বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ১৮ || golpo bazar golpo

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ১৮
Writer Nondini Nila

চোখ বন্ধ করে ছিলাম ভয়ে। আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। একেতে আদনান ভাইয়ের গায়ে সাথে ঘেঁষে আমিও বিছানায় পরে আছি। তার উপর ভাইয়ার আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি একবার তাকিয়ে আবার ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিয়েছি।
আদনান ভাইয়া হতদম্ব হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এই সময় এখানে আমাকে একদম আশা করেনি।
হতদম্ব নেস কাটিয়ে বলল,,
“তুই আমার রুমে কি করছিস?”
আমি হকচকিয়ে চোখ মেলে তাকিয়ে এদিক ওদিক তাকাতোকি করতে লাগলাম।
তারপর ফট করে উঠে বসতে গেলাম বিছানায় থেকে ভাইয়া আমার হাত ধরে আটকে দিল।
আমি থমকে গেলাম। ভয়ার্ত চোখে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। আমার চোখ মুখে অসম্ভব ভয়। ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
উওরের আশায়।

“ভাইয়া আমি আসলে ওই তোমাকে ডাকতে এসেছিলাম।”
কেন? আজকে শুক্রবার তুই জানিস না আমি এতো সকালে উঠিনা।
“হুম কিন্তু আমি তো ভুলে গেছিলাম।”
তুই এখানে কেন এসেছিস সেটা বল।
আমি আচমকা বলে উঠলাম,,,” তোমাকে দেখতে।”
মুখ ফসকে কথাটা বেরিয়ে এলো। কথাটা বলেই চোখ বড় বড় করে জ্বিভে কামড় দিলাম। হায় আল্লাহ কি বলে ফেললাম ভাইয়ার দিকে ঢোক গিলে তাকালাম ভাইয়া আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। একটা ধমক খাওয়ার জন্য এই বুঝি খেলাম একটা ধমক।
কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে ভাইয়া আমাকে অবাক করে দিয়ে কিছু বলছে না নীরব হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আমি কিছু বলতে যাব আদনান ভাই আমার দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিল। আমার বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি ভাইয়া তার হাত দিয়ে আমার কপালে চুল সরিয়ে দিল আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি। আমার সারা শরীরে যেন বিদ্যুৎ শক খেলে। ভাইয়া আলতো স্পর্শে আমি নাম না জানা অদ্ভুত অনুভূতির জন্ম দিচ্ছিলাম।
তখন আমার জল্পনা কল্পনা ভঙ্গ করে ভাইয়া আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে বসলো।আমি হকচকিয়ে উঠে বসলাম।
ভাইয়া…

আরও গল্প পড়তে ভিজিট করুন

তুই এখানে এসে ঠিক করিস নি।
আমি থমকে চুপ করে গেলাম।
ভাইয়া উঠে ওয়াশ রুমে চলে গেল। আমি হতদম্ব হয়ে বসে আছি তারপর উঠে বেরিয়ে আসতে গিয়ে দেখি দরজা লক করা।
মাথায় হাত দিয়ে পিছিয়ে এলাম। ভাইয়া দরজা লক করেছে কেন?
আমি পেছাতে পেছাতে কারো সাথে ধাক্কা খেলাম তাকিয়ে দেখি ভাইয়া। আমি ভাইয়ার বুকের সাথে ধাক্কা খেয়েছি। আমি ছটকে সরে এলাম।
ভাইয়া আমাকে বলল,,
“এবার বল কি বলেছিলি আমাকে দেখতে এসেছিস?”
বলতে বলতে ভাইয়া আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আমি কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে সরু চোখ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে। ভাইয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে।
তাঁরপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি হলো বল?”
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
“না মানে আমি তো…
“তুই একটু আগে এটাই বলেছিলি।”
আমি মাথা নেড়ে না বললাম।
“আবার মিথ্যা বলছিস?”

বলেই আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো আমি হকচকিয়ে পেছাতে লাগল। আচ্ছা ভাইয়া কি আমাকে মারবে। পেছাতে পেছাতে আলমারির সাথে ঢেকে গেলাম। ভাইয়ার আসতে আসতে একদম আমার কাছে চলে এলো।
“সত্যি আমি ওইটা বলি নাই ভাইয়া।”
“আচ্ছা তাহলে কি বলেছিস? ”
“আমি তো বলেছি মা–মনি তো-মা-কে ডা-কতে ব-লেছিল।”
“তাই কিন্তু আমার তো শুনেছি তুই আমাকে দেখতে এসেছিস।”
আমি ভীতু মুখ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে।
“দেখছিস ও। আচ্ছা কি দেখতে এসেছিলি আমাকে।‌ আগে কখনো দেখেসনি‌।”
দেখেছি।”
“তাহলে কি দেখতে এসেছিলি।”
‘কিছু না।”
“সত্যি করে বল।”
” তুমি বলে আমাকে ভালোবাস।”
হুক করে প্রশ্ন করে উঠলাম,,, ভাইয়া আমার কথা হয়তো হজম করতে পারেনি। কথা বলতে বলতে ভাইয়া আমার দিকে ঝুঁকে ছিল আমার কথায় হকচকিয়ে গেল আর মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়ালো।
আমি নিজেও প্রশ্ন করে ভীতু মুখ করে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়া আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে ফুসফুস করে উঠলো।
“যা বেরিয়ে যা আমার রুম থেকে। এমন কথা তুই বললি কি করে? আর কে বলেছে এই কথাটা।”

আমি ভাইয়ার কথায় চমকে উঠলাম।
“কি হলো বল কেন এমন কথা বলেছে?”
আমি ভাইয়ার কথায় কেঁপে উঠলাম।
“কেউ বলেনি।”
“তাহলে বললি কেন আর আমার কি দেখে তোর মনে হলো আমি তোকে ভালবাসি।”
আমি বললাম,,”তুমি
“হ্যা বল আমি।”
আমি বললাম,,” কিছু না আমার মনে হয়েছে জাস্ট।”
ভাইয়া ভ্রূ কুঁচকে তাকিয়ে বলল,,”এইসব মনে কেন হবে তোর।ইডিয়েট?”
ভাইয়া আমার মাথায় ঢোকা দিয়ে বললো,,
“লেখাপড়া কর ভালো করে। এসব আজেবাজে চিন্তা মাথায় আনবি না আর।”
আমি হুম বললাম।
ভাইয়া বলল,,”মনে থাকবে তো। আর আমার রুমে আসবি না এইভাবে।”
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
ভাইয়া আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো,,,
” তোর ব্যাথা কমেছে?”
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম।
“আর কখনো এমন কাজ করবি না যাতে তোর নিজের ক্ষতি হয়।”
“আচ্ছা।”
“যা এবার।”
“হুম।”

ভাইয়া হাতের ইশারায় চলে যেতে বলল আমি ছারা পেতেই ভৌ দৌড় দিলাম।
এক দৌড়ে নিচে এসে হাঁপাতে লাগলাম।
বুকের উপর হাত রেখে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি।
মামনি আমাকে এতো সকালে বাসায় থেকে চমকালো সাথে হাঁপাতে দেখেও বিস্মিত হলো।
“কিরে দোলা তুই কখন এলি? আর তোর পেট ব্যাথা কমেছে।”
“হ্যা মামনি। ”
“কখন এলি আর উপরেই বা গেলি কখন?”
মামনি সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বলল।
আমি বললাম,,” ওই একটু আগে।”
“ওহ উপরে গেছিলি কেন ?”
“আমি আসলে ওই…
কি বলবো বুঝতে পারছি না। এদিক ওদিক তাকাচ্ছি।
“কি বল?”
“তুমি উপরে কিনা দেখতে।”
মামনি বলল,,”আমি এই সময় উপরে থাকি না। জানিস তো আমি রান্না করি।”
“আমার ভুলেই গেছিলাম।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
আমি মামনির সাথে চলে গেলাম।
আজকে কলেজে নেই অফ। তাই বাসায় এসেই ঘুম দিলাম। ঘুম ভেঙে গেল উঠে ছাদে এলাম হাতে ফোন নিয়ে কি মনে করে যেন ভাইয়ার নাম্বার এ কল করলাম। কিন্তু রিসিভ হলো না। কি করবো ভাবতে ভাবতে নেহা কে কল করলাম ও আজকের সব বললাম।
ও সব শুনে একটা কথায় বলল,,
“তোর ভাই তোকেই ভালোবাসে আমি সিউর দোলা কিন্তু শিকার করছে না। কোন কারণ অবশ্যই আছে।”
“আমাকে এতো ধমকাধমকি করলো তাও বলছি।”
“এখানে ধমক কোথায় খেলি তোর কেয়ার ও তো করলো।”
“হুম।”

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ১৭

ফোন কেটে দাঁড়িয়ে আছি। ওমনি চোখ গেল আদনান ভাইয়ের ছাদে ভাইয়া কিনারায় দাড়িয়ে আছে হাতে ফোন। আমি তাকাতেই উঁচু গলায় বলল,,
“ফোন কেন দিয়েছিস?”
আমি সব আকাম করেই বসে থাকি ফোন কেন দিলাভ জিজ্ঞেস করতে চলে এসেছে।
“তোমার সাথে প্রেম করতে।”
আমার কথায় ভাইয়া হকচকিয়ে গিয়ে।
“কি বললি?”
আমার এখন সাহস বেড়ে গেছে। তার মূল কারণ ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে।কেন জানি আমার কথাটা খুব বড় বিশ্বাস হয়েছে।
“তোমার সাথে প্রেম করার ইচ্ছা হয়েছে।”
নির্বাক ভঙিতে বললাম।
“হোয়াট! আর ইউ ম্যাড!”
“না আমি সত্যি বলছি ভাইয়া তোমার সাথে প্রেম করবো আমি।”
ভাইয়া এবার রেগে গেল।
“চর খাবি কিন্তু একটা।”
“উফফ সব সময় বকো না তো। ভাল্লাগেনা!”
“বকার মতো কাজ করে বলছিস বকবো না।”
“হুম বলছি। আর বকার মতো কাজ কি করলাম?”
“ভাই কে প্রেম করার কথা বলছিস এটা বকার মতো কাজ না বলছিস?” দাঁতে দাঁত চেপে বললো ভাইয়া।

আমি বললাম,,” কিসের ভাই ভাই করো বলো তো‌। তুমি কি আমার মায়ের পেটের ভাই নাকি হ্যা।আজ থেকে তোমাকে আর ভাই বলবো না যাও ‌”
“তুই এমন পাগলামী করছিস কেন? আর….
“এতো কথা না বলে বল প্রেম করবা কিনা।”
ভাইয়া রেগে চলে গেল ছাদ থেকে আমি সেদিকে তাকিয়ে থেকে দৌড়ে রুমে এসে দরজা আটকে দিলাম।জানি এখন ভাই এখন এখানে আসবে।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ১৯