বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৫ || Romantic story

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৫
Writer Nondini Nila

বুকের ভেতর টা হাতুড়ি পেটা হচ্ছে। বুকে হাত দিয়ে বড় বড় শ্বাস নিলাম। রান্না ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে তখন মামনি ডেকে উঠলো।
“দোলা নাকি রে ওইখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? এখানে আয়!”
মামনির ডাকে চকিতে চাইলাম। আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি নাভাস নেস কমাতে কমাতে এগিয়ে গেলাম মুখে মেকি হাসি ফুটিয়ে।
আমি কাছে যেতেই মামনি বলল,,
“কি রে ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলি কেন?”
আমি মামনির কথা। হকচকিয়ে গেলাম। কি বলবো ভাবছি আর এদিকে ওদিকে তাকাতাকি করছি।তখন আম্মু বলল,
“খিদে পেয়েছে বোধহয় বাসায় ও তো এমন করে খিদে পেলে।”
আমি আম্মুর দিকে চাইলাম।
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি রে তাই তো।”

আমি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম। এটাই ভালো হলো।
মামনি আমার গালে হাত দিয়ে বলল,,
“আহারে কতো খিদে পেয়েছে। এই তো রান্না শেষ তুই গিয়ে সবাইকে নিয়ে বস টেবিলে আমরা খাবার নিয়ে আসছি।”
আমি আচ্ছা বলে চলে এলাম।
ডয়িং রুমের কাছে এসে দেখি আব্বু বাবাই আর আদনান ভাইয়া কি যেন বলে হাসাহাসি করছে।আমি মুগ্ধ হয়ে ভাইয়ার হাসির দিকে তাকিয়ে আছি কি অপূর্ব হাসি।
আচমকা আলো বাম হাত গান গালে চলে গেলো এইখানে ভাইয়া আমাকে চুমু দিয়েছে।ইশ কি লজ্জা? সাথে আমি দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে লজ্জায় লাল নীল বেগুনী হতে লাগলাম।
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুখ ঢেকে ব্লাসিং হচ্ছি।
“কি রে এখানে মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে আছিস কেন পাগলের মতো?”
ভাইয়া আওয়াজ পেয়ে হকচকিয়ে চোখ খোলে ফেললাম। মুখে থেকে হাত সরিয়ে দেখলাম ভাইয়া আমার সামনে দাড়িয়ে আছে। আমি সোফার দিকে তাকিয়ে দেখি কেউ নাই।

আরও গল্প পড়তে ভিজিট করুন

বিস্মিত হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,,
“তু–মি এখানে কখন এলে? তুমি না ওইখানে বসে ছিলে!”
“হুম ছিলাম কিন্তু তুই তো পাগলের মত অনেকক্ষণ ধরে এইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস তাই এলাম আবার সত্যি মাথা খারাপ হলো নাকি দেখতে।”
“আমার মাথা খারাপ হয়নি তুমি বাজে কথা একদম বলবে না।”
গাল ফুলিয়ে বললাম।
“মাথা খারাপ হয়নি তো এখানে এমন করে দাঁড়িয়ে ছিলি কেন?”
“আমি তো লজ্জা…
বলেই থামলাম কি বলছিলাম এসব বললেই ভাইয়া আমাকে ইনসাইড করবে।
‘কি লজ্জা?”
ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল।
আমি কিছু বললাম না।
ভাইয়া আমার দিকে উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে।আমি এবার বললাম,,
“তুমি সরো তো আমার খিদে পেয়েছে।”
“তো খা না এখানে না দাঁড়িয়ে থেকে। ”
বলে উঠলো আমি আসতে গেলেই বলল,,” ওই ওয়েট!”
আমি ঘাড় বাঁকিয়ে বললাম,” কি?”
বললি না তো প্রেম করতে রাজি নাকি আমার সাথে।
আমি সোজা হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম খুশি হয়ে।
‘আমি তো সেই কবে থেকেই রাজি।”
উত্তেজিত হয়ে।

ভাইয়া বলল,,”খুশি পরে হ‌ও আমার কথায় রাজি নাকি তাই বল।”
“কোন কথায়?”
‘ওই যে আমি তোকে কিস করবো‌।”
“কিসের কথা শুনেই চোখ বড় করে ফেললাম।
তুমি আমাকে থপ দিচ্ছে আগে তো শুনিনি প্রেম করলে এসব করতে হয়।”
“হয় না তো।”
“তাহলে তুমি আমাকে এই বাজে বাজে কথা বললে কেন?”
রাগ নিয়ে বললাম।
ভাইয়া বলল,,”আমি অন্যের কথার কথা বলি নি আমার সাথে প্রেম করলে তোকে এসব সহ্য করতে হবে। কারন আমার তো আমার গার্লফ্রেন্ড এর সাথে এসব করার ইচ্ছা। তাকে অনেক অনেক জ্বালাবো যেমন ধর রাতে ঘুমাতে দেব না সারা রাত কথা বলবো।সহ্য করতে পারবি তো।”
“ও মাই গড সারারাত কথা বলতে হবে। আমার তো ঘুম আসবে।”
“তো আমি কি করবো? আমার সাথে প্রেম করলছ আমার সব কথা তোকে শুনতে হবে।’
“সব।”
“হুম সব।”

আমি আগুল মুখে দিয়ে ভাবছি ভাইয়া আমকূ ভয় দেখাচ্ছে নিশ্চিত যাতে না বলি আমি এতো বোকা না রাজি আমি হবোই।
“আমি রাজি সব কিছু তেই।”
‘ভেবে বলছিস?”
“হুম আর এত ভাবাভাবি কি আছে এমন ভাবে বলছ যেন আমি প্রেম না যুদ্ধ করতে যাচ্ছি।”
গাল ফুলিয়ে বললাম। ভাই আমার গালের মধ্যে ঢোকা মেরে বললো,,
“একদম গাল ফুলাবি না আমার সামনে।”
“কেন তোমার জন্য গাল ফুলালে কি সমস্যা?”
চোখ ছোট ছোট করে বললাম।
“যেটা বলছি সেটাই করবি না হলে ব্রেকআপ করে দেবো।”
“ও আল্লাহ কি কও প্রেম শুরু করার আগেই ব্রেকআপ।”
চল খেতে চল।
আমি আর ভাইয়া এক পাসেই বসলাম।আমি খাচ্ছি কম ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছি ভাইয়া কড়া চোখে আমার দিকে তাকালো। আমি তখন একটা হাসি দিয়ে খেতে লাগলাম। আবার ভাইয়ের দিকে তাকালাম হঠাৎ করে আমার মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আসলো। আমি আমার পা নিয়ে ভাই এর পায়ের উপর রাখলাম ভাইয়াকে জ্বালানোর জন্য ভাই আমার দিকে তাকাচ্ছে না খালি খাচ্ছে কোথায় প্রেম শুরু করলো আমার দিকে তাকাবে। তা না খালি খেয়ে যাচ্ছে।

আমি হাজার বার তাকালে ভাইয়া একবার তাকায়।খাবার টেবিলে বসে জানতে পারলাম ডিনারের জন্য ডেকেছে কারণ আমাদের আদনান ভাই বিজনেস এইবার টপ হয়েছে। সেই নিয়ে একটা অনুষ্ঠান হবে।তার আগে আগে আমাদের দাওয়াত খাইয়ে নিল কারণ আমার আব্বু আদনান ভাইয়ের আব্বুর বেস্ট ফ্রেন্ড।
ভাইয়ের পায়ে নিজের পা নিয়ে খোচা মারছে। ভাইয়া খাবার মুখে দিয়েছিল সে আমার দিকে তাকালো প্রচন্ড রেগে। আর ইশারায় আমাকে পা সরাতে বলল।
আমি শুনেও না শোনার ভান করলাম।
ভাইয়া এবার আমার দিকে তাকিয়ে কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,
“পা সরাতে বলেছি।”
“না সরাবো না।”
ভাইয়া চোখ শক্ত করে বলল,,
“মার খাবি কিন্তু।”
‘ধুর ছাই। ভাল্লাগেনা তুমি আমার দিকে তাকাও না কেন হ্যা আমি কতো বার তাকালাম আর তুমি একবার ও না।”
“বাবা মা কে তোর চোখে পরছে না তাদের সামনে বসে এমন করিস ভয় পাস না।”
‘ভয় কেন পাব?”
“তুমি আসলেই পাগল।”

“ভালোবাসি তো তাই পাগল বলবাই। যখন ভালোবাসবো না তখন বুঝবা।”
বলেই ভেংচি কেটে পা সরিয়ে নিলাম। আর খেলাম ও না হাত ধুয়ে সোফায় এসে বসলাম খুব অভিমান হয়েছে আমার। ভাইয়া সব সময় বকে একটুও কি ভালোবাসা যায় না।
আমি গালে হাত দিয়ে চুপটি করে বসে আছি।
ভাইয়া হুক করে আমার পাশে এসে বসলো আর আমার হাত ধরে নিজের দিকে টেনে নিলো।আমার ভাইয়া কে দেখেও চুপ করে মাথা নিচু করে বসে আছি। ভাইয়া আমার থুতনিতে ধরে নিজের দিকে তাকানোর চেষ্টা করে বললো,,
“কি বললি তখন?”
ভাইয়া চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে ।চোখমুখ লাল করে আমাকে জিজ্ঞেস করলো ভাইয়ের চোখের দিকে তাকালাম আমি আর ভয় পেয়ে গেলাম।
“কি বললি যখন ভালোবাসবি না? আমাকে ভালবাসবি না তো কাকে ভালবাসবি?”
আমি চোখ ছোট করেই বললাম,,
“অন্য কাউকে এই ধরে ওই আরাফাত ছেলেটাকে।
আচমকা ভাই আমার গলা টিপে ধরল।”
“বলছি না ওই ছেলেটার নাম মুখে নিবিনা আর একবার তোর মত মুখে ওই ছেলেটার নাম শুনলে একদম মেরে ফেলবো। জানে মেরে দেবো ওই ছেলেটাকে।”
“বলবো 100 বার বলবো তুমি কাউকে ভালবাসো কি করলা ভালবেসে? এখন পর্যন্ত তো ভালবাসি বললা না।”
“সবকিছু তোকে মুখে বলতে হবে কেন।বুঝতে পারছিস না মুখে বললেই কি ভালোবাসা হয়ে যায় অনুভব করতে না।”
“আমি এতকিছু জানি না তুমি মুখে বলবা আর আমাকে নায়কের মত প্রসোজ করবা ফুল দিয়ে।”
গাল ফুলিয়ে বললাম।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৪

কি হলো এই ভাবে তাকিয়ে আছো কেন করবা না প্রপোজ?
“প্রপোজ ইম্পসিবল আমি ওসব করতে পারবো না।
“দেখছো তুমি আমার কোন কথাই রাখো না আর ছাড়ো তো আবার আসছি মেরে ফেলতে তোমার থেকে আরাফাতে ভালো। আমাকে ঠিক প্রপোজ করত।
আবারে আরাফাতে কথা বলছিস। তোকে বলছিলাম তুই আমার সব কথা শুনবি।
হ্যাঁ বলছিলে না শুনলে ব্রেকআপ করে দেবে করে দাও। আমি আরাফাতের সাথে রিলেশন করব তোমার সাথে না। তুমি আমাকে সামান্য প্রপোজ তাই করতে পারবানা।
বলে ভাইয়া কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে দাঁড়াতে গেলাম ভাই আমাকে টেনে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
আচমকা ভাইয়ার জরিয়ে ধরাতে আমি ফ্রিজড হয়ে গেলাম।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৬