়ে গেছি। আজ যখন ভাইয়াকে বলেছিলাম ” তুমি বলে আমাকে ভালোবাস?”
ভাইয়া আমার কথা শুনে হকচকিয়ে গেছিলো তাঁর চোখে মুখে আমি ভয় দেখতে পেয়েছি যেন আড়াল করা জিনিস সামনে চলে এসেছে। ভাইয়া অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
কিন্তু সমস্যা একটাই ভাইয়া শিকার করছে না। কেন শিকার করছে না এটাই মাথায় আসছে না। কপাল কুঁচকে আঙ্গুল চিবাতে চিবাতে ভাবছি
কি জন্য ভাইয়া আমাকে নিজের ভালোবাসার কথা বলছে না। আর নাকি আমি ভুল ভাবছি ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে না।
উফ মাথা খারাপ হয়ে যাবে এতো কিছু ভাবতে গেল। সব ভাবনা দূরে যা। আদনান ভাই আমাকে ভালোবাসে এটাই ঠিক হুম ঠিক না হলে ঠিক করবো।
ভাইয়া আমাকে ভালো বাসলে ভালো আর না বাসলে বাসিয়েই ছারবো।
আর তোমাকেও আমি ভয় পাব না ভাইয়া এবার থেকে আমার মিশন শুরু তোমাকে দিয়ে আমি বলিয়েই ছারবো তুমি আমাকে ভালোবাস হু।
সামনের কাটা ছোট চুল গুলো ফূ দিয়ে উরিয়ে সরিয়ে দিলাম।

তখনই ঠাস ঠাস শব্দ এলো কানে সাথে ডাক আওয়াজ ভাইয়ার। ভাইয়া জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছে দরজায় আমি শব্দ শুনেই চমকে উঠলাম সাথে ভয় পেলাম।
উফ দোলা তুই এতো ভীতু কেন? এতো ভীতু হলে ওই গম্ভীর খাটাশ আদনান এর সাথে প্রেম করবি কেমনে? তোকে সাহসী হতে হবে।
আমি আর তোমাকে ভয় পাব না ভাইয়া।
ওই পাশ থেকে দরজার এতো জোরে ধাক্কাচ্ছে যেন দরজা ভেঙে ফেলবে?
“দরজা খোল দোলা।”
ভাইয়া আমাকে দরজা খুলতে বলছে খুললেই আমাকে দ
ধমকানো শুরু করবে জানি কিন্তু আজকে আমি ধমক খাবো ইচ্ছে করে।
তার আরো আধাঘণ্টা পর আমি দরজা খুললাম। ততক্ষনে আমার দরজা মনে হয় অধেক ভেঙে গেছে উফ।
আদনান দরজার বাইরে আগুন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আধাঘণ্টা ধরে দরজা ধাক্কা ধাক্কি করছে কিন্তু খুলছে না দোলা। রাগে ওর শরীর কাঁপছে।
অবশেষে দরজা খুলা হলো দরজা খুলতেই আদনান রেগে ভেতরে ঢুকে গেল।
“তোকে আজকে আমি কি করবো নিজেও জানি না দোলা। তুমি লিমিটের বাইরে চলে গেছিস আজ তোর…
আর কিছু বলতে পারলো না দোলাকে দেখে। আমি মুচকি মুচকি হাসছে আদনান ভাই এর দিকে তাকিয়ে।
আদনান ভাই আমার দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে। তাকিয়ে থাকবে না কেন আমি যে শাড়ি পরে আছি আসলে কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না তখন মনে পরলো ভাইয়া শাড়ি পছন্দ করে শাড়ি পরে ফেলি কিন্তু সমস্যা আমি তো শাড়ি পরতে পারি না।

আরও গল্প পড়তে ভিজিট করুন

ইউটিউব দেখে কোন রকম পেচিয়ে পরেছি শাড়ি।
ভাইয়া আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছে আমি এখানে ঠিক করছি তো ওখানে এই ভাবে হা করে তাকিয়ে থাকলে মনে হয় পড়া ভুল হয়েছে।
“উফ ভাইয়া এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন? আমার শাড়ি পড়া কি ভুল হয়েছে।”
ভাইয়া কিছু না বলে আচমকা হাহাহা করে হেসে উঠলো আমার তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে।
“কি হলো ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো হাসছো কেন?”
“এটা কি পরেছিস?”
“তোমার কি চোখ নাই দেখছো না শাড়ি পরেছি।”
গাল ফুলিয়ে বললাম।
“এটা শাড়ি পড়া হয়েছে।” বলেই আবার হাসতে লাগলো।
“উফ এতো ভুল ধরো না তো! কতো কষ্ট করে শাড়ি পরলাম কোথায় প্রশংসা করবে তা না ভুল ধরছো!এ আমি কার প্রেমে পরলাম রে বাবা।”
আমার কথা শুনেই ভাইয়ার হাসি থেমে গেল আর মুখ টা গম্ভীর করে ফেলল।
“কি বললি?”
আমি বললাম,,”ক‌ই কি বললাম?”
“কার প্রেমে পরেছিস?”
আমি ভয় পাচ্ছি ভেতরে ভেতরে এই বুঝি খাবো একটা চর। ভীতু হয়ে আসছে আমার চোখ মুখ।

তবুও সাহস রাখছি না না একদম ভয় নয় ভয় পেলে ভাইকে পাওয়া হবে না।
সব ভয় ভুল সাহসী হতে হবে। হুম দোলা সাহসী ইয়েস।
ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আসছে আমি ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছিলাম এবার না পিছিয়ে থেমে গেলাম। আর সাহসী হয়ে ভাইঢ়ার চোখের দিকে তাকালাম।
আমাকে থেমে যেতে দেখে ভাইয়া ও থেমে গেল।
হয়তো আমার এমন লুক ভাইয়া আশা করছি নি। আমার ভয় পাচ্ছি না এটা ভাইয়া দেখে চরম অবাক।
আমি দুইপা এগিয়ে একদম ভাইয়া কাছে চলে এলাম ভাইয়া থতমত খেয়ে গেল আমার এগিয়ে আসা দেখে।
“ভাইয়া ভয় পেলে আমাকে এগিয়ে আসতে দেখে।”
ভাইয়া বড় বড় চোখ করে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমার কথা হয়তো হজম করতে পাচ্ছে না যে আমি কিনা ভাইয়াকে দেখলে ভয়ে কাঁপতে থাকি সেই আমি এতো সাহস দেখাচ্ছি। আসলেই আজ ও কাঁপছি সেটা বাইরে না ভেতরে।যা ভাইয়া দেখতে পাচ্ছে না আমি জানি সেটা।
আমি ভাইয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাটা বললাম ভাইয়া কিছু বলল না অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমার এটা দেখে আরও সাহসি হয়ে উঠলাম কারণ এখনো ভাইয়া আমাকে ধমক দেয়নি। আর আচমকা ভাইয়ার গলা জরিয়ে ধরলাম।
আমি জ্বিভা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিচ্ছি ভয়ে এর কারণে এর পরিমান কি হবে জানি না। ভাইয়া এবার চমকের চরম সীমায় পৌঁছে গেল। স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চমক নেস কমিয়ে বললো,,,
“কি করছিস এসব ছার আমাকে?”
গলার হাত ছুকানোর চেষ্টা করতে করতে। আমি ছারছি না আর ও শক্ত করে ধরে নিয়েছি।
“কি অসভ্যতামি হচ্ছে ছার? আমি তোর ভাই হয় সম্পর্কে?”
“ভাই মাই ফুট।ইউ আর মাই লাভ। আমি ভালোবাসি তোমায় তূমিও তো আমি জানি তাই এতো আক্টিন না করে শিকার করো।”
“দোলা আমার গলা থেকে হাত সরা আমি তোকে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করতে চাইছি না। ভালোই ভালোই ছেড়ে দে আর পাগলামি করা বাদ দে।”
“আমি কোন পাগলামি করছিস না ভাইয়া। তুমি আমাকে ভালোবাসো শিকার করো না।”
ভাইয়া বিরক্ত হয়ে নাক মুখ কুঁচকে বলল,,
“কে তোকে এমন আজগুবি কথা বলেছে আমাকে বল?”
“কেউ বলে নি আমি জানি।”
“আচ্ছা বলতো আমাকে শাড়ি পরে কেমন লাগছে। আজ প্রথম তোমার জন্য নিজে কষ্ট করে শাড়ি পরেছি‌।”
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ সরিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,
“ছারবি নাকি?”
আর সাহস কোলালো না ফট করে ছেড়ে দিলাম ভাইয়াকে আর একটু দূরে এসে দাঁড়ালাম।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ১৮

“তুই খুব ভার বেড়ে গেছিস। এইসব…
“ভাইয়া ওফ সরি ভাইয়া তো বলবো না বলেছিলাম “কিন্তু অনেকদিনের অভ্যাস তো তাই ভুল হচ্ছে।”
আর একবার বাজে কথা বললে একটা চর মেরে দাঁত ফেলে দেব।”
“উফ ভাইয়া একটা চর মারলে কি দাঁত পরে। তুমি কি যে বলো না।”
“আবার মুখ মুখে তর্ক করছিস ইডিয়েট।”
“তর্ক কোথায় করলাম ভাইয়া।আর তুমি আমার সাথে প্রেম করবে থেকে করবা বললে না তো।”
“আবার এবার কিন্তু সত্যি…
ভাইয়া কথা শেষ করার আগেই আম্মু চলে এলো রুমে আর আমাদের বলল,,
“কি হয়েছে আদনান বেটা?”
আমি কাচুমাচু মুখ করে একবার ভাইয়া তো একবার আদনান ভাইয়ের দিকে তাকাচ্ছি। আম্মু এক এসব বলে দেবে না তো।
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
” তুই শাড়ি পরেছিস কেন?”
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
“ওই আসলে পড়া শিখেছিলাম।”
আম্মু অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল, সত্যি
আমি হুম বললাম। আম্মু বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আদনান ভাই আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে থেকে ফুসফুস করতে করতে আম্মু কে নিয়ে চলে গেল।
আমি দাঁত দিয়ে নখ কাটছি আর ভাবছি আম্মু কে সব বলে দেবে না তো ভাইয়া।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২০